#LOVE❤
part:11+12+13
Writer:Suvhan Årag(ছদ্মনাম)
নিজের মা যে এমন কথা বলবে ভাবতে পারিনি ।আমার বিদায় এর সময় বাবা আর আমার আপু নিশিতা অনেক কেদেছিল ।মার চোখে কোন পানি দেখিনি আমি।মা তো আরো কষ্ট পাচ্ছিল এটা ভেবে যে নিশিতা আপুর চেয়েও বড়লোক এর ঘরে আমার বিয়ে হচ্ছে
তারপর পৌছালাম আবেগ এর বাড়িতে।গাড়ি তে আমি আর আবেগ আর ড্রাইভার ছিল।বাকিরা অন্য গাড়ি তে।আমার কষ্ট হচ্ছিল নিজের আপনজনদের ছেড়ে দিতে
হঠাত্ আবেগ ওর রুমাল এগিয়ে দিল
-চোখের পানি মুছে নাও ।নাহলে সামনের বাকি জীবনটা ঝাপসা লাগবে
-আপনার কাছে টিস্যু হবে
-কেনো
-না মানে রুমাল টা নষ্ট করবো
-টিস্যু আছে।কিন্তু দেব না
-কেনো
-কারণ চোখের পানিটা আমার কাছে খুব দামি।আর কাজল সেটা মোছার দায়িত্ব ও আমার।এখানে ড্রাইভার আছে নাহলে দেখিয়ে দিতাম কাজল কেমন করে মুছতে হয়
সেদিন আবেগের দিকে তাকিয়ে খুব লজ্জা পেয়েছিলাম ।আবেগ এর কাছ থেকে রুমাল নেওয়া র পর ও বাইরের দিকে তাকিয়ে আমার এক হাত খুব শক্ত করে ধরে।আমি ছাড়া তে চেষ্টা করি কিন্তু পারিনি
আবেগ এর মাকে দেখে মনে হয় এ ছিল উনি বিয়ে টা যেন হজম করতে পারেনি।কিন্তু হাসি মুখে আমাকে বরন করেছেন
বাসর ঘরে বসে আছি রাত একটা বাজে আবেগ এর আসার নাম নেই।হঠাত্ আমার ফোনে মেসেজ আসে
–ঘর থেকে বেরিয়ে বা দিকে সিঁড়ি ।সবাই ঘুমিয়ে আছে কেউ দেখবে না।ছাদে এসো আমি অপেক্ষায় আছি।নিজের স্বামীকে আর অপেক্ষা তে রেখো না
বুঝতে বাকি ছিলো না যে মেসেজটা আবেগের ।খুব সাবধানে আমি ছাদে গিয়ে দাঁড়াই ।দেখি আবেগ বুকে হাতজোড়া বেধে পিছে ফিরে দাঁড়িয়ে আছে
-আপনি এখানে
-জানো আমি কানাডা পরতে গেছি।অনেক হাই লাইফ স্টাইল এ চলেছি।কিন্তু মনের মধ্যে সবসময় একটা আপন লোক খুঁজতাম ।আমার ফ্রেন্ড রাত যখন প্রেম নামক জিনিস নিয়ে মেতে থাকতো আমি তখন প্রতিনিয়ত আল্লাহ্ র কাছে প্রার্থনা করতাম আল্লাহ্ যেন আমাকে শুধু তার কাছেই ধরা দিয়ে দেয় যাকে আমার জন্য আল্লাহ্ পাঠিয়েছে।অবশেষে আজ সেই দিন।তোমাকে প্রথম দেখেই ভালোবেসে ফেলি।কারণ আমার মন বলছিল তুমিই সে যে আল্লাহ্ র পক্ষ থেকে আমার জন্য নির্ধারিত
এই বলে আবেগ আমার সামনে এসে একটা আংটি নিয়ে হাঁটু গেড়ে বসে
-আমি তোমাকে আমার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত পাশে চাই রিদি।তুমি কি হবে আমার অনুভূতি আমার হৃদস্পন্দন
সেদিন খুশিতে আমার চোখে পানি চলে আসে।আমি মাথা নাড়িয়ে সায় দিলে আবেগ আমাকে আংটি পরিয়ে জরিয়ে ধরে।সেদিন নিজের লজ্জা ভেঙে আমিও আবেগকে জরিয়ে নেই।তারপর রাতের গভীরে পূর্ণতা পায় আমাদের ভালোবাসা।ডুবে যায় দুজন দুজনাতে
এইভাবে শুরু হয় আমাদের ভালোবাসা।আসতে আসতে আমিও আবেগ এর সাথে ফ্রি হয়ে যাই আপনি থেকে তুমিতে ।আমার শশুর আমাকে খুব ভালোবাসাতেন ।কিন্তু আবেগের মা তিনি ও অনেক ভালোবাসাতেন ।আমাকে মায়ের মতো হাতে ধরে সব শিখাতেন ।কিন্তু কে জানতো উনার এই ভালো মানুষি আমার জীবনের কাল
আমাদের বিয়ে র দুবছর পর আবেগকে বিজনেস এর কাজে থাইল্যান্ড যাওয়ার কথা থাকে
-কি হলো মন খারাপ করে দাঁড়িয়ে আছো কেন
-আবেগ তুমি কবে আসবে।আমি তোমাকে ছেড়ে থাকবো কি করে একদিন
বলেই আমি আবেগকে জরিয়ে কেঁদে দেই
-আরে পাগলি কাদছো কেন।আমিতো চলে আসবো তাড়াতাড়ি
-তবুও
-এই রিদি শোন না
-হুম
-আমার না খুব ইচ্ছে হচ্ছে
-কি
-ছোট ছোট হাত পা ধরে খেলব।আমি অফিস থেকে আসলে আমার টাই ধরে টানবে।আমার চুল ধরে টানবে
-মানে
-মানে বোঝ না
-না
-আচ্ছা আমি বোঝাচ্ছি
বলেই আবেগ আমাকে কোলে নিয়ে বিছানায় চলে যায়
-আবেগ কি করছো
-মানে একটা বেবি।আমার তোমার ভালোবাসা।
-তুমি,,,
-এই রিদি দেবে বলো
-,,,,,
-কি হলো বলো
-হুম
-আচ্ছা শোন আমাদের বেবির নাম রাখবো #LOVE❤
-এটা কোন নাম হলো
-হু।কারণ ও আমাদের ভালোবাসা।বুঝলে।দেবে বলো আমাকে আমার #LOVE❤
-হুম
সেদিন শেষ বারের মতো আবেগ এর সাথে ডুবে যাই ভালোবাসাতে
তারপর ঘনিয়ে আসে সেই রাত।আমার জীবনটাকে পুরো তচনচ করে দেয়
#Part_12
👇
#LOVE❤
part:12
Writer:Suvhan Årag(ছদ্মনাম)
আবেগ পরের দিন সকালে চায়।কেটে যায় এক সপ্তাহ
এ কদিন ধরেই আমার শরীরটা কেমন লাগছিল।বারবার বমি মাথা ঘুরানো ।আমি ও তো বুঝতে পারিনি।আমার শাশুড়ি কে বলি।উনি আমাকে তিনটা প্রেগন্যান্সি কিট এনে দেন।আমার শশুর তখন চট্টগ্রাম ছিলেন ওনার এক বন্ধুর বাড়িতে ।কিট তিনটিতেই রেজাল্ট পজিটিভ
আমার আনন্দ এ চোখে পানি এসেছিল।কারণ আবেগ আর আমার ভালোবাসা আমার গর্ভ এ।আমার শাশুড়ি কে বললে তিনি যেন কিছুটা দমে গেছিলেন।উনি বলেন যে আবেগ দেশে ফিরলে আমার শশুর আর আবেগকে একসাথে খবর দিতে তাহলে সারপ্রাইজ পাবে।আমিও বোকার মতো ওনার কথা শুনলাম।আবেগের সাথে কথা বলতাম কিন্তু খবরটা দেই নি ।আমার মা বাবা কেও জানাইনি ।শুধু নিশিতা আপু জানতো।ওকে বলেছিলাম কাউকে না বলতে।কারণ আবেগ আসলে একটা পার্ট ইর আয়োজন করার কথা।সেদিন সবাইকে সব জানাব ভেবেছিলাম ।নিশিতা আপু বলেছিল যে আবেগ বাদে আর সবাই কে জানাতে।কিন্তু আমি শাশুড়ি র কথা শুনলাম ।তখন যদি নিশিতা আপুর কথা শুনতাম তাহলে আজ এতো কিছু হতো না
এর মধ্যে একদিন নোভা আসে বাড়িতে ।আবেগের মুখে ওর কথা শুনি।ও আবেগের ফুফাতো বোন।আবেগের থেকে দুবছর এর ছোট।কিন্তু বন্ধু র মতো সম্পর্ক ।নোভা এসে আমাকে দেখে কেমন চোখমুখ লাল করে আমার শাশুড়ি র কাছে যায় ।ওদের মধ্যে কি কথা হয় তা জানতাম না
ততক্ষণে নোভা আমার সাথে একটা কথাও বলেনি।আর আমার শাশুড়ি ও এ নিয়ে মাথা ঘামাননি।তবে যাওয়ার আগে নোভা আমাকে বলে
-ভালো করে খেয়ে পরে নাও।বলা তো যায় না কখন কি হয়ে যায় কুয়াশার মতো সব ঝাপসা হয়ে যায়
বলেই নোভা চলে যায় ।আমি সেদিন ওর কথার অর্থ সেদিন বুঝিনি।আজ বুঝি
তার পরের দিন আমার শাশুড়ি খুশিতে লাফাতে লাফাতে আমার কাছে আসে
-বৌমা শোন
-হ্যাঁ মা
-শোন আজ রাতে আবেগ ফিরছে।ও অলরেডি এয়ারপোর্ট এ
-কিন্তু আমাকে যে বললো,,,
-হুম।ও নাকি চায় তোমাকে সারপ্রাইজ দিতে।আমাকে বলতে নিষেধ করেছে।কিন্তু আমি তো জানি তুমি ওকে তার থেকেও বড় সারপ্রাইজ দিতে চাও।তাই তোমাকে বললাম ।শোন আজ সন্ধ্যা তে আমি ও চট্টগ্রাম যাব তোমার শশুর মশাই যেতে বললেন
-কিন্তু আমি
-আরে ভালো হলো।তুমি রাতে তৈরী থেকো।আরে এমন বয়স আমরাও পার করেছি।আর পুরো বাড়িতে তো সিসি টিভি আছে।আবেগ চলে আসবে
সেদিন শাশুড়ি মা সত্যি কথা বলেছিলেন ।কিন্তু মিথ্যা ছিল উনার চট্টগ্রাম যাওয়া।কারণ ঐদিন আবেগ এর বাবা চট্টগ্রাম থেকে ফিরবেন আর শাশুড়ি মা তাকেই আনতে যাই।সব ছিল প্ল্যান কিন্তু আমি কিছু বুঝতে পারিনি
সন্ধ্যা তে শাশুড়ি যাওয়ার পর আমি আবেগের প্রিয় মেরুন কালারের একটা শাড়ি পরে খুব সুন্দর করে সাজি ।আবেগের মনের মতো করে।পুরো ঘর নিজে সাজাই।আর দরজার ছিটকিনি খোলা রাখি যাতে আবেগ এসে সরাসরি রুমে আসে।কারণ আমি জানতাম আবেগ ছাড়া কেউ আসবে না ।আর ড্রয়িং রুমে একটা বড় চিরকুট এ লিখি– অপেক্ষায় আছি উপরে এসো
আমি রুম অন্ধকার করে বসে থাকি।হঠাত্ দরজা খোলার আওয়াজ পাই।আমি মনে করি যে আবেগ এসেছে হয়তো।আমি উঠে দাঁড়িয়ে থাকি ।কিন্তু পেছন ঘুরি না।আর ঘুরলে ও কিছু দেখতাম না।কারণ রুমে র লাইট কেউ এসে বন্ধ করে দিয়ে ছে।আমি ভাবি যে আবেগ করেছে।
হঠাত্ কারোর পায়ের শব্দ আসতে আসতে আমার কাছে আসে সে এসে আমার পিঠ ঘেষে দাঁড়ায় ।আমি মনে করি আবেগ
হঠাত্ ই সে আমার উল্টা দিক থেকেই শাড়ির আঁচলের পিন খুলে আঁচল ফেলে আমাকে ঘুরিয়ে জরিয়ে ধরে ।আমি আবেগ মনে করে তাকে জরিয়ে ধরি।কিন্তু পরে মনে পরে আবেগ আসলে সবসময় আমাকে পেছন থেকে জরিয়ে ধরে আর একাজ আবেগ করবে না ।যখন ই লোকটাকে সরাতে যাই তখন কেউ লাইট অন করে লোকটিও আমাকে ছেড়ে দেয়।আমি তাড়াতাড়ি আঁচল ঠিক করে তাকিয়ে দেখি আশফি ভাই।আবেগের বন্ধ উ।আর আবেগ দরজার কাছে দাঁড়িয়ে আছে।পেছনে আমার শাশুড়ি তার পেছন থেকে শশুর এগিয়ে আসছে
আশফি কে দেখে আমি পুরো অবাক হয়ে যাই
-আবেগ তুমি ওখানে আর আশফি
-কেনো ভাবি আবেগ না থাকলে তো আমাকে ডাকো।এখন কেন না জানার ভান করছো
-আবেগ আমি,,,,,,
-ব্যস আর কিছু দেখার নেই আমার
-আবেগ শোন আমার কথা
আমার শাশুড়ি বলতে শুরু করেন
-ছিহহ ।আবেগের বাবা এই মেয়ে কে তুমি বৌ করে এনেছো ।ছিহহহ
-আমি ওকে কতো ভালো ভাবতাম নিজের মেয়ে র মতো দেখেছি।আর তুমি
-বাবা আমি,,,
-চুপ করো।বাজে মেয়ে এই মুহূর্তে তুমি আমার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাও
আমি আবেগের কাছে যাই
-আবেগ আমার কথাটা শুনো।তুমি অন্তত আমাকে,,,,
আবেগ আমাকে চড় মারে
-আবেগগগ
#Part_13
👇
আবেগ এই প্রথম আমার গায়ে হাত তোলে।আবেগ এর চোখ মুখ পুরো লাল ছিল।ও কাঁদছিল
-বেরো আমার বাড়ি থেকে
-আবেগগগ
-তোর ঐ নোংরা মুখে আমার নাম নিবি না।আমি কটা দিন ছিলাম না আর তাই তুই ছিহহহ
-আবেগ আমার কথা শোন
-কি কথা শুনবো আমি তোর।কি শোনার বাকি রেখেছিস তুই।সব তো আমাদের কে দেখিয়ে ই দিলি।লজ্জা করলো না তোর ।কেনো করলি এমন
-আবেগ তুমি,,,,
রিদি তা কে বলতে না দিয়ে ই আশফি বলা শুরু করলো
-দেখ আবেগ তোর কষ্ট হলেও এটাই সত্যি যে তোর বৌভাতের দিন রিদি ভাবি কে আমার পছন্দ হয়। তারপর তোদের বাড়ি তে আসা যাওয়া করতে করতে রিদিতা ভাবি কে একদিন বলেই দি মনের কথা ।উনিও সাথে সাথে সায় দিলেন।তুই যখন বাড়ি থাকিস না আংকেল আন্টি থাকে না এমন সময় আমি আসতাম ।এরকম ই একদিন এ আমি এসে দেখি রিদিতা ভাবি খুব সেজে গুঁজে বসে আছে সেদিনই উনি নিজেই আমাকে ওনার কথা আছে,,,,,
-আশফি ভাইইইই ।চুপ করো।কি সব নোংরা কথা বলছো তুমি
-আশফি না তুই চুপ করবি।নোংরা কথা শুনতে পারছিস না নোংরা কাজ করার আগে তোর বাধেনি ।আশফি বল
-তারপর থেকে এভাবেই আমরা ঘনিষ্ঠ ভাবে সম্পর্ক গড়ে তুলি।আমার মাঝে মনে হচ্ছিল তোকে ঠকাচ্ছি।আমি তাই রিদি ভাবি কে জিজ্ঞেস করি যে উনি কেন এমন করছে।সেদিন উনি বলে তোর সম্পত্তির জন্য ।আর আমার কাছে তোর থেকে বেশি টাকা তাই,,,,
-আশফি ভাই আপনি কি সব বলছেন
এর মধ্যে আবেগ আমাকে আবার থাপ্পড় মারে
-চুপপ একদম চুপপ।কোন কথা বলবি না তুই।তোর মতো একটা নষ্ট মেয়ে কে ভালোবেসে ঘর বেধেছিলাম ।কেন রে তোকে কি কম ভালোবেসেছি আমি তুই এভাবে আমাকে জ্যান্ত খুন করলি।কি কমতি রেখেছিলাম আমি তোর
-আবেগ তোদের ঝামেলা তোরা মেটা আমি গেলাম
আশফি এটা বলে চলে যায় ।আমি আবেগের পায়ে পড়ি
-আবেগ একদিন এর জন্য হলেও যদি আমাকে ভালোবেসে থাকো তো সেই ভালোবাসার ওপর ভরসা রেখে একটা বার আমার কথা শোন।তোমার কি মনে হয় তোমার রিদি এটা করতে পারে।আবেগ কথা বলো
-আমার মনে হয় না।বিশ্বাস কর আমার এখনো মনে হয় না।কিন্তু আমি যে নিজের চোখে দেখেছি।এবার বল চোখের দেখা ভুল।কি হলো উওর দে
-আবেগ আমি তো তোমার জন্য ই সেজেছিলাম আবেগ।বিশ্বাস করো আমি জানিই না যে আশফি আসবে
-ও তাই এজন্য তুই দরজা র কাছে লিখেছিলি যে,তোমার অপেক্ষায় ।আর আমি আসবো এটা শুধু মা জানে।তুই জানবি কি করে
-আবেগ মা ই তো আমাকে,,,,,
আবেগ এর মা আমার কথা থামিয়ে দেয় ।আবেগ এর বাবা অনেক আগেই ওখান থেকে চলে যান।এটা সত্যি যে উনি আমাকে নিজের মেয়ে র মতো ভালোবাসতেন
-আবেগ এই মেয়ে র কথা আর শুনিস না।একের পর এক মিথ্যা কথা বলছে
-আবেগ আমি কিছু মিথ্যে বলিনি।আবেগ আমি প্রেগ,,,,,,
আমার কথাটা আবেগের মা শেষ করতে না দিয়ে ই আমার চুল ধরে আমাকে টেনে বের করে নিয়ে আসে ঘরের বাইরে
-কোন কথা বলবি না তুই।বেরো আমার বাড়ি থেকে
-আবেগ একটি বার আমার কথা শোন।তুমি কি সত্যি ই চাও আমি চলে যাই।আবেগ আমি তোমার কথা শুনতে চাই আবেগ আবেগগগ
সেদিন আবেগ যেই কথা গুলো বলে তা আজো আমার কানে বাজে
-শুনতে চাস তো তুই।শোন তাহলে।তোর মতো নোংরা মেয়ে কে আমি আমার বাড়ি তে এক মুহূর্ত সহ্য করতে পারছি না।আজ থেকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তোকে শুধু ঘৃনা করবো আমি।শুনেছিস । I hate u I hate u I hate u রিদিতা ।তুই আমার জীবনের একটা অভিশাপ।আমার রিদয় টাকে ক্ষতবিক্ষত করে দিলি তুই।আমার জীবন টা শেষ করে দিলি।তোকে আমি কখনো ক্ষমা করবো না। বেরিয়ে যা তুই।যেখানে গিয়ে পারিস সেখানে গিয়ে মর।মরে যা তুই।আল্লাহ্ যেন তোর মরা মুখ আমাকে দেখায়
-আবেগগগ
-হ্যাঁ হ্যাঁ তাই।তোর মরা মুখ দেখতে চাই আমি শুনেছিস।বেরো এখান থেকে
বলেই আবেগ ঘরের দরজা লাগিয়ে দেয় ।আবেগ এর কথাতে আমার পৃথিবী ওখানেই থমকে যায় ।আমার মৃত্যু কামনা করেছে আবেগ।এর থেকে বড় কষ্ট আর কি হতে পারে।শাশুড়ি র থেকে নিজেকে ছারিয়ে নিজেই চলে যাই সদর দরজার কাছে
-যা যা নষ্ট আ মেয়ে
-আপনাকে মা বলে ডেকেছিলাম ।আমি ও আজ এখন হবু মা।আমার গর্ভ এ আবেগের সন্তান বেড়ে উঠছে।এসব জেনেও আপনি এইভাবে আমাকে ফাসালেন ।জানিনা কি লাভ হলো আপনার ।আমিও আর ফিরতে চাই না।যেদিকে দুচোখ যায় চলে যাব।কিন্তু একটা কথা আল্লাহ্ মানুষকে সব কর্ম এর ফল দেয়।আজ আপনি যেটা করেছেন সেটার ফল যেন আল্লাহ্ আপনাকে দেখিয়ে দেয়
বলেই আমি পা রাখি দরজা র বাইরে।আমার শাশুড়ি যেন একটা হাফ ছেড়ে দরজা লাগালেন।মেইন গেট দিয়ে বেরোনোর সময় একবার পেছন ফিরে দেখে নিই সব।আমার সাজানো সংসার ।আমাদের ঘরের দিকে তাকাতেই দেখি আবেগ বেলকনিত দাঁড়িয়ে আছে আমার দিকে তাকিয়ে ।আমি বুঝেছিলাম যে আবেগ আজ অনেক কষ্ট পেয়েছে।ও আমাকে অনেক ভালোবাসে সেটা আমি জানি।কিন্তু ওর ভালোবাসা টা নিছক মিথ্যা মনে হলো আমার কাছে।যে মানুষটা বিশ্বাস করতে জানেনা তার কাছে ভালোবাসার কোন মূল্য নেই
আবেগ আমাকে দেখে বেলকনির দরজা লাগিয়ে ভেতরে চলে যায় ।সেদিন ভেজা চোখে আবেগের যাওয়া দেখে বুঝেছিলাম আবেগ এর জীবনের কোন দরজা আমার জন্য খোলা নেই।
বোরখা ছাড়া কখনো চলি না ।তারপর আবার সাজগোজ।শাড়ি র আঁচলটা ভালো করে গা ঢেকে গেট দিয়ে বেরোবো এমন সময় দারোয়ান চাচা আমাকে একটু দূরে গিয়ে দাঁড়াতে বলেন।বাড়ির পেছন দিকে
দারোয়ান চাচা বুড়ো মানুষ।উনি আমাকে খুব ভালো জানতেন।ওনার কথা মতো আমি বাড়ির পেছনে গিয়ে দাঁড়াই ।একটু পর চাচা আসেন
-চাচা ডেকেছিলেন
-মা আমার একটা মেয়ে ছিল তোমার মতো।কিন্তু শশুর বাড়ি তে থেকেই ওর স্বামী ওকে মেরে ফেলে।পয়সা না থাকলে গরিব এর কি আর বিচার হয়।আমি সব জেনেও আজ চুপ মা
-কি জানেন আপনি
-তোমার চাচী অসুস্থ ।তোমার চাচীকে মালকিন কোথায় আটকে রেখেছে।বলেছে আমি যদি বড় বাবুকে কিছু বলি তাহলে তাকে মেরে দেবে।তোমার শাশুড়ি আর ঐ নোভা নামের মেয়ে টাই তোমার এই সর্বনাশ করেছে
-চাচা আমি এখন কি করবো
হঠাত্ বাড়ি র পেছনে একটা গাড়ি এসে থামে
-মা এদিকে এসে লুকিয়ে পরো
-কেনো চাচা
-এসো আগে
আমি দারোয়ান চাচা লুকিয়ে পরি।দেখি গাড়ি থেকে নোভা নামছে।আর একটু পর আমার শাশুড়ি পেছনে র দরজা দিয়ে বেরোলো
-মা,,,,
-নোভা।আনন্দ কর।তোর আপদ বিদায় হয়ে ছে
-হ্যাঁ মা।এবার আমার আর আবেগের মাঝে কেউ থাকবে না
-আশফি র কি করবি
-ওহ মা।ওর ব্যবস্থা করা হয় এ গেছে
সেদিন আমি আর দারোয়ান চাচা ওদের সব কথা শুনতে পাই।বুঝতে বাকি থাকে না কেনো নোভা আমাকে ঐদিন এরকম কথা বলেছিল।ওদের কথা চলতেই থাকে।ওরা কথা বলতে বলতে গাড়ি তে গিয়ে বসে কোথায় চলে যায় ।সেদিন এটাও বুঝি যে আবেগ আমার শাশুড়ি র সন্তান নয়।নোভা তার সন্তান
দারোয়ান চাচা আমাকে একটা চাদর দেয়
-মা এই চাদর টা গায়ে জরিয়ে নেও।আর এই টাকাটা রাখো।আমার কাছে এর চেয়ে বেশি কিছু নেই
-চাচা আপনি
-মা তোমাকে মেয়ে র মতোন দেখি।এই ক বছর ধরে এই বাড়ি তে এমন অনেক অবৈধ ঘটনা ঘটেছে।যেটা কেউ জানেনা।আমি জেনেও কিছু বলতে পারিনা।আমার হাত পা বাঁধা।মা তুমি যাও
-চাচা একটা কাজ করবেন
-কি বলো
-বাড়ির পেছনের দরজা তো খোলা।বিকেল এ রান্না ঘরে আমার ফোন ফেলে আসি।ওটা একটু এনে দেবেন
-তুমি দাঁড়াও দেখছি
চাচা গিয়ে অনেকখন পর ফোনটা নিয়ে আসে
-এই নাও
-ধন্যবাদ চাচা
-তোমার কাছে আমার মোবাইল নাম্বার আছে
-হ্যাঁ
-কোন দরকার পরলে আমাকে বোলো মা।আমি চেষ্টা করবো।তোমার সংসার বাঁচানোর সাধ্যি আমার নেই।কিন্তু অন্য দিক থেকে তোমাকে সাহায্য করার চেষ্টা করবো
দারোয়ান চাচাকে ধন্যবাদ জানিয়ে অটো নিয়ে বাড়ি তে চাই।বাবা র কাছে
বাড়িতে যেয়ে বেল বাজাতেই বাবা মা দুজনেই এসে দরজা খোলে।তাদের চোখমুখ লাল হয়ে থাকে।পরে তাদের কথা শুনে বুঝতে পারি যে আমার শাশুড়ি তাদের ফোন দিয়ে সব বলেছেন
-তোর কোন জায়গা নেই এই বাড়ি তে
-বাবা আমার কথা শোন
-কি কথা শুনবে তোর।বেরো এখান থেকে
-মা আমি এতো রাতে কোথায় যাব।একটু ঠাঁই দেও আমাকে
-আজ থেকে আমার একটাই মেয়ে নিশিতা।আর কোন মেয়ে নেই আমার ।থাকলে সে মরে গেছে
-মাহহহ
-বেরো এখান থেকে।জাহান্নমে যা তুই।যেখানে গিয়ে পারিস মর
-মাহহহ
-আর ভুলেও যেন কখনো তোকে এখানে না দেখি।আমাদের মুখে চুনকালি মাখিয়েছিস ।নিশিতা র সাথে ও যদি কোন যোগাযোগ করিস তো তোকে আমি ছারব না।বেরো এখান থেকে
মা চলে যায়
-বাবা
-খবর দার আমাকে ঐ নামে ডাকবি না তুই
-চিন্তা করোনা।আমি চলেই যাচ্ছি ।আমার কিছু কাপড় ছিলো তো বাড়িতে ওগুলো একটু দেবে।ওগুলো একটু দেও।আমি চলেই যাব
বাবা ঘরে গিয়ে আমার কিছু জামা আর একটা ব্যাগ ছুরে দিয়ে যায়
-বেরো।তোর কোন জিনিস এমনিতেই রাখতাম না আর।পারলে না হয় গলায় দড়ি দিয়ে মর
-বাবা
বাবাও চলে যায় দরজা লাগিয়ে ।আমি কাপড়গুলো একটু গুছিয়ে ব্যাগে নিয়ে বেরিয়ে পরি অজানা উদ্দেশ্য ।নিজের মা বাবা যে এরকম করবে কখনো ভাবি নি
চলবে———