কাঠগোলাপ🍁পর্ব-২১

0
433

কাঠগোলাপ🍁

তৃধা মোহিনী(মৃন্ময়ী)

পর্ব একুশ

🍁

বাংলাদেশ,

প্রায় দুই সপ্তাহ পর আজকে প্রান্ত বাড়ি ফিরে এসেছে,বাড়ি ফেরার সাথে সাথে সে তার মাকে জানিয়ে দিয়েছে যে এই সপ্তাহেই রাশনাকে বিয়ে করে বাড়িতে আনবে আর সেটা আকদই হোক না কেন।।

রেহেনা চুপচাপ হু হ্যা বলে গেলো..ছেলের মতিগতি সুবিধার ঠেকছে না,তিনি ছেলের কথায় তালে তাল মিলাচ্ছে..প্রান্ত ফ্রেশ হয়ে আসলে তার মাকে উপরে ডাকলো।।

“আম্মা রাহির কি খবর??ওর জন্য কিছু আনা হয় নি যদিও!!একটা হ্যান্ডব্যাগ এনেছি শুধু!!ও আসলে দিয়ে দিও!!’প্রান্ত চায়ের কাপে চুমু দিয়ে বললো।।

প্রান্তের কথা শুনে রেহেনা চুপ আছে..রাহি যে নেই বাংলাদেশে আজ দুই সপ্তাহ ধরে সেটা প্রান্ত শুনলে কি রিয়াক্ট করবে,উনি তা বুঝতে পারছে না।।

” কি হলো আম্মা??তুমি চুপ কেন??শরীর খারাপ??রাহিকে দিয়ে প্রেশার মাপাইছো কি??!”প্রান্ত এক নাগাড়ে অনেকগুলো প্রশ্ন করলো।।

“রাহি বাংলাদেশে নেয় প্রান্ত!!” রুবেল প্রান্তের ঘরে ঢুকতে যেয়ে এইসব শুনে বললো কারন রেহেনা চুপ আছে,প্রান্ত দেশে ব্যাক এসেছে শুনে উনি দেখা করতে এসেছেন।।

“মানে?বাংলাদেশ নেয় ত কোথায় গেছে!!” প্রান্ত অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো।।

রুবেল দীর্ঘশ্বাস ফেলে শুরু থেকে শেষ অব্দি সমস্ত ঘটনা এক এক করে খুলে বলতে লাগলো..সেই সাথে রেহেনাও বললো..সব কিছু শুনে প্রান্তের নাক রাগে লাল হয়ে গেছে।।

“সে বাড়ির মেয়েকে নিয়ে ঢ্যাঙঢ্যাঙ করে নিয়ে চলে গেলো আর তোমরা কিছু করতে পারলানা!!সাব্বাশ!! ” প্রান্ত রাগে দাঁত মুখ খিচে বললো।।

“রাহি ভালো থাকবে সেখানে!!” রুবেল শান্তস্বরে জবাব দিলো।।

“আপনি কি করে জানেন??ওই পাগল রাহিকে কথা বলতে না আপনার সাথে আর আপনি বলছেন ভালো আছে!!না জানি এখনো মেরে তারে গুম করে দিয়েছে কিনা ওই পাগলটা কে জানে!!” প্রান্ত আরো জোরে বললো।।

“প্রান্ত আমার রাহি ভালো আছে কারন রাহি যেদিন থেকে ওখানে গেছে সেদিন থেকে প্রতিটা ভিডিও ক্লিপ আমার কাছে ধ্রুভ পাঠায়!!আমি যেভাবে রাহিকে রেখেছি বা রাখতে চাইছিলাম ভবিষ্যতে কারো সাথে সে তার চেয়ে আরো দশগুন ভালো আছে!!” রুবেল কথাগুলো বলে সেই জায়গা ছেড়ে চলে গেলো।।

“ধ্রুভ রাহিকে কেনো তার বাবার সাথে কথা বলতে দেয় না তা আমার জানা নেই কিন্তু ধ্রুভ রুবেলকে রাহির প্রতিটা ভিডিও ক্লিপ পাঠায় তার গার্ডকে দিয়ে,এমনকি রুবেলের সুরক্ষার জন্য রুবেলের পিছনে গার্ড দিয়ে দিয়েছে সে..প্রতিদিন বাজার ও একটা লোক করে দিয়ে যায় এতো না করার স্বত্তেও এখন বল কেন বলবো ধ্রুভ খারাপ??এমন যা সে জিনিস দিচ্ছে এইজন্য আমাদের কাছে ভালো,রুবেল কিসে ভালো থাকবে সেটা ধ্রুভ ভালোভাবে জানে এইজন্য রাহি রিলেটেড সমস্ত কিছু তার সামনে ক্যামেরাবন্দী করে তার গার্ডকে দিয়ে পাঠায়!!হ্যা ভয় একটাই যে ধ্রুভের পাগলামির পরিমানটা বাড়লে সে নিজের মধ্যে আর থাকে না,রাহি তাকে সুস্থ করবে কিন্তু সে যদি রাহিকে ভুলে যায়??আশংকা শুধু এখানেই!!’রেহেনা এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বললো।।

” বাল!!”প্রান্ত কথাগুলো বলেই সিগারেটের প্যাকেট নিয়ে ছাদে চলে গেলো তার ফোন নিয়ে,রেহেনা সেখানে বসে শ্বাস ফেলতে লাগলো।।

রাশনা অনেকক্ষন যাবত ফোন দিচ্ছে কিন্তু প্রান্ত রাগের কারনে ফোন রিসিভ করছে না,সিগারেট একটার পর একটা ফুকেই যাচ্ছে..লাস্ট টাইম যখন রাশনা মেসেজ দিলো প্রান্তকে।।

“ki hoyeche amar babutar!!deshe ese amake mone pore ni!!phone dhoro babu!!”

মেসেজ দেখে প্রান্তের মেজাজ আরো সপ্তমে উঠে গেছে,সাথে সাথে কল ব্যাক করলো প্রান্ত রাশনাকে।।

“ওই কে বাবু??আমি কি ফিডার খাই??নাকি আমারে কখনো নিভের মতো ন্যাপকিন পরে হাগতে দেখছোস যে এতো কথা কস??২৭ বছরের বাচ্চাকে বাবু ডাকোস??ওই তোরে বিয়া করলে দশটা বাবু তোর পেটে দেয়ার ক্ষমতা রাখি উল্টা আমারে বাবু ডাকোস?বাবুর বাপ হওয়ার ক্ষমতা রাখাকে তুই বাবু বানিয়ে দিয়েছিস!!কানের নিচে এমন এক থাপ্পড় মারুম বাবু ডাকা ভুলবি!!ফোন রাখ!!” প্রান্ত রাগে কথা গুলো বললো।।

রাশনা প্রথমে কল রিসিভ করে এমন ঝাডি শুনে ফোনটা কান থেকে পরতে পরতে যেয়ে বেচেছে..সে ত আহ্লাদী আর আদর মাখা কথা বলতে চেয়েছে,এই লোক রাগলো কেন??রাশনার মন খারাপ হয় না কারন প্রান্ত প্রায় এই সময় কথা বলে থাকে।।

“আজ বাবুসাহেবের মেজাজ এতো তুঙ্গে কেনো??”রাশনা বিড়বিড় করে বললো,পরক্ষনে সে আবার নিজেকে বলছে আবার বাবু ডাকছিস??শুনোস নাই ওই বলছে বাবু পেটে দেয়ার ক্ষমতা রাখে আর ওরে উল্টা বাবু ডাকিস!!।।

রাশনা তওবা তওবা দুই গালে হাত দিয়ে বলে,বইয়ের পড়াতে মুখ গুজলো..সামনে মাসে তার টেস্ট এক্সাম,পড়তে হবে তারে খুব।।

লন্ডনে রাতেরবেলা,

ধ্রুভ রাহির দুই হাতের ভাজে নিজের হাত ঢুকিয়ে রাহির ঠোটকে সেই আধাঘন্টা যাবত গ্রাস করে যাচ্ছে,রাহি আর নিঃশ্বাস নিতে পারছে না মনে হচ্ছে এখনি সে শ্বাস আটকে মরে যাবে..এদিকে ধ্রুভের ছাড়ার কোন লক্ষণ নেয়।।

রাহি আর ধ্রুভের এই নতুন বাড়িতে আসা দুই সপ্তাহের বেশি হয়ে গেলো,এই বাড়িটা আগের বাড়ির থেকেও বড়..খুব বেশি সুন্দর ও..বিশেষ করে রাহি আর ধ্রুভের রুমটা..ব্ল্যাক কালারের পেইন্ট করা তাদের রুমে,আর দেয়ালে টাঙ্গানো আছে রাহির পোট্রের্ট যেটা ধ্রুভ প্রথম একেছিলো..অবশ্য সেটা এখন ধ্রুভের সিক্রেট রুমে শিফট করে দেয়া হয়েছে..রাহি পোট্রের্ট টা দেখে প্রথমে খুব অবাক হয়েছিলো,যে এই পোষাক সে কখনো পরেছে বলে মনে হয় না..এতো দাত কেলিয়ে কখনো সে ছবি তুলেছে কিনা সেটাও অজানা..কিন্তু ছবির মালিক ত সে।।

ধ্রুভ রাহির সাথে এই দুই সপ্তাহে অনেকবার ইন্টিমেট হতে চেয়েছে কিন্তু অসফল হয়ে গেছে..রাহি প্রথমে না করলেও ধ্রুভের আসক্তি দেখে নিজেও থমকে যেতো..কখনো দেখা যেতো কেও ধ্রুভের নাম্বারে কল করতো,অথবা কোথা থেকে কুত্তার ঘেউঘেউ আওয়াজ আসতো..এইসবকিছু ধ্রুভকে কতটা ইরিটেট করে সেটা সবকিছু একমাত্র একজনই জানে,কিন্তু উনি এরকম করবে বলে ধ্রুভের মাথায় খেলছে না..ধ্রুভ রাহিকে সবসময় এতোটা নজরে রাখছে মনে হচ্ছে ও আড়াল হলে কেও তার মীরাকে নিয়ে ফেলবে আর নয় মেরে ফেলবে।।

যতবার ধ্রুভ তার মীরার কাছে এসেছে ততবারই কিছু না কিছুর কারনে তাদের ইন্টিমেটে বাধা দিয়েছে..আজ সবকিছু অগ্রাহ্য করে ধ্রুভ রাহির উপর নিজের সব আসক্তি উজাড় করে দিচ্ছে,আজ ধ্রুভ অনেকবেশি ডেসপেরেট হয়ে গেছে।।

ধ্রুভ রাহিকে চুমু খেতে খেতে ক্লান্ত হয়ে গেলে,চুষে নিতে লাগলো রাহির ঠোট..রাহি ঠোট মনে হচ্ছে ছিলে যাচ্ছে,এতো গরম আর উষ্ণতাতে ছেয়ে গেছে দুজনের ঠোট..ধ্রুভ হুট করে রাহিকে উল্টা ঘুরিয়ে দিলো,রাহি উল্টা ঘুরে জোরে জোরে শ্বাস ফেলছে,ধ্রুভ আরো পাগল হয়ে যাচ্ছে রাহির শ্বাস উঠানামা দেখে..রাহির নাইটির ফিতা একটান মেরে খুল দিলো,রাহি দেয়ালটাকে আরেকটু আকড়ে ধরলো..চোখ মুখ বন্ধ করে আছে,ধ্রুভ রাহির রাহির নাইটি পার্ট উপরের টুকু খুলে নিলো..রাহির সারা পিঠ আর ঘাড়ে ধ্রুভের ঠোট বিচরণ করছে,রাহি শিউরে উঠছে..ছোট ছোট কামড়ে ভরিয়ে দিচ্ছে রাহির গলা।।

হুট করে ধ্রুভের কানে আবার সেই আওয়াজ ঘুরঘুর করছে,সেই আওয়াজটা তাকে হিংস্র করে তুলে..দপ করে ধ্রুভের মাথায় আগুন জ্বলে উঠলো..রাহির কাছ থেক্র ছিটকে সরে আসলো,রাহি এতোক্ষন নিঃশ্বাস নিতে পারছিলো কারন ধ্রুভ তার গলাটা ধরেছিলো..রাহি যখন দেখলো ধ্রুভকে কেমন অস্বাভাবিক লাগছে,তার কাছে যেতে লাগলে..ধ্রুভ তাকে ধাক্কা মেরে দিলো,রাহি ছিটকে সরে পরাতে ছোট টি টেবিলে মাথায় আঘাত লেগে,মাথা ফেটে গেলো।।

“আহ!!” রাহি ব্যাথাতুর আওয়াজ করে মাঝেতে লুটিয়ে পরলো।।

চলবে🍁

গঠনমূলক মন্তব্য করুন,মন্তব্যের উপরে পরের পার্ট নির্ভর করছে..ভুল ত্রুটি ক্ষমার নজরে দেখবেন।।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here