#হারাতে_চাই_না_তোমায়,পর্ব-৫৪ প্রথম_অংশ
#লেখিকাঃ_উম্মে_বুশরা
❤️Happy Anniversary AruPakhi❤️
কেকের উপর এই লেখা দেখা আরু পুরো বিস্মিত,স্তব্ধ।ওর কথা বলা বা কোনো রিয়েকশন দেওয়া ও ভুলে গেছে।এটা কী সত্যি না কী স্বপ্ন?স্বপ্ন হলে আরু আর জাগতে চায় না।আর সত্যি হলে ও এই সত্যি থেকে বের হতে চায় না।
আরুর কোনো রিয়াকশন না দেখে পিছন থেকে লোকটা এসে আরুর কোমর জড়িয়ে ধরে ওর কাধে নিজের থুঁতনি রাখে।কিন্তু তাও আরুর হুস আসে না।এবার লোকটা আরুর কানের নিচে খুবই হালকা ভাবে একটা কামর দেয়।
হটাৎ কানের নিচে হালকা ব্যাথা অনুভব করায় আরুর হুস আসে।আর অনুভব করে কেউ ওর কোমর জড়িয়ে ধরেছে।এবার শরীর কিছুটা কাঁপতে লাগলো।লোকটা আরুকে কাঁপতে দেখে মুচকি হেসে বললো,
-আমার এই টুকু ছোয়া পেয়ে কাঁপা-কাঁপি শুরু হয়ে গেছে আর বেশি গভীরে গেলে তখন তো খুজেই পাওয়া যাবে না।
এমন কথা শুনে আরু বিষম লাগার মতো গালা ছাড়লো।আর সবটা মনে করে নিজেকে লোকটার বাহু থেকে ছাড়াতে চাইলো।কিন্তু পারছে না।আরু যতো ছাড়াতে চায় লোকটা ততো ওকে আরো শক্ত করে আগলে নেয়।এবার আরু কিছুটা রাগ,অভিমান নিয়ে বলে,
আরুঃ ছাড়ুন।আমি এখানে কেনো?আমার বর কোথায়?আর আপনারই বা বউ কোথায়?
লোকঃ সব প্রশ্নের উত্তর তোমার কাছেই।
আরুঃ মানে?
লোকাঃ মাথা খাটাও বুঝতে পারবে।
আরুঃ পারবো না এতো মাথা খাটাতে।ছাড়ুন আমাকে।আপনার বউয়ের কাছে যান।
লোকঃ বউয়ের কাছেই তো আছি।
আরুঃ আমি আপনার বউ ছিলাম কিন্তু এখন নেই।বিগত কয়েক ঘন্টা আগে আমাদের ডির্ভোস হয়ে গেছে।(এবার তো বুঝেছেন লোকটা কে?যদিও আগেই বুঝেছেন তবুও বলি,লোকটা আর কেউ না সে হলো আয়ান)
আয়ানঃ হুস।কিসের ডির্ভোস?কখন হলো?কীভাবে হল?
আরুঃ একদম হেয়ালী করবেন না।আর কিসের ডির্ভোস মানে?আপনিই তো বিয়ের আগে ডির্ভোস পেপারে সাইন করিয়ে বেরিয়ে গেলেন।আর এখন বলছেন কিসের,কখন ডির্ভোস?
আয়ান এবার আরুকে সামনে দিকে ঘুরিয়ে ওর মুখোমুখি করলো।দেখলো আরুর চোখ দুটি ছলছল করছে।আয়ান কী বলবে ভেবে পাচ্ছে না।ওর কষ্টও হচ্ছে আবার হাসিও পাচ্ছে।আজ যদি সত্যি ডির্ভোস হয়ে যেতো তাহলো হয়তো এই মেয়েকে ও চিরতরে হারিয়ে ফেলতো।কিন্তু তা আয়ান হতে দেয়নি।নিয়ে নিজের সাথে বেঁধে রেখেছ সারাজীবনের জন্য।ওর হাসি পাচ্ছে এই ভেবে যে, মেয়েটা না দেখে সাইন করলো,কবুল বললো,আবার তার পাশে বসে এসেছে তাও চিনতে পারলো না।আবার সেই গুলো জন্য এখন উপর দিয়ে শক্ত হয়ে ভিতরে ভিতরে গুমরে মরছে।
আয়ানকে এমন তাকিয়ে থাকতে দেকে আরু নাক টেনে বললো,
আরুঃ এমন তাকিয়ে আছেন কেনো?
আরুর কথায় আয়ানের ঘোর ভাঙে।ও ঠোঁট কামড়ে হেসে বললো,
আয়ানঃ দেখছি আর ভাবছি।
আরুঃ কী?
আয়ানঃ দেখছি তোমাকে আর ভাবছি তুমি এতো বোকা কেনো?কোনো বুদ্ধি সুদ্ধি নেই কেনো?
আরুঃ একদম বোকা বলবেন না।
আয়ানঃ বোকাকে বোকা বলবো না তো কী বলবো?তোমার ব্যবহার,কথা সব বোকামির পরিচয়।
আরু এবার কপট রাগ নিয়ে বললো,
আরুঃ ঠিক আছে আমি বোকা,গাধা,কোনো বুদ্ধি নেই।ভালো আমি এই নিয়ে খুশি।কিন্তু আপনি কেনো এখানে আমার কাছে এসেছেন?যান নিজের নতুন বিয়ে করা বউয়ের কাছে যান।(শেষের কথাটা বলে কেঁদে দিলো)
আয়ানঃ আরে কাঁদে না।আমার আরুপাখি যেমন তেমনই তাকে আমি চাই,তেমনই তাকে আমি ভালোবাসি।আর নতুন বিয়ে করা বউয়ের কথা বলছো?আমি তো তার কাছেই আছি।তাকে ছেড়ে কোথায় যাবো?
আরুঃ এখন মন ভুলানো কথা বলতে এসেছে।ছেড়ে যাওয়ার সময় মনে ছিলো না।এখন ভালোবাসার দোহাই দিতে এসেছে।ছাড়ুন।
আয়ানঃ তোমাকে ছড়লাম কখন যে এখন ভালোবাসার দোহাই দিয়ে কাছে আসতে হবে?
আরুঃ একদম নাটক করবেন না।আমার জীবনটা পুরো শেষ করে দিলেন।এভাবে আমার মন,ইমোশন,আবেগ,ভালোবাসা,বিশ্বাস নিয়ে খেলে কী মজা পেলেন আপনি?
আয়ানঃ আমি তোমার ভালোবাসা,বিশ্বাস নিয়ে খেলি নি।
আরুঃ তো কী করেছেন?সব ছেড়ে চলে যেতে বলেছেন
গিয়েছি।আপনার থেকে দূরে যেতে বলেছেন।গিয়েছি।আপনি সব ভুলে নতুন জীবন শুরু করবেন।তাতেও কোনো রিয়েক্ট করি নি।সবটা যখন নতুন করে নিজের হাতে,ভালোবাসা দিয়ে শুরু করবো ভেবেছিলাম তখনই সবটা আপনি নিজের হাতে ভেঙে গুরিয়ে দিয়েছেন।এগুলোকে খেলা বলে না?
আয়ান চুপ।কারন যানে আজ এগুলো শুনতে হবে।অনেক অভিমান জমে আছে যে।কিন্তু আয়ান আজ সব শুনবে আর তার আরুপাখির সব অভিমান ভাঙবে।
আয়ান আরুকে বললো,
আয়ানঃ তুমিই তো মুক্তি চেয়েছিলে?
আরুঃ আমি না হয় রাগের মাথায় এসব বলে ফেলেছি তাই বলে আপনি এতো বড় শাস্তি দিবেন আমাকে?
আমি তো আপনাকে ছেড়ে কোথাও যেতে চাই নি।আর না ভবিষ্যতে কোনো দিন চাইবো।তাহলে কেনো এমন করলেন?
বলেই ফুফিয়ে কেঁদে উঠলো।আয়ান যত্ন সহকারে আরুকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো।এতে ওর শরীরের ভর সব আয়ানের উপর।আরুকে কিছুটা কদতে দিলো।তাহলে একটু হয়তো হালকা হবে।আরুও মোমের পুতুলের মতো গলে গিয়ে আয়ানের বুকে মুখ গুজে কেদে চলেছে।কিছু সময় পর আয়ান আরুর থুতনি ধরে মুখটা তুলে।কাদার ফলে চোখ,নাক লাল হয়ে গেছে।কাঁদার ফলে চোখ ভিজে চোখের গাড়ো কাজল লেপ্টে গেছ।ঠোটের লিপস্টিকও মুছে গেছ কিছুটা।আয়ান আরুর চোখের পানি মুছে দিয়ে ওর কপালে একটা চুমু খেয়ে নিলো।এবার আয়ান বললো,
আয়ানঃ কাঁদছো কেনো?কাঁদার কী আছে?আমি ছেড়ে চলে যাইনি।আমি তোমার কাছেই আছি এবং নিশ্বাস যাওয়ার আগ পর্যন্ত থাকবো।
আরু কিছু বলে না।নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।আর নাক টানছে।আয়ান হটাৎ এক প্রশ্ন করে বসে আরুকে।
আয়ানঃ ভালোবাসো আমাকে?ঠিক আগের মতো?
আরু কান্না রেখে আয়ানের দিকে তাকিয়ে আছে।এটা ও কী বলছে?ও জানে না।আরুকে এমন চেয়ে থাকতে দেখে আয়ান মুচকি হেসে বলে,
আয়ানঃ কী হলো বলো?ভালোবাসো আমাকে?
আরু মাথা নামিয়ে নিলো।কিন্তু কয়েক সেকেন্ড পর মাথা উপর নিচ করে।যা মানে ‘হ্যা ভালোবাসি’।
আরুর মাথা নাড়ানো দেখে আয়ানের খুশি যেনো উপছে পরছে।এতোগুলো দিন এই কথাটা শুনার জন্য অপেক্ষা করছিলো।আজ সেটা হলো।সার্থক হলো ও।আয়ান আবার বললো,
আয়ানঃ বুঝতে পারছি না।মুখে বলো ঠিক করে।
আরু মাথা তুলে তাকিয়ে কেঁদে এবং রেগে বললো,
আরুঃ হ্যা বাসি।ভালোবাসি।ভালোবাসি।ভালোবাসি নিজের থেকেও বেশি।..কিন্তু…কিন্তু এই ভালোবাসার কোনো মূল্য নেই এখন আর।কারণ তুমি…তুমি এখন অন্য কারো।(বলেই কেদে দিলো)
আয়ান যেনো নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না।সত্যি কী কথাটা বলেছে ওর আরুপাখি?একবার না দুই বার না তিন তিন বার।ওর নিজেকে এখন পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ মনে হয়।
ফ্যাচফ্যাচ শব্দে আয়ানের হুস আসে।প্রথমে আরুর কথায় খুশি হলেও শেষের কথা গুলো মনে পরে রাগ ও হচ্ছে দুঃখও হচ্ছে।ইচ্ছে করছে নিজের মাথা নিজে ফাটিয়ে পেলতে।এই না না মাথা ফাটিয়ে ফেললে আরুর কী হবে?না না এসব চিন্তা বাদ।আয়ান বললে,
আয়ানঃ এই জন্যেই তোমাকে বোকা বলেছি।না জেনে না বুঝে কেঁদে বুক ভাসাচ্ছো।পুরো কাহিনী তো শুনবে তারপর রিয়েক্ট করবে তা না।
আরুঃ কাহিনী মানে?
আয়ানঃ বলবো আগে নিজেকে ঠিক করো।ইশ! চোখের পানি নাকের পানি দিয়ে কী অবস্থা করেছে।
কথাগুলো বলতে বলতে আয়ান নিজেই আরুর চোখ মুছে দিয়ে ওকে ঠিকঠাক করছে।তারপর আয়ান আরুকে কোলে তুলে নিলো।আরু কিছু বলার জন্য মুখ খুলতে নিলেই আয়ান চোখ দিয়ে ইশারায় বলে ‘না এখন কোনো কথা নয়’।আরুও চুপ করে গেলো।নিজর ব্যালেন্স ঠিক রাখতে দু হাত দিয়ে আয়ানের গলা জড়িয়ে ধরে।আরুকে এমন করতে দেখে আয়ান হেসে দিলো।আর আরু এক দৃষ্টিতে সেই হাসির দিকে তাকিয়ে আছল।আয়ান আরুকে নিয়ে বেলকনিতে চলে যায়।
———
বেলকনিতে এসে আরুকে নামিয়ে দিলো দোলনায়।এখানে তেমন কিছু নেই তবুও যেনো সব অসাধারণ।কারণ আকাশের ওই চাঁদটা নিজের আলো দিয়ে সব আলোকিত করে পুরো পরিবেশ সাজিয়ে তুলেছে।চারপাশ থেকে ফুলের মিষ্টি ঘ্রাণ নাকে আসছে।আর সাথে ঠান্ডা বাতাস।সেই বাতাস আরুর পাতলা শাড়ি ভেদ করে ওট পুরো শরীর সহ মন ছুয়ে দিচ্ছে।পাশে আয়ানের দিকে তাকালো।এতোক্ষনে খেয়াল করলো আয়ানও ওর সাথে মেচিং করে সেইম কালারের পাগলা শার্ট।যার নিজের ৩ বোতাম লাগানো।আর সব খোলা।এতে আয়ানের লোমেশ বুক আরুর নজরে এলো।সাথে সাথে ও ওর নজর অন্য দিকে ফিরালো।ইশ! কী লজ্জা।
আয়ান ওর কান্ড দেখে মিটমিট হাসছে।এবার আয়ান আরুর আরেকটু পাশে চেপে বসে।পুরো চাদের আলো আরুর মুখে পরায় ওর সুন্দৌর্য যেনো আরো বারিয়ে তুলেছে।
আয়ানঃ কেমন লাগছে এখানে?
আরুঃ খুব ভালো।রুম সাজানো,এই বেলকনি,চাদের আলো,সাথে ফুলের মিষ্টি সুবাস।মন ছুয়ে যাওয়ার মতো।খুব ভালো লাগছে
আয়ানঃ আর আমি?আমাকে কেমন লাগছে?
আরুঃ…… আব..কি যেনো বলবেন বলছিলেন?
আয়ানঃ হুম,বলবো কিন্তু তার এটা বলো সব শুনে তুমি কারো উপর রাগ করবে না?
আরুঃ রাগ করার বিষয় হলে অবশ্যই রাগ করবো।
আয়ানঃ না করবে না।কারণ সব কিছু আমি করেছি তাই রাগ করলে আমার সাথে করবে।তবে সেটা আমার কাছে থেকে দূরে গিয়ে নয়।
আরুঃ সে দেখা যাবে আগে বলুন।
আয়ানঃ না তুমি আগে প্রমিস করো আমি যা বলছি তুমি শুনবে?
আরুঃ বেশ।প্রমিস।..এবার বলুন।
আয়ানঃ আসলে আগেই সরি বলে নিচ্ছি সব কিছুর জন্য,তোমাকে এতো দিন কষ্ট দেওয়ার জন্য।আসলে এগুলো সব সাজানো ছিলো।
আরুঃ মানে?(চরম অবাক হয়ে)
আয়ানঃ হুম।সব আমার সাজানো ছিলো।আর এসব কিছুতে তোমার পরিবার সহো আমার পরিবার আমাকে সাহায্য করেছে।
আরুঃ পরিষ্কার করে সবটা বলুন।
আয়ানঃ বলছি,মনে আছে তুমি প্রথম যেদিন ডির্ভোস চেয়েছিলে আমার কাছে তারপর আমি রেগে বাসা থেকে বের হয়ে গিয়েছিলাম।সেইরাতে বাড়ি ফিরি নি আমি?
আরুঃ হুম।তারপর তে এক্সিডেন্ট হলো।
আয়ানঃ হুম সেইরাতে বাসা থেকে বের হয়ে মাথা ঠিক ছিলো না।একবার ভেবেছিলাম তোমাকে মুক্তি দিয়ে দিবো।তোমাকে আর জোর করে নিজের কাছে আটকে রাখবো না।যেখানে তোমার মনে আমার জন্য আর অবশিষ্ট কোনো ভালোবাসা নেই সেখানে তোমাকে নিয়ে মিথ্যে আশা করে সংসার সাজিয়ে লাভ নেই
তার থেকে তোমাকে মুক্তি দিয়ে দেই তুমি ভালো থাকবে।কিন্তু পরে ভেবেছি।কেনো তোমাকে মুক্তি দিবো বিয়ে করা বউ তুমি আমার।তুমি এই বিয়ে না মানলেও বমি মানি।তাই তোমাকে আমি ছাড়তে পারবো না।যেকোনো মূল্যেই হোক আমার কাছে তোমাকে থাকতে হবে।দরকার পরলে আটকে রাখবো তাও দূরে যেতে দিবো না।পাঁচ বছর তোমার থেকে দূরে থেকে যে যন্ত্রণা,কষ্ট পেয়েছি তা আর নতুন করে পেতে চাই।ভেবেছিলাম নিজের জন্য স্বার্থপর হবো।এসব ভেবেই বাড়ি ফিরে আসছিলাম কিন্তু তার আগেই এই এক্সিডেন্ট।এক্সিডেন্টের পর সেন্স ফিরার পর আমার প্রতি তোমার দায়িত্ব কর্তব্য,সেবা দেখে আমি ভেবেছিলাম তোমার মনে আমার জন্য সেই আগের জায়গাটাই আছে কিন্তু তা হয়তো সময়ের সাথে অনেকটা নিচে পরে গেছে।কিন্তু আমি সেই আগের আরুকে সব সময় চাইতাম।তারপর আস্তে আস্তে তোমার নিরলস ভাবে সেবাই আমি সুস্থ।এতে দিনে তোমার মনেও আমার প্রতি সেই জায়গা,সেই ভালোবাসা আবার আমি ফিরে পেয়েছি।আবার আমি আমার আরু পাখিকে পেয়েছি।তারপর সময় গরিয়ে গেলে ভেবেছিলাম একদিন নিজের মনের কথা তোমাকে জানিয়ে সব নতুন ভাবে শুরু করবো।কিন্তু তাও হলো না।তখনই এলো রাফসান আর মারিয়ার বিয়ে।এই বিয়ে নিয়ে তুমি সহো সবাই এক্সাইটেড দেখে তখনও কিছু বলতে পারি নি।ভেবেছি বিয়ের সব কিছু মিটে গেলে সবটা বলবো।…কিন্তু ভাগ্য মনে হয় তখনও সহায় ছিলো না।রাফসানের বিয়ের ১/২ মাসের ভিতরে আমি সবটা মেনজ করে নিয়েছিলাম।তোমাকে নিয়ে কোথাও ঘুরতে যাবো আর সেখানেই সব বলবো তোমাকে আর সাথে আমাদের হানিমুন টাও হয়ে যাবে।
কিন্তু সবটা হয়েও কিছুই হলো না।
এতোক্ষন বলে আয়ান এক দীর্ঘশ্বস ছাড়লো।আরু একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে।হয়তো চোখ দিয়ে পানিও পরছে।তারপর আয়ান আবার বলতে লাগলো,
আয়ানঃ রাফসানের বিয়ের সময় থেকে মাথাটা সব সময় কেমন ধরে থাকতো।বুঝতে পারতাম না কিসে ব্যাথা এটা।তারপরও সয্য করে থাকতাম।কিন্তু সময়ের সাথে যেনে এটা বাড়তে লাগলো।কাউকে কিছু জানাই নি এই ব্যাপারে বাসার কাউকেও না এমনকি তোমাকেও না।ভেবেছি এমনি ব্যাথা হয়তো সেরে যাবে।তাই ওতো গুরুত্বও দেই নি তো যেদিন তোমাকে বাসায় এসে বলবো কোথাও ঘুরতে যাওয়ার কথা কিন্তু সেদিন বিকালের দিকে তখন অফিসে ছিলাম হটাৎ করেই মাথা ব্যাথাটা বেড়ে গিয়েছিলো।সয্য করারা মতো ছিলো না।তখন কোনো রকমে উঠে ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম।ডাক্তারকে সব খুলে বলতে তিনি কিছু পরীক্ষা করেন।প্রায় অনেকক্ষন পর সেই রির্পোট পেয়ে যাই হাতে।ডাক্তার সব দেখে বলেছিলো সেই এক্সিডেন্টের জন্য মাথায় ছোট একটা আঘাতের চিহ্ন এখনো আছে।সেটা থেকেই এই ব্যাথা।(আমি এইসব ডাক্তারি বিষয় কম জানি তাই যদি ভুল হয় একটু শুধরিয়ে দিবেন)।তখন ডাক্তারকে বলেছিলাম এর কোনো সমাধান আছে কী না?ডাক্তার বলেছিলো,’আমাদের দেশে এর কোনো সমাধান নেই।আমারা যদি রিস্ক নিয়ে কোনো অপারেশনের সাহায্যে এটা সমাধান করতে যাই তাহলে লাইফ রিস্ক হয়ে যাবে।এতে করে ও.টি তেই হয়তো কোনো কিছু ঘটে যেতে পারে’।বিশ্বাস করো ডাক্তারের কথা শুনে তখন আমার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছিলো।তখন একটা কথাই মাথায় আসছিলো তা হলো’ আমার কিছু হয়ে গেলে আমার আরু পাখির কি হবে’।ডাক্তার আমাকে চুপ করে বসে থাকতে দেখে বলেছিলো,’এভাবে ভেঙে পরো না।সমস্যা যেমন আছে তেমন সমাধানও আছে।তাই বলছি এখানে কিছু না করে তুমি দেশের বাহিরে গিয়ে এর আবার নতুন করে টেস্ট করাও সেখানে ওরা সেই ওষুধের মাধ্যমেও এর সমাধি করতে পারে।যদি তোমার ভাগ্য ভালো হয় তাহলে তুমি ওষুধের সাহায্যে সেরে উঠবে কোনো অপারেশনে তোমাকে যেতে হবে না।কিন্তু আমাদের দেশে এমন কোনো ওষুধ নেই।তাই বলছি সময় নষ্ট না করে তাড়াতাড়ি যাও আর নতুন জীবন নিয়ে ফিরে এসো’।ডাক্তারের এসব কথা শুনে কিছু না বলে উঠে চলে আসি।নিজেকে কেমন পাগল পাগল লাগছিলো।দিশেহারা হয়ে গিয়েছিলাম।কী করবো?কোথায় যাবো?কার কাছে এগুলো খুলে বলবো কিছু মাথায় আসছিলো না।শুধু তোমার কতা ছাড়া।
বলেই আবার চুপ করে গেলো।
চলবে….