বেলী_ফুলের_সুবাস #পর্ব :১৮ #মেঘকন্যা (ছদ্মনাম)

0
409

#বেলী_ফুলের_সুবাস
#পর্ব :১৮
#মেঘকন্যা (ছদ্মনাম)

রাত এগারোটা সকলে জেগে আছে কারণ প্রথমত বিয়ে বাড়ি তার উপর আবার বেলীর জন্মদিন। বেলীকে সারপ্রাইজ দিবে বলে ঠিক করেছে তারা।রাত বারোটা হুড়মুড়িয়ে সকলে বেলীর ঘরে যেয়ে তাকে উইশ করলো।বসার ঘরেকে সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।বেলী কেক কাটলো।সকলের মুখে তুলে কেক খাইয়ে দিলেও সুবাসের দিকে একবার তাকালো না পর্যন্ত।সুবাস কারণটাও বুজতে পারলো।তার প্রেয়সী যে তার উপর প্রচণ্ড ক্ষেপে আছে তা বুঝাই যাচ্ছে।যাক প্রেয়সী তাহলে তার প্রতি কিছু অনুভব করছে।রূমে এসে শুয়ে পড়লো বেলী। তা দেখে সুবাস বেলীকে ধরে টেনে বসিয়ে দিলো।
-আমি জানি তুমি তখনকার ঘটনার জন্য রেগে আছো।
…..
-আরে বাবা আমি কেনো বিয়ে করবো?যেখানে তুমি আছো।আমি তো শুধু মজা করেছিলাম।আচ্ছা আই এম সরি বউ।প্লীজ বউ রাগ করো না।
….
– আই আম রেলি ভেরি সরি। প্লিজ মাফ করে দাও।নেক্সট টাইম থেকে আর বলবো না।প্লীজ আমার সাথে কথা বলো।আমার দিকে তাকাও বউ

এবার বেলী কেঁদে দিলো।দু চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পরলো।সুবাস ভীষণ অবাক হলো।কান্না করছে কেনো এই মেয়ে?
-তুমি কান্না করো না প্লীজ। আই এম সরি।আর বলবো না এমন কথা।

-আপনি জানেন আমি খুব কষ্ট পেয়েছি। আপনি এভাবে বলতে পারলেন এমন কথা? আমি কি আপনার বউ না?আমি কি আপনার কেউ না?আমাকে কি একটুও ভালো লাগে না? আপনি আমাকে একটুও ভালোবাসেন না।যদি ভালোবাসতেন তাহলে এমন কথা বলতেন না।মানুষ সত্যি বলে বউ পুরনো হয়ে গেলে ছেলেরা বিয়ে করতে চায়। বউকে তখন ভালো লাগে না।তখন নতুন কেউ কে ভালো লাগে।ওই যে বলে না পুরনো হয়ে গেলে গুরুত্ব কমে যায়।এক কাজ করেন আমাকে ডি*ভোর্স দিয়ে…..

আর কিছু বলার আগেই বেলীর ঠোটের মাঝে সুবাস নিজের ঠোট গুজে দিলো।এত দ্রুত ঘটনায় বেলী চমকে গেলো।বেলী দু হাতে সুবাসের চুল খামচে ধরলো।সুবাসের হাত বিচরণ করছে বেলীর পিঠ জুড়ে।বেলীর পুরো শরীরে বিদ্যুৎ গতিতে শিহরণ খেলে গেলো।সুবাস হাতের স্পর্শ অবাধ্য থেকে অবাধ্য হতে লাগলো।বেলী বাচ্চাদের মতো ছুটো ছুটি করতে শুরু করলো।সুবাস আরো বেলীকে নিজের সাথে চেপে ধরলো।বেশ কয়েক মিনিট পর ছেড়ে দিলো।বেলী হাঁপাতে লাগলো।বেলীর গাল লজ্জায় পুরো লাল হয়ে আছে।লজ্জায় সুবাসকে জড়িয়ে ধরলো বেলী।সুবাস বেলীর মুখ নিজের দিকে তুললো।বেলী এখনো নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।সুবাস বেলীর কপালে চুমু খেয়ে বললো
-গিফট নিবে না?
বেলী চোখ তুলে তাকালো।সুবাস বেলীকে ছেড়ে দিয়ে আলমারি থেকে একটা শপিং ব্যাগ বেলীর হাতে দিলো।

-রেডি হয়ে ম্যাসেজ দিও।আমি বারেন্দায় আছি।

বলেই সুবাস বারান্দায় চলে গেলো।বেলী ব্যাগ খুলে দেখলো কালো রঙের জামদানি শাড়ি।ম্যাচিং করে সব কিছু আছে।বেলী তাড়াতাড়ি করে রেডি হয়ে নিলো।রেডি তো হলো ঠিক আছে কিন্তু এখন লজ্জা লাগছে। কিভাবে ম্যাসেজ দিবে ?
– তুমি কি রেডি হয়েছো?
সুবাসের ম্যাসেজ এলো।
-হুম।
বেলী শুধু এতটুকু উত্তর দিলো।
সুবাস ঘরে এলো।বেলীর দিকে তাকালো।কি সুন্দর লাগছে মেয়েটাকে।কি সুন্দর লাগছে।ফর্সা দেহে কালো রং কি সুন্দর মানিয়েছে।বেলীর চোখে মুখে লজ্জার ছাপ।নিচের দিকে তাকিয়ে আছে বেলী।বেলীর কাছাকাছি গিয়ে দাঁড়ালো সুবাস।চোখ দুটো বেলীতে নিবদ্ধ।

-খুব সুন্দর লাগছে তোমাকে।একদম পরী মনে হচ্ছে।
বেলী চোখ তুলে তাকালো না।লজ্জায় চোখ তুলতে পারছে না বেলী।কেমন যেন সব কিছু গুলিয়ে যাচ্ছে।বুকের ভিতর দুক দুক করছে।সুবাস তাদের দূরত্ব কমিয়ে আরো কাছে এলো বেলীর।এক হাতের বেলীর কোমর জড়িয়ে ধরলো।অন্য হাতে বেলীর থুতনী উচু করে মুখ তুললো।
-আমার দিকে তাকাও বেলী
এবার বেলী তাকালো ।এই কন্ঠ কে উপেক্ষা করার সাধ্য নেই বেলীর ।কেমন ঠান্ডা স্বর।কিছু একটা আছে এই স্বরে।এই কন্ঠ যেনো বেলীর পুরো ব’দ’ন নিস্তব্ধ করে দিচ্ছে। বেলী সুবাসের চোখে চোখ রাখলো।চোখের ভাষা গভীর।এই চোখের ভাষা পড়ার সাধ্য নেই বেলীর।সুবাস বেলীর কপালে চু’মু খেলো। বেলীকে নিজের সাথে আরো একটু নিবিড় করে নিলো।বেলীর গালে পর পর কয়েকটা চু’মু খেলো।বেলীর কানে নিজের ওষ্ঠ ছুঁইয়ে বললো।

-”আমার হৃদয়ে ঝড় তোলার জন্য এই দায় কে নেবে কন্যা?আপনি নিবেন?শান্ত করতে পারবেন এই ঝড়?এই ঝড়ে নিজেকে বিলীন করতে পারবেন?”
……….

বেলী কোনো কথা বললো না।একেতো এমন ঘোর লাগানো কন্ঠ তার উপর আবার আপনি সম্বোধন।বেলীর মুখ দিয়ে চেয়েও কিছু বের হচ্ছে না।বেলীকে পাঁজা কোলে তুলে নিলো সুবাস।বারান্দায় ডিভানে বসিয়ে নিজে পাশে বসলো।
-জানো আমার অনেক শখ ছিল নিজের ব্যক্তিগত সম্পদ নিয়ে চাঁদ দেখবো।
-ব্যক্তিগত সম্পদ?
-আমার বউ।আমার একান্ত ব্যক্তিগত সম্পদ।
বেলী হাসলো কি বলে এই লোক।বউ নাকি সম্পদ।বেলী নাকি তার সম্পদ।বেলী মিহি কণ্ঠে বললো।
– ওহ তাই
– মানুষ মুগ্ধ হয় চাঁদ দেখে আর আমি বারংবার,প্রতিবার,হাজার বার ,শতবার তোমায় দেখে মুগ্ধ হই প্রেয়সী।এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তোমাতেই মুগ্ধ ও নিবদ্ধ থাকতে চাই।

বেলী হাসলো।বেলীর হাসি দেখে হাসলো সুবাস। পকেট থেকে একটা ছোট্ট বক্স বের করলো।একটা ডায়মন্ডের রিং। সুবাস যত্ন সহকারে বেলীর অনামিকা আঙ্গুলে রিং পরিয়ে চু’মু খেলো।বেলী শুধু সুবাসের কাণ্ড দেখছে।কি করছে এই লোক?বেলী যতো এই লোককে দেখছে ততই মুগ্ধ হচ্ছে।আগের সুবাসের সাথে এই সুবাসের খুব বেশি পার্থক্য।
-বিয়েটা এমন ভাবে হয়েছে যে কিছুই করা হয় নি।তাই আজ রিং পরিয়ে দিলাম যাতে সকলে বুজতে পারে তুমি সুবাসের বেলী। সুবাসের নামে লিখিত সুবাসের বউ।
বেলী আবার হাসলো।বেলী সুবাসের কাধে মাথা রাখলো।আগে এই লোককে একটুও ভালো লাগতো না ।এখন এই লোকের সাথে থাকলে প্রশান্তি অনুভব হয়।সময় কত জলদি সবকিছু বদলে দেয় তাই না?সব কিছু কত সুন্দর করে সাজিয়ে দেয় সময়।একটা অপরিপক্ক, নড়বড়ে,নিস্তেজ সম্পর্ক কে কত সুন্দর পরিপক্ক,সতেজ,প্রাণবন্ত করে দেয় সময় তাই না?
-কি ভাবছো বেলী
-নাহ কিছু না তো
চলো ঘুমাবো
বলেই বেলীকে কোলে তুলে নিলো সুবাস।বেলীকে বেডে শুইয়ে নিজের সম্পূর্ণ ভার বেলীর উপর ছেড়ে দিলো। বেলীর ঠোটের কাছে নিজের ঠোট নিতেই বেলী চোখ বন্ধ করে নিলো।বেলীর এই সুবাসকে দেখার সাহস নেই বেলীর ঠোঁট জোড়া কাপছে।সুবাস হাসলো।বেলীর কানের কাছে নিয়ে মিহি কণ্ঠে বললো

-শুনো কন্যা, তোমার অনুমতি ব্যতীত আমি কিছু করবো না।যতদিন না বেলী নিজেকে তৈরি করছে সুবাসকে আগলে নিতে ততদিন এই সুবাস নিজেকে ধরে রাখবে।

বলেই বেলীর গলায় মুখ গুজে দিল সুবাস।নিজের ঠোটের বিচরণ বেলীর গলায় চালিয়ে বেলীকে জড়িয়ে ধরে গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলো সুবাস।বেলী সুবাসের দিকে তাকিয়ে হাসলো।সুবাসের দিকে তাকিয়ে এই প্রথম সুবাসের গালে চুমু খেল বেলী।নিজের কাজে নিজেই লজ্জা পেলো।কি সুন্দর করে ঘুমাচ্ছে।দেখতে এতো স্নিগ্ধ লাগছে কেন?কে বলবে এই লোক বেলীর থেকে নয় বছরের বড়?মুখে চাপ দাড়ি, জোড়া ভ্রু, সরু নাক সব কিছু পারফেক্ট। আটাশ বছরের এক যুবক। এসব ভাবতে ভাবতে কিছুক্ষণ পর বেলী ও গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলো।
(আসসালামুওয়ালাইকুম।কেমন আছেন সবাই।সবাইকে ধন্যবাদ এতো সাপোর্ট করার জন্য।ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা সুলভ দৃষ্টিতে দেখবেন।ভালো লাগল অবশ্যই কমেন্ট এবং শেয়ার করবেন।)
চলবে……?
হ্যাপি রিডিং

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here