হারাতে_চাই_না_তোমায় #পর্ব-৪৮

0
638

#হারাতে_চাই_না_তোমায়
#পর্ব-৪৮
#লেখিকাঃ_উম্মে_বুশরা

আজ মারিয়া ও রাফসানের বিয়ে।সবাই খুব আনন্দে আছে।হাসি,ঠাট্টা,হৈ হুল্লোড়ে মেতে উঠেছে মারিয়াদের বাসার সবাই।
আরু এখনো মারিয়াদের বাসায়।আয়ান অনেক চেষ্টা করেছিলো আরুকে নিয়ে যেতে কিন্তু পারে নি।যদিও আরু যেতে চেয়েছিলো কিন্তু পরে কয়েকটা করনে যায়নি।প্রথম কারন,মারিয়া আছে মারিয়ার মা যেতে দেয়নি।আরু আর যাওয়া ইচ্ছে করে।আর দ্বিতীয় কারন,আয়ানের কালকের করা ঘটনা।এটার শাস্তি দিয়েছে আরু।সাথে আরেকটাও আছে,আজ পত্রপক্ষ হয়ে না আসা পর্যন্ত আরুর সাথে কোনো কথা,দেখা কিছু নেই।যেহেতু কালকে এতো কাহিনী করে এখামে এসেছে তার শাস্তি।এমন কথদ শুনে আয়ান মনে হয় তখনই হার্ট অ্যাটাক করে মরে যেতো।কিন্তু না পরে মরে নি।কারণ ও মরে গেলে ওর আরুপাখিকে কে ভালোবাসবে,কে আগলে রাখবে,কে আরুকে জ্বালাবে এসব ভেবে আয়ান ওর হার্টকে বলেছে এখন অ্যাটাক করিস না।পরে করিস।কিন্তু এখন থাকবে কী করে সেটা নিয়ে আরুকে অনেক বুঝিয়েছে কিন্তু আরু বুঝতে নারাজ।আরু নিজের সিদ্ধান্ত থেকে একটুও নড়েনি।শেষে আয়ান না পেরে চলে যেতে হয়েছে।কিন্তু শর্ত হিসেবে দিয়েছিলো “যদি আয়ান এই এক রাত ওর সাথে দেখা না করে কথা বলে থাকতে পারে তাহলে কাল আয়ান যা বলবে আরুর তাই শুনতে হবে”। এটা শুনে আরু কিছুক্ষন নিজ মনে ভেবে রাজি হয়ে গেলে।তারপর আয়ান রা চলে গেলো।
————-
মারিয়াকে আজ লাল রঙের লেহেঙ্গা পড়ানো হয়েছে।সাথে ব্রাইডাল মেকআপ।ওকে আজ খুব সুন্দর লাগছে।
তন্নি আজ মেরুন কালারের শাড়ি পরেছে যার পার গোল্ডেন আর পুরো শাড়িতে গোল্ডেন পাথর বসানো।সাথে গোল্ডেন হিজাব।ওকে আজ সুন্দর লাগছে।
আরু আজ নীল রঙের শাড়ি পরেছে।যার পার লাল রঙের।পুরো শাড়িতে গোল্ডেন পাথর বসানো।সাথে লাল রঙের হিজাব।আরুর মুখে তেমন কোনো সাজ নেই। তবুও ওকে আজ ওকে সুন্দর লাগছে।
ছেলেরা দেখে আজ পাগলা নদ হয়ে যায়।
সময় এলো রাফসানদের চলে আসার।আরু আর তন্নি মারিয়ার আরো কিছু কাজিন সহ সবাই মারিয়ার পাশে বসে ছিলো।বর এসেছে শুনে সবাই সবাই দৌড়ে চলে গেলো।মারিয়ার হটাৎ যেনো লজ্জায় পুরো শেষ হয়ে যাচ্ছে।এতো লজ্জা ও কেনো পাচ্ছে?রাফসানকে তো চিনে ওঠে ভালোবাসা।আজ ওদের এতো দিনের ভালোবাসা পূর্ণতা পাবে।তাহলে কেনো এতো লজ্জা,নার্ভাস হচ্ছে।মারিয়াকে হটাৎ এমন চেহারা বানাতে দেখে আরু বলে,
আরুঃ কী রে চেহারা এমন করে রেখেছিস কেনো?
মারিয়াঃ ইয়ার আমার না কেমন যেনো লাগছে।লাইক ভয় না লজ্জা আমি বুঝতে পারছি না🙁
তন্নিঃ ওমা ভয় করবে কেনো?তুই রাফসান ভাইকে কী আজ প্রথম দেখবি নাকী?
মারিয়াঃ না সেটা না আমি তোদের বুঝাতে পারছি না।
আরুঃ আচ্ছা বুঝেছি।দেখ এই সময়টা সব জীবনেই আসে।নিজের পরিবার,আত্নীয় সব পিছনে রেখে নতুন কারো হাতে হাত রেখে নতুন জীবনে পা রাখা।নতুন করে নিজের পরিচয় গড়ে তোলা।নতুন একটা পরিবার পাওয়া সেই পরিবারে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া।এসবই প্রতিটটা মেয়ের জীবনের মূল পয়েন্ট।এসব কিছুর মাঝে একটা কথা হলো,যার হাত আমি ধরবো সেই মানুষটা কেমন?সে কী সব সময় আমাকে আগলে রাখতে পারবে?তার হাতটা কী ভরসায়?মাঝ পথে আমাকে ছেড়ে চলে যাবে না তো?এসব যদি কাটিয়ে নিয়ে সেই মানুষ টা তোকে সুখে রাখে,ভালোবেসে আগলে রাখে তাহলে তুই অবশ্যই সুখী হবি।এবার বল যা যা বললাম এগুলো কী কখনো রাফসান ভাই তোর সাথে করবে?
মারিয়াঃ না।
আরুঃ তাহলে এতো ভয় কিসের।

মারিয়া কিছু বললো না।শুধু হেসে দিলো।আরু আবার বললো,
আরুঃ আর তাছাড়া আজ তো ফাস্ট নাইট
সেটার প্রিপারেশন নাও😉।
মারিয়াঃ ধ্যাত।কী যে বলিস।(লজ্জা পেয়ে)
তন্নিঃ আহা লজ্জাবতি রে।এই লজ্জাই আজ রাফসান ভাই ভাঙবে।
মারিয়াঃ কী বলছিস এসব?যাহ
আরুঃ আরে মারু বুঝিস না?ভাইয়াও তো মনে হয় আমাদের তনু বেবির লজ্জা ভেঙে ফেলেছে।তাই ওর এসব বলতে লজ্জা করে করেনা।
তন্নিঃ এমন ভাব করছিা যেনো আয়ান ভাইয়ার সাথে কিছু হয়নি।
আরু কিছু বললো না।আরুকে চুপ দেখে তন্নি বুঝলো ও করা বলেছে।ওদের সম্পর্ক যে এখনো স্বাভাবিক হয়নি তাও মারিয়া আর তন্নি বুঝতে পেরেছে।তন্নি কথা ঘুরানোর জন্য বললো,
তন্নিঃ এই আরু চল।আমরা না শালী আমরাও গেইট ধরবো।
মারিয়াঃ হুম যা।তারপর ভাগে যা পাবি তার ভগ দিতে ভুলিস না।
তন্নিঃ উহহ😏।সখ কতো।তোর জামাইকে বলিস বেশি এমাউন্ট দিতে।তাহলে তুই ও ভাগ পাবি।
মারিয়াঃ আরে বেশি না দিলে ভিতরে ঢুকতে দিবি না।

।তন্নিও উঠে গেলো যাওয়ার জন্য এদিকে আরুকে এখনো বসে থাকতে দেখে তন্নি দরজা থেকে ফিরে এসে বললো,
তন্নিঃ কী রে চল যাবি না?
আরুঃ কোথায়?
তন্নিঃ এতোক্ষন কী বললাম?
আরুঃ ওহহহ হ্যা চল।
———-
এদিকে সেই কখন থেকে দু’জন মানুষ চাতক পাখির মতো করছে কখন তাদের প্রেয়সীকে তারা দেখবে।তাদের চোখ গুলো অস্থির হয়ে খুঁজে চলেছে তাদের প্রিয়তমাকে।কিন্তু না এতোক্ষন হলে ওরা এসেছে কিন্তু তাদের কোনে পাত্তাও নেই।আর সেই মানুষ দু’টি হলে অনিম আর আয়ান।ওরা এখন বিরক্ত এই গেইট ধরা বিষয়টা।কারন ভিতরে ওরা ঢুকতে পারছে না।ওদের যেতে দিচ্ছে না কেউ।কনে পক্ষের দাবী না মানা পর্যন্ত ওদের ভিতরে ঢুকা নিষেধ।এদিকে আয়ান ভাবছে যদি ঢুকতে পারতে তাহলে আরু কোথায় আছে তা দেখতে পারতো।কোন গুহায় গিয়ে লুকিয়েছে।আয়ানও দেখতো।ওকে শাস্তি দিয়ে নিজে আরামে আছে।আয়ান কাছে পেলে বুঝাতো আরাম কাকে বলে।কিন্তু এখান থেকে তো ছাড়াই পাচ্ছে না।এদিকে দুপক্ষ ভেজাল বিধছে।রাফসানদের সবাই বার-বার আয়ানকে বলছে ও যেনো কিছু বলে কিন্তু আয়ান সেদিকে মন নেই।ও তো ওর ধ্যানে আছে।একটু পর মারিয়ার এক কাজিন বললো,”এদের সাথে এভাবে হবে না।আরিশা আপু আর তন্নি আপুকে ডেকো আনো”।এই কথা শুনে আয়ান আর অনিম যেনো মনে হয় হাতে চাঁদ পেয়েছে।ওরা তো মনে মনে ভিষণ খুশি।ওদের মন চাচ্ছে এই মেয়েটা একটা চুম্মা দিতে🤭।কিন্তু না এই ভুলটা ভুলেও করা যাবে না।নাহলে ওদের সুন্দর ঠোঁট গুলো থেঁতলে দিবে ওদের দুই রণচণ্ডী।তাই এসব কথা ভাবা যাবে না।

আরু আর তন্নি একসাথে আসছে।ওদের দেখে আয়ান আর অনিম হা হয়ে আছে।আবারো নতুন করে ওদের প্রেমে পরলো।এই মেয়ে গুলো যেনো পন করেছে প্রতিদিন,প্রতি মূহুর্তে,প্রতিটা কাজে ওদের প্রেমে ফেলবেই।ওরা যখন মুগ্ধ হয়ে আরু আর তন্নিকে দেখছিলে ততোক্ষনল আরুরা চলে এসেছে গেইটের কাছে।রাফসানের কথায় হুস এলো আয়ান আর অনিমের।
রাফসানঃ ভাবিরা প্লিজ এখান থেকে তোমাদের এই ছোট দেবরকে উদ্ধার করো।
আরুঃ কে ভাবি?আমারা?
আয়ানঃ তো তোমরা ছাড়া আর কে আছে এখানে?
আরুঃ স্যারি।বেয়াই সাহেব আমরা না এখানে কারো ভাবি,না করো বউ,আর নে কেউ আমাদের স্বামী আর না কেউ আমাদের দেবর।
আয়ানঃ মানে😳।কে তোমার বেয়াই😦
তন্নিঃ কেনো আমাদের কী চোখে পরে না?আমরা এখন আপনাদের বেয়াইন।আর বরের শালিকা’স।
অনিমঃ কী বলছো এসব?মাথা ঠিক আছে?
আরুঃ কাথা যথেষ্ট ঠিক আছে।এখন আমাদের পাওনা আমাদের মিটিয়ে দিন আর আপনারাও সুন্দর মতো ভিতরে ঢুকতে পারবেন।

আয়ান এবার কিছু একটা ভেবে বাঁকা হেঁসে বলে,
আয়ানঃ তা নাহয় বুঝলাম বেয়াইন সাহেবারা।কিন্তু আপনাদের দাবী টা শুনি একটু।
আরুঃ ২০ হাজার ছাড়ুন।ভিতরে আসুন।
অনিমঃ কী?😳মগের মুল্লুক নাকী?২০ হাজার😮
তন্নিঃ ১ মিনিট গেলে ২ হাজার করে বাড়বে।
অনিমঃ অসম্ভব।এটা মানি না।
তন্নিঃ ২২ হাজার।
অনিমঃ আরে…
আয়ানঃ আচ্ছা।আপনাদের দাবী মানলাম।কিন্তু আমাদের ও শর্ত আছে।
আরুঃ কী শর্ত?🤨
আয়ানঃ পুরো অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত আপনারা আমাদের সাথে সাথে থাকবেন।মানে হলো আমাদের সময় দিবেন।এর মাঝে কোথাও যেতে পারবেন না।এমনকি ওয়াশরুমেও না।রাজী?
আরুঃ এটা আবার কেমন শর্ত?😦
আয়ানঃ জী এটাই আমাদের শর্ত।আর আপনারা না মানলে আমরা বর নিয়ে চলে যাচ্ছি।

আরু বেশ বুঝতে পেরেছে আয়ান ওকে জব্দ করার জন্য এমন কথা বলেছে।আরুও মনে মনে ভেবে নিয়েছে কী করতে হবে।ও মনে মনে হেঁসে বললো,
আরুঃ বেশ আমরাও রাজী।

এভাবেই কথা কাটাকটি হওয়ার পর আরুর ওদের ২০ হাজার নিয়ে তারপর রাফসান দের ভিতরে আসতে দিলো।
এদিকে সবাই যখন চলে যাচ্ছে তখন আয়ান আরুকে পিছন থেকে এসে ওর হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে গেলো একটা শান্ত নিরিবিলি জায়গায়।যেহেতু সেন্টারে বিয়ে হচ্ছে সেহেতু হল রুমের একদম পিছনে নিয়ে গেলো।আরুর এমন হাতে টান পরাতে ও তাকিয়ে দেখে আয়ান।তারপর চারপাশে তাকিয়ে হাত ছাড়ানোর জন্য বারবার ‘ ছাড়ুন’ ‘ছাড়ুন’ করছে।কিন্তু আয়ান ছাড়েনি।একদম জায়গায় এসে ছেড়েছে।
আরু রেগে বললো,
আরুঃ এটা কেমন ব্যবহার?মানুষ দেখলে কী ভাববে?
আয়ানঃ কে কী ভাবলো তা দিয়ে আমার যায় আসে না।আর আমি আমার বউকে এনেছি অন্যের বউকে এনেছি নাকী?
আরুঃ উফ!আপনার এসব কথা রাখুন।কেনো এনেছেন সেটা বলুন।
আয়ানঃ রোমাঞ্চ করার জন্য😉।
আরুঃ রাখুন আপনার রোমাঞ্চ।সময় নাই গময় নাই এখন এখানে আসছে রোমাঞ্চ করতে।
আয়ানঃ তোমার এখানে ভালো না লাগলে চলো বেডরুমে যাই।
আরুর হাত ধরতে নিলে আরু দুপা পিছিয়ে গিয়ে বললো,
আরুঃ এগুলো কেমন অসভ্যের মতো কতা বার্তা?
আয়ানঃ সে কী তুমিই তো বললে এখানে আসছে রোমাঞ্চ করতে।তাই ভাবলাম এমন খোলামেলা জায়গায় হয়তো তোমার রোমাঞ্চ করা পছন্দ না।
আরুঃ আমি কী একবারো বলেছি বেডরুমে রোমাঞ্চ করতে?
আয়ানঃ সে তুমি মনে মনে বলেছো।কিন্তু মুখ ফুটে বলতে পারছো না লজ্জায়।আর আমি তো তোমার মনের কথা এমনিও বুঝি।
আরুঃ আপনি…….সরুন।যেতে হবে আমার।ওখানে সবাই খুঁজবে।

আরু চলে যেতে নিলেই আয়ান ওর হাত টেনে ওর কাছে নিয়ে আসে।যার ফলে আরু গিয়ে পরে আয়ানের বুকের উপর।আয়ান সাথে সাথে আরুকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিয়ে আরুর কপালে কপাল ঠেকিয়ে বলে,
আয়ানঃ খুঁজুক সবাই।খুজতে খুজতে শহিদ হয়ে যাক।আমি আমার বউকে ছাড়ছি না।
আরুঃ ক…কী করছেন?কেউ এসে পরবে।
আয়ানঃ আসুক।আমাকে আগে আমার আরু পাখিকে দেখতে দাও।১৩ ঘন্টা,৪৮ মিনিট,১৭ সেকেন্ড তোমাকে না দেখে ছিলাম।এখন মন ভরে দেখতে দাও।

আরু আয়ানের টাইম শুনে অবাক।এগুলো কীভাবে মনে রেখেছে ও।আরুকে এমন ভাবতে দেখে আয়ান বলে,
আয়ানঃ সেটা তোমাকে ভাবতে হবে না কীভাবে এতো টাইম দেখে রেখেছি।এমনকি তুমি যখন ৫ বছর আমার থেকে দূরে ছিলে তখনও আমার প্রতিটা ঘন্টা,মিনিট,সেকেন্ড,নেনো সেকেন্ড সবটা টাইম করে রেখেছি।

আরু পুরো অবাক।এভাবেও কেউ টাইম করে রাখতে পারে।তা ওর জানা ছিলো না।আয়ান আবার বলে,
আয়ানঃ আমার আজকের শর্তটা মনে আছে তো?
আরুঃ কী শর্ত?
আয়ানঃ বারে?ভুলে গেলে?

আরু কিছুক্ষ ন মনে করার চেষ্টা করলো।পরে ওর মনে পরলো।তাই আরু বললো,
আরুঃ সেটা সময় হোক তারপর দেখা যাবে।
আয়ানঃ উহু।পরে পাল্টি মারবে তুমি।যদিও পারবে না মারতে।মনে থাকে যেনো আমি যা বলবো তাই দিতে হবে আমাকে।
আরুঃ দিতে হবে মানে?ক….কী দিতে হবে।

আয়ান আরুর কানের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বলে,
আয়ানঃ এই মনে করো আমাদের স্বামী স্ত্রীর মাঝে যা এখনো বাকী আছে😉।তুমি আর আমি রাতে……..

আয়ানকে আর বলতে না দিয়ে ওর মুখে হাত দিয়ে আরু বলে,
আরুঃ একদম চুপ।আমাদের যেতে হবে।ছাড়ুন।
আয়ানঃ এখন ছাড়লাম কিন্তু রাতে না।

বলে আয়ান আরুর কপালে একটা চুমু খেয়ে ওকে ছেড়ে দিলো।তারপর ওর হাত ধরে হলরুমের দিকে এগিয়ে গেলো।
————-
বিয়ের কাজ মোটামুটি শেষ।কিছুক্ষন পর বিদায় হবে।সেটার প্রস্তুতি চলছে।এর মাঝে আয়ান আরুকে ১ মিনিটের জন্যও আলাদা ছাড়েনি।কারণ শর্ত দিয়েছিলো সবসময় সাথে সাথে থাকতে হবে।তাই করছে।কিন্তু এতে আরু মহা বিরক্ত।এমন কেউ করে।আর এদিকে অনিমও তন্নির থেকে এক চুল নড়েনি।
হটাৎ আয়ানের কল এলো অফিস থেকে।আয়ান এখানে মানুষ বলে ঠিক মতো কথা বলতে পারেনি তাই ও আরুকে “আসছি।এখান থেকে কোথাও যাবে না”। বলে চলে গেলো।এদিকে আরু দাড়িয়ে আছে।
হটাৎ কেউ ওকে পিছন থেকে বললো,
–এক্সকিউজ মি..

আরু পিছনে তাকিয়ে দেখে একটা ছেলে।এই পুরো অনুষ্ঠানে একবার কী দুবার দেখেছ এই ছেলেকে আরু।তাই কোনপক্ষ তা বুঝতে পারছে না।তাই আরু বললো,
আরুঃ জী আমাকে বলছেন?
—-ঃ হ্যা।হাই আমি রাফি।আপনি।
আরুঃ আরিশা😊
রাফিঃ ওহহ।নাইস নেইম।নাইস টু মিট ইউ।
আরুঃ সেইম😊।
রাফিঃ তা আপনি কোন পক্ষ?
আরুঃ বলতে পারেন দু পক্ষই।
রাফিঃ ঠিক বুঝলাম না।
আরুঃ বাদ দিন আপনি কোন পক্ষ?
রাফিঃ আমি…..

আর বলতে পারলো না এরমাঝে আয়ান এলো।আয়ান এসে বলে,
আয়ানঃ কী হচ্ছে এখানে?
রাফিঃ ওহহ আয়ান ব্রো তুমি😊
আয়ানঃ হ্যা আমি কিন্তু তুমি এখানে কী করছো?🤨
রাফিঃ আসলে জানতে এসেছিলাম কোনপক্ষ।
আয়ানঃ ও কোন পক্ষ তা যেনে তুমি কী করবে?
রাফিঃ আসলে ব্রো…(মাথা চুলকে মুচকি হেসে)

আরু শুধু এদের দু’জনের দিকে তাকিয়ে আছে।রাফির মুচকি হাসি দেখে আয়ান কিছুটা আন্দাজ করতে পেরেছে কী হয়েছে আসল কাহিনী।আয়ান বললো,
আয়ানঃ আরু তুমি তন্নির কাছল গিয়ে দাঁড়াও আমি আসছি।
আরুঃ আচ্ছা।
রাফিঃ ছোট করে আরু..বাহ সুন্দর তো।
আয়ানঃ সেটা সুন্দর না অসুন্দর তা তোমার জানতে হবে না😬।আর আরু তোমাকে যেতে বলেছি।
রাফিঃ হেই ১ মিনিট।ব্রো তুমি ওকে চেনো?

আয়ান আর নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে পারলো না
আরুকে টেনে এনে নিজের পাশে দাড় করিয়ে আরুর কাঁধে হাত রেখে বললে,
আয়ানঃ মিসেস আরিশা আয়ান রহমান।ও তোমার ভাবি।

রাফি পুরো (😧😧) এমন করে আছে।ও প্রেম করার আগেই ছেঁকা না খেয়ে ব্যেকা হয়ে গেলো।রাফি আরু আর আয়ানের দিকে তাকিয়ে বলে,
রাফিঃ আব…আমার একটা কল করতে হবে।আসছি।স্যরি ভাবি আমি বুঝতে পারিনি।
আরুঃ না ইট’স ওকে।

রাফি চলে গেলে।রাফি গেলে আয়ান আরুর দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে চলে গেলে।আয়ানকে যেতে দেখে আরু বললো,
আরুঃ আজিব!আমি কী করলাম এখানে।আমার কী দোষ।কেউ নাম জিজ্ঞেস করলে না বলে চুপ করে থাকবো।শুধু শুধু আমাী উপর রেগে চলে গেলো।খাটাস,খচ্চর কোথাকার।দেখিস তোর বউ তোকে সারাজীবন জ্বালাবে শান্তি দিবে না।

আবার ভেবে বলে,
আরুঃ ধুর!কী বলি।আমিই তে ওর বউ।…উফ! পাগল হয়ে যাবো এর জন্য একদিন।আমি ওকে সারাজীবন জ্বালাবো কী এ আমাকে সারাজীবন জ্বালিয়ে যাবে🤦‍♀️😫।যাই দেখি কোথায় গেলো।

আরু গেলে আয়ানকে খুজতে।

চলবে………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here