বডিগার্ড থেকে বর . Part – 05

0
564

গল্প – বডিগার্ড থেকে বর
.
Part – 05
.
writer – #ArFin_SuMon (Mr. Romio)
.
.
সন্ধ্যায় সবাই তাবু খাটানোর জন্য আলোচনা করছে।
.
আমিঃ- ম্যাডাম এখানে রাতে থাকা যাবে না। ফিরে যেতে হবে।
কাননঃ- কেনো? কি হয়েছে?
আমিঃ- এই জায়গাটা দিনে যতটা সুন্দর রাতে ততটা ভয়ংকর।
ম্যাডামঃ- আমরা এত মানুষ কোন কিছু হবে না।
আমিঃ- আপনাদের যদি থাকতে মন চায় তাহলে আপনারা থাকতে পারেন আমি থাকবো না।
ম্যাডামঃ- তুই এখানে থাকবি। কোথাও যেতে পারবি না।
আমিঃ- এখানে থাকা সম্ভব না। আমি থাকবো না ব্যস।
ম্যাডামঃ- কোথায় যাবি?
আমিঃ- আমি আমার বাড়িতে চলে যাবো।
ম্যাডামঃ- তুই আমার বডিগার্ড আমি যা বলবো তাই করবি।
আমিঃ- আমি এক্ষুনি আন্টির সাথে কথা বলবো।আন্টি যা বলবে তা করবো।
.
আমিঃ- হ্যালো আন্টি।
আন্টিঃ- কি হয়েছে বাবা?
আমিঃ- আন্টি এখানে থাকার কোন জায়গা নেই,ম্যাডাম বলছে এখনে তাবু খাটাতে। কিন্তু জায়গাটা খুব খারাপ। সন্ধ্যার পর একটা মানুষের চিহ্ন থাকে না। এখন কি করবো আমি পারবো না এখানে থাকতে।
আন্টিঃ- তুমি কি জায়গাটা চিনো?
আমিঃ- হুম,আমাদের এখানে জায়গাটা।
আন্টিঃ- তুমি মোবাইল দাও জুলি কে।
আমিঃ- হুম।
.
মাথা খারাপ নাকি জীবনেও তো থাকবো না এখানে রাতে। এ জায়গায় যে থেকেছে রাতে সে মরছে।আমি বাবা এসবের মধ্যে নাই। এখনো বিয়ে করি নাই, বিয়ের আগে আমি পরলোক গমন করতে চাই না। কত স্বপ্ন ছিলো একটা বিয়ে করবো।একটা ফুটবল টিমের বাবা হবো। হে খোদা আমি উপরে যেতে চাই না আমি বাড়ি যাবো।
.
–ওই কি বির বির করছিস।(পিছন থেকে মেয়েলি কন্ঠ)
আমিঃ- আমি মরতে চাই না। আমারে নিয়ো না খোদা।
–ওই উল্টা পাল্টা কি বলিস?(তাকিয়ে দেখি জুলি ম্যাডাম)
আমিঃ- না ম্যাডাম কিছু না।
ম্যাডামঃ- কথা বল।
আমিঃ- হ্যালো জম রাজ।
আন্টিঃ- রমিও কি হয়েছে বাবা আমি তোমার আন্টি বলতেছি।
আমিঃ- ওহহহ,আন্টি বলেন।
আন্টিঃ- তুমি সবাইকে নিয়ে চলে আসো।
আমিঃ- ধন্যবাদ আন্টি,আমি সবাইকে নিয়ে আসতেছি।
আন্টিঃ- সাবধানে এসো।
আমিঃ- হুম।
.
ওই, ড্রাইবার ভাই তাড়াতাড়ি বাস চালু করো। নিজে বাঁচলে আম্মুর নাম থুক্কু বাপের নাম।
.
অবশেষে বাড়িতে এসে ডুকলাম। সবাই বসে আছে। আন্টি প্রশ্নের উপর প্রশ্ন করছে। প্রশ্নের ভিতরে প্রশ্ন, প্রশ্নের বাইরে প্রশ্ন করেই যাচ্ছে।
আমিঃ- “”আন্টি কোন প্রশ্নের উওর দিতে পারবো না,ঘুমাবো””
সেই একটা ঘুম দিলাম। সকালে উঠে প্রতিদিনের কাজ শেষ করে বাড়িতে আসার সাথে সাথে আন্টি আবার শুরু করলো।
.
আন্টিঃ- রমিও বাবা ওখানে কি হয়েছে।
আমিঃ- কিছু হয়নি আন্টি।
আন্টিঃ- তাহলে ফিরে আসলে কেনো?
আমিঃ- আন্টি জায়গাটা ভয়ংকর, রাতে যে সেখানে থাকতে চাইছে পরদিন তাকে আর পাওয়া যায়নি। দিনে জায়গাটা যতটা সুন্দর রাতে ততটা ভয়ংকর।
কাননঃ- এত যদি ভয়ংকর হয় তাহলে তুমি যেয়ে পানিতে সাঁতার কাটলে কেনো। আবার কোথায় ঝর্ণা ছিলো সেখানেও গিয়েছো।
আমিঃ- আমার অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েছিলো পানিতে নামার পর।
ম্যাডামঃ- কেনো?
আমিঃ- ওই লেকের পানিতে যারা সাঁতার কাঁটতে নামছে, তাদের অনেক কে আর পাওয়া যায় নি।পানির নিচে তলিয়ে গেছে। কয়েকদিন পর পর লাশ গুলো ভেসে উঠতো। কিন্তু মানুষগুলো কে ডুবুরীরাও খুঁজে পায়নি।
ম্যাডামঃ- তাহলে তুই নামতে গেলি কেনো ওই লেকের পানিতে?
আমিঃ- লোভ সামলাতে পারি নাই সাঁতার কাটার তাই নেমে পড়ছিলাম।
আন্টিঃ- ও ছিলো বলে আজকে তোরা সবাই বেঁচে গেলি না হলে তো আর খুঁজেই পেতাম না তোদের।
আমিঃ- ম্যাডাম গাড়ি বের করবো? ভার্সিটিতে যাবেন?
আন্টিঃ- না,আজকে কোথাও যাবে না কেউ।
আমিঃ- ঠিক আছে আন্টি।
.
২ দিন পর সকালে ব্যায়াম করে রুমে ডুকে দেখি কানন বসে আছে। এ মাইয়া এখানে কেনো?
.
আমিঃ- কি চাই আপনার?
কাননঃ- তোমাকে চাই রমিও।
আমিঃ- আমি আমার, কারো হতে পারবো না।
কাননঃ- তোমাকেই যে আমার হতে হবে।
আমিঃ- মাথা খারাপ করবেন না। যান তো।
কাননঃ- রিলেশন শুরু হওয়ার আগে জান বলে ডাকছো?
আমিঃ- এত বেশি বুঝেন কেনো আপনাকে যেতে বলছি এখান থেকে।
কাননঃ- আমি যাবো না,কি করবা?
আমিঃ- বাইরে যাবেন নাকি আপনার আম্মুকে ডাকবো?
কাননঃ- হিহিহিহিহিহি, ডাকো।
আমিঃ- আপনার আম্মুকে কি বলে ডাকবো,বলেন তো। আমি তো জানি না।
কাননঃ- জানো না কেনো?
আমিঃ- বিয়ে করি নাই তো,তাই সম্পর্কের প্যাঁচ গুলো বুঝি না।
কাননঃ- হিহিহিহিহিহি, বিয়ে করে ফেলো।
আমিঃ- বিয়ের কথা পরে আসবে আগে বলেন আপনার আম্মুকে কি বলে ডাকবো?
কাননঃ- শাশুড়ি মা বলে ডাকবে।
আমিঃ- তাহলে ডাকি,,,
কাননঃ- হুম,
আমিঃ- শাশুড়ি মা….
কাননঃ- আরে আরে কি করো,আন্টি বলে ডাকবা।
আমিঃ- এবার বাইরে যান। আমি ফ্রেশ হবো। ভার্সিটি যাবেন না?
কাননঃ- যাবো তো।
আমিঃ- তাহলে গিয়ে রেডি হয়ে নিন,আমিও রেডি হয়ে নিই।
কাননঃ- আমি এখানে থাকবো।
আমিঃ- আরে আপনি যাবেন নাকি আন্টি কে ডাকবো?
কাননঃ- ডাকো,দেখি পার কি না।
আমিঃ- আন্টি……
কাননঃ- কেউ সাড়া দেয় নাই তো,
আমিঃ- না।
কাননঃ- দিবেও না।
আমিঃ- কেনো?
কাননঃ- সবাই তো উপরে…
আন্টিঃ- কি হয়েছে রমিও… (কাননের আম্মু)
আমিঃ- আন্টি ওনাকে নিয়ে যান, আমাকে রেডি হতে দিচ্ছে না। সবসময় এমন করে, ওনার নির্যাতন সহ্য করতে পারছি না।
আন্টিঃ- ওই কানন,বের হও বলছি।
কাননঃ- দেখে নিবো তোমারে।
আমিঃ- আন্টি ওনি যদি আবার কোন ফাইজলামি করে তাহলে কিন্তু আমি ওনার বডিগার্ড থাকতে পারবো না।
আন্টিঃ- ও যদি আবার এমন করে তাহলে,ওর পড়ালেখা বন্ধ করে দিবো।
আমিঃ- আন্টি এত কিছু করতে হবে না। আমি দেখবো।
আন্টিঃ- হুম,
.
নাস্তা শেষ করে গাড়ির দরজা খুলে দিয়ে বসে আছি,ম্যাডাম আর কানন আসলে ভার্সিটির পথে রওনা দিবো।
প্রায় ১০ মিনিট পর আসলো দুজনে। ম্যাডাম পিছনে উঠে বসে পড়লো,আর কানন ফইন্নিটা আমার সাথে সামনে বসছে।
.
আমিঃ- আপনি এখানে কেনো? পিছনে যান।
কাননঃ- যাবো না কি করবা?
আমিঃ- কি করবো মানে? আমার ম্যাডাম বসছে পিছনে আর আপনার সাহস কি করে হয় আমার সাথে বসার হুম?
কাননঃ- ওই চুপচাপ গাড়ি চালাও,বেশি কথা বলবা না। আজ থেকে আমি এখানে বসবো।
আমিঃ- তাহলে আমি গাড়ি চালাবো না,ড্রাইবার গাড়ি চালাবে আর আমি আপনি যে সিটে বসছেন ওই টাতে বসবো।
কাননঃ- তোমার ভাব বেশি তাই না,এত সুন্দরী একটা মেয়ে পাশে বসলে ছেলেরা হিরো হয়ে যায় আর তুমি ভাব দেখাচ্ছো।
আমিঃ- হিহিহিহিহিহি, আপনি সুন্দর। কে বলছে? আপনাকে মনে হয় কোন অন্ধ ব্যক্তি সুন্দরী বলছে।
কাননঃ- এই বান্দর পোলা কথা ঠিক করে বলো।
.
যাক বাঁচা গেলো। পিছনের সিটে গিয়ে বসছে। পিছনে তাকিয়ে দেখি ম্যাডাম হাসতে হাসতে সিটে শুয়ে পড়ছে।
আমি গাড়িটা স্টার্ট করলাম। জানি কানন আমাকে ভালোবাসতে শুরু করছে। যে সম্পর্কের ভবিষ্যত নেই সেই সম্পর্কের কোন মূল্য নেই আমার কাছে। তাই বাদ সবকিছু।
.
.
চলবে……………………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here