The_Boss,Part:19,20,21

0
632

#The_Boss,Part:19,20,21
Aarizona ella
19

মায়া হা করে আছে কি করবে এখনো ভেবে কুল পাচ্ছে না সে কারন ইলমাজ এমন ভাবে তাকিয়ে আছে তার দিকে যেনো চোখ দিয়েই কতল করবে।।মায়া চোখ উল্টো করে উঠে দাঁড়াবার চেষ্টা করলে ইলমাজ আরও শক্ত করে মায়ার হাত দুটো চেপে ধরেছে মায়া এমন অবস্থার সম্মুখীন হবে জানলে কখনোই ইলমাজকে দেখতে এখানে আসতো না।।

স,স্যার কি করছেন?ছাড়ুন আমাকে,আপনার কাছ থেকে আমি এটা কখনোই আশা করি নি।।😰ঢোক গিলতে গিলতে বললো মায়া।।

সবার সব আশা সত্যি হয় না মিস মায়া আজহারি,বাকা হেসে বললো ইলমাজ।।

স্যার ঠিক হচ্ছে না বললাম ছাড়ুন আমাকে।।(মায়া)

না ছাড়লে কি করবে তুমি?নাকি আবার ও গরম চা মেরে দেবে?(ইলমাজ)

আসলেই ওদিন চা মেরে ভুল করি নি,আপনি এতটা লুইচ্চা জানলে চা সবগুলো আপনার মুখে মারতাম।।এবার রেগে গিয়ে হাতাপায় শুরু করলো মায়া।।

আচ্ছা?(ইলমাজ)

স্যার ছাড়ুন আমাকে,,নাহলে আমি আপনার নামে কেস করবো,, চেচিয়ে উঠলো মায়া।।

অজগর সাপের মত এভাবে মোচরা মোচরি করছো কেন?নিজের শরীরের সাইজ দেখেছো?পিচকি মেয়ে একটা, মাত্র ৫০ কেজির মেয়ে হয়ে একজন ৮০ কেজির লোকের সাথে পেরে উঠতে পারবে বলে কি তোমার আসলেই মনে হচ্ছে?বাকা হেসে বললো ইলমাজ।

আ,,আপনি ৮০ কেজি😱!!দেখে তো মনে হয় ৬৫-৭০ হবেন।।(মায়া)

হাইট দেখেছো আমার কখনো?? ৬’১ তোমার মত বাচ্চা হাইট নাকি??হো হো করে হেসে উঠলো ইলামাজ।।

মায়া ইলমাজকে শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে ধাক্কা দিয়ে উঠে যেতে চাইলে ইলমাজ আবারও আগের তুলনায় আরও শক্ত করে চেপে ধরেছে মায়াকে।।

আগেও বলেছি আমি আমার সাথে পেরে ওঠার চেষ্টা একদম করবে না,যদিও করো নিজেরই এনার্জি ওয়েস্ট হবে।।(ইলমাজ)

স্যার,প্লিজ ছাড়ুন, আপনি আমার সাথে এমন করতে পারেন না,কি চাচ্ছেন আপনি?কান্না জড়িত কন্ঠে বললো মায়া।।

কেন?খুব খারাপ লাগছে বুঝি?আমার ভাইয়ের সাথে ঘুরতে ফিরতে তো বেশ ভালোই লেগেছে তোমার, এখন আমার সাথে কিসের ফরমালিটিস দেখাচ্ছো?এবার ইলমাজের কথায় খুব অদ্ভুত রকমের ঘৃণা প্রকাশ পাচ্ছিলো।।

আপনার ভাই?মানে?খুব অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো মায়া।।

ইলমাজ মায়াকে ধাক্কা দিয়ে উঠে দাড়াঁলো,,দিহান আমার কাজিন।।চিনেছো?(ইলমাজ)

দিহান আপনার ভাই?আতংকিত হয়ে জিজ্ঞেস করলো মায়া।।

হ্যাঁ, দিহান আমার ভাই,ওদিন তো বেশ ভালোই চিপ্কে ছিলে ওর সাথে,আর আজকে আমার সাথে চিপকে থাকতে এতো ইন্সিকিউর ফিলিংস কিভাবে আসলো তোমার মাঝে?রাগান্বিত আর রক্তচক্ষু নিয়ে তাকালো মায়ার দিকে।।

কিন্তু স্যার ওদিন তো আমরা,,,,মায়াকে আর কিছু বলতে না দিয়ে ইলমাজ আবারও বলা শুরু করলো,,

আসলে তোমার মত মেয়েরা অনেক কিছুই করে আবার তার ভিন্ন রুপও ধারন করতে পারে।।এতো তুলসি পাতার ধোয়া পানি হওয়ার কি দরকার।।আমার কাছে কম কি আছে?আমার ভাইয়ের পিছু ছাড়ার জন্য কি লাগবে বলো?(ইলমাজ)

মায়ার চোখ থেকে গরগড়িয়ে পানি পড়ছে,,মায়া অবিশ্বাস্য নজরে ইলমাজের দিকে তাকিয়ে আছে।।

বলছো না কেন?যা লাগবে আমি দিবো,আমার সামনে এটলিস্ট এতটা ফরমালিটিস দেখিয়ো না।।(ইলমাজ)

মায়া নিজেকে কন্ট্রোল করতে না স্বজোরে ইলমাজের গালে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিয়ে বলতে লাগলো,,

ক্যারেকটারলেসনেস আপনার রক্তে বইছে, আমার না,এভাবে অহেতুক অপমান না করলেও পারতেন,,আমি সাফাই গাইতাম যদি ভুল আমার থাকতো কিন্তু আপনার কাছ থেকে এমন জঘন্যতম অপবাদ শোনার পর আপনাকে সাফাই দেয়ার কোন প্রয়োজন মনে করছি না আমি।।ভালো থাকবেন জনাব ইলমাজ রেহমান।।না আমি কাউকে ফাসাচ্ছি না কাউকে ফাসানোর ইচ্ছা আছে আমার।।আর্থিক প্রয়োজনে আপনার কোম্পানি তে জয়েন করেছি আর এটাই আমার দূর্বলতা ছিলো, তার মানে এটা না যে আমাকে আপনি চরিত্রহীনা নামে অখ্যায়িত করবেন।এবার দুর্বলতা যা ই হোক না কেন প্রয়োজনে মানুষের বাড়িতে কাজ করবো, তাও যদি না পাই ভিক্ষা করবো আর যদি কেউ ভিক্ষা ও না দেই দিন মজুরির কাজ করে দুবেলা ডাল ভাত খাবো।। আপনাকে,আপনার অর্থসম্পদ ও আপনার কোম্পানি কে আমার মোবারক।

মায়া চোখের পানি মুছতে মুছতে ইলমাজের রুম ত্যাগ করলো।। ইলমাজ এতক্ষন মায়ার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ছিলো।। মায়া যাওয়ার পর ইলমাজ নিজের কক্ষের প্রতিটি কাচের জিনিস,টেবিলের কাচ,টেবিল ল্যাম্প এক এক করে হাতে পায়ে ভাঙ্গতে লাগলো।।ভাঙ্গার পর ইলমাজ নিজেই মেঝেতে বসে রক্তচক্ষুতে চোখের জল ফেলতে লাগলো।।।

মায়া পুরো রাস্তায় কেঁদেছে।।এখনো একা একা রাস্তায় হাঠছে আর ইলমাজের বলা প্রতিটি কথা চিন্তা করে ফুপিয়ে কেঁদে উঠছে।।

চলবে।।

#The_Boss

Part:20

Aarizona ella

ইলমাজ অফিসে নিজের কেবিনে বেশ কিছুক্ষন মাথায় হাত দিয়ে এক ধ্যনে বসে আছে।।
আজ একমাস মায়া অফিস আসে না।।মায়ার সাথে সিলেটের কাটানো সময় গুলোর কথা ভাবতে শুরু করলো ইলমাজ।।কি কি পাগলামো করতো সে আর সেই টার্কিশ রঙ যা মায়াকে পরনে দেখে সে অপছন্দের রঙের মায়ায় জড়িয়ে গেছিলো,ভাংতি পয়সা গুলো, আর মশলা কষানো চা কে খুব মিস করে ইলমাজ কিন্তু তা কাউকে বুঝতে দেয় না।।।

মায়া এখনো রেজিগনেশন লেটার নিয়ে যায় নি,,তা জানালার পাশে বসে বসে চিন্তা করছে মায়া।।লেটার ছাড়া অন্য কোন কোম্পানি তেও জব পাবে না সে।।আর সেখানে যাওয়া টা ও উচিত মনে করছে না মায়া।।যতবারই অফিস যাওয়ার মন বানায় ততবারই ইলমাজের দেয়া প্রতিটি মিথ্যে অপবাদ মায়ার আত্মাসম্মান কে কুড়িয়ে খায়।।

পরেরদিন সকালে মায়া নিজেকে সামলিয়ে মনকে শক্ত করে রেডি হয়ে নিলো অফিস যাওয়ার জন্য, কারন একমাত্র মায়ার আয় দিয়েই ঘর চলে তাদের,,ঘর চালানোর জন্য রেজিগনেশন লেটার অতি অবশ্যক,কারন তা ছাড়া অন্য কোথাও জব করা সম্ভব না।।

তাই মায়া অফিসের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলো।।। অফিসের বাহিরে দাঁড়িয়ে একটি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ভিতরে প্রবেশ করলো।। সেকেন্ড ফ্লোরে দিহান মায়াকে দেখে থমকে দাঁড়ালো আর বলতে শুরু করলো,,

হেই মিস আপনি এখানে?খানিকটা অবাক হলো কিন্তু খুব এক্সাইটেড হয়ে বললো।।

মায়া তার কথার কোন জবাব না দিয়ে সিড়ি বেয়ে তিন তলার উদ্দেশ্যে উপরে উঠতে লাগলো।।

হেই হেই মিস,আপনাকে বলছি,,আপনি আমার কথার জবাব দিচ্ছেন না কেন?দিহান ও সিড়ি বেয়ে উঠতে উঠতে বললো।।

মায়া তার কথার কোন তোয়াক্কা না করে সোজা চার তলায় এসে থামলো।। দিহান দৌড়ে মায়ার সামনে এসে দাঁড়িয়ে মায়াকে থামালো।।

কি হলো মিস আপনি আমার কথা শুনেও শুনছেন না যে?ফ্যাকাশে চেহারা বানিয়ে বললো দিহান।।।

ওহ,দিহান আপনি?সরি আসলে আমি খেয়াল করি নি একটু তাড়াহুরোয় ছিলাম তো তাই।।চাপা হেসে বললো মায়া।।

আর ইউ সিউর?আপনি আমাকে সত্যিই দেখেন নি?(দিহান)

আম,জ,হ্যাঁ সত্যিই আমি আপনাকে দেখি নি।।থতমত খেয়ে আমতা আমতা করে উত্তর দিলো মায়া।।

ওহ আচ্ছা,তো আপনি এখানে?জব এর জন্য এসেছেন নাকি?একগাল হেসে জিজ্ঞেস করলো দিহান।।

না আসলে একটা কাজে এসেছিলাম,আমার কাজিন এখানে জব করে ওর সাথে একটা জরুরি আলাপের জন্য এসেছিলাম।।চাপা হেসে বললো মায়া।।

আচ্ছা,,আম গ্ল্যাড আপনি এখন ঠিক আছেন।।😊(দিহান)

ধন্যবাদ, এবার আসি,দেরি হয়ে যাচ্ছে।।মায়া অফিসের ভিতর চলে গেলো।।

ইলমাজ লিফটের সামনে দাঁড়িয়ে সব দেখছিলো,দুহাত মুষ্টিবদ্ধ করে রাগান্বিত চোখে তাকিয়ে ছিলো এতক্ষন।।
দিহান লিফটের দিকে যাওয়ার সময় ইলমাজকে দেখে থামলো
আর বলতে লাগলো।।

ভাই কোথায় ছিলেন?আপনাকে খোজার জন্য আপনার ক্যাবিনে গিয়েছিলাম কিন্তু পাই নি বলে চলে যাচ্ছিলাম।।(দিহান)

হুম,জরুরী কাজে বাহিরে গিয়েছিলাম।।তো এমন কি প্রয়োজন ছিলো যে একদম এখানে চলে আসতে হয়েছে তোমার আমাকে খোজার জন্যে? (ইলমাজ)

ভাই এভাবে বলছেন কেন?(দিহান)

কিভাবে বললাম? আরেকটু কঠিন কন্ঠে বলা উচিত ছিলো মনে হয়?(ইলমাজ)

আপনি ঠিক আছেন ভাই?(দিহান)

হুম আমার কি হবে?ভালোই আছি আমি।।তাছাড়া আজকাল তুমি অনেক বিজি থাকো মেয়েদের সাথে।।(ইলমাজ)

মানে?অদ্ভুত নজরে তাকালো দিহান।

মানে ওই যে দেখলাম এখন ওই মেয়ে টা কে?নিশ্চয় প্রেমিকা?জমিয়ে প্রেম চলছে তাহলে।(ইলমাজ)

ওয়েট ওয়েট,,আপনি কার কথা বলছেন?এতক্ষণ যার সাথে কথা বলছিলাম সে?(দিহান)

ইলমাজ নাকি ফুলিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।।

আরেহ ভাই সি ইজ নট মাই প্রেমিকা,আই ইভেন ডোন্ট নো হার নেম।।(দিহান)

মানে?মাস খানেক আগে শপিংমলের সামনে ওকে তোমার কোলে দেখেছিলাম কেন তাহলে?😲(ইলমাজ)

আরেহ ভাই,রিকশার সাথে ধাক্কা লেগেছিলো, উইক্নেসের কারনে প্রায় বেহুশ হয়ে যাচ্ছিলেন কারের ভিতর থেকে উনার অবস্থা বেশ সুবিধের মনে হচ্ছিলো না আমার তাই গাড়ি থেকে নেমে উনার দিকে এগিয়ে গিয়ে দেখলাম যে আসলেই উনার অবস্থা শোচনীয়,ঢলে পড়ে যাচ্ছিলেন আর তাই আমি উনাকে কোলে করে আমার গাড়িতে বসাচ্ছিলাম,উনি শুধু হাল্কা হাল্কা চোখ মেলে আমাকে খেয়াল করার চেষ্টা করছিলেন।।আর আমি উনাকে হসপিটাল নিয়ে গেছিলাম কিন্তু আপনি কিভাবে জানেন,আপনি কি উনাকে চিনেন??।(দিহান)

ইলমাজ পাথরের মতো দাঁড়িয়ে আছে, তার চোখ ছল ছল করছে,।।।

ভাই?ইলমাজকে হাল্কা ঝাকিয়ে বললো দিহান।।

মানে তুমি সত্যিই তাকে চিনো না?(ইলমাজ)

না ভাই।।।ওইদিন এর পর থেকে আর দেখা হয় নি,আজ দেখলাম।।প্রথমে ভেবেছি আপনার এখানে কাজ করে কিন্তু এর পর জানতে পারলাম,,,

কি জানতে পারলে? দিহানকে থামিয়ে বেশ কৌতুহলের সাথে জিজ্ঞেস করলো ইলমাজ।।

তাই বলছিলাম ভাই,বলতে কই দিলেন?😒(দিহান)

তারপর বলবি?😒(ইলমাজ)

তারপর জানতে পারলাম উনার কাজিন নাকি এখানে কাজ করে উনার সাথে একটা জরুরি আলাপের জন্য এসেছেন।।(দিহান)

তার মানে মায়া এখানে কাজ করে না বলেছে😤মনে মনে বললো ইলমাজ।

ভাই কি ভাবছেন?(দিহান)

কিছু না,তুই বাড়ি যা, ওখানে কথা হবে।।(ইলমাজ)

কিন্তু ভাই,,,,ইলমাজ দিহানের আর কোন কথা না শুনে অফিসের ভিতর চলে গেলো।। দিহান অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে লিফটের ভেতরে ঢুকে পড়লো।।। ইলমাজ নিজের ক্যাবিনের দিকে যাওয়ার সময় মায়ার ডেস্কের দিকে উকি মেরে দেখলো মায়া সেখানে নেই।।এনির ক্যাবিনে উকি মারতেই দেখলো মায়া এনির সাথে বসে আছে।।ইলমাজ হাল্কা গলা ঝাড়তেই মায়া আর এনি দুজনেই দরজার দিকে তাকালো,ইলমাজকে দেখতেই এনি ইলমাজের দিকে ছুটে গেল,

স্যার,,এতক্ষণ আপনার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।।এই যে মা,,,,,,(এনি)

এনিকে থামিয়ে দিয়ে বলতে লাগলো মিস মায়া আপনি একমাস অফিস আসেননি,আপনার সাথে কিছু হিসাব নিকাশ আছে,আমার ক্যাবিনে একটু আসুন।।বলা মাত্রই ইলমাজ নিজের ক্যাবিনে চলে গেলো।।

মায়া বসা থেকে উঠে আস্তে আস্তে ইলমাজের ক্যাবিনের দিকে এগুলো দরজা নক করে ভিতরে প্রবেশ করলো মায়া।।।

ইলমাজ চেয়ারে বসতে বসতে বললো,,

নিশ্চয় বেতনের জন্য এসেছেন,কিন্তু বিগত একমাস কাজে না আসার কারনে আপনাকে একপয়সা ও প্রদান করা হবে না৷৷ (ইলমাজ)

আমি বেতনের জন্য আসিনি,,রেজিগনেশন লেটারের জন্য এসেছি।।আমি রিজাইন করছি স্যার,আমাকে রেজিগনেশন লেটার টা প্রদান করলে আপনার নিকট চির কৃতজ্ঞ থাকবো।।মায়া একনাগার কথা গুলো বলে ফেললো।।

ইলমাজ ভ্রু উপরের দিকে উঠিয়ে এক চোখ ছোট করে মায়ার দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো।।

স্পিচ শেষ?? এবার আমি বলবো? (ইলমাজ)

মায়া কোন জবাব দিলো না।।

তুমি গত একমাস যাবৎ অফিস আসো নি,আর এখন হঠাৎ এসে বলছো রিজাইন করছো?গত একমাস কই ছিলে?(ইলমাজ)

অসুস্থ ছিলাম,তাই আসতে পারি নি।।(মায়া)

অসুস্থতার কথা শুনে ইলমাজের মুখ শুকিয়ে গেলো করুন দৃষ্টিতে তাকালো ইলমাজ মায়ার চেহারার দিকে,মায়া ইলমাজের দিকে তাকালে ইলমাজ গলা ঝেড়ে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বলতে লাগলো,,,,

অসুস্থ থাকলে অফিস কতৃপক্ষকে জানাতে পারতে,কিন্তু জানাও নি আর তাই অতি দু:খের সাথে বলতে হচ্ছে আপনাকে রেজিগনেশন লেটার আপাতত দেয়া যাচ্ছে না।।গত একমাসের মিসিং কনসেপ্টগুলো আগামি একমাসের মধ্যে কম্পলিট করে দেন যেতে পারবেন।।বাকা হেসে বললো ইলমাজ।।

মিস্টার ইলমাজ রেহমান আপনি আমার সাথস যা ইচ্ছা তা করতে পারেন না।।চেচিয়ে উঠলো মায়া।।

আপনি এখনো ফায়ার হননি, আমি এখনো আপনার বস,সো আওয়াজ নিচে।।(ইলমাজ)

আমি রিজাইন করছি আমাকে রেজিগনেশন লেটার দেন আর না ই দেন।।😡(মায়া)

এটা ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি, সো এখানে চাকরি ছাড়ার জন্য অনেক ফরমালিটিস লাগে হয়তো আপনি জানেন না,অফিস রুলস মান্য না করলে আপনার জেল ও হতে পারে।আপনার জয়েনিং ফাইলস গুলো চাইলে একবার পড়ে নিতে পারেন।।।ভ্রু উঠিয়ে বললো ইলমাজ।।

আমি আপনার এখানে কাজ করবো না।।😭আপনি আমার সাথে যা করছেন ঠিক করছেন না।।কান্নাজড়িত কন্ঠে চেচিয়ে বললো মায়া।।

আমি এর থেকে অনেক জঘন্য কিছুও করতে পারি মিস মায়া আজহারি।।বাকা হেসে একটা ফাইল মায়ার দিকে ছুড়ে দিয়ে বললো ইলমাজ।।
মায়া টেবিল থেকে ফাইল হাতে নিয়ে রাগে ফুসতে ফুসতে বেরিয়ে যাচ্ছিলো এমন সময় ইলমাজ বললো,,

আমি এখনো আপনাকে যেতে বলি নি।।বসা থেকে উঠে মায়ার দিকে এগিয়ে যেতে যেতে বললো ইলমাজ।।

মায়া এখন দরজার দিকে মুখ করে থ দাঁড়িয়ে আছে।।

মিস মায়া,,মায়াকে পিছন থেকে ডাকলো ইলমাজ।।
মায়া ঢোক গিলতে গিলতে ইলমাজের দিকে ফিরলো।।

ইলমাজ মায়ার দিকে এগুচ্ছে মায়া আবারও পিছুচ্ছে।।মায়াকে এভাবে ঠেলতে ঠেলতে একদম দরজার সাথে লাগিয়ে দাঁড় করালো মায়াকে।।
মায়ার মুখের কাছে ইলমাজ তার মুখ নিয়ে গেলো,ইলমাজের নাক মায়ার নাক ছোয়া ছোয়া।।

মায়ার চোখ আর জিহব্বা যেন এক্ষুনি বেরিয়ে যাবে চোখ উল্টো করে এমন ভাবে হা করে আছে আর ঢোক গিলছে।।

মায়া ইলমাজকে ধাক্কা দিবে এমন সময় ইলমাজ মায়ার হাত দেয়ালে চেপে ধরে বাম পাশের গালে একটা চুমু বসিয়ে দিলো।।

মায়া এক্ষুনি হার্ট এ্যাটাক করবে যেন।।😱😱😱😱

চলবে।।

#The_Boss

Afreen Ella

Part:21

মায়া এখনো থ দাঁড়িয়ে আছে আর মুখ হা করে রেখেছে,ইলমাজ ক্যাবিনেটের উপরে উঠে বসলো।।মায়ার অবস্থা দেখে মিটি মিটি হাসছে ইলমাজ।।

মায়া গালে একহাত আর মুখ হা করেই ইলমাজের ক্যাবিন থেকে দৌড়ে বের হয়ে এনির ক্যাবিনের সামনে গিয়ে হাঁপাচ্ছে।।।

ইলমাজ বাঁকা হেসে আবার চেয়ারে গিয়ে বসলো আর মায়ার ফাইল চেক করা শুরু করলো।।।

অফিস থেকে সন্ধ্যায় বাসায় ফিরলো মায়া,ফ্রেশ হয়ে ড্রইং রুমের সোফায় বসে গা ঠেকিয়ে সকালের কথা ভাবতেই ঢোক গিললো।।একনাগার দরজায় টোকা দেয়ার আওয়াজ শুনে ঘরের দরজা খুললো মায়া,,দরজা খুলতেই যেন এক্ষুনি রাগে চোখ ঝলসে যাবে মায়ার।।।

তুই আবার এসেছিস??কি সমস্যা রে তোর? সবসময় এমন করে কি লাভ হয় হ্যাঁ?আর যেনো বিরক্ত না করিস বলে দিলাম।।😡😡(মায়া)

আগে আমায় বিয়ে কর তারপর আর বিরক্ত করবো না তোকে।। দুলছে আর থোতিয়ে কথাগুলো বলছে শাফিন।।
মদ খেয়ে ফুল ওভারলোডেড শাফিন।।শাফিন মায়াদের প্রতিবেশি,যখনই মদ খেয়ে ফুল হয়ে যায় তখনই এভাবে মায়াকে বিয়ে করার জন্য বিরক্ত করে।।

শুন আমার মেজাজ এমনি তে খারাপ।।যা বলছি নাহলে ভালো হবে না।।হুমকির স্বরে বলে শাফিনের মুখের উপর দরজা লাগিয়ে আবার সোফায় গিয়ে বসলো মায়া।।।

কিছুক্ষন পর আবার ধরাম ধরাম দরজায় বারি পরার আওয়াজ শুনে ভীষন বিরক্তির সাথে দরজা খুলে চেচাতে শুরু করলো মায়া।।।

কি সমস্যা রে তোর হারামজাদা?এমনি কি আমার দু:খ কম ছিলো যে তা আবার পরিপূর্ণ করতে তুই চলে এসেছিস?শুন ভালো করে বলছি চলে যা আমাকে আর বিরক্ত করবি না,,😤(মায়া)

বিয়ে কর তারপর আর বিরক্ত করবো না।।আবারও লেবিয়ে লেবিয়ে কথা বলছে আর দুলে মায়ার গায়ে পড়ে যাচ্ছে।।মায়া শাফিনকে ধাক্কা দিয়ে আবারও চিল্লাতে শুরু করলো।।

শয়তানের চাচাতো ভাই,,শেষ বার বলছি যদি আবার বিরক্ত করিস তাহলে তোকে আমি বটি দিয়ে কোপাবো কালা কাউয়াঠুঁটি একটা যা।।😠😠(মায়া)

আরেহ বটি দিয়ে কোপায় না রে পাগলি,দা দিয়ে কোপায়।।হো হো করে হাসছে আর বলছে শাফিন।।

বাহ বেশ ভালো আইডিয়া দিয়েছিস তো দেখছি।।দাঁড়া এক্ষুনি তোকে আমি দাঁ দিয়ে কুপিয়ে তোর মাংস দিয়ে হিউম্যান শরমা বানাবো একটু অপেক্ষা কর।।দরজা লাগিয়ে রাগে হন হন করতে করতে মায়া আবারও সোফায় গিয়ে বসলো।।
মায়ার কথা শুনে ভয়ে ঢোক গিললো শাফিন।।

প্রায় ১০ মিনিট পর আবারও দরজায় টোকা দেয়ার শব্দ শুনে এবার মায়া প্রচন্ড রেগে নিজের রুম থেকে বিছানার চাদর এনে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে রাগে ফুসে এক নিঃশ্বাস নিয়ে দরজা খুলেই চাদর টি শাফিনে মাথা থেকে গোটা শরীরে মুড়িয়ে পিঠের উপর কনুই দিয়ে পর পর আঘাত করতে শুরু করলো।।

তোকে বলেছিলাম না আবার যদি বিরক্ত করিস তবে তোর অবস্থা অনেক সাংঘাতিক হবে?বল করবি আর বিয়ে আমাকে??আমাকে বিয়ে করার শখ মিটাচ্ছি তোর আমি দাঁড়া।।অমানুষ কোথাকার,, চাদররের ভিতর থেকে কুকড়িয়ে আওয়াজ করতে চেয়েও পারছে না সে,মায়া তাকে কনুই দিয়ে মারতে মারতে একপ্রকার মাটিয়ে লুটিয়ে দিয়েছে।।।

what the hellllll???????চাদরের ভিতর থেকে এমন কথা শুনতে পেয়ে চমকে উঠলো মায়া,,পিটুনি বন্ধ করে বলতে লাগলো,,

শাফিইন্নার গলা চেঞ্জ কিভাবে হলো? আজিব তো।।।মাটিয়ে লুটিয়ে থাকা মানুষটির দিকে আড় চোখে তাকিয়ে হাল্কা ঢোক গিললো মায়া।।চাদর টি এমন ভাবে পেচিয়েছে যে মানুষের আকৃতি পর্যন্ত বুঝতে মুশকিল হয়ে যাচ্ছে,মায়া চাদর টি খুলতে শুরু করলো, চাদর খুলতেই হ্যাচকা টান দিয়ে মায়াকেও তার উপর শুয়ে দিয়ে চোখ রাঙ্গালো।।

মায়ার চোখ এখন বেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম,,

স্যার আপনি?ইলমাজকে দেখে বিজলি চমকানোর মতো টাস্কি খেয়ে হার্ট এট্যাক করার অবস্থা মায়ার,ইলমাজের উপর থেকে উঠে দাঁড়ালো মায়া।।।

ঠিক আছেন তো?😰

জ্বী!!!!আল্লাহর হুকুম আর আপনার দয়ায় বেঁচে আছি।।(ইলমাজ)

মায়া ইলমাজকে একহাত দিয়ে টেনে তুললো।।

মায়া করুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ইলমাজের দিকে যেনো এক্ষুনি কান্না করে দিবে।।

স্যার আপনি আমাকে বলেননি কেন যে এটা আপনি।।😰(মায়া)

হয়তো আল্লাহ ওই বেচারার আয়ু কমাতে চাননি যাকে ভেবে আপনি একাই আমাকে গনপিটুনি দিচ্ছিলেন।।সুক্ষ্ম দৃষ্টিতে ইলমাজ মায়ার দিকে তাকিয়ে বললো।।

স্যার আম সো সরি,আমি জানতাম না ওটা আপনি ছিলেন।।ফুপাতে ফুপাতে বলছে মায়া।

বাই দ্যা ওয়ে,,,হু ইজ শাফিইন্না?যে ভেবে আপনি এতক্ষন আমার দর্শন করছিলেন?😒(ইলমাজ)

স্যার ও আমার প্রতিবেশী আমাকে প্রায় সময় বিয়ে করার জন্য বিরক্ত করে আর সহ্য করতে না পেরে ওকে পিটানোর পদক্ষেপ নিয়েছি আজকে।। (মায়া)

তো পিটাচ্ছেন ভালো কথা, গোটা শরীরে চাদর মুড়িয়ে পিটানো টা কোন গ্রহের এলিয়েন দের স্টাইল?(ইলমাজ)

স্যার ও মদ খেয়ে ওভারলোডেড ছিলো, গন্ধে ওর পাশেও যাওয়া যাচ্ছিলো না যার কারনে এমনটা করতে হয়েছে।।😣(মায়া)

হ্যাঁ আর আপনার কনুইর কুইন্নানি গুলো বিনা পয়সায় আমাকে হজম করতে হয়েছে।।😒(ইলমাজ)

সরি স্যার😭।।।

মায়ার কান্না দেখে ইলমাজ পকেট থেকে টিস্যু বের করে তার সামনে ধরেছে।।মায়া টিস্যু না নিয়ে নিজের ওড়না দিয়ে নাকের পানি মুছলো।।ইলমাজ নাক ছিটকে আছে মায়ার অবস্থা দেখে।।।

চলবে।।।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here