বিষন্ন_রাত💖,পর্বঃ__১৫_শেষ_পর্ব

0
673

#বিষন্ন_রাত💖,পর্বঃ__১৫_শেষ_পর্ব
#মেহেদী_হাসান_রিয়াদ💖

সাজিদ চলে যাওয়ার পর ভেতর থেকে দরজাটা বন্ধ করে দেয় বৃষ্টি। ফোনটা পকেটে পুরে বৃষ্টির রুমের দিকে হাটা ধরে রিদ।
– আপু দরজা খোল।
ভেতর থেকে কোনো আওয়াজ না পেয়ে দরজায় কয়েকটা জোড়ে জোড়ে হাত দিয়ে আঘাত করলো রিদ। তবুও কোনো সারা শব্দ পেলো না।
সেখান থেকে দৌড়ে বাইরে চলে গেলো রিদ। ওদিকে বৃষ্টি শক্ত করে বেধে নিলো ওড়না টা। একটা চেয়ারের উপর দাড়িয়ে গলায় ওড়নাটা পেচিয়ে নেয় বৃষ্টি।
ওদিকে ফাইপ বেয়ে উপরে উঠে আসছে রিদ। হাতটাও প্রচন্ড ব্যাথা করছে এখনো পুরুপুরি ঠিক হয়নি। তবুও সেদিকে না তাকিয়ে উঠে গেলো সে। রুমের দিকে তাকাতেই দেখে ওড়নাটা গলায় পেচিয়ে ঝুলে আছে বৃষ্টি।
দৌরে গিয়ে তাকে নামানোর চেষ্টা করে রিদ। পা দুটু জড়িয়ে ধরে হালকা করলো বৃষ্টিকে।
বৃষ্টিকে নামিয়ে দৌড়ে দরজাটা খুলে দেয় রিদ। মুহুর্তেই দৌড়ে ভিতরে প্রবেশ করলো তার বাবা মা ও সাজিদ।
দেখে বৃষ্টি অজ্ঞান হয়ে গেছে। মাথায় হাত দিয়ে বসে পরেছে নয়নতারা বেগম। আজ যেনো মেয়ে হারানোর কষ্ট কিছুটা বুকে এসে আঘাত করেছে তার। কিছু বলার শক্তিটুকু পাচ্ছেনা সে। রিদ আর সাজিদ নিয়ে গাড়িতে তুললো বৃষ্টিকে। তার বাবা আর মা অচেতন হয়ে ছুটছে তাদের পিছে।

ওদিকে ব্যাডে শুইয়ে ইমার্জেন্সিতে নিয়ে গেলো রাতকে। রাফি, তম্ময়, রাফিন ও সাজু নিয়ে এসেছে তাকে।
বিশ মিনিট আগে,
রাতকে ফেলে দিয়ে চলে গেছে সবাই। শরিরের বিভিন্ন জায়গায় ছুরির কোপ। কোনো মতে মিটি মিটি করে চোখ খুললো রাত। দু,হাতে ভর করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে সে। ধিরে ধিরে শক্তি কমে আসছে তার।
হটাৎ পকেটে ফোনটা বেজে উঠলো। কাপা কাপা হাতে বের করে দেখে রাফি ফোন দিয়েছে। ফোন রিসিভ করতেই সব জানতে পারে তারা।
,
,
বাইরে এপাশ ওপাশ পায়চারি করছে রুদ্র চৌধুরি। কান্না বেড়িয়ে আসতেও গলায় আটকে আসছে তার। চোখ দুটু জ্বলছে ভিষন। কিছুক্ষনের মাঝেই একটা গাড়ি এসে দাড়ায় নিচে। বৃষ্টিকে নিয়ে ভিতরে আসলো তারা। ডাক্তার ডাক্তার বলে চেচাচ্ছে রিদ। সব থেকে অস্থির হয়ে পরেছে সে। বৃষ্টির এই অবস্থার কারন যে সাজিদ, তাও ভুলে গেছে আজ এক মুহুর্তের জন্য। মনে আসছে একটাই কথা, বোনকে বাচাতে হবে আজ। পৃথিবীতে একটি অন্যতম গভির ভালোবাসার নাম হচ্ছে, ভাই বোনের ভালোবাসা।

বাইরে রুদ্র চৌধুরি ও রাতের বন্ধুদেরকে দেখে থমকে যায় সাজিদ। ফোনটা পকেট থেকে বের করে সাইডে চলে যায় সে।
বাইরে দাড়িয়ে দাড়িয়ে কান্না করছে বৃষ্টির মা। পাশে বসে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে বৃষ্টির বাবা।
এপাস ওপাস পায়চারি করে মায়ের দিকে আড়চোখে তাকালো রিদ। কেনো যানি এটাকে নেকা কান্না মনে হচ্ছে আজ। সে কি মেয়ের জন্য কাদছে নাকি ভাইয়ের ছেলের বৌয়ের জন্য কাদছে তাও সন্দেহ আছে। কারণ তিনি তো মেয়ের থেকে ভাইয়ের ছেলেকেই বড় করে দেখেছে সব সময়। নিজের মেয়েকে ভাইয়ের ছেলের হাতে তুলে দিতে এতোটাই অস্থির হয়ে পরেছিলো যে, নিজের মেয়ের মুখের হাসিটাও তার কাছে তেতা মনে হয়েছিলো।
তবুও আজ এসব কিছু বললোনা রিদ। কারণ এসব এখন বলা মানে তার মাকে ডিকেক্টলি অপমান করা। আর ছেলে হয়ে মাকে অপমান করার কোনো যোক্তিকতা দেখছেনা সে। মা বাবা যাই করুক তবুও সন্তানের থেকে উদ্ধে থাকে সব সময়। কারণ এই বাবা মায়ের উছিলায়ই তো তাদের দুনিয়াতে আশা। সব অভিজোগ পেটের মাঝেই হজম করে পায়চারি করতে থাকে রিদ।

পর দিন বাড়ি নিয়ে আসে বৃষ্টিকে। আর ওদিকে হসপিটালে অক্সিজেন মাস্ক লাগিয়ে সুয়ে আছে রাত। আর মুনাজাতে বার বার ছেলের প্রান ভিক্ষা চাইছে সৃষ্টিকর্তার কাছে তার বাবা রুদ্র চৌধুরি।

বাড়িতে একের পর এক সব কিছু ভেঙে চলছে বৃষ্টি। কিছু না বলে সোফায় বসে বসে সব দেখে চলছে তার বাবা। এক সময় ভাঙার মতো আর কিছু না পেয়ে কাদতে কাদতে ফ্লোড়ে বসে পরে বৃষ্টি। রিদ সান্তনা দিয়ে যাচ্ছে তাকে। তার বাবা উঠে হাটা ধরলো রুমের দিকে। চোখের কোনের জলটা মুছে নিলো হাত দিয়ে। স্ত্রীর কথাকে এতোদিন প্রাধান্ন দিয়ে এসেছে সে। কিন্তু আর নয়। এমন কোনো ডিসিশনে স্থির থাকবেনা সে, যেই ডিসিশনে নিজের সন্তানদের আর তার মাঝে দুরুত্ব বাড়িয়ে তুলবে।
,
,
সাজিদের মা ও বৃষ্টির মা বসে আছে সোফায়।
– এটা কি বলছেন আপা। সেই ছোট থেকেই বৃষ্টিকে আমি আমার ছেলের বৌ বানাবো বলে ঠিক করেছি। আর আপনারাও কথা দিয়েছিলেন আমাদের। আর এখন বলছেন সম্ভব না?
– ভাবি আসলে, আমরা চাই আমাদের মেয়ে সব সময় সুখেই থাকুক। হ্যা, অনেক মেরেছি, অনেক বুঝিয়েছি বৃষ্টিকে। কিন্তু কিছুতেই সে তার ভালোবাসাকে ছারেনি। এত কিছুর পরেও যদি আমরা একই সিদ্ধান্তে অটল থাকি তাহলে যে,সন্তাকের প্রতি আমাদের কোনো ভালোবাসা আদর স্নেহ এসব বলাটাও ভুল হবে। আমরা মা বাবা হয়ে তার উপর এতো ভোজা চাপিয়ে দিতে পারিনা। সংসারটা সেই করবে আমিও যাবোনা তার বাবাও যাবেনা তার সাথে। তাহলে তার সুখে থাকার জন্য বিন্দু মাত্র ইচ্ছাকেও কি আমরা প্রদান্য দেবোনা? আমরা হাজার চেষ্টা করলেও সাজিদের কাছে আমাদের মেয়েকে আটকে রাখতে পারবোনা। কারণ তার মন পরে রয়েছে ওই ছেলেটার কাছেই। যে এখনো হাসপাতাকে থেকে বার বার বৃষ্টির কথা জিজ্ঞেস করছে।
– সাজিদের কাছে রাখতে পারবোনা মানে। আপনি কোনো চিন্তা করবেন না আপা, এক বার বিয়েটা হতে দেন, প্রয়োজনে হাত পা ভেঙে বাড়িতে বসিয়ে বসিয়ে খাওয়াবো। তবুও আমার ছেলের চাওয়া পুরণ করতে হবে আমার।
সিড়ি দিয়ে নামতে নামতে বৃষ্টির বাবা বলে উঠে,
– বাড়ির বৌ কি হাত পা ভেঙে ফেলে রাখার জিনিস? পুত্র বধু নিজের মেয়ের সমতুল্য। নিজের মেয়ে যেভাবে আপনাদেরকে মা বলে ডাকবে, ঠিক তেমনই পুত্র বধুও তার ব্যতিক্রম কিছু ডাকবেনা। আপনি চাইছেন শুধু ছেলের জন্য একটা বৌ। আর ওই ভদ্র লোক এতো কিছু হয়ে যাওয়ার পরও। আমার কাছে বৃষ্টিকে পুত্র বধু হিসেবে চায়নি, চেয়েছে একটা মেয়ে। হাত পা ভাঙার জন্য যে আমার কাছে একটা বস্তু চাইছে তার ঘরে কি আমার মেয়ে সুখি হবে? নাকি যেই ভদ্রলোকের ছেলের সাথে এতো অন্যায় করার পরও সে আমার কাছে একটা মেয়ে চাইছে সেই ঘরে আমার মেয়ে সুখি হবে?
আমি সাজিদের বাবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিবো। বৃষ্টির সুখের জন্য হলেও আমরা আমাদের কথা রাখতে পারলাম না।

বৃষ্টিকে নিয়ে সোজা রাতের কাছে চলে গেলো তার বাবা। রুদ্র চৌধুরি খাইয়ে দিচ্ছিলো রাতকে। তখনই বৃষ্টি ভিতরে ঢুকায় অবাক হয়ে চেয়ে থাকে দুজন।
রুদ্র চৌধুরি বৃষ্টির বাবার কাছে চলে যেতেই বৃষ্টি দৌড়ে গিয়ে হাত রাখে রাতের দু,গালে। উপর থেকে নিচ অব্দি একবার চেয়ে জড়িয়ে ধরে রাতকে। রাতও বৃষ্টিকে বুকে নিয়ে আধসোয়া ভাবে বসে আছে নিস্তব্দ হয়ে।

ওদিকে বৃষ্টির বাবার ডিসিশন চেন্জ করায় বাড়ি ঘর এক করে ফেলছে সাজিদ। বৃষ্টির বাড়িতে এসেও কথা বলেছে সে। কিন্তু, যেই ফুফি তার জন্য নিজের মেয়েকে দিনের পর দিন কষ্ট দিয়েছে, আজ সেই ফুফিও তার কাছে একটা কথাই বললো, সরি সাজিদ।

দুদিন আগেও বাড়ি এসে গন্ডগোল করে গেছে সাজিদ। সোফায় বসে বসে সুধু গেম খেলছিলো রিদ। সাজিদের এমন আচরণে একটুও কান দিলোনা সে। নিজের সালার ছেলে দেখে কিছু বললো না বৃষ্টির বাবাও। নাহলে এমন একটা ছেলেকে নাই করে দেওয়া একজন এনপির পক্ষে কোনো ব্যপারই না। তবুও চুপচাপ সব সহয় করে গেছে সে। বাবা মায়ের সাথে এমন উচু গলায় কথা বলাতেও কিছু বললোনা রিদ। শুধু সাজিদ চলে যাওয়ার সময়, এয়ারফোন টা খুলে রক্তিম চোখে তাকিয়ে ছিলো সাজিদের চলে যাওয়ার দিকে।
সেদিন বৃষ্টির ফোনে একটা মেসেজ এলো,
“তোকে আর তোর ওই রাতকে আমি দেখে নিবো।
বৃষ্টি তখন ওয়াশ রুমে ছিলো। রিদ রুমে আসতেই মেসেজটা দেখতে পেলো সে।

দু,দিন পর রাতের সাথে বৃষ্টির বিয়ে। দির্ঘ কষ্টের পর অবশেষে এক হতে যাচ্ছে দুটি প্রান। দু,পাশে দুই জনের কাছেই যেনো এই দুইটা দিন দুই বছরের সমতুল্য মনে হচ্ছে।
ওদিকে অস্থির হয়ে আছে সাজিদ। বৃষ্টি যেহেতু তার হবেনা,তাহলে আর কারো হতে দিবেনা সে। প্রয়োজনে এসিড মেরে মুখ ঝলসে দিবে বৃষ্টির।

আগামিকাল বৃষ্টির গায়ে হলুদ। সব কিছুর প্লেনিং চলছে আজ। ওদিকে সাজিদ আসছে বৃষ্টির কাছে। আজই বৃষ্টির সব সুন্দর্য ধুলুয় মিশিয়ে দিবে সে। এদিকে এই কয়েকদিন ধরে সাজিদের সব কিছুর খোজ খবর রাখতো রিদ। বলাতো যায়না কখন কি হয়, আর সাজিদের প্রতিও বিশ্বাস নেই তার। তাই এসিডের খবরটাও কানে আসতে সময় লাগলোনা রিদের।

গাড়ি নিয়ে বের হয়নি সাজিদ। সি,এন,জি করেই যাবে সে। যাতে কেও বুঝতে না পারে। গেট থেকে বেড়িয়ে মেইন রোডে হাটছে সাজিদ। এতো রাতে সি,এনজি চোখে পরছেনা তার। এসিডের বোতলটাও পকেটে যত্ন করে রেখেছে সে। রাস্তার অপর পাশে একটা সি,এন,জি দেখে তা থামালো সাজিদ। রাস্তা পার হতেই একটা গাড়ি খুব গতিতে এসে উড়িয়ে দেয় সাজিদকে। প্রয়া দশ বারো হাত দুরে দিয়ে পরলো সাজিদ। রিদ কিছুটা দুরে গিয়ে গাড়িটা থামিয়ে মথাটা বের করে একবার তাকালো সাজিদের দিকে। ধিরে ধিরে লোক জমা হচ্ছে সেখানে। তার পর সোজা বাসায় গিয়ে নিজের রুমে শুয়ে পরলো সে।
অধা ঘন্টা পর, রিদের বাবা রিদের রুমে এসে ডেকে তোলে রিদকে।
– কি হয়েছে বাবা এতো রাতে তুমি এখানে।
– আরে সাজিদ নাকি এক্সিডেন্ট করে মারা গেছে।
– কি বলো, কখন?
– তা জানিনা এই মাত্র খবর পেলাম। আমরা এখন ওখানেই যাচ্ছি।
– চলো চলো।

সাজিদের মুখের দিকে তাকিয়ে কিছুটা মায়া লাগছিলো রিদের। কিন্তু আজ সে এটা না করলে হয়তো আরো বড় কিছু হয়ে যেতো।
,
,
,
বাসর ঘরে বসে আছে বৃষ্টি। এখনো রাত আসছেনা। দরজার আওয়াজ কানে আসতেই নরে চরে বসলো সে। রাত সোজা ওয়াস রুমে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে নিলো। ঠোট ফুলিয়ে ওদিকে তাকিয়ে আছে বৃষ্টি। তার মনে হলো বিয়ে করে ভালোবাসার পরিমানটা কমে গেছে রাতের। নাহলে ঠিকই আগে তার কাছে আসতো।
কিছুক্ষন পর বেড়িয়ে এলো রাত। এবার মুখ ফিরিয়ে নিলো বৃষ্টি।
বৃষ্টি কোনো কথা বলছেনা রাতের সাথে। রাত বুঝতে পারলো বৃষ্টি রাগ করেছে। এখন কিনা বাসর ঘরে এসেও বৌয়ের রাগ ভাঙাতে হবে তার। সবই কপাল।
একটা মুচকি হাসি দিয়ে বৃষ্টিকে কোলে তুলে নিলো সে। হটাৎ এমন হওয়ায় রাতের বুকে মুখ লুকিয়ে ফেললো বৃষ্টি। কিন্তু আজ তার এতো লজ্জা লাগছে কেনো?
ছাদে দোলনাটার মাঝে বসে আছে দুজন। আকাশে বড় একটা চাঁদ। একটু কাত হয়ে রাতের বুকে মাথা রাখলো বৃষ্টি।
হুমায়ুন আহমেদ স্যার বলেছিলো,
“এই শহরের মানুষনে জোৎস্নার সুন্দর্য দেখাতে হলে কোনো এক পূর্নিমার রাতে পুরু শহরে লোডশেডিংয়ের প্রয়োজন।

বেশ কিছুদিন পর,

রাতের বেলায় ঠিক বারোটার সময়, শীতল বাতাসে নির্জন রাস্তায় হেটে চলছে রিদ। গায়ে সাদা শার্ট পরনে একটা কালো প্যান্ট। আর কালো ব্ল্যাজারটা কাধে রেখে ধরে রেখেছে এক হাতে। আজ বাসায় ফিরেনি সে অনেকটা পথ নিস্বঙ্গ হয়ে হেটেছে সে। মনটা আজ বিষন্ন। ঠিক এই তারিখটায় শুভ্রতার সাথে প্রথম দেখা হয়েছিলো তার। আর এই তারিখটায়ই শুভ্রতাকে হারিয়েছে সে চিরজীবনের মতো। ভালোবাসা মানে প্রেম নয়। সারাজীবন বুকের বা-পাশে আগলে রাখার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়ার নামই ভালোবাসা। ঠোট জোড়া কাপছে রিদের। চোখ দুটু লাল হয়ে আছে। ফিন ফিনে ঠান্ডা হওয়ায় হেটে চলছে এক নিস্বঙ্গ পথে।

অফেসে যাওয়ার সময় রাতের গলার টাইটা বেধে দিচ্ছে বৃষ্টি। তারপর মিষ্টি করে বলে উঠলো, সাবধানে যাবে।
রাত বৃষ্টির কপালে একটা চুমু দিলো। তারপর হাটু গড়ে বসে চুমু দিলো বৃষ্টির পেটে। হ্যা, বৃষ্টি মা হয়ে চলেছে। আগমন হচ্ছে ঘর আলোকিত করে তাদের দুজনের ভালোবাসার অংশ।
নিচে এসে বাবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলো রাত। রুদ্র চৌধুরি একটা হাসি দিয়ে তাকিয়ে থাকে ছেলের যাওয়ার দিকে। কে বলবে, এই ছেলেটা এক সময় খুব বিষন্ন ছিলো।
যে ছিলো এক #বিষন্ন_রাত।

,,,,,,,,,,, সমাপ্ত,,,,,,,,,,,

রিদ ও বৃষ্টির মেয়ে সন্ধা,
(মামা ভাগনির কথাপোকথন)

– মামা ভালোবাসা মানে কি?
তৃতীয় শ্রনির ভাগনির মুখে এমন কথা শুনে ভ্রু কুচকে তাকালো রিদ। সন্ধা আবার বলে উঠে,
– বলোনা মামা ভালোবাসা মানে কি?
– ভালোবাসা মানে হলো, এই যে তোকে এতো আদর করি এটাও একটা ভালোবাসা। তোর দাদা তোর বাবা মা তোকে যে স্নেহ করে এটাই হলো ভালোবাসা।
ঠোট ফুলিয়ে সন্ধা বলে উঠে,
– ধুর, এই ভালোবাসা না। তুমি যেই ভালোবাসার জন্য দেবদাস হয়ে ঘুরে বেড়াও ওই ভালোবাসা। আচ্ছা মামা, তুমি বিয়ে করোনা কেনো?
কোনো উত্তর না দিয়ে সোফায় হেলান দিলো রিদ।
সন্ধা আবার বলে উঠে,
– আচ্ছা মামা আমি শুনেছি, তুমি নাকি ছেকা খেয়ে বেকা হয়ে বিয়ে না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছো?
রিদ বড় বড় চোখ করে তাকায় সন্ধার দিকে,
– তুই এতো কিছু জানলি কি করে?
– আরে মামা, বয়স তো কম হয়নি, ৩০ পেরিয়ে গেছো। এখন আমার এই স্মার্ট মামাটার জন্য একজন কিউট মামুনি চাই। আর কয়েক বছর পর তো কেও মেয়ে দিতেও চাইবেনা।
দাদার ডাকে হেলে দুলে ওখান থেকে চলে গেলো সন্ধা। রিদ হা করে আছে। এই পিচ্চি মেয়ে বলে কি?
ঠোটের কোনে একটা হাসি দিলো রিদ। তার পিচ্চি ভাগিনিটা দুষ্ট হয়েছে খুব দুষ্ট।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here