গ্রামের ছেলেটি -(পর্ব- ১৯ তম)

0
468

#গ্রামের_ছেলেটি

পর্ব- ১৯ তম

স্বপন

আমিঃ তোর সাথে যে আগে যেই ছেলেএ বিয়ে ঠিক হয়েছিলো তার তাহলে কিবে,,
রাইসাঃ আমার কারো সাথেই কোন বিয়ে ঠিক হয় নি ওকে , এমনি বাবা তার বন্ধুর ছেলের কথা বলেছিলো বাবা আমি না করে দিয়েছি,,,
আমিঃ হুম,,, এখন যদি রাকিব অন্য কোন মেয়েকে বিয়ে করে ফেলতো তাহলে,,,
রাইসাঃ তাইলে কি আর দেশে কি ছেলের আহাল পরেছে,,
আমিঃ তোর একটু ও কষ্ট হতো না,,,
রাইসাঃ আমার কথা বাদ দে তোর কষ্ট হচ্ছে না নিলিমার জন্য,,,,

আমি কিছু বলছি না চুপ করে ওর দিকে তাকিয়ে আছি,,,

আমিঃ কষ্ট খুব পরিচিত একটা শব্দ, এর সাথে খুব পুরো সম্পর্ক তাই হয় তো এটাকেই আপন করে নিয়েছি,,,
রাইসাঃ তারপরও যাকে ভালোবাসলি তাকে নিজের সামনে অন্য কারো হতে দিবি,,,
আমিঃ ভেবে নেবো স্বপ্ন দেখেছি ঘুম ভেঙে গেছে আর সেও হারিয়ে গেছে,,, তাই তোর এতো দূর চলে এলাম, যাতে ওকে দেখে আর কষ্ট না হয়।
রাইসাঃ কিন্তু নিলিমা ম্যাডাম যদি নিজে তোর কাছে এসে বলে নতুন করে আবার শুরু করতে তাহলে,,,
আমিঃ হাহাহাহ,,,,কথাটা কেমন যেন যেগে স্বপ্ন দেখার মতো লাগলো,,,
রাইসাঃ তোর কি মনে হয় ভালো কি তোরা ছেলেরাই বাসতে জানিস। আমরা মেয়েরা ভালোবাসতে জানি না,,,,
আমিঃ আমি সেই কথা কি বলেছি,,,
রাইসাঃ তাহলে,,,

তোর কথা মতো যদি নিলিমা আমার জিবনে ফিরে এলে আমার জীবনের সেরা পাওনাটা পাবো,। এসব ভাবতে ভাবতে চলে এলাম,,,,,,,,

বাড়িতে এসে দেখি মা আর সুমা কেউ ঘরে নেই,,,,
কিছুক্ষন পর রাকিব আসতেছে, দেখে মনে হচ্ছে অনেক বড় শক খেয়েছে ।

আমিঃ এতো ক্ষন বসে কি কথা বলল্লি,,
রাকিবঃ আমার মাথায় কিছু আসছে না,, তুই বললি রাইসার বিয়ে, কিন্তু এখানে এসে দেখি অন্য কিছু ,,,,
আমিঃ আমি কি করে জানি রাইসাকে জিজ্ঞেস কর,,আমি কি করে বলব আমাকে রাইসা যা বলেছে আমি তাই বলেছি,,,তা তোর হবু শ্বশুর কি বলেছে,,,,
রাকিবঃ সালা তার মানে তুই সব জানতি,,যেনেই আমার সাথে এমন করেছিস না,,

এই বলে আমাকে মারা শুরু করে,,,,

আমিঃ আরে দাড়া আমাকে মারছিস কেন,,? ঠিক আছে সরি,সরি,,ভেবেছি তোকে সারপ্রাইজ দেবো তাই ওভাবে বলেছি,,,,

রাকিব আমাকে ছেড়ে দিলো,,,

আমিঃ তো কি বলল,,,,

রাকিবঃ পরিবারের কথা জিজ্ঞেস করলো৷, বাড়ি কোথায়, আমরা কয় ভাই বোন, বাবা কি করেন আরও অনেক কিছু মনে হলো বিরাট বড় একটা ইন্টারভিউ দিচ্ছি,,,
আমিঃ তোমার কাছে তার মেয়েকে দিবে তার সম্পর্কে জানবে না,,,
রাকিবঃ আমার তারপরও কেমন যেন ভয় হচ্ছে, মনে হচ্ছে স্বপ্ন দেখছি,,,,
আমিঃ আরে স্বপ্ন না সত্যি,, (আমি ওকে চর মেরে,,)চল তোকে আমার গ্রাম দেখাই,,,

আমরা দুইজনে মিলে হাটতেছি রাস্তা দিয়ে, ফয়সাকে ফোন করলাম। ফয়সাল দোকানে বসা আমি আর রাকিব চলে গেলাম ওর কাছে।

গিয়ে দেখি ফয়সাল একা বসা,,,,,

আমিঃ একা এখানে বসে কি করস,,,
ফয়সালঃ কি করবো কাজ নেই তাই বসে আছি,,,
আমিঃ চল একটু ঘুরিয়ে আসি,এখানে বসে থাকার চেয়ে।

হাটতেছি সামনে দেখলাম কয়েকটা জাম্বুরা গাছ,। ফয়সালকে জিজ্ঞেস করলাম মালিক কে, ফয়াসাল বলল, মেম্বারের গাছ।

আমিঃ চাইলে দিবে,,
ফয়সালঃ চেয়ে খাওয়ায় কি মজা, যেই মজা না চেয়ে খেতে..
আমিঃ এখন তো ধরা পরে যাবো,,,
ফয়সালঃ এখন কেন রাতে,,, রাতে এখানে সেরকম কেউ আসে না,,,,আরামছে আমাদের কাজ হয়ে যাবে,,,

রাতে গেলাম আমরা তিন জনে রাকিব ভয় পাচ্ছে,,

আমিঃ ধুর বেটা ভয় পাছ কেন তুই এলাকার ভবিষ্যৎ জামাই তোর শ্বশুর থাকতে কিসে ভয়,,,,
রাকিবঃ সালা একে তো ভয়ে মরছি,তার উপর তোর এই উল্টো সান্তনা যদি ধরা পরি তাহলে কি আর চোর ছেলের কাছে মেয়ে দিবে,,,
আমিঃ আরে কি ভয় পাচ্ছিস আমরা থাকতে তোর কিসে ভয়। তুই দূরে থাক যদি সেরকম কিছু হয় তাহলে গিয়ে সোজা তোর শ্বশুর বাড়ি চলে যাবি।।

আমি গিয়ে উঠলাম গাছে রাকিবকে দূরে দাড় করিয়ে রেখেছি, দেখার জন্য কেউ আসলে আমাদের যানানোর জন্য । ফয়সাল গাছে নিচে দাঁড়িয়ে দেখছে,,

ফয়সালঃ শিমুল কি হলো তারাতাড়ি কর,,,,
আমিঃ আরে কথা না বলে তারাতাড়ি লুকা কে যেন বের হচ্ছে,,,

সবাই যার যার করে সরে পরে,,,কিছুক্ষন পর ফয়সালকে ডাক দিয়ে বলি ধরতে প্রথম এ কয় টা ধরতে পারলেও একটা নিচে পরে শব্দ হয়,,,

আর কি মেয়েলি কন্ঠে কে যেনো বলে উঠে,,কে কে,,,কে ওখানে,,ফয়সাল আর রাকিব দিলো এক দোড়। আমি গাছে তারাহুরো করে নামতে গিয়ে পড়ে যাই,,

আমিঃ ভাগ্য ভালো কিছু হয় নি,,, ( মনে হলো কিছুর উপর পরেছি, মনে হলো মানুষ,,অন্ধকারে হাত যে কোথায় গেছে বুঝলাম না। মনে হলো এটা মেয়ে মানুষ। আমি সাথে সাথে তার উপর থেকে উঠে যেতে ধরলাম।। সে আমাকে পিছন থেকে ধরে ফেলে,,,

মেয়েটাঃ আমাদের গাছ থেকে চুরি করা দাড়া,,,

আমি ঘুরে তার মুখ টিপে ধরে বলি,,,,
আমিঃ চুপ তা না হলে কিন্তু অন্য কিছু ঘটে যাবে, আমি বলে দিবো আপনি আপনার বয়ফ্রেন্ডের সাথে কি করেছে,,,

এই বলে মুখ ছেরে দেই,,

মেয়েটিঃ বাচার জন্য আবোল তাবোল বলছে,,,কোন লাভ হবে না,,

আমাকে ধরে বলতে থাকে, আমি ভয়ে আছি যদি কেউ আমাদের এভাবে দেখে তাহলে ভাববে আমাদের মধ্যে কিছু আছে,,

আমি তার হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করছি কিন্তু সে কিছুতেই ছারছেনা। কোন উপায় না পেয়ে দিলাম এক চর মেয়ে আমাকে ছেড়ে তারগাল ধরে।

আমি চলে যাবার সময় তাকে সরি বলে আসি,,তেমন অন্ধকার না জোছনা আলোয় যতটুকু বোঝা যায় মেয়েটি দেখতে সুন্দর।

আমিঃ সরি,,চর এর জন্য না,, তখন হাত আপনার,,,, সরি,,

বলে দিলাম এক দোড়,,

রাকিবকে যা বলেছি সালা তাই করছে দৌড়াতে দৌড়াতে রাইসাদের বাড়ি চলে যায়। গিয়ে একদম রাইসার সামনে দাঁড়ায়। রাইসা দেখে অবাক হয়ে মুচকি হাসি দিলো,। আর সবাই মিলে চিল্লাতে শুরু করে দেয়,,। ইসরাত আপু ওদের কাছে এসে বলে,,

ইসরাত আপুঃ নে রাইসা নাচার পার্টনার পাচ্ছিস না এখন তোর পার্টনার চলে এসেছে,,,
রাকিবঃ কি,,,(আসতে করে রাইসাকে বলে,,)
রাইসাঃ মুচকি হেসে রাকিবের হাত ধরে বলে এখন আমাদের নাচতে হবে,,,
রাকিবঃ কিন্তু আমি তো নাচতে পারি না, আর আমি খুব ক্লান্ত,,
রাইসাঃ কি,,, (সন্দেহজনক ভাবে,,)
রাকিবঃ আরে তেমন কিছু,,(কি করে যে বলি তোমাকে রাকিব মনে মনে)

কোন উপায় না পেয়ে রাকিব নাচলো অল্প কিছু ক্ষন নেচে রাকিব বসে পরে,,, কি করবে পরে গেছে ফান্দে,। রাইসার বাড়ির মানুষ সবাই তো নতুন জামাই নতুন জামাই বলে। কেউ দুলাভাই বলে টেনে নিয়ে যায় কেউ নাতনি জামাই বলে। বেচারা পরে গেছে একা কি করবে কাউকে কিছু বলতেও পারছেনা,,

তিন জন একখানে বসে আছি জাম্বুরা নিয়ে, ওরা চিন্তায় শেষ সকালে উঠে যদি নালিশ নিয়ে আসে বাড়িতে,,,আমি জাম্বুরা খাওয়া শুরু করে দেয়। কে ওদের মতো এতো চিন্তা করবে,,,

রাকিবঃ কিরে আমরা চিন্তায় বাচিনা আর তুই সেই কখন থেকে খেয়েই যাচ্ছিস খেয়ে যাচ্ছিস,,,
আমিঃ এতো কষ্ট করে পেরেছি খাবার জন্যই তো নাকি,,,

ফয়সালঃ হ্যা রে তোকে চিনেছে,, কে ছিলো,,
আমিঃ একটা মেয়ে,ছিলো
ফয়সালঃ সেটা আমরাও বুঝেছি মেয়েটা কে সেটা চিনিস,,
আমিঃ তুই গাধা এমনিতেই রাত আরো আমি ওই মেয়েকে এর আগে মনে হয় না দেখেছি,,,
ফয়সালঃ এখন কি হবে,,
আমিঃ চিন্তা করিস না,ও মেয়ে কাঊকে কিছু বলবে না।।
ফয়সালঃ তুই কিভাবে নিশ্চিত করে বলতে পারিস,,,
আমিঃ ওই মেয়ে ওতো রাতে ওখানে কি করতে আসবে,,। যদি আমার তো মনে হয় ওই মেয়ে কারও সাথে দেখা করতে এসেছিলো,,তা না হলে এতো রাতে বাড়ির থেকে এই রাস্তায় কি করতে আসবে তাও একা এমনিতে তো মেয়ে লোক ভয়ে এই রাতে দু পা চলেতে পারবে না।
ফয়সালঃ তাহলে কি সাথে আরও কেউ ছিলো নাকি,,,
আমিঃ হয় তো ছিলো আমাদের আয়াজ পেয়ে পালিয়েছে, আর এই মেয়ে প্রথমে ভয়ে চিৎকার করেনি। পরে আমি কিছু বলার আগে আমাকে চোর উল্টো ফাপর মেরেছে। বেশি করেনি কারণ তাহলে উল্টো ওই মেয়ে নিজে ফেসে যেতো,,,,
ফয়সালঃ ভাই তোর কথাই যেন সত্য হয়।
আমিঃ তোকে এরকম দেখাচ্ছে কেন,,,
রাকিবঃ সালা তোর বুদ্ধি মতো রাইসাদের বাড়ি চলে গেছি এক দৌড়ে,
আমিঃ সালা তুই কি পাগল নাকি সত্যি সত্যি চলে গেছস আর কোন জায়গা পাস নাই। তা রাইসাকে আবার সব কিছু বলে দিছোস নি,,,
রাকিবঃ আরে গেছি ভালো কথা সবাই মিলে চেপে ধরেছে রাইসার সাথে নাচতে হয়েছে,,তখন ভালোই লেগেছিলো আহাহা কি ফিলিংস ছিলো,,,,
আমিঃ ভাই জমিনে ফিরে আসও,,এতো উড়না পড়ে গেলে মনের সাথে সাথে হাত পাও ভেঙে যাবে,,,
রাকিবঃ তারপর আবার কি সবাই মিলে জামাই আদর করলো, আমি তো সরমে শেষ রাইসা যেন কোথা চলে গেছে ওর বোনেরা দুলাভাই দুলাভাই আপনাদের লাভস্টোরি বলেন, আপুর সাথে কিভাবে দেখা হলো সবাই চারো দিক দিয়ে জিজ্ঞেস করছে। , যে যা পাচ্ছে ব্যাস লাগিয়ে দিচ্ছে। মাথা নষ্ট করে ফেলেছে,,,

আমি আর ফয়সাল হাসা শুরু করি,,,,,

আমিঃ আচ্ছা তখন আমার নাম ধরে ডাকছে কে,,,
ফয়সালঃ সরি আমি,,,
আমিঃ এখন তো দিলি ফাসিয়ে,,,চেহারা রাতে দেখেছেকিনা কিন্তু নাম বলে তো,,,,

আমরা যে যার মতো করে বাড়ি চলে এলাম এদিকে রাইসা কল দিচ্ছে,,,,রাইসার কাছে গেলাম সাথে একটা জাম্বুরা নিয়ে রাকিবকে ধরিয়ে দিলাম রাইসাকে দেয়ার জন্য। রাকিবকে বললাম তোর শ্বশুর বাড়ি তুই নে,,,,

রাকিব রাইসার সাথে দেখা করে দিয়ে আসে,,

আমিঃ কিরে ভাই কতক্ষন লাগে, সেই কখন থেকে দাঁড়িয়ে মসার কামর খাচ্ছি।
রাকিবঃ তোকে দাঁড়িয়ে থাকতে কে বলেছে বসে থাকতি তাহলেই তো হতো,,,
আমিঃ ভাই মসা তো তার পরো কামড়া তো তাই না, এই যে দাঁড়িয়ে এতো ক্ষন কি কথা বলছস তা জিজ্ঞেস করবো না। ভাই তোদের মসায় কামড়ায় নাই।
রাকিবঃ ধুর তখন কি আর এদিকে খেয়াল ছিলো নাকি,,,
আমিঃ এখন কি খুদা লাগছে ভাই খাবেন,,,
রাকিবঃ ভাই বললাম সবাই মিলে,,,
আমিঃ ও আচ্ছা,,,

বাড়িতে এসে ঘুমিয়ে পড়লাম মা আর সুমা ঘুমিয়ে পানি হয়ে গেছে।

সকালে ফয়সালের ফোন আসে,,,

আমিঃ হ্যালো,,
ফয়সালঃ কিরে এখনো ঘুমাছ,,,
আমিঃ কেন কি হয়েছে,,,
ফয়সালঃ উঠে চলে আয় এখানে তো তামাসা চলছে,,,

আমি আর রাকিব চলে গেলাম,,

আমিঃ এতো সকালে কি দেখানোর জন্য আনলি। মেম্বার সব যেনে গেছে নাকি, কিরে ওখানে এতো মানুষ কেন কি হয়েছে,,,
ফয়সালঃ চল গিয়ে দেখবি,,,

তারপর আমরা গিয়ে দেখি একটা ছেলে বসা,,

আমিঃ কি হয়েছে এই ছেলে কে,,
ফয়সালঃ রহিম কাকার ছেলে তালেব ওই নিচে পরে ছিলো পাতার ভিতর,,

আমি আর ফয়সাল ওর কাছে গিয়ে বসে,,

ফয়সালঃ কিরে তোকে এভাবে বসিয়ে রেখেছে কেন,,,
তালেবঃ বিশ্বাস কর ভাই আমি কিছু করি নাই,,৷ আমি উঠে দেখি পাতার ভিতরে সুয়ে আছি আর গাছে নিচে জাম্বুরা পড়ে আছে, আবার ডাল ও ভাঙা,।
আমিঃ আমরা জানি তুই এই কাজ করোস নাই,,,
তালেবঃ সত্যি ভাই আমি এই কাজ করি নাই,,আপনারা কিভাবে বুঝলেন,,
ফয়সালঃ কারণ এই কাজ আমরা করেছি,,,

তালেব বলতে যাবে,,,

আমিঃ আরে বলার আগে ভেবে নে, কারন যদি জিজ্ঞেস করে তাহলে তুই এই খানে কি করতে আসেছিলি,,তখন কি বলবি,,। আমরা তো ভাই সত্যবাদি লোক সব সত্য বলে দেবো তখন কিন্তু এখনের থেকে বেশি শাস্তি হবে।
তালেবঃ কি সত্যি কথা,,, (ভয় পেয়ে)
ফয়সালঃ তুই আর মেম্বারের মেয়ে কি করেছিস তা সব আমরা দেখেছি সব বলে দিবো।অল্পতে বাচতে চাইলে মুখ বন্ধ রাখবি,,,

তারপর জিজ্ঞেস করি কিভাবে কি হলো,,

তালেবঃ আমরা যখন একসাথে,,,,তখন কিছু একটা পড়ার শব্দ পাই,,তখন মোবাইলের লাইটের আলো দেখি তারাতাড়ি ঠিক করে কোন দিকে দৌড় দিয়েছে ঠিক নাই গাছের সাথে বারি খাই তারপর আর মনে নাই
এই বলে আমরা সেখান থেকে চলে আসি,,

আসার সময় একটা মেয়ে সামনে দেখি, মেয়েটা আমার দিকে আর চোখে তাকিয়ে আছে। আমি সেদিকে ধ্যান না দিয়ে চলে গেলাম,,।

ফয়সালঃ মেম্বারে কি সব বুঝে গেছে,,
আমিঃ কেন,,
ফয়সালঃ না তার মেয়ের গালে হাতের আংগুলের দাগ দেখলাম মনে হলো, মেম্বার মনে হয় মেরেছে,,,,।
আমিঃ আরে না তাহলে কি আর বাইরে বের হতো, আমি রাতে,,,
ফয়সালঃ কি তুই এতো জোরে মারলি যে দাগ পরে গেছে,,,
আমিঃ আরে ভাই ভয়ে তো মানুষ মানুষকে খুন করে ফেলে আমি মাত্র একটা চরই মেরেছি।
ফয়সালঃ তাই তো এই মেয়ে তোর দিকে ওভাবে তাকিয়ে ছিলো,,
আমিঃ তুইও খেয়াল করেছিস তাইলে,,,
ফয়সালঃ বুঝলাম না তোকে ধরলো কিভাবে,,
আমিঃ এতোক্ষন পর একথা মনে পরেছে তোর,,,
রাকিবঃ তাই তো কি হয়েছিলো তখন,,
আমিঃ আরে তেমন কিছু না,,,

ওরা দুই জনে আমাকে অনেক জোর করায় বলি,,,

আমিঃ আমি তারাহুরো করে গাছ থেকে নামতে যাবো তখনি নিচে পরে যাই ডাল ভেঙে। পড়ি তো পরি সেই মেয়ের উপর পরেছি।।
রাকিবঃ তারপর,,
আমিঃ কি বলব আর যা কান্ড হয়েছে না,,আমি ভয় পেয়েছি,,,
রাকিবঃ কেন,,
আমিঃ সালা আমার জায়গায় তুই থাকলে ভয়ে প্রস্রাব করে দিতি,,। অন্ধকারে কোথায় কোথায় হাত গেছে কে জানে, আমি তো ভয়েছিলাম মেয়ে আমাকে না ফাসিয়ে দেয়।
ফয়সালঃ রাতে তো কিছুই বললি না আরামছে খেতে থাকলি,,,,
আমিঃ আরে তখন বলিনি এমনি তোরা ভয়ে শেষ তার উপর আবার এসব,,। আর আমি ভয়ে কি করবো বুঝতে পারছিলাম না তাই সামনে যা পেয়েছি,,,
ফয়সালঃ ভাই বেশি কিছু তো করোস নাই,,,
আমিঃ আরে সালা তুই আমাকে কি মনে করস,,,,
ফয়সালঃ ভাই তুই মানুষ ফেরেস্তা না,,,,

আমি ফয়সালের দিকে রাগিভাবে তাকিয়েছি, আর ফয়সাল আমার আগে চলে গেলো,,

বাড়িতে এসে পরি ঘরে কেউ নেই সুমার ফোন বাজতেছে আমি সুমাকে ডাক দেই। সুমা বাইরে থেকে বলে আসছি, আমি ফোন হাতে নিয়ে দেখে অবাক। ভাবি নামে সেভ করা নাম্বারের দিকে তাকিয়ে দেখি নিলিমার মানে কি। এর মধ্যেই সুমা এসে ওর ফোন নিয়ে যায়। আমি সুমার কাছে কিছু করলাম না,,রাইসার কাছে চলে গেলাম,,,
গিয়ে দেখি সবাই মিলে একসাথে কথা বলছে মেয়েরা। আমি সেখন থেকে রাইসাকে নিয়ে আসলাম একা।

আমিঃ দেখ রাইসা যা বলল সব ঠিকঠাক ভাবে উত্তর দিবি।নিলিমার নাম্বার সুমার ফোনে কি করে এলো আর ভাবি নামেই বা সেভ কেন,,,
রাইসাঃ আরে আজব তো আমি কি করে বলব,,,
আমিঃ তুই বলতে পারোস না মানে,,এখানে নিলিমার বিষয়ে তুই আর রাকিব ছাড়া আর কেউ জানে না, তাহলে নিলিমা সুমাকেই বা কল দেবে কেন,, সুমাই বা ভাবি নামে সেভ করবে কেন। রাইসা,, আমিই ঠিক তুই এই কাজ করছস,,
রাইসাঃ হ্যা করেছি তো তুই আমার ফোন নষ্ট করেছিস, এখন ম্যাডামের সাথে কথা বলতে হলে কি করবো,,,
আমিঃ তোর সিম না আপুর ফোনে লাগিয়েছিস,,
রাইসাঃ আরে আপু তো সারাদিন তার হবু স্বামির সাথে কথা বলতেই থাকে আমি কি আর তার ফোন ধরতে পারি,,তাই সুমার ফোন দিয়ে ফোন করেছি।।
আমিঃ তা না হয় বুঝলাম তাহলে আমার বিষয়ে আর নিলিমার বিষয়ে কেন বলেছিস।
রাইসাঃ আরে সেটা তো কথায় কথায় বলে ফেলেছি।
আমিঃ তোকে যা মনে চাইতেছে,,,
রাইসাঃ দাড়া দাড়া আমাকে পড়ে যা বলার বল,,আগে বল জাম্বুরা কোথা থেকে এনেছিস তোরা,,,আজ সকালে বাবা দেখে আমাকে জিজ্ঞেস করে বলে। এই জাম্বুরা নাকি মেম্বারের গাছের রাতে নাকি চুরি হয়েছে। তার মানে তোরা এই কাজ করেছিস রাতে,,
আমিঃ চুপ চুপ তোর বাপের কাছে আবার বলিস নি তো আমরা দিয়েছি,,
রাইসাঃ বলতে হবে কেন,,বাবা দেখেই বুঝেছে তোদের কাজ তা না হলে কে দেবে আমাকে,,
আমিঃ এই নে মেরেছে এখন কি হবে,,,কিছু বলেছে নাকি আমাদের কথা।
রাইসাঃ না,, তেমন কিছু না,,,
আমিঃ তুই কি যে করলি এখন সুমাকে কি বলব,,,,মনে চাইছে তোকে,,
রাইসাঃ তুই আমার সাথে যা করছোত তার কাছে এসব কিছুই না, আমি তো ভেবেছিলাম আরও অনেক কিছু বানিয়ে বানিয়ে বলব।
আমিঃ তুই আমাকে,,,, যা ভাগ আমার চোখের সামনে থেকে,,,,

রাইসা মুচকি হেসে চলে গেলো,,,

আমি গিয়ে রাকিবকে বললাম রাকিব তো ভয়ে শেষ সব কিছু ঠিক হতে না হতেই সব শেষ।

আমি আর রাকিব দুজনেই মন খারাপ করে গালে হাত দিয়ে বসে আছি,,,দুপুর হয়ে গেছে কেউ বাড়ি যাওয়ার সাহস পাচ্ছি না। যদি রাইসা বাবা বাড়ি চলে আসে,,,,, ফয়সাল এসে দেখে বলে,,

ফয়সালঃ কিরে তোদের কি বউ মারা গেছে নাকি,,এভাবেগালে হাত দিয়ে বসে আছিস কেন,,,
আমিঃ আমরা আছি আমাদের চিন্তায় তুই আবার মজা নিচ্ছিস আমাদের,,,

তারপর আমি রাকিবকে বলি চল বাড়ি যাই, এখানে এভাবে বসে থেকে লাভ নেই যা হবে দেখা যাবে,,,

তারপর আমি আর রাকিব বাড়ি চলে গেলাম,,, বাড়ি দেখে না তেমন কিছু না। আমি আর রাকিব খুসি হলাম,,তারপর দুজনে গোসল করতে চলে গেলাম,,,

গোসল করে এসে খেতে বসলাম আমি আর রাকিব,,,

আমিঃ বাহ আজ তো দেখি অনেক কিছু রান্না করেছিস,,সুমা,,একা এতো কিছু কিভাবে করলি মা রান্না ঘরে গিয়েছিলো বুঝি,,,
সুমাঃ না ভাইয়া মাকে তো আমি রান্না ঘরে যেতেই দেই নি।।
আমিঃ তাহলে,,(খেয়ে দেখি)সুমা রান্না আজ কেমন যেন অন্য রকম লাগছে,,,,

সুমার দিকে তাকিয়ে বলি,,সুমা হাসি দিয়ে চলে গেলো কিছু বলল না। আমি আর রাকিব খাওয়া শেষ করে উঠেতে যাবো তখনি সুমা বলে,,

সুমাঃ ভাইয়া আজকে আমি রান্না করিনি অন্য কেউ করেছে, তুমি খেয়ে বলও কেমন হয়েছে,,,
আমিঃ অন্য দিনের চেয়ে ভালো,,( মজা করে সুমা অনেক সুন্দর রান্না করে)
সুমাঃ তার মানে আমি ভালো রান্না করতে পারি না,,ভাইয়া আপনি বলেন আজকের টা ভালো হয়েছে নাকি গতকালেরটা,,
রাকিবঃ সত্যি কথা বলি রান্না দুটোই ভালো হয়েছে,,
আমিঃ আরে আমি মজা করছি তোর সাথে এখন বল কে রান্না করেছে,,,,
সুমাঃ আছে স্পেশাল কেউ তুমি নিজেই খুজে নেও গিয়ে,,

,,,,,,,,চলবে,,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here