বন্ধ দরজায় তুমি🖤পর্ব-১

0
1617

লোকটার মুখের কথা শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম। জন্মদিনের এমন গিফট হয়ত কেউ কাউকে দেয়নি। এরকম পরিস্তিতিতে কি বলা উচিত বুঝে উঠতে পারলাম না। ৩ মাস ধরে বাধ্য হয়ে লোকটার সাথে আছি। কিন্তু কখনো তার নজর আমার খারাপ লাগেনি বরং ভয় লেগেছে । আমাকে এখানে আনার কারন আমি জানিনা কিন্তু আজকে আমার ১৮ তম জন্মদিনের গিফট হিসেবে সেই কারনটা আমাকে বলল। কিন্তু একটা জিনিস বুঝলাম না যদি আমার সাথে এসবি করার হত তাহলে ৩ মাস অপেক্ষা করল কেন?এই ৩ মাসের একমাত্র আজকেই সে আমার সাথে এতটা শান্ত আর স্থীর ছিল। কিন্তু এর আগে আমি তার অসম্ভব রাগী রুপটা দেখেছি যেটা আমাকে সহ্য করতে পারত না। তাহলে সেটা কি রাগ ছিল? নাকি ৩ মাস নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার প্রচেষ্টা……..

আমি তায়্যিরাত ইবনে তুর। ৩ মাস আগেও একটা নরমাল মেয়ের মতই ছিলাম। কিন্তু আজ এই লোকটার #বন্ধ_দরজার🖤 অধিবাসীনি আমি। আর যার কথা বলছি মানে ওই লোকটি… লোকটি কেন বলছি?? কথা একটু হাস্যকর হলেও সত্যি বিগত ৩ মাসে লোকটির নাম আমার অজানা। ইনফেক্ট আমি নিজেও জানিনা সে আমার নাম জানে কিনা? ১ম দিন যখন আমাকে জোর করে আনা হয়েছিল তখন একবার জিজ্ঞেস করেছিল। কিন্তু আমি ভয় পেয়ে বলতে দেরি করি বিধায় সে আর শুনতে চায় নি। আর আমারো আর বলা হয়নি।

কাল রাত পর্যন্ত লোকটার সবকিছু ঠিক ছিল কিন্তু সকালের ঘটনাটা সবটা পাল্টে দিল….

সকালে ঘুম থেকে উঠে নিজের রুমের দরজা খোলা দেখে মনটা খুশিতে ভরে গেল। বিগত ৩ মাস আমি বাইরের রুমের পা রাখেনি। বাইরের আলোটা দেখা তো দুরে থাক। কিন্তু ক্রিচেনে ফ্রেশ সবজি নজরে পরতেই বড্ড ইচ্ছে করল নিজ হাতে কিছু ফ্রেশ খাবার খেতে। শুকনো খাবার খেয়ে অস্থির হয়ে উঠেছিলাম কিন্তু স্যালাদ কাটার জন্য ছুড়িটা তুলতেই….. লোকটি এসে ছুড়িটা ফেলে দিয়ে আমার চুল গুলো খুব জোরেই ধরে…..

”প্লিজ ছাড়ুন আমাকে লাগছে আমার। আজকে কিছুই করিনি আর করে থাকলেও আর করব না। তবুও ছাড়ুন ব্যাথা লাগছে।”

কিন্তু লোকটির যেন আমার কোনো কথা কানেই গেল না। একহাতে চুল পেচিয়ে আমাকে নিজের মধ্যে পুরোপুরি মিশিয়ে তাই নড়তেও পারছি না। বুঝতে পারলাম ছারার কথায় তার রাগটা বেড়ে গেল। চুল গুলোর সাথে এবার গলার নরম হাড্ডিটা দু আঙুল দিয়ে চেপে ধরল। এখন আওয়াজ বের হওয়া মানেই লোকটাকে আরো রাগিয়ে দেওয়া। আর এর পরিনত খুব ভালো না তাও জানি। তাই শব্দ না করে শান্ত হয়ে গেলাম। চুলে প্রচন্ড ব্যাথা আর কণ্ঠনালী চেপে ধরার কারনে প্রচন্ড কষ্ট হলেও রিয়েক্ট করলাম না।৷ আমাকে শান্ত হতে দেখে লোকটি আমার কন্ঠনালি থেকে হাত আলগা করে গলার চারদিকে আঙুলের স্পর্শ আকতে আগল। খুব গভীর ভাবেই স্পর্শ গুলো আকছে আজ। যেন তার অপেক্ষাকৃত বস্তুকে পাওয়ার অপেক্ষা শেষ হতে চলেছে আজ। এর আগে এরকম করেনি কখনো। বেশ অস্বস্তি লাগছে।

—-কি করছেন বললাম তো আমি কিছু করিনি।

— হুসসস…

কিছুক্ষন পর গলায় চুমো খেয়ে রাগী কন্ঠে বলে উঠলেন।

— বলেছিলাম না আমার কথার অবাধ্য না হতে যা বলেছি, যেভাবে বলেছি ঠিক সেভাবে করতে তাহলে কেন করলি এমন?

— বিশ্বাস করুন আমি সেরকম কিছু করতে যায়নি। আমি.. আহহহ.. [ চুল গুলো আরো জোরে ধরার কারনে ব্যাথায় মরে যেতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু সেটা যদি লোকটা জানে তাহলে হয়ত এখানেই পুতে দিয়ে যাবে। ]

— তাহলে কেন গিয়েছিলে?

— আসলে এসব খেতে ইচ্ছে করছিল না।দরজা খোলা ছিল আর ক্রিচেনে ফ্রেশ সবজি দেখে স্যালাদ খেতে ইচ্ছে করছিল তাই…..

আমার কথাটা শুনে মনে হলো লোকটি বিশ্বাস করেছে তাইত চুলের বাধন আলগা হয়ে এসেছে। এবার প্রশ্ন হতেই পারে সামান্য সবজি খাওয়ার কারনে এমন কেন করবে আসলে ব্যাপারটা স্যালাদের না। স্যালাদ কাটতে যে ছুড়িটা লাগবে তার। কারন সেটা দিয়ে আমি শসা না কেটে নিজের হাত টাও কাটতে পারি। যা আগেও করেছি। কেন? সেটা কিছুক্ষন পর জানতে পারবেন। লোকটি আমাকে ছেড়ে সোফার দুপাশে হাত রেখে পায়ের উপর পা তুলে বসল আমি কোনো মতে স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়লাম। কিন্তু প্রচন্ড রাগ লাগছে আমার। তাই সইতে না পেরে বলেই ফেললাম।

— কেন করছেন এমন আমার সাথে। কি মজা পাচ্ছেন বলুন তো আমাকে আটকে রেখে কি চাই আপনার। তার চেয়েও বড় কথা কে আপনি??

লোকটি মন দিয়ে আমার সব কথা শুনল। তারপর বলল.. Happy birthday.. আজ তোমার ১৮ বছর পুরন হলো।

লোকটির কথা শুনে বেশ অবাক হলাম। ওনি কিভাবে জানল। কারন ওনি আমার ফ্যামিলি দুরের কথা আমার নাম জানত না। কিন্তু পরে ব্যাপারটা বুঝলাম আমাকে এখানে আনার পর আমার নাম জানার আগে জন্মতারিখ জিজ্ঞেস করে পরে নাম।

— আমি এই দিনটার জন্য এতদিন অপেক্ষা করেছি। এবার তুমি বুঝতে পারবে কেন এনেছি আমি তোমাকে?

— মানে.. [ বেশ অবাক হলাম আমি ]

লোকটি আমাকে নিজের কাছে ডাকল। ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও যেতে হলো। কারন এই লোকটার কোনো বিশ্বাস নেই। কথা না শুনলে কি করবে বলা যায় না। তাই বাধ্য মেয়ের মত তার কাছে গেলে সে আমাকে টেনে পাশে বসিয়ে সোফায় দুপাশে হাত দিয়ে আটকে দেয়। আমার দিকে তার মুখটা আনতেই একটু চেপে গেলাম।

— Birthday girl কে গিফট না দিলে হয়। আর গিফট হিসাবে তোমাকে এখানে কেন আনা হয়েছে সেটা বলব।

— কেন এনেছেন?

— যেহেতু তোমার ১৮ বছর পুর্ন হয়ে গেছে… Now you fit for… বুঝতেই পারছ।

তার কথার ভঙ্গিমা আমার ভালো লাগল না। কারন এর আগে এরকম কথা বলেনি আর না এমন বিহেভ করেছে । রেগেছে ঠিকি কিন্তু এভাবে নয়। তবে আজকের সুরটা বেশ অদ্ভুত। দু-একটা ঢোক গিলে জিজ্ঞেস করেই ফেললাম…

— What…

লোকটি যেন একটু বিব্রত হলো আমার কথায়। তবুও বিরক্তি কাটিয়ে বলল…..

— এতদিন ছোট ছিলে এখন তো বড় হয়ে গেছ। এখনো কি তোমাকে ব্যাপারটা খোলসা করতে হবে।

কথাটা বুঝলাম না একটা মানুষ একদিনে কতটা বড় হতে পারে। যেটা গতকাল না বুঝলেও আজ বুঝবে। কারন তার ১৮ বছর পুর্ন হয়েছে বলে। কথাটায় ওনি কি বোঝাতে চাইল জানিনা কিন্তু আমি কিছুই বুঝলাম না। কিন্তু এটা বুঝলাম ওনি ভালো কিছু চাইছেন না।

—দেখ আমি স্ট্রিটলি কথা বলি। এমনি যখন বুঝতে পারছ না তাই সরাসরি বলছি আজ ১৮ বছর পুর্ন হল তোমার। So now you are suitable for a physical relationship. বাংলায় যাকে শারীরিক সম্পর্ক বলে। It’s clear….. আশা করি এর চেয়ে সহজ ভাষা আমাকে ইউজ করতে হবে না আমাকে ব্যাপারটা বুঝাতে….. So you will be ready

কথাটা কানের মধ্যে যেন এসে বাড়ি খেল। কি রিয়েক্ট করা উচিত বুঝতে পারলাম না। ৩ মাসে যে ভয়টা পেয়েছিলাম আজ তার কথা শুনতে ভয়টা আবার মনের মাঝে জায়গা দখল করে নিল। কারন তার মাঝে এরকম টা মনে হয়নি। তার মানে লোকটি আমার ১৮ বছর হওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন।

— হ্যালো….

লোকটির ডাকে ঘোর ভাঙে। একটু সময় লাগল। বাস্তবটা বোঝা মুহুর্তেই ওনাকে ধাক্কা দিয়ে নিজেকে ওনার থেকে সরিয়ে দিলাম। ওনি যেন কিছু মনে করলেন না ব্যাপারটা স্বাভাবিক ভাবেই নিলেন। তারপর শান্ত গলায় বললেন….

— বুঝতেই পারছি তোমার জন্য ব্যাপারটা অনেক টাফ। একজন অবিবাহিত মেয়ে… সে যাই হোক আমার কিছু করার নেই। আমি এইজন্য তোমাকে এনেছি। I think আমার সাথে এতদিন থাকার পর তোমার ততটাও সমস্যা হওয়ার কথা না।

আমি কি বলব বুঝতে পারছি না। আমার নিরবতা দেখে সে আবার বলতে শুরু করল।

— দেখ… [ নামটা মনে করার চেষ্টা করে ] কি যেন বলেছিলে.. হ্যা তুর… [ ৩ মাস আগে একবার নামটা বলেছিলাম সেটা এখনো তার মনে আছে ] দেখ তুর আমার ঝামেলা ভালো লাগে না। আমি তোমার এডাল্ট হওয়ার অপেক্ষায় ছিলাম। আর আজ তোমার ১৮ বছর পুর্ন হয়েছে। সো তুমি নিশ্চয়ই তবে তোমার এতদিনের প্রশ্নের উওর পেয়ে গেছে যে তোমায় এখানে কেন আনা হয়েছে? তাও আবার জোর করে তোমার ফ্যামিলি থেকে। যাই হোক তৈরি থেক। Be ready…….

লোকটি কথাগুলো বলেই চলে গেল আর আমি ওখানেই ধপ করে বসে পড়লাম। লোকটি এমন ভাবে কথা গুলো বলল যেন এগুলো খুব স্বাভাবিক কথা। আমাকে জোর আমার ফ্যামিলি থেকে আলাদা করেছিল এসবের জন্য…. কিছুই বুঝতে পারলাম না মাথাটা ঝিম হয়ে ওখানেই জ্ঞান হারালাম…..

,
,
,

,
,
,
,
,
জ্ঞান ফিরে দেখি বিছানায় শুয়ে আছি। লোকটা আমার সামনে বসে ইনজেকশনে কোনো একটা মেডিসিন ইন করছে। আমাকে দেখে মৃদু হাসল….

— বলেছিলাম আজ তোমাকে নিজেকে তৈরি রাখতে। কিন্তু এতটা ভালো প্রস্তুতি হবে জানা ছিল না। [ ভুবন ভোলানো হাসি দিয়ে ]

এদিকে আমার গলা শুকিয়ে আসল। আশ্চর্য ভাবে লোকটি পানির গ্লাস এগিয়ে দিল। আমিও চুপচাপ খেয়ে নিলাম। কিন্তু কিছু বুঝে উঠার আগেই লোকটি আমার হাতে ইনজেকশন পুশ করে দিলেন।

— তুমি কি ভেবেছ এভাবে ছেড়ে দেব। উহুম যা বলেছি তাই কথার নড়চড় হবে না।

হঠাৎ করেই মাথাটা চক্কর দিয়ে উঠল। আর লোকটা মুচকি হেসে আমার দিকে এগোতে থাকল। আমি পিছতে পিছতে বিছানায় পরে গেলাম।

—- দেখুন এরকম কিছু করলে ভালো হবে না। আমি কিন্তু চিতকার…..

আমার কথা শুনে লোকটা বেশ জোরেই হেসে দিলেন। আর আমি আহান্মক হয়ে রইলাম।

— এই মেয়ে বড় হয়ে গেলে তুমি কিন্তু এখনো বুঝতে পারছ না এই #বন্ধ_দরজার🖤 বাইরে তোমার ডাক কেউ শুনবে না। এইখানে কেন তুমি বাইরে গিয়ে গলা ফাটিয়ে চিতকার করলেও তোমার ডাকে সারা দেওয়ার মত কাউকে পাবে না।

বলেই লোকটি বাকা হেশে আমার আরো কাছে আসতে থাকে। হঠাৎ করেই সবকিছু ঘোলা হয়ে যেতে লাগল। আবছাতে শুধু বুঝতে পারছি লোকটা নিজের শার্টের উপরের বোতামগুলো খুলছে। আমার পাশে বসে এগিয়ে আসতেই বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলাম কিন্তু হঠাৎ অন্ধকার হয়ে সবটা হারিয়ে গেল। ন্সেসলেস হয়ে গেলাম। তারপর….

,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
[ বাকিটা পরের পর্ব গুলোতে জানবেন ]

#বন্ধ_দরজায়_তুমি🖤
#Written_By_Mêhèriyâr_Mêhèr
#Part: 01

দেখুন আমি উদ্ধৃতপুর্ন কোনো গল্প লিখিনা। কাহিনিটা অনেকের কাছেই নেগেটিভ লাগবে। তবে পুরোটা না পরে বাজে কমেন্ট করবেন না। নিজের মতামত জানাতে পারেন।

আশা করি স্টোরি টা থেকে আপনারা নতুন কিছু পাবেন। এক রকম কাহিনী লিখতে আর পরতে বোর হয়ে গেছি। তাই নতুন কিছু ট্রাই করলাম। খারাপ লাগলে সরি।

আর যদি সাড়া না পাই তবে আর দিব না। কারন আপনাদের ভালোবাসাই আমার উতসাহ সেটা যদি না পাই তবে দেওয়াটাই বৃথা।

ধন্যবাদ সবাইকে।।।।

Åriyâñà Jâbiñ Mêhèr

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here