LOVE❤ part:20+21+22

0
603

#LOVE❤
part:20+21+22
Writer:Suvhan Årag(ছদ্মনাম)
রিদিতা নিজের পা থেকে চটি খুলে ম্যানেজার এর কলার ধরে টেনে এনে ম্যানেজার কে চটি দিয়ে মারা শুরু করলো।রিদিতা র কাছে সবাই হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে।দিশা ও গিয়ে রিদিতা র সাথে তাল মেলানো শুরু করলো
-এই জানোয়ার আমি তোকে ইশারা করেছি।আমিই।কি মনে করেছিস মেয়ে হয়েছি বলে কি মানুষ না।আজ তোকে দেখিয়ে দেব একজন মেয়ে কে মিথ্যা অপবাদ দেওয়ার পরিনাম কি
আবেগ না পেরে রিদিতা কে আটকাতে গেল
-একদম এদিকে আসবেন না।না হলের জুতোর বারি আপনাকেও দেব।আজ কাউকে ছারবো না আমি
রিদিতা পুরো জল্লাদের রূপ ধারণ করেছে যেন।আবেগ ও ভয় পেয়ে পিছিয়ে এলো।দিশা ও সেই মার দিচ্ছে
-শালা।আমার বোনকে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছিস তুই।আমার বোনকে চরিত্র হীন বলিস।আজ তোকে জুতোর বারি দিয়ে ই পুঁতে ফেলবো
ম্যানেজার আর সইতে পারছে না।জুতোর বারি খাওয়া র চেয়ে অপমান আর কি হতে পারে
-রিদিতা ছেড়ে দিন।আমি সব সত্যি বলছি ।আমি এতোক্খন সব মিথ্যা বলেছিলাম
ম্যানেজার এর কথা শুনে রিদিতা দিশা ছেড়ে দিল
-নে সব সত্যি বল।কেন আমার নামে মিথ্যা কথা বলেছিস এতোক্খন ।সত্যি বল নাইলে আমার চটি এখনো কিন্তু হাতে আছে বলে দিলাম
আবেগ তো অবাক
-ম্যানেজার কি সত্যি বলবেন।এতোক্খন তাহলে এসব কেন বলেছেন
-স্যার আমি নিজে এটা করিনি।আমি তো লোভে পরে করেছি।আমি আজ অফিসে আসবো তার আগে আমার বাসায় ওনারা যায় ।গিয়ে এই অফার দেয়।আমি প্রথম এ রাজী হয়নি কারণ এসব বললে আমার ও চাকরি থাকবে না।কিন্তু আমাকে ওনারা বিশ লাখ টাকা দেয়।আর বলে এই কাজ করার পর যেন আর অফিসে না আসি।তাঁরপর আমাকে ওনার আ থাইল্যান্ড পাঠিয়ে দেবে ন।এই জন্য মিথ্যা বলেছি।স্যার মাফ করে দিন
-এই ওনারা কারা
ম্যানেজার নোভা আর আবেগের মা এর দিকে তাকিয়ে বলতে যাবে তার আগে আবেগের মা কথা সেরে দেয়
-আবেগ।আর কি শুনবি ।সরাসরি এই লোককে।ছিহ কি জঘন্য ।কটা টাকার জন্য
-স্যার না আমাকে বলতে দিন।আপনার জানা উচিত যে আপনার ম,,,,,
-এই আপনারা দাঁড়িয়ে দেখছেন কি।বের করে দিন এই ম্যানেজার কে।কি জঘন্য লোক
অফিসে র বাকি স্টাফ গুলো কলার ধরে ম্যানেজার কে টেনে নিয়ে যাচ্ছে
-দাঁড়াও মা আমি শুনবো কে এই কাজ করেছে
-নোভা দাঁড়িয়ে দেখছিস কি দরজা টা লক করে দে।আবেগ এসব শুনে আর কি করবি বাদ দে
নোভা দ্রুত গিয়ে দরজা লাগিয়ে দিল।ওপাশ থেকে ম্যানেজার এর কথা আর শোনা যাচ্ছে না
-আবেগ বাবা বাদ দে এসব
এদিকে রিদিতা দিশা সব বুঝেছে কার এই কাজ।রিদিতা গিয়ে আবেগের একদম কাছে গিয়ে মুখোমুখি দাঁড়ালো ।রিদিতা কে দেখে আবেগের মাথা লজ্জা য় নিচু হয়ে যায়
-বাদ দিতে চাইলে যে সব হিসাব বাদ যায় না মি,আবেগ চৌধুরি
বলেই রিদিতা আবেগের গালে সজোরে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিল।আবেগ গালে হাত দিয়ে ছলছল চোখে রিদিতা র দিকে তাকালো
-রিদিতা আআআ
-হ্যাঁ আমি।এই চড় টা আমার মন ভেঙে দেবার জন্য ।আমার ভালোবাসা টাকে অপমান করার জন্য
বলেই যেই রিদিতা আবেগকে আরেকটা থাপ্পড় মারতে যাবে তখন নোভা এসে হাত ধরে ফেলে
-কি ভেবেছিস নষ্টা মেয়ে তোর সাহস কম নয় আমার আবেগকে,,,,,
নোভা বলতে দেরী রিদিতা হাত ছারিয়ে নোভাকে থাপ্পড় দিল
-এই কাকে নষ্ট বলিস তুই।আর একবার যদি আমার নামে বাজে বলিস না তো তোকে মেরে এখানেই পুঁতে দেব।আর কিসের আবেগকে আমার বলিস।বৌ এখনো হসনি তুই।কিসের এতো অধিকার দেখাস ।আমি এখানে দাঁড়িয়ে আমার স্বামী র সাথে কথা বলছি তুই এর মধ্যে ঢোকার কে।হ্যাঁ স্বামী না প্রাক্তন স্বামী।তার পরেও আমি কথা বলছি আমাদের মাঝখানে থার্ড পারসন হয়ে আসছিস কেন বেহায়া মেয়ে
রিদিতা নোভাকে সজোরে ধাক্কা মেরে ফেলে দিল
-আজ আমাকে কেউ আটকাতে পারবে না।মানুষ এর যখন পেছনে দেয়াল ঠেকে যাক তখন সে ঘুরে দাঁড়ায়।আজ আমার পেছনে র দেয়াল ঠেকে গেছে ধৈর্য এর সীমা ছাড়িয়েছে ।আমাকে আজ কেউ আটকাতে পারবে না।যে আসবি আমার সামনে তাকে প্রয়োজন এ খুন করতেও হাত কাঁপবে না আমার
আবেগের মা গিয়ে নোভাকে ধরলো।আবেগ মূর্তি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।কারণ আজ যে রিদিতা কে সে দেখছে তার সঙ্গে আজ আর আবেগ পেরে উঠবে না।দিশা ও অবাক রিদিতা কে দেখে
রিদিতা গিয়ে আবেগকে আরেকটা থাপ্পড় দিল
-এই থাপ্পড় টা আজকের জন্য ।আমাকে সবার সামনে এভাবে অপমান করার জন্য
রিদিতা এবার কেঁদেই দিল।গিয়ে আবেগের কলার ধরলো
-আর কতো জালাবি তুই আমাকে।আর কত পোড়াবি ।আমিও মানুষ । কি ভুল করেছিলাম বল।তোকে শুধু ভালোবেসে সংসার বেধে ছিলাম ।আর তুই আজ আমাকে বেশ্যা বললি।রাস্তায় নামিয়ে দিলি একেবারে।পতিতা মনে হয় তোর আমাকে
-রিদিতা আমি,,,
-একদম চুপ।আজ আমি বলবো আর তুই শূনবি।এই বেশ্যা আমি না তুই।একটা মেয়ে দশটা পুরুষ এর সাথে শুলেই বেশ্যা হয়ে যায় ।আর তোরা পুরুষ জাতি একেক দিন একেক টার সাথে পাড়ায় গিয়ে শুলে তোরা কি।বেশ্যা তো তোরা।তুই তোর চাহিদা মেটানোর জন্য আমার কাছে গেছিস আমি না।তুই নিজে একা পেয়ে আমাকে জোর করেছিস আমি না।বেশ্যা তুই তুই শুনেছিস
-রিদিতা আমার কথা,,,,,
-কোন কথা বলবি না তুই।তোকে ভালোবাস তামা বলে আর কটা থাপ্পড় দিতে পারছি না।আমার হাত কাপে।আমার বুকে রক্তক্ষরণ হয়।বুঝেছিস তুই
দিশা কাঁদছে রিদিতা র কথা শুনে।আবেগ ও কাঁদছে কিন্তু কিছু বলার মুখ আজ ওর নেই।দিশা রিদিতা কে টেনে আবেগের থেকে সরিয়ে আনলো
-ছেরে দে রিদি।এতো হাইপার হোস না।তোর শরীর এর জন্য ক্ষতিকর ।চল এখান থেকে।এদের বলে লাভ নেই
-আর কতো ছারবো আমি।আমার জীবনটা শেষ করে দিয়ে ছে।আরে রাতের অন্ধকারে একটা পোষা কুকুর কেও মানুষ বাড়ি থেকে তাড়ায় না রে।সেখানে আমি তো ঐ লোকটার স্ত্রী ছিলাম।রাতের আধারে একা একটা মেয়ে কে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়ে ছে।কিছু ছিল না আমার সাথে।না একটু টাকা পয়সা যা দিয়ে অন্তত কোথাও গিয়ে মাথা গুজবো ।এরা মানুষ না।এই অমানুষ গুলো একবার খোঁজ ও নেয়নি যে বেচে আছি না মরে গেছি।খুব ভালোবাসার সাফাই গাইতো ।অথচ এই হলো নমুনা ।সেই দিন রাতের অন্ধকার থেকে আজ অবধি একা চলে এতো দূর এসেছি ।এখানে ও এই অমানুষ লোকটা চলে এসেছে ।ওর জন্য আমার শান্তি নেই।আমার সব শেষ করে দিয়েছে
-রিদি চল এখান থেকে।চল
রিদিতা দিশাকে ছারিয়ে আবেগের সামনে গিয়ে দাঁড়াল ।আবেগ ভেজা চোখে রিদিতা র দিকে তাকিয়ে আছে
-একদিন আমার সব ছিল।তুই ছিলি।তোকে হারাবার ভয় এ চুপ ছিলাম ।প্রতিবাদ করিনি।ভাবতাম একদিন তোর ভুল ভাঙবে।তুই আসবি।তোর প্রতীক্ষা ও করতাম মনে মনে।কিন্তু সেদিন ভুল ছিলাম ।সেদিন যদি জানতাম যে জিনিসটা হারানোর ভয়ে আমি চুপ আছি সে জিনিস টাই আমার নয় তাহলে চুপ থাকতাম না।সবকিছু বলে সব পিছুটান ছেড়ে চলে আসতাম।আজ আর আমার কোন পিছুটান নেই
-রিদিতা,,,
-চুপ।একদম চুপ।ঐ মুখে আমার নাম নেবে ন না।একদিন বলেছিলেন আমি আপনার জীবনের অভিশাপ ।শুনে নিন আমি না আপনি আমার জীবনের অভিশাপ ।আপনার খুব শখ না আমার মরা মুখ দেখার।আজ এখানে দাঁড়িয়ে আমি আমার রিদয়ের সব দিয়ে আল্লাহ্ কে বলছি আল্লাহ্ যেন আমার মরা মুখ ই আপনাকে দেখিয়ে দেয় ।আর এটা ও শুনে নিন আমি যদি মরে ও যায় তো আপনি ও মরবেন ।জ্যান্ত লাশ হয়ে আজীবন নিজের পাপের মাশুল দেবেন।তখন চাইলেও আমাকে পাবে ন না
-রিদিতা আআআ
-একদিন আপনাকে ভালোবেসে নিজের শহর সজন সব ছেড়ে এই শহরে এসেছিলাম ।আজ আপনাকে ঘৃনা করে এই শহর ও ছারবো।জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আপনাকে শুধু ঘৃনা করবো শুনেছেন শুধু ঘৃনা ।। I HATE U ABEG I HATE U I HATE U
বলে রিদিতা দিশার হাত ধরে বেরিয়ে গেল।আবেগ তাকিয়ে আছে যাওয়ার দিকে।রিদিতা তাকে ঘৃনা করে এটা ভাবতেও পারেনি
এদিকে পরিস্থিতি বুঝে আবেগের মা নাটক শুরু করেছে
-আআআহ আআআঋ
আবেগ তাড়াতাড়ি মায়ের কাছে গেল
-মা কি হয়েছে মা
-আবেগ আন্টি র শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছে বোধ হয় ।তাড়াতাড়ি হসপিটাল এ চলো
আবেগ মা কে নিয়ে হসপিটাল এ রওনা হলো
রাতের বেলা
-আবেগ আমার শেষ কথা রাখবি
-মা কি বলছো তুমি
-আবেগ আমি কখনো চাই নি রিদিতা এই বাড়ি র বৌ হোক আজ না হয় সব ভুল ছিল।ঐদিন তো আমরা সবাই সব দেখেছি
-মা আমি কিছু বলতে চাই না এই ব্যাপার এ
-আজ রাতেই আমরা ঢাকাতে ব্যাক করবো।কাল ওখানে গিয়ে গায়ে হলুদ পরের দিন তোমার আর নোভা র বিয়ে
-মা আমাকে একটু সময়,,,,
-তোমাকে সময় ও দিয়ে ছি।তুমি নিজেই রাজী হয়ে ছিলে বিয়ে তে।তোমার বাবা সব রেডি করে রেখেছেন আর কোন কথা নয়
পরের দিন সকালে
কানাডা থেকে দেশের মাটিতে পা রাখলো আশফি
-ওয়েলকাম স্যার
-ওয়েলকাম না করে নিউজ বলো
-স্যার আজ নোভা আর আবেগ চৌধুরি র গায়ে হলুদ কাল বিয়ে
-এতো তাড়াতাড়ি কেন
-সেই খবর পাই নি
-সব কিছু রেডি তো
-হ্যাঁ স্যার
-ওকে
মুখে বিজয় এর হাসি আশফির
-বিয়ে তো হচ্ছে না নোভা ।এতোদিন ভালোবাসা দেখেছো এবার দেখবে প্রতিশোধ ।অনেক জীবন নষ্ট করেছো তুমি আমার সন্তান, আবেগ,রিদিতা, আবেগের সন্তান ।এবার এর হিসেব তোমাকে দিতে হবে।আর কোন জীবন নষ্ট হতে দেব না আমি

#Part_21
👇
গাড়ি চলছে আপন গতিতে।রিদিতা আর দিশা ফিরে যাচ্ছে গ্রামে
-রিদি আর কাদিস না
-কাঁদছি না রে।শুধু নিয়তির কথা ভাবছি।কি খেলা খেলছে নিয়তি আমার সাথে
হ্যাঁ দিশা রিদিতা কে নিয়ে ওদের গ্রামে চলে যাচ্ছে।কথায় আছে না মেয়ে দের এক পা এগুতে গেলেও যেন বিপদ ছায়া র মতো দাঁড়িয়ে পরে।ঠিক তাই।গতকাল ঐ ঘটনার পর রিদিতা দিশা বাড়ি এসে দেখে ঐ বাড়ির মালিক ওদের মালপত্র বাইরে ফেলে দিচ্ছে ।উনি নিজের প্রতিশোধ নিলেন।আশেপাশে র লোকজন ও আগের দিন আবেগ এর গাড়ি দেখেছে।গতকাল ও আবেগকে দেখেছে।রিদিতা কে দুশ্চরিত্র সহ অনেক কথা বলে তাড়িয়ে দিয়েছে।রিদিতা আর কোন প্রতিবাদ করেনি ।কারণ কাল সকালটাই কেটেছে সংগ্রাম করে।দিশা মালপত্র নিয়ে রিদিতা কে নিয়ে রওনা হয় গ্রামের পথে
রিদিতা ফোন থেকে সিমটা খুলে ফেলে দিল
-রিদি এটা ফেললি কেন
-আর কোন অতীত এর স্মৃতি রাখতে চাই না।আবেগের নাম্বার এর সাথে মিল রেখে ও সিমটা এনে দিয়েছিল এটাই আমার কাছে ওর শেষ স্মৃতি ।তাই ফেলে দিলাম
-আচ্ছা এবার একটু ঠান্ডা হ
আজ আবেগ নোভা র বিয়ে
-মা আমি এই বিয়ে করতে পারব না
আবেগের বাবা মা সবাই তাকিয়ে আছে আবেগের দিকে
-আবেগ তুমি কি তামাশা পেয়েছো এটা।একটু পর বিয়ে এখন এসব বলছো
-আমি কালকেও মাকে বলেছি বাবা আমার পক্ষে বিয়ে করা সম্ভব নয়
নোভা বিয়ে র সাজে বসে আছে।আজ তার স্বপ্ন পূরণের দিন।কিন্তু পাশ থেকে আবেগের এসব কথা শুনে নোভা রেগে আগুন।ঘর ভরতি অতিথিদের সামনে আবেগ এসব বলছে।নোভা র বাবাও খেপেছেন
-আবেগ ভুলে যেও না তুমি নিজেই রাজী হয়ে ছো।এখন আমার মেয়ে র সর্বনাশ করবে এটা যদি ভেবে থাকো খুব খারাপ হয়ে যাবে
-আমি কোথায় রাজী হয়ে ছি।আপনারা এক কথা বলছেন।আমি সময় চেয়েছিলাম শুধু ।আপনারাই তো ব্যস্ত হয়ে গেলেন।আমি এই দেশ ছেড়ে চলে যাব কারোর আমাকে নিয়ে ভাবতে হবে না।কিন্তু এই বিয়ে আমি করবো না
নোভা র বাবা নোভা কিছু বলতে যাবে তার আগে সদর দরজা দিয়ে কেউ বলে উঠলো
-এতো হাইপার হোস না আবেগ।তোকে এমনিতেই এই বিয়ে করতে হবে না।আজ তো এখানে বিয়ে না একটা নতুন সিনেমা হবে অনেকের মুখোশ উন্মোচন হবে
এই কথা শুনে সবাই ঘুরে দাঁড়ালো ।নোভা উঠে দাঁড়ালো ।কারণ এই কন্ঠ তার চেনা।পুরো ঘরে বন্দুক হাতে নিয়ে কালো পোশাক পরা লোকজন ঘিরে নিলো।প্রবেশ করলো এই কথা বলা লোকটি।তাকে দেখে নোভা র পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছে গা হাত পা কাঁপছে
-তুমমমি
-হ্যাঁ আমি।আশফি আবরাজ ।আবরাজ কোম্পানির এম ডি।এতো তাড়াতাড়ি আমাকে ভুলে গেলে নোভা
আশফিকে দেখে নোভা নোভা র বাবা আবেগের মা র গলা শুকিয়ে এসেছে।আবেগ ও অবাক
-আশফি তুই এখানে
-হ্যাঁ এসেছি।নিজের সব পাপ শিকার করতে।আর অনেকের অনেক কিছু ফিরিয়ে দিতে।তোর সংসার বাঁচাতে
-আমার সংসার
-হ্যাঁ তোর আর রিদিতা ভাবির ভালোবাসার সংসার ।আমি একা আসিনি আরো অনেকে এসেছে।আপনারা আসুন
একে একে ঘরে এলো রিদিতা র মা বাবা নিশিতা ও নিশিতা র হাসবেন্ড ।তাদের সবার চোখ মুখ লাল
-আশফি তুই এদের এখানে,,,
-হ্যাঁ ওনাদের নিয়ে এসেছি।ওনারা সব জেনে গেছেন এবার জানার পালা তোর আর আংকেল এর।আর হ্যাঁ মি,রাশেদ(নোভা র বাবা) আপনি আপনার মেয়ে ভুলেও মুখ খুলবেন না।আমার টিম কে বলা আছে আজ এখানে যে উল্টা পাল্টা শুরু করবে তাকেই একদম শুট করে দেবে
-আশফি কি সত্যি বলবে তুমি
-আংকেল সেই সত্যি যা তিন মাস আগে আবেগ আর রিদিতা ভাবির সংসার ভেঙেছিল।যেটা আপনি আবেগ জানেন না
-কি সত্যি বলবি বল
-দাঁড়া আবেগ।আজ অনেক সত্যি বলবো।একটু ধৈর্য ধর।প্রথম নোভাকে দিয়ে ই শুরু করি।কি বলো নোভা
নোভা তো ভয়ে শেষ
-আআমমার আবার কি সত্যি আশফি
-ওহ তুমি তো ভুলে গেছ।তাহলে শোন আমার কথা।আজ থেকে পাঁচ বছর আগে নোভা কানাডা যায় পড়াশোনা র জন্য ।তার দুবছর আগে যায় আবেগ।আমার বাবা বাংলাদেশী কিন্তু আমার জন্ম কানাডা তে।বাংলাদেশে অনেক বিজনেস আর কানাডা তে ও অনেক বিজনেস ছিল তার।আবরাজ কোম্পানির এমডি ছিলেন।আমি কানাডা তে আবেগ এর সাথে একি কলেজে পড়তাম ।অনেক ভালো বন্ধু হয়ে যাই আমরা দুজন।হঠাত্ বাবা একদিন হার্ট এয্টাক এ মারা যান।আমার মা মারা গেছে ছোট বেলায় ।আমার মাদার ফিয়েরা আমাকে দেখতেন।অনেক ভেঙে পরি আমি।সে সময় আবেগ সবসময় আমাকে সঙ্গ দিত।এর মাঝে নোভা ও কানাডা যায় পড়াশোনা র জন্য ।আবেগের কাছে জানতে পারি নোভা ওর কাজিন ফুফাতো বোন।যেদিন নোভাকে এয়ারপোর্ট এ আবেগের সাথে রিসিভ করতে যাই সেদিন ই ওকে দেখে প্রেমে পরে যাই আমি।আবেগ নোভা আমি সবসময় একি সাথে চলাফেরা করতাম।নোভা র প্রতি দুর্বলতা বেড়েই যায় আমার।কিন্তু মুখে বলতে পারতাম না।এর ই মাঝে একদিন আবেগ পরীক্ষা র জন্য কটেজে থেকে যায় ।নোভা আমার সাথে ঘুরতে যায়।সেদিন নোভা কে মনের কথা বলি আমি।আমি ভাবতে পারিনি নোভা সেদিন ই আমাকে একসেপট করবে।নোভা শুধু একটা শর্ত দেয় যাতে আমার আর ওর সম্পর্কে র কথা আবেগকে না জানাই।আমি ও রাজি হই।শুরু হয় আমাদের প্রেম।নোভা খুব উচ্চাভিলাষী ছিল।ও টাকা গয়না পার্টি এসব ভালোবাসতো ।আমি ওর সব চাহিদা পূরণ করতাম ।এর মাঝে আবেগ বিডি তে ব্যাক করে।তখন নোভা আর আমি একা।দুজনে জুটিয়ে প্রেম করতাম।আমি নোভাকে বিয়ে র কথা বললে ও বলতো যে বাড়ি তে সবাই জানে।দেশে ফিরে তবেই বিয়ে করবে।আমি প্রচন্ড ভালোবাসতাম নোভাকে ।ধীরে ধীরে সম্পর্ক আরো গভীর হয়ে যায় ।শুধু কবুল বলাই বাকি ছিল আমাদের ।স্বামী স্ত্রী র মতো আমরা থাকতাম ।আমাদের সম্পর্কে এর তিন বছরের মাথায় আবেগ জানায় যে ও বিয়ে করেছে।সেদিন নিউজ টা শুনে নোভা যেন কেমন হয়ে যায় ।আমার সাথে রাফ ব্যবহার শুরু করে।ও বলে দেশে নাকি ওর বাবার তেমন কোন সম্পত্তি নেই।আবেগের বাবা র টাকায় ও এখানে এসেছে।আমি ওকে খুব ভালোবাসতাম ।বিডি তে আমার যতো বিজনেস ছিল সব নোভা র নামে করে দেই আমি।তারপর নোভা আবার আগের মতো শুরু করে।আবেগের বিয়ে র দুবছর পূর্তি আবেগ আমাদের ইনভাইট করে।নোভা ও রাজী হয় যেতে।আমাদের রিলেশন তখনো কেউ জানতো না।কিন্তু নোভা র বাবা আবেগের মা সব জানতেন।আর আমার মাদার ফিয়েরা ।ঐ বার বিডি তে ব্যাক করি।বিডি তে আসার কিছুদিন আগে নোভা অসুস্থ হয়ে পরে।ডাক্তার জানায় যে নোভা প্রেগন্যান্ট ।নোভা এই খবরে একটুও খুশি ছিল না।ও বাচ্চা টাকে এবরশন করাতে চাইছিল।আমি ওকে অনেক রিকোয়েস্ট করে বিডি তে নিয়ে আসি।আবেগ এর এঅযানিভারসারি তে রিদিতা ভাবির সাথে দেখা হয় ।নোভা ঐ অনুষ্ঠানে যায় নি।ও বলে শরীর ভালো না।তাই আমি ওকে জোর করিনি।বিডি তে আমি নোভা র বাড়িতে থাকতাম ।সবাই জানতো আমরা বন্ধু ।কিন্তু আসলে তা ছিলাম না।এর মধ্যে হঠাত্ একদিন নোভা আমাকে বলে ওর কথা মতো একটা কাজ করতে হবে।সেদিন ও বলে রিদিতা ভাবির সাথে ঐ,,,,,,আমি রাজী হয়নি।সেদিন নোভা র সাথে অনেক কথা কাটাকাটি হয় ।নোভা বাড়ি থেকে বেরিয়ে চলে যায় ।ওকে ফোন দিয়ে বলি যে ও কেন ও রকম জঘন্য কাজ করতে চাইছে।এতে আবেগের সংসার ভেঙে যাবে।ও বলে যে ও নাকি হসপিটাল এ গেছে এবরশন করাতে ।আমি যদি ঐ কাজ করি তাহলে এবরশন করবে না।আবেগের মা ও সেদিন এই কথা বলে আমাকে ।আমি নোভাকে অনেক ভালোবাসতাম ।আমি চাইতাম আমার সন্তান আসুক পৃথিবীতে ।বাধ্য হয়ে সেদিন রিদিতা ভাবির বদনাম করি।সেদিন রাতে নোভা ফিরে আসে।ও বলে ও এবার আমার সাথে কানাডা ব্যাক করবে।আমি সেদিন খুব অপরাধ বোধ করি।কারণ আমি নিশ্চিত যে আবেগ রিদিতা ভাবি কে ডিভোর্স দেবে।নোভা কে অনেকবার বলি সত্যি টা জানিয়ে দিই আবেগের ক্ষতি করে ওর কি লাভ ।ও শুধু এবরশন করার হুমকি দিত।এর পরের দিন আমরা কানাডা ফিরে যায় ।সেখানে যাওয়ার দুদিন পর আমি অফিসে র কাজে বাইরে আসি সেদিন হসপিটাল এর সেই ডাক্তার এর সাথে দেখা হয় ।যিনি বলেছিলেন নোভা প্রেগন্যান্ট ।ওনাকে দেখে আমি জিজ্ঞেস করি যে নোভা কে এখন কি রকম কেয়ার করা উচিত চেকাপ করাতে হবে কিনা অনেক কিছু।উনি আমার দিকে অবাক হয়ে ইংরেজিতে বলেন,,আপনি কি বলছেন।আপনার স্ত্রী ঐ টেস্ট এর দুদিন পর এসে এবরশন করিয়ে গেছে।আমার মনে হচ্ছিল আমার পা থেকে মাটি সরে যাচ্ছে ।আমার বাচ্চা কে নোভা মেরে ফেলেছে আমাকে না জানিয়ে ।ও বিশেষ ওষুধ এর মাধ্যমে এই কাজ করে তাই আমি টের পাই নি।তারপর রিদিতা ভাবির সাথে ঐ নাটক।আমি তখন মাদার ফিয়েরা কে ফোন দেই।বলি যেন নোভা কে কোথাও যেতে না দেয়।নোভা কে আটকে রাখে।এই বলে আমি বেরিয়ে যাই ।নোভা র সাথে বোঝাপড়া করতে।বাড়িতে গিয়ে দেখি মাদার ফিয়েরা রক্তাক্ত অবস্থায় পরে আছে।নোভা কোথাও নেই।মাদার ফিয়েরা র অবস্থা খারাপ ছিল।নোভা ওনাকে গুলি করেছিল।উনি আমার সাথে কথা বলার সময় নোভা সব শুনে ফেলে তারপর পালাতে গেলে মাদার আটকাতে গেলে তাকে মেরে দেয় ।এই বলে তিনি মারা যান।এই দিকে পুলিশ এসে আমাকে খুনি ভেবে ধরে নেয়।সরকার আমার সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে নেয়।আমি জেলে চলে যায় ।আমার এক কানাডিয়ান ফ্রেন্ড ছিল ও ছিল উকিল ।ও পেপারে আমার এসব কাহিনী পরে আমার সাথে দেখা করতে আসে।ওকে সব বলি আমি।ও থেকে আমাকে ছারানোর সব ব্যবস্থা করে।নির্দোষ প্রমাণিত হই আমি।সরকার আমার সব সম্পত্তি ফিরিয়ে দেয় ।এরপর ই আমি বিডি তে আসা র সব কিছু রেডি করি।সাথে লাগিয়ে দেই আমার সোর্স ।সব প্রমাণ নিয়ে ই আজ এসেছি আমি
আশফির কথা শুনে আবেগ ওর বাবা পুরো অবাক
-এতো বড় নাটক।কেনো করলে নোভা কেন
-দাঁড়া আবেগ।ধীরে ধীরে সব বুঝবি ।নোভা ডার্লিং সত্যি বলে ফেল।আজ তোমার কোন বাঁচার লাইন নেই।মিথ্যা বললে এখানেই তোমাকে মেরে পুঁতে ফেলবো আমি
এবার নোভা ও মুখ খোলে
-আবেগ কে আমি ছোট থেকেই ভালোবাসি।পছন্দ করি।কিন্তু ও আমাকে বন্ধু র মতো দেখতো।কখনো ওকে মনের কথা বলিনি।কানাডা যাওয়ার পর আবেগকে দেখে প্রেমে পরে তাই নতুন করে।ও আরো সুন্দর হয়ে যায় আগের থেকে।কিন্তু ও কখনো আমাকে ফিরেও দেখতো না।সব সময় বইয়ে না হয় ফোনে মুখ গুঁজে থাকতো।এর মধ্যে আশফি আমাকে প্রপোজ করে।আমি ভাবতে ও পারিনি যে আশফি আমাকে লাইক করে।আশফি ও আবেগের থেকে কম হ্যান্ডসাম ছিল না।তারপর ওর পার্সোনালিটি ও ছিল আবেগের থেকে বেশি।আমি টাইম পাসের জন্য ই আশফির প্রস্তাব এ রাজী হয়ে যাই।আশফি কে নিষেধ করি এই সম্পর্কে র কথা কাউকে না জানাতে।এর মাঝে আবেগ দেশে ব্যাক করে।আমি কানাডা তে থেকে যাই গ্রাজুয়েশন এর জন্য ।এই দিকে আশফি তখন আমার প্রেমে সেই হাবুডুবু খাচ্ছে ।আমি আশফি র মোহে পরে যাই।বিদেশে লিভ টুগেদার একটা ফ্যাশন ।আমি ও নিজের জীবনটা কে উপভোগ করতে চাইতাম ।আর আশফির কোন কিছুর ই অভাব ছিল না।মাথা থেকে আবেগকে ঝেড়ে ফেলে আশফির সাথে সব শুরু করি।এরকম ভালো চলছিল দিনকাল।এরপর একদিন আমি আর আশফি অনেক দূরে ঘুরতে যাই ঘুরা বললে ভুল হবে ওটাকে এক প্রকার হানিমুন বলা যায়।যাওয়ার সময় ভুলে আমার ফোন কটেজে ফেলে যাই।ওখানে আমরা দুজনে দশ দিন কাটিয়ে তারপর ফিরি।কটেজে ফিরে দেখি আবেগের মা মানে আমার মা এর অনেক কল।আমি কল ব্যাক দেব তার আগে আশফি জানায় আবেগ বিয়ে করেছে আর বিয়ে র ছবিও পাঠিয়ে ছে।আবেগের পাশে ঐদিন ছবিতে রিদিতা কে আমি মানতে পারিনি।শত হলেও আবেগ কে ভালোবাস তাম।এদিকে আশফি বিয়ে র জন্য জোর করে।আমি ঠিক করি আশফি র সাথে সম্পর্ক শেষ করে দেশে ফিরবো।মা নিষেধ করে।বলে এখন আসলেই আমি আবেগকে পাব না।আবেগ অনেক ভালোবাসে ওর বৌকে ।তাঁর পর বাবা র বিজনেস ভালো চলছিল না।তাই আমি কানাডা তে থেকে আশফি র দেশে থাকা সব সম্পত্তি নিজের নামে করি।যখন ভাবি কাজ শেষ দেশে ফিরবো।তখন জানতে পারি আমি প্রেগন্যান্ট ।আশফিকে না জানিয়ে বাচ্চা নষ্ট করি আমি।কারণ আমার আবেগ এর সাথে বিয়ে করার ইচ্ছে ।তারপর দেশে ফেরা তারপর রিদিতা কে আবেগের জীবন থেকে সরানো আর ঐদিন অফিসে ও রিদিতা কে হেনস্থা করা সব আমার প্লান
-তার মানে ঐদিন অফিসে ও তুমি,,,
-হ্যাঁ আবেগ তাই।কিন্তু আবেগ আমি তোমাকে ভালবাসি বলো।চলো আমরা বিয়ে করি।তুমি এসব ভুলে যা ও
আশফি গিয়ে নোভা র চুলের মুঠি ধরে থাপ্পড় মারে
-বিয়ে করার শক তোর তাই না।আমি মেটাবো ।তার আগে তোর বাবা রাশেদ আর আবেগের সো কোল্ড মা মিসেস লাবনি র মুখোশ টা খুলতে দে

#Part_22
👇
আশফি এবার আবেগের মা মিসেস লাবনি র কাছে এগিয়ে গেল
-নিন এবার আপনি মুখ খুলুন ।কেনো এতো নিচে নামলেন।নিজের ছেলেকে কেনো এভাবে ঠকালেন ।বলুন
-কে নিজের ছেলে।আবেগ আমার কেউ না।নোভা আমার সন্তান ।আমার আর নোভা র বাবা রাশেদ এর দীর্ঘদিন এর সম্পর্ক ছিল।আমরা বিয়ে করবো বলে ঠিক করেছিলাম ।হঠাত্ ই রাশেদ কোথায় যেন হারিয়ে যায় ।ওর নাম্বার বন্ধ ।ওর বন্ধু দের কাছেও খোঁজ নেই।সবাই জানায় ও কোথায় কেউ জানে না ।এভাবে এক বছর কেটে যায় আমি রাশেদ এর কোন খোজ পাইনি ।এর মধ্যে বাড়িতে আজাদ ভাই মানে আবেগের বাবা বিয়ে র প্রস্তাব পাঠায়।আজাদ ভাই কলেজ লাইফ থেকেই আমার তিন বছরের সিনিয়র ছিলেন।উনি কলেজ লাইফ থেকে আমাকে পছন্দ করতেন।কিন্তু আমি বারবার রিজেক্ট করে দেই।উনি বিয়ে র প্রস্তাব পাঠালে আমার ফ্যামিলি ও রাজি হয়ে যায় ।এতো বড় বিজনেস ম্যান।তারপর আমার পরিবার জোর করে আজাদ এর সাথে বিয়ে দিয়ে দেয়।রাশেদ এর কোন খোজ ও আমি তখন পাইনি ।বিয়ে র পর যখন আজাদ এর বাড়ি যাই তখন সেখানে গিয়ে রাশেদকে আমি দেখি।আজাদ পরিচয় করিয়ে বলে রাশেদ আজাদের বোন অনীলার হাসবেন্ড ।সেদিন মনে হচ্ছে আমার দুনিয়া যেন ওখানেই থেমে গেছে।আমি শুধু সুযোগ খুঁজছিলাম রাশেদকে কখন একা পাব।বাসর ঘরে আমাকে বসিয়ে যখন সবাই চলে যায় তখন রাশেদ বেরোনোর সময় আমি ওর পথ আটকাই ।ওকে জিজ্ঞেস করি কেনো আমাকে ঠকালো ।সেদিন রাশেদ বলে যে অনীলা রাশেদকে ভালোবাসে ।আর আজাদ নিজের বোনের জন্য ওকে জোর করে তুলে এনে বিয়ে দিয়ে ছে।আর ও আমাকে এখনো ভালোবাসে।সেদিন থেকে আজাদ এর প্রতি আমার চরম ঘৃনা জন্মায় ।আজাদ ভাইকে আমি শর্ত দি যেন কোন দিন আমার সাথে স্বামী স্ত্রী র সম্পর্কে জরাতে না আসে। আজাদ আমাকে ভালোবাসতো তাই সব মেনে নিয়ে ছিল।এভাবে দিন কাটছিল।অনীলা খুব সরল ছিল ।আজাদ নিজের অফিসে র কাজে সবসময় ব্যস্ত থাকতো।এর মধ্যে আমার আর রাশেদ এর পুরোনো প্রেম ও জেগে ওঠে।আজাদ অফিসে থাকলে রাশেদ অনীলা কে ভুলিয়ে ভালিয়ে আমার কাছে আসতো।আমি রাশেদ কে অনেক ভালোবাসতাম ।তাই ওর সাথে অবৈধ সম্পর্কে জরিয়ে পরি।এরকম একদিন আমি আর রাশেদ দুজনে খুব ঘনিষ্ঠ অবস্থায় আমার ঘরে ছিলাম ।আজাদ হুট করে অফিস থেকে তাড়াতাড়ি চলে আসে ঐদিন।আর আমাদের ঐ অবস্থায় দেখে ফেলে ।অনীলা র কথা ভেবে সেদিন আজাদ রাশেদ কে ছেড়ে দেয়।রাশেদ কে এটা বলে যে ওর বোন যদি এসব জানতে পারে তাহলে ঐ দিন ই আমাদের শেষ দিন হবে।এর পর শুরু হয় আজাদের অত্যাচার ।ও আমাকে সহ্য করতে পারতো না।এর মধ্যে আমি অসুস্থ হয়ে পরি।ডাক্তার জানায় আমি প্রেগন্যান্ট ।আজাদ জানতো যে ওটা রাশেদ এর বাচ্চা ।কারণ আজাদ আর আমার মাঝে কোন সম্পর্ক ই গরে ওঠেনি।আজাদ এবরশন এর কথা বললে ডাক্তার জানায় আমার শারীরিক কন্ডিশন ভালো না।এবরশন করালে জীবন ঝুঁকি আছে।আমি প্রেগন্যান্ট এই কথাটা শুধু রাশেদ আজাদ আর আমি জানতাম ।অনীলা ও জানতো না।এরপর ই আজাদ আমাকে নিয়ে বিজনেস এর নাম করে দেশের বাইরে নিয়ে আসে।সেখানে ই নোভা র জন্ম ।অনীলা খুব বাচ্চা ভালোবাসতো।কিন্তু অনীলার সমস্যা ছিল ও কোন দিন মা হতে পারবে না।তার কিছুদিন পর আজাদ আমাকে নিয়ে দেশে ফেরে ।সেদিন আজাদ আমার কোল থেকে নোভা কে নিয়ে একটা কথাই বলে,তোমাদের দুজনের অবৈধ সম্পর্কের ফসল এটা।রাশেদ শুধু অনীলা র জন্য বেচে যাবে ।কিন্তু তোমার শাস্তি আজীবন নিজের মেয়ে র কাছ থেকে মা ডাক শুনতে পাবে না।সেদিন আমার কোল থেকে নোভাকে নিয়ে অনীলা র কোলে দিয়ে বলে,যে ঐ বাচ্চা টা দত্ত ক নিয়ে ছে আজাদ অনীলা কে দেবে বলে।সেদিন আমি রাশেদ শুধু চুপ করেছিলাম ।আমার বুক ফেটে যাচ্ছিল।কিন্তু মুখ খুলতে পারিনি।আজাদ ওখানেই থামেনি ঐ দিনই অনাথ আশ্রম থেকে একটা দুবছর এর ছেলেকে দত্ত ক নিয়ে আমার কোলে তুলে দেয়।বলে আজ থেকে চৌধুরি গ্রুপ এবং আজাদ চৌধুরি র সবকিছু র উওরাধিকার ঐ বাচ্চা ।ওকে যেন আমি মায়ের আদরের কমতি না দিই।আর ঐ বাচ্চা টাই আবেগ।আবেগকে আমি মায়ের স্নেহ দিয়ে ই বড় করি।আমার সামনে নোভা যখন অনীলা কে মা আর আমাকে মামণি বলে ডাকতো আমি সেটা সইতে পারতাম না।রাশেদ কে ডেকে আমি বলি এর কিছু করতে।ও তখন জানায় যে চৌধুরি গ্রুপ এর 75% শেয়ার আজাদ অনীলা র নামে রেখেছে।বোনকে এতো ভালোবাসতো ও।আর 35% শেয়ার নিজের নামে।সেদিন রাশেদ বলে যে অনীলা র অবর্তমানে এসব কিছু নোভা পাবে।অনীলা কে যে করে হোক সরিয়ে আমরা ওর সব সম্পত্তি নিয়ে চলে যাব।কিন্তু ঐ দিন অনীলা আমাদের সব কথা শুনে ফেলে।আমি আর রাশেদ ওকে ধরতে গেলে ও দৌড়ে বেরিয়ে যায় রাশেদ আমাকে নোভা র কাছে রেখে অনীলা কে ধরতে যায় কিন্তু ততক্ষণে অনীলা অনেক দূরে চলে যায় ।রাশেদ অনীলা কে ফলো করছে এটা অনীলা বুঝতে পেরে গাড়ি দ্রুত ড্রাইভি করতে গিয়ে এক্সিডেন্ট করে আর ওখানেই মারা যায় ।কিন্তু কে জানো ঐ অনীলা র মনে এতো শয়তানি থাকবে।মরার আগে গাড়ি তে ও উঁকি ল কে ফোন দিয়ে বলে যায়, যে ওর কিছু হলে ওর সব সম্পত্তি যেন আবেগ চৌধুরি র নামে যায় ।পরে সব কিছু ঐ রাস্তার ছেলে আবেগের হয়।আর আজাদের দয়া দক্ষিণ আ তে রাশেদকে নোভাকে নিয়ে থাকতে হয় ।এর মাঝে নোভা কানাডা যাওয়ার আগে একদিন রাশেদ আর আমি কথা বলছিলাম ও সব শুনে।তখন ও জেনে যায় যে ওর মা আমি।কানাডা গিয়ে নোভা জানায় যে ও আবেগকে ভালোবাসে।সেদিন রাশেদ ও বলে যে তাহলে ভালো আবেগের সাথে নোভা র বিয়ে হলে নোভা সব পাবে।কিন্তু আজাদ সেটাও হতে দিল না।ওর কাছে প্রস্তাব দিলে ও রিজেক্ট করে দেয়।তারপর আবেগকে দেশে ব্যাক করতে বলে তারপর ঐ রিদিতা কে এ বাড়ি র বৌ করে আনে।তাঁর পর আমি সব কিছু সাজিয়ে নাটক করি।রিদিতা চলে যাওয়া র পর আমি আজাদের পায়ে পরি যেন নোভা কে আবেগের সাথে বিয়ে দেয়।তখনো আজাদ রাজী হয় নি।আবেগ আমাকে খুব ভালোবাসে তাই আমার কথা ফেলেনি।ও নোভাকে বিয়ে করতে রাজী হলে আজাদ আর কিছু বলে না ।এই হলো সত্যি
নোভা র মার কথা শুনে আবেগ আর ওর বাবা আজাদ চৌধুরি র বিস্ময় এর শেষ নেই
-বাবা আমি তোমার ছেলে না বাবা বলো না
-না তুই আমার ছেলে।কে কি বললো তাতে কিছু যায় আসে না ।তুই আমার ছেলে আমি তোর বাবা
আশফি এবার নোভা র বাবা রাশেদ এর কাছে যায়
-নিন এবার সব বলুন
-আমি অনীলা কে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করি সম্পত্তি র জন্য ।আজাদ অনীলার কথা ভেবে মেনে নেয় আমাকে।কিন্তু যখন দেখি লাবনি র সাথে আজাদের বিয়ে হয় এছে তখন লাবনি কে সব মিথ্যা বলি আমি।আর আমি লাবনি র সাথে মেলামেশা শুরু করি।কিন্তু ঐদিন আজাদের সাথে ধরা পরা আর লাবনি র প্রেগন্যান্ট হওয়া ওগুলো র জন্য ই আমার সব প্লান শেষ।শুধু টাকার জন্য ই আমি এতো কিছু করেছি
নোভা র মা ও অবাক রাশেদ এর কথা শুনে
-তুমি এতো বড় মিথ্যা বলছো আমাকে।তোমার মিথ্যা র জন্য আজ আমি এতো নিচে নেমেছি ।ছিহহহ
এবার আশফি গিয়ে নোভা র চুলের মুঠি ধরে থাপ্পড় মারা শুরু করলো
-আশফি ছেড়ে দেও।আমার লাগছে
-তোর আরো লাগার বাকি আছে
আশফি মারতে মারতে নোভা কে আবেগের পায়ের কাছে ফেললো।নোভা আবেগের পা জরিয়ে ক্ষমা চাওয়া শুরু করলো
-আবেগ তুমি ক্ষমা করে দেও আমাকে।চল আমরা সব ভুলে বিয়ে করে নিই
আবেগ লাথি মেরে নোভা কে ফেলে দিল
-তোকে ক্ষমা ।তোকে জ্যান্ত পোড়ালে ও আমার শান্তি হবে না
নিশিতা গিয়ে নোভা র মার চুলের মুঠি ধরে মারা শুরু করলো
-তুই আমার বোনের সর্বনাশ করেছিস না।তোকে তো আজ আমি মেরেই ফেলবো
আশফি গিয়ে নিশিতাকে আটকালো
-থামুন আপু।নোভা তোমার জন্য কানাডা থেকেই এরেস্ট ওয়ারেন্ট আছে।মাদার ফিয়েরা কে মারার অভিযোগ এ
পুলিশ এসে নোভা কে নিয়ে গেল
-আর মি,রাশেদ নোভা র নামে করা সব সম্পত্তি আমি নিজে র নামে ট্রান্সফার করিয়েছি।এখন আপনি দেউলিয়া
নোভা র বাবাকে ঘার ধাক্কা দিয়ে বের করে দিল আবেগের বাবা ।তাঁর পর সবার সামনে লাবনি কে তালাক দিয়ে বের করে দিল।লাবনি বের হওয়ার আগে আবেগ তার সামনে গিয়ে দাঁড়াল
-কেনো এমন করলে।একদিন এর জন্য হলেও মা বলে ডেকেছিলাম।এভাবে আমার সংসার টা শেষ করে দিলে।আরে তোমার শত্রু তা তো আমার সাথে আমার নিরপরাধ রিদিতা কে কেন এমন সাজা দিলে
লাবনি কিছু না বলে বেরিয়ে গেল
(নোভা ওর মা বাবা র শাস্তি গল্প এর শেষে না হয় দেখিয়ে দেব)
আশফি গিয়ে আবেগের কাঁধে হাত রাখলো
-শুধু রিদিতা ভাবি নয় তোর অনাগত বাচ্চা কেও সাজা দিয়ে ছে ওরা
-আমার বাচ্চা ।কি বলছি স তুই
আবেগ আবেগের বাবা সবাই যেন অবাক হয়ে গেছে আশফির কথা শুনে
-আশফি কি বলছো তুমি ।আবেগের সন্তান মানে
-হ্যাঁ আংকেল রিদিতা ভাবি প্রেগন্যান্ট ।সেদিন এর ঘটনা র কদিন আগে ভাবি এটা জানতে পারে।লাবনি আন্টি সব জানতো উনিই রিদিতা ভাবি কে আপনাদের জানাতে নিষেধ করে আর বলে আবেগ ফিরলে সারপ্রাইজ দিতে ।আর উনিই ভাবি কে তোর দেশে ফেরার কথা জানায়
আশফি র কথা শুনে আবেগের বাবা মাথায় হাত দিয়ে বসে পরলো
-হায় আল্লাহ্ কি পাপ করলাম আমি।সেদিন লাবনি র কথা শুনে ঐ গর্ভবতী মেয়ে টাকে তাড়িয়ে দিতে বললাম ।মেয়ে টা কোথায় আছে কেমন আছে কে জানে
আবেগ ও ধপ করে বসে পরলো।আবেগ এর কাছে সব পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে
-তার মানে সেদিন পার্টি তে অজ্ঞান হওয়া ,তারপর অফিসে,ওর ধীরে হাঁটা চলা,ওর পরিবর্তন, আর সেদিন বিরিয়ানি খাওয়া র সময় ওর বলা-দুজনের খাবার কৈ একা খাচ্ছি আমরা তো দুজনেই খাচ্ছি।এসব আমার বাচ্চা র জন্য ।আমার আর রিদিতা র সন্তান আমাদের ভালোবাসা আসতে চলেছে।এ কি করলাম আমি।রিদিতা আআআ
চলবে—–

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here