#___ফাগুন_প্রেম_পর্বঃ ০৭+৮

0
338

#___ফাগুন_প্রেম_পর্বঃ ০৭+৮
#_লিখাঃ Bornali Suhana

আমি তো কখনোই ওকে ভালোবাসতে পারবোনা।
কেন এভাবে আমার পিছু পরে আছে?
অন্যদিকে ঈশার মনে যা হচ্ছে ভালোবাসা নাকি শুধুই ভালোলাগা তা বুঝতে পারছেনা।
আর সজিব সেতো ভেবেই মরে যাচ্ছে আজকে কেন মেয়েটা এমন করলো? ও তো মেয়েটাকে মন থেকে সরিয়েই ফেলেছিলো তাহলে কেন আবার ওর সামনে এলো?
`
বাসা থেকে বের হবে ঠিক তখনি মোবাইলটা ভো ভো শব্দে কেঁপে উঠে। রুমু কল দিয়েছে দেখেই মনটা খুশিতে ভরে ওঠে। কল রিসিভ করে বুঝতে পারলো আজকে ভার্সিটিতে যেতে হবে আর্জেন্ট। কিছু প্রয়োজনীয় কাগজ আর ছবিও সাথে নিতে বললো। কতবার করে জিজ্ঞেস করলো কি কাজ হঠাৎ করে কিন্তু মেয়েটা কিছুই বলতে রাজি না। তাই বাধ্য হয়েই ওর কথামতো সব নিয়ে বেড়িয়ে পরে।
অফিসে ঢুকে প্রিন্সিপাল স্যারকে বলে ছুটি নিয়ে নেয়। ফাহিমা ম্যাডাম তার ক্লাসগুলো নিবেন। রিকশা করে ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। কি এতো আর্জেন্ট যার জন্য ওকে এভাবে ডাকলো রুমু? কিছুই জানেনা। কিন্তু আজকে ইভানের সাথে দেখা করাটা জরুরি ছিলো। আজকে নাই হোক কালকে দেখা করে নেবে। ওর এতো দামী জিনিসটা ফেরত দিতে পারলেই শান্তি। যত্ন করে ব্যাগের মাঝে রেখেছে ভয় করছে যদি হারিয়ে ফেলে। কেমন অসস্থি লাগছে। জিনিসটা ফেরত না দেয়ার আগ পর্যন্ত মনটা শান্তি হবে না।
`
ইভান কলেজে এসেই বর্ণালীকে খুঁজছে কিন্তু কোন খবর নেই। ভাবছে কাউকে জিজ্ঞেস করবে। দূর থেকে মালিহা ইভানকে দেখেই কাছে আসে।
-“বাহ জনাবকে তাহলে দেখা গেলো?”
-“আরে কেমন আছিস?”
-“ভালো তুই?”
-“হুম ভালো তো আছিই। বাকি সবাই কোথায়?”
-“এইতো আছে ক্যান্টিনে। চল।”
-“হ্যাঁ চল। আচ্ছা বর্ণালী ম্যামকে দেখেছিস?”
ইভানের এমন কথায় মালিহা ব্রু কুচকে তাকায়। অবাক হয়েছে অনেকটা। সে তো ভেবেছিলো বর্ণালী ম্যামের পিছু ছেড়ে দিয়েছে। কিন্তু এই ছেলের সুঁই দেখি ওখানেই আটকে আছে।
-“তুই এখনো ম্যামের পিছু পড়ে আছিস?”
-“পিছু না সাথে চলতে চাই।”
-“পাগল হয়েছিস?”
-“হুম যেদিন থেকে দেখেছি সেদিন থেকে। তার ওই ব্রু কুচকে চোখ ছোট ছোট করে অসহায়ের মতো চাহনি। কাজল কালো চোখ, চোখের লম্বা লম্বা পাপড়ি আর চকলেট ব্রাউন কালারের চোখের মনি। কাছে গেলেই ভয়ে চুপসে যাওয়া। কাঁপা কাঁপা দুটো গোলাপের পাঁপড়ির মতো ঠোঁট। কথা বলার সময় জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নেয়া মাঝে মাঝে উপরের ঠোঁট দিয়ে নিচের ঠোঁট চেপে ধরা। ছোট ছোট মুক্তার মতো দাঁত ডান পাশের একটা দাঁত একটু বাকা। কিন্তু ওই বাকা দাঁতে ওর সৌন্দর্য অনেক গুন বেড়ে যায়। হাসতে হাসতে মুখে হাত রাখা আর চোখ জোরা ছোট হয়ে যাওয়া সে এক অন্যরকম সৌন্দর্য ভর করে ওর চেহারায়। ধবধবে সাদা হাত পায়ের লম্বা ছোট আঙুল। লম্বা হালকা ব্রাউন কালারের চুল আর সে চুলের কি মাতোয়ারা করা গন্ধ। উফ সারাজীবন এই চুলের গন্ধ নিতেই কেটে যাবে।”
শেষের কথাটা চোখ বন্ধ করেই বললো ইভান। মালিহা হা হয়ে চেয়ে আছে। এতোটা নিখুঁতভাবে কোন ছেলেকে কোন মেয়ের তারিফ করতে শুনেনি ও। কেমন যেনো লাগছে। ওর তারিফ করেনি তবুও ওর লজ্জা লাগছে। সে নিজের মনেই নিজে প্রশ্ন করছে,
আমি কেন লজ্জা পাচ্ছি?
জীবনে কেউ আমার দিকে এভাবে গভীর চোখে তাকায় নি। তাকালে হয়তো তার ভাষায় কেউ আমারও এভাবে নিখুঁতভাবে সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতো। আমিও তো কম সুন্দর না।
-“কিরে তুই কোন ভাবনায় ডুবে গেলি?”
-“হু? কই নাতো। চল ক্যান্টিনে যাই। সবাই অপেক্ষা করছে।”
দুজনে ক্যান্টিনের দিকে পা বাড়ায়। কিছুক্ষণ হাটার পর মাইশার পা থেমে যায় একটা কথা হুট করেই মাথায় আসে। ইভান এই কথাগুলোর মাঝে একটা কথা কিভাবে বললো? ইভানকেই জিজ্ঞেস করবে মনস্থির করলো। পেছন থেকে ইভান বলে আওয়াজ দেয়। ইভান দাঁড়িয়ে যায়।
-“হু?”
-“তুই কিভাবে জানিস ম্যামের চুলের গন্ধ মাতোয়ারা করা?”
এমন প্রশ্ন শুনে ইভান নিজেকে কেমন অপ্রস্তুতিকর অবস্থায় পড়ে যায়। নিজেকে নিজেই বকে যাচ্ছে। শিট ইভান কেন ওকে এসব বলতে গেলি? এখন না জানি উলটা পালটা কোন কিছু ভেবে বসে থাকে।
কিন্তু বলবোটা কি?
ধুর সত্যি বললে তো আর কিছুই হবেনা। বলেই দিবে ভাবলো। ফ্রেন্ড সো শেয়ার করাই যায়। ইভান মাইশার দিকে কয়েক কদম এগিয়ে এলো। ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে একটু ফিসফিসিয়ে বললো,
-“গন্ধ নিয়েছিলাম।”
মালিহা এক মুহুর্তের জন্য যেনো কেঁপে উঠলো। কয়েক সেকেন্ড চোখ বন্ধ করে একটা বড় নিশ্বাস নিয়ে দাঁড়ালো। ইভান মুচকি হেসে ক্যানটিনে চলে যায়। মাইশা এখনো সেখানে দাঁড়িয়ে আছে। ইভান ওর কাছে আসতেই এমন কেন হলো বুঝতে চেষ্টা করছে। ওর একটা নিশ্বাস কানের মাঝে পড়তেই শরীরে কাঁপন সৃষ্টি করে।
`
বর্ণালী একটু দূর থেকেই রুমুকে দেখতে পারছে। বেগুনি রঙের একটা ড্রেস পড়েছে অনেক সুন্দর লাগছে। এই রুমু মেয়েটাকে যদি ভাবী করে নিতে পারতাম। নাহ সেতো সম্ভব না। কই রুমুর পরিবার আর কই আমরা! বর্ণালী নিজের মনেই নিজে এসব আবোলতাবোল ভেবে যাচ্ছে। রিকশা থেকে নামতেই রুমু বলে,
-“কি রে এতটা দেরি হলো যে?”
-“আরে এইতো স্কুল ছুটি নিয়ে আসলাম তাই একটু দেরি হয়ে গেলো।”
-“ছুটি নিতে হয় নাকি আবার? কল দিয়ে প্রিন্সিপালকে বলে দিতে পারতি যে আজকে যাবিনা।”
-“হুম পারতাম কিন্তু ভাবলাম ওইদিকেই তো আসছি তাই ছুটিটা নিয়েই আসি।”
-“আপা ভাড়াটা দেন।”
পাশ থেকেই রিকশাওয়ালা কেমন খিটখিটে মেজাজ নিয়ে কথাটা বলে। তার যেনো ওদের কথায় খুব বিরক্ত লাগছে। এখান থেকে গেলেই উদ্ধার হয়।
-“ওহ হ্যাঁ সরি দিচ্ছি দাঁড়ান।”
-“ওয়েট।”
বর্ণালীকে থামিয়ে দিয়ে রুমু রিকশা ভাড়াটা দিয়ে দেয়। এটা রুমুর একটা অভ্যাস। যতদিন বর্ণালী ওর সাথে কোথাও যায় সবসময় ওই ভাড়া দেয়।
-“তোর এই অভ্যাসটা আর চেঞ্জ করলি না?”
-“উহু আর করবোও না সুইটহার্ট।”
`
রুমু বর্ণালীর কাছ থেকে সব পেপারস, ছবি আর মোবাইল নিয়ে যায়। বর্ণালী এখনো জানেনা ওকে কি জন্য ডেকেছে।
-“আচ্ছা তুই কি বলবি যে কি করবি?”
-“আমার উপর বিশ্বাস আছে?”
-“নিজেকে যতটা বিশ্বাস করি ঠিক ততখানিই তোকে বিশ্বাস করি জান আমার।”
-“উম্মাহ জান। তুই চুপচাপ ঠিক এখানে দাঁড়িয়ে থাক আমি আসছি।”
-“আরে আমাকে রেখে কেন?”
-“বলছি তো আসছি দাঁড়া না বাবু একটু।”
-“আচ্ছা তারাতাড়ি আয় প্লিজ।”
-“ওকেই।”
অনেক্ষণ ধরে বর্ণালী প্রশাসনিক ভবনের সামনে এদিকওদিক পায়চারি করছে। আশপাশ দেখে মনে হচ্ছে ভার্সিটি কম পার্ক বেশি। পুরো ভার্সিটিতেই জোরা কবুতর দেখা যাচ্ছে। কেউ কারো হাত ধরে আছে তো কেউ কারো কাধে মাথা রেখে আছে। দেখতেই ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে ওঠে। কিন্তু সেই হাসির সাথে চোখের মাঝে জল টইটুম্বুর করছে। যে কোন সময় গড়িয়ে পড়তে পারে। এই চোখের জল উপহার হিসেবে পাওয়া। বর্ণালী হাতের উল্টো পাশ দিয়ে চোখের জল মুছে নেয়। ততক্ষণে রুমু এসে হাজির।
-“নে এখানে একটা সাইন কর।”
-“কিসের সাইন?”
-“বলছি তো চুপচাপ কর না রে বাবা।”
রুমু চোখ রাঙিয়ে কথা বলতেই বর্ণালী আর কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ সাইন করে দেয়।
-“চল এবার।”
-“কই?”
-“চল আমার সাথে।”
রুমু বর্ণালীর হাত ধরে অফিসে নিয়ে এসে ওর কিছু পেপার আর বর্ণালীর পেপারগুলো আর সাথে প্রায় ১৩ হাজার টাকা জমা দেয়।
-“দুজনের টাকা একসাথে নাকি?”
-“জ্বি স্যার দুজনের একসাথেই আছে।”
-“আচ্ছা ওয়েট।”
বর্ণালী হা হয়ে তাকিয়ে আছে। কি হচ্ছে এসব? বর্ণালী রুমুর হাত ধরে থামাতে চাইলেই আবারো চোখ রাঙিয়ে তাকায় ওর দিকে। বর্ণালীর আর বুঝতে বাকি নেই কি করছে রুমু। ওর তো রেজিষ্ট্রেশন এর কথা ছিলো কিন্তু টাকার জন্য করতে পারছেনা। আর এই মেয়ে ওকে রেজিষ্ট্রেশন করার জন্য নিয়ে এসেছে।
কিভাবে পারে ও? আর কত করবে?
মাঝে মাঝে নিজেকে খুব ছোট লাগে। আবার ওর মতো বান্ধবী পেয়ে নিজেকে খুব ভাগ্যবতী মনে হয়।
-“এই নাও রিসিট।”
-“থ্যাংক ইউ স্যার।”
-“হুম।”
দুজনে অফিস থেকে বেড়িয়ে ক্যানটিনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
-“তুই এসব আমাকে আগে কেন বললি না?”
-“আজকের দিনটা অনেক সুন্দর না বর্ণ?”
-“হেয়ালি করবি না রুমু।”
-“এই নে তোর রিসিট।”
-“রুমু আমার কথার জবাবা দে নাহলে কিন্তু।”
রুমু হাত এদিক ওদিক নেড়ে শুধু ঠোঁট নাড়িয়ে কি যেনো বলছে।
-“রুমু কি করছিস এসব? বল কেন করলি এসব?”
-“দেখ তোর কাছে আমি আজকের ছয় হাজার খুচরা টাকা বাদ দিয়ে সব মিলিয়ে ৮হাজার ৫৯০ টাকা ৫০ পয়সা ৪আনা পাই। আমার ৪আনা তুই স্কুলে থাকতে হারিয়ে ছিলি। বিয়ের দিন তোর জামাই আমার এই টাকা আগে দিতে হবে তারপর তাকে গেট খুলে দেবো। যদিও এই কথা আগেই বলেছি তবুও মনে করিয়ে দিলাম আরেকবার।”
কথাটা শেষ হতে না হতেই বর্ণালী রুমুকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়। রুমুও একটু হেসে আরো শক্ত করে ওকে জড়িয়ে ধরে। দুই বান্ধবীই কাঁদছে। এমন কান্না মানুষ অতি সুখেই কাঁদে। অনেকবার রুমুর টাকা ফেরত দিতে চেয়েও পারেনি। রুমু নিতেই রাজিনা। হুমকি দেয় টাকা দেয়ার কথা বললে নাকি ফ্রেন্ডশিপ ভেঙে দিবে।
-“এবার ছাড় নয়তো লোকে আবার আমাদের সমকামী ভাববে।”
-“ধুর পাগলী।”
দুজনেই একসাথে হো হো করে হেসে সামনে পা বাড়ায়।
`
-“আউচ….”
-“কি হলো বর্ণালী? ইস হাতটা পুড়ে গেলো নাকি?”
-“না তেমন কিছু হয়নি।”
-“এই মেয়ে দেখে চলতে পারেন না?”
-“সো সরি আসলে দোষ আমার আমি একটুও খেয়াল করিনি।”
-“আরে চোখগুলো কি আল্লাহ হাতে নিয়ে ঘুরার জন্য দিয়েছেন? দেখো পুরো কফি ফেলে দিলে ওর ড্রেসে।”
-“ও তো সরি বলছে কেন এভাবে কথা বলছো?”
-“বাহ বাহ চুরি তো চুরি তার উপর সিনা জোরি।”
-“রুমু প্লিজ বাদ দে না। সরি আপু ও আমায় নিয়ে একটু বেশি ভাবে তো তাই। আর দোষ আমারো আছে। বাদ দেন এসব।”
-“আরে তোর কোথায় দোষ? দোষ না থাকা সত্তেও ইচ্ছে করে নিজের কাধে দোষ নিচ্ছিস কেন?”
-“রুমু চুপ কর না। কিছুই হয় নি দেখ জাস্ট একটু ড্রেসে পড়েছে।”
-“কিছুই হয়নি মানে? দেখ তো হাত লাল হয়ে আছে।”
-“আসলেই আমি খেয়াল করিনি আসেন প্লিজ আপনাকে হসপিটাল নিয়ে যাই।”
-“আরে না না ঠিকাছে। এটা তেমন কিছুনা।”
-“আসলে আমার ফ্রেন্ড খেয়াল করেনি আপনি যে এদিকেই আসছেন না হলে এমন দূর্ঘটনা ঘটতো না।”
-“এই মিস, আপনার ফ্রেন্ডকে ভালো করে পথ দেখান। আমার ফ্রেন্ডকে এভাবে আহত করেছে না জানি কখন আরো কাউকে নিহত করে দেয়।”
-“হুস রুমু এবার থাম প্লিজ। ওরা সরি বলছে তো।”
রুমু আরো কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলো বর্ণালী রুমুকে থামিয়ে দেয়।
-“সরি আপুরা ওর পক্ষ থেকে আর আমার পক্ষ থেকেও।”
রুমু ওর এমন কথা শুনে চোখ রাঙিয়ে তাকাচ্ছে।
-“আরে না সরি আপনারা কেন হবেন? আসলে আমরাই এক্সট্রেমলি সরি।”
-“আচ্ছা ভালো থাকেন যাই আমরা আবার দেখা হবে।”
-“হুম বাই।”
-“বাই।
বর্ণালী রুমুকে ভার্সিটি ক্যান্টিন থেকে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এখনো ঈশা আর রোহানী পিছনে দাঁড়িয়ে দেখছে।
-“মেয়েটা অনেক ভালো তাই না রে রোহানী?”
-“হ্যাঁ কিন্তু ওইটা বদের হাড্ডি।”
-“আরে না ওইটাও ভালো দেখলি না ফ্রেন্ডের জন্য কিভাবে ঝগড়া লেগে গেলো। আর দোষ তো আমারই ছিলো।”
-“তা তুই কার সাথে ফোনে কথা বলছিলি?”
-“আর বলিস না আমার গর্দভ ভাইয়ের সাথে। বললাম আমাকে এসে নিয়ে যেতে।”
-“ওহ আচ্ছা। তো আসছে নাকি?”
-“দেখি আসে কিনা।”
-“তোর ভাইটা দেখতে কেমন রে?”
-“ওই ও আমার ছোট ভাই। ওকে অন্তত ছাড় দে।”
-“আরেই…..!!! তো কি হলো? ছোটর সাথে প্রেম করা যায় না নাকি?”
ঈশা ভাবছে আসলেই তো। ও নিজেও তো তার ভাইকে সেইম কথা বলেছিলো।যখন সে তাকে বর্ণালীর কথা বলেছিলো।
-“শুন আমাকে ভাবী করে নে। আমার মতো ভাবী হাজারে একটা পাবিনা।”
-“হাহাহা আমার ভাই অলরেডি আমার জন্য ভাবী ঠিক করে রেখেছে।”
-“প্রেমের আগেই তোর ভাই আমায় ছ্যাকা দিয়ে দিলো।”
ঈশা একগাল হেসে বললো,
-“জানিস ইভান যাকে ভালোবাসে মেয়েটা তার থেকে প্রায় ২-৩বছরের বড়।”
-“হু!!!! কি বলছিস এসব?”
রোহানী অনেকটাই অবাক হলো। যা ও মজা করে বলছিলো তাই কিনা ওর চোখের সামনে সত্যি হচ্ছে? ঈশা ওর হা হয়ে যাওয়া মুখ বন্ধ করে বললো,
-“হ্যাঁ রে।”
-“তোর ভাইকে দেখার ইচ্ছা জাগছে আর ওই মেয়েকেও যার জন্য তোর ভাই পাগল হয়েছে। তা নাম কিরে মেয়ের?”
-“নাম? ওহ হ্যাঁ নাম বর্ণালী।”
-“নামেই মনে হচ্ছে কোন অপ্সরা হবে।”
-“হুম হতেই হবে আমার ভাইয়ের পছন্দ বলে কথা। আমারও দেখার অনেক ইচ্ছা। না জানি কবে দেখবো। আচ্ছা চল এখন ক্যানটিনে যাই।”
-“হ্যাঁ চল।”
দুজনে ক্যান্টিনের উদ্দেশ্যে পা বাড়ায়। বর্ণালী আর রুমু ক্যান্টিনে বসে আছে। ওদের দেখে একটা হাসি বিনিময় করে বর্ণালী। রুমু মুখ গোমড়া করে বসে আছে।
-“আরে রুমু বাদ দে না প্লিজ। আমি ঠিক আছি তো জান।”
-“হ্যাঁ! আচ্ছা তুই একাই পৃথিবীর বুকে এতো ভালো হওয়ার কি প্রয়োজন ছিলো। তোকে তৈরী করে আল্লাহ আর ভালো মানুষ বানানোই ছেড়ে দিয়েছেন মনে হয়।”
-“হাহাহা জান আমি এতোটাও ভালো না যতটা তুই ভাবছিস।”
-“হয়েছে হয়েছে দেখ বর্ণ একটু রাগ, অভিমান দেখাতে শিখ। একটু পালটে জবাব দিতে শিখ নয়তো সবাই তোকে পায়ের তলায় পিষে যাবে।”
-“উহু আমার জন্য তুই তো সবসময়ই আছিস জান।”
-“বর্ণালীইইইইইই।”
রুমু একটু রেগে চিৎকার করে ওর নামটা নিলো। আশেপাশের সবাই ওদের দিকে চেয়ে আছে। ঈশা নামটা শুনতেই পেছন ফিরে তাকায়। এই মেয়েটার নামও বর্ণালী? তাহলে কি এই সেই মেয়ে? না অন্য কেউ ও তো হতে পারে। এক নামের তো কত মানুষ আছে। কিন্তু এই মেয়েও তো হতে পারে। এক দৃষ্টিতে বর্ণালীর দিকে চেয়ে আছে ঈশা।
-“ঈশু।”
-“হু?”
-“এই কি সেই বর্ণালী?”
-“জানিনা। কিন্তু এই সেই বর্ণালী হলে আমি বুঝতে বাকি নেই আমার ভাই কেন ওর জন্য পাগল হয়েছে।”
-“হুম আসলেই। যাই হোক শিওর হতে হবে।”
-“হুম কিন্তু কিভাবে?”
-“সেটাই তো ভাবছি। এক কাজ কর তোর ভাইকে বল বর্ণালী ভার্সিটিতে আছে। ও আসলেই সব ক্লিয়ার হয়ে যাবে। তার আগে চল ওদের সাথে গিয়ে ফ্রেন্ডশিটা করে নেই।”
-“হুম ভালো বলেছিস চল।”
`
ঈশার সাথে কথা বলে ইভান ক্যানটিনেই বসে আছে বন্ধুদের সাথে। আজকের দিনটা ইভানের অনেক সুন্দর লাগছে। মাঝে মাঝে রোদ উঁকি দিচ্ছে আবারো মেঘে ঢেকে যাচ্ছে। কিন্তু তার যে এই মুহুর্তে বর্ণালীকে দেখতে মন চাইছে। প্রতিদিন একবার না দেখলে তার দিন সুন্দরভাবে শুরুও হয়না আর শেষও হয়না। পুরো দিন অশান্তিতে কাটে। এসব ভাবছে তখনি মালিহা এসে ইভানের পাশে বসে। মালিহার মন আজ অন্য কিছু জানান দিচ্ছে তাকে। কিন্তু আসলেই কি ও যা অনুভব করছে তা সত্যি? নাকি ভুল কিছু ভাবছে ও?
`
-“আমরা কি এখানে বসতে পারি?”
রুমু একটু ব্রু কুচকে তাকালো। কি মতলব নিয়ে এসেছে এরা তাই ভাবছে। রুমু একটু রেগেই বললো,
-“কেন?”
-“রুমু।”
বর্ণালী ওকে ডেকে একটু অসহায়ভাবে ওর দিকে তাকালো। আর রুমু সেই একটা রাগান্বিত লুক দিলো। কিন্তু ওর এমন মায়াবী চেহারা দেখে আর কিছুই বলতে পারেনা। সবসময়ই এভাবেই ওকে ব্ল্যাকমেইল করে নেয়। বর্ণালী রুমুর থেকে চোখ সরিয়ে ওদের দিকে তাকিয়ে বলে,
-“হ্যাঁ হ্যাঁ বসেন। কোন প্রব্লেম নেই।”
-“তোমরা কোন ইয়ারের?” (ঈশা)
-“থার্ড ইয়ার।”(বর্ণালী)
-“আরে আমরাও তো থার্ড ইয়ারের তাহলে তো আমরা ফ্রেন্ড হতে পারি তাই না?”(রোহানী)
-“হ্যাঁ অবশ্যই।”(বর্ণালী)
-“কোন ডিপার্টমেন্ট?”
-“একাউন্টিং। আপনারা?”
-“আরে ইয়ার আপনি বলে বুড়ি বনিয়ে দিচ্ছিস। সেইম এইজের যখন তুই করেই বললে কি ভালো শুনায় না?”(রোহানী)
-“হাহাহা আচ্ছা ঠিকাছে বলবো।”(বর্ণালী)
-“হুম দ্যাটস লাইক এ গুড গার্ল। বাই দা ওয়ে দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে যে আমরা ম্যাথম্যাটিকস ডিপার্ট্মেন্টের।”(ঈশা)
-“তুমি কি এখনো রেগে আছো?”
ঈশা রুমুর দিকে তাকিয়ে বললো। রুমু বর্ণালীর দিকে একবার তাকালো তারপর ঈশার দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিয়ে বললো,
-“রেগে ছিলাম কিন্তু এখন নেই। আর তুই করে কথা বলবি বলে আবার তুমি বলে সম্ভোধন কেন করছিস?”
-“ওহ হ্যাঁ সরি এন্ড থ্যাংক গড। তো আজকের বিলটা আমি দিবো। আমার তরফ থেকে নতুন ফ্রেন্ডশিপের একটা ট্রিট।” (ঈশা)
-“ওহ ওয়াও। তাহলে তো হয়েই গেলো। বাই দা ওয়ে আমি ইসরাত রোমানা। ইউ কেন কল মি রুমু। আর ও আমার জানের জান আত্মার আধখানা টুকরো বর্ণালী আবির সোহানা।”
বর্ণালীর দুটো গাল টেনে রুমু শেষের কথাটা বললো। বর্ণালী সাথে সাথে চোখ বন্ধ করে নিয়েছিলো। ঈশা হা হয়ে ওর সেই বাচ্চা চেহারাটা দেখছিলো। কি সুন্দরই না লাগছিলো তখন মেয়েটাকে। দেখতে অনেকটা ছোট লাগে ওকে। বয়স আনুমানিক এতোটা বড় নয়। এখনো মনে হয় ইন্টারমেডিয়েট পড়ছে।
একটা মেয়ে এতোটাও কিউট হয় নাকি?
হুম এইতো এই মেয়েটা পুরোটাই কিউটের বক্স। যদি এই সেই বর্ণালী হয় তাহলে কোন সন্দেহ নেই তার ভাই কেন তার থেকে বয়সে বড় মেয়ের প্রেমের পড়েছে৷ এতো কিউট মেয়ের প্রেমে যে কেউই পড়ে যাবে। কিন্তু মেয়েটা কিউট হলেও দেখতে কত সাধারণ। ল্যাভেন্ডার কালারের ড্রেস পড়ে আছে। ওকে ভেবেই যেনো এই ড্রেস তৈরী করা হয়েছে। ঈশা এসব ভাবনায় ডুবে ছিলো ওর ঘোর কাটে রোহানীর কথায়।
-“ওয়াও। নাইস নেইম। আমি রোহানী ফেরদৌসী আর ও আমার ফ্রেন্ড ঈশা আহমেদ। ইটস সো নাইস টু মিট ইউ ইয়ার।”
-“ইয়াহ নাইস টু মিট ইউ টু।” (বর্ণালী, রুমু)
`
সেই কখন থেকে ইভান গেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে ঈশাকে নিতে এসেছে। ঈশা আগে যতবার কল দিলো ও ধরতে পারেনি আর এখন ও কল দিচ্ছে ঈশা রিসিভ করছেনা। একদিকে বর্ণালীকে দেখি নি আরেক তো এই বুমনিটা কল রিসিভ করছনা রাগ হচ্ছে খুব।
কলেজে পিয়নকে জিজ্ঞেস করতেই বললো আজকে নাকি স্কুলে এসেই ছুটি নিয়ে চলে গেছে। টেনশন হচ্ছে খুব কিছু কি হলো নাকি? না না কিছুই হবে না। খারাপ চিন্তা মাথায় আনতে নেই ইভান বি পজেটিভ। একা একাই বিরবির করছে ইভান। তার দৃষ্টি এখনো ফোনের উপর। কল দিচ্ছে তো দিচ্ছেই। গেটের দিকে তাকাতেই ওর চোখ কপালে উঠে যায়।
বর্ণালী বুমনির সাথে কিন্তু কিভাবে?
হ্যাঁ ওইতো রুমুকেও সাথে দেখছে। আরেকটা অপরিচিত মুখ দেখতে পাচ্ছে ঈশার পাশে। হয়তো ফ্রেন্ড হবে। চারজন মিলে হেসে হেসে কথা বলে এদিকেই এগিয়ে আসছে।
💛
#_____চলবে…….

#__ফাগুন_প্রেম__
#_লিখাঃ Bornali Suhana
#_পর্বঃ ০৮

গেটের দিকে তাকাতেই ওর চোখ কপালে উঠে যায়।
বর্ণালী বুমনির সাথে কিন্তু কিভাবে?
হ্যাঁ ওইতো রুমুকেও সাথে দেখছে। আরেকটা অপরিচিত মুখ দেখতে পাচ্ছে ঈশার পাশে। হয়তো ফ্রেন্ড হবে। চারজন মিলে হেসে হেসে কথা বলে এদিকেই এগিয়ে আসছে।
ইভান কোন কিছুর হিসেব মেলাতে পারছেনা। ইভানকে দেখেই বর্ণালীর হাসি হাওয়ায় মিলিয়ে যায়। এই ছেলে আমার পিছু নিতে নিতে এখানেও চলে এসেছে? এখন কি করবো?
আমার মান সম্মান সব তো শেষ করে দেবে আজ।
ঈশাদের সামনে মুখ দেখাবো কিভাবে?
বর্ণালীর মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে সব ভয় এসে ওর মাঝে জমা হয়েছে। ইভান বাইক থেকে নেমে দাঁড়িয়েছে। ঠোঁটের কোণে ঝুলে আছে দুষ্টুমি ভরা হাসি। ভাবতেও পারেনি এভাবে ওর সাথে দেখা হবে। কিন্তু হয়ে গেলো আল্লাহর দরবারে হাজার শুকরিয়া জানাচ্ছে ইভান। কতবার কল দিলো অথচ একটাবার রিসিভ করলো না।
বাসন্তীর সাথে দেখা নাহলে যে আজকের দিনটাই পুরো বৃথা যেতো। পকেটে দু’হাত ঢুকিয়ে ইভান দাঁড়িয়ে আছে। বর্ণালী যত কাছে আসছে ততই ওর বুকের ধুকপুকানি বেড়ে যাচ্ছে। রুমু দূর থেকে ইভানকে দেখেই চিনে নেয়।
-“হেই ইভু।”
এটাই বাকি ছিলো। এই মেয়েটা কি একটুখানি চুপ থাকতে পারেনা? হে আল্লাহ এখন কি হবে!
-“হাই রুমু। কেমন আছো? অনেকদিন পর দেখা।”
-“হ্যাঁ ইয়ার তোমার ফোন নাম্বারটাও হারিয়ে ফেলেছি নয়তো আমি কল দিতাম। তা কেমন আছো?”
-“এইতো ভালোই।”
ঈশা ইভানকে চুপ থাকার জন্য ইশারা করলো। ইভান অবাক হলেও চুপ রইলো। কি খিচুড়ি পাকাচ্ছে ওই জনে। তাই ওর সাথে কথা বললো না। ঈশা মাথা নেড়ে বর্ণালীকে দেখিয়ে ব্রু নাচিয়ে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালো। ইভান লজ্জামাখা হাসি দিয়ে হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়লো। এখন আর বুঝতে বাকি নেই এই সেই বর্ণালী। এবার ও খুশিমনে বর্ণালীর পাশে গিয়ে দাঁড়ালো।
-“তা তুমি এখানে?”
-“এলাম বাসন্তীকে দেখতে।”
-“তোমাদের কি কিছু এগিয়েছে?”
বর্ণালী চোখ বড় বড় করে রুমুর দিকে তাকালো।
-“রু….রুমু কি বলছিস কি এসব?”
ইভান আমাকে থামিয়ে রুমুকে বলে,
-“তোমার বান্ধবী তো পাত্তাই দিচ্ছেনা।”
-“আচ্ছা তাই নাকি? তার মানে তোমাদের যোগাযোগ হয়?”
-“আরে প্রতিদিন দেখা হয়।”
কথাটা বলেই বর্ণালীর দিকে তাকিয়ে ইভান চোখ মারে। সাথে সাথে বর্ণালী চোখ নামিয়ে নেয়। ইভান আরেকটু এগিয়ে আসে বর্ণালীর দিকে। বর্ণালী ভয়ে ঈশার হাত ধরে ফেলে।
-“আমার সাথে দেখা করে আসো নি কেন?”
-“আ……আমি কেন তোত….তোমার সাথে দেখা করবো?”
-“জানোনা তোমাকে না দেখলে আমার দিন ভালো যায় না।”
——-(নিশ্চুপ——-
রুমু একটু কেশে বললো,
-“উহহু উহহু আপনাদের কি আমরা একা ছেড়ে দেবো নাকি?”
-“হ্যাঁ হ্যাঁ সমস্যা নেই। আমরা আপনাদের ডিস্টার্ব করবো না।” (ঈশা)
ইভান ঈশার কথা শুনে হেসে দিলো। তার বোনটাও শেষ পর্যন্ত তার জন্য নাটক করছে? আজব!
রোহানী এতোক্ষণ নীরব শ্রুতা হয়ে ছিলো। কিন্তু এবার কথা বলে ফেললো।
-“আরে চল চল ওদের একটু একা কথা বলতে দে। আচ্ছা আমি বলছি কি আপনারা যদি বাইরে কোথাও যেতেন তাহলেই ভালো হতো। নারে বর্ণালী? আসলে ও লজ্জা পেয়ে বলছে না। আপনি ওকে নিয়ে যান।”
বর্ণালী এমন কথা শুনে আকাশ থেকে পড়লো। সবাই কেন ওকে নিয়ে এভাবে উঠে পরে লেগেছে। ও তো কারো সাথে কিছু করেনি। আজব মেয়েগুলা।
-“দে….দেখো তুমি এ……এখান থেকে চলে যাও।”
-“হুম চলে যাবো। তার আগে এক কাপ কফি হয়ে যাক?”
-“কিভাবে ভাবলে আ….আমি তোমার সাথে ক….কফিতে যাবো?”
-“আমি তোমাকে বলিনি। রুমু চলো তো ওদের সবাইকে নিয়ে চলো। আমরা কফি খাই। এখানে খুব ভালো একটা কফি হাউজ আছে।”
বর্ণালী অবাক হয়ে সবার দিকে একবার একবার তাকায়। এখনো ঈশার এক হাত ধরে আছে সে খেয়ালই নেই ওর। ঈশা ওর এই ভয় পাওয়া লুকটা দেখে বেশ মজা পাচ্ছে। ভয়ে ঠিকমতো কথাও বলতে পারছেনা। মেয়েটা এতো কিউট কেন! ভয় পেলেও কিউট লাগে। রুমু বর্ণালীর অবস্থা বুঝতে পেরে বললো,
-“না ইভু অন্যদিন যাবো নে। আজ থাক প্লিজ।”
-“কিন্তু আমি তো…..”
-“আমি তোমাকে সময় করে কল দিয়ে বলবো নে। আজকে না সরি। আসলে সময় নেই।”
-“ইট’স ওকেই রুমু। কিন্তু তোমার বান্ধবীকে বলো না প্লিজ আমার প্রপোজালটা এক্সেপ্ট করে নিতে।”
-“হু করবে সময় দাও ইয়ার।”
-“রুমু চল প্লিজ। ঈশা, রোহানী চল। আমার দেরি হচ্ছে।”
কথাটা বলেই বর্ণালী সামনে হাঁটা ধরে। তার পিছে পিছে বাকি সবাইও যায়। বর্ণালী কিছুদূর যেতেই মনে হয় ওর জিনিসটা ফেরত দিতে হবে তো। পিছনে তাকিয়ে দেখে ইভান মুচকি হেসে দাঁড়িয়ে আছে।
-“এক মিনিট ওর সাথে আমার একটা কথা ছিলো।”
-“এই না বললি কথা বলবি না এখন আবার কথা বলবি?”(রুমু)
-“আরে যা বর্ণালী তুই কথা বলে আয়। প্রয়োজনে রেস্টুরেন্টে যা লাঞ্চ কর কোন সমস্যা নেই।” (ঈশা)
-“হ্যাঁ হ্যাঁ চল আমরা যাই। এখানে আমরা কাবাবে হাড্ডি হতে চাই না।” (রোহানী)
-“তোরা চুপ করবি প্লিজ? আমরা একটা সিরিয়াস কথা আছে।”
-“তা কি সেই সিরিয়াস কথা?”(রুমু)
-“ইয়ে মানে…”
-“কি মানে?”(ঈশা)
-“আসলে ওকে একটা জিনিস দেয়ার ছিলো।”
-“বাহ! বাহ! এতোক্ষণ তো ভালোই অভিনয় করলি আর এখন জিনিস দেয়া নেয়া হচ্ছে? কিভাবে পারলি আমাদের থেকে কথা লুকাতে?”(রোহানী)
-“আরে আমরা হলাম দু’দিনের না না সরি কয়েক ঘন্টার ফ্রেন্ড আমাদের কি আর সব কিছু বলবে?”(ঈশা)
-“আরেহ তোরা যা ভাবছিস তা নয়।”
-“তোমরা না হয় কয়েক ঘন্টার ফ্রেন্ড আমি তো ছোট বেলার বান্ধবী ছিলাম বর্ণ। আমাকেও বললি না? কিভাবে পারলি তুই?”
-“কি সব উলটা পালটা বলে যাচ্চিস তোরা?”
-“বাহ! এখন আমরা উলটা পালটা বলছি না? তোর সাথে আমার আর কোন নেই। চললাম আমি।”(রুমু)
রুমু রাগ দেখিয়ে দ্রুত পায়ে চলছে। এদিকে বর্ণালী আর ইভানের দিকে না গিয়ে ভাবলো বান্ধবীর রাগ ভাঙানো এখন প্রয়োজন বেশি। রাস্তায় এতো গাড়ির যাতায়াতের মধ্যে রুমু হুরহুর করে পাড় হয়ে যায়। আর ও রাস্তা পাড় হতেই পারছেনা। বর্ণালী কখনোই একা রাস্তা পাড় হতে পারেনা। সবসময় ওকে রুমু হাত ধরে রাস্ত পাড় করে দেয়। কিন্তু এখন কিভাবে পাড় হবে ভাবতে না ভাবতেই ঈশা এসে হাত ধরে রাস্তার ওপারে নিয়ে যায়। রাস্তা পাড় হতেই রোহানী তাদের থেকে বিদায় নেয়। বর্ণালী আর ঈশা রুমুর পিছুপিছু প্রায় দৌড়াচ্ছে। রুমু সিএনজি তে উঠতেই বর্ণালী আর রুমুও একরকম দৌড়ের উপর উঠে যায়। এদিকে ইভানও বাইক নিয়ে তাদের সাথে সাথেই আসছে।
-“দেখ রুমু তুই যা ভাবছিস তা একদম নয়। ওর সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। সেদিন রাতে ও দেখা করতে এসে আমাকে গিফট দিয়ে যায়। আর আমি……”
-“বাহ! এর মাঝে দেখাও করে ফেলেছিস? তাও রাত্রে? গিফটও দিয়েছে? এর পরেও বলছিস তেমন কিছুনা?”
বলেই মুখ অন্য দিকে ফিরিয়ে নেয় রুমু। ঈশা মিটিমিটি হাসছে আর বর্ণালীর টেনশনে ভরা মুখ দেখছে। ভালোই লাগছে ওর কাছে। একটা মেয়ে তার বন্ধুত্তের সম্পর্ককে যদি এতো গুরুত্ব দেয় না জানি অন্য সম্পর্কগুলোকে কত বেশি গুরুত্ব দিবে। ভাবতেই ভালো লাগছে ঈশার যে ও এমন একজন ভাবী পাবে। যদি ছোট ভাইয়ের বউ তাও তো ভাবী। খুব খুশি লাগছে আজ ওর।
-“রুমু প্লিজ না বনু একটু বুঝ। ট্রাস্ট মি ইয়ার আমি তোকে বলার সুযোগটাই পেলাম কই বল?”
-“হ্যাঁ আমি তো ভিনদেশের প্রানী যে আমাকে পাওয়া যায় না।”
-“ঈশা একটু বুঝা না ওকে।”
-“ভাই আমি কি বুঝাবো? আমিও রুমুর সাথে একমত।” (ঈশা)
এবার যেনো বর্ণালীর নিজেকে অনেক অসহায় লাগছে। চোখের কোনে জল টইটুম্বুর করছে। একটাই তো বেস্ট ফ্রেন্ড ওর। যদি এভাবে হারিয়ে ফেলে তাহলে সে কিভাবে থাকবে? না না কখনোই হারাতে পারবে না ওকে।
-“সরি রুমু দেখ আর কখনোই তোর থেকে কিচ্ছু লোকাবো না। প্রমিজ করছি দেখ।”
রুমু এতোক্ষণ বাইরে তাকিয়ে ছিলো বর্ণালীর কথায় ভাবলো মেয়েটাকে আর বেশি রাগ দেখালে কেঁদেই দিবে। তাই আর রাগ না দেখিয়ে ওর দিকে ফিরে তাকালো।
-“সরি রুমু।”
বর্ণালী অসহায়ভাবে তাকিয়ে আছে।
-“হুম ইট’স ওকে।”
এবার বর্ণালী রুমুকে জড়িয়ে ধরে।
-“লাভ ইউ রে। আমি তোকে ছাড়া থাকতে পারবো না।”
রুমু না পেরে হেসেই দেয়।
-“হুম জানি। হয়েছে ছাড় আর কাঁদতে হবে না। এক্সট্রা ভালোবাসা কম দেখা আমাকে। সব জমিয়ে রাখ ইভানের জন্য।”
-“রুমু প্লিজ তুইও না!”
-“আচ্ছা বর্ণালী তুই কি ওকে ভালোবাসিস?”(ঈশা)
-“আরে ধুর কিসব বলছিস? ও পিচ্চি একটা ছেলে। আমার ছোট ভাইয়ের বয়সি হবে। আর আমি কিনা ওকে ওই চোখে দেখবো! অসম্ভব।”
-“আচ্ছা ছোট বড় সাইডে রাখ। তুই শুধু ইভানকে দেখ৷ একটা হিরো টাইপের ছেলে যে কিনা তোকে প্রথম দেখেই প্রেমে পড়ে যায়। তোর সম্পর্কে কিছু না জেনেই প্রপোজ করে বসে। তোকে ভালোবাসে অনেক বেশি। এবার বল তুই কি ওকে ভালোবাসিস?” (রুমু)
-“হুম…..”
বর্ণালীর কোন এক ঘোরের মাঝে হুম কথাটা বেরিয়ে আসে।
-“এই তো লাইনে এসেছো বাছাধন। এতোক্ষণ তো খুব ছোট ছোট বলে না করছিলি। আর এখন আসলো মনের কথা মুখে?” (ঈশা)
বর্ণালী৷ এবার থ হয়ে গেলো। ওর মনের অজান্তেই মুখ থেকে হুম বেরিয়ে গিয়েছিলো।
-“কখনোই না। ওইটা তো এমনিতেই হুম বেরিয়ে এসেছে মুখ থেকে।”
-“আচ্ছা আচ্ছা বাদ দে। দেখিস তুই একসময় ঠিকিই ওর প্রেমে পড়ে যাবি।” (ঈশা)
-“কখনোই না।”
-“আচ্ছা সে দেখা যাবে। এখন বল রাত্রে দেখা করতে এসে কি কি হয়েছে হুম হুম?”(রুমু)
একটু আহ্লাদী কন্ঠে হেসে হেসে চোখ মেরে কথাটা জিজ্ঞেস করলো। ঈশাও সাথে সাথে তাল মেলায়।
-“হ্যাঁ রে বলনা প্লিজ তুই কি দিলি আর তোকে কি দিলো?
বর্ণালী খালি গলায় ঢোক গিললো। কি বলবে এবার ও? ওইসব কিভাবে খুলে বলবে? কিন্তু না বললেও তো হবেনা। একটু আগেই যে ও প্রমিজ করেছে। কিছু বলার আগেই সিএনজি থেমে যায়।
দুজনেই অবাক হলো এটা শুনে যে ঈশার বাসাও বর্ণালীর বাসার ওদিকে। রুমুর বাসা এখানেই কিন্তু ও আজ বাসায় যাচ্ছেনা। পাশেই একটা পার্ক আছে ঈশা আর বর্ণালীকে টেনে পার্কের দিকে একসাথে হাঁটা ধরলো।
ঘাসের উপর বসেই রুমু বর্ণালীর হাত চেপে ধরে বললো,
-“হুম এবার বল কি হয়েছিলো সেদিন রাতে?”
-“আসলে….”
-“হুম আসলে কি?”(ঈশা)
বর্ণালী সবকিছু খোলে বললো ওদের। দুজনেই হা হয়ে তাকিয়ে আছে ওর দিকে। এতো কিছু হয়ে গেছে?
-“আচ্ছা বর্ণালী বলতো ইভান যখন তোর কোমড় জড়িয়ে ধরেছিলো তখন তোর কেমন লেগেছিলো?” (রুমু)
রুমুর এমন প্রশ্নে ঈশা তো লজ্জা পেলোই সাথে জানার জন্যও এক্সাইটেড হয়ে বর্ণালীর জবাবের আশায় বসলো। কিন্তু বর্ণালী বেচারি তো লজ্জায় মাটির সাথে মিশে যাচ্ছে। ঠোঁট, গাল, নাক ও চোখ লাল হয়ে গেছে। নার্ভাস আর ভয়ে এমন হচ্ছে।
ঈশার মোবাইলে টুং করে শব্দ করে উঠে। মোবাইল নিয়ে দেখে ইভান মেসেজ করেছে।
-“ওই কোথায় তোরা?”
ঈশা লুকিয়ে ওর মেসেজের রিপ্লে দিয়ে দেয়।
-“পার্কে আছি।”
ইভান মেসেজ দেখলো বাট রিপ্লে দিলো না। বুঝতেই পারছে এখানে তো একটাই পার্ক। সেখানেই যাওয়ার জন্য রওয়ানা দেয়।
`
-“কিরে বলনা? কেমন অনুভূতি হয়েছিলো?”(ঈশা)
-“আ….আসলে আমার না হার্টবিট অনেক দ্রুত বিট করছিলো। মনে হচ্ছিলো এখনি হার্ট অ্যাটাক করবো।”
বর্ণালী অনেক অসহায়ভাবে তাকিয়ে কথাগুলো বললো। ঈশা আর রুমু ফিক করে হেসে দিলো। ওদের হাসির মাত্রা যেনো বেড়েই যাচ্ছে। বর্ণালী বুঝতে পারছেনা ও এমন কি বললো যে ওর উপর ওরা এভাবে হাসছে?
-“তোরা এভাবে হাসছিস কেন?”
-“তুই প্রেমে পড়েছিস রে পাগলী এটাও বুঝলি না?” (রুমু)
-“হুম ম্যাডাম যতই না না বলেন না কেন আপনি ওই কিউট ছেলেটার প্রেমে পড়ে গেছেন।”(ঈশা)
-“আর কিছু বুঝতে পারছি কিনা জানিনা বাট এটা ঠিকই বুঝলাম যে তোরা পাগল হয়েছিস।”
বলেই বর্ণালী যাবার জন্য উঠে দাঁড়ালো।
-“আরে আরে কই যাস?”(রুমু)
-“দেখ আমার বাসায় যেতে হবে। আমার ক্ষুধা পেয়েছে অনেক।”
-“আচ্ছা এখন বাহানা দিয়ে পালাচ্ছিস কেন?”(ঈশা)
-“দেখ আমি বাহানা দিচ্ছিনা। আর পালাবো কেন?”
-“তাহলে বস না। আচ্ছা বল না ইভান যখন তোর কোমড় জড়িয়ে চুলের গন্ধ নিচ্ছিলো তোর অনুভূতিটা কেমন ছিলো? চোখ বন্ধ করে ছিলি না খোলা ছিলো?”(রুমু)
-“প্লিজ না রুমু চুপ কর। আমার এসব শুনতে ভালো লাগছেনা।”
-“আচ্ছ বাচ্চু? করতে ঠিকই ভালো লাগে আর আমরা বললে ভালো লাগেনা?”(রুমু)
-“এই বলনা লিপ কিস টিস কিছু হয়েছে?”(ঈশা)
এমন কথা শুনে বর্ণালীর চোখ চড়কগাছ হয়ে গেছে। এই মেয়েগুলো এসব কি বলছে?”
-“ছিইইইইইই…..তোরা আসলেই পাগল হয়ে গেছিস। আমি গেলাম থাক তোরা।”
ঈশা বর্ণালীর হাত ধরে বসিয়ে দেয়।
-“আচ্ছা লিপকিস না হোক ফরহেড কিস তো করতেই পারে নাকি?”
বর্ণালী এবারো অসহায়ভাবে ওর দিকে তাকালো৷ রুমু আমতা আমতা করে বললো,
-“আ…আচ্ছা ওসব বাদ। গালে তো কিস করতেই পারে? করেছে?”
-“না আমার মা কোন কিছুতেই কিস করেনি। এবার তো চল।”
-“সত্যি কোন কিছুতেই কিস করেনি?”
এবার বর্ণালী কিছুটা ঘাবড়ে গেলো। ইভান তো আসলেই কিস করেছিলো তাহলে ও কেন মিথ্যা কথা বলছে ওদের? না না এসব বলা যাবেনা এমনিতেই যা পঁচানি দিয়েছে এসব বললে না জানি আরো কত পঁচায়।
-“উহু কোন কিছুতেই না।”
-“আসলেই কি কোন কিছুতে কিস করিনি?”
পেছন থেকে একটা ছেলে কন্ঠের আওয়াজে বর্ণের আত্মা কেঁপে উঠে। হু যা ভাবছিলো তাই। ইভান এক হাত পকেটে ঢুকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। চোখে সানগ্লাস দেয়া। এই ছেলেটা আসলেই অনেক কিউট। ছিঃ ছিঃ এসব কি ভাবছে ও। বর্ণালী ভয়ে খালি গলায় ঢোক গিলে বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে যায়।
-“তু…..তুত…..তুমি?”
-“হ্যাঁ আমি। কেন আমি আসতে পারিনা?”
বর্ণালী চুপ মেরে আছে। ভয়ে বারবার নিজের হাত নিজেই কচলে যাচ্ছে। নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। কি বলবে বুঝতে পারছেনা। হার্টবিটটা আবারো বেড়ে গেছে। ইভান নীরবতা ভেঙে বললো,
-“তা কি যেন বলছিলে? হ্যাঁ আমি তোমার কোথাও কিস করিনি। সত্যি করিনি? নাকি ভুলে গেছো যে সেদি…”
বর্ণালী ইভানকে আর কিছু বলতে না দিয়ে চট করে ওর হাত দিয়ে ইভানের ঠোঁটে আলতো করে চেপে ধরে। ইভান বর্ণালীর এমন স্পর্শে যেনো কোথাও হারিয়ে যাচ্ছে। অন্যরকম এক ভালো লাগা কাজ করছে ওর মাঝে। শরীরে যেনো কেমন একটা শিহরণ বয়ে যায়। হা হয়ে তাকিয়ে আছে বর্ণালীর চোখের দিকে। চোখের পলক যেনো পড়তেই চাইছেনা। এতো সুন্দর কেন এই মেয়েটা! বর্ণালী ওর দিকে অসহায়ভাবে তাকিয়ে আছে। ওর চোখ যেনো অনেক না বলা কথা বলে দিচ্ছে। ইভান তার ঠোঁট দিয়ে আলতো করে বর্ণালীর হাতের তালু চেপে ধরে। বর্ণালীর পুরো শরীর কেঁপে উঠে। চট করে হাত সরিয়ে নেয়। ঈশা আর রুমু তখন থেকে চুপচাপ দাঁড়িয়ে এসব দেখছে। রুমু ঈশার কাধের উপর দু’হাত দিয়ে গলা জড়িয়ে ধরে বললো,
-“দেখ না ওদের দুজন কে কত সুন্দর মানিয়েছে।”
-“হ্যাঁ রে একদম পারফেক্ট। আমি তো ভাবতেই পারিনি আমার ভাইয়ের পছন্দ এতো ভালো হবে।”
রুমু ভাবছে ও কি কিছু ভুল শুনলো? ঈশাকে ছেড়ে ওর সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলে,
-“তোর ভাই মানে?”
ঈশা এক ঘোরে কথাটা বলে ফেঁসে গেছে। ভেবেছিলো ওর পরিচয় না দিয়ে ওদের সাথে এভাবে বন্ধুত্ত রাখবে আর সবকিছুর মজা নিবে। এখন যদি বর্ণালী জানে ইভান ওর ভাই তাহলে তো আর কিছুই শেয়ার করবে না। আর হয়তো এটা জানলে ইভানের প্রপোজাল কখনো এক্সেপ্টও করবেনা। একটা ভয়ের মাঝে পড়ে গেলো। কিন্তু এখন ও কি বলবে?
-“ইভান তোর ভাই তুই বললি না কেন?”
-“ক….কই বললাম ও আমার ভাই?”
-“দেখ ঈশা কথা পাল্টানোর চেষ্টা করবি না। মিথ্যেও বলবিনা যা বলবি সত্যি বল।”
-“না মানে হ্যাঁ ও আমার ভাই। কিন্তু প্রমিজ কর তুই এই কথা বর্ণালীকে বলবিনা।”
-“কেন?”
-” প্লিজ ইয়ার ওকে এই কথাটা বলিস না। ও যদি এটা জানে হয়তো ইভানের প্রপোজাল কখনো এক্সেপ্ট করবে না। আর আমার সাথেও মন খুলে কথা বলতে পারবেনা। প্লিজ প্লিজ প্লিজ। আমি ওর ফ্রেন্ড হয়ে থাকতে চাই।”
-“আচ্ছা বাবা পিংকি প্রমিজ আমি বর্ণালীকে কিছুই বলবোনা।”
-“থ্যাংকস এ লট ইয়ার।”
এবার দুজনে বর্ণালী আর ইভানের দিকে এগিয়ে আসে। রুমু ইভানকে বলে,
-“ইভান কি যেনো বলছিলে?”
-“বলছিলাম যে আমি তো কিস….”
-“হাতের উপর করেছে।”
সবাই চোখ বড় বড় করে বর্ণালীর দিকে তাকিয়ে আছে। বর্ণালী ভয় পেয়ে চোখ বন্ধ করে এক নিশ্বাসে কথাগুলো বলেই দেয়। না জানি এই ছেলে উলটা পালটা কিছু বলে দেয় তার চাইতে নিজেই সত্যি বলে দেয়াটা ভালো। আর ইভান বললে হয়তো রুমু আর ঈশা রাগ করতে পারে। ভাবতে পারে ও তাদের কাছ থেকে কথাটা লুকিয়েছে। তাই তো হুট করেই বলে দেয়।
-“আচ্ছা তলে তলে এতো কিছু? তা কয়টা কিস করেছে রে বর্ণ?” (রুমু)
বর্ণালী রুমুর দিকে চোখ ছোট ছোট করে ব্রু কুচকে অসহায়ভাবে তাকালো। ওর এই তাকানোটা বলে দিচ্ছে যে কেন রুমু এসব জিজ্ঞেস করে ওকে এখন অস্বস্তিকর পরিস্থিতি ফেলছে।
এভাবে কেউ কিস এর কথা জিজ্ঞেস করে নাকি যে কয়টা কিস দিয়েছে?
কোথায় কিস দিয়েছে?
না জানি কখন এটা জিজ্ঞেস করে বসে যে কিভাবে কিস করেছে?
💛
#_____চলবে……..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here