বডিগার্ড থেকে বর . Part – 02

0
651

গল্প – বডিগার্ড থেকে বর
.
Part – 02
.
writer – #ArFin_SuMon (Mr. Romio)
.
.
দুপুরে খেয়ে দিলাম ঘুম। ৫ টায় আম্মুর ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো। তারপর ফ্রেশ হয়ে ২ ঘন্টা পর আমার কর্মস্থলে পৌঁছালাম।
বাড়িতে এসে কলিং বেল বাজাতে
দরজা খুলে দিলো একটা মহিলা।
.
আমিঃ- আস্সালামু ওয়ালাইকুম আন্টি।
আন্টিঃ- ওয়াইলাকুম আস্সালাম। তুমি মনে হয় রমিও।
আমিঃ- জ্বি আন্টি,আমি রমিও।
আন্টিঃ- এসো বাবা ভিতরে এসো।
আমিঃ- হুম।
আন্টিঃ- তুমি বস আমি নাস্তা নিয়ে আসি।
আমিঃ- আন্টি নাস্তা লাগবে না।
আন্টিঃ- কেনো,বাবা। এটা তোমার নিজের বাড়ি মনে করে থাকবা।
আমিঃ- পারবো না।
আন্টিঃ- আমার মুখে মুখে কথা বলবা না আমি তোমার মায়ের মতো আমি যেটা বলবো সেটা করবা।
আমিঃ- ঠিক আছে।
আন্টিঃ- তুমি বস আমি আসছি।
.
এমা কলিং বেলটা বাজতেছে। এতক্ষন বাজলে কি অসুবিধা হতো আন্টি দরজা খুলতো। এখন আমাকে খুলতে হবে দূর।
দরজা খুলে দেখি একটা ছেলে দাড়িয়ে আছে সামনে। ছেলের চোঁখে তো কাজল থাকার কথা না,এমা কানে দেখছি দুইটা পিরামিড বসানো। ওমা ঠোটঁ আবার গোলাপি লিপিস্টিক, হাতে মেহেদী। মাথায় কিছু ডুকছে না এটা কি মেয়ে নাকি ছেলে সেটাই বুঝতে পারছি না। তাই উপর থেকে নিচে একবার চোঁখ বুলিয়ে নিয়ে শিউর হলাম এটা একটা, শার্ট প্যান্ট পরা রমনী।
.
–কাকে চাই..(আমি)
–ঠাসসসসসসসস (রমনী)
.
বুঝো ঠেলা। একটা লাগিয়ে দিলো ঠাস করে।আজব রমনী।
দরজা বন্ধ করে পিছনে ঘুরে দেখি আন্টি হাঁসছেন। আমিও পড়ে গেলাম লজ্জায়। এখনো যার বডিগার্ড হিসাবে আমাকে নিয়োগ দেওয়া হলো তাকে দেখলাম না অথচ একটা ঠাসসসসসসসস করে খেয়ে পেলছি।
.
আমিঃ- আন্টি আপনি হাসছেন , আমি এখনো তাহারে দেখতে পেলাম না যাহার জন্য বডিগার্ডের চাকরি পেলাম।
আন্টিঃ- এখন যার হাতে একটা খেয়েছো ওনি সে।
আমিঃ- প্রথম দিনে একটা খেয়ে নিলাম না জানি পরে কি হবে।
আন্টিঃ- ওকে কিন্তু তোমার সামলাতে হবে পারবে তো?
আমিঃ- এই রমিও পারে না এমন কোন কাজ নাই আন্টি।
আন্টিঃ- চল,তোমার রুমটা দেখিয়ে দিই।
আমিঃ- চলেন।
.
আমিঃ- আন্টি একটা কথা বলবো?
আন্টিঃ- বল বাবা।
আমিঃ- আমাকে অন্য রুম দিলে হয় না।
আন্টিঃ- যেমন..
আমিঃ- বাড়ির কাজের লোকেরা যে নরমাল রুমে থাকে তেমন রুমে থাকতে দিলে খুশি হতাম।
আন্টিঃ- এখানে থাকলে সমস্যা কি?
আমিঃ- আন্টি কুকুরের পেটে যেমন ঘি হজম হয় না আমার কপালেও এমন রুম সহ্য হবে না। তাই নিচে দিলে ভালো হয়।
আন্টিঃ- কিন্তু তোমার আঙ্কেল তো বলে গেছে তোমাকে যেনো এই রুমে থাকতে দিই।
আমিঃ- আমি আঙ্কেল কে বুঝিয়ে বলবো আপনি অন্য রুমের ব্যবস্থা করেন।
আন্টিঃ- ঠিক আছে। তুমি এসো।
.
গরীবের ছেলে হয়ে এতবড় বাড়িতে কাজ করছি সেটা অনেক বড় কিছু আমার কাছে। যে রুমে আমাকে থাকতে দিতে বলছে আঙ্কেল সেই রুমে আমাদের পুরো পরিবার থাকতে পারবে।
এতকিছু সহ্য হবে না। বেশি আরামে থাকতে গেলে পরে সবকিছু হারাম হয়ে যাবে।
কথায় কথায় আন্টির থেকে নামটাও জেনে নিলাম। সালমা আক্তার জুলি। আমাকে যার জন্য নিয়োগ করা হয়েছে তার নাম সালমা আক্তার জুলি। অনেক রাগী, বদমেজাজি একটা মেয়ে।
.
আমিঃ- আন্টি একটা কথা বলবো।
আন্টিঃ- হুম বলো,তবে পরবর্তীতে অনুমিত চাইবে না।
আমিঃ- আচ্ছা,ওনাকে উপরে দিলেন কেনো। নিচে এত সুন্দর রুম থাকতে।
আন্টিঃ- ওর জন্য সব জায়গায় একটা করে রুম আছে। যেখানে ইচ্ছে সেখানে থাকে সে।
আমিঃ- ওহহহ।
.
ঘুরাঘুরি করে বাড়িটা দেখতে দেখতে ১০ টা বেজে গেলো। রুমে এসে বিছানায় শরীরটা এলিয়ে দিতে ঘুম চলে আসলো। সেটা আর বেশিক্ষন টিকলো না আন্টি এসে খেতে ডাকলো। খাওয়ার কোন ইচ্ছা ছিলো না, আন্টির জোরাজোরি তে টেবিলে বসতে হলো।
সবগুলো অপরিচিত মুখ আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আন্টি সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো।
প্রায় ১০ মিনিট হলো বসে আছি এখনো কেউ খাওয়া শুরু করে নাই। সবাই ম্যাডামের জন্য অপেক্ষা করছে তার আসার নাম নেই আর এই দিকে এই কানন মেয়েটি আমার দিকে তাকিয়ে আছে। অসস্তি লাগছে। এ মাইয়া কি কোন দিন ছেলে দেখে নাই হা করে তাকিয়ে আছে। না আর না কিছু একটা করতে হবে।
.
আমিঃ- এই যে হা করে আছেন কেনো? মশা ডুকবে।
হাসিবঃ- হাহাহাহাহা, রমিও ভাই ঠিক বলছেন।
আমিঃ- রমিও ভাই বলবেন না, ভাইটা বাদ দেন।
হাসিবঃ- আচ্ছা ঠিক অাছে।
কাননঃ- আমাকে পঁচানো হচ্ছে তাই না?
আমিঃ- এখনে পঁচানোর কি আছে, যেটা সত্যি সেটা বললাম।
কাননঃ- কি সত্যি বলছেন?
আমিঃ- মশা ডুকবে এটা কি সত্যি না?
–এখানে কি হচ্ছে? (উপরে তাকিয়ে দেখি ম্যাডাম আসছে)
আন্টিঃ- সবাই চুপ।
.
সবাই চুপ করে আছে। কারন জুলি ম্যাডাম আসছে। কাকে কি বলবে তার কোন ঠিক নাই।
তাই সবাই চুপচাপ বসে আছে। আর ওই মাইয়া টা আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
.
জুলিঃ- মা এই ছেলেটা এখানে কেনো?(আমার দিকে ইঙ্গিত করে বললো জুলি ম্যাডাম)
আন্টিঃ- ও রমিও। আজ থেকে এখানে থাকবে তোর জন্য ওকে নিয়োগ করা হয়েছে।
জুলিঃ- আমার জন্য মানে? ও কি আমার বডিগার্ড নাকি?
আন্টিঃ- হ্যাঁ।
জুলিঃ- আমি তোমাদের অনেক বার বলছি আমার কোন বডিগার্ড লাগবে না।
আমিঃ- সেটা তোমার মনে হতে পারে,আমাদের যা ভালো মনে হয়েছে তাই করছি।
জুলিঃ- ও সবার সাথে এখানে কেনো?
আন্টিঃ- ও আমাদের সাথে একসাথে খাবে প্রতিদিন এটা আমার শেষ কথা।
জুলিঃ- এটা যদি তোমার শেষ কথা হয় তাহলে এটাও শুনে রাখ আমি তোমাদের সাথে বসবো না খেতে।
আমিঃ- আন্টি বাদ দেন। আমাকে নিয়ে আপনাদের মধ্যে অশান্তি হোক সেটা চাই না।আমার এমনিতে খেতে ইচ্ছে করছে না আমি বরং রুমে যাই আপনারা খাওয়া শুরু করেন।
.
দরকার কি আমাকে নিয়ে মা মেয়ের সম্পর্কে ফাটল ধরানোর। তাই উঠে চলে আসলাম। এখন থেকেই বুঝতে পারছি এ মেয়ের বডিগার্ড থাকতে হলে আমাকে অনেক কিছু সহ্য করতে হবে।
এসব ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে পড়ছি মনে নেই।
.
সকাল ৬ টায় মোবাইলে কাউয়ার ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো। মোবাইলে এলাম টোন দিছি কাউয়ার ডাক হিহিহিহিহিহি।
উঠে, শুরু করলাম দৌঁড়। দৌঁড়ানো শেষ করে আস্তে আস্তে অন্য ব্যায়াম শেষ করে ৮ টায় রুমে ডুকলাম।
রুমে ডুকে দেখি কানন কি যেনো খুঁজতেছে।
.
আমিঃ- এই যে কি খুজা হচ্ছে শুনি?
কাননঃ- না কিছুনা।
আমিঃ- তাহলে সকাল সকাল আমার রুমে কি?
কাননঃ- ইচ্ছে করছিলো আপনাকে দেখতে তাই আসলাম।
আমিঃ- বাইরে থেকে যখন দেখলেন রুমে কেউ নেই তাহলে ডুকলেন কেনো?
কাননঃ- এত কৈফিয়ত দিতে পারবো না। ইচ্ছা হলো তাই ডুকছি। তাছাড়া এত জিম করে কি হবে এমনি মেয়েরা লাইন ধরে থাকবে।
আমিঃ- আপনার কথা শেষ হলে আসতে পারেন আমি চেন্জ করবো। একটু পরে আবার ডিউটি শুরু হবে।
কাননঃ- চেন্জ করেন কে বারন করছে।
আমিঃ- আপনার সামনে করবো নাকি?
কাননঃ- করলে ক্ষতি কি?
আমিঃ- বের হতে বলছি বের হোন।
কাননঃ- বের হবো না,আমার সামনে চেন্জ করতে হবে।
.
.
চলবে……………………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here