#প্রেমে_পড়া_বারণ পর্ব ৯
লেখা: জেসিয়া জান্নাত রিম
তিন্নির বাসায় ফিরতে রাত আড়াইটার মতো বাজলো। শায়লা তখনও জেগে। তিন্নি কে দেখে তিনি বললেন,
— কি রে ফোন দিলি না তো। ইফতেখার এর কি অবস্থা এখন?
— এখন কথা বলবো না আম্মা। সকালে আবার বেরোতে হবে। তুমি ঘুমিয়ে পড়। আমি খুবই ক্লান্ত।
আর একটা শব্দও বলতে পারলো না তিন্নি। সোজা নিজের রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিল ও। আজ ওর সত্যিই বড় ক্লান্ত লাগছে। আজ দায়িত্বের বোঝাটা যে আরো ভারি হয়ে উঠেছে। বাথরুমে ঢুকে ট্যাপ ছেড়ে দিলো তিন্নি। এখন একটু কাঁদা যে খুব দরকার ওর। বার বার বাবার মৃত্যুর দিনের কথা ওর মনে আসছে শুধু। সেদিন ওর বাবার জ্ঞান ফিরেছিল কিছুক্ষণের জন্য। সেসময় টা তিন্নি তার কাছেই ছিল। যাওয়ার সময় শেষ কিছু কথা মেয়েকে তিনি বলে গিয়েছিলেন। বলেছিলেন,”আমার আয়ু বোধহয় ফুরিয়ে এসেছে মা। আজ পর্যন্ত তোর একটা ইচ্ছাও পূরণ করতে পারিনি। সবসময় তুই আমাকে তোর যোগ্যতা অনুযায়ী সাহায্য করে গেছিস। আমার মেয়ে নয় বন্ধু হিসেবে পাশে পেয়েছি। যা পুরো দুনিয়ায় কাউকে বলা যাবেনা তা তোকে বলতে পেরেছি। তুই আমার কাছে সবথেকে শান্তির জায়গা। পুরো যখনই কোনো বিপদে পড়েছি তুই আমাকে সাহস দিয়েছিস। আমার মনে হতো আমরা দুজনে মিলে অসাধ্য সাধন করতে পারবো। আম্মা প্রায়ই বলে তুই আমার মতো হয়েছিস। এই জন্য আমার তোকে নিয়ে মাঝে মাঝে খুব ভয় হতো। কিন্তু তুই আমার মতো একদমই না। আমার থেকেও অনেক বেশি স্ট্রং। আমি তোকে ছাড়া চলতে না পারলেও তুই আমাকে ছাড়া ঠিকই চলতে পারবি। সাথে বাকিদেরও সামলাতে পারবি। আমাকে মাফ করে দিস মা। আমি তোর জন্য কিছু করতে পারলাম না। উল্টো তোর ওপর সমস্ত দায়িত্ব দিয়ে তোকে একা ফেলে চলে যাচ্ছি। আমি জানি তুই নিজের রাস্তা নিজে বানানোর যোগ্যতা রাখিস। কিন্তু ওরা আমার ওপর সবকিছুর জন্য নির্ভরশীল। আজ থেকে আমার জায়গাটা তোকে নিতে হবে। তুই তো সবই জানিস নতুন করে কিছু বলার নেই তোকে। সব এখন তোর ওপর। জানি সামনে অনেক কঠিন সময়। এটাও জানি তুই ছাড়া এই সময়টা পার করার ক্ষমতা কারোর নেই।”
কথা গুলো শুনে ওখানে আর থাকতে পারেনি রওনক কে সেখানে রেখে কেবিন থেকে বেরিয়ে এসেছিল ও। শায়লা আর তিথি এসেছিল। ওদের আবার বাসায় পাঠিয়ে রওনক আর তিন্নি ছিলো তৌহিদ সাহেবের কাছে। সেদিন ও বার বার করুনাময়ের কাছে নিজের বাবার জীবন ভিক্ষা চেয়ে দোয়া করেছিল। কিন্তু সেটা কবুল করেনি আল্লাহ। রওনক এসে যখন ওকে ডাকলো ততক্ষণে তৌহিদ সাহেবের অবস্থার অবনতি হয়েছে। ডাক্তার দেখছিলেন তাকে। কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে বললেন তৌহিদ সাহেব আর নেই। তার পরের সময়টা কেমন ছিলো তিন্নির জন্য তা শুধু তিন্নি আর আল্লাহই জানেন। বাবার লাশ নিয়ে ও একা গ্রামের বাড়িতে এসেছিল। রওনক আসতে চেয়েছিল ওর সাথে। কিন্তু তিন্নি ওকে তিথিদের আনতে পাঠিয়েছে। শেষ সময়টা ও একা ওর বাবার সাথে কাটাতে চেয়েছিল। নিজের না বলা কত কথা সেদিন বাবাকে বলেছিলো। সেসব কথা কি শুনতে পেরেছিলেন তৌহিদ সাহেব। এসব কথা ভাবতে ভাবতে গোসল শেষে বেরিয়ে এলো ও। ভেজা চুল থেকে টপটপ করে পানি পরছে। এখন চুল মুছতে ইচ্ছা করছে না তিন্নির। খাটে হেলান দিয়ে ফ্লোরে বসে পড়লো ও। একটু আগে ইফতেখারের কথা গুলোও মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে ওর। আজও কতগুলো দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে বাড়ি ফিরেছে ও। একটু আগে হসপিটালে যখন ইফতেখারের জ্ঞান ফিরলো তখন তিন্নি ইফতেখার কে দেখতে যায়নি। সবসময় হাসিখুশি দেখা ইফতি ভাইকে এভাবে হসপিটালের বেডে শুয়ে থাকতে দেখতে ভালো লাগবেনা ওর। কিন্তু ইমতিয়াজ এসে যখন বলল ইফতেখার ওর সাথে দেখা করতে চায় তখন ওকে যেতেই হলো। ইফতেখারের আপাদমস্তক ব্যান্ডেজে ঢাকা। চোখ দিয়ে ইশারা করে কাছে বসতে বলল তিন্নিকে। বেশি জোরে কথা বলা সম্ভব না ওর পক্ষে। ইফতেখারের মা সরে গিয়ে তিন্নিকে বসার জায়গা করে দিল। তিন্নি গিয়ে ওর পাশে বসে বলল,
— কেমন আছো এখন ইফতি ভাই?
ইফতেখার কিছুক্ষণ তিন্নির দিকে তাকিয়ে রইলো। তারপর ধীরে ধীরে বলল,
— আজ যদি তোকে কিছু কথা না বলি আর কোনদিন ও তা বলা হবে না। যে কথা গুলো বলতে আমি কোনোদিনই সাহস করে উঠতে পারিনি আজ সেগুলো বলতে আর কোনো বাধা নেই।
— এখন কিছু বলো না। আগে সুস্থ হও। তারপর তোমার সব কথা আমি শুনবো।
— সে দিনটা আর আসবে না। মিথ্যা আশ্বাস তো তুই কাউকে দিস না। আমাকে দিচ্ছিস কেন?
— ইফতি ভাই…..
গলা ধরে এলো তিন্নির। কোনো মতে কান্না আটকে ফেলল ও। ইফতেখার বলল,
— তোর আমার পরিচয়ের চারবছর হয়ে গেছে। এই চার বছরে তোর আমার সম্পর্ক ছিল বন্ধুত্বের। কিন্তু আমি তোকে কখনো বন্ধু ভাবিনি এটা তুইও জানতিস তাইনা?
— হ্যা।
— আজ মিথ্যা করে হলেও একটা কথা বলবি আমাকে যে তুইও আমাকে ভালোবাসিস?
— আমি তোমাকে ভালোবাসি ইফতি ভাই সত্যিই ভালোবাসি।
— তোর এই ভালোবাসা যে আমার ভালোবাসার মতো না তা আমি জানি। ঠিক আছে অন্তত তুই বললি যে তুইও আমাকে ভালোবাসিস। আসলে অন্য আরেকটা কথা বলবো বলেই তোকে ডেকেছি। বাবা কয়েকদিন ধরে আমাকে বিজনেসে জয়েন করার জন্য পাগল করে দিচ্ছিল। আমিও ভাবলাম অনেক তো নিজের স্বপ্নের পিছু ছুটলাম এবার বাবার ইচ্ছাটাকেও গুরুত্ব দেই। তাহলে রেডিও গুনগুন এর কি হবে? আমি একা তো আর এর সাথে জড়িত না। রেডিও গুনগুন এ অনেক স্টুডেন্ট রয়েছে। মানুষ রেডিও স্টেশন টিকে পছন্দ করে। পরে মনে হলো আমি ছাড়া আর একজনই এই দায়িত্ব নিতে পারে। সেটা তুই। মা বাবার সাথে পরামর্শ করে আমার রেডিও গুনগুন কাগজে কলমে তো তোর করে দিলাম। কিন্তু তোকে কিভাবে বলবো সেটাই ভাবছিলাম। কারণ তোকে তো চিনি তুই কখনো এ দায়িত্ব নিতে চাইবি না। কিন্তু এখন তো তোকে নিতেই হবে। আমি জানিনা কতদূর তুই আমার স্বপ্ন কে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবি। কিন্তু এটুকু জানি তোর মতো যত্ন করে অন্য কেউ এটাকে এগিয়ে নিতে পারবে না।
— ইফতি ভাই তুমি কেন বলছ এগুলো। তুমি ভালো হয়ে যাবে……
— আমি ভালো হলে তুই আমাকে বিয়ে করবি?
হুট করে কিছু বলতে পারলো না তিন্নি। তারপর মনে হলো এতে যদি ইফতেখারের ভালো লাগে এতে যদি ও বেঁচে ওঠে তাহলে সমস্যা কোথায়। তাই ও বলল,
— তুমি যদি সত্যিই সুস্থ হও আমি তোমাকে ঠিকই একদিন বিয়ে করবো।
— কথাটা শোনার পর এখন মরেও শান্তি পাবো রে। তোর সাথে সংসার করা তো আমার হলো না। দোয়া করি তোর জীবনে এমন কেউ আসুক যে তোকে আমার থেকেও বেশী ভালোবাসবে। এতটাই ভালোবাসবে যে তাকে আর আমার মতো উপেক্ষা করতে পারবি না তুই। তোকে তার ভালোবাসার কাছে হার মানতেই হবে।
তিন্নি আর কান্না আটকে রাখতে পারেনি। ছুটে বেরিয়ে এসেছিল। চোখের সামনে কারো মৃত্যু দেখা ওর পক্ষে অসম্ভব। আর কাছের কারো তো একেবারেই অসম্ভব। প্রথমে বাবা তারপর ইফতেখার সবাই ওর ওপর দায়িত্ব চাপিয়ে ওকে একা ফেলে চলে যায়। কেউ কি ওর কথা ভাবে। এই দায়িত্ব পালন করতে ওর কতটা কষ্ট হয়। এই দায়িত্ব পালন করতে করতে ওপরের খোলশটা ওর এতটাই শক্ত হয়ে গেছে যে ওর ভেতরটা কেউ দেখতেই পারে না। ও বেরিয়ে আসার আধঘন্টা পরেই ইফতেখার মারা যায়। ইফতেখারের পরিবারের সবাই ভেঙে পড়েছে। এবারো ওকেই সব ফর্মালিটিজ দেখতে হলো। ইফতেখারের লাশ সহ সবাইকে বাসায় পৌছে দিয়ে ও চলে এসেছে। কাল সকালে জানাজা আর মাটি। ইফতেখারের মায়ের অবস্থা বিশেষ ভালো না। ওর আত্মীয় কাছাকাছি যারা ছিল তারা অলরেডি চলে এসেছে। তারাই বাকি আত্মীয়দের ইনফর্মের কাজটা করছে। তিন্নি এখনো রেডিও গুনগুন এর কাউকেই ইনফর্ম করেনি। সবাই কে জানানো উচিত কিন্তু এখন তিন্নির কিছু করতে ইচ্ছা করছে না। ফজরের আজান কানে আসতেই ঘোর কাটল তিন্নির। কখনোই ফজরের নামাজ বাদ যায়না ওর। পুরো দিনের এনার্জি আর মনের শান্তি দুটোই পাওয়া যায়। আর আজ এটার খুব প্রয়োজন। নামাজ শেষে রুমের বাইরে বেরিয়ে এলো ও। শায়লা আর জরি নামাজ পড়তে উঠেছে। তিন্নি কে দেখে শায়লা এগিয়ে এসে বলল,
— কিরে মা এতো সকাল সকাল আবার হসপিটালে যাচ্ছিস? আরো একটু ঘুমিয়ে নিতি।
— না আম্মা সময় নেই অনেক কাজ বাকি।
— ইফতেখার কেমন আছে বললি না তো।
— ইফতি ভাই আর নেই মা আজ একবার ঐ বাড়িতে যেও।
এটুকু বলেই তিন্নি বেরিয়ে এলো। ওর এখন ভেঙে পড়লে চলবে না। এখনো কত পথ চলা বাকি। এসব ভাবতে ভাবতেই রাস্তায় চলে এলো ও। এতো ভোরে বাস কি পাওয়া যাবে? না কোনো গাড়ি পাবে ও। এখান থেকে স্টুডিও কি বেশি দূরে? হেঁটে যাওয়া কি সম্ভব? হাঁটতে হাঁটতেই রেডিও গুনগুন এর সকালের শো অর্গানাইজার মাসুদ কে ফোন দিল ও। এই সময়ে স্টুডিওতেই থাকার কথা ওনার। কিছুক্ষণ রিং হওয়ার পর ঘুম ঘুম কন্ঠে ওপাশ থেকে হ্যালো বলল মাসুদ। তিন্নি বলল,
— মাসুদ ভাই ঘুম কাটাও জরুরি কথা আছে।
— তুই বল কাজ করতে করতে একটু চোখ লেগে এসেছিল।
— আজ সকালের শো তে জরুরী এনাউন্সমেন্ট আছে। আমি করবো সেটা। আর সবাই কে অফিসে ডাকো। কথাটা সবার জানা প্রয়োজন।
— কি কথা?
— আমি এসে বলছি। বান্টি এসেছে?
— না এখনো আসেনি।
— তোমার সাথে আর কেউ আছে?
— হ্যা। সামি আর ফাহিম।
— তোমরা তিনজন মিলে সবাইকে ফোন দিয়ে ইমিডিয়েটলি স্টুডিও তে আসতে বলো। আমি আসছি।
— ঠিক আছে।
ফোন রেখে আসে পাশে তাকালো তিন্নি। একটা গাড়ি পাওয়ার উদ্দেশ্যে। হেঁটে স্টুডিওতে পৌঁছাতে খুব দেরি হয়ে যাবে। ছয়টায় শো। এখন বাজে পাঁচটা চার। এখন কি উবার পাওয়া যাবে? ওদের কি ২৪×৭ সার্ভিস? ফোন করে দেখা যাক। সৌভাগ্য বসত গাড়ি পেয়ে গেল তিন্নি। এই সময়টা জ্যাম থাকে না। তাই স্টুডিও পৌঁছাতে ওর চল্লিশ মিনিটের বেশি লাগলো না। মাসুদ ওকে দেখে এগিয়ে এলো। তিন্নি বলল,
— সব রেডি?
— হুম। তোকে দেখে মনে হচ্ছে সারা রাত ঘুমাসনি।
— হ্যা ঘুমাইনি।
— মনে হচ্ছে সিরিয়াস কিছু। কফি খাবি?
— হুম দাও তো এক কাপ। ইফতি ভাই যেটা খায় সেটা দিও।
অবাক হলো মাসুদ। ইফতেখার খায় কড়া ব্লাক কফি। তিন্নির যেটা একটুও পছন্দ না। এই কফির ওপরই মনে হয় বেশিরভাগ ঝগড়া বেঁধেছে তিন্নি আর ইফতেখারের। মাসুদ কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তিন্নি আবারো বলল,
— কি হলো মাসুদ ভাই যাও। অন এয়ারে যেতে তো বেশি সময় বাকি নেই।
বেশি কথা বাড়ালো না মাসুদ। দ্রুত গিয়ে তিন্নির কথা মতো কফি এনে দিলো ও। আজ আর এই বিশ্রি কফিটা খারাপ লাগছে না তিন্নির। সবাই আসতে শুরু করেছে। সময় মতো শো শুরু করলো তিন্নি। বড় একটা নিঃশ্বাস ফেলে বলতে শুরু করল ও, ” আসসালামুয়ালাইকুম। শুভ সকাল। আমি রেডিও গুনগুন এর পক্ষ থেকে একটা বিশেষ এনাউন্সমেন্ট করতে এসেছি। সকালের শুরুটা খারাপ খবর দিয়ে শুরু হোক এটা আমি চাইনা। কিন্তু প্রত্যেকটা খবরের একটা সময় থাকে। সঠিক সময়ে সঠিক খবরটা সবার মাঝে পৌঁছে দেওয়া জরুরি। আজ রেডিও গুনগুন এর ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ একটা দিন। কারণ এই দিনে রেডিও গুনগুন এতিম হয়ে গেছে। হ্যা আমাদের রেডিও গুনগুন এর ফাউন্ডার এবং অন্যতম জনপ্রিয় একজন আরজে আমাদের সবার প্রিয় ইফতেখার ভাই আমাদের মাঝে আর নেই। রেডিও গুনগুন তার সন্তানের মতো। আমি নিজেকে ভীষণ ভাগ্যবান মনে করি যে তার এই জার্নি টায় আমি তার সাথে থাকতে পেরেছি। আমি জানি কত রাত দিন কত পরিশ্রম করে ইফতি ভাই এই রেডিও প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আমি এটাকে শেষ হতে দেবনাথ। তবে আমার কিছু সময় চাই আশা করি সবসময়ের মতো আপনাদের আমরা পাশে পাবো। আমাদের সবকিছু সামলাতে একটু সময়ের প্রয়োজন। বেশি সময় আমরা নিবো না। ইফতি ভাই মৃত্যুর সময় আমাকে বলে গেছেন তার রেডিও গুনগুন যেনো বন্ধ না হয়। আমাদের শো গুলো সবসময় আপনাদের মন ভালো করার জন্য। আর কারো মন ভালো করতে হলে আগে নিজের মনটা ভালো রাখা দরকার। আমরা কবে ফিরবো সেটা এই মুহূর্তে বলা আসলেই সম্ভব নয়। তবে আমাদের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজে জানিয়ে দেওয়া হবে। আপাতত সবাই ইফতেখার ভাইয়ের জন্য দোয়া করবেন। খোদা হাফেজ।”
কথাটা শেষ করে বেরিয়ে এলো তিন্নি। সবাই থম মেরে বসে আছে। এমন খবরের আশা কেউই করেনি।
ইফতেখারকে কবর দেওয়া হয়েছে একটু আগে। তিন্নি ইফতেখারের মায়ের সাথে বসে আছে। তিনি ভীষণ ভেঙে পড়েছেন। কাঁদতে কাঁদতে বেহুঁশ হয়েছেন অনেকবার। আপাতত তিন্নি ওনাকে সামলে নিয়েছে। একটু আগে এ বাড়ি মানুষের কোলাহল আর কান্নায় পরিপূর্ণ ছিল। কিন্তু কবরের সাথে সাথে সব কেমন শুনসান নিরবতায় পরিবর্তন হয়েছে। মানুষের জীবন মৃত্যুর কোনো নির্দিষ্ট সময় থাকে না। আল্লাহ যখন ইচ্ছা মানুষ কে দুনিয়ায় পাঠান আবার তাঁর ইচ্ছাতেই দুনিয়া থেকে নিয়েও যান। একটা মানুষ পৃথিবীতে আসলে সবাই যত খুশি হয় তার থেকেও বেশী কষ্ট সবাইকে দিয়ে সেই মানুষটি পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়।
চলবে………