যার_কথা_ভাসে_মেঘলা_বাতাসে #পর্ব_১২ #তাসমিয়া_তাসনিন_প্রিয়া

0
338

#যার_কথা_ভাসে_মেঘলা_বাতাসে
#পর্ব_১২
#তাসমিয়া_তাসনিন_প্রিয়া

(প্রাপ্তবয়স্ক ও মুক্তমনাদের জন্য উন্মুক্ত।)

” কিচ্ছু হয়নি কন্ঠ। শান্ত হ। আমি আছি।”
কন্ঠ ইফতির দিকে তাকিয়ে হুট করে জড়িয়ে ধরলো তাকে। ইফতি মাথায় হাত ছোঁয়াতেই জোরে কান্না শুরু করলো কন্ঠ। ইফতিও ফ্লোরে বসে কন্ঠকে সামলানোর চেষ্টা করতে লাগলো। কান্নারা যেনো ইফতির আশকারা পেয়ে আরও বেড়ে গেলো। মিনিট দশেক পরে ইফতি কন্ঠর হাত ধরে দাঁড় করালো। চোখেমুখে নোনাজল কন্ঠর,নাকে সর্দি। ইফতি আশেপাশে তাকিয়ে কিছু না পেয়ে নিজের টি-শার্ট দিয়েই সর্দি মুছিয়ে দিতে চাইলো। কিন্তু কন্ঠর ইতস্তত লাগলো বেশ। অন্য সময় হলে নিশ্চিত সর্দি নিয়ে হেসে লুটোপুটি খেতো ইফতি। কন্ঠ ইফতিকে বসার ঘরে রেখেই দৌড়ে নিজের রুমে গেলো। সদরদরজা বন্ধ করে ইফতিও কন্ঠর ঘরের দিকে পা বাড়ালো। কন্ঠ ততক্ষণে বাথরুমে ঢুকেছে চোখমুখ ধুয়ে ফ্রেশ হতে। ইফতি বিছানায় বসলো। এসেছিল কী জিজ্ঞেস করতে আর এসে কী দেখলো! মন মানসিকতা খারাপ হয়ে গেলো কন্ঠর। কন্ঠ সামনে ছিল বলেই প্রহরকে ছেড়ে দিয়েছে ইফতি। এরচেয়ে বেশি আঘাত করলে কন্ঠ সহ্য করতে পারতো না ভেবেই এই ছেড়ে দেওয়া।
” ওভাবে বসে বসে কী ভাবছো? ”
হঠাৎ কন্ঠর কথা শুনে চমকে উঠলো ইফতি। ওড়না দিয়ে মুখশ্রী মুছে নিলো সে। ইফতি ইশারায় কন্ঠকে তার পাশে বসতে বললো। কন্ঠ নির্দিষ্ট সীমানা বজায় রেখে বসলো। কন্ঠ যে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করছে সেটা ইফতি বুঝতে পারছে। তাই ইফতিও একটু আগে ঘটে যাওয়া ঘটনা সম্পূর্ণ ভুলে যাওয়ার মতোই ভান করবে।
” কন্ঠ আমি আসলে আমাদের বিষয় কিছু কথা বলতে এসেছিলাম। তোর কি সময় হবে? ”
” হ্যাঁ বলো।”
” আমি জানি তোর মনের অবস্থা কেমন। আর কেনো বিয়ে করতে রাজি হয়েছিস সেটাও জানি।”

“তাহলে কী জানো না?”
কন্ঠ নিরস কন্ঠে শুধালো। ইফতি মায়াভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে কন্ঠর দিকে। মনের মধ্যে যে কী নিদারুণ ঝড় বয়ে যাচ্ছে সেটা চোখ দেখেই আন্দাজ করতে পারছে শ্যামবর্ণ পুরুষ।
” যেটা জানি না সেটা হলো তুই কি কখনো আমাকে ভালোবাসতে পারবি? বিয়ে করলে ভালোবাসতে হবে এমন ব্যাপার না। কিন্তু সারাজীবনে একদিনের জন্যও কি আমি তোর মনের একছত্র অধিপত্যে থাকতে পারবো কন্ঠ?”
” একসাথে থাকতে থাকতে না-কি ভালোবাসা হয়ে যায়? আমি জানি না আমি কখনো আর কাউকে ভালোবাসতে পারবো কি-না। কিন্তু একজন আদর্শ স্ত্রী হিসেবে সকল দায়িত্ব পালন করবো। তুমি ভেবো না এসব। বাবা-মা আর চাচ্চু,চাচিকে খুশি দেখলে আমিও খুশি। ”
” আমি আমার সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করবো তোকে খুশি রাখার। তুই শুধু একটু সঙ্গ দিস। ব্যাস!”
কন্ঠ ম্লান হাসলো। ইফতি দীর্ঘশ্বাস ফেলে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো। প্রহরকে আজকের ঘটনার জন্য মূল্য চোকাতে হবে – এটা ভাবতে ভাবতে পাড়ার মোড়ের চায়ের দোকানে গিয়ে বসে ইফতি।

দুই পরিবারের সম্মতিতে এক সপ্তাহ পরে কন্ঠ ও ইফতির বিয়ে ঠিক হয়েছে। ইফতির জীবনের সবচেয়ে আনন্দের অনুভূতি হচ্ছে কন্ঠকে বিয়ে করা। কিন্তু তবুও সেই আনন্দ উদযাপন করতে পারছে না। বিয়ে বাড়িতে অনেক কাজ। এরমধ্যে বাসায় বসে নিশ্চয়ই শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়ানো সম্ভব নয়। আবার ওদের না পড়ালেও বারবার বিরক্ত করবে। তাই একপ্রকার বিরক্ত হয়ে কলেজে গিয়ে সকাল সকাল পড়াবে ইফতি।

ভোরের আলো ফুটেছে চারদিকে। আজকাল প্রায় কুয়াশা থাকলেও মাঝে মধ্যে সকাল সকাল রোদ উঠে। আজকেও তেমনই রোদের আভাস মিলেছে। জানালার পর্দা সরিয়ে ঘরে আলো প্রবেশ করানোর চেষ্টা করছে সমুদ্র। জানালা বন্ধ থাকলে ঘরটা বড্ড অন্ধকার হয়ে থাকে। বিনা ঘুমোচ্ছে এখনো। সমুদ্র বিনার ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে জানালার পর্দাগুলো বারবার এদিক-সেদিক সরাতে লাগলো। কিছুক্ষণের মধ্যেই বিনার ঘুম আলগা হয়ে গেছে। চোখ পিটপিট করে তাকিয়ে দেখে সমুদ্র জানালার পাশে দাঁড়িয়ে ঠোঁট টিপে টিপে হাসছে। বিনার তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাব কাটতেই বিছানা থেকে নামলো সে। সকাল ছয়টার সময় কেনো এভাবে দুষ্টমি করে ঘুম ভাঙালো সেই জবাব দিতে হবে সমুদ্র সাহেবকে। বিনাকে উঠে আসতে দেখে সমুদ্র জানালার পর্দা সরিয়ে রেখে সোজা হয়ে দাঁড়ালো।
” এটা কী হলো? এভাবে ঘুম নষ্ট করলেন কেনো সমুদ্র সাহেব? ”
” সমুদ্র সাহেবের সাহেবা কি রাগ করলো নাকি?”
” তো রাগ করবে না কি সোহাগ করবে? সকাল সকাল ঘুমটা ভাঙিয়ে দিলেন। ”
সমুদ্র আচমকা বিনার হাত ধরে টেনে বক্ষে জড়িয়ে ধরলো তাকে। বিনা চকিতে নড়েচড়ে উঠলো। ইদানীং হুটহাট এভাবেই স্পর্শ করে ফেলে লোকটা।
” এখন সোহাগ করো। কপালে কিস করো একটা, বেশি না কিন্তু! ”
” বেশি জোটানো তো দূর একটাও তো জুটবে না। ছাড়ুন বলছি।”
” সব সময় এমন ছাড়ুন ছাড়ুন করো কেনো? ”
” তাহলে কি ধরতে বলবো?”
” অবশ্যই বলবে। তুমি আমার বউ। তোমাকে না ধরলে কি বাইরের মেয়েদের… ”
সমুদ্র বাক্য শেষ করার আগেই বিনা হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে সমুদ্রর। সমুদ্রর ঠোঁটের কোণে হাসির রেখা ফুটে উঠে। মেয়েটা তাহলে ভালোবাসে তাকে। এজন্যই এরকম জেলাস হলো।
” কোনো মেয়েদের কাছে যাবেন না।”
সমুদ্র বিনার হাতে এই অবস্থাতেই কিস করাতে দ্রুত হাত সরিয়ে ফেললো বিনা। সমুদ্র বিনার কোমরে হাত দিয়ে আরও কাছাকাছি নিয়ে এলো তাকে।
” তাহলে বউয়ের কাছাকাছি যাই?”
সমুদ্র কেমন নেশা নেশা কন্ঠে বললো কথাটা। কেমন যেনো ঝিম ধরে গেছে বিনার মস্তিষ্কে। সমুদ্র বিনার ওষ্ঠে ওষ্ঠ ছুঁইয়ে দিতে চাইলে বিনা হুট করে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিলো।
” সব সময় শুধু এসব অসভ্যতা। আমি গেলাম রান্নাঘরে। আজকে আমাদের পাহাড়ি খাবার তৈরি করে খাওয়াবো সবাইকে। ”
” যা খেতে চাই তা খাওয়ালে না ওসব খেয়ে কী হবে ”
” সারাদিন এগুলো খাই খাই না করে একটা কোম্পানি খুলে বসুন। আর নাম দিন ‘ চুমু খাই খাই কোম্পানি!’ ”
বিনা হাসতে হাসতে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো। সমুদ্র হতাশা নিয়ে বিছানায় শুয়ে কম্বল মুড়ি দিতে দিতে বিরক্ত হয়ে বললো, ” বিয়ে করেও বউ কাছে পাচ্ছি না। কী লাভ বউ দিয়ে শীতেও যদি না জড়িয়ে ঘুমানো যায়? অসহ্য! ”

” অথৈ! তোমার সমস্যা কী? তোমার তো পড়ায় কোনো মন নেই দেখছি। ”
রাগান্বিত কন্ঠে বললো ইফতি। কথামতো ঠিক এক সপ্তাহ পড়াবে ওদের। আজকে তার দ্বিতীয় দিন। গতকালকেও অথৈকে পড়ায় অমনোযোগী দেখেছিল ইফতি। আজকেও একইরকম দেখে মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো। ওদিকে পড়ানোর জন্য পাগল করে ফেলেছে এতদিন, আর এখন পড়ায় অমনোযোগী হলে মানা যায়?
” স্যার। সরি আর অমনোযোগী হবো না।”
” স্যার আপনার না-কি সামনে বিয়ে? ”
আদিত্যের সাহস দেখে সবাই অবাক হয়েছে। তুষার আর জান্নাত তো জিহ্বা কামড়ে তাকিয়ে আছে আদিত্যর দিকে। অথৈর মন খারাপ ইফতির বিয়ের খবর শুনে। তাই আপাতত কোনো রিয়াকশন নেই ওর মধ্যে। ইফতি যে এখুনি তাদের উপর চেঁচাবে সেটা সবাই জানে, এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।
” আমার পারসোনাল বিষয় নিয়ে তোমাদের এতো ভাবনা কীসের? বিয়ে হলে অবশ্যই দাওয়াত পাবে। এখন মন দিয়ে পড়ো।”
অথৈর মনটা একটু হালকা লাগলো। বিয়ে হলে তো বলতো এখন। নয়তো রাগ দেখাতো আরো। কিন্তু কথাগুলো তো শান্তভাবে বললো ইফতি। আদিত্য মাথা নেড়ে বইয়ের দিকে দৃষ্টিপাত করলো। ইফতি মনে মনে নিজেকে শিক্ষকতা করার জন্য গালমন্দ করতে শুরু করেছে। আজকালকার ছেলেমেয়েগুলো এতো ফাজিল কেনো সেই প্রশ্নের উত্তর ইফতি পায় না।
ইফতির কথামতো বিয়েটা মোটামুটি জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে হবে। অতিরিক্ত কোনো কিছুর দরকার নেই। এসব যে কন্ঠর গলার কাঁটার মতো সেটা সবাই জানে কিন্তু ইফতি ছাড়া কেউ বোঝে না। বিয়ের জন্য টুকটাক শপিং করবে আজ। কন্ঠ,বিনা,সমুদ্র আর ইফতির যাওয়ার কথা থাকলেও কোনো এক কারণে সমুদ্র যেতে পারবে না বলে জানায়। এতে বিনার ভীষণ মন খারাপ হয়। কিন্তু সেটা প্রকাশ করে না মেয়েটা। কন্ঠ কেমন কাঠের পুতুলের মতো বিয়ের সব বিষয় সম্মতি দেয়। কিন্তু প্রাণখোলা ভাবে কিছু করতে পারে না। কন্ঠর এই নীরবতা ইফতিকে যে কতটা ভাবায় সেটা শুধু ইফতি জানে। শপিংমলে বিনাকে নিয়ে এসে আরেক বিপত্তি সৃষ্টি হয়েছে। কখনো ছেলেদের ওয়াশরুমে ঢুকে পড়ছে তো কখনো লিফটে না চড়ে দাঁড়িয়ে থাকছে। বিনার এসব কর্মকাণ্ড দেখে কন্ঠও অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
” বিনা আমাদের সাথে সাথে থাকো। প্লিজ এখানে ওখানে যেওনা। আমার ভালো লাগে না। ”
” আহ কন্ঠ! এভাবে কেনো বলছো বিনাকে? মেয়েটা তো এসব আগে দেখেনি। বিয়ের পরে তো কখনো শপিংমলে নিয়ে আসেনি ওকে।”
কন্ঠ চোখ বন্ধ করে একটা লম্বা শ্বাস নিলো। আসলে নিজে ভালো না থাকলে আশেপাশের মানুষকেও ভালো রাখা যায় না। নিজের প্রতি নিজের বিতৃষ্ণা এসে গেছে বলে অন্যর প্রতিও অল্পতে বিরক্তি এসে যায় কন্ঠর।
” বিনা সরি। তুমি কিছু মনে করো না।”
বিনা একগাল হেসে কন্ঠর দিকে তাকিয়ে বলে,
” কী যে বলো কন্ঠ আপা এতটুকু কথায় আমার মন খারাপ হবে? কতো কটুকথা ছোটো থেকে শুনতে শুনতে বড়ো হলাম! তাছাড়া আমি তো জানি তোমার মনের অবস্থা কেমন। ”
কন্ঠ বিনার মাথায় আলতো করে হাত ছুঁইয়ে দিলো।
” শাড়ি তো কেনা হলো এখন চলো ওইদিকে কিছু থ্রিপিস কিনবো।”
” ভাইয়া আমার একটা কালো রঙের থ্রিপিস লাগবে। ”
বিনা সবগুলো দাঁত বের করে চমৎকার একটা হাসি দিয়ে ইফতিকে বললো।
” ঠিক আছে। কন্ঠ চল।”
তিনজনে শাড়ির দোকান পেরিয়ে থ্রিপিসের দোকানে গেলো। বিনা কালো রঙের থ্রিপিসের সাথে মেরুন আর লাল রঙেরও দু’টো থ্রিপিস নিলো। কন্ঠকে কিছু জিজ্ঞেস করে না ইফতি। ইফতি জানে কন্ঠর পছন্দ-অপছন্দের কথা। তাছাড়া এই মুহুর্তে এসব জিজ্ঞেস করলেও কন্ঠ কিছু বলতো না। তাই নিজের মতো করে সবকিছু কেনাকাটা করে নিলো ইফতি। কন্ঠ মাঝে মধ্যে ইফতিকে নিয়ে ভাবনার অতলে তলিয়ে যায়। এই মানুষটা বাইরে কতটা গম্ভীর অথচ ভেতর ভেতর কতটা নরম! ছোটো থেকে দেখেও সেসব কন্ঠ এতদিন বুঝতে পারেনি। ইফতি ভাইয়া মানেই একটা জলজ্যান্ত বর্বর লোক বলেই মনে হতো তার।
” এক্সকিউজ মি আপু,আপনি কন্ঠ না?”
হঠাৎ পেছন থেকে কারো বাক্যালাপে সবাই সেদিকে দেখলো একজন সুন্দরী মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কন্ঠ ভালো করে দেখে অন্য দিকে চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই মেয়েটি আবারও বলে উঠে,
” প্লিজ আপু যাবেন না। আমি আপনার সাথে কথা বলতে চাই!”
শপিংমলের পাশের কফিশপে বসে আছে কন্ঠ ও ঐশী। বিনা আর ইফতিও আছে তবে অন্য দিকে। আসলে ইফতি চায় কন্ঠ সব সময় কম্ফোর্ট ফিল করুক।
” হ্যাঁ বলুন কী বলবেন। ”
” আপু প্রহর সেদিন আপনার কাছে গিয়েছিল বলে আমি অনেক ঝামেলা করেছি। আপনি নিশ্চিত থাকুন ও কখনো আর আপনার কাছে যাবে না কালকে আমাদের ম্যারেজ রেজিষ্ট্রি হবে।”
” এসব আমাকে কেনো শোনাচ্ছেন ঐশী?”
” যাতে আপনি প্রহরকে আরো ঘৃণা করতে পারেন এবং নিজের জীবন সুন্দর করে সাজাতে পারেন। আর হ্যাঁ আমি মা হতে চলেছি। প্রহর এতটাই খারাপ লোক যে নিজের সন্তানকে পর্যন্ত অস্বীকার করতে চেয়েছে। ”
কন্ঠর বুকের বামপাশে কেমন চিনচিন ব্যথা অনুভব করলো। কেমন যেনো লাগছে শরীর। কোনো কথা বললো না কন্ঠ। ঐশী ফের কথার খেই ধরলো,
” আমি জানি প্রহর একা অপরাধ করেনি। আমিও করেছি। বৈবাহিক সম্পর্কের আগে এরকম অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত হওয়া মোটেও উচিত হয়নি। আমি ভুল করেছি। আর সেই ভুলের মাশুল দিতে হবে আজীবন ওর মতো মানুষের সাথে থেকে। তবে প্রহরের মতো ছেলেদের জন্য আমার মতো মেয়েরাই পারফেক্ট। আপনি স্নিগ্ধ সুন্দর মানুষ। দেখবেন আপনি একদিন সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া আদায় করবেন প্রহরকে আপনার জীবন থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য। ”
” ধন্যবাদ ঐশী। কফি শেষ, এখন আসি? আর হ্যাঁ আপনাদের নতুন জীবনের জন্য শুভকামনা রইলো। বেবির জন্য দোয়া। চারদিন পরে আমারও বিয়ে। আপনারা আসবেন। ”
ঐশীকে আর কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে কন্ঠ দ্রুত কফিশপ থেকে প্রস্থান করলো। ইফতি আর বিনাও পেছন পেছন বের হলো। সারাদিন কেনাকাটা শেষে মাগরিবের আগে আগে বাসায় ফিরলো তিনজন। সারাদিন সমুদ্রর কী কাজ ছিল সেই নিয়ে আবার বিনার চিন্তা হচ্ছে। বাসায় ফিরেই শ্বাশুড়ির কাছে গিয়ে দাঁড়ায় বিনা। শায়লা মল্লিক হাতের কাজ করতে করতে বিনার দিকে দৃষ্টিপাত করলো।
” কী হয়েছে বিনা?”
” আম্মা আপনার ছেলে ফিরবে কখন আপনাকে কিছু বলেছে? ”
শায়লা মল্লিক মুচকি হাসলেন তবে যতটা সম্ভব লুকিয়ে। বিনা যে আর পাঁচটা মেয়ের মতো বুঝেশুঝে কথা বলতে পারে না সেটা উনি জানেন।
” আমাকে তো কিছু বলেনি বিনা। তুমি বরং কল দিয়ে দেখো। আমার ফোন ঘরে রাখা আছে। আজকে সমুদ্র ফিরুক, তোমার জন্য একটা ফোন কিনতে বলবো।”
” না আম্মা আমার ফোন লাগবে না। আপনি একটু কল দিয়ে দেখবেন? আমি তো ওসব ভালো বুঝি না। তবে শিখে নিবো। পরের বার আর আপনাকে বিরক্ত করবো না।”
” ধুর! বোকা মেয়ে বিরক্তি কীসের? কল তো দিবো আমার ছেলের কাছেই। মনে হয় বন্ধুদের নিয়ে ব্যস্ত আছে। কালকে বলছিল না কার যেনো বিয়ে? ”
” ওহ হ্যাঁ! ভুলে গিয়েছিলাম আম্মা। ”
” ঠিক আছে। চলো তবুও কল দিয়ে দেখি।”
চলবে,

বানান ভুল গেলে মাফ করবেন। সময় সল্পতার জন্য দ্বিতীয় বার এডিট করার সুযোগ হয় না। কেমন হয়েছে জানাবেন অবশ্যই। গল্প সাথে সাথে পেতে পেইজ ফলো দিয়ে ফেভারিট করে রাখুন।
আগের পর্বের লিংক https://www.facebook.com/100080128645410/posts/391958656818419/
পরের পর্বের লিংক https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=393836883297263&id=100080128645410&mibextid=2JQ9oc

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here