ভালোবাসার_কাব্য_গাঁথবো (১১)

0
587

#ভালোবাসার_কাব্য_গাঁথবো

(১১)
তানভীরের বাসার গেইটের সামনে রিকশা থেকে নামে তিনজন। উর্মিলা আসতে চাইছিলো না, নাকিব কেই পাঠাচ্ছিলো। লাবিবা ধরে নিয়ে আসছে। উর্মিলাও ভাবলো এই সুযোগে স্যারের বাড়িট দেখা হবে।স্যারের বউয়ের সাথেও দেখা হয়ে যাবে। হ্যান্ডসাম স্যার তার বউ নিশ্চয় কোন নায়িকাদের মতোই দেখতে। কথাটা বললো নাকিব। সেতো হেব্বি মজায় আছে । যা ফাটছে সব লাবিবার। বেচারা চলে তো এলো। এরপর কি হবে? স্যারের বউ যদি বদমেজাজি হয়? বা স্যার জানার পর যদি লাবিবার পড়াশোনা ই বন্ধ করে দেয়? সাথে বন্ধু দুইজনেরও যদি দেয়? চিন্তায় ঘামতে লাগলো। নাকের উপর বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে। রোদের আলোয় মুক্তো দানার মতো লাগছে। বাড়ির বাইরে থেকে নাকিব দেখে বলে,
” আরেব্বাস! সেই তো বাড়িটা। পুরো ফুলের বাগান। এতো ফুলগাছ! ”

” আসলেই। ছাদের উপর থেকে নিচ পর্যন্ত যেন ফুলেই ঢেকে আছে। মাঝখানে তিনতলা সাদা ফকফকা ভবন। একটা ছবি নেই দাড়া। ভবিষ্যত এ এই ডিজাইনে একটা বাড়ি বানাবো জীবনের সব রোজগার দিয়ে।”

নাকিব হাতে আটকায়।
” আরে রাখতো। তুই যে ছোটলোক সব জায়গায় দেখানোর দরকার নাই। ”

উর্মিলা ভেংচি কাটে। বাড়িতে ঢুকতে যাবে তখনি দারোয়ান বেরিয়ে আসে। জিজ্ঞেস করে,
” আপনারা কে? কাকে চাই?”

” আমরা তানভীর স্যারের ওয়াইফের সাথে দেখা করতে এসেছি। আমরা কলেজ স্টুডেন্ট। একটা ইম্পর্টেন্ট কাজে এসেছি।”

“কিন্তু উনি তো নেই।”

“কোথায় গিয়েছেন? মানে কখন আসবেন?”

” স্যারের ওয়াইফ তো নেই।”

“তা তো বললেন ই কিন্তু কোথায় গিয়েছেন?”

“আরে স্যার তো বিয়েই করেনি। ওয়াইফ আসবে কোথা থেকে?”

“কিহ? ”
তিনজন একসাথে চিৎকার করে উঠে।

“হ্যা। আপনারা কে বলুন তো? না জেনেই চলে এসেছেন।”

“না মানে আমরা ঠিক জানতাম না। আর কেউ আছে বাড়িতে?”

“ভেতরে এসে বসুন। আমি বাড়ির ভেতর থেকে আসছি।”

বাগানে খোলা বাংলোতে বসার জন্য দেখিয়ে দেয় দারোয়ান। লাবিবারা বসলে দারোয়ান বাড়ির ভেতরে চলে যায়। লাবিবা আরো টেনশনে পড়ে গেছে। বউ নেই তবে নিশ্চয় কথাটা তানভীর খানের কাছে যাবে। তারপর? ‘ আল্লাহ রহম করো ‘ বলে উর্মিলার উপর গা এলিয়ে দেয়। নাকিব কে বলে,
” দোস্ত চল দৌড় দেই।”

“কেন?”

“তানভীর স্যার জানতে পারলে তখন কি হবে ভেবে দেখেছিস? ”

“আমরা কি কোন খারাপ কাজ করছি?”

“স্যারের বউকে স্যারের বিরুদ্ধে পিন্চ মারতে এসেছি এটা কি ভালো কাজ?”

“দেখিনা বাড়িতে অন্য কোন মহিলা থাকলে ম্যানেজ যদি করতে পারি।বউ নেই তো কি হয়েছে? বোন ভাবী মা তো থাকবে।”

দারোয়ানের দেখা মিলেছে। বাড়ি থেকে বেরিয়ে এদিকেই আসছে। তবে একা নয়। পেছন পেছন একটা মহিলা আসছে হাতে ট্রে নিয়ে। তার পাশে আরেকজন মহিলা। সম্ভবত বাড়ির কেউই হবে। মহিলা যথেষ্ট ইয়াং তেমনি সুন্দর। লাবিবার মনে হলো এই মহিলাকে সে আগেও দেখেছে। কেমন যেনো চেনা চেনা লাগছে। তখনি নাকিব বলে উঠে,
” ওরে ইনি আমাদের নেতা সাহেব ফিরোজ খানের ওয়াইফ না? সম্মেলনে দেখছিলাম উনাকে। ”

” আরে তাইতো। মানে কি? ফিরোজ খান ,তানভীর খান, তামিম খান। এইই দোস্ত ইনারা একজনের সাথে আরেকজন কানেক্টেড। অথচ আমরা কিছুই জানিনা রে। সব এক পরিবারেরই লোক।”

” তাহলে নিতু ম্যামও তো কানেক্টেড। দোস্ত আমার মাথা ঘুরতেছে রে। সব এক ছোবার মানুষ এইখানে না এলে তো জানতেই পারতাম না। ”

দোরোয়ান দেখিয়ে দেয়। “মেডাম উনারাই এসেছেন।”

” আচ্ছা তুমি যাও। আর তুমি ট্রে টা রাখো। ”

হুকুম দিয়ে মিষ্টি হাসে সোহানা ইসলাম। তিনজনের মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে এগিয়ে আসে। উর্মিলা সালাম দেয়,”আসসালামুয়ালাইকুম।”

“ওয়ালাইকুমুস সালাম। বাহ তোমরা তো বেশ মিষ্টি দেখতে। কলেজ থেকে এসেছো ?”

” জি।”

” কফি নাও। তানভীর রাস্তায় আছে। চলে আসবে কিছুক্ষণের মাঝে। ”

“ম্যাম। আমরা একটা বিষয়ে কথা বলতে এসেছিলাম।”

” তানভীর আসছে। তার সাথেই কথা বলে নিও।”

লাবিবা মুখে কুলুপ এঁটে আছে। ফ্যালফ্যাল করে সোহানা ইসলামের দিকে তাকিয়ে আছে। চেহারাটা নিতু ম্যামের সাথে বেশ মিল আছে। গাড়ির শব্দে সাইডে তাকায়। তানভীরের গাড়িটা শো শো করে পার্কিং এরিয়ায় চলে যায়। তা দেখেই বুকে ধুক ধুক শুরু হয়। আবার ইনার কাছে অনুরোধ করতে হবে। সোহানা ইসলাম সামনে না থাকলে লাবিবা এখনি উঠে দৌড় দিতো। পারছেনা উঠতে পারছেনা কিছু বলতে। ভেতরে ভেতরে বিস্তর চিন্তা প্রভাব ফেলে। শরীর মরঘাম দিয়ে উঠে। এখন তাদেরকে দেখে তানভীর খান কি বলবে? রাগ দেখাবে? নাকি অপমান করবে? আত্মসম্মান বলতে আর কিছুই থাকবে না। সোহানা লাবিবার দিকে এগিয়ে যায়। গালে হাত রেখে বলে,
” প্রব্লেম কি তোমার? কি একদম দুশ্চিন্তায় মুখটা শুকিয়ে ফেলেছো।”

লাবিবা সোহানার হাতের উপর হাত রাখে। একবার গাড়ির দিকে চোখ বুলিয়ে প্রশ্ন করে,
“আপনি স্যারের কে হন?”

“মম । ”

“ও আচ্ছা আন্টি স্যার তো মাত্র আসলো উনার সাথে আমরা কলেজেই ডিসকাস করে নিবো। আমাকে বাসায় ফিরতে হবে। দেড়ি হলে আব্বু রাগারাগি করবে।আমরা আজ আসি হে?”

” আরে বস। এতো দূর আসছো যখন কথা বলে যাও। একি ঘামছো কেন? নভেম্বরেও কপালে নাকে ঘাম জমেছে দেখছি। নাক ঘামলে কি হয় জানো?”

“কি হয়?”

“আমার আব্বাজান বেশী বেশী আদর দিবে। ”

খুক খুক করে কেশে উঠে তানভীর। লাবিবা পেছনে তাকিয়েই তানভীরের সাথে চোখাচোখি হয়। তানভীর ভেতরে না গিয়ে এখানেই এসে পেছনে দাঁড়িয়েছে। মমের সাথে লাবিবার এমন কথা কানে আসে। তানভীর তার মমকে বেশ ভালোভাবেই জানে। বাকিটুকু যেন না আগায় সেজন্য কেশে নিজের উপস্থিতি জানান দেয়। উর্মিলা এবং নাকিব হে হে করে হেসে উঠে। লাবিবা ভ্যাবাচেকা খেয়ে এদিক ওদিক তাকায়। পরমুহূর্তেই লজ্জায় নুইয়ে পড়ে।
” ঐতো তানভীর চলে এসেছে। কথা বলো।”

সোহানা চলে যায়। তানভীর ও বাড়ির ভেতরে চলে যায়। যাওয়ার আগে বলে যায়,
” একটু ওয়েট করো আমি ফ্রেস হয়ে আসছি।”

সোহানা তানভীরের ড্রেস বের করে ওয়েট করে। তানভীর ওয়াশরুম থেকে বেরোতেই বলে,
” ওরা তোমার কাছে কেন এসেছে?”

“কথা বলে নেই তারপর জানবো মম।”

” মনে হচ্ছে ক্রিটিক্যাল কিছু। মেয়ে দুটো কি সুন্দর! গুলুমুলু মেয়েটার মনে হচ্ছে বেশী প্রব্লেম। মুখে কি মায়া! কেঁদেই দিচ্ছিলো যেনো!”

তানভীর মুচকি হাসে। গলা তে টি শার্ট গলিয়ে সোহানার সামনে এসে জিজ্ঞেস করে, ” পছন্দ হয়েছে?”

” এরকম মেয়ে পছন্দ না হয়ে কি পারে?লক্ষী ছাড়া ঘর আমার। সেই সৌভাগ্য কি আমার আছে? ”

” মম ঠিক ধরেছো। প্রব্লেম ঐ মেয়েটারই। সামনে মেয়েটার বিয়ে। তোমাদের এলাকা জাভেদের ছেলের সাথে। ”

“সেসব শুনে আমার কি কাজ? আমার ছেলে কি বিয়ে করছে?”

” শুনার জন্যই তো বসে আছো । আবার বলছো কি কাজ!”

সোহানা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে। কপালে তার পুত্রবধূ সুখ আর এ জীবনে হবে না। দু দুটো দামড়া ছেলে। একটাও বিয়ে করছে না। বলতে এসেছিলো কি আর শুনে গেলো কি। ভালো ভালো মেয়েগুলো এভাবেই নাকের ডগা দিয়ে পরের ঘরে যাবে। আর সেটা সোহানা বসে বসে দেখে যাবে।

তানভীরকে লাবিবা রোজির সব কথা খুলে বলে। নাকিব ও যতটুকু জানে পুরোটাই বলে। উর্মিলা ও বিচার দেয় ফাহাদ তার সাথে কেমন ঘেসে ঘেসে কথা বলে। সবটা শুনে তানভীরের ভেতর চিন্তার কোন ছাপ দেখা যায়না। বরং তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে লাবিবার নাক টানা কান্না দেখে। চোখের পানি কম নাক টানছে বেশী। এভাবে কেউ কাঁদে নাকি! খুব স্মার্টলি বরং লাবিবাকে প্রশ্ন ছুঁড়ে,
” তো লাবিবা তুমি চাইছো টাকি? বিয়েটা ভেঙে যাক?”

” জি স্যার। আমি বিয়েটা করতে চাই না। জেনে শুনে আগুনে ঝাপ দিয়ে জীবনটা নষ্ট করতে চাই না। এই ছেলে বা ছেলের ফ্যামিলি কোনটাই আমার পছন্দের নয়। আপনি হেল্প করুন স্যার। নয়তো আমি শেষ হয়ে যাব। ”

বলতে বলতেই আরো কেঁদে উঠে লাবিবা। তানভীরের একটু খারাপ লাগে। আবার কান্নারত মুখটা দেখে মায়াও লাগে। হাতের আঙুলের গাল বেয়ে পড়া জল তুলে নেয়। ভেতর থেকে এই মেয়েটার জন্য সফট কর্ণার আগেই তৈরী হয়ে আছে। তানভীর আনমনেই সামান্য এগিয়ে আসে লাবিবার দিকে। গালে হাত দিয়ে জল মুছিয়ে দিবে সেই মুহূর্তে ই সেদিনকার লাবিবার বলা একটি বাক্য মনে পড়ে।
” আমাকে ছুঁবেন না। আমি পবিত্র। ”

হাত নামিয়ে সেন্টার টেবিলে রাখা টিস্যু এগিয়ে দেয় তানভীর। নিজের জায়গায় ফিরে এসে সিরিয়াস ভঙ্গিতে প্রশ্ন করে,
” তোমার কি মনে হয়?তোমাকে আমি কিভাবে সাহায্য করতে পারি? এই বিয়েটা ভেঙে গেলে তুমি কি অন্য কাউকে বিয়ে করবে? ”

” না স্যার। আমার পক্ষে সম্ভব না। আমি নিজের ক্যারিয়ারে সামান্যতম সেক্রিফাইস করতে রাজি না। ”

“সেজন্য তুমি বার বার আমার কাছেই কেন আসছো?”

” স্যার আপনিতো মাধ্যম।”

” হ্যা আমিই এখন মাধ্যম হিসেবে আছি। কিন্তু আমি কিন্তু কোন পরিবারেই প্রস্তাব রাখিনি। তোমার সাথে দেখাই আমার যেদিন তোমাকে কলেজে দেখতো এলো সেদিন। এর আগে দু একবার চোখে পড়লেও পড়তে পারো। তোমার ফ্যামিলি আর ফাহাদের ফ্যামিলি দুই পরিবার দুই পরিবারকে পছন্দ করেছে তারপর যেহেতু তুমি আমার কলেজে আছো আমার মমের সূত্রে তারা এসে আমাকে জানিয়েছে। তোমাকে পছন্দ করার পর রিকোয়েস্ট করেছে যেনো আমি ব্যপারটায় থাকি। এখানে আমার কর্তৃত্ব কতটুকু তোমাকে বুঝতে হবে লাবিবা। আমার হ্যা অথবা না এ কিছুই এসে যায় না।”

“আপনি তাহলে কিছু করবেন না?”

” আজ আমি বিয়েটা হয়তো ভেঙে দিতে পারবো। কাল তোমার জন্য অন্য ছেলে এসে দাঁড়াবে। এবং তোমার বাবার সাথে কথা বলে যা বুঝলাম যে কোন অবস্থায় তোমাকে এখন বিয়েটা দিয়েই ছাড়বে। উনার বেশ তাড়া।তুমি সেদিন আমাকে যে অভিযোগ গুলো করলে সেটাও ঠিক। কি কারণে এটা আমিও জানিনা। অভিযোগ সেটাতো আমারো আছে তোমার প্রতি। আমার স্টুডেন্ট হয়ে আমার সাথেই বেয়াদবি করো। আইডির নাম কি যেনো? হ্যা। সুবোধ বালিকা। উল্টাপাল্টা মেসেজ। তার আগে গাড়িতেও তোমার লেখা একটা মেসেজ পেয়েছি। চরম বেয়াদব না হলে কেউ এমন করতে পারেনা। প্রব্লেম তোমার আর তোমার ফ্যামিলির। তা না তুমি কন্টিনিউয়াসলি আমার সাথে বেয়াদবি করে যাচ্ছো। কতোটুকু সুবোধ বালিকা তুমি আমার জানা হয়ে গেছে। ”

বলতে বলতেই ক্রোধে ফেটে যায় তানভীর। লাবিবাকে দুটো থাপ্পড় দিলে তার এই ক্রোধ কমতো। লাবিবা মাথা নিচু করে আছে। এতোসব কান্ড ঘটিয়েছে নাকিব উর্মিলা কেউ জানেনা। দুজনেও মাথা নিচু করে আছে। নাকিব সাহস নিয়ে বলে,
” সরি স্যার। ও বুঝতে পারেনি। ছোট বলে ক্ষমা করে দিন।”

“ওকে সরি বলতে বলো। ”

লাবিবা চোখের জল মুছে বলে,
” সরি স্যার। আর কখনো হবেনা। কিন্তু আমি বিয়ে করবো না। ”

“আমি চাই তুমি বিয়ে করো। মেয়েরা কুড়িতেই বুড়ি শুনেছো তো। আমার মনে হয় তোমার তাড়াতাড়ি বিয়ে করা উচিত। ”

তানভীরের কথায় লাবিবা মাথা তুলে তাকায়। চোখের জল মুছে দৃঢ় গলায় বলে,
“আমি বিয়ে করছিনা। আপনি হেল্প না করুন এই বিয়ে আমি ভেঙেই ছাড়বো।”

“আমিও দেখতে চাই তুমি বিয়েটা ভাঙতে পারো কিনা। ওকে ডান। তুমি যদি এই বিয়েটা ভাঙতে পারো তাহলে আমি তোমার বড় সড় একটা গিফট দিবো। এবং কি বিয়ে ভাঙার পর তোমাকে যে যে প্রবলেম ফেস করতে হবে আই মিন সমাজ তোমার ফ্যামিলিকে যেভাবে ধিক্কার দিবে পুরোটাই সামলানোর দায়িত্ব আমার।”

লাবিবা চোখ ছোট ছোট করে তাকায়।
“কি গিফট?”

“তোমাকে এমন বড় একটা গিফট আমি দিতে চাই যে গিফট তোমাকে সারাজীবন সুখে থাকার পথ দেখাবে। বিয়ে ভাঙার রেসপন্সিবিলিটি তোমার। আর তোমাকে গিফট দেওয়ার রেসপন্স পুরোটাই আমার। ”

লাবিবা তানভীরের মাঝে নিরব একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে যায়।লাবিবার মাথায় এখন একটা ব্যপারই ঘুরছে তা হলো কিভাবে বিয়েটা ভাঙা যায়।

চলবে ___

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here