#দেওয়ানা_(আমার ভালোবাসা)
#লিখিকাঃ_রিক্তা ইসলাল মায়া
#পর্বঃ_১২
.
🍂
তো ম্যাডামের কথা বলা শেষ,,, তাহলে নিচে নেমে আসুন ম্যাডাম,,, (রিদ)
মায়া না তাকিয়ে বললো,,,
আয়ন ভাইয়া তুমি যাও এখন,,, আমার এখন অনেককক কষ্ট বুঝলে,,, তোমার ভাই আমার দুটো পরিমা ভেঙে দিয়েছে,,, যার মধ্যে একটা ছিল আমার বাম পা, আরেকটা আমার ডান পা,,, কারণ বাড়ির বাকি পরি গুলো আমার শরীলের বাকি অংশ ছিল, কিন্তুু এ দুটো পরি আমার দুটো পা ছিল,,, এখন তো আমি আর হাঁটতেও পারবো না তোমার ভাই আমাকে অল্প বয়সে প্রতিবন্দী করে দিছে,,, তাই আমার এখন অনেক কষ্ট, তুমি এখন যাও আমি আরও কান্না করবো এখন,,,, হুহহহ বলেই মায়া আবারও মূর্তিটাকে জরিয়ে ধরে কান্না করতে লাগল,,,,
রিদ দু হাত ভাজ করে স্টং হয়ে দাঁড়িয়ে বললো,,,
—— “তো ম্যাডাম কি নামবেন, নাকি আপনার জরিয়ে ধরা মূর্তিটাও ভাঙতে চান,,,,
মায়া রিদ এ এমন কথা শুনে হকচকিয়ে উঠে পেছন ফিরে আয়ন এর জায়গায় রিদ দেখে মূহুর্তেই ভয় পেয়ে গেল যা স্পষ্ট মায়া চেহারাই ভেসে ওঠে,,, যা রিদ এ চোখ এড়ালো না,,,, রিদ স্বাবাভিক ভাবে বলে উঠে,,,
——- ” নেমে আসো ” (হাতে ইশারা করে)
মায়া নেমে এদিক ওদিক তাকিয়ে রিদ থেকে পালানোর জন্য রাস্তা খুঁজেতে লাগল, যা রিদ এর চোখে আবারও পড়ে ,,, তাই মায়া যখন দৌড়ে পালাতে যায়, তখন রিদ মায়ার হাত চেপে ধরে তার সামনে এনে বলে উঠে,,,,,
—-” কি ম্যাডাম খালি পালাতে চান,,, আগে কথা তো শেষ করুণ,,, শাস্তি টা তো নিন তারপর যান,,,, বলেই হাতে ইশারায় মায়াকে মূর্তিটার পায়ের কাছে বসতে বলে,,,,
মায়া ভয়ে মাথা নিচু করে বাধ্য মেয়ের মতো বসে পড়ে,,,,
—– ” তো ম্যাডামকে কি করা যায় বলোন তহ,,,, মূর্তির মতো যদি ম্যাডামকেও ভেঙে দেয় তাহলে কেমন হবে বলোন তো ম্যাডাম,,,, ভালো হবে না,,,? হবে আমিও তাই ভাবছিলাম,,, কি দিব ম্যাডামকে ভেঙে,,,,
মায়া, রিদ এ দিকে অসহায় ফেস করে তাকিয়ে,,, আবার এদিকে ওদিকে কাউকে খুঁজে চলছে এক মনে,,, কারণ এ মূহুর্তে যদি কেউ রিদ নামক ভয়ানক শাস্তি থেকে ওকে বের করে তার আশায়,,, তখনি রিদ আবার বলে উঠে,,,,,
—- ” কি ম্যাডাম এদিকে ওদিকে তাকাচ্ছেন কেন,,, আমাকে দেখুন আমি তো এখানে,,, আর এখন থেকে আপনার কপাল আর আপনার সাদ্দ দিবে না ম্যাডামমমম, আমি সেই সব পথ বন্ধ করে দিব ম্যাডাম আপনার জন্য, চিন্তা করবেন না কিন্তুু কেমন,,, আমি আছি তো আপনাকে টেনশন দেওয়ার জন্য,,,,
মায়া টলমল চোখে রিদকে উদ্দেশ্য করে বললো,,,,
—–” আমি ইচ্ছে করে আসিনি আপনার সামনে,,, আর আমি ওসব কথা গুলো ও ইচ্ছে করে বলিনি সব আমার ঠোঁটে দোষ ওরা বলেছে আমি কিন্তুু কিছু করেনি তাই আমাকে যেতে দিন,,,, আমি আর কখনো আপনার সামনে আসবো না,,, আপনার সব কথা মানবো আমি আর আপনার অবাধ্য হবো না,,,, একদম সত্যি বলছি আমি,,,, এই আমার ভাঙা দুটো মূর্তির কসম খেয়ে বলছি,,,
রিদ আবারও বলে উঠে,,,,
—– ” তো ম্যাডাম আপনি স্থির হয়ে বসে থাকবেন, অন্যকে অস্থির করে, তা কি করে হতে দেয় বলুন তো,,,
মায়া ফ্যাল ফ্যাল করে রিদ এ দিকে তাকিয়ে থাকে,,, বুঝতে চাইছে রিদ কি বলতে চাইছে তাকে,,,, তাই বুঝতে না পেরে রিদকে উদ্দেশ্য করে বললো,,,,,
——” আমি ইচ্ছে করে বাজে কথা গুলো আপনাকে বলেনি,,, আর এমন হবে না এখন তো আপনাকে চিনি তাই আপনার সাথে আর বলবো না,,,,
রিদ ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে মায়াকে বললো,,,,
—– ” তা বুঝি ম্যাডাম, আমাকে বলবেন না কিন্তুু বাকি সবাইকে কি বলবেন ম্যাডাম,,,?
মায়া মাথা নাড়ায় যা অর্থ হ্যা সে সবাইকে বলবে,,,,
রিদ নিশ্বঃশব্দে হাসে মায়ার কথা শুনে ,,, যা মায়ার মাথা নিচু করে রাখার জন্য চোখে পড়ল না সেই হাসিটা,,,,, পরে আবার বলে উঠে,,,,,
—–” তো ম্যাডাম কি কি যেন বলেছিলেন আমায়,,, গালফ্রেন্ড, মুক্তি দিবেন, স্বাধীনতা, আমাকে প্রমোশন দেবেন, আরে হা আমারও না প্রমোশন দরকার বুঝলেন ম্যাডাম,,, তবে প্রফেশন নয় পারসোনাল, শুধু আপনার কাছ থেকে ম্যাডাম,,, কি দিবেন না ম্যাডাম, না দিলেও সমস্যা নেই আমি নিজেই নিয়ে নিব,,,
আর কি যেন চাই আপনার ম্যাডাম ওহ হা মনে পড়েছে,,, আপনার বিদুৎচুমু চাই তো তাই না,,,,, কি খাব আপনাকে বিদ্যুৎচুমু ,,,,, (তীক্ষ দৃষ্টিতে মায়ার দিকে তাকিয়ে) ম্যাডাম বুঝিয়েন,,,, আমার কিন্তুু অল্পতে মন ভড়েনা ম্যাডাম সবকিছুতেই একটু বেশি বেশি লাগে আমার,,, আর আপনার ব্যাপারে তো আরো বেশি লাগে ,,, তো কি করা যায় বলুন তো ম্যাডাম,,,,, কি খেয়ে নেই আপনার বিদুৎচুমু বলেই মায়ার দিকে এগোতে থাকে,,,,,
মায়া রিদ এর এগিয়ে আসা দেখে ভয়ে কোনো কিছু বিবেচনা না করে ভো দৌড়ে পালিয়ে যায় রিদ থেকে,,,,
রিদ মায়ার কাজে নিস্বঃশব্দে হাসে পকেটে দু হাত গুজিয়ে বলে উঠে,,,,,
—–” ম্যাডাাাাম পালিয়ে যাবেন কোথায়, যাহা যাহিবেন তাহায় পায়িবেন আমায়,,,, সবে তো শুরু ম্যাডাম,,,,
💞💞💞💞
বিয়ে মানে শপিং আর শপিং, এটা কিন ওটা কিন, এটা ভালো লাগবে নাকি ওটা ভালো লাগবে ইত্যাদি আরও অনেক কিছু,,, কিন্তুু আমি এসবের কিছু মধ্যে নেই,,,, আমার জন্য সবকিছু দাদী কিনবে বলে দিয়েছে সবাই কে,,,, তাই আমার কোনো টেনশন নেই,,, নিহা আপুর এনগেজমেন্ট ডেট ফিক্সড হয়েছে তিন দিন পর,,,, তাই সবাই শপিং নিয়ে মহা ব্যস্ত,,, আর এই ব্যস্তার মধ্যে যদি কেউ আমাকে সময় দিয়ে থাকে সে হল আয়ন ভাইয়া, আমার সবকিছু খেয়াল রাখে আর আমার ভিলেন স্বামীর থেকে আমাকে লক্ষা করে যা আমাকে চরম সুখ দেয় হা হা হা,,, এ জন্য আমার আয়ন ভাইয়া অনেক ভালো লাগে কিউট বয়,,,,
সবাই মিলে শপিং করতে যাচ্ছি আমরা তিনটি গাড়ি নিয়ে,,, কিন্তুু বিপত্তি ঘটলো আমাকে নিয়ে, আমি কোথায় বসবো সেটা নিয়ে, আয়ন ভাইয়া বলছে আমি, নিহা আপু, ফিহা, আর আয়ন ভাইয়া এক গাড়ি করে যেতে, আর বড়রা অন্য গাড়ি করে যেতে, কিন্তুু দাদী আমার সেটা মানতে নারাজ, দাদীর কথা হল আমার সোনামা আমার সাথে বসবে ব্যস,,,, তাই আয়ন ভাইয়া বাধ্য হয়ে আমাদের গাড়িতে আসেন, যেটাতে দাদা-দাদি আর আমি পিছনে বসেছি তাদের মাঝে, আর আয়ন ভাইয়া বসেছে সামনে ড্রায়ভার এ সাথে,,, বাকিরা বসেছে অন্য গাড়িতে,,, পরেটা মধ্যে রয়েছে বডিগার্ডরা,,,,, সবার গত্যর্ভ শপিং মলেএ,,,
আমরা সবাই যাচ্ছি কিন্তুু উনি যাচ্ছেন না আমাদের সাথে, উনার এসব নাকি ঝামেলা মনে হয় তাই,,,, উনার এমন ডিসিশন এ আমি মহা খুশি কারণ উনার শাস্তি নামক প্যারা থেকে বেঁচে যাব ভাবতেই সুখ সুখ লাগছে আমার,,,,
শপিং মলের বিশাল ডিজাইনার এক্সক্লোসিভ দোকানে ঢুকি,,, যেখানে সব ধরনের ডিজাইনার শাড়ি, লেহাগ্গা, থ্রিপিস, টপস, জিন্স, জুতা, কসমেটিক রয়েছে,,, সাথে সাজেস্ট কারার জন্য দুটো প্রফেশনাল ডিজাইনার রয়েছে আমাদের সাথে,,,, সবাই যার যার মতো ব্যস্ত হয়ে পড়েন ডেন্স সিলেক্টেড করতে,,,, কিন্তুু আমার তা নিয়ে বিন্দু মাএ মাথা ব্যাথা নেই, কারণ দাদী আছে আমার জন্য তাই,,,,, আমি চুপ করে দাদীর পাশে বসে বসে সবাইকে পযবেক্ষন করছি,,, দাদী আমরা জন্য কি কি কিনবেন আমি কিছু জানি না,,,, তবে এটা সেটা বার বার আমার ওপর রেখে ধরে ধরে দেখছেন দাদী,,, নিহা আপুকে ডেন্স নিয়ে দাদীর কোনো মাথা ব্যাথা নেই , আমাকে নিয়ে যত মাথা ব্যাথা তার, দাদীর ধারণা সবার থেকে তার সোনামা কে সুন্দর লাগতে হবে, তাই আমি অসহায় মতো বসে আছি দাদীর পাশে,,,
তখনি পাশ থেকে আমার হাত চেপে ধরে কেউ নিয়ে যেতে লাগলেন,,, আকস্মিক ঘটনায় আমি ভয় পেয়ে গেলাম ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাতেই চোখ পড়ল আয়ন ভাইয়া দিকে, তিনি আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন, তা প্রশ্ন করার আগেই দাদীর কন্ঠ কানে আসল আমার, দাদী আয়ন ভাইয়াকে চিল্লায়ে বলতে লাগলেন,,,,,
—–এই তুই ওকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছিস,,, দিয়ে যা ওকে আমার কাছে বলছি,,,,
দাদীর কথা ভাবান্তর হল না আয়ন ভাইয়ার,,, উনি আমাকে নিয়ে যেতে যেতে স্বাভাবিক কন্ঠে বলে উঠে,,,
—- ” নানুমা ওকে একটু বড় হতে দাও আমার জন্য হলেও,,,,
আর তোমার সোনামা কে আমি কিছু করবো না বরং আগলে রাখবো,,, এখন আর ডিস্টার্ব করো না প্লিজ,,,, তুমি তোমার কাজ কর আমি ওকে নিয়ে যাচ্ছি,,,,
বলেই আয়ন ভাইয়া আমাকে নিয়ে যেতে লাগলেন, আর আমি পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখি দাদা-দাদি দুজনই হা করে তাকিয়ে আছে,,,, আর উনি আমাকে মলের এক পাশে একটা পুতুলে কাছে দাঁড় করিয়ে দেয় তারপর মনোযোগ সহকারে একবার আমার দিকে তো একবার পুতুল এর দিকে তাকিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছেন, পরে মিষ্টি হেসে বলে উঠে পার্রফেক্ট,,,, বলে হাতে ইশারায় কিছু বললেন দোকান দারকে,,,,
আমি অসহায় মতো চেয়ে আছি উনার দিকে কি করছে কিছুই বুঝতে পারছি না আমি,,,, পরে আয়ন ভাইয়া আমাকে অন্য সাইডে নিয়ে যান যে খানে কসমেটিক, জুতা রয়েছে, তিনি এটা সেটা আমার ওপর ধরে ধরে দেখতে লাগলো, পরে সিম্পল এবং খুব সুন্দর সবুজ পাথরের মধ্যে গালার, কানে,মাথা টিকলি কিনে,পরে সবুজ এ মধ্যে হাতে চুরি ও কিনে,,, কিন্তুু আমার মাথায় কিছু ঢুকছে না শুধু অসহায় ফেস করে তাকিয়ে আছি,,,
তখনি উনি বলে উঠে
—-” মায়া আমি লাইফ এ ফাস্ট টাইম কারো জন্য কিছু নিজের হাতে কিনলাম,,, কারণ আজ পযন্ত নিজের জন্যও আমি কিছু কিনেছি কিনা সন্দেহ আছে আমার,,, কারণ আমার সব কাজ আমার পি এ করে দেয় ,,, কিন্তুু আজ নিজের কাছে এত সুখ লাগছে যে নিজের প্রিয় মানুষটি কে নিজের রং এ সাজাবো বলে,,,,, লাইফে ফাস্ট টাইম আমি এতটা সুখটা অনুভব করতে পারছি মায়া,,,,
বলেই পলকহীন ভাবে তাকিয়ে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়,,,, তারপর মিষ্টি হেসে আমাকে কিছু বলতে না দিয়ে এক হাতে উনার কিনা ব্যাগ গুলো নিয়ে,,, আর অন্য হাতে আমার হাত চেপে ধরে নিয়ে যেতে লাগলেন দাদীর কাছে,,,,
আমাকে দেখে দাদী যেমন নিজের প্রান ফিরে পেয়েছেন এমন ভাবে আমাকে নিজের সাথে আলিঙ্গন করেন আর আয়ন ভাইয়াকে বলে উঠেন কোথায় নিয়ে গিয়েছিলি ওকে আয়ন তুই,,,,,,
আয়ন ভাইয়া স্বাভাবিক ভাবেই বলে উঠে,,,
—-” আমার রং এ সাজাবো বলে নিয়ে গেছিলাম,,,, আমার কাজ শেষ তাই দিয়ে গেলাম,,,
বলেই হনহন করে চলে গেলেন এখান থেকে, আর দাদী আবারও হা করে তাকিয়ে আছে আয়ন ভাইয়া দিকে,,,,
হয়তো বুঝার চেষ্টা করছে উনি কি বলেছেন,,,,, অতঃপর বুঝতে না পেরে নিজের কাজে মনোযোগ হয় আমাকে নিয়ে, আমার ডেন্স এর জন্য,,,,,,,
চলবে,,,,,,,,,,