#সুখের_ঠিকানা
#শারমিন_হোসেন
#পর্ব১৫
“এক মেয়ের বিয়ে ভেঙ্গে গেলো।আবার আরেক মেয়ের বিয়ে হয়েও সেটা টিকবে কিনা?কে জানে।এমন অবস্থায় তো সমাজের লোকজন ছিঃ ছিঃ করবে।কি থেকে কি হয়ে গেলো। পরিবারে মান সম্মান সব মূহূর্তেই যেনো ধূলোয় মিশে গিয়েছে। বাইরে বের হলেই, লোকজন বিদ্রুপ করে কতকথা শোনাবে, আল্লাহ মালুম।বড় মেয়ের বিয়ে ভেঙ্গে গিয়েছে।আর তারই হবু বরের সাথে ছোটো মেয়ের বিয়ে হয়েছে। তার উপর জামাই বিয়ে মানে না। এ সমস্ত কথা হজম করা চাট্টিখানি কথা।তুইই বল।কাজের মেয়েটা বললো, আশেপাশের লোকজন নাকি এরকমটা বলাবলি শুরু করছে।সমাজে এই পরিবারের যে আভিজাত্য, সম্মান ছিলো সব একটা দূর্ঘটনায় যেনো শেষ হয়ে গেলো।তোর বাবা চাচাদেরকে সমাজের লোক কত সম্মান করতো, মান্য করতো। উফ্!এতটা বাজে পরিস্থিতি হওয়া কি খুব দরকার ছিলো?”
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে তহমিনা বেগম হতাশ হয়ে কথাগুলো বললেন। তাসনিম বিছানায় পা ঝুলিয়ে বসে ছিলো।সাথে সাথেই স্বাভাবিক ভাবে বলে উঠলো,,”ওহ্! আম্মু।থামবে এবার।তখন থেকে একই কথা বলেই চলছো।অযথা টেনশন বাদ দাও।লোকে কে কি বললো,সেটা ধরলে জীবন চলে না।একটা নির্দিষ্ট সময়ে এসে আপনা আপনি লোকের মুখ থেমে যাবে।আর কথাটা যদি যুক্তিযত না হয়।তবে আমার মনেহয়,সেইসব কথা ধরে শুধুশুধু মন খা’রাপ করে থাকার মানেই হয়না।”
একটু থেমে তহমিনা বেগমের গলা দুইহাতে জড়িয়ে ধরে। অতঃপর কোমল স্বরে বলতে থাকে,,”লোকে বাজে কথা বললে সেটা তাদের নিচু মনমানসিকতার ব্যাপার।কারন একটা দূর্ঘটনা ঘটেছে এখানে তো কারো হাত নেই।আমরা সবাই পরিস্থিতির শিকার।এটা আমাদেরকে মেনে নিতে হবে। সৃষ্টিকর্তা হয়তো এরকমটাই চেয়েছিলেন তাই হয়েছে। সৃষ্টিকর্তার উপরে তো কারোর হাত নেই।আর কথায় আছে না যা হয় হয়তো ভালোর জন্যই হয়।”
তহমিনা অবাক চাহনিতে মেয়ের দিকে তাকালেন। মেয়ের মুখায়ব আর কথা শুনে বেশ বিস্মিত হন।বিয়ে ভেঙ্গেছে এতে মেয়ের যেনো কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই। আরো কত সুন্দর করে মাকে বুঝিয়ে যাচ্ছে। তহমিনা বেগম বোকা বোকা চোখে চেয়ে প্রশ্ন করে উঠলেন,,”তুই বলছিস যা হয়েছে ভালোর জন্য হয়েছে?একটা মেয়ের বিয়ের আগের দিন বিয়ে ভেঙ্গে যাওয়া।এটা সমাজ ভালো চোখে দেখে?”
মায়ের এহেন প্রশ্নে তাসনিম একটু থতমত খায়। কিয়ৎক্ষন পরে গমগমে স্বরে বলে উঠলো,,”আহ্! আম্মু। তোমরা যদি এখনও এভাবে হা হুতাশ করে চলো।তবে লিয়ার তো আরো বেশি মন খা’রাপ করবে।তাই বলছি প্লিজ,লিয়ার দিকটা একবার ভেবে দেখো। ও বেচারি ছোটো একটা মেয়ে ওর মনের অবস্থা নিশ্চয় ভালো নয়।তাই এসব কথা বাদ দাও।এসব কথা শুনলে ওর আরো খা’রাপ লাগবে হয়তো।”
তহমিনা বেগম ঠোঁট আওড়ালেন,,”আচ্ছা হয়েছে হয়েছে মাকে আর বুঝানো লাগবে না।কথা শুনে মনে হচ্ছে খুব তো বড় হয়ে গিয়েছিস।কিছু বললেই বলবি শুধুশুধু চিন্তা করি। প্রত্যেক মায়েরাই হয়তো এমন কারনে অকারনে তাদের বাচ্চাদের জন্য চিন্তা করে।উফফ!রাত অনেক হয়েছে চল খাবার খাবি।”
কিছু মনে হতেই তাসনিম বলে উঠলো,,”লিয়া কোথায়?খাবার খেয়েছে?”
তহমিনা বেগম মুখশ্রীতে বিরক্তবোধটা ফুটিয়ে তুলে বলে উঠলেন,,”কোথায় আবার রুমেই আছে।এখনো খায়নি বোধহয়।মনেহয় না আজকে আর নিচে নামবে।আর তোর মেজো চাচিমা তো মেয়ের উপর বেশ চটে আছে।মেয়ে তার একরোখা জিদ ধরে থাকায়।”
তাসনিম মাকে ছেড়ে সোজা হয়ে দাঁড়াতে দাঁড়াতে বলতে থাকে,,”আচ্ছা। ঠিক আছে আমি আগে লিয়ার সাথে কথা বলে নেই। আম্মু তুমি লিয়ার খাবারটা একটু উপরে পাঠিয়ে দিও তো প্লিজ।”
তহমিনা বেগম আচ্ছা বলে রুম থেকে প্রস্থান করে।কিছুক্ষণ পর তাসনিম হাতে খাবারের প্লেট নিয়ে লিয়ার রুমে যায়।রুমের দরজা হালকা ভিড়ানো ছিলো।একহাতে দরজাটা ঠেলে রুমে প্রবেশ করে।রুমজুড়ে অন্ধকার। শুনশান নীরবতা বইছে।কেউ বুঝতে পারবে না যে রুমে কেউ আছে। তাসনিম ছোট করে শ্বাস ফেলে। অতঃপর একহাতে সুইচড অন করে লাইট জ্বালিয়ে দেয়।বিছানার উপর দৃষ্টি যেতেই দেখতে পায়।বালিশে মুখগুজে শুয়ে আছে লিয়া। চুলগুলো ফ্যানের বাতাসে এলোমেলো হয়ে উড়ছে। খাবারটা টেবিলের উপর নামিয়ে রেখে সন্তর্পণে বেডের দিকে এগিয়ে যায়।বিছানার একপাশে বসে। আলতোকরে লিয়ার কাঁধের উপর একহাত রাখে।আদূরে গলায় ডেকে উঠলো,,
“লিয়া।এই লিয়া।”
লিয়া চোখ বন্ধ করে শুয়ে ছিলো।কারো উপস্থিতি অনেক আগেই বুঝতে পেরেছে।ভেবেছিলো আম্মু এসেছে হয়তো।তাসনিমের কন্ঠ শ্রবণেন্দ্রিয়ে পৌঁছানোর সাথে সাথেই লিয়া তড়িৎ ঘন পল্লব তুলে তাকায়।শোয়া থেকে উঠে বসে। তাসনিম নিষ্পলক চাহুনিতে চেয়ে লিয়াকে পরখ করে।চোখের কোণা বেয়ে পড়া অশ্রু শুকিয়ে গিয়েছে। চোখদুটো বেশ ফোলা আর লাল।এটা দেখে তাসনিমের কোমল হৃদয়টা মূহূর্তেই বেদনায় কাতর হয়ে পড়ে।সব সময় হাসি খুশি থাকা মেয়েটার মলিন মুখ মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। তাসনিম ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেলে। ম্লান স্বরে আওড়ায়,,
“বোন মন খা’রাপ করিস না।সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে।তোর মলিন মুখটা দেখতে আমার মোটেই ভালো লাগছে না।”
একহাতে চুলগুলো হাত খোঁপা করে নেয় লিয়া। অতঃপর তাসনিমের কথার মাঝেই ক্ষীণ আওয়াজে গোলাপি পাতলা ওষ্ঠ নাড়িয়ে বলতে থাকে,,”আপু পারলে আমায় ক্ষমা করে দিও।আমার জন্য তোমার জীবনটাও এলোমেলো হয়ে গেলো।সব কিছুর জন্য আমিই
তাসনিম মৃদু হাসলো।লিয়াকে থামিয়ে দিয়ে ফের বলে উঠলো,,”ধূর পাগলি।এইসব কথা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেল,কেমন?কে বলেছে সব কিছুর জন্য তুই দায়ী। এরকম বোকা বোকা কথা বলিস না, প্লিজ।যা কিছু হয়েছে তারজন্য যদি কেউ দায়ী থাকে তবে সেটা হলো পরিস্থিতি। আর পরিস্থিতিতে তো আমাদের কারো কোনো হাত নেই।”
লিয়া মাথাটা নিচু করে অপরাধীর স্বরে ফের শুধায়,,”আচ্ছা আপু একটা বলি,এসবের জন্য তুমিও কি আমাকে দোষারোপ করো?আমার জন্যই হয়তো তোমার স্বপ্ন ভেঙ্গে গেলো।”
তাসনিম লিয়াকে দুইহাতে আগলে নেয়। লিয়াকে জড়িয়ে ধরে।লিয়া তাসনিমের কাঁধে মাথা রাখে।লিয়ার গায়ে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে কোমল গলায় বলতে থাকে,,”আমি সর্বদা ভাগ্যতে বিশ্বাসী।হয়তো ভাগ্যতে আজ এরকমটা লিখা ছিলো।তাই এরকমটা হয়েছে।আর বোন তোর মনে নেই? দাদিমনি বিভিন্ন গল্পের সময় আমাদেরকে কি বলতেন।যার সাথে যার জোড়া লেখা আছে তার সাথে তার হবেই।তাই তোকে দোষারোপ করার প্রশ্নই আসে না।”
লিয়াকে ছেড়ে দেয়।লিয়া ঠোঁট কামড়ে ধরে মাথা নুইয়ে রাখে। তাসনিম লিয়ার গালে একহাত রাখে।মায়াময় আদূরমাখা স্বরে বলে উঠলো,,”এসব ভেবে নিজেকে অন্তত কষ্ট দিসনা।এই লিয়া।তোকে এতটা চুপচাপ দেখতে আমার ভালো লাগছে না।আমার হাসিখুশি প্রাণোচ্ছল বোনটাকে এইভাবে মলিনমুখে নির্জীব দেখতে মোটেও ভালো লাগছে না।আমার চঞ্চল বোনটাকে সব সময় চঞ্চলতাতেই মানায়।এত নিরবতায় নয়।আর নিজেকে দায়ী করে কষ্ট পাওয়া বাদদে। ধৈর্য্য ধর আল্লাহর উপর ভরসা রাখ। একসময় সব ঠিক হয়ে যাবে।”
তাসনিম খাবার মেখে লিয়ার মুখের সামনে ধরে।লিয়ার দুচোখ ছলছল করছিলো। তাসনিম এবার একটু মেকি রা’গ দেখিয়ে বলে,,”তুই না খেলে কিন্তু আমিও খাবো না।আর এদিকে ক্ষুধায় আমার পেটের ভেতর ইঁদুর লাফাচ্ছে কিন্তু।”
কথাটা বলে এক্টিং করে গাল ফুলিয়ে রাখে।লিয়া মৃদু হাসলো।একহাত দিয়ে তাসনিমের হাতটা ধরে ভাতের লোকমাটা মুখে পুড়ে নেয়।
.
দুইসপ্তাহ খানেক পর,,
বিকেল পাঁচটা বাজে।অথচ সূর্যের তাপ যেনো এখনও প্রখর।তেজ কমেনি সূর্য মামার। গুমোট গরমে জনজীবন অস্থির। গ্রীষ্ম ঋতুটাই বোধহয় এরকম। টেম্পারেচার ৩৪° সেলসিয়াস এর বেশিই হবে হয়তো। সার্কিট হাউসের পাশেই ব্যাচে কেমিস্ট্রি প্রাইভেট পড়তে আসছিলো লিয়া।পড়া শেষে ছেলেমেয়েরা কেউকেউ বাসায় ফিরতে ব্যস্ত।আবার কেউ কেউ রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ফ্রেন্ডদের সাথে আড্ডা দিচ্ছে।কেউবা পাশের পার্কটায় বসে জমিয়ে গল্প করছে।লিয়া আর রুপন্তী রাস্তার একপাশ দিয়ে ধীর পায়ে হেঁটে আসছে আর এটাসেটা কথা বলছে। রুপন্তী গমগমে স্বরে বলে উঠলো,,
“জৈব যৌগ চ্যাপটার সব থেকে বেশি জটিল লাগে আমার কাছে। উফ্!কে বলেছিলো এসব নামকরণ করতে।এসব যৌগের নামকরণ করতে গিয়ে আমার দাঁত ভেঙে যায়।”
লিয়া তড়িৎ রুপন্তীর দিকে তাকায়।মৃদু হেসে কপাল কুঁচকে বলে,,”দেখি দেখি হা কর।দেখবো কয়টা দাঁত ভেঙ্গেছে।”
রুপন্তী একহাতে কানের পাশে মাছি তাড়ানোর ভঙ্গিমা করে বলে উঠলো,,”ধূর!মজা নিচ্ছিস।তবে দোস্ত সত্যি বলছি আমার কাছে কেমিস্ট্রির সবথেকে জটিল আর কঠিন লাগে এই অধ্যায়টা। উফ্!স্যার তো ঘন্টা খানেক ধরে বুঝিয়ে চললো।আর এদিকে আমি কি বুঝলাম নিজেও জানিনা। শেষমেষ দেখলাম মাথাটাই ধরলো।ফলাফল শূন্য।কাজের কাজ কিছুই হলো না।”
কথাটা বলতে বলতে রুপন্তীর চোখ যায় পার্কের সামনে ভ্যানের উপর ডাব নিয়ে বসা চাচার দোকানের দিকে।লিয়ার একহাত ধরে হালকা ঝাঁকিয়ে বলতে থাকে,,”এই লিয়া প্রচন্ড গরম পড়ছে তো। তেস্টাও পেয়েছে।চল ঠান্ডা ঠান্ডা ডাবের পানি খাই।”
লিয়া বিরক্তিকর ফেস করে ঠোঁট চেপে বলে,,”এখন।বাসায় ফিরতে হবে না।আমার বাসা তো এখান থেকে বেশ দূরে। দেরি হয়ে যাবে তো।”
“চল না ইয়ার।ডাবের পানি খেয়ে মাথাটা ঠান্ডা করি।”
লিয়াকে আর দ্বিতীয় কথা বলার সুযোগ না দিয়ে রুপন্তী সোজা ভ্যানের কাছে চলে যায়। লিয়া দুইহাত বুকে গুঁজে দাঁড়ায়। রুপন্তী জহুরীর চোখে ডাবগুলো দেখতে থাকে।তারপর বেছে বেছে বড় দেখে দুইটা ডাব আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করে বলে,,”চাচা এই দুইটা কে’টে দিন।”
চাচা মুখটা কে’টে তাতে রঙিন স্ট্র দিয়ে দেয়। রুপন্তী একটা নিয়ে লিয়ার দিকে বাড়িয়ে দেয়। অতঃপর আরেকটা নিয়ে নিজে খেতে থাকে।লিয়া আলতোকরে স্ট্রটা মুখে নেয়। রুপন্তী ঢকঢক করে খেতে খেতে বলে,,”আরে চাচা রোদের মধ্যে ডাব রেখে দিয়েছেন। পানি তো বেশ গরম হয়ে গিয়েছে।”
লিয়া ভ্রু যুগল কুঁচকে বলে,,”এতই যখন ঠান্ডা পানি খাওয়ার শখ।তখন বাসায় নিয়ে ফ্রিজে রেখে দিতিস। ঠান্ডা করে তারপর টেস্ট করতিস।”
কিছু মনে হতেই রুপন্তী কন্ঠে চঞ্চলতা নিয়ে বলে উঠল,,”এই লিয়া।তোকে তো একটা কথা বলাই হয়নি।আমার ভাইয়ার বিয়ে সামনের মাসে।তোকে কিন্তু আগে থেকেই বলে রাখলাম।সো নো এসকিউজ নো কজ। ক্লিয়ার?”
“হুম।”
লিয়ার একশব্দের জবাব রুপন্তীর কাছে ভালো লাগলো না। রুপন্তী ফের ঠোঁটে ঠোঁট চেপে বলল,,”কি হুম বলছিস?বিয়ের একসপ্তাহ আগেই কিন্তু তুই যাবি।”
সাথে সাথেই লিয়া বলে উঠলো,,”মাথা খা’রাপ হয়েছে তোর।বললেই হলো।বাসা থেকে একসপ্তাহ আগে যেতে দিবে।আর এতো আগে আমি গিয়েই বা কিকরবো?”
রুপন্তীর থেকে ব্যাকা উত্তর আসলো,,”তোকে দিয়ে বিয়ে বাড়ির সব কাজ করাবো। সেইজন্য আগে নিতে চাচ্ছি তোকে। হয়েছে এবার। উত্তর পেয়েছিস।”
একটু থেমে ফের দাঁতে দাঁত চেপে বলে,,”অদ্ভুত!তুই আমার বেস্টু আর আমার একমাত্র ভাইয়ের বিয়ে।আমার ভাইয়া মানে তোরও ভাইয়া।ভাইয়ের বিয়েতে বোনেরা কিকরে শুনি?চুটিয়ে আড্ডা,মজা এসব করে।আর আন্টিকে ম্যানেজ করার দায়িত্ব আমার। আম্মু আন্টিকে ফোন করে বলবে।দরকার পড়লে আমি আম্মুকে সাথে করে নিয়ে গিয়ে বোঝাবো।তবুও তোকে বিয়ের আগেই যেতে হবে।”
লিয়া কথা না বাড়িয়ে ছোট করেই বলে,,”আচ্ছা।দেখা যাবে।”
“দেখা যাবে টাবে নয়।একদম যেতে হবে,হু। বিয়ের আগের দিন সন্ধ্যায় হলুদ। আচ্ছা একসপ্তাহ নয়।তুই হলুদের আগের দিনই যাবি।এবার কিন্তু আমি আর কোনো না শুনবো না।”
“হ্যা রোহান বল।তোরা সবাই কই?আরে পাঁচটা তো অলরেডি পেরিয়ে গিয়েছে।আমি চলে আসছি তো। তোদেরকে দেখতে পাচ্ছি না । ওহ্। আচ্ছা।তাহলে ফাস্ট আয়।আমি গেইটের সামনে ওয়েট করছি।”
এক হাতে স্ট্রটা ধরে তাতে ঠোঁট ছুঁইয়ে টান দিতেই হঠাৎ অতি পরিচিত পুরুষালী কন্ঠস্বর শুনে হকচকিয়ে উঠে লিয়া। কন্ঠটা শ্রবণেন্দ্রিয়ে পৌঁছানোর সাথে সাথেই বুকের ভেতর মোচড় দিয়ে উঠলো। হার্টবিট যেনো স্বাভাবিকের তুলনায় দ্বিগুণ হলো।হাতে থাকা ডাবটা ভ্যানের একসাইডে নামিয়ে রাখতে রাখতে সামনে তাকাতেই দেখতে পায় ব্লাক টিশার্ট,অফ হোয়াইট গ্যাভারডিং পায়ে হোয়াইট কেডস ফোন কানে ধরে জারিফ দাঁড়িয়ে। ফর্সা গায়ে কালো রঙটা একটু বেশিই মানিয়েছে। ব্লাক টিশার্টে জারিফকে আকর্ষণীয় লাগছিলো।জারিফ ফোনটা পকেটে পুরে বাম সাইডে তাকাতেই লিয়ার দিকে দৃষ্টি যায়।লিয়ার চুলগুলো ঝুঁটি করে উপরে বাঁধা।কপালের একসাইড হয়ে মুখের উপর কিছু চুল।হালকা বাতাসে যা উড়াউড়ি করছিলো।জারিফকে একপলক দেখেই লিয়া তড়িৎ দৃষ্টি সরিয়ে নেয়। এলোমেলো দৃষ্টি ফেলে।কিছুটা অপ্রস্তুত হয়েই রুপন্তীকে উদ্দেশ্য করে বলতে থাকে,,
“হয়েছে খাওয়া।আমার শেষ।রুপু চল এবার।”
রুপন্তী অবাক হয়ে বলে,,”আরে ইয়ার।সবে পানি খাওয়া শেষ হলো।এখন তো ভেতরের অংশ খাবো।আর ভেতরের অংশ তো আমার কাছে হেব্বি লাগে। চাচা মাঝ বরাবর কে’টে দিন।”
লিয়া ব্যাগ থেকে টাকা বের করে। অতঃপর ডাবওয়ালাকে উদ্দেশ্য করে বলে,,”চাচা এই নিন।”
আর রুপন্তীকে উদ্দেশ্য করে বলে,,”তুই দাড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভেতরের অংশ কেনো পুরো সবুজ শক্ত খোলসটাই খা।আমার পক্ষে আর এখানে দাঁড়িয়ে থাকে সম্ভব নয়।আমি বাসায় যাচ্ছি।”
কথাটা শেষ করেই লিয়া বড় পা ফেলে যেতে থাকে। রুপন্তী অবাক হয়ে ভাবে, হঠাৎ করেই এর আবার কিহলো।”এই লিয়া দাঁড়া আসছি তো ”জোড়ে করে ডেকে কথাটা বলে রুপন্তী লিয়ার পিছু পিছু যায়।”
জারিফ আড়চোখে সবটাই পর্যবেক্ষণ করছে।বাসায় যাওয়ার পথটা জারিফ যেখানে দাঁড়িয়ে সেদিকটা দিয়েই।জারিফের থেকে বড়জোড় চারহাত দূরত্ব দিয়ে একটু মাঝ রাস্তা দিয়েই লিয়া জোরে হেঁটে যায়। রাস্তার পাশ দিয়ে গেলে দূরত্বটা একহাত হতো।লিয়া জারিফকে দেখেও না দেখার ভান করে গটগট করে চলে যায়।সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় জারিফ আরো একবার মাথাটা তুলে লিয়ার দিকে তাকায়।জোরে হাঁটার ফলে পিঠজুড়ে ঝুঁটি বাঁধা চুলগুলো সাপের মতো দুলতে থাকে।জারিফ সেদিকেই নিষ্পলক চাহুনিতে চেয়ে ছিলো।লিয়ার এতোটা হন্তদন্ত হয়ে চলে যাওয়ার পিছনে যে জারিফ তা ভালোই বুঝতে পারে। জারিফের ভাবনার ছেদ ঘটে বন্ধুদের ডাকে।
“এই জারিফ।”
জারিফ ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাতেই দুইটা মেয়ে আর দুইটা ছেলেকে দেখতে পায়।একটা মেয়েকে জারিফের কেনো জানি মনে হচ্ছিলো কোথাও এর আগে দেখেছে হয়তো।বাট মনে করতে পারছিলো না। জারিফ এগিয়ে যায়।রুপম,রোহান জারিফের ফ্রেন্ড।রুপম বলতে থাকে,,”সরি দোস্ত দেরি হয়ে গেলো।”
জারিফ স্বাভাবিক ভাবে বলে,,”ব্যাপার না।”
বেশ সুন্দরী দেখতে দুইটা মেয়ে।একটা মেয়েকে লাজুক লাজুক লাগছে। আরেকজনকে বেশ স্মার্ট দেখাচ্ছে।যার চুলগুলো কাঁধের থেকে একটু নিচুতে।হালকা ব্রাউন কালার করা।মেয়েটার নজর জারিফের মুখশ্রীতে বারবার পড়ছিলো। খোঁচা খোঁচা দাড়ির মাঝে বিন্দু বিন্দু ঘামে জারিফকে আকর্ষণীয় লাগছিলো।যাতে মেয়েটার নজরজোড়া বারংবার টানছিলো।।জারিফের সুদর্শন ফেস মেয়েটার মনকে পুলকিত করছিলো।রুপম গলা খাঁকারি দিয়ে বলে উঠলো,,
“জারিফ এ হলো রোজ আমার উডবি।আজকে তোদেরকে ডেকেছিলাম আমার বিয়ের বিষয়টা শেয়ার করার জন্যই।আসতে পথে একটা কাজ থাকায় গাঙ্গিনাপাড়ে যাই।আর সেখানে কাকতালীয়ভাবে রোজের সাথে দেখা হয়।রোজ ওর কাজিনের সাথে শপিং এ আসছিলো।দেখা যখন হলোই তখন ভাবলাম তোর আর রোহানের সাথে মিট করিয়ে দেই।”
জারিফ ভদ্রভাবে বলে,,”আসসালামুয়ালাইকুম ভাবী।”
রোজ স্মিত হেসে সালামের উত্তর দেয়।রুপম পাশে থাকা মেয়েটাকে দেখিয়ে ফের বলতে থাকে,,”আর এহলো রোজের কাজিন।ওনার সাথে আজকেই আমার ফাস্ট দেখা।মিস কবিতা ও আমার ফ্রেন্ড
রুপমের কথার মাঝেই মেয়েটা ঠোঁটের কোণে বিস্তৃত হাঁসি রেখেই বেশ চিকন স্বরে বলে উঠলো,,”আয়মান জারিফ।আ’ম আই রাইট?”
মেয়েটার কথায় জারিফ বাদে সবাই অবাক হয়। জারিফের প্রথম থেকেই মনে হচ্ছিলো কোথাও দেখেছে।বাকি সবাই উৎসুকভাবে তাকিয়ে আছে।যার অর্থ কিভাবে চেনে।কবিতা মৃদু হাসলো। সুন্দর করে শান্ত গলায় বলতে থাকে,,”বাকৃবিতে টিচার হিসেবে রিসেন্টলি জয়েন করেছি। সম্প্রতি একটা টিচার্সদের মিটিং এ আমি এটেন্ড ছিলাম।আর সেখানে বিভিন্ন টিচাররা স্পিচ দিয়েছিলেন যার মধ্যে মিস্টার আয়মান জারিফও ছিলেন।আর স্পিচ দেওয়ার আগে নামটা বলেছিলেন।সেই হিসেবেই জানি আর চিনি।”
জারিফ ভাবে এইজন্যই হয়তো ফেসটা কেমন জানি মনে হচ্ছিলো আগে কোথাও দেখেছে।জারিফ দুইহাত পকেটে গুঁজে দাঁড়ায়। স্মিত হেসে বলে,,”ওহ্! ব্রেন খুব সার্ভ দেখছি।একবার শুনেই নাম মনে রেখেছেন।।”
“ব্রেন সার্ভ কিনা জানিনা।তবে আপনি মানুষটাই হয়তো মনে রাখার মতো। তাই হয়তো একবার দেখেই স্মৃতিতে অম্লান হয়ে আছেন।”
রোহান মনেমনে আওড়ায়,, বাহবা লেডিস তো দেখছি শুধু দেখতেই স্মার্ট নয়।কথাতেও তার স্মার্টনেস চুইয়ে চুইয়ে পড়ছে।”
রুপম সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে গলা ঝেড়ে ফের বলতে থাকে,,”তো গাইস এভাবে দাঁড়িয়ে না থেকে চলো পাশের কফিশপে বসে কফি খাওয়া যাক।আর গল্প করা যাবে।”
এরমধ্যে জারিফ হাতে থাকা রিচওয়াচে সময় দেখে নিয়ে বলে,,”সরি আজ আর হবে না। এভরিওয়ান প্লিজ, ডোন্ট মাইন্ড।নাতাশাকে মিসের বাসা থেকে আনতে যেতে হবে।অন্যদিন কফি খাবো।”
জারিফ সবার থেকে বিদায় নিয়ে চলে যায়।
.
রাত্রি এগারোটা বাজে।আজকের আকাশে একটাও তাঁরার দেখা মিলছে না।কালো মেঘে ছেয়ে আছে আকাশ।মেঘে ঢাকা আকাশ। চারিদিকে শুনশান নিস্তব্ধতায় ঘেরা।ছাদে থাকা ক্রেডেলের উপর বসে আছে জারিফ।জারিফের মনটাও আকাশের কালো মেঘের ন্যায় বিষন্নতায় ছেয়ে আছে।কেনো জানি আগের মতো কোনো কিছুই ভালো লাগে না।সব সময় বিষন্ন লাগে।ঘুম আসছিলো না তাই ছাদে আসে জারিফ।দূর আকাশে অন্ধকারে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে ক্রেডেলে গা এলিয়ে দেয়।চোখ বন্ধ করতেই কিছুর আওয়াজ শ্রবণেন্দ্রিয়ে পৌঁছায়।চোখ মেলে তাকায়।ছাদের রেলিং ঘেঁষে একটা পেয়ারা গাছ থেকে কোনো নিশাচর পাখির ডানা ঝাপটানোর শব্দ আসে।সেদিকে তাকাতেই শুধু ধুধু অন্ধকারই নজরে আসে।টাউজারের পকেট থেকে ফোনটা বের করে স্ক্রল করতে থাকে। কিছুক্ষণ পর হঠাৎ করেই হাতের স্পর্শ লাগে গ্যালারিতে।গ্যালারিতে স্পর্শ লাগার সাথে সাথেই লাস্ট তুলা ছবিগুলো ফোনের স্ক্রিনে ভেসে উঠে। প্রথমেই লিয়ার ছবি দেখতে পায়। ছবিগুলো যে নাতাশার জন্মদিনে তুলা। তা একনজর দেখেই জারিফ বুঝতে পারে।জারিফ ফোনের স্ক্রিনে আরেকটু ভালো করে তাকাতেই ,টানাটানা চোখজোড়া কেমন যেনো মায়াময় লাগছিলো।জারিফের হৃদপিন্ডের চারপ্রকোষ্ঠের কোথাও যেনো এমন একটু অনুভূতি হলো,মানতে না চাইলেও এইমেয়েটার সাথে বাঁধনে বাঁধা। উফ্! দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে জারিফ এক আঙ্গুল দিয়ে ছবিগুলা সরাতে থাকে।আর একের পর এক নাতাশার সাথে তোলা লিয়ার ছবি আসতে থাকে।
“বল খুঁজি তোকে আর কিসে? তুই জলে বাতাসে মিশে!জানেমন তুই জীবন!!”
নীলের গলা ছেড়ে বলা গানটা কর্ণপাত হতেই জারিফ তড়িৎ সামনে তাকায়।নীল এসে জারিফের পাশে বসে পড়ে।ব্যাকা হেসে জারিফকে শুধায়,,”কি ব্রো নিশ্চয় বউকে মিস করছিস।চোখে ঘুম আসছিলো না তাই ছাদে অন্ধকার বিলাস করছিস।ঠিক বলেছি না?”
জারিফ কোন উত্তর না দিয়ে নির্বিকার থাকে। ফোনটা অফ করে রাখে।নীল দুইহাত ছড়িয়ে বসে।ফের বলল,,”বিয়ের পরও এমন সিঙ্গেল লাইফ কিভাবে কাটাচ্ছিস? তোর জায়গায় আমি হলে লিয়ার মতো সুন্দরী মেয়েকে পেলে,বউ রাজি না থাকলেও জোর করে নিয়ে আসতাম,হুহ।আর তুই কিনা গা ছাড়া ভাব নিয়ে আছিস। উফ্!এভাবে গা ছাড়া ভাব নিয়ে থাকার জন্য একদিন আফসোস করবি।কবে কোথা থেকে কে এসে তোর সুন্দরী পিচ্চি বউটার মন দখল করে নিবে।পাখির মতো ফুড়ুৎ করে উড়ে নিয়ে চলে যাবে।তখন বুঝবি।তখন তো তোকে দেবদাসের মতো বোতল হাতে আর সিগারেট ফুঁকে দিনযাপন করতে হবে,হু।”
নীলের এমন কথা জারিফের মোটেই ভালো লাগছিলো না। লিয়াকে নিয়ে নীলের এতো কিউরিওসিটি দেখে জারিফের মেজাজ খা’রাপ হতে থাকে।সেদিন ফুপ্পির কথার সাথে সাথেই লিয়ার হয়ে নীলের প্রতিবাদ সেসব কথা মনে হতেই জারিফের মেজাজ দ্বিগুণ খা’রাপ হয়।মনেমনে জেলাস ফিল হয়। পরক্ষনেই মস্তিষ্ক উল্টো বাণী নিয়ে মনটাকে সান্ত্বনা দেয়।ঐমেয়েটাকে নিয়ে কারো কোনো কিওরিওসিটি থাকলে তাতে আমার কি?এসব নিয়ে ভেবে সময় ন’ষ্ট করার কোনো মানেই হয়না।জারিফ কথা না বাড়িয়ে সোজা উঠে দাঁড়ায়।ঘুম পাচ্ছে বলে রুমে চলে যায়।
.
পড়ার টেবিলে বসে লিয়া। ক্যালকুলাসের ম্যাথটা হাফ করে কলম কামড়ে ধরে আছে ।বিকেলে জারিফকে দেখার পর থেকে বারংবার মনমস্তিষ্কে জারিফের কথা ভেসে আসছে। পড়াশোনায় মনোযোগে বিঘ্ন ঘটছে।চেয়ারে গা এলিয়ে দেয়।লিয়া মনেমনে তাচ্ছিল্য হাসে।আমি বিবাহিত।এই শহরে আমার বর আছে।তার কাছে এই বিয়ে এবং আমার কোনো মূল্যই নেই।যদি আর সবার মতো স্বাভাবিক হতো আমাদের সম্পর্ক।তাহলে হয়তো আমাকে দেখার সাথে সাথেই ছুটে আসতো কথা বলতে।একবার হলেও বলতো,কেমন আছি আমি।লিয়া নিজে নিজেই প্রশ্ন করে, আচ্ছা আমাকে দেখার পর উনার কি একবারও মনেহয়নি আমি ওনার কেউ?নাকি রা’গ ঘৃনাটাই বৃদ্ধি পেয়েছে?এসব কথা ভেবে আনমনেই তাচ্ছিল্য হেসে উঠলো লিয়া।টেবিলের উপর দুইহাত ভাঁজ করে রেখে অস্পষ্ট স্বরে আওড়ায়,আমাকে দুর্বল হলে চলবে না।আমার সিদ্ধান্তে নিজেকে অটল রাখতে হবে।এসব খেলা খেলা বিয়ে নিয়ে না ভাবাই বেটার। হেনোতোনো বুঝ দিয়ে লিয়া মনকে শক্ত করে।জারিফের প্রতি দূর্বলতার কোনো ফাঁকফোকর রাখতে চায়-না লিয়া। বরং সমস্ত অনুভূতিকে মন থেকে মুছে ফেলতে চায়।তবে আদৌ সম্ভব কিনা?তার উত্তর আজোও অজানা লিয়ার কাছে।
প্রায় সপ্তাহ খানেক পর,,
মধ্য দুপুর।শহরের যানযট পূর্ণ রাস্তা দিয়ে ড্রাইভ করছে জারিফ। ভার্সিটি থেকে বাসায় ফিরছে। গাঙ্গিনাপাড়ে ট্রাফিক মোড়ে লাল বাতি জ্বলে উঠতেই একপাশের ছোটো বড় সব গাড়ি থেমে যায়।গাড়ি থামিয়ে স্ট্রিয়ারিংয়ের উপর একহাত রাখে।গরম লাগায় অন্যহাতে শার্টের উপরের দুইটা বোতাম খুলতে থাকে। জানালা দিয়ে বাইরে দৃষ্টি যেতেই জারিফের নজর পড়ে খানিকটা দূরে পালসার বাইকের উপর বসে থাকা নীলের দিকে।নীলকে চিনতে জারিফের দুই সেকেন্ডও লাগে না।এমন সময় নীলের পাশে দৃষ্টি যেতেই জারিফের কপালে জ্যামিতিক রেখার ন্যায় বেশ কিছু রেখার সৃষ্টি হয়।যা দেখে জারিফ বেশ অবাক হয়।ঠিক দেখছে কিনা তা শিয়র হওয়ার জন্য জানালার কাচটা আরেকটু নামিয়ে দেয়।ভালো করে দেখার সাথে সাথেই জারিফের মনে কিছু সন্দেহজনক কথার সঞ্চার হয়।সেদিন কল্পনা বেগমের বলা কিছু কথা মনে হতেই জারিফ মনেমনে আওড়ায়,,
“তবে কি ফুপ্পির ধারণাই ঠিক?এখন মনে হচ্ছে ফুপ্পির কথা এতটাও ফেলনা নয়।কোনো কানেকশন আছে কি?”
[চলবে… ইন শা আল্লাহ]