#পারবনা আমি ছাড়তে তোকে ❤❤
#লেখিকাঃ লামিয়া ইসলাম তন্নি ❤
#পর্বঃ ৩৪❤
.
.
হঠাৎ করেই আমাকে হেঁচকা টানে বিছানা থেকে তুলে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলেন৷ ঘটনায় আমি যতটা না লজ্জা পেয়েছি তার থেকেও বেশি অবাক হয়েছি। কি নির্লজ্জ ছেলেরে বাবা দিনে দুপুরে একটা মেয়েকে অসভ্যর মতো জড়িয়ে ধরে! অদ্ভুত!
.
—- ছিঃহ্! আপনি এতটা অসভ্য জানা ছিল না। ছাড়ুন আমায়!
.
আমার কথা শুনে সূর্য চোখ লাল করে আমার দিকে তাকালেন। ঝাঁঝালো কণ্ঠে বললেন……..
.
—- কি বললি? আমি অসভ্য?
.
—- তার থেকে তো কম কিছু মনে হচ্ছে না! ছাড়ুন আমাকে!
.
—- আমি অসভ্যর কি করেছি?
.
—- কি করেন নি? এখনও করছেন?
.
এবার যেন উনার রাগ আরও বেড়ে গেছে। দাঁতে দাঁত চেপে বলল……….
.
—- কি করেছি সেটা তো বলবে বাবু!
.
—- ছিঃহ্! এতক্ষণ তো অসভ্য ছিলেন এখন তো তার থেকেও বড় কিছু মনে হচ্ছে! কিসব বাজে ওয়ার্ড ইউজ করছেন? ভাবতেই গা গোলাচ্ছে! ছিঃহ্!
.
—- কি বললি? (আমার কোমড় আরও শক্ত করে চেপে ধরে।)
.
খালি কোমড়ে উনার স্পর্শ পড়তেই কেঁপে কেঁপে উঠছি আমি। নিজেকে কোনো রকম সামলে নিয়ে কাঁপা গলায় বললাম…..
.
—- দ..দ..দেখুন ছাড়ুন প্লিজ! ঝগড়া পরে করব। আম্মুকে ডেকে দিন না প্লিজ শাড়িটা পড়ব!
.
এইটুক বলতেই উনি আমাকে ছেড়ে সোফার কাছে চলে যেতেই আমি কাঁথাটা গায়ে জড়িয়ে নিলাম। ভেবেছিলাম আমার অস্বস্তিটা বুঝতে পেরে ছেড়ে দিয়েছে। কিন্তু আমার ভাবনায এক বালতি পানি ঢেলে দিয়ে উনি সোফার উপর থেকে কাপড়টা নিয়ে আমার ঠিক সামনে এসে দাঁড়ালেন। আমি কিছু না বুঝে ভ্রু কুঁচকে উনার দিকে তাকালাম। যার অর্থ “উনি শাড়ি দিয়ে কি করবেন?”
.
কিন্তু সাদা বিলাই বলে কথা। আস্তু এক খাটাশ সোজাভাবে কি উত্তর দেয়? কথা না ঘুরালে তো তার পেটের ভাত হজম হয় না! অসভ্য একটা। কোনো উত্তর না দিয়ে আমার থেকে কাঁথাটা নিতেই চেঁচিয়ে উঠলাম!
.
—- এই আপনি আবার কি শুরু করেছেন? এসব কি? ছিঃহ্! আপনি তো দেখছি দিনকে দিন অসভ্যর চরম শীর্ষে উঠে যাচ্ছেন।
.
এবারও কোনো উত্তর দিল না! মেজাজটাই গেল খারাপ হয়ে। এসব কি? এবার আমি তেঁতে উঠলাম!
.
—- আজব! আপনাকে কিছু বলছি আমি?
.
এবারও কোনো উত্তর না দিয়ে শাড়িটা খুলে আমাকে পড়াতে নিলেই আমি এক লাফে ২-৩ পা পিছিয়ে যাই!
.
—- এই কি করছেন কি আপনি?
.
এবার উনি সরু চোখে আমার দিকে তাকালেন! আমাকে আবার আগের জায়গায় ঠিক করে দাড় করিয়ে শান্ত স্বরে বললেন……
.
—- তুই কি লাফালাফি ছাড়া কিচ্ছু জানিস না?
.
—- আজব! আমি লাফালাম কই? আপনিই তো অদ্ভুত সব কাজ করছেন।
.
—- দেব এক চড় বেয়াদব মেয়ে! আমি অদ্ভুত সব কাজ করছি?
.
—- তা নয়তো কি? আপনি শাড়ি নিয়ে কি করছেন?
.
—- শাড়ি নিযে ছেলেরা কি করে? নিশ্চয়ই নিজে পড়ে না! তো আপনাকেই পড়াবো! (দাঁতে দাঁত চেপে)
.
—- এ্যা!!!!!
.
—- অদ্ভুত! এমন করার কি হলো? (ধমক দিয়ে)
.
—- আপনি একটা ছেলে হয়ে আমাকে শাড়ি পড়াবেন? মাথা খারাপ?
.
উনি এবার ভ্রু কুঁচকে তাকালেন। আমাকে একবার দেখে নিয়ে বললেন…….
.
—- মানেহ্? তুই এমনভাবে বলছিস যেন আমি কোনো পরপুরুষ। তোকে টাচ করলে মহা ভারত অসুদ্ধ হয়ে যাবে? তুই আমার বিয়ে করা বউ।
.
—- আজব! স্বামী হলেই কি শাড়ি পড়াবেন নাকি?
.
—- অবশ্যই! যেহেতু আমি তোর স্বামী। সো শুধু শাড়ি কেন যা ইচ্ছা যখন ইচ্ছা সব করতে পারি। আমার সম্পূর্ণ হক আছে।
.
—- এহ্! আসছে আমার হক দেখাতে রে! জানি তো শাড়ি পড়ানো তো শুধু নাম। আপনার মতলব তো অন্য কিছু। সব ছেলেরা এক। মেয়ে দেখলেই তাদের গায়ে পড়তেই হবে। (মুখ ভেঙচি কেটে)
.
—- কি বললি? ছেলেদের স্বভাব খারাপ? মেয়ে দেখলেই গাযে পড়ে? ( চোখ রাঙিয়ে)
.
—- হ্যাঁ তা নয়ত কি? ( ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে) কিন্তু…. আকাশ ভাইয়া! ইশ! উনি সবার থেকে আলাদা!
.
এইটুকু বলতেই উনি যেন এবার তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলেন। আমার দু’বাহু শক্ত করে চেপে ধরে ঝাঁঝালো কণ্ঠে বললেন…….
.
—- কি করেছি তোর সাথে?
.
আমি উনার প্রশ্ন না বুঝতে পেরে ভ্রু কুঁচকে তাকালাম।
.
উনার হাতের বাঁধন আরও শক্ত হয়ে এলো। তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আবার বলতে লাগলেন……
.
—- আকাশ? না আকাশ? আসলে কি পেয়েছিসটা কি ওর মাঝে তুই? তোকে এতো করে বলার পরেও কেন বুঝতে চাস না ওকে আমার পছন্দ নয়। ওর নামটা আমার সামনে নিবিনা। শুধু ওর নাম কেন? কোনো ছেলের নামই তোর মুখে সহ্য হয়না আমার। এখানটায় দুমড়ে মুচড়ে যায়। দম বন্ধ হয়ে আসে। কেন এতো রাগ আমার উপর? কেন এতো পোড়াস বল তো? এর চেয়ে বরং মেরে ফেল না আমায়! নাহ্! তোকে তো বলেও লাভ নেই। বুঝবিনা। তুই তো এসবেই আনন্দ পাস। যাক তোকে তো খুশি রাখতে পেরেছি। এটাই অনেক!
.
এইটুক বলে আমায় ছেড়ে দিলেন উনি। কোনো এক অজানা কারণে আকাশ ভাইয়াকে উনি পছন্দ করেন না। আর আমার মুখে শুধু আকাশ কেন কোনো ছেলের নাম শুনলেই উনি এভাবে রিয়েক্ট করেন। কিন্তু এর কারণ আমি জানিনা। উনি কি কোনোভাবে জেলাস করেন? কিন্তু উনাকে রাগাতে ভীষণ মজা পাই। তবে মাঝে মাঝে যখন মজা করে রাগাতে গিয়ে কষ্ট দিয়ে ফেলি! তখন নিজেরই খুব কষ্ট হয়। নিজের উপরই রাগ লাগে।
.
—- আমি ছোট মাকে পাঠিয়ে দিচ্ছি। আমি ছাঁদে আছি তৈরি হয়ে নিচে চলে আয়।
.
কথাটা বলে উনি চলে যেতে নিলে আমি উনার বা হাতটা টেনে ধরলাম। উনার সামনে গিয়ে চোখে চোখ রেখে দাঁড়ালাম। উনি কিছু বলবেন তার আগেই বললাম…..
.
—- সরি! আর হবে না। আমি মজা করছিলাম। বুঝতে পারি নি আপনি এভাবে কষ্ট পাবেন। প্লিজ রাগ করে থাকবেন না। আমার খুব কষ্ট হয় আপনি রাগ করলে।
.
—- আমি রাগ করিনি। লেট হচ্ছে আমি যাই!
.
—- কোথায় যাচ্ছেন? আমাকে শাড়ি পড়াবে কে?
.
—- ছোট মাকে পাঠাচ্ছি বললাম তো!
.
—- না আমি আপনার কাছে পড়ব!
.
—- নাহ্! ভালো লাগছে না।
.
—- আমি সরি বললাম তো। আর হবে না সেটাও বলেছি! এরপরেও….
.
এইটুক বলতেই গলা ধরে এলো আমার৷ আর কিছু বলতে পারছিনা। কেমন যেন কষ্ট হচ্ছে! উনি অবাক চোখে তাকিয়ে আছেন। হয়তো ভাবছেন, একটু আগেই হাসিছিলাম, ঝগড়া করছিলাম এখন আবার কাঁদছি? অদ্ভুত না?
.
আসলে আমাদের জীবনটাই তো অদ্ভুত তাই নয় কি? নদীর যেমন জোয়ার ভাটা আছে,সাগরে যেমন ঢেউ আছে, পৃথিবীতে যেমন রাত দিন আছে, আকাশে যেমন চাঁদ,সূর্য, তারারা আছে! ঠিক তেমনি আমাদের জীবনেরও উথান পতন আছে। হাসি-কান্না,সুখ-দুঃখ,আনন্দ,উল্লাস,বেদনা এসবের সমন্বয়েই তো জীবন! যদি জীবনে এসবই না থাকতো তাহলে কি জীবন পরিপূর্ণ হতো? হতো না তো! আমরা কখনো হাসবো তো কখনো কাঁদব, কখনো আনন্দ করব তো কখনো ব্যথায়, কষ্টে কাতরাবো। এটাই তো প্রকৃতির নিয়ম! আর প্রকৃতির সেই অদ্ভুত সব নিয়মই তো আমরা মেনে নিতে পারিনা। কখনো খুব ভালো লাগে। কখনো তার নিয়মগুলো মেনে নিতে প্রচন্ড কষ্ট হয়! কিন্তু সে তো তার নিয়ম খন্ডাবে না! তা কি আদৌও সম্ভব?
.
সূর্যকে ভালোবাসি খুব! আজ নয় আপুর সাথে উনার রিলেশন হওয়ার আগে থেকেই। কিন্তু কখনো বলার সাহস পাইনি। যখন বলব ঠিক করলাম তখনই হয়ে গেল সব ওলট-পালট! তবুও তো নিজের কষ্টটা বুকে চেপে মেনে নিয়েছিলাম সব। কিন্তু প্রকৃতির এক নিষ্ঠুর ঝড়ো হওয়ায় সব আবার এলোমেলো করে দিল। সবার জীবন থেকে হারিয়ে গেল সুখ নামক অনুভূতিরা! সব শেষে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ভাগ্য উনার সাথেই মিলিযে দিল। কিন্তু উনি না মানতে পারলেও আমি মেনে নিয়েছি। উনাকে নিজের সবটা দিয়ে আগলে রাখতে চেয়েছি। চেয়েছি উনাকে অতীত থেকে বের করতে।ভালো রাখতে। সবসময় খুশি রাখতে। হয়তো তারই ফলস্বরূপ উনি আমাকে ছাড়তে চান না। হয়তো, সেজন্যই উনি এখন আমাকে ছাড়া নিজেকে কল্পনা করতে পারেন না। আমার মুখে অন্য কারো নাম শুনতে পারেন না। কিন্তু আমিও তো উনাকে কষ্ট দিতে কিছুই করি না! শুধু উনাকে সব সময় হাসি খুশি রাখতে চাই। চাই যাতে ফেলে আসা দিনগুলো মনে করে উনাকে চোখের জল না ফেলতে হয়!
.
আমার ভাবনার মাঝেই গালে কারো স্পর্শ পেলাম। চমকে উঠে উনার দিকে তাকালাম। উনার চোখ জোড়া টলমল করছে। মনে হচ্ছে এই বুঝি তারা বাঁধাহীন ভাবে ঝড়ে পড়বে!
.
—- কেন কাঁদছিস তুই? তোর চোখের পানি যে সহ্য হয়না আমার জানিস না?
.
—- আপনার কষ্টটা বুঝি আমার খুব সহ্য হয়?
.
—- আরে বোকা আমি কষ্ট পেলাম কই?
.
—- সরি! এই কান ধরছি এই উঠা বসা করছি..
.
কান ধরে বসতে নিলেই উনি আমাকে নিজের সাথে জড়িয়ে নেন! কান্না ভেজা স্বরে বলেন…..
.
—- হয়েছে পিচ্চিটা! আর বসতে হবেনা। এতোটা পাগলামী কেন করো আলোরাণী? আমাকে যে এসব পাগলামী নেশার মতো টানে। এসব পাগলামীতে যে আমি মরেও শান্তি পাব না! পরে পাড়বে তো সামলাতে?
.
উনি কথা শেষ করতেই ধাক্কা দিয়ে নিজের থেকে সড়িয়ে দিলাম। ঝাঁঝালো কণ্ঠে বললাম….
.
—- একদম কথা বলবেন না আমার সাথে! বেড়িয়ে যান ঘর থেকে। আপনার সাথে কথা বলার নূন্যতম ইচ্ছে আমার নেই!
.
উনি হযতো কিছু বোঝেন নি! কি থেকে কি বলছি? উনি অবাক হয়ে আমার কাছে এসে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিলেন! শান্ত স্বরে বললেন…..
.
—- কি হয়েছে আলো? এভাবে কথা বলছিস কেন? কি করেছি আমি? একটু আগেই না সব ঠিক ছিল?
.
—- কিচ্ছু ঠিক ছিল না! আপনি কিচ্ছু ঠিক রাখেন নি! আপনি স্বার্থপর। শুধু নিজেরটাই বোঝেন। অন্য কারোটা আপনার বোঝে আসেনা। কেন বোঝেনা ভালোবাসি? ভীষণ ভালোবাসি!
.
—- কে বলেছে বুঝি না? বুঝি তো!
.
—- বোঝেন না একটুও না! বুঝলে মরার কথা বলতে পারতেন না। আপনি জানেন? আপনাকে হারানোর কথা মনে পড়তেই আত্মা কেঁপে উঠে আমার। শ্বাস নিতে পারিনা। মনে হয় এই বুঝি মরে যাব। সেখানে আপনার মৃত্যু! আমি স্বপ্নেও ভাবতে পারিনা।
.
উনি হালকা হাসলেন! দু’হাতে কান ধরে হাটু গেঁড়ে আমার সামনে বসে পড়লেন। ঘারটা ডান দিকে হালকা কাত করে ছোট করে বললেন……..
.
—- সরি পিচ্চি! আর হবে না।
.
আমি উনার এসব পাগলামো খুব কমই দেখেছি। বলতে গেলে দেখিইনি! আজই প্রথম এভাবে কানে ধরে হাটু গেড়ে বসে সরি বলছে। উনার এসব ছোট ছোট কেয়ারিং,ছোট ছোট শাসন, রাগ, ছোট ছোট পাগলামোগুলো ভীষণ ভালোবাসি। আসলে এই মানুষটাকেই খুব ভালোবাসি!
.
আমি কিছু বললাম না। অভিমনটা তো নেই! কিন্তু তাকে বোঝালে তো চলবে না। বলুক!আরও কয়েকবার কান ধরুক, সরি বলুক তারপরে যা বলার বলব! ভাবতেই মনে মনে হাসিতে ফেটে পড়ছি।
.
—- আলোরাণী! সরি তো! দেখো হাঁটু ব্যথা করছে খুব। পরে যদি বিয়ে বাড়ি গিয়ে খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাঁটি তখন তো ছেলেপক্ষ বলবে মেয়ের ভাই ল্যাঙরা! তখন তো আমার দিকে কোনো মেয়েই তাকাবে না! ওদেরকে পটাবো কি করে বলো? (অসহায় মুখ করে)
.
উনার কথা শুনে আমি তেতে উঠলাম! উনার পাঞ্জাবির কলার ধরে উনাকে দাঁড় করিয়ে ঝাঁঝালো কণ্ঠে বললাম……
.
—- কি? কি বললেন আপনি?
.
—- কেন বাবু শুনতে পাওনি ?
.
—- এই এসব অসভ্যর মতো ওয়ার্ড ইউজ করবেন না একদম!
.
—- তাহলে কি বলবো বেবি?
.
—- ছিঃহ্! কিসব বাজে ওয়ার্ড ইউজ করছেন আপনি? কার থেকে শিখেছেন এসব?
.
—- কই কারো থেকে না তো!
.
—- তাহলে এগুলো কই পেলেন?
.
—- দাঁড়াও বেবি ভেবে দেখি। মনে পড়ছে না তো!
.
—- আবার? (দাঁতে দাঁত চেপে)
.
—- আচ্ছা তোমাকে এগুলো বলব না বাবু! আমি বরং নাজনিন, শাফিয়া ওদেরকে বলব। ইশ! কত্তো হট ওরা!
.
উনার এই কথা শুনে যেন রাগে আমার সারা শরীর জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে!
.
—- কি বললেন?
.
—- কেন শুনো নি? (অন্যদিকে তাকিয়ে)
.
—- নাহ্! আবার বলুন! (দাঁতে দাঁত চেপে)
.
—- নাজনিন, শফিয়া ওরা খুব সুন্দর! ইন্ডিয়ান নায়িকাদের মতো হট! দেখলেই ইচ্ছে করে প্রেমে পড়ি!
.
উনি এইটুক বলতেই উনার কলারটা ছেড়ে দিয়ে সড়ে যেতে নিতেই উনি দু’হাতে কোমড় জড়িয়ে নেন! আমি ছাড়ানোর বৃথা চেষ্টা করেও সফল না হয়ে শান্ত স্বরে বললাম….
.
—- ছাড়ুন আমাকে! মাথাটা ব্যথা করছে একটু ঘুমাবো।
.
—- ওহ্! তোর ঘুম পেয়েছে? কিন্তু আমার তো এখন ছাড়তে ইচ্ছে করছেনা।
.
—- মানেহ্?
.
—- মানে আমার ইচ্ছে করছে না তোকে ছেড়ে দিতে। আমারও এখন খুব ইচ্ছে করছে তোকে এভাবে ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে।
.
উনার কথা শুনে মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেল। তবুও নিজেকে কন্ট্রোল করে শান্ত স্বরে বললাম…..
.
—- এসব নেকামো রেখে আপনি বরং নিচে যান! নিচে সবাই আপনাকে খুঁজছে হয়তো। স্পেশালি, আপনার ঐ হট গার্লফ্রেন্ডরা! আপনি বরং ওদের সাথে টাইম স্পেন্ড করুন। আমি একটু ঘুমাই। আমার খুব ঘুম পাচ্ছে।
.
এইটুকু বলে কোমড় থেকে উনার হাতটা নামিয়ে দিয়ে বিছানার দিকে এগিয়ে যেতেই উনি আবার আমার ডান হাতটা চেপে ধরলেন। ঘটনায় আমার ভীষণ রাগ লাগছে। একে তো অন্য মেয়ের প্রেমে পড়ার কথা বলে আবার কিসব বাজে ওয়ার্ড ইউজ করে। আমি কিছু বললাম না শুধু চোখ রাঙিয়ে উনার দিকে তাকালাম!
.
—- ওহ্ তাই নাকি? তোর ঘুম পাচ্ছে সত্যি? আচ্ছা তাহলে ঘুমা!
.
এইটুক বলে হাতটা ছেড়ে দিতেই যেইনা বিছানায় বসব ঠিক তখনই বলল…..
.
—- এই দাঁড়া! আমি কেমন যেন একটা পোড়া গন্ধ পাচ্ছি ! তুই কি পাচ্ছিস বলতো ?
.
—- মানে? কিসের পোড়া গন্ধ? (অবাক হয়ে)
.
—- এইযে! এই ধর কারো মন পুড়লে যেমন গন্ধ আসে, ঐরকম!
.
উনার কথার কোনো মানে না বুঝে আমি কয়েক সেকেন্ড স্ট্যাচু হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম। কথাটা বুঝে আসতেই আমি হুহা করে হেসে উঠলাম! হাসতে হাসতে আমি বিছানায় গিয়ে বসে পড়লাম। হাসিতে আমার পেট ফেটে যাওয়ার উপক্রম! মন পুড়লে নাকি গন্ধ বের হয়! লাইক সিরিয়াসলি? আচ্ছা, মন পুড়েই বা কি করে? উনার কথায় আমার ভাবনা ছেঁদ হলো। সেই সাথে হাসিও থামলো!
.
—- ওমন করে হেসো না আলোরাণী! এখানটায় যে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে যায়! কেউ যে এখানটাতে ক্রমাগত ছুঁড়ি দিয়ে আঘাত করেই যায়। এতোটা নিষ্ঠুর হয়োনা আমার প্রাণপাখী!
.
উনার কথা শুনে আমি অবাক হয়ে গেলাম। সত্যিই তো! আমি হাসছি কেন? আমি না রেগে ছিলাম? আসলে উনিই তো আমার সব রোগের ঔষধ। মন খারাপ থাকলে উনার একটা কথাই আমার হাজারটা মন খারাপ ভুলিয়ে দেয়! সব রাগে-অভিমান, কষ্ট কোথায় পালায় নিজেই জানিনা! আর যখন উনাকে প্রযোজন পড়ে বা মন খারাপ করে উনিও যে কি করে বুঝে যান কে জানে! হয়তো এটাই ভালোবাসা!
#চলবে…….
.
[সরি গাইস! এবার লেট করে ফেলেছি ফিরতে😰। আরও কিছুট সময় নিতে চেয়েছিলাম😥। বাট পরীক্ষা এগিযে আসছে তখন তো আবার ঝামেলা হবে তাই! কিন্তু এবার আর যাচ্ছিনা! প্রতিদিন না হলেও একদিন পর পর ঠিকই গল্প দিব ইনশাল্লাহ্!
.
আর, ওহে! “পারবনা আমি ছাড়তে তোকে” প্রেমীরা! তোমরা কি পেলে এই গল্পতে? তোমাদের জ্বালায় তে শান্তিই পেলাম না! তোমাদের জন্য আমার এতো তাড়াতাড়ি ফেরা!😁 যাই হোক, গল্প পেয়ে আবার লেখিকা আফার কথা ভুললে চলবে না কিন্তু!😛 লেখিকারে ভুললে কিন্তু গল্প পাইবেন না সরি সরি গল্প পাবেন “পারবনা আমি ছাড়তে তোকে” পাবেন না 😉! সো লেখিকাকেও মনে রাখতে হবে🤗।
ভালোবাসা অবিরাম আমার প্রিয় পাঠক সমাজ❤!]