ফারহান ভাই আমার ইংরেজি শিক্ষক। তাকে ভাই বলে সম্মোধন করার ক্ষমতা আমি হারিয়েছি তাই স্যার বলে ডাকতে হয়। এক অজানায় লুকিয়ে রাখা সব অনুভূতি আমায় পাগল করে দেয়। ওনার সকল বাড়াবাড়ি আমি সায় দেই নিজের অজানায়। অথচ প্রকৃতপক্ষে এটা কে অন্যায় বলে। তবু ও এ মন জানে প্রেমে সাত খু ন ও মাফ!
ভালোবাসা এক নীল আকাশের হঠাৎ আক্রমণকারী ঝড়ের মতো। কখন কেমন করে হয়ে যায় তা বলা দায়।
ইংরেজি স্যারের থা প্প ড় খেয়ে হঠাৎ ঘুমটা ভেঙে গেল।
এখনো আমার দম নিতে কষ্ট হচ্ছে। আশে পাশে চোখ বুলিয়ে দেখলাম এটা তো আমার রুম! তার মানে এতক্ষণ স্বপ্ন দেখছিলাম! যাক বাবা বাঁচা গেল।
নিজেকে হালকা করে ঘড়ির দিকে তাকালাম ওমা রাত ২ টা ৩৮ বাজে। হায় রে এখনো আমার ইংলিশ পড়া কমপ্লিট হয়নি। কী ভাবছেন আজ আমার ইংরেজি পরীক্ষা। মোটে ও না। তবে রোজ আমাকে অগ্নি পরীক্ষা ঠিক ই দিতে হয়। আর এই বিষয়টি পরীক্ষা নিতে আসবেন আমার প্রাণ প্রিয় জঘন্য তম টিচার ফারহান স্যার। নামটা যতটা না সুন্দর তার থেকে হাজার গুণ জঘন্য ওনি। তিন মাস ধরে ওনি আমাকে ইংরেজি পড়ান ।
ইংরেজি এই একটা বিষয় আমার মাথায় হাতুড়ি পি টি য়ে ও কেউ ঢুকাতে পারে নি। ইংরেজিতে আমি বড্ড কাঁচা। গত আট মাসে চারটি টিচার বদল করা হয়েছে। আমি বদলাই নি আমাকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এর থেকেও বড়ো একটি কারণ আমার নাননা ছা ছোটা ছা পেয়ারা ছা ঘুম।
ইংরেজি বিষয় মানেই ঘুম। স্যাররা যখন ইংরেজি বিষয়ে লেকচার দেন ঠিক তার পাঁচ মিনিটের মাথায় আমাকে ঘুমাতে দেখা যায়। আর তার জন্য ই আমাকে কোচিং থেকে আট মাসে চার বার বের করে দিয়েছে।
আমি এইবার দশম শ্রেণিতে পড়ি। আমি মোটে ও পড়াশোনাতে খারাপ নই শুধু ইংরেজি ছাড়া। আর ছয় মাস পর এস এস সি পরীক্ষা। আব্বু আম্মু চিন্তাতে মনে হয় শুকিয়ে যাচ্ছেন। আর ঠিক তখনই আগমন ঘটে গন্য মান্য জঘন্য তম ফারহান স্যারের। ওনি ই সেই টিচার যে আমাকে তিন মাস অবধি পড়াতে পেরেছেন।
ওনি এইবার ইংরেজিতে অনার্স পড়ছেন তৃতীয় বর্ষ। আমার আব্বুর বন্ধুর ছেলে তিনি। বিশ্বাস করেন এমন কোনো দিন নেই এই হনুমান ফারহান স্যারকে গা লা গা ল না দিয়েছি। তিন মাসে আমার জীবন অতিষ্ঠ করে দিয়েছেন এই অ ভদ্র লোক!
যাক বাবা নাম টাই তো বলা হলো না আমি ফারাবি। আম্মু আব্বুর একমাত্র সুযোগ্য কন্যা। তবে নামটা ছেলেদের। এর পেছনে একটি কারণ রয়েছে। আমার মা বাবা মনে করেন ওনাদের এই মেয়ে সন্তান ই ছেলের মতো ছায়া দিবেন। তাই এই নামে রেখেছেন।
পড়তে পড়তে সকাল ৬ টা বেজে গেছে। এত পড়া আমার জীবনে আমি পড়ি নি। এই বেটা বজ্জাত টার জন্য পড়তে হচ্ছে। ঘুমিয়ে ও শান্তি নেই। স্বপ্নে ও অত্যাচার! ধুর আর ভালো লাগে না। ঘুমে আমার যায় যায় অবস্থা যেই না চোখ টা বুজেছি আমার আম্মি জানের ডাক।
“ফারাবি এই ফারাবি কখন থেকে ডাকছি শুনতে পাচ্ছিস না নাকি। ফারহান এসেছে। যা তাড়াতাড়ি ফ্রেস হয়ে আয়।”
মাথাটা রাগে ফেটে যাচ্ছে। যেই না ভাবলাম দু চারটে কথা শোনাব, ওমনি আমার প্রিয় জঘন্য তম টিচার রুমে এসে হাজির।
“কীরে কথা কানে যাচ্ছে না নাকি? কাকি যে কতক্ষণ ধরে ডাকছে।”
ভয়ে গলা শুকিয়ে যাচ্ছে আমার। একটা শুকনো ঢোক গিলে বললাম, “জি স্যার আসছি।”
“শোন,আই ডোন্ট লাইক টাইম ওয়েস্ট। জাস্ট ফাইভ মিনিট, আমি তোকে নিচে দেখতে চাই।” বলেই গট গট করে রুম থেকে চলে গেলেন। মনে হচ্ছে এই বেটার মাথাটা ফা টি য়ে দেই। বেটা বজ্জাত হনুমান জ ঘ ন্য তম আবর্জনা!
পরক্ষণেই চুপ হয়ে গেলাম। আমার ঘাড়ে দুইটি মাথা নেই যে ওই বেটা বজ্জাতের সাথে চোখ রাঙাব। তাই ফ্রেশ হতে চলে গেলাম।
#স্বপ্নের_প্রেয়সী ( ১ )
কলমে ~ ফাতেমা তুজ নৌশি
বি : দ্র : এটি আমার লেখা প্রথম গল্প। অনেক খাপছাড়া লাগে এখন। মনে হয় ইস কত উলোট পালোট লিখা। তবু কোথাও একটা ভালো লাগা কাজ করে। ভুল ক্রুটি মেনে নিয়ে পড়ার অনুরোধ রইল।
( আসসালামুআলাইকুম আমি একজন নতুন লেখিকা। এটি আমার প্রথম গল্প। জানি না কেমন হয়েছে। আমার পথ চলায় আপনাদের সাহায্য চাচ্ছি। পাশে থাকুন আর আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন।)
বি: দ্র: ভুল ত্রুটি মাফ করবেন ।
ধন্যবাদ 💜