হারাতে_চাই_না_তোমায়#পর্ব-৫৪ শেষ_অংশ

0
688

#হারাতে_চাই_না_তোমায়#পর্ব-৫৪ শেষ_অংশ
#লেখিকাঃ_উম্মে_বুশরা

আয়ান আরুর দিকে তাকিয়ে দেখে আরু এক দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে আছে আর দুচোখের নোনাজল গুলো গড়িয়ে পরছে।আয়ান আরুর চোখের পানি মুছে দিয়ে ইশারায় কান্না করতে না করলো।আরু ইশারায় বললো কথা গুলো শেষ করতে।আয়ান আবার বলতে শুরু করলো,
আয়ানঃ সেদিন বাসায় এসে তোমাকে কথাটা বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু পারি নি।কেনো পারি নি তা জানি না।হয়তো ভয়ে।তোমাকে হারিয়ে ফেলার ভয়ে।নতুন করে তোমার চোখে আমার জন্য যেই ভালোবাসা দেখেছি তা আমি হারিয়ে ফেলতে চাই নি।সারা রাত দু চোখের পাতা এক করতে পারিনি কি করবো কী না করবো এসব ভেবে।এসব কথা কউকে বলি নি এমনকি আব্বু আম্মুও না।ওনাদের বললে ওনার আরো ভেঙে পরবেন।কী করবো কিছুই ভেবে পাচ্ছিলাম না।যখন অফিসে বসে এসব ভাবছিলাম তখন অনিম ভাইয়ার কল এলো।যদিও সেটা বিজনেস রিলেটেড।কথা বলার এক পর্যায়ে ভাইয়া বললো,’আমার কী হয়েছে?আমার গলা না কী অন্য রকম লাগছে’।তখন বলেছিলাম আমি ঠিক আছি।ভাইয়া তখন আমার কথা বিশ্বাস করেছিলো কী না জানি না কিন্তু আমাকে আশ্বাস দিয়ে বলেছিলো,’কোনো সমস্যা হলে বলে দিতে।নিজের মাঝক রেখে কোনো সমাধান হয় না।’ভাইয়ার কথায় কিছুটা ভরসা পেয়েছিলাম তাই ঠিক করলাম বসায় গিয়ে তোমাকে সব বলবো।সেই আশা নিয়ে যখন বাসায় ফিরলাম তখন দেখলাম তন্নির প্রেগনেন্ট হওয়ার কথা শুনে তুমি কতোটা এক্সাইটেড।তখন এতোটুকু বুঝলছিলাম তোমার মনে মা হওয়ার সুপ্ত অনূভুতি তৈরী হয়েছে।সেটা দেখে আবারে ভয় হতে লাগলো তোমার ইচ্ছে পূরন করার জন্য যদি আমি না থাকি তখন কী হবে।আমার তো বাঁচার আশাও নেই।আমার কিছু হয়ে গেলে অবশ্যই তোমার জীবন এগিয়ে নিতে হবে।আর তখন যদি আমার ফেলে আশা কোনো কারণে তোমার ভবিষ্যতে সমস্যা হয়।এই পৃথিবীতে তুমি একা বাঁচতে পারবে না।সব ভুলে এক সময় তোমাকে সামনে আগাতেই হবে।এসব ভেবে সেদিন তোমাকে আর কিছু বলা হয়নি।যেখানে নিজের জীবনের আশা নেই সেখানে তোমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখার ইচ্ছাও নেই।তাই..
আরুঃ তাই?
আয়ানঃ তাই পরদিন তোমাকে ডির্ভোসের কথা বলি।জানতাম সহজে রাজী হবে না তাই তখন তোমার সাথে এসব ব্যবহার করতাম যাতে আমার উপর তোমার রাগ জন্ম হয়।আর সেই রাগের বসেই তুমি যেনো আমাকে ছেড়ে চলে যাও।কিন্তু বিশ্বাস করো তোমার সাথে করা প্রতিটা কথা,ব্যবহার আমি ইচ্ছে করে করিনি।করতে বাধ্য হয়েছি।যখন ভাবতাম আমাকে ছেড়ে তুমি চলে যাবে বা আমি তোমাকে ছেড়ে চলে যাবো তখন নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসতো।….তখন এসব করা ছাড়া আর উপায় খুজে পাই নি।তোমাকে এই বাসা থেকে চলে যাওয়ার কথা বলেছিলাম কিন্তু আমি বাসায় আম্মু আব্বুকে বলেছি,’ এনির্ভারসিরী উপলক্ষে তোমাকে সারপ্রাইজ দেবো তাই তোমাকে তোমার বাসায় চলে যেতে বলেছি’।সবাই এই কথাটা প্রথমে মানতে চাই চায় নি কিন্তু একসময় সবাইকে জোর করে রাজি করিয়েছি।সবটা ভালোই চলছিলো কিন্তু সমস্যা হয় সেদিন যখন ডাক্তারের সাথে কথা বলে হসপিটাল থেকে বের হই।
আরুঃ কী হয়েছিলো?
আয়ানঃ হসপিটাল থেকে বের হওয়ার সময় বাবা মানে তোমার বাবা দেখে ফেলেছিলো আর হাতে ছিলো আর হাতে ছিলো রির্পোট।বাবা হটাৎ এখানে আমাকে দেখে যতোটা না অবাক হয়েছে তার থেকেও বেশি অবাক হয়েছ আমার হাতে রির্পোট দেখে।উনি ভেবেছিলো কারো কিছু হয়েছে।তাই অনেক বার জিজ্ঞেস করেছে কিন্তু আমার কথা বিশ্বাস করে নি একসময় আমার হাত থেকে রির্পোট নিয়ে পরে দেখে আমার নাম।বাবাকে অনেক কষ্টে বলে কয়ে তোমাদের বাসায় নিয়ে গিয়েছিলাম আর সেখানে সবার বাধ্য হয়ে সব কথা বলতে হয়।তখন সবার এসব কথা শুনে ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলো।ওনারা ও কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না।
…..সব ভাবনা চিন্তার পর সবাই বলেছে তারা তোমাকে সামলে নিবে আমি যেনো যতো দ্রুত সম্ভব চলে যাই।তারপর বাসায় এসে যথারীতি তোমাকে ইগনোর করতাম সাথে বাসার সবাই।এমনি একসময় তুমি এসব সয্য করতে না পেরে চলে গেলে তোমার বাসায়।তুমি বিশ্বাস করো তুমি চলে যাওয়াতে মনে হচ্ছিলো কেউ আমার কলিজা কেটে টুকরো টুকরো করছিলো।তারপরও নিজেকে শক্ত করেছুলাম।তুমি যাওয়ার পরদিন আব্বু আম্মুকে বিজনেসের কথা বলে চলে যাই থাইল্যান্ড।কারন সেখানেই আমার চিকিৎসার কথা হয়েছিলো।

বলেই আয়ান দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে চুপ করে রইলো।আরুর দিকে তাকিয়ে দেখে ওর চেখ ফুলে গেছে অতিরিক্ত কান্নার ফলে।আয়া আরুর মাথাটা নিজের বুকের সাথে চেপে ধরলো।এখানেই তো শান্তি।আর এই শান্তি,এই ভালোবাসা সব হারিয়ে ফেলতে বসেছিলো।আরুর কান্নার শব্দ শুনে আয়ান বললো,
আয়ানঃ হিসসস!চুপ।এখন তো সব ঠিক আছে তাহলে কাঁদছো কেনো?আমি তোমার পাশেই আছি।কান্না থামাও।
আরুঃ তারপর বলো কী হয়েছিলো।
আয়ানঃ বলবো আগে কান্না থামাও।শরীর খারাপ করবে।
আরুঃ এখন ঢং দেখাতে হবে না।এতোদিন তো নিজেই কষ্ট দিয়ে শরীর খারাপ হতে বাধ্য করেছিলে।
আয়ানঃ বাই এনি সান্স তুমি কী আমাকে ‘তুমি’ বলে সম্মোধন করলে?
আরুঃ কথা ঘুরাবে না।বাকী কথা শেষ করো।আর তুমিও যাও তোমার বউয়ের কাছে আর আমাকেও যেতে দাও।
আয়ানঃ আবার এক কথা।আমি তো আমার বউয়ের কাছেই আছি।
আরুঃ তুমি বলবে বাকী কথা?(রেগে।কারন আরু একটু হলেও বুঝতে পেরেছে না ওর না আয়ানের অন্য কারো সাথে বিয়ে হয়েছে)
আয়ানঃ বেশ..
সেখানে আমার সব রির্পোট দেখলো।বললো ২ দিন সময় লাগবে।আমিও অপেক্ষা করতে লাগলাম।এই ২ দিনে এটাও দোয়া করতাম আমি আমার আরু পাখির সাথে বুড়ো হতে চাই।মাঝ পথে ওর হাত ছেড়ে আমি চলে যেতে চাই না।..আল্লাহ মনে হয় আমার কথা শুনেছেন।২ দিন পর ডাক্তারের কাছে গেলে ডাক্তার বলে ওষুধের মাধ্যমে এটা নিরাময় করা যাবে।কোনো অপারেশন করা লাগবে না।তবে ৬ মাস নিয়মিত ওষুধ খেতে হবে।একদিন বাদ দেওয়া যাবেনা।তবে এই ওষুধ গুলো খাওয়ার ১ মাস পর আবার যেতে হবে।
আরুঃ তাই বিয়ের আগের কয়েকদিন সকালে আমি আমার রুমে কোনো চিরকুট পাই নি।তাই তো?
আয়ানঃ তু..তুমি তুমি কী করে জানলে?
আরুঃ বলবো আগে তোমার কথা শেষ করো।
আয়ানঃ কিন্তু….
আরুঃ বলো?
আয়ানঃ সব ফিরে পাবার খুশিতে নিজেকে ভাগ্যবান পুরুষ বলে মনে হয়েছিলে।আমি তোমাকে ফিরে পাবো আবার একসাথে বাঁচবো আমরা।একসাথে সারাজীবন কাটাবো।তারপর দেশে ফিরে এসে তোমাকে বাড়ি ফিরিয়ে আনার কথা ভাবতেই মাথায় এলো আব্বু আম্মুকে অন্য কথা বলেছিলাম কিন্তু এখন তোমাকে আনলে আবার কী বলবো? তাই তোমার বাবা মা ভাইয়ের সাথে কথা বলে বিয়ের ব্যবস্থা করি।আর সবাই রাজি ও হয়।তবে সেটা তোমাকে না জানিয়ে।ব্যাস তারপর এসব কিছু।
আরুঃ তারমানে সবাই সবটা জানতো?
আয়ানঃ হুম।কিন্তু আমি তোমাকে আগেই বলেছি কারো উপর রাগ করতে পারবে না।সবটা যেহেতু আমার জন্য তাই রাগ করতে হলে বা শাস্তি দিতে হলে আমাকে দাও।ওনাদের সাথে কিছু করো না।আমাকে যা শাস্তি দিবে মাথা পেতে নিবো কিন্তু সেটা আমার থেকে দূরে গিয়ে নয়।
আরুঃ …………
আয়ানঃ কথা বলছো না কেনো?
আরুঃ বিয়ে হলো কীভাবে?
আয়ানঃ বৃষ্টিকে সব বলে কয়ে রাজি করিয়েছি।আর ডির্ভেস পেপার সাইন করার সময় মনে আছে লোডশেডিং হয়েছিলো?
আরুঃ হুম।
আয়ানঃ সেটা আমি করিয়েছি।লোডশেডিং হওয়ার সাথে সাথে উপর থেকে ডির্ভোসের পাতাটা সরিয়ে দিয়ে রেজিস্ট্রি পেপারে সাইন করিয়ে নি।আর তারপর তুমি ঘোরের মাঝেই কবুল বলে দাও।ব্যাস হয়ে গেলো আমাদের দ্বিতীয় বার বিয়ে।….কিন্তু তুমি কী করলে না দেখে তুমি বিয়েতে রাজি হয়ে গেলে।তখন যদি আমার জায়গায় অন্য কেউ থাকতো তখন কী হতো?
আরুঃ কী আবার হতো অন্য কারো রুমে অন্য কারো জন্য অপেক্ষা করতাম।
আয়ানঃ খুন করে ফেলবো।(রেগে)
আরুঃ হুহ😏।
আয়ানঃ তুমি বিয়েতে রাজি হয়েছিলে কেনো?আমার উপর জেদ করে?
আরুঃ অনেকটা সেরকমই।রাগ,জেদ সব ছিলো।কিন্তু একটা বিশ্বাস ছিলো আমার অন্য কারো সাথে বিয়ে হবে না।তুমি হতে দিবে না।
আয়ানঃ এতো বিশ্বাস?
আরুঃ উহু।প্রথমে ছিলো না।তখন রাগ ছিলো?
আয়ানঃ তাহলে হলো কখন?
আরুঃ তন্নির আর ভাইয়ার কিন্তু ব্যবহার আর কথা শুনে পরে আমার পরিবারের সবাি যোগ হয়েছে।কিন্তু বর কথা হলো আমার মন।কেনো জানি মানতে চাইতো না আমি অন্য কারো বা তুমি অন্য কারো হয়ে যাবে।
আয়ানঃ এতো ভালোবাসা।
আরুঃ থাকতে হয়।কিন্তু একটা জিনিস বুজলাম না।
আয়ানঃ কী?
আরুঃ তুমি তো সব সময় আমার আশেপাশে থাকতে তাহলে আমি কেনো বুঝতাম না?সেদিন শপিংমলেও তুমি ছিলে তখন কেনো তোমার কন্ঠ বুঝলাম না।এমনকি আজো সেই অন্ধকার রুমে?আর আমার রুমেই বা কী করে ঢুকতে?আর চিরকুটে তোমার হাতের লেখা চিনতাম না কেনো?
আয়ানঃ আরেব্বাস তুমি তো সবটাই জানতে?
আরুঃ জানতাম না শুধু অনুভব আর সন্দেহ।
আয়ানঃ কেমন অনুভব?
আরুঃ রাতে আমার রুমে কেউ আসতো এবং আমাকে আগলে নিয়ে ঘুমাতো এটা প্রতি রাতেই অনুভব করতাম কিন্তু চোখ মেলে তাকিয়ে থাকার শক্তি তখন থাকতো না।এবার বলো এসব কেনো হলো।
আয়ানঃ কন্ঠের ব্যাপার পরে বলছি।হাতের লেখার ব্যাপারে বলবো,অনেক কষ্টে বা হাত দিয়ে লিখতাম।আর কন্ঠ?(বলেই পকেট থেকে রুমাল বের করে নিজের মুখে চেপে ধরে এরপর বলে)এখন শুনে বলো কন্ঠ পরিচিত কি-না?

আরু শুনে দেখে এতোগুলো দিনে যেই কন্ঠ শুমতো পুরো সেইম।এবার আরু বুঝলো যে মুখে রুমাল বেধে আয়ান কথা বলতো।আরু আর কিছু বললো না ওর কাছে এখন সবটা পরিষ্কার এতোগুলা দিন যা হয়েছে যা করেছে সবটা।যদিও সবাই ভালোর জন্য করেছে কিন্তু পর কষ্টটা কি কেউ দেখে নি।তবে সেই হিসাবে করতে গেলে ওর থেকে বেশি কষ্ট আয়ান পেয়েছে।কী করবে ও?আরু এসব ভাবছিলো।অনেকক্ষন কোনো কথা হলো না।আয়ান এবার বললো,
আয়ানঃ কথা বলছো না যে?
আরুঃ ভাবছি আমি তেমার যোগ্য নি নাকী তুমি আমার।
আয়ানঃ কী বলছো এসব?
আরুঃ ঠিকিই বলছি।কারণ স্ত্রী মানে বুঝো?স্বামীর অর্ধাঙ্গিনী।স্বামীর সকল বিপদে,খুশিতে সব কিছু তে সামিল হয়ে তার সাথে পায়ে পা মিলিয়ে জীবন চলা।সব সুখ দুঃখ একে অপরের সাথে ভাগ করে নেওয়া।কিন্তু তুমি কী করছো বলো তো?এখন বলবে আমাকে কষ্ট দিতে চাও নি।কিন্তু তোমরা আমাকে সোজা ভাবে না হলেও বাঁকা পথে ঠিকই কষ্ট দিয়েছো।এখন আমি কী করতে পারি বলতে পারো?
আয়ানঃ আমি তো বললাম তোমার সব শাস্তি আমি মাথা পেতে নিবো।
আরুঃ শাস্তি।হুম শাস্তি তুমি অবশ্যই পাবে।

আয়ান মাতা নিচু করে নিলো।আরুর অভিযোগ সব সত্যি।কিন্তু ওতো সব আরুর জন্যেই করেছে।এখন সেই আরুই ওকে ভুল বুঝছে।হা
আয়ানকে মাথা নিচু করে রাখতে দেখে আরু বললো,
আরুঃ শাস্তির জন্য প্রস্তুত হও।(বলেই আয়ানের হাত ধরে দাড় করালো)
আয়ানঃ………
আরুঃ তোমার শাস্তি হলো,সারাজীবন তোমার আরু পাখিকে আগলে রাখা,তোমার শাস্তি হলো তোমার আরু পাখিকে সাথে নিয়ে বাকী জীবনের পথ চলা,তোমার শাস্তি হলো এখন থেকে তোমার আরু পাখির কষ্ট না দেওয়া,কোনো কথা লুকিয়ে না রাখা,খোলা মনে সবটা স্বীকার করা,তোমার শাস্তি হলো তোমার আরু পাখির কান্না,রাগ,অভিমান,হাসি মন খারাপ,ঝগড়া সব কিছুর কারন হওয়া,তোমার শাস্তি হলো তোমার আরু পাখির হাত ধরে বুড়ো বুড়ি হওয়া,তোমার শাস্তি হলো তোমার আরু পাখিকে ভালোবাসা।এগুলা ছাড়া আপাতত মনে পরছে না।এসব তোমার শাস্তি।

আরু যেমন কাঁদছে তেমনই আরু দেখতে আয়ানের চোখ চিকচিক করছে।আরু কিছু বুঝে উঠার আগেই আয়ান ওকে নিজের সাথে মিশেয়ে নেয়।যেনো মনে হলো ওর বুকের ভিতরে লুকিয়ে রাখবে।আরু বেশ বুঝতে পারছে আয়ান ওর চোখের পানি আড়াল করার জন্য এমন করছে।অনেকক্ষন পর আয়ান আরুকে ছেড়ে ওর কপালে কপাল ঠেকিয়ে আয়ান বলে উঠে,
আয়ানঃ সব শাস্তি মাথা পেতে নিলাম।পৃথিবীর সব সুখ ভালোবাসা তোমার পায়ের কাছে এনে দিবো।
আরুঃ পৃথিবীর সব যদি আমাকে দাও তাহলে বাকী মানুষের কী হবে?(মজা করে)
আয়ানঃ বাকী দের কথা তোমার ভাবতে হবে না।নিজেরটা ভাবো।

আরু আর কিছু বললোনা।এভাবে কতোক্ষন ছিলো জানা নেই কিন্তু হটাৎ করে আরু বলে উঠে,
আরুঃ “ভালোবাসি”

আয়ান হা হয়ে আছে।এটা ঠিক শুনলো তো?না কী ভুল।না কী স্বপ্ন।আয়ানকে একম তব্দা মেরে থাকতে দেখে আরু বাঁকা হেঁসে এগিয়ে গিয়ে আয়ানের গালে ছোট একটা চুমু খেয়ে কানের কাছে গিয়ে আবার বললে,
আরুঃ ভালোবাসাি মি.।অনেক অনেক ভালোবাসি।

আয়ানের খুশি যেনে উপচে পরছে।এবার আর নিজের চোখর পানি আড়াল করলো না দু ফোঁটা পানি গড়িয়ে পরলো।এটা সুখের কান্না।আয়ান বললো,
আয়ানঃ ভালোবাসি।ভালোবাসি।ভালোবাসি।

দুজনের চোখেই পানি।অনাকাঙ্ক্ষিত জিনিস পেলে হয়তো মানুষ এমনই করে।আয়ান আরুকে ঘুরিয়ে নিয়ে ওর বুকের সাথে আরুর পিঠ ঠকালে।আয়ান বরুর চুলে মুখ গুজে দিলো।ঘ্রাণ নিচ্ছে আরু চুলের এক মিষ্টি ঘ্রাণ।যা আরুকে কাছে পাওয়ার তীব্র আকাঙ্খা জন্ম দিচ্ছে।আরু এক মনে আকাশে তাকিয়ে আছে।এতোক্ষন যেই চাঁদ ছিলে তা এখন বিশাল মেঘে ঢেকে দিয়েছে।মেঘেরা রাজত্ব করে চলেছে পুরো আকাশ জুড়ে।মাঝে মাঝে আবার চাদের আলোয় আলোকিত করার সুযোগ দিচ্ছে মেঘ।সাথে আছে ঠান্ডা বাতাস।যা শরীর ছুয়ে দিচ্ছে।
প্রায় অনেকক্ষন পর আয়ান বলে,
আয়ানঃ ভালোবাসি।সারাজীবন ভালোবেসে যাবে।সারাজীবন আগলে রাখবো।কথা দিলাম।
দেবে সারাজীবন আগলে রাখার,ভালোবাসার অধিকার?

আরু হটাৎ আয়ানের এমন কথা বুঝলো না।আয়ানও বুঝলো আরু ওর কথা বুঝতে পারে নি।তাই আয়ান আরুকে আবার নিজের দিকে ঘুরালো। আয়ান আবার বললো,
আয়ানঃ তোমাকে নতুন পরিচয় দিতে চাই।নতুন অনুভূতির সাথে পরিচয় করাতে চাই।তোমাকে ভালোবাসার এক আকাশ সমান আধ্যায়ের সাথে পরিচয় করা চাই।দিবে সেই অধিকার?

আরু এবার বুঝলো আয়ানের কথার অর্থ।আরু মাথা লজ্জায় মাথা নিচু করে নিলো।আয়ান আবার বললো,
আয়ানঃ আরু পাখি মে আই?

আরু সাথে সাথে আয়ানের বুকে মুখ গুজলো।আরুর আচরনে আয়ান হেসে দিলো।আয়ান ও বুঝে গেলে আরুর অব্যাক্ত কথা।তবুও আরুকে বললো,
আয়ানঃ নিরবতা সম্মতির লক্ষন।আমি কী ধরে নিবো?
আরুঃ জানি না।
আয়ানঃ হায়! এতো লজ্জা।তবে সব আজ শে…

আয়ানের মুখ চেপে ধরে বললো,
আরুঃ চুপ,অসভ্য।

আয়ান এবার শব্দ করে হেসে দিলো।আরু আবারও আয়ানের বুকে মুখ লুকালো।
আয়ান আরুকে কোলে তুলে নিলো এগিয়ে গেলো রুমের দিকে।
আজ ওদের এতো বছরের ভালোবাসা পূর্ণতা পাবে।এক হবে দুজনের আত্মা।মিশে যাবে একে অপরের সাথে।সারাজীবন সাথে থাকার অদৃশ্য প্রতিঙ্গা করবে।আর ওদের ভালোবাসার সাক্ষী হবে ওই চাঁদ।

চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here