#ফ্ল্যাট_নাম্বার_নয়_ছয়পর্বঃ ২৭
#Lamyea_Chowdhury
শায়েরী কাঁদোকাঁদো হয়ে বলল, “স্যরি ভাই। ভুল হয়ে গেছে, মাফ করে দাও প্লিজ।”
নক্ষত্র কোনো জবাব দিলো না। নিঃশব্দে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে শার্টের বোতাম খুলতে শুরু করল। শায়েরী এবার খুব বেশিই ভয় পেয়ে গেল। আতঙ্কে, ভয়ে তার হাত থেকে ব্যাগটাও পড়ে গেল। তোতলাতে তোতলাতে বলল, “কি করছ তুমি? মাথা ঠিক আছে? কাল সকালে তোমার ফুফুকে কি জবাব দিবে তুমি? কোন মুখ নিয়ে তার সামনে দাঁড়াবে?”
শায়েরীর কথা বারবার জড়িয়ে যাচ্ছে। আতঙ্কে হাত- পা রীতিমত ঠাণ্ডা হয়ে গেছে। ঢোক গিলে এলোমেলোভাবে আরো কতকিছুই বলল। সে যে নক্ষত্রের বোন এটাও বুঝালো। কাজটা করা ঠিক হচ্ছে না। পরিণতি ভয়ংকর হয়ে যাবে। মামানী জানলে নক্ষত্রকে মেরে ফেলবে সে কথাও বলল। কিন্তু কোনো কথায়’ই নক্ষত্রকে টলাতে পারল না। সে নির্বিকার ভঙ্গিতে শার্ট খুলে শায়েরীর দিকে এগিয়ে এলো। শায়েরী নিরুপায় হয়ে চিৎকার করে প্রহরকে ডাকতে লাগল। দরজার নব ধরে টানাটানি করতে লাগল। দরজায় পা দিয়ে একের পর এক আঘাত করতে লাগল। কিন্তু, কিছুতেই কোনো কাজ হলো না। নক্ষত্র শায়েরীর কাছে এসে শায়েরীর দিকে শার্টটা ছুঁড়ে দিয়ে চিৎকার করে বলল, “বাথরুম থেকে শার্টটা ধুয়ে নিয়ে এসো।”
শায়েরী হন্তদন্ত হয়ে মেঝে থেকে শার্ট তুলে বলল, “এখনি যাচ্ছি, পাঁচ মিনিটেই ধুয়ে নিয়ে আসছি।”
নক্ষত্র গর্জে উঠে বলল, “পাঁচ মিনিট কেন? এত তাড়াহুড়া করলে চলবে না। একদম ফকফকা করে নিয়ে আসবে। পারলে আকাশী শার্ট সাদা করে ফেলবে।”
শায়েরী মাথা নেড়ে সায় দিয়ে বলল, “অবশ্যই ভাই, অবশ্যই। বাংলা সাবান আছে কি? নাকি গুঁড়া….”
নক্ষত্র আরো বেশি গলা চড়িয়ে বলল, “কি আছে না আছে আমি জানি না। তুমি শুধু পরিষ্কার করে শার্ট ধুয়ে নিয়ে এসো।”
শায়েরী অস্বাভাবিকভাবে উপর নীচে কয়েকবার মাথা নাড়িয়ে বলল, “হু হু এখনি যাচ্ছি, এখনি।”
নক্ষত্র প্রচণ্ড ধমকে উঠল এবার। বলল, “যাচ্ছ না কেন এখনও? আর এক মিনিটও দেরি করলে হিজাব খুলে তোমার বেণুণীটা ঝট করে কেটে ফেলব।”
শায়েরী এবার কোনো কথা বলল না। একছুটে দৌড়ে গিয়ে বাথরুমে ঢুকল। বাথরুমের কোথাও ডিটারজেন্ট পাউডার নেই। নেই বাংলা সাবানও। নিরুপায় হয়ে গায়ে মাখার সাবান দিয়ে শার্ট ধুতে শুরু করল। খানিক বাদে নক্ষত্র আরো একগাদা শার্ট নিয়ে এসে বাথরুমের দরজায় দাঁড়িয়ে শায়েরীকে ডাকল। শায়েরী ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাতেই সবগুলো শার্ট একসাথে শায়েরীর দিকে ছুঁড়ে দিয়ে বলল, “সবগুলো পরিষ্কার হওয়া চাই। একদম ঠিকঠাকভাবে। আমার মনমতন না হলে নতুন করে আবারো ধুয়ে দিতে হবে। মনে থাকে যেন।”
শায়েরীর চোখে মুখে এসে শার্টের স্তূপ পড়েছে। শায়েরী শরীরের উপর থেকে সব সরিয়ে বিনাবাক্যে একে একে সব শার্ট ধুতে লাগল। নক্ষত্র দরজা থেকে সরে গিয়ে পড়তে বসল। শায়েরী মনে মনে আল্লাহকে ডাকছে আর বলছে, “হে আল্লাহ সাহায্য করো আমায়। খেচর থেকে বাঁচাও প্লিজ। আল্লাহ গো দুই রাকাত নামাজও আদায় করব। দুইজন মিসকিনকে খাওয়াব। তারপরেও আমায় রক্ষা করো খোদা, রক্ষা করো।”
খানিক বাদে নক্ষত্র স্টাডি টেবিলে বসেই শায়েরীকে হাঁক ছেড়ে ডেকে বলল, “কাজ কতদূর?”
শায়েরী বালতিতে ধোয়া কাপড় সহকারে বাথরুম থেকে বের হয়ে বলল, “হয়ে গেছে ভাই।”
ঘাড় ঘুরিয়ে আধভেজা, ঘেমেনেয়ে একাকার, ক্লান্ত, বিধ্বস্ত এবং সঙ্কিত শায়েরীকে দেখে নক্ষত্রের মনটাই ভালো হয়ে গেল। স্বপ্নেও শায়েরী এমন কর্মব্যস্ত নারীমূর্তি! নক্ষত্র ঠোঁট কামড়ে হাসি আটকাল। তারপর গমগমে গলায় বলল, “এখানে নিয়ে এসো, আমি চেক করি।”
শায়েরী হতাশ ভঙ্গিতে বালতি নিয়ে এসে নক্ষত্রের সামনে দাঁড়াল। নক্ষত্র একে একে সব তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করল। চাইলেও কোনো দোষ ধরতে পারল না। থমথমে মুখ নিয়ে বলল, “ঠিক আছে এগুলো রেখে এসো।”
শায়েরী স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। পরমুহূর্তেই নক্ষত্র বলল, “আমার কিছু প্যান্ট আছে। সেগুলোও ধুয়ে দাও। মালা বেচারি আর কত কষ্ট করবে!”
শায়েরী আঁতকে উঠা গলায় বলল, “কি বলো? এখন কি আমি তোমার প্যান্টও ধুয়ে দিব? ছিহ্!”
নক্ষত্র হামি তুলে বলল, “কথা বাড়িও না আজু। এখন শুধু বড় প্যান্টগুলোর কথা বলেছি। তর্ক করলে ছোট প্যান্টগুলোও তোমাকে দিয়ে ধোয়ানো হবে।”
অপমানে শায়েরীর মুখখানা গমগম করে উঠল। দাঁতে দাঁত চেপে রাগ সামলাল সে, অপমানটুকুও হজম করল। নক্ষত্র ফুরফুরে মেজাজে আলমারি থেকে একগাদা ফুল প্যান্ট বের করে শায়েরীকে আদেশ করল, “সম্মানিতা ধোপানী শায়েরী নাফিসা, এগুলোও ধুয়ে নিয়ে এসো।”
শায়েরী চোয়াল শক্ত করে প্যান্ট নিয়ে বাথরুমে ঢুকল। বাথরুমের দরজা আটকে প্যান্টগুলো প্রথমে ভিজিয়ে নিলো। তারপর সাবান মেখে উঠে দাঁড়াল। তারপর সেগুলোর উপর দাঁড়িয়ে ইচ্ছেমত সেগুলোকে পা দিয়ে মাড়াল, দুমড়াল, মুচড়াল। আর মনে মনে ঝাঁজ মিটিয়ে নক্ষত্রকে গালাগাল করে বলল, “জল্লাদের ঘরের জল্লাদ তুই মরতে পারিস না? তুই মরলে পৃথিবী থেকে একজন পাপী মানুষ কমে যেত। খেচর একটা। তোকে আমি আমার চাকর বানাব। আমি ঝকঝকে পরিষ্কার গাড়ি চড়ব আর তোকে রাখব সেই গাড়ির কাঁচ পরিষ্কার রাখতে। আর তোর বউ একবার আসুক শুধু। তোর বউয়ের কান ভারি করে আমি যদি তোর মাকে বৃদ্ধাশ্রম না পাঠাই না তবে আমার নামও আজু না। থুক্কু ধোপানী না!”
মনে মনে গালাগাল করল আদুরীকেও। আদুরীকে বিশ্রী ধরনের গালি দিয়ে বলল, “তোর জন্য আজ আমার এই দশা। তুই পারিস না তৈমুরের কুলকুচাও গিলিস। ওই পাঠার ঘরে পাঠা তোকে যা বলে তাই করিস। তার কথায় উঠিস আর বসিস। গায়ে গতরেই শুধু বড় হয়েছিস, বুদ্ধি সেই হাঁটুতেই। তুইও মর। তুই কথায় কথায় যেসব গালি দিস আজ সেসব গালি তোর নিজের উপর বর্ষণ হোক। ধ্বংস হো তুই। তোর জন্য খেচরটার কপড়চোপড় আজ নিজ হাতে ধুয়ে দিতে হচ্ছে। খেচরের কুলিবর্ষণও সহ্য করতে হয়েছে। আল্লাহ জানে কত বছর আগে সে শেষ ব্রাশ করেছিল। খেচরকে দেখলেই কেমন গা গুলায়। আর তোর জন্য আজ সেই খেচরের ধোপানীও হতে হয়েছে।”
বাইরে থেকে নক্ষত্রের গলার আওয়াজ পাওয়া গেল। শায়েরী রাগে গজগজ করতে করতে বলল, “কি হয়েছে?”
নক্ষত্র ধমকে বলল, “আর কতক্ষণ লাগাবে? শুধু কি বাথরুমে পড়ে থাকলে হবে? আরো কত কাজ রয়ে গেছে।”
শায়েরী উপরের দিকে মুখ করে বিড়বিড় করে বলল, “আল্লাহ্ তুমি যখন মানুষের মাঝে দয়া,মায়া,ভালেবাসা আর মনুষ্যত্ব বাটছিলে তখন এই হারামজাদা কই ছিল? কই ছিল? জবাব দাও কোথায় ছিল সে!”
নক্ষত্র বাইরে থেকে তাড়া দিতে থাকল। শায়েরী দ্রুত হাতে কাজ সেরে বালতি নিয়ে বের হলো। তারপর ক্ষোভে ফেটে পড়ে অনেকটা আছাড় দিয়ে নক্ষত্রের সামনে বালতিখানা রাখল। তারপর চিবিয়ে চিবিয়ে বলল, “সাহেব দেখুন তো সব ঝকঝকা, ফকফকা হয়েছে কিনা?”
নক্ষত্র দাঁত কেলিয়ে হেসে বলল, “আমি এদিকটা দেখছি, তুমি বরং বিছানার উপর যেসব শার্ট আর টিশার্ট রাখা আছে সেগুলো আয়রন করে দাও। আমার কুঁচকানো শার্ট নিয়ে তোমার ভীষণ মাথা ব্যাথা ছিল। তাই ভাবলাম তোমাকে একটু মলম লাগাই।”
শায়েরী আগুনলাল চোখে নক্ষত্রের দিকে তাকাল। কিন্তু, নক্ষত্রের সেই দৃষ্টি দেখবার সময় কোথায়? সে এখন প্যান্ট ঠিকঠাকভাবে ধোয়া হয়েছে কিনা সেটা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখায় মহাব্যস্ত মানুষ। শায়েরী নক্ষত্রকে ভেঙচি কেটে কাপড় ইস্ত্রি করতে চলে গেল। নক্ষত্র সেদিকে না তাকিয়েই শাসিয়ে বলল, “সাবধান! একটা কাপড়ও যেন নষ্ট না হয়। ইচ্ছে করে যদি আমার কাপড় নষ্ট করা হয় তবে তোমার গায়ের ওড়না টেনে নিয়ে পুড়াব বলে দিলাম।”
শায়েরী এবার বেশ চটে গেল। উচ্চস্বরে বলল, “ভদ্রভাবে কথা বলবে। নতুবা, নারী নির্যাতনের কেসে ফাঁসিয়ে দিব। বদ কোথাকার! মায়ের কাছ থেকে কোনো শিক্ষাই পাওনি তুমি। নিজের ঘরেও যে একটা ছোট বোন আছে সেকথা মনে রেখো। বখাটে, রাস্তার ছেলে কোথাকার!”
শায়েরী ভেবেছিল নক্ষত্র পাল্টা আক্রমণ করে কিছু বলবে। জবাব দেওয়ার জন্য সেও প্রস্তুত ছিল। কিন্তু নক্ষত্র আর জবাব দিলো না। সে প্যান্ট পর্যবেক্ষণ ছেড়ে রাগী,কর্মব্যস্ত, অগ্নিস্ফুলিঙ্গ তার স্বপ্নচারিণী শায়েরীকে দেখতে লাগল। চেয়ারে আয়েশ করে, পায়ের উপর পা তুলে শায়েরীর রাগে অগ্নিশর্মা, আগুনবরণ মুখখানা বিমুগ্ধ হয়ে দেখছে সে। আর ভাবছে এই তো তার স্বপ্নের মানুষটা, স্বপ্নের গিন্নীটা!
ইস্ত্রী করা শেষ করে শায়েরী ফোঁসতে ফোঁসতে বলল, “সাহেব দেখুন তো আপনার মনের মতন হয়েছে কিনা?”
নক্ষত্র এবার আর চেক করল না। তবে ঠাট বজায় রেখে বলল, “মশারীখানা শেষ কবে উঠিয়েছিলাম মনে পড়ছে না। এক কাজ করো তো। চট করে মশারীটা উঠিয়ে ফেলো। তারপর সুন্দর করে বিছানাটা ঝাঁট দিয়ে, কাঁথাখানাও ভাঁজ করে ফেলো।”
শায়েরী ফণা তোলা সাপের মতন হিসহিসিয়ে বলল, “করছি দুইমাত্র ভাই।”
শায়েরী রাগে কাঁপতে কাঁপতে বিছানায় উঠে মশারি খুলে কাঁথা ভাঁজ করল। তারপর বিছানা ঝেড়ে বালিশ কাঁথা সব ঠিক জায়গায় গুছিয়ে রাখল। শায়েরী কিছু বলবার আগেই নক্ষত্র মোলায়েম স্বরে ডাকল, “আজু!”
শায়েরী রাগ নিয়ন্ত্রণ করে কোনোমতে বলল, “আদেশ করো দুইমাত্র ভাই।”
নক্ষত্র নরম গলায় বলল, “এতক্ষণ তোমাকে ছোটখাটো শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এখন তোমাকে চূড়ান্ত শাস্তি দেওয়া হবে।”
শায়েরী দু’হাত মুঠোবন্দি করে চোখ বন্ধ করে নিঃশ্বাস নিলো। তারপর চোখ মেলে দৃঢ় স্বরে বলল, “আদেশ করুন জাঁহাপনা। আমি তো আপনার দাসী, বাঁদি!”
নক্ষত্র ঘর কাঁপিয়ে হাসল। হাসির দমকে তার শরীরও দুলে উঠল। নক্ষত্রের সেই হাসির দিকে তাকিয়ে শায়েরী প্রতিজ্ঞা করল, সে নক্ষত্রকে ইঁদুরের বিষ খাইয়ে মেরে ফেলবে। একদিন না একদিন খাওয়াবেই। তারপর যা হওয়ার হবে।”
নক্ষত্র ঘরের কোণায় রাখা চেয়ারটার দিকে ইশারা করে বলল, “ওই চেয়ারটা নিয়ে এসে আমার পাশে বসো।”
শায়েরী গটগট করে হেঁটে গিয়ে চেয়ারটা নিয়ে এসে নক্ষত্রের চেয়ারের পাশে রাখল। চেয়ার রাখার সময় বেশ প্রকট শব্দ হলো। এই শব্দখানা হলো নক্ষত্রের উপর শায়েরীর মনে যেসকল রাগ জমছে সেসবের এক তুচ্ছ বহিঃপ্রকাশ! অসহায়ের বিদ্রোহ!
নক্ষত্র আদেশের সুরে বলল, “দাঁড়িয়ে না থেকে বসে পড়ো।”
শায়েরী নিঃশব্দে বসে পড়ল। নক্ষত্র শায়েরীর দিকে কার্টিজ পেপার আর পেন্সিল এগিয়ে দিয়ে বলল, “ছেলেবেলায় আমার হাত ধরেই তোমার আঁকাআঁকির হাতেখড়ি হয়েছিল। আজ তুমি এত বড় মহান আঁকিয়ে হয়ে গেলে যে আমার আঁকাআঁকি ছেড়ে দেওয়া নিয়ে পিঞ্চ করছ! ইজন’ট ইট রিডিকিউলাস আজু?”
শায়েরীর অগ্নিশর্মা মুখখানা হঠাৎ দপ করে নিভে গেল। বুজে গেল শায়েরীর ভেতরে থাকা একটু আগের ক্রোধ কিংবা ক্ষোভটুকুও। সে মাথা হেট করে বসে রইল। নক্ষত্র খানিক বিরতি নিয়ে স্হির, হিমশীতল এবং বজ্রকঠিন গলায় বলল, “পেন্সিল ধরো। আজ দেখব তুমি কত ভালো আঁকিয়ে হয়ে গেছ।”
শায়েরী পেন্সিল হাতে নিলো না। নক্ষত্র এবার প্রচন্ড ধমকে উঠল। শায়েরী প্রবল আতঙ্কে পেন্সিল হাতে নিয়ে বলল, “কি আঁকব ভাই?”
নক্ষত্র চেয়ারে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে কয়েক মুহূর্ত কি যেন ভাবল। তারপর গাঢ় কণ্ঠে বলল, “একটা নগ্ন নারীর চিত্র আঁকবে, সম্পূর্ণ নগ্ন! পয়েন্ট টু বি নোটেড সেই নারীটি হবে তুমি। নিজেকে আঁকো!”
চলবে…