#তোমার_পিছু_পিছুপর্ব-১৬

0
308

#তোমার_পিছু_পিছুপর্ব-১৬

তামান্না যখন বাসের ঠেলা ধাক্কা আর উতপ্ত গরম পার করে অফিসে ঢুকল তখন ঘড়িতে ১০টা ছুই ছুই করছে। তামান্না “আল্লাহ, আল্লাহ” করতে করতে অফিসে ঢুকল। আজ আর তার রেহাই নেই। নিজের ডেস্কে বসার সময় পাশেই গ্লাসের ভিতর দিয়ে বর্নর রুমে একনজর দেখল,,,,, বর্ন বেশ মোটাসোটা একটা বইয়ের ভিতর মাথা ডুবিয়ে রেখেছে।
তামান্না ফোস করে দম ছাড়ল যাক বাবা বাচা গেল। ডেস্কে বসে কি মনে করে আরএকবার ওইদিকে তাকাতেই দেখে বর্ন ওর দিকে তাকিয়ে। তামান্না তাকাতেই বর্ন হাসল। তামান্নার বুকটা ধ্বক করে উঠল।
দুপুর দিকে তামান্না লাঞ্চ করে এমডির রুমে গেল কিছু ফাইল নিয়ে। নক করে ভিতরে ঢুকতেই বর্ন উৎসাহিত হয়ে বলল,
-মিস তামান্না ভালো সময় এসেছেন। এক কাজ করুন চট করে দুইকাপ চা করে নিয়ে আসুন। চা খেতে খেতে আপনাকে খুব ইন্টারেস্টিং একটা ব্যাপার বলি।
-আসলে স্যার এই ফাইলগুলো……………..
-ফাইল রাখুন এখানে পরে দেখব। আপনি কফি নিয়ে এসে বসুন। জলদি,, জলদি,,।
তামান্নার মেজাজ খারাপ হচ্ছে। খুব বেশি মেজাজ খারাপ হচ্ছে। এই ছেলের সমস্যা কি!! ওকে দেখলেই কি এর কফি খেতে মন চায়!!!! ওকে পেয়েছেটা কি,,,,,আশ্চর্য!! তামান্নার এখন নিজেকে এসিস্ট্যান্ট কম বুয়া বেশি মনে হচ্ছে।

তামান্না কফি হাতে বর্নর রুমে ডুকতেই বর্ন একটা হাসি দিল। তামান্না মনে মনে বলল, তরে রে ক্যাবলা বাবা একদিন এমন ঘুসি দিব যে সামনের দু পাটি দাত ভেঙে যাবে তখন দেখব কিভাবে এত কেলাস,,!
বর্ন চুকচুক করে কফিতে চুমুক দিচ্ছে আর হাত নেড়ে নেড়ে কথা বলছে। কথা বলছে না ঠিক, ও বুঝাচ্ছে। হাতের বইটা বন্ধ অবস্থায় টেবিলে রাখা। তামান্না আড়চোখে তাকালো “The Time Machine ” নামক বইটার দিকে….. এই বইয়ের ঘটনাই বর্ন ওকে খুব সুন্দর করে বুঝাচ্ছে……তামান্না খুব মনযোগী ছাত্রীর মত বর্নর প্রতিটা কথা শুনল। বুঝানো শেষ হলে বর্ন বলল
-ব্যাপারটা ইন্টারেস্টিং না??
-জ্বী স্যার।
-আমি জানতাম আপনার কাছে ভালো লাগবে।
-স্যার, একটা কথা,
-বলুন
-আপনি যে আমাকে বসিয়ে রেখে আপনার ইন্টারেস্টিং ব্যাপারগুলো বুঝান, এগুলো কি আমাকে ফ্রি শুনতে হবে নাকি এর জন্য আমাকে পেমেন্ট করা হবে।
তামান্না ইচ্ছা করেই কথাটা খোচা মেরে বলল,,, কারন বেশ কিছুদিন যাবৎ-ই বর্ন ফ্রী টাইমে তামান্নাকে ওর সামনে বসিয়ে রেখে এইসব বিভিন্নপ্রকার বই নিয়ে আলোচনা করে…. তামান্নাও আগ্রহী শ্রোতাদের মত শোনার ভান করে,,,,
কিন্তু তামান্নার এই খোচায় বর্নর মধ্যে কোনভাবান্তরই হলো না,,,,,বর্ন হাসি হাসি মুখ করেই বলল
-আপনি চাইলে পেমেন্ট করা হবে।
তামান্না অবাক হয়ে ভাবে এই হাবলাটা কি অপমানও বুঝে না নাকি।
-মিস তামান্ন আপনি এক কাজ করতে পারেন এই কাজটাকে ওভারটাইম ভাবতে পারেন। ওভারটাইমের জন্য একজন এমপ্লয়িকে যত পেমেন্ট করা হয় আপনাকেও তত করা হবে।

এই কথা শুনে তামান্নার আসলে খুশি হওয়া উচিত নাকি রাগ হওয়া উচিত ও ঠিক বুঝে উঠতে পারল না।ও উঠে বর্নকে কিছু জিগ্যেস না করেই বের হয়ে গেল রুম থেকে।

তামান্না বাসায় ফিরলো.…. খুশিতে বাকবাকুম করতে করতে… কারন,,,আজ ওর প্রথম স্যালারী দেওয়া হয়েছে…. তামান্না দুই হাত ভর্তি বাজার নিয়ে বাসায় প্রবেশ করল,,,,, ওকে এভাবে ভিতরে আসতে দেখেই ওর মামাতো বোন বিন্তি বলে উঠল,
-ওয়াও বাহুবালি আপু দেখছি,,,,, তুই তো পুরো বাজারই হাতে করে তুলে এনেছিস….
-আজকে ফিস্ট হবে রে,,,,যা মামীকে ডেকে নিয়ে আয়…
-মা পাশের ফ্লাটে গেছে,,,গরম গরম গসিপ গিলতে,,,,
তামান্নার মামী ফ্লাটে ফিরে এতসব বাজার দেখে যেনো পুরোই আক্কেলগুড়ুম অবস্থা,,,,
তামান্না মামীর হাতে ৫৫০০ টাকা তুলে দিয়ে বলল,
-মামী দুইবছর আমায় এখানে থাকতে দিয়েছেন,,,,তার প্রথম ঋণ শোধ করলাম,,,ধীরে ধীরে বাকিটাও করে দিবো…..।

(আসছে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here