রাস্তার মাঝখানে একজন লোককে নিচে ফেলে মারধর করছে কিছু ছেলে । আর তার পাশেই একটা বাইকের উপর বসে আছে একজন পুরুষ । সাদা পাঞ্জাবি আর গায়ে সাল জড়ানো এক পুরুষ । হাতে তার সিগারেট ।মুখ ভর্তি চাপ দাড়ি চুলগুলো এলোমেলো হয়ে আছে ।
_ আহিল ভাই ওরে কি ছাইড়া দিমু ? অনেক্ষন হইলো মারতাছি ।
“এতক্ষন বাইকের উপর বসে চুপচাপ সব দেখছিল আর মনের সুখে সিগারেট খাচ্ছিলো আহিল । শাওনের কথায় বাইক থেকে নেমে রাস্তায় পড়ে থাকা লোকটার কাছে গিয়ে বসে ”
_ ভাই আমারে এইবারের মতো মাফ কইরা দেন আর এমন করুম না আমি ( কাঁদতে কাঁদতেই বলে লোকটা)
” লোকটার কান্না দেখে আহিল মুচকি হাসে ।লোকটার কলার ধরে দার করায়”
_ আমার এরিয়াতে গিয়ে আমার ই লোককে মারার সাহস তুই কোথা থেকে পেলি । তোর কি একবার ও মনে হলো না
আহিল এখনো বেঁচে আছে ।
_ ভাই আমার ভুল হইছে ,,,,,,
” লোকটা আর কিছু বলতে পারে না তার আগেই আহিল লোকটার গলা চেপে ধরে।
পাশে থাকা সবাই চুপচাপ দাড়িয়ে দেখছে ।
হটাৎ ই কেউ একজন আহিলের হাত ধরে ফেলে শক্ত করে ”
_ কি করছেন কি আপনি । একটা মানুষকে মারছেন কেনো অনেক্ষন ধরে দেখছি কিন্তু। মাস্তান হয়েছেন বলে কি যা খুশি তাই করবেন নাকি । আর আপনারা এতগুলো মানুষ দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখছেন লোকটাকে একটু সাহায্য করছেন না ।
” আহিল এইবার ঘুরে তাকায় । আহিল তাকায় তো তাকিয়েই থাকে । ওর সামনে একটা ছোট্ট মেয়ে দাড়িয়ে আছে । যার চোখ দুটো থেকে আহিল চোখ সরাতে পারছে না ।
_ কি দেখছেন এইভাবে তাকিয়ে । রাস্তাঘাটে এমন মাস্তানি বন্ধ করুন । মাস্তান একটা ।
“মেয়েটা ওর চোখের সামনে দিয়ে লোকটাকে ওর হাত থেকে ছাড়িয়ে দিয়ে সামনে দিকে চলে যায় । আহিল এখনো মেয়েটার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে । কোমর ছোঁয়া রেশমি চুলগুলো বাতাসে দুলছে । মেয়েটা একটু দূরে যেতেই
শাওন এসে আহিলের পাশে দাঁড়ায় ”
_ কিরে ব্যাটা বাইচা আছোস নাকি মইরা ই গেছিস ।
” শাওনের কথায় আহিলের টনক নড়ে । শাওনের দিকে তাকায় পরে বাকিদের দিকে ও তাকায় সবাই অবাক চোখে ওর দিকেই তাকিয়ে আছে ”
_ এইডা কি হইলো ভাই । একটা মাইয়া আইসা কি করলো আপনি কিছু কইলেন না কেন ? ( বলে সিয়াম)
_ আমি মেয়ে মানুষদের কিছু বলি না সিয়াম । ওইটার কয়দিন দেখ যদি আবার ভুল করে জানে মেরে ফেলবি ( বলে আহিল)
” কথাটা বলে বাইকে গিয়ে উঠে বসে । এই সময়টুকু কি হলো মাথায় য় ঢুকছে না । জীবনে এমন কতো কিছু করেছে আহিল কখনো কেউ ওর কাজে বাধা দেওয়ার সাহস পর্যন্ত করেনি আর আজ একটা মেয়ে এসে কিনা ওর হাত থেকে লোকটাকে ছাড়িয়ে দিয়ে চলে ও গেলো । আহিলের কেমন যেনো লাগছে । শাওন এসে আহিলের পেছনে উঠে বসে । আহিল বাইক নিয়ে চলে যায় ওদের ক্লাবে ।
“আহিল পুরো নাম ” আদিয়ান আহমেদ আহিল” বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে । আহিলের বাবা হাবিব আহমেদ একজন রাজনীতিবিদ । আর মা রেবেকা বেগম ।
আহিল নিজে ও রাজনীতির সাথে জড়িত ।
বাবার অনেক নাম ডাক থাকলে ও আহিল নিজের পরিচয়ে ও পরিচিতি সকলের কাছে ।সব থেকে বেশি ভালো ইয়ং জেনারেশনের কাছে । সবাই যেনো আহিল বলতে পাগল ।
আহিল ও এইসব নিয়ে ই থাকে । সারাদিন রাজনীতির কাজেই ব্যাস্ত থাকতে হয় । আজকে গিয়েছিল পাশের এলাকায় । আহিল রাজনীতির সাথে জড়িত থাকায় ওর শত্রুর অভাব হয়নি কখনো । তবে তারা আহিলের ক্ষতি না করতে পারলে ও ওর কাছের মানুষের ক্ষতি সব সময় করে এসেছে । এর জন্যই যাওয়া তবে এখন কেনো যেনো মনে হচ্ছে আজকে যাওয়াটা ওর জন্য শুভ ছিলো ”
” ক্লাব ঘরের চেয়ারে বসে আছে আহিল । সামনে দাড়িয়ে আছে শাওন ,সিয়াম ,আর রবিন , । ওরা ও আহিলের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে অধীর আগ্রহে ওরা জানে আহিল কিছু একটা বলবে ”
_ তুই কি বলবি এমন চুপ কইরা বইসা আছোস কেন ? ( বলে শাওন)
_ হ ভাই কিছু তো কন ( বলে সিয়াম)
_ তুই কি ওই মেয়েটার কথা ভাবতাছস ? দেখ তুই যে এমন মেয়েটার ছাইড়া দিবি এইটা কিন্তু আমি ভাবী নাই । কতো বড়ো সাহস দেখছো এইটুকু মেয়ের ( বলে শাওন)
” আহিল চুপ করে বসে আছে । সত্যি ই তো যেই আহিলের সামনে লোক কথা বলতে ভয় পায় । আর আজ এত গুলো মানুষের সামনে কিনা একটা মেয়ে এমন অবস্থায় ফেললো । এইবার প্রচুর রাগ হয় আহিলের ”
_ মেয়েটাকে আমার চাই । উঠিয়ে নিয়ে আসবি কালকের মধ্যে ( রেগে কথাটা বলে আহিল)
_ হয়ে যাবে ভাই ।
” আহিল এইবার চেয়ারে মাথা হেলিয়ে বসে
মুখে তার মুচকি হাসি ”
“রিপার রুমে বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে দিয়ে শুয়ে আছে” রাফিয়া ” পুরো নাম “রাফিয়া সুলতানা রাফা ” বাড়ি চট্টগ্রাম তবে ঢাকায় খালার বাসায় এসেছে আজ দুইদিন । উদ্যেশ্য ভালো কোনো ভার্সিটি তে ভর্তি হওয়া । এসেই যে সে এক বিপদ বাঁধিয়ে ফেলেছে তা রিপা তাকে বুঝাতে চায়ছে ”
_ তুই কিভাবে এত শান্তিতে আছিস তুই জানিস তুই কি করেছিস ?
_ কিরে তুই সেই তখন থেকে কানের কাছে ঘেনঘন করছিস । কি করেছি কি আমি । একজন লোককে ঐভাবে ধরে মারছিল আমি তো আরো বাঁচিয়ে দিয়েছি ।
_ বাচিয়েছিস না ছাই । এখন কোনো বিপদ না হলেই হয় । উনাকে চিনিস তুই উনি একজন নেতা উনার বাবা একজন এমপি
যদি তোর কোনো ক্ষতি করে দেয় তখন ।
_ আমার বাবা এমপি উনি তো না । আর উনাকে চেনার কোনো ইচ্ছে ও আমার নেই কি করবে আবার শুনি একবারে নারী নির্যাতনের মামলা দিয়ে দিবো না ।
” রিপা হতাশ কাকে কি বলছে সে । কিন্তু মনে মনে ভয় ও পাচ্ছে । আহিলকে রাফিয়া না চিনুক কিন্তু রিপা তো চিনে । রাফিয়াকে কেনো যে আটকালো না । মেয়েটা এত দস্যি করো কথা ই শুনে না । রাফিয়া মনের সুখে শুয়ে আছে ”
চলবে,,,,,
#হাতটা_দাও_বাড়িয়ে
#অরিত্রা_অর্নি
#পর্ব_১
#রাজনীতি_রিলেটেড
( নতুন কিছু নতুন ভাবে সাজাবো।পড়ে অবশ্যই জানাবেন কেমন হচ্ছে)