#কাব্যের_বিহঙ্গিনী
#পর্ব_৫৩(বোনাস পার্ট)
#লেখিকা_আজরিনা_জ্যামি
“নাম্বার শেখ আমাজাদের নামে করা । অথচ কথা বলেন আরিফ জামান যদিও ভয়েজ চেন্জার দিয়ে। যদিও আপনাদের দুজনের মধ্যে আমি প্রথমে শেখ আমজাদকেই ভেবেছিলাম। তবে মগজের ধোলাই করে কললিস্ট চেক করতেই ধরা পরে গেলেন দ্য গ্ৰেট নিশাচর। মানে দুইজনই এই সিম ব্যবহার করতেন আর ভয়েজ চেঞ্জার করেছেন যেই কথা বলুক না কেন সবার মনে হবে একজনই করেছে। মানে নিশাচর সবার কাছে একজনই কিন্তু মুলত নিশাচর একটা না দু’টো। দুজনেরই বাইরের দুনিয়ার কাছে আলাদা পরিচয় আছে। দুজনে সময় মতো একইসাথে করতে পারবেন না বলে এটা করেছেন। আর দুজন যেহেতু একসাথে রাজা হতে পারে না। তাই একজনের নাম দিয়ে রাজা হয়েছেন আপনাদের বুদ্ধির তারিফ করতে হয়। তো এখন বলুন ফেলুন তো শেখ আমজাদ ও আরিফ জামান থেকে নিশাচর হওয়ার গল্প।
মেহবিনের কথায় শেখ আমজাদ বলতে লাগলেন,,
“যেহেতু সব জেনেই ফেলেছো তাহলে লুকিয়ে কি লাভ? আমি শেখ বংশের ছেলে হলেও আমার বাবা একজন কৃষক ছিল। তার পড়াশোনা ভালো লাগতো না তাই তার পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ ছিল না। অথচ কাকা শেখ শাহেনশাহ ছিলেন শিক্ষিত মানুষ তার পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ দেখে দাদা উনাকে ঢাকায় পরিয়ে শিক্ষিত করেছিলেন। কিন্তু কাকা যখন শিক্ষিত হয়ে প্রথমে চাকরি আর পরে ব্যবসা করে অনেক আয় উন্নতি করলো। তখন দাদা মারা গেল দাদি তো আগেই মারা গিয়েছিলেন। আমার বাবা কৃষক দেখে আমাদের সাথে থাকা সেটা কাকির পছন্দ ছিল না। তাই তিনি কাকাকে আলাদা হতে বলেন আর কাকাও আলাদা হয়ে যায়। এই শেখ বাড়িটা দাদার বাবা বানিয়েছিলেন। সে জমিদার ছিলেন। এরপর একা দাদা ছিলেন সেই সুবাদে আমার বাবা ও কাকা এই বাড়িটার সমান ভাগিদার। বাড়ি আলাদা হয়ে গেল। তবে যেহেতু কাকারা বেশি টাকা ইনকাম করতো। তাই তারা ভালোমন্দ খেতো। আর আমার বাবা কৃষক ছিল সে রকম আয় রোজগার আসতো না তাই আমরা ভালো খেতেও পেতাম না। এগুলো দেখে আমার খুব রাগ হতো এক বাড়িতে আছি তবুও কতোটা বৈসাদৃশ্য। শাহনাওয়াজ কতোকিছু নতুন দামি দামি জিনিস পেত আমি শুধু দাড়িয়ে দেখতাম। একদিন আমি ওর একটা জিনিস দিয়ে খেলার সময় ওটা ভেঙে যায় তাই কাকি আমাকে ভিশন মারে আর বকাবাজি করে। আর বাবা মাও আমাকে মারে। তাই মনে মনে পন করি আমিও একদিন অনেক টাকার মালিক হবো। বাবা বুঝতে পেরেছিলেন ওদের এইসব ভালো সবকিছু আমার সহ্য হচ্ছে না। তাই বাবা আরেকটা বাড়ি ছিল ওখানে উঠে যায় ওটা টিনের ছিল। আমরা আলাদা হয়ে গেলাম। ওদের প্রতি রাগ আরো বেড়ে গেল।কয়েকদিন বাদেই গ্ৰামে কলেরা এলো আর সেইখানে কাকি মারা যায় কি যে খুশি হয়েছিলাম তা বোঝাতে পারবো না। কিন্তু তার পরের দিন বাবা মা দু’জনেই কলেরায় মারা গেল । তখন আমি এতিম আমার কথা শুনে শেখ শাহেনশাহ আমাকে তার কাছে নিয়ে এলো। আমি আর শাহ দুজন একসাথেই বড় হতে লাগলাম মিথ্যা বলবো না কাকা কখনো আমাদের মাঝে কখনো বড় বৈসাদৃশ্য করেনি। তবুও অনেক বিষয়ে তিনি শাহের ব্যাপারে বেশি করতেন যা আমার পছন্দ হতো না। সবকিছুর মধ্যে ছোটবেলায় কাকির কথা আর মার গুলো আমার ভেতর বড় ক্ষত সৃষ্টি করেছে। শাহ কে দেখলেই আমার রাগ হতো ওর জন্যই আমি কাকির থেকে মার খেয়েছিলাম আর বাবা মায়ের থেকেও মার খেয়েছিলাম। আমি আর শাহ দু’জনেই মেডিকেল এ ভর্তি হই।যখন কলেজে পড়ি আমি একটা মেয়েকে পছন্দ করতাম কিন্তু সেই মেয়েটা শাহ কে পছন্দ করতো। তুমি জানো সেটা কে?সেটা হলো তোমার মা। শাহ ও মেয়েটাকে পছন্দ করতো। ওদের দেখি বুঝতে পারছিলাম ওরা দুজন দুজনকে চায় যদি এভাবেই হতে থাকে তাহলে দুজনের বিয়ে নিশ্চিত। তাই আমিই গিয়ে শাহেনশাহ কে বলি ছেলের বিয়ে দিতে। আমার কথা শুনেই শেখ শাহেনশাহ আরিফার সাথে বিয়ে ঠিক করেন শাহের মতামত না নিয়ে। আমি ভেবেছিলাম মেহের কে আমি পেয়ে যাবো। এই জন্য মেহেরের বাবার কাছে প্রস্তাব ও দিয়েছিলাম কিন্তু মেহের বিয়ে করতে রাজি নয়। তাই বিয়ে হলো না। এদিকে পড়াশোনা শেষ এই জন্য কাকা আমার জন্য মেয়ে দেখলেন ওনার কাছে ভালো থাকার জন্য আমি আর না করতে পারলাম না। এদিকে মেহের ও বিয়ে করবে না। আমার বিয়ে হয়ে গেল।তখন আরিফ জামানের বাবা মারা যায় আরিফা জামান ইনিয়ে বিনিয়ে তার ভাইকে এই বাড়িতে আনেন। মেহের ও আমার আর শাহের সাথে এস.এপ. হাসপাতালে যোগ দিল। আমি মেহের কে পেতে চাইতাম তাই একদিন সুযোগ বুঝে ওর কেবিনে গেলাম সেদিন মেহের আমায় থাপ্পড় মারলো। আরব দল এরপর ওর দিকে তাকালে কাকাকে বলে দেবে। কাকার ভয়ে কিছু বললাম না। তার কয়েক বছর চলে গেল শাহের বাচ্চা হলো না তখন শাহের বিয়ের কথা বলল আর মেহেরের সাথে হয়েই গেল যা আমার মনে রাগ ঘৃনা দুটোই হচ্ছিল। আমি এতো কিছু করেও পেলাম না অথচ শাহ একটা বিয়ে করেও ওকে পেয়ে গেল। শাহ আর কাকার ওপর ভিশন রাগ হলো। ওকে কি করে শেষ করবো সেটাই ভাবছিলাম। তবে মনে মনে একটা ভাবলাম টাকা আর বাবা থাকলে পৃথিবীতে সব সম্ভব।
এইটুকু শেষ করে তিনি থামলেন তখন মেহবিন মুচকি হেঁসে বলল,,
“ঠিক বলেছেন শেখ আমজাদ টাকা আর বাবা থাকলে সব সম্ভব। তারপর?
“আমি টাকা কামানোর জন্য রাস্তা খুঁজতে লাগলাম। অন্য একটা হাসপাতালে আমার সিনিয়র অপারেশন এর জন্য আমায় ওনার সাথে নিলেন। কিন্তু আমি জানতাম না অবৈধভাবে উনি কারো হার্ট পেশেন্ট এর গায়ে দিচ্ছে। পরে আমি জানতে পারি আমি ওনার সাথে কথা বলতে গেলেই উনি বিষয়টা জানান। আর বলেন এই কথা কাউকে জানালে আমাকে ফাঁসিয়ে দেবেন। উনি অফার দেন আমি যদি এভাবে কাজ করি তাহলে আমি টাকা পাবো। টাকার জন্য আমি এই লাইনে আসি। আর তার কিছুদিন পরেই জানতে পারি অর্গানের ব্যবসায় আরিফ ও রয়েছে। এরপর থেকেই আমাদের একটা বড় চক্র এই অবৈধভাবে অর্গানের ব্যবসায় কাজ করে। আমরা দুজন যেহেতু দুজন কে চিনি খুব ভালো কাজের জন্য আমরা বসের নজরে পরি। তিনি অনেক প্রাইভেট জায়গায় আমাদের নিয়ে যেতেন।সবার সাথে পরিচিত হলাম।অনেক টাকা আয় হচ্ছিল। মেহের মরার পর শেখ শাহনাওয়াজ ডাক্তারি ছেড়ে দিল। আমি এস এস হাসপাতালের অনেক পেশেন্ট কে ভুল ওষুধ দিয়ে অসুস্থ করতাম তারা কোমায় চলে যেত গ্ৰামের ভেতর হওয়ায় তারা বিষয়টা ভালোভাবে বুঝতে পারতো না এই জন্য কাজটা সহজ হলো। আমি আর আরিফ প্ল্যান করলাম যেহেতু আমরা দুজনেই সবকিছু জানি তাহলে আমরাই ব্যবসা করবো। দুজনে একসাথে হাত মেলালাম তবে দুজন তো রাজা হতে পারে না। তাছাড়া কেউ যাতে কোনদিন আমাদের ধরতে না পারে তাই দুজন এক হলাম। হয়ে উঠলাম সবার ট্রাস নাম দিলাম নিশাচর। যার মাধ্যমে কাজ শিখলাম তাঁকেও পেছনে ফেলে আমরা এগিয়ে গেলাম। তার কিছুদিন পর সেই বস ধরা পড়লো যা আমাদের উচ্চ চূড়ায় পৌঁছিয়ে দিল। বসের সাথে থাকা সব লোকদের আমরা কিনে নিলাম। সাথে আরো মানুষ যুক্ত করলাম। কিছু জন আমাদের গ্ৰামের হাসপাতাল এর ওপর অর্গান পাচারের সন্দেহ করছিল তাই ওখান থেকে শাহেনশাহ কে বলে এস.এস. হাসপাতাল ঢাকায় শিফট করলাম। যাতে আমরা সন্দেহ তালিকা থেকে বাদ পরি। সরকারি হাসপাতাল হলো বাবুলকে রাখলাম কাজে।ও ভুল ওষুধ দিয়ে আমাদের হাসপাতালে লোক পাঠাতো। হাসপাতাল থেকে আমরাই মেরে ফেলতাম আর অর্গান নিতাম। আমাদের গ্ৰামে যতো মেয়ের ধর্ষন হতো সব আমরা করাতাম।শাহ কে আমিই বলেছিলাম গোসলের জন্য লোক রেখে দিতে সে তাই করলো আমরা তাদের টাকা খায়িয়ে নিজেদের দলে নিলাম। নুপুরের বাবা সহ আমরা অনেক হাসপাতাল আর ডক্টর কিনে নিয়েছিলাম। তোমার আগে যে ছিল সে ডক্টর বাবুল এর সাথে আমাকে দেখে নিয়েছিল তাই তাকে মরতে হলো। এভাবে আরো কতোজন মরেছে আমাদের কাজে তার ইয়ত্তা নেই।
সব শুনে মেহবিনের হাত শক্ত হয়ে গেল। ইচ্ছে তো করছে কুঁচি কুঁচি করে তাদের কেটে ফেলতে। কিন্তু এই মুহূর্তে মাথা গরম করা চলবে না। ও শান্ত স্বরে বলল,,
“শেখ আমজাদ এর থেকে তো সব শোনা হলো। তো আরিফ জামান আপনি বলুন আমার মা কি ক্ষতি করেছিল যে তাকে এই দুনিয়া ছাড়তে হলো আর আমিই বা আপনাদের কি ক্ষতি করেছিলাম যে আমাকেও দুনিয়া থেকে উঠিয়ে দিতে চেয়েছিলেন?
আরিফ জামান বললেন,,
“আমার বোনের তোমার মাকে আর তোমাকে সহ্য হতো না। আরিফা শাহ কে অনেক ভালোবাসতো কিন্তু একটা সন্তানের আশায় তোমার মাকে বিয়ে করলেন। তবে তোমার বাবা আমার বোনকে ফেলে তাকেই বেশি সময় দিতো। আমার বোনের চোখের সামনে তোমার মাকে নিয়ে রাত কাটাতেন সেটা ওর সহ্য হয় নি। আর তুমি বড্ড দূরন্ত আর তোমার মায়ের সবথেকে প্রিয় ছিলে বলে তোমাকেও তার সহ্য হতো না। আমার কাছে আবদার করে তাকে সরিয়ে ফেলতে তাই এসব করেছি? আর ওকে বলেছি নিশাচর নামের কেউ আছে যে এসব কাজ খুব ভালো করে তার সাথে কথা বলে তোমাদের খতম করে ফেলবো। আর তোমাকেও করতে চেয়েছিলাম কিন্তু তুমি কুসুমের হাত থেকে পালিয়ে যাও।
“তারমানে আরিফা জামান জানেন না নিশাচর কে?”
‘না!”
“ওহ আচ্ছা তো এখানে শেখ শাহেনশাহ কিভাবে সব জানলেন উনিও তো জানতেন?”
“আমি আর আরিফা এই বিষয় নিয়ে কথা বলছিলাম উনি বাইরে থেকে সব শুনেন। হুট করে উনি ঘরে ঢুকে আসেন। আরিফা অনেক কান্নাকাটি করে আর বলে তিনি মেহের কে এতো সুখী দেখতে পারছেন না। তাছাড়া ওনারা তো স্বার্থের জন্য বিয়ে দিয়েছিলেন। এখন তো ওনার ওয়ারিস আছে তাহলে মেহের কে রেখে কি লাভ। তাছাড়া মেহেরের মেয়ে মানে তুমি কোন কথা শুনতে চাওনা। তোমাকে রেখেও কি লাভ। আরবাজ ওয়ারিস তাই তাকে কিছু করা যাবে না। মিশু আরিফার কথা শুনে তাই সে থাকলেও আরিফার ক্ষতি নেই। সব শুনে তিনি বলেছিলেন না মরতে তবে আমরা শুনি নি। আরিফা আরো অনেক কিছু বোঝায় এরপর উনি আর কিছু বলেন নি।
মেহবিন সব শুনে শান্ত স্বরে বলল,,
“এখানে তো শেখ আমজাদ আপনিও ছিলেন আপনি তো আমার মাকে ভালোবাসতেন। তাহলে কি হয়েছিল আপনার।আপনি ভোগ করতে পারেন নি বলে তাকে আপনার সহ্য হতো না তাইনা এসবে ছিলেন?”
শেখ আমজাদ বলল,,
“হ্যা এর জন্য আমি ওকে ভোগ করতে পারি নি তাই। ও যখন আমার না তাহলে কারো না। তাছাড়া ও আমাকে থাপ্পর মেরেছিল যা আমি আজ ও ভুলতে পারি নি। তাছাড়া ওর পাশে আমার শাহনাওয়াজ কে সহ্য হতো না। তাই করেছি আমার তো ইচ্ছে হতো শাহকে মেরে দিই। কিন্তু ওকে মারতে পারতাম না আমি কিভাবে যেন বেঁচে যেত। তুমি জানো কয়েকবছর আগেও ওর গাড়ি একদম ট্রাক দিয়ে পিষে ফেলেছিলাম তবুও মরেনি। সাতদিন খবর নাই তারপর দেখি কে যেন ফোন করে বলল হাসপাতালে। শালার কই মাছের জান। এতো কিছু করি তবুও মরে না।
কথাটা বলতেই মেহবিন একটা সুইচ টিপ দিল সাথে সাথে কারেন্ট খেল। তা দেখে পার্টনার হেঁসে ফেললো। মেহবিন তার দিকে তাকিয়ে আবার শেখ আমজাদের দিকে তাকালো। আর বলল,,
‘বুঝলাম এখন বলুন অনুভব কে কেন মারা হলো? মিশুকে কেন পাগল করা হলো?
“ও আমাদের বিষয়ে সব জেনে ফেলেছিল তাই। মিশু ও জেনেছিল ওদের বাড়ির কেউ ওর মায়ের পেছনে আছে। তাই যাতে ও এই বিষয়ে কখনো কারো সামনে মুখ না খুলতে পারে এই জন্য পাগল করে রেখেছি।”
মেহবিন বলল,,
‘ বাপরে বাপ এই কেউ চকলেট আনো। এরা এমন সহজভাবে সব বলছে মনে হচ্ছে এগুলো করা কোন ব্যাপারই না।”
মেহবিনের কথা শুনে আরিফ জামান বলল,,
“তোমাকেও দেখে মনে তুমি আগে থেকেই সব কিছু জানতে? তবে এতো কিছুর পরেও এটা ভুলে যেও না। শাহ কিন্তু তোমায় খুঁজে নি। তোমার মায়ের কারন হিসেবে কিন্তু তোমাকেই দায়ী করে। তাছাড়া তাজেল নামের বাচ্চাটার এই হাল কিন্তু তোমার জন্যই এটা ভুলো না। তোমার জন্য বাচ্চাটা তার বাবা হাড়িয়েছে।
মেহবিন কিছুই বললো না শুধু মুচকি হাসলো। আর বলল,,
“তোরা তো বলদ দেখছি। দুনিয়াতে কি সব মানুষ তোদের মতো পশু নাকি যে তাদের দ্বারা কারো খারাপ হবে অথচ তাদের কিছুই যায় আসবে না।”
‘মানে?”
“মানে হলো এই নেত্রীর এক্সিডেন্ট তোদের জন্য হয় নি। একজন ট্রাক চালকের গাড়ি ব্রেকফেল হয়েছিল তাই ওটা হয়েছে। এই জন্য গাড়ি চালক ও আরো সামনে গিয়ে এক্সিডেন্ট করেছিল তাই একটু সুস্থ হতেই চারদিন পর এসে নিজের ভুল স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করে গেছে এবং দশ লাখ টাকাও দিয়ে গেছে তাজেলের বাবা মারা যাওয়ার জন্য। আমাকে অনুশোচনায় দগ্ধ হতে তোদের খুব দেখার ইচ্ছে ছিল কিন্তু আফসোস পারলাম না তোদের ইচ্ছে পূরণ করতে।”
তখন একজন দশটার মতো চকলেট এনে রাখলো। মেহবিন একটা হাতে নিয়ে বলল,,
“পার্টনার হাঁপিয়ে উঠেছেন নিশ্চয়ই! নিন একটা চকলেট খান।”
পার্টনার চকলেট নিল ছিঁড়ে মাস্ক টা সরালো। পার্টনারের চেহারা দেখে শেখ আমজাদ ও আরিফ জামানের অন্তরাত্মা কেঁপে উঠলো। দুজনেই একসাথে বলল,,
“শাহনাওয়াজ!”
মেহবিন আর শেখ শাহনাওয়াজ হেঁসে ফেললো। শেখ শাহনাওয়াজ বললেন,,
“কি বললি আরিফ আমি মুসকান কে খুজিনি? তাহলে বলি কেউ হাঁড়িয়ে গেলে না তাকে খোঁজে মানুষ ।আমি তো মুসকান কে আমার চোখের আড়াল করি নি। তার প্রত্যেকটা খবর আমার কাছে পৌঁছে যেতো। আর আমি তাকে ঘৃনা নয় ভালোবাসি।”
“তুই! তুই! এখানে?”
মেহবিন হেঁসে বলল,,
‘এই কেউ আরেকটু কারেন্ট খাওয়াও যদি তাহলে একটু বুদ্ধি খোলে।”
শেখ শাহনাওয়াজ বললেন,,
‘আপনার হাতেই সুইচ টা?
“এখন তো আমি চকলেট খাবো তাই একটু বিজি। তাহলে চকলেট চিয়ার্স করে খাওয়া যাক পার্টনার।”
দুজনে চকলেট চিয়ার্স করে খেতে লাগলো। এদিকে এই দুই বাপ মেয়ে কে দেখে ওদের দুজনের চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম হলো। চকলেট খাওয়া শেষ হলে মেহবিন বলল,,
“নিশ্চয়ই তোদের প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে এখানে উনি কেন? তাহলে শোন যেদিন রাতে আমার মাকে মারার কথা প্ল্যান করিছিলি সেদিন আরিফা জামানের কুসুমের সঙ্গে বলা সব কথা তিনি শুনে ফেলেন। আর এটাও বলেন যদি আমি বেঁচেও যাই তাহলে এই বাড়িতে আনলেও আমাকে মেরে ফেলবে। আর নিশাচর নামের কারো হাতে আমায় তুলে দেবে তারা আমার অর্গান নিয়ে নেবে। আর এখানে যা হয়েছে সব নাকি নিশাচরই করিয়েছে। কুসুম কে হায়ার করা থেকে মাকে বিষ খাইয়ে সিঁড়ি থেকে ফেলে দেওয়া পর্যন্ত সব নাকি নিশাচর করেছে। আর নিশাচর এর নজর পরেছে আমার ওপর আমাকে সে কোনমতেই ছাড়বে না। আমার সবকিছু নাকি ডিল করে ফেলেছে নিশাচর। ততক্ষণে মাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি দৌড়ে বের হোন হাসপাতালের উদ্দেশ্যে কোন হাসপাতালে তিনি জানতেন না। আমাদের ঢাকার বাড়ি থেকে যতোগুলো হাসপাতাল ছিল সব ক’টায় আমাদের খুজেন। খুঁজতে খুঁজতে আমাকে দেখেন রাস্তায়। নিশাচর এর কথা শুনে তিনি ভয় পেয়ে যান এই জন্য আমাকে ইচ্ছে করে হাড়িয়ে ফেলেন। তবে এরপর থেকে আমার ওপর নজর ও রাখেন। আমি যেন সেফলি ঐ বাড়িতে থাকি তাই পুলিশের মাধ্যমে মিস্টার আলমকে ভয় দেখালেন। যাতে আমাকে তার বাড়িতে রাখে।
এইটুকু বলে মেহবিন থেমে শেখ শাহনাওয়াজ এর দিকে তাকিয়ে বলল,,
‘কি ঠিক বললাম তো? এই গল্পটাই তো শুনিয়েছিলেন আমাকে।”
শেখ শাহনাওয়াজ মেয়ের দিকে তাকালেন তা মেহবিন উল্টো দিকে ঘুরে গেল। আর বলল,,
“অনেক হয়েছে এবার শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। আর শেখ আমজাদ আপনাকে তো একটা কথা বলতেই ভুলে গেছি। আপনার ছেলের এই অবস্থার জন্য দায়ী কিন্তু আরিফ জামান?
~চলবে,,
বিঃদ্রঃ বাপরে বাপ আমি হাপায় গেছি। বাকিটুকু না হয় কাল দেওয়া যাবে আবার। গল্পটা রহস্যের শেষ প্রান্তে কিন্তু আপনাদের কমেন্ট দেখে আমি হতাশ। কেউ তেমনভাবে কোন মতামত দিচ্ছেন না। আজ কিন্তু সবার গঠনমুলক মন্তব্য চাই।