ইরার কথা পর্ব – ৮

0
312

গল্প – ইরার কথা

পর্ব – ৮

: ইরা এ্যাই ইরা?
ঘুম ঘুম চোখে রাতুলের চিৎকার কানে পৌছলেও প্রথমে বুঝিনি এটা কি সত্যি কিনা।
সাধারনত রাতুল চেঁচায় তবে এত জোরে না।
শীত শীত লাগছে বাতাসটা। বালিশটা আকঁড়ে ধরে পাশ ফিরতেই ধড়াম করে ডোর লক করল

আমি ও চেঁচিয়ে উঠি।
: ইশ! একটু ঘুমাতেও পারলাম না। কি হচ্ছে এসব?
মন আমার এমনিতে ভালো।
কারন স্বপ্ন স্বপ্ন অনুভুতিটা আজ দিনের আলোয় জ্বলে উঠেছে আচমকা ফিকে রঙা দিন শেষ। বর্নিল ছোঁয়ায় আমি বদলে যাবো। এতেই আমি ঘোরের মাঝে আছি।
আমার ঘোর কেটে গেলো রাতুলের চেহারা দেখে।
ওর রাগি মুখখানা একদম আমার সামনে।
: কি ডাকছি যে শুনতে পাও না?
ঝাপসা চোখ কচলে বিছানায় উঠে বসলাম। রাতুলের হট চেহারা দেখে আপাতত শীত পালিয়েছে। জিরো ডিগ্রী তাপমাত্রা এখন ত্রিশ ডিগ্রী সেলসিয়াসের ঘরে।
: ঘুমাইয়া গেছিলাম তো।
আয়েশ করে শরীর মোচড় দিয়ে বিছানা থেকে নামার আগে দেখি রাতুলের গায়ে অফিসের পোশাক। আমি একটু মনে হয় ধাক্কা খেলাম।
রেড ওয়াইন কালারের শার্ট আর ব্ল্যাক প্যান্ট। টাই খোলা। বোতামও খোলা।
ঘামে ভেজা বুকের ভেতরের অনেকটা প্রকাশ্য। লেপ্টে আছে বুকের লোম। তার উপর পারফিউমের কড়া ঘ্রান। চোখ পড়লো সেখানেই। খোলা বুকে। উফ! এতটা টানে কেন। ইচ্ছে হলো আরেকবার মরে যাই এই তিন সন্ধ্যায়। কিন্ত পরিস্থিতি অনুকুলে নাই। চোখ সরিয়ে নিতে হলো।মনকে বুঝলাম। নাহ তাকাবো না।
ফিরিয়ে নিলাম দৃষ্টি। কিন্ত বারবার একই জায়গায় চোখ যাচ্ছে। নাছোড় চোখ।
প্রেম ট্রেম এই ভর সন্ধ্যায় কেমনে যে ভর করলো।
জোর করে স্বাভাবিক হবার চেষ্টাকরি।
কিন্ত রাতুলের বাজখাঁই আওয়াজে বুকের ভেতর ঝড় বইয়ে গেলো। প্রেম গেলো উড়ে।
: এসব কি ইরা।
কত বড় সাহস তোমার আমাকে না বলে এতদুর চলে গেছো?
আমি ড্যাবডেবে চেয়ে আছি। ভাবখানা এই যেন কিছুই জানি না।
একদম ভেজা বিড়াল।
: তুমি বোধহয় খুব টায়ার্ড রাতুল।
এক কাজ কর, চট করে ফ্রেশ হয়ে আসো। দুজন একসাথে চা খাই। আর আজকে তোমার জন্য খেজুরের গুড়ের পায়েশ করেছি। তোমার তো আবার মিষ্টি পছন্দ। কিসমিশও দিয়েছি।
এটুকু বলে আমি দুষ্টমি করে হাসলাম। হাসির কারন হলো কিসমিশ। কিসমিশ নিয়ে বিশেষ একটা ব্যাপার আছে রাতুলের। যতবার মিষ্টি কিছু রান্না করি ঐ কিসমিশ ঘোল পাকায়। সেটাও গোপনীয় বিষয়।

আমি হাসছি কিন্ত আমার মিষ্টি হাসি রাতুলকে খুশী করতে পারেনি। সে আরো রেগে গেছে। যাকে বলে কঠিন রাগ। এই কঠিন রাগ নিয়ে রাতুল প্রচন্ড উত্তেজনায় কথা বলছে।
: একদম চুপ ইরা। ফাজলামো করো?
এই বলে সে ফোনটা অন করল। তারপর
আমি দেখলাম নিউজফিডে জ্বলজ্বল করছে আমার আর তাশরিফের একটা পিক।
পিকটা আপলোড দিয়েছে তাশরিফ আর ট্যাগ করেছে শেহনাজকে। আর এতেই চোখে পড়ছে রাতুলের।
আমার মাথা বনবন করে ঘুরছে। এত বড় ধরা না খেলেও পারতাম। তাশরিফের সাথে আমার পিকটা এতোটাই সুন্দর হয়েছে যে যে কারোর চোখ পড়বে।
আসলে সেই মুহুর্তটা ছিল অমূল্য। প্রাপ্তির সাথে সুখের কম্বিনেশন। অত্যাশ্চর্য বিষয় আর কি। আর সেই সুখ আমার চেহারায় ফুটছে। গ্লোয়িং করছে তারকার মত।
কিন্ত এই গ্লোয়িং চেহারা যে মহাবিপদে ফেলেছে আমাকে। কি করি কি করি। আমি বোকা বনে গেছি। তবে মনে মনে বুদ্ধি আটছি এই বিপদ থেকে বাঁচবার।
: এ্যাই শোনো না হইছে কি শেহনাজ আমাকে সারপ্রাইজড করতে গিয়ে এই কান্ডটা করছে।
বিলিভ মি। আমি তাশরিফের সাথে একা ছি্লাম না ওখানে।
রাতুলের লাল চোখে তীব্র ঘৃনা দেখতে পাচ্ছি। জানি না এরপর কি কি হতে যাচ্ছে।
: চুপ, একদম চুপ। মিথ্যেবাদী কোথাকার। কি খুব শখ হইছে নোংরামি করার, তবে যাও। দরজা খোলা আছে। বাইরে অনেক পুরুষ লোক তোমাকে বরন করতে বসে আছে। যাও ওদের কাছে।
এতক্ষন তো চুপই ছিলাম। কিন্ত রাতুলের নোংরামো চরম সীমায় পৌঁছে গেছে। এটা সহ্য করা কঠিন।
: তুমি ঠিক আছো রাতুল?
ক্রোধের আগুন ঠিকরে বেরুচ্ছে ওর চোখ থেকে।
: তুমি বুঝছো তুমি কি বলছো? এই যুগে বাস করে তুমি কথা বলছো ষাট দশকের চিন্তায়। এসব বাজে ভাবনা কি করে আসে তোমার, আমি কি এমন করেছি বলো তো।
গান তো কবেই ছেড়েছি। শখের দুনিয়ায় এখন সংসার বাচ্চা। সবই তো ভুলে ছিলাম রাতুল।
কিন্ত তাই বলে সবসময় এক রকম যাবে জীবন এটা ভাবলে কি করে?
আমি যদি নিজের মত করে ভালো থাকতে চাই তাতে কি তোমার খুব আপত্তি?
রাতুল প্রশ্নবোধক চাহনি।
: তোমায় কে মানা করেছে ভালো থাকতে?
সবই তো পাচ্ছো চাইলেই। কিন্ত এতেও তোমার পেট ভরছে না?
আমি হেসে ফেললাম।
: আমি নিজের মত ভালো থাকার কথা বলছি রাতুল। আমার শখ আমার পছন্দগুলো আমাকে ভালো রাখবে। তুমি কি চাও না আমি ওগুলো নিয়ে খুশী থাকি।
: বাহ, ইরা বড় বেশী বুঝে যাচ্ছো, ঐ ছেলেটা কি নাম যেন, তোমায় কি ক্লাস করাচ্ছে ভালো থাকার উপায় নিয়ে।
: রাতুল তুমি এত সংকীর্ণ চিন্তা কি করে করলে?
ঐ ছেলে আমাকে বোঝাতে আসবে কেন আমি কি অবুঝ?
রাতুল এক ঝটকায় জানালার গ্লাসে ঘুষি মেরে বসল। আমার বুক ঢিপঢিপ করছে। লাগামছাড়া রাগ মানুষটার। এটা খুব ভয়ের। অতিরিক্ত কোনকিছু ভালো না। আমি জানি ও মুখে এখন যা আসবে তাই বলবে। কিন্ত কতটুকু বলবে।কতটুকু বললে মেনে নিতে পারব। সহ্য করতে পারব। সবারই একটা সীমা থাকে সহ্য করার। মেনে নেয়ার। মানুষ তো আমি। আমার চোখ বেয়ে পানি আসছে কিন্ত সেটা আটকাতে পারছি না যদিও নিজেকে আমি শান্ত করার সব রকম চেষ্টা করছি।
অপমানিত হবার আগে দেখি না যুক্তিগুলো দাঁড় করাতে পারি কিনা।
: তুমি অবুঝই ছিলে। ঐ ছেলে তোমাকে বুঝিয়ে ফেলেছে। নইলে তলে তলে এতদুর কেমন করে এগিয়ে গেছো?
আমি লজিক পাচ্ছি না। কি বলবো এই মানুষটাকে। তবুও শেষ চেষ্টা করে গেলাম।

: রাতুল আমি একা যদি এমন করতাম তবে আমায় এসব বলার অনেক কারন ছিল। আচ্ছা আজকাল মেয়েরা তো ঘরে বাইরে অনেক কাজ করছে। আর সবখানে নারী পুরুষ একসাথেই কাজ করে।এখানে আলাদা করে ছেলে মেয়ের প্রভেদ দেখার মত মন মানসিকতা এখন নেই। ওসব পুরানো চিন্তা। এখানে তাশরিফ রায়হানের কথা আসছে কেন? সে কি একা আমাকে নিয়ে কাজ করে? না তো। এমন অনেক অনেক মেয়ে ছেলে তার সাথে আছে, তাহলে এখানে আমাকে কেন একা দোষী করছো?
আমি কিছুটা থামলাম। বলবো আরো বলবো। আজ যতটা পারি ওকে থামাতে হবে।
: রাতুল তুমি যে অফিসে কাজ করো সেখানে সুন্দরী সুন্দরী মেয়েরা আছে না?
তুমি ওদের সাথে কাজ করো না?
অফিস ছাড়াও ট্যুর আড্ডা গেট টুগেদার সব প্রোগ্রামে মেয়েরা কি তোমাদের সাথে থাকে না?
নাকি মেয়েরা আলাদা ছেলেরা আলাদা কাজ করো।
: ইরা বেশী বলে ফেলছো। তুমি অফিস জবের সাথে নাচ গানের তুলনা করছো।
তুমি বুঝতে পারছো কোন জগতে ওরা তোমায় টেনে নেবে?
আমার বিস্ময়ের সীমা রইল না।
এসব কি বলছে ও।
: আমি সত্যি বুঝতে পারছি না রাতুল কি বলতে চাইছো তুমি
একটু আধটু গান করলে খুব বেশী ক্ষতি হয়ে যাবে তোমার?
: যাও কে মানা করেছে, যা ইচ্ছে করো।
যেদিন সব হারিয়ে আমার কাছেই ফেরত আসবা সেদিন মনে রাখবা এই বাড়িতে তোমার ঢোকা বন্ধ হয়ে যাবে ইরা।
: রাতুল তুমি কি পাগল হয়ে গেছো? আমায় তুমি আটকে রেখে কি প্রমান করতে চাইছো বলো তো?
আমি তো খারাপ কিছু করছি না।
আমাকে একটু বোঝার চেষ্টা করো, তোমার সংসার করছি বলে নিজের স্বাধীনতাও হারিয়ে ফেলতে হবে, আমার নিজের চাইবার কি কিছুই থাকতে নেই?
রাতুল হিসহিস করে উঠল।
: না কিছুই চাইবার থাকতে নেই। তুমি ঘর সামলাবে বাহির নয়। ওসব জলসা ঘরে নাচের জন্য তোমায় যেতে হবে না।
থমকে গেলাম আমি। শুধু কয়েক মিনিট ভেবে দেখলাম। কত বড় ভুলের মাশুল আমায় দিতে হচ্ছে জবটা না করার জন্য।

সন্ধ্যেটা নেমে গেছে নীল আকাশ জুড়ে। একটা সুন্দর দিনের সমাপ্তি ঘটে ঘোর কালো রাতের মধ্য দিয়ে। আবার অপেক্ষা নতুন সকালের। নতুন দিনের। জীবনটাও ঠিক এমন। রাত ভোর শেষে সোনালী রোদ্দুর স্নানে নব যাত্রায় শুরু হয় আরেকটা দিনের। আরেকটা অধ্যায়ের।
ঠিক আছে ধৈর্য ধরি। দেখি কি হয়।
মন শান্ত হচ্ছে। খুব ধীর লয়ে।
রাতুল রকিং চেয়ারে গা এলিয়ে দিয়েছে। ক্লান্ত বিষন্ন এক মানুষ। ছায়ার মানুষ। দেখলে কি মায়া লাগে?
লাগেই তো। কারন জীবনের এক অপরিহার্য অংশ এই সংসার। না ফেলা যায়। না পায়ে দলা যায়।
অসীম মমতা আর মায়ায় বাঁধা ঠিক এই জায়গায়।
আমরা মেয়েরা এই সংসারের মায়ায়, তার চোরাবালিতে ডুবতে ডুবতে তবুও আকঁড়ে রই।
কারন মায়ার জীবনে মরেছি কেবল আমরাই।
পুরুষ নয়।

অনেকটা ক্ষন দুজনেই চুপ। কেউ কিছু বলছি না।
একসময় আমিই বলা শুরু করি।
: দেখো রাতুল সংসার সংসার করে নিজের ক্যারিয়ার শেষ করলাম। কত আর ভালো লাগে বলো এক কাজ। একটু তো পরিবর্তন সবাই চায়। নাকি এটাও ভুল চাওয়া।
জীবনে চাওয়া পাওয়ার জায়গাটা মেয়েরা সংসারেই ঢেলে দেবে কিন্ত কেন?
একটু বোঝার চেষ্টা করো।
আচ্ছা সিয়াম ভাই তো শেহনাজ ভাবীকে গান করতে নিষেধ করে নাই। দেখছো উনাদের মাঝে কত সুন্দর সম্পর্ক।
আসলে তুমি এত জেলাসি কেন হচ্ছো রাতুল?
: ইরা মুখ সামলাও। আমার রাগ তুলো না, তাহলে বিশ্রী কান্ড ঘটিয়ে ফেলব।
: কি করবা, মারবা?
সেটাই তো বাকী আছে।
: ইরা শাট আপ।

রাতুল ঝড়ের বেগে ওয়াশরুমে ঢুকে যায়। এতক্ষন চিৎকার বাজে কথায় নিজেও উত্তেজনায় ছিলাম। রাগ দুঃখে স্থির ছিলাম। কারন রাতুল সামনে ছিল বলে। এখন রাতুল নেই কিন্ত আর আমার কান্না পাচ্ছে। খুব কান্না পাচ্ছে।
কি করে এমন বিহেভ করতে পারল ও।
আমার ইচ্ছে স্বপ্ন সংসারে বলি দিয়েছি নাকি।
কিসের জন্য এই ঘর এই বসতি। আমার বিন্দুমাত্র স্বাধীনতার মূল্য যেখানে নাই সেখানে কিসের ঘর কিসের সম্পর্ক।
টপটপ পানি ঝরছে। কিছুতেই থামাতে পারছি না।
হেরে যাবো আমি, এত সহজে? মন মানাতেও পারছি না।
ডোর লক করার কারনে আরিয়ানের কানে ঝগড়া পৌছায়নি। এটাই ভালো হয়েছে। কি জানি ছেলেটা বাহির থেকে শুনে আবার ফিরে গেলো কিনা।

রাতুল ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে সোজা গেস্টরুমে চলে যায়। পেছন ফিরে তাকায়নি একবারও। রুমেও আসেনি।
এরপর আমি অনেকটা সময় একা একা কাঁদলাম। নিজের সাথে যুদ্ধ করি। কিন্ত অবুঝ হচ্ছি বারবার। পারছি না সমঝোতার সাথে হাত মেলাতে। আর কত। কত, কত।
: আফা রাইতে কি ভাত রান্ধুম?
বিছানায় উপুড় হয়ে পড়েছিলাম। মিনুর ডাকে উঠে বসি। ঘরে আলো নেই। সেই কখন থেকে অন্ধকারে আছি।
: হুম।
আমি খুব স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করছি।
: আফা খালুজান কি খাইবো?
আমি গা ঝেড়ে বিছানা থেকে নামি।
: তুই গিয়ে জিজ্ঞেস করে আয়।

মিনু চলে গেছে। ওড়নাটা গায়ে জড়িয়ে আরিয়ানের ঘরে পা রাখতেই ছেলেটা জড়িয়ে ধরল।
: মা তুমি এতক্ষন কি ঝগড়া করছিলে তুমি?
আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম। এমন কথা এই ছোট্ট ছেলেটিও আঁচ করতে শিখে গেছে।
আমি মুখে হাসি এনে ওকে আদর করি।
: না বাবা, কে বলেছে ঝগড়া করি?
: কেউ বলেনি, আমি গিয়েছিলাম তোমার রুমে।দেখি বাবা জোরে জোরে কথা বলছে।
আচ্ছা মা ঝগড়া তো খুব খারাপ জিনিস তাই না?
আমি আরিয়ানকে বুকে চেপে ধরি।
: না বাবা আমরা কেউ ঝগড়া করিনি। কেউ না।

ছেলেটাকে বুকে ধরে রাখি। প্রচন্ড মমতায়। যেন ও বুঝতে পারে আমি কিংবা ওর বাবা ওকে এমন মমতায় ওকে আগলে থাকব। সবসময়। সবসময়।
ওর শৈশবের সুস্থ চিন্তায় না থাকুক ভয়, না থাকুক পরাজয়, না থাকুক কষ্ট।

রাতুল গেস্টরুমে পড়ে রইল সারাক্ষন। মিনু সেখানে গিয়ে চা দিয়ে এসেছে। পায়েশের প্লেট পাঠিয়েছি মিনুকে দিয়ে রাতের খাবারের জন্য ওকে ডাকতে গিয়ে মিনু দেখে এসেছে ওটাও পড়ে আছে।ছুঁয়েও দেখেনি।

আরিয়ানকে খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছি দশটার মধ্যে। আমি ডিনার করিনি। এক কাপ দুধ আর দুটো বিস্কিট খেয়ে ব্যালকনিতে বসে আছি।
তাশরিফ কল করেছিল। অল্প বিস্তর কথা বলে ফোন রেখে দিই। গানের রিহার্সাল করা লাগবে। এর জন্য সময় দেয়া আছে।কিন্ত কি করে বের হবো। কি করে। মাথায় এখন একটাই চিন্তা রাতুলকে বোঝাতে হবে। যদি এর জন্য শেহনাজের হেল্প লাগে তাও বোঝাবো। আগে শেহনাজকে সব জানাই।

চিনচিন ব্যথার দুঃখটা ভুলতে ফোন নিয়ে বসেছি। কিন্ত মন বসছে না। ফোন রেখে দিলাম।
চুপচাপ রকিং চেয়ারে দোল খাই। চোখ বুজে। বিষন্ন রাতের মন খারাপের সময়টা খুব একাকী। কত কথা মনে পড়ছে।
সময় কি অদ্ভুত জিনিস। কখনও সুখ সমুদ্রের মত কখনও দুঃখের ছায়ার মত জীবনে জড়িয়ে থাকে।
তবুও এই সময়ের কাছে কত প্রশ্ন কত অভিযোগ করি। কিন্ত ঠিকঠাক উত্তর মেলে না। মিলবেও না।
অন্তহীন অপেক্ষার পরও মেলে না।
আধো ঘুম ঘুম চোখে ক্লান্তি চেপে ধরেছে।
হঠাৎ করে ঘাড়ের কাছে একটা গরম নিঃশ্বাসের স্পর্শে দেখি রাতুল দাঁড়িয়ে আছে।
ওর চোখ মুখ ফোলা। চেহারা বিধ্বস্ত। কিছু বলতে চায় কি ও।
কিন্ত কি বলবে,,,

বিঃ দ্র- প্রিয় পাঠক প্রতিটা পর্বের পর আরেক পর্বের জন্য আপনাদের অধীর অপেক্ষা সত্যি অনেক বড় প্রাপ্তি আমার জন্য,,আপনাদের নিখাদ ভালবাসার জন্য এতগুলো পর্ব লিখতে পারছি, এটা অনেক সৌভাগ্যের বিষয়,
আপনারা আছেন বলেই আমি আছি,,আমার লেখা চলছে।
সবার কমেন্টের জবাবে এটুকু বলব অনেক ভালবাসা, অনেক শুকরিয়া রইল।
সাথে থাকুন।
পাশে থাকুন, এমন ভালবাসা নিয়েই থাকুন,

ওহো, আজও ভুলে গেলাম ” চলবে” লিখতে।
এখন আপনারাই লিখে দেন “চলবে ” 🥰🥰🥰🥰

…… তামান্না হাসান

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here