#গ্রামের_ছেলেটি
পর্ব- ১৭ তম
স্বপন
আমি তামান্নার কাছ থেকে আমার ফোন নিয়ে নেই,,,
আমিঃ তুমি আমার ফোন না জিজ্ঞেস করে ধরেছ কেন??
তামান্নাঃ এতে এরকম করার কি দরকার আমি তো মাত্র আপুর কলই ধরেছি। অন্য কারো তো নয়। আর এখানে তোমার আমার বলতে কি আবার। কিছুদিন পর তো তোমার সব জিনিসই আমার হবে,,
আমিঃ যখন হবে তখন দেখা যাবে, আর একটা কথা আমি তোমাকে বলিনি যে আমি তোমাকে বিয়ে করবো ঠিক আছে। এখন যাও প্লিজ,,,
তামান্না রুম থেকে চলে গেলো৷ আমি নিলিমাকে ফোন করলাম নিলিমা আমার ফোন ধরছে । বার বার চেষ্টা করছি কিন্তু নিলিমা ফোন ধরছে না।
নিলিমার বাসায় চলে গেলাম,, কলিং বেল বাজালাম স্যার দরজা খুলে দিলো। আমি তাকে সালাম দিলাম তিনি সালামের উত্তর দিয়ে বলে,,
স্যারঃ আরে শিমুল তুমি কেমন আছো, এসো এসো ভিতরে আসো।
আমিঃ আমি ভালো আছি।আপনি কেমন আছেন।
ভিতরে যেতে যেতে বললাম,,,
স্যারঃ আমার আবার ভালো থাকা বয়সটা কি আর সেরকম আছে,,, বসো,,
তারপর আমি স্যার এর কাছে জিজ্ঞেস করি নিলিমার কথা। নিলিমা নাকি ওর রুমে, আমি চলে গেলাম গিয়ে দেখি নিলিমা ফোনে কথা বলছে। আমাকে দেখে ফোন রেখে দেয় আমি গিয়ে ওর সামনে বিছানায় বসি৷ নিলিমা আমার দিকে তাকিয়ে আছে এমন ভাবে তাকিয়ে আছে মনে হয় চোখ দিয়ে আমাকে গিলে খাবে,,,
আমি নিলিমাকে জিজ্ঞেস করি,,,
আমিঃ কি হয়েছে এভাবে তাকিয়ে আছো কেন মনে হচ্ছে আমাকে খেয়ে ফেলবে,,,
নিলিমা কিছু বলছে না মনে হয় আমার কথা কিছু ওর কানে যায় নি। আমি আবার ওকে ডাক দিতে আমাকে বিছানায় ধাক্কা দিয়ে শুয়ে আমার উপর উঠে বসে আমার গলা চেপে ধরে,,,
আমিঃ কি করছো মরে যাবো তো,,,
নিলিমাঃ তোকে মারার জন্য তো ধরেছি,,,
আমিঃ আরে আগে আমার কথা তো শুনবে (আমি নিলিমার হাত আমার গলা থেকে সরিয়ে নিলিমাকে আমি জড়িয়ে ধরি,,)
নিলিমার চোখে জলজল করছে পানি,,
নিলিমাঃ আমাকে এভাবে জড়িয়ে ধরেছ কেন ছাড়ো,,,( অভিমানি শুরে, আমার কাছ থেকে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে)
আমিঃ তোমাকে ধরবো না তো কাকে এভবে ধরবো,,,
নিলিমাঃ তুমি তোমার তামান্নাকে ধরো গিয়া।
আমিঃ না আমি তোমাকে ধরবো ,,,
নিলিমাঃ আমাকে ধরতে হবে না তোমার ,,
আমিঃ কি বার বার একি কথা বলে যাচ্ছ কোথায় একটু ভালো করে জড়িয়ে ধরবে তা না, আচ্ছা ঠিক আছে আমি যাই৷
এই বলে উঠতে যাবো তখনি নিলিমা আমাকে জরিয়ে ধরে।
আমিঃ কি হলো ছাড়ো,,,
নিলিমাঃ না তুমি এখন কোথাও যেতে পারবে না।
নিলিমা আমার বুকের উপর শুয়ে আছে, হটাৎ মাথা উঠিয়ে আমার দিকে তাকায়,,
আমিঃ কি হয়েছে এভাবে তাকিয়ে আছো কেন,,,
নিলিমাঃ তখন তামান্না তোমার রুমে কি করছিল,,,??
আমিঃ (চুপ করেছি কি বলব এখন,,,)তখন তামান্না কেন আসছে আমি কি করে বলব,,
নিলিমাঃ মানে তোমার রুমে তামান্না এসেছে তুমি জানো না।
এই বলে নিলিমা আমাকে মারা শুরু করে দেয়। নিলিমার বাসা থেকে আমার বাসায় চলে আসি এসে দেখি রাকিব শুয়ে আছে আমি ওর পাশে বসি গিয়ে। আমি পাশে বসতেই রাকিব উঠে দেখে আমি বসা,,,,
রাকিবঃ কি হয়েছে এভাবে বসে আছিস কেন,,,
আমিঃ বুঝতেছি না আমি কি করছি।,,,
রাকিবঃ কেন কি হয়েছে,,,,
তারপর আমি বললাম নিলিমার কথা,,,
রাকিবঃ নিলিমার না রাজিবের সাথে বিয়ে ঠিক তাহলে এখন কেন আবার তোর সাথে,,,,
আমিঃ নিলিমাকে বলেছি রাজিবের কথা ও বলল ও নাকি রাজিবের সাথে বিয়ে করবে না। বিয়ে ভেঙে দিবে,,
রাকিবঃ কি বলি তা কি করে সম্ভব, এদিকে আবার তোকে নাকি তামান্না পছন্দ করে,।
আমিঃ তাই কি করবো মাথায় ঢুকছে না,,
রাকিবঃ তোদের বিয়ে হোক বা না হোক আমাদের এই বাসা ছাড়ার সময় চলে এসেছে,,,
আমিঃ সালা মজা নিচ্ছিস,,
রাকিবঃ আরে আমি তো যা সত্য তাই বললাম, মালিকে জানলে আমাদের এক মুহূর্ত এখানে থাকতে দেবেনা।
আমিঃ তাও ঠিক,,,
রাকিবঃ এবার তো আর বলতে পারবি না যে আমার জন্য বাসা ছারতে হবে,,
আমি রাকিবের পাশে শুয়ে পরি আর ভাবতে থাকি কি করবো,,,,
,,,,,,,।।
অফিসে বসে আছি কাজ পড়ে আছে অনেক কিন্তু কাজে মন লাগছে না। শুধু ওই সব কথা গুলো মাথায় গুরছে কি করবো নিলিমার যদি আবার রাজিবের সাথে বিয়ে হয়ে যায়। নিলিমা যদি বিয়ে না ভাঙতে পারে এসব ভাবতেছি হটাৎ রাইসা এসে আমাকে ঢাক্কা দিয়ে বলে,,,
রাইসাঃ কিরে এভাবে কি ভাবছিস,,,,
আমিঃ কিছু না কেন,,,
রাইসাঃ কিছুনা মানে সেই কখন থেকে ডাকছি আর তুই সেই এক ধ্যানে কি যেন ভাবছিস,,,,
আমিঃ ভালো লাগছে না,,,,
রাইসাঃ কেন কি হয়েছে তোর শরির ঠিক আছে তো নাকি,,( এই বলে রাইসা আমার কপালে আর গলায় হাত দিয়ে দেখে)
নিলিমা আজ অনেক দিন পর অফিস এসেছে, নিলিমা ওর ক্যাবিন থেকে বের হয়ে দেখে রাইসা আমার হাত ধরে বসে আছে,,। নিলিমা দেখে রাইসাকে বলে আমাকে ওর ক্যাবিনে যেতে,,,
আমি চলে গেলাম নিলিমার কাছে,,,
নিলিমাঃ কি হয়েছে তোমার শরির খারাপ নাকি।
আমিঃ না শরির ঠিক আছে,,,
নিলিমা আমাকে ধরে দেখে,,আমি বলি,,
আমিঃ আমি ঠিক আছি কিছু হয় নি তো বললাম,,
নিলিমাঃ সমস্যা কি তোমার রাইসা ধরলো তখন তো এরকম করোনি ওখন কেন,,
আমিঃ আরে,,
নিলিমাঃ এখানে বসো,,
বসে আছি চুপচাপ নিলিমা ওর কাজ করছে। আমি গুন গুন করে গান গাইতেছি,,,হটাৎ নিলিমা,,
নিলিমাঃ কি করছো,,
আমিঃ সরি,,,
নিলিমাঃ আচ্ছা তোমাকে যে ফাইল দিয়ে ছিলাম সেটার কি খবর,,,
আমিঃ আসলে সেই ফাইল নিয়ে বসছিলাম, ভালো লাগছিলো না তাই আর করা হয় নি,,,,
নিলিমাঃ কাজ করতে মন চাইবে কেন মেয়েদের সাথে ঠিকি তো ঠেলা ঠুলি করতে পারো৷ কাজের সময় ভালো লাগে না,,,
এভাবে আরও অনেক কিছু বলল, আমি কিছু না বলে চুপ করে থাকি কিছু বলি না,,। নিলিমার কথা শেষ হলে আমি সেখান থেকে চলে আসি।
কাজ শেষ করতে অনেক দেরি হয়ে যায়, নিলিমা আগেই চলে গেছে আমি কাজ শেষ করে বাসায় চলে গেলাম,,
বাসায় এসে খাবার রান্না করতে হবে তাই সব কিছু রেডি করছি রাকিব আর আমি খাবার রান্না করে খেয়ে, দুজনে গল্প করতে করতে অনেক রাত হয়ে যায়। দুজনে ঘুমাতে চলে গেলাম। সকালে আর বিছানা থেকে উঠতে চাইলে শরির সারা দিলো না। চোখের কনে প্রচুর ঘুম আজকে আবার অফিস বন্ধ তাই আর উঠলাম না । রাকিব উঠে বেরিয়ে গেলো,
কিছুক্ষন পর আমি উঠে ফ্রেশ হয়ে রান্না করার জন্য সব কিছু রেডি করতেছি। রাকিব কে কল করলা ও বলল কি কাজে যেন গেছে। এরি মধ্যে দরজার কে জেনো খুলে দেখি তামান্না। আমি তামান্না কে দেখে একটু বিরক্ত হয়, তামান্না বলল,,
তামান্নাঃ কি এসময় এসে কি বিরক্ত করে ফেললাম নাতো।
আমি ওর সামনে বলে দিলাম,,
আমিঃ হ্যা,,
তামান্নাঃ কেন আজ তো তোমার অফিস নেই তাই তো ভাবলাম তোমার সাথে কিছু সময় কাটাবো,।
আমিঃ আমি পারবো না, আমার কাজ আছে,,
তামান্নাঃ কি কাজ,,
আমিঃ এখনো খাওয়া হয় নি তাই রান্না করে তার পর খাবো,,
তামান্নাঃ তুমি রান্না করবে চলো আমিও তোমার সাথে রান্না করবো,,
এই বলে তামান্না ও চলে আসে ভিতরে আমি দরজার বন্ধ করে দেই কিন্তু পুরো পুরি না।
আমি রান্না ঘরে যেতে না যেতেই তামান্না চিতকার দিয়ে উঠে আমি গিয়ে দেখি তামান্ন হাত কেটে ফেলেছে চাকুতে,,। আমি তারাতারি করে রক্ত বন্ধ করার চেষ্টা করি, এরি মধ্যে তামান্ন আমার উপর ঢলে পড়ে। বুঝতে পারলাম তামান্না ওর রক্ত দেখে জ্ঞান হারায়। আমি তামান্নাকে কলে করে নিয়ে আমার বিছানায় শুয়ে দেই। তারপর ওর হাতে ভালো করে পরিষ্কার করে ব্যান্ডেজ লাগিয়ে দেই। ওর চোখে মুখে পানি দেয়ে ওর জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করি । কিছুক্ষণ পর দেখি চোখ খুলেছে। আমাকে দেখে উঠতে যাবে আমি ওকে উঠতে না দিয়ে শুয়ে থাকতে বলি। আমি ওর মাথা হাত দিয়ে আছি, তামান্না আমাকে ইসারায় ওর কাছে যেতে বলে আমি মাথা ওর মুখের কাছে যেতেই তামান্না আমার গালে কিস করে,,
আমিঃ কি করছো এসব,,
তামান্নাঃ ভালোবাসি,,,, 🥰🥰
আমি কিছু না বলে ওকে শুয়ে থাকতে বলে উঠে চলে যেতে লাগলাম তাকিয়ে দেখি নিলিমা আমার সামনে,,
আমিঃ তুমি এখানে এই সময়,,
নিলিমার চোখ বেয়ে পানি পরছে অনেক রেগে আছে,,। কিছু না বলে চলে যাওয়া দিলো আমি নিলিমার পিছনে পিছনে যাই।
গিয়ে আমি নিলিমার হাত ধরে ফেললাম,,
আমিঃ নিলিমা আমার কথা শুনো,,
নিলিমাঃ তোমার কি কথা শুনবো বলো আর কি বলবে তুমি শুনি,,
আমিঃ তুমি যা ভাবছো সেরকম কিছু না,,
নিলিমাঃ কি বলতে চাও আমি আমার নিজের চোখকে অবিশ্বাস করবো নাকি তোর এই মিথ্যা টা বলল।
আমিঃ আমরা সব সময় যা দেখি তা সঠিক নাও হতে পারে।
নিলিমা কিছু না বলে আমার কাছ থেকে ওর হাত ছাড়িয়ে চলে যাওয়া ধরলে আমি অকে আবার ধরে আমার কাছে টেনে নিয়ে আসি । আমি নিলিমাকে জরিয়ে ধরে আছি আর নিলিমা ওর দুহাত দিয়ে আমাকে ছড়ানোর চেষ্টা করছে,,,
নিলিমাঃ ছাড়ো আমাকে বলছি,,
আমিঃ না ছাড়বো না,,যতক্ষন না আমার কথা শুনেবে ততক্ষন ছাড়বো না,,,
নিলিমাঃ কি শুনবো হা বলো,,আমার সাথে মজা করা শেষ এখন আবার ওর সাথে শুরু করেছ,,
আমি নিলিমাকে ছেড়ে দিলাম, আমি ওর এই কথা শুনে অবাক হয়।
আমিঃ কি বলছ এসব তুমি, তোমার মাথা ঠিক আছে তো নাকি,।
নিলিমাঃ আমায় দিয়ে তোমার ভরছে না তাই এখন আবার ওকে,,, সব কিছু শেষ,,
আমিঃ কি কি বলছ তুমি,,
নিলিমাঃ হুম ঠিকি তোমার সাথে আমার কোন সম্পর্ক রাখা সম্ভব না,,
আমি শুনে মনে হলো আমার দুনিয়া উলটে গেলো।, নিলিমার দুই হাত ধরে আমি ওকে দেয়ালের সাথে মিশিয়ে ধরে বলি,,
আমিঃ কি বলে তুমি আমি তোমাকে ব্যবহার করেছি, তোমার মনে করা উচিত যে তুমি আগে এসছো।
নিলিমাঃ ছাড়ও আমার হাতে লাগছে,,
আমিঃ তোমরা মেয়েদের সমস্যাকি জানো শুরুটা তোমরা করে শেষটা এমন ভাবে করও যেন মনে হয় সব দোষ আমাদের ছেলেদের।
নিলিমাঃ মানে,,,
আমিঃ মানে এই সব তো বাহানা মাত্র তুমি আমাকে ছাড়ার জন্য এই ফালতু জিনিস টাকে ব্যবহার করছো।
নিলিমাঃ ভালোই নিজে দোষ করে এখন আমাকে বলছ। ছাড়ো,,
আমিঃ না,,
এই বলে আমি নিলিমাকে ধরে কিস করি,, নিলিমা আমাকে সরিয়ে একটা চর মেরে চলে যায়। আমি সেখানে বসে পরি গালে হাত দিয়ে,,
তামান্না আমার কাছে এসে জিজ্ঞেস করে কি হচ্ছে এসব তোমার আপুর সাথে কি সম্পর্ক,। আমি কিছু বলি না,। তামান্না বলে দেখো আর এর সাথে আমার ভাইয়ার জীবন জড়িত, আমি চাইনা আমার ভাইয়ার সাথে ধোকা হোক। তারপর আমি তামান্নার কাছে আমাদের সব কথা খুলে বলি,,,
নিলিমার বের হয়ে সিড়ি দিয়ে নামতে যাবে তখনি রাজিবের মাকে দেখে আসতেছে। নিলিমা তার চোখের পানি মুছে যায়।সামনে পড়তেই তাকে জিজ্ঞেস করে কখন এলো তারপর নিলিমাকে তার বাসায় নিয়ে যায়। নিলিমা যেতে চায় না কিন্তু জোর করে নিলিমাকে নিয়ে গেলো।
কিছু ক্ষন পর তামান্ন বাসায় এলো বাসায় ডুকতেই তামান্নার মা ওর হাতের দিকে তাকিয়ে বলে,,,
আন্টিঃ কিরে তোর হাতে কি হয়েছে আর তোকে এরকম দেখাচ্ছে কেন,,,
তামান্নাঃ কিছু হয় নি,,,
এই বলে ভিতরে আসে, নিলিমা সোফায় বসে সব দেখছে,,তামান্না নিলিমার সামনে এসে বসে। নিলিমার দিকে তাকিয়ে আছে, তামান্নার চোখে পানি,,,
নিলিমার বুঝতে সমস্যা হলো না তামান্না সব জেনে গেছে,। তামান্নার মা ওর কাছে এসে ওর হাত ধরে বলে,,
আন্টিঃ দেখি হাতে কি হয়েছে, ইস কিভাবে হলো এসব,,,
তামান্নাঃ ভিতরে ব্যথা এর থেকেও বেশি,,
আন্টিঃ কি বলছিস,,,
তামান্নাঃ ঠিকি বলছি মা,,,
নিলিমা উঠে তামান্নার কাছে যায় ,,
আন্টিঃ তুই কোথা থেকে এভাবে হাত কেটে এলি বলতো,,
তামান্নাঃ শিমুলের বাসায় গিয়েছিলাম,,,
তারপর বলে কিভাবে হাত কেটেছে,,,,,তারপর রাজিব এসে নিলিমার সাথে কথা বলে কিছুক্ষন পরে রাজিব নিলিমাকে দিয়ে আসে।
বিকালে ছাদে চলে যাই,,গিয়ে দেখি তামান্না ছাদে দাঁড়িয়ে আছে আমি ওর কাছে গিয়ে দাড়াই। আমাকে দেখে বলে,,
তামান্নাঃ আপনি এখানে কেন এসেছেন,,,
আমিঃ এমনি তামান্না একটা কথা জিজ্ঞেস করবো,,
তামান্নাঃ কি কথা আপনার আর নিলিমা আপুর কথা বাসায় বলেছি কি না,,
আমিঃ হুম,,,
তামান্নাঃ না এখনো বলি নি সময় হলে ঠিকি বলব,,,
আমিঃ প্লিজ তামান্না তুমি এসবের কিছু বলো না।
আমি তাকে অনেক বুঝিয়ে বলার পর বলে,,
তামান্নাঃ ঠিক আছে বলব না একটা শর্তে,,
আমিঃ কি বলও
তামান্নাঃ আপনাকে আপুর আর ভাইয়ার মাঝখান থেকে সরে যেতে হবে,। এমনি আর কোন দিন যেন আপুর সাথে দেখা কেন যোগাযোগ করার চেষ্টা করবেন না।
আমি চুপ হয়ে আছি তামান্না আমার এই চুপ হয়ে থাকা দেখে বলে,,,
তামান্নাঃ জানি আপনি পারবেন৷
আমিঃ আমি রাজি তাই হবে,,,,
তারপর আমি রাকিব কে বলি আমাদের এই বাসা ছেড়ে দিতে হবে। রাকিবকে সববলি তামান্না কি বলেছে,,,
পরে দিন অফিসে চলে গেলাম গিয়ে দেখি নিলিমা আগেই চলে এসেছে আমি ওর ক্যাবিনে চলে গেলাম,,,
আমিঃ আসতে পারি,,,
নিলিমাঃ হ্যা,,
তারপর আমি নিলিমার সামনে আমি একটা কাগজ দেই,,
নিলিমাঃ কি এটা,,,,
আমিঃ আমি চাকরি ছেড়ে দিয়েছি ডেজিগনেশন লেটার,,,
নিলিমাঃ কাগজ দেখে তারপর নিচে রেখে দিয়ে দেয়,,,
আমি সেখান থেকে চলে আসতে যাবো তখনি নিলিমা আমাকে ডাক দিলো,,,
নিলিমাঃ দাঁড়াও,,আমি কি তোমাকে যেতে বলেছি,,,
আমিঃ মানে,,,
নিলিমাঃ মানে তোমার সামনে আমি রাজিবকে বিয়ে করবো তারপর এই কাগজ আমি গ্রহন করবো,,,
আমিঃ আমি তোমার এই শর্ত কেন মানবো,,,
নিলিমাঃ তা না হলে অনেক সমস্যা হয়ে পারে যেমন ধরও আমি চাইলে তোমার কোন কোম্পানি তে চাকরি হবে না,,,
আমিঃ তো চাকরি না করে কি মানুষ বেচে নেই,,,
নিলিমাঃ চাকরি না পেলে কি করবে শুনি,,,
আমিঃ কাজের অভাব আছে নাকি, আর আয় কম হলেও অভ্যাস আছে আরামছে চলে যাবে,,,আসি,,,
আমি নিলিমার ক্যাবিন থেকে বেরিয়ে এলাম,,
বাইরে রাইসা দাঁড়িয়ে । আমি বেরিয়ে এলে নিলিমাও আমার পিছনে এসে ওর ক্যাবিনের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
রাইসাঃ কি করছিস ভেবে দেখেছিস,, আর ম্যাডামকে সবকিছু বুঝলাই তো পারিস,,,
আমিঃ একটা সম্পর্কে সব বড় হচ্ছে বিশ্বাস যা আমাদের মাঝে নেই,। আর যেই সম্পর্কে বিশ্বাস নেই তা হাজার চেষ্টা করলেও জোড়া লাগানো যায়না।
আমাদের কথা সব শুনেছে নিলিমা আমি ওর দিকে তাকিয়ে থেকে কিছুক্ষন তারপর রাইসাকে বলে চলে আসি,,,,
খুব তারাতাড়ি তামান্নাদের বাসা ছেড়ে অন্য ম্যাচে থাকার সিদ্ধান্ত নেই, বাসা অনেক খুজেছি কিন্তু এই অল্প সময় বাসা খুজে পাওয়া খুবি কষ্ট তার উপর ব্যাচেলর বাসা,,,চাকরি ছেড়ে দিয়েছে তাই এখন ওক্টা চাকরি ও খুব দরকার। তাই গ্রামে চলে যাই অনেক দিন ধরে যাওয়া হয় না তাই। গ্রামে চলে আসি,,,
এদিকে রাজিব আর নিলিমার বিয়ের জন্য ব্যস্ত সবাই,, নিলিমা রাজিবদের বাসায় যায়, আমরা যেই বাসায় থাকতাম নিলিমা সেখানে এসে দারিয়ে থাকে কিছুক্ষন,,। তামান্না নিলিমাকে ডাকদিয়ে বলে,,
তামান্নাঃ আপু ওখানে দাড়িয়ে আছো,, তুমি যাকে খুজছো তারা চলে গেছে। আর তুমি ও তাকে ভুলে যাও এতে তোমারি ভালো।
নিলিমা কিছু না বলে চলে গেলো মন খারাপ করে। রাজিব নিলিমাকে এই ভাবে মন খারাপ দেখে বলে,,,
রাজিবঃ কি হয়েছে,,,,
নিলিমাঃ হুম কিছু না এমনি।
রাজিবঃ আচ্ছা তোমার পাসপোর্ট টা দিলে না তো,,?
নিলিমাঃ কেন কি করবে,,
রাজিবঃ বাহ রে তোমার কাজের জন্য লাগবেনা।
নিলিমাঃ মানে,,
রাজিবঃ আরে বিয়ের পর তোমাকে নিয়ে যাবো না আমার সাথে,,,
নিলিমাঃ ওহ,,
রাজিবঃ চলো আজ কোথাও ঘুরে আসি,,,
নিলিমাঃ ভালো লাগছে না আমার অন্য এক দিন যাবো,,,
এই বলে নিলিমা সেখান থেকে চলে আসতে চায়। রাজিব বলে,,
রাজিবঃ আচ্ছা ঠিক আছে আমি তোমাকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে আসি,,,
নিলিমাঃ নাহ আমি এখাই যেতে পারবো,,(বলে নিলিমা চলে গেলো,,,)
তামান্নাঃ ভাইয়া কি হয়েছে,,
রাজিবঃ কে জানে নিলিমা হটাত এরকম করছে কেন, সব সময় কি যেন চিন্তা করে মনে হয়। শপিংয়ে গিয়েও সেখানে মন নেই কোথায় যেন থাকে,,,,
নিলিমা বাসায় এসে নিজের রুমের দিকে যাওয়া দিলে ওর বাবা ডাক দেয়,,
আংকেলঃ নিলিমা কিরে মা চলে এলি যে,,,
নিলিমা ওর বাবার পাশে বসে তাকে জরিয়ে ধরে বলে
নিলিমাঃ কেন জানি না বাবা ভালো লাগছে না,,,,
আংকেলঃ তোর শরির ঠিক আছে, ( হাত দিয়ে দেখে)
নিলিমাঃ বাবা ,,
আংকেলঃ হুম কিছু বলবি,,,
নিলিমা চুপ হয়ে আছে কিছু বলছে না।।।
আংকেলঃ কি হলো কিছু বলছিস না যে, বুঝেছি দেখ মা তুই যদি চাইলে এই বিয়ে না করে দিতে পারিস, কিন্তু রাজিব কিন্তু ভালো ছেলে যাই বলিস।
নিলিমাঃ কিন্তু বাবা আমি যে শিমুলকে ভালোবাসি ওকে ভুলতে পারছি না।
আংকেলঃ কিন্তু শিমুল তো তোকে বিয়ে করতে রাজি হলো না মা।।
নিলিমাঃ শিমুলো আমাকে ভালোবাসে,,কিন্তু,
আংকেলঃ কিন্ত কি,,,
নিলিমা ওর বাবার কাছে সব কিছু বলল,,
আংকেলঃ দেখ মা আমরা সব সময় যা দেখি তাই যে ঠিক তা না,,তুই ওর কাছে সব কিছু ভালো করে জানলে ভালো হতো।
নিলিমাঃ আমি কেন ওর কাছে যাবো, যেখানে আমার রাগ ভাঙাবে তা না সেখানে ও উল্টো আমাকে রাগ দেখিয়ে চাকরি ছেড়ে চলে গেছে। আমার বয়েই গেছে ওর কাছে যাওয়ার,,,
আংকেলঃ হাহাহা,,,, তাহলে এখন কি করবি,,,,
নিলিমাঃ জানি না,,,,খুব খুদা লেগেছে তুমি খেয়েছ,,,
আংকেলঃ না,,, চল খাই গিয়ে,,,
নিলিমা রাজিব কে ফোন করে বলে তার সাথে দেখা করতে,,,
নিলিমা একটা রেস্টুরেন্টে বসে আছে রাজিবের জন্য। নিলিমা আগে এসে বসে রয়েছে,,বসে ভাবছে কিভাবে বলবে রাজিবকে আর হাতের আংটিটা কে ধরে ঘুরাচ্ছে, একবার বের করছে আবার পড়ছে।
শেষমেশ আংটিটা বের করে ফেলে নিলিমা,,
রাজিব চলে আসে,,
রাজিবঃ হুম বলও কি এতো গুরুত্বপূর্ণ কথা যা বলার জন্য ডেকেছ,,
নিলিমাঃ রাজিব আমি এই বিয়ে করতে পারবো না,,(এই বলে আংটিটা রাজিবের কাছে দিয়ে,,)
রাজিবঃ মানে মজা করছ,,কেন পারবে না,,,
নিলিমাঃ আমি বাবাকে ছেড়ে যেতে পারবো না, আমি তোমার সাথে চলে গেলে বাবাকে ব্যবসা কে দেখবে,,। আর অন্য একটা কারণে ও আমি এই বিয়ে করতে পারবো না।
রাজিবঃ কারণটা শিমুল নয় তো,,,
নিলিমাঃ হুম,,, ঠিকি ধরেছ,,,,,
রাজিবঃ কিন্তু শিমুল তো চলে গেছে আর তো আসবে না,,
নিলিমাঃ সেটা দেখা যাবে (নিলিমা মনে মনে ও আসবে আর ওর গাড় আসবে)
এই বলে নিলিমা সেখান থেকে উঠে চলে আসে,,,
,,,,,,,,,,,চলবে,,,,,,,,৷৷ #XA_Sawpon