সুখ নীড় পর্ব-৬

0
255

#সুখ_নীড়
#পর্ব_৬

টার্মিনালে বসে থাকতে থাকতে জয়ীতা টেরই পেল না কখন এতটা সময় পেরিয়ে গিয়েছে। সময় দেখার জন্য মোবাইলটা হাতে নিতেই দেখল মোবাইলের সুইচ অফ করা। সেই ইচ্ছে করে অফ করে রেখেছিল দুপুরের দিকে। এই দীর্ঘ সময়েও ক্ষুধা-তৃষ্ণা কোনো কিছুই তার কষ্টকে ছাপিয়ে যেতে পারেনি। কোথায় যাবে, কার কাছে যাবে ভাবতে ভাবতে এসবের দিকে কোনো খেয়ালই হয়নি সারাদিন। শরীরটা প্রচন্ড রকমের দুর্বল এটা সে টের পাচ্ছে। পা ফেললেই মনে হচ্ছে সামনের দিকে সব অন্ধকার হয়ে আসছে। সায়েদাবাদ টার্মিলালের এক কোণের দিকে এসে বসেছে সেই ঘন্টাদুয়েক আগে। চারপাশের বাজে আর ভোটকা গন্ধে গা গুলিয়ে বমি আসছে তার।
শীতও করছে খুব। মনে হচ্ছে জ্বর এসেছে। নিজেই নিজের কপালে হাত ছুঁইয়ে দেখল বেশ গরম। এজন্যই হয়ত শীতটা আরো জাকিয়ে বসেছে।

হঠাৎ খেয়াল হলো পাশেই এক মহিলা এসে দাঁড়িয়েছেন।

– কই যাইবেন, মা? ম্যালা সমায় ধইরা আপনেরে এইহানে বইসা থাকতে দেখতেছি। আপনেরে দেইহা মনে হইতেছে অসুস্থ। রাইত তো ম্যালা হইছে। সাথে কি কেউ নাই, মা?

জয়ী মাথা তুলে দেখল মায়ের বয়সী এক মহিলা সামনে দাঁড়িয়ে। মহিলা পরম মমতায় জয়ীর কপাল ছুঁইয়েই বললেন, জ্বরের তাপে গা পুইড়া যাচ্ছে তো! কই যাবেন, মা? জ্বরের ঔষধ খাইছেন?

জয়ীতা মাথা দুলিয়ে না বলতেই সে নিজের ব্যাগে হাত দিয়ে একপাতা ট্যাবলেট বের করে সেখান থেকে একটা ট্যাবলেট ভেঙ্গে জয়িতার হাতে দিয়ে বলল, খান। আমি পানি দিতাছি।

জয়ীতাও সাথে সাথে ওষুধ খেয়ে নিলো।

– কিছু খান নাই মনে হয়। খালি প্যাটে ওষুধ কাম করে না। লন, এই বনরুডি আর কলা খান।

জয়ীতা কিছুটা ইতস্তত করে আবার হাত বাড়িয়ে খাবারের প্যাকেটটা নিলো। মানুষটাকে তার খুব আপন মনে হচ্ছে। মানুষের যখন কোনো আপন মানুষ পাশে না থাকে তখন খড়কুটোকেও আকড়ে ধরে বাঁচতে মন চায়।

জয়ীতার খাবার প্রায় শেষ তখন বয়স্ক মহিলাটি বলল, আমার গাড়ি ছাড়নের সময় হইছে। যাইতে হয় যে মা। এইহানে বইসা না থাইকা যেইহানে যাইবেন সেইহানে যান। জায়গাডা ভালো না। নইলে কই যাইবেন কন আমি গাড়িতে উঠায়া দিয়া আসি।

জয়ীতা কোনোভাবে বলল, আপনি অনেক করেছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ, আপনাকে। আপনার কথা আমি কোনদিন ভুলব না। আপনার দেরি হয়ে যাবে, মা। আপনি আপনার গাড়িতে চলে যান। আমি আমার গন্তব্যে ঠিকই পৌঁছে যাব। হঠাৎ সে চলে যাওয়ার জন্য উদ্যত হলে জয়ী তাকে প্রশ্ন করল, আপনি কোথায় যাবেন, মা?

– আমি তো মা বাগেরহাট যাব। এইতো সামনের ওই বাস। আমার টিকিট কাটছি। আপনি কই যাইবেন কইলেন না তো কিছু।

জয়িতার কী মনে হল সেও ফটাফট করে বলে ফেলল, আমিও তো বাগেরহাটে যাচ্ছি। আমারও এই গাড়িতেই যাওয়ার কথা।

-ও মা তাই নাকি এতক্ষণ বলবেন না। টিকিট কাটছেন? বাস ছাড়ার সময় প্রায় হইয়া গেছে।

– না, টিকিট কাটার সুযোগ হয়নি। যাব কি যাব না সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না। আপনাকে যখন পেয়ে গেলাম তাই সিদ্ধান্তটা ফাইনাল করে ফেললাম।

আসল কথা হচ্ছে জয়ীতা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছিল না সে কোথায় যাবে! হঠাৎ এই মানুষটিকে তার খুব আপন মনে হলো। উনি যখন চলে যেতে চাচ্ছিলেন জয়ীর মনে হচ্ছিল তার কোনো আপনজন তাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছে তাই সেই উনার সঙ্গ ছাড়তে চাইল না। তাছাড়া এভাবে এখানে কতক্ষণ আর বসে থাকা যাবে। একটা সিদ্ধান্তে তো আসতেই হবে।

– চলেন, চলেন। গাড়ি ছাড়তে আর বেশি সময় দেরি নাই। টিকিটটা কাইটা ফেলেন।

দ্রুত গতিতে বাস চলছে। এগিয়ে যাচ্ছে তার গন্তব্যের দিকে। সবাই তার প্রিয় মানুষের কাছে যাবার জন্য একটু একটু করে সামনে এগুচ্ছে। আর জয়ীতা জানে না সে কোথায় যাচ্ছে, কার কাছে যাচ্ছে, কেনো যাচ্ছে। সে শুধু জানে যেতে হবে তাই যাচ্ছে।

মহিলার সাথে কথা বলে জয়ীতা জানতে পারল উনি ওনার ছেলে আর ছেলে বউয়ের সাথে দেখা করতে ঢাকায় এসেছিলেন।

– আপনি ঢাকায় কেনো থাকেন না? একা থাকেন বাড়িতে?

– মা, বাড়িতে একাই থাকি। স্বামীর একটু ভিটাবাড়ি আছে। ওইগুলো পাহারা দেওন তো লাগে। বড় মাইয়া বিয়া দিছি শ্বশুর বাড়িতে থাকে। আর ছোট মাইয়া আমার সাথেই থাকে জামাইসহ।

-মেয়ে শ্বশুর বাড়িতে যায় না?

– নাগো মা। ওর শ্বশুর বাড়িতে তেমন কিছু নাই। আমার বাড়িতেই থাকে। তাছাড়া আমার বাড়িতে থাকনেরও মানুষ নাই। আমি নিজে একটা বাড়ীতে কাজ করি। রাইতে রাইতে খালি ঘুমানোর লাইগা বাড়ি ফিরি।
তা আপনে কোন বাড়ি যাইবেন, মা?

জয়ীতা কী উত্তর দেবে তার জানা নেই। সে কোনো রকম করে গরিমসি করে বলল, বাগেরহাট স্টান্ডেই নামব। ওখানে আমার এক ফ্রেন্ডের বাড়ি আছে সেখানে যাব।

আসলে জয়িতা বাগেরহাটের কিছুই চেনে না। সে হচ্ছে উত্তরবঙ্গের মেয়ে। দক্ষিণবঙ্গের এদিকে সে কখনো আসেনি। তাই বাগেরহাট ছাড়া আশেপাশে আর কোন স্থানের নামও তার জানা নেই।

– ও মা! কন কি! আমিও বাগেরহাটই নামমু। কোন বাড়ি যাইবেন?

জয়িতা কী বলবে বুঝতে না পেরে বলল, ওহ! ও বলেছে বাগেরহাট থেকে একটু ভেতরের দিকে যেতে হয়। মনে হয় শিকদার বাড়িতে। ও এসে নিয়ে যাবে।

– ও আচ্ছা।

টুকটাক অনেক কথা হলো ওনার সঙ্গে। জয়ীতার হঠাৎ করে খুব বেশি খারাপ লাগতে শুরু করেছে। কিন্তু সে ওনাকে কিছুই বুঝতে দেয় না। একদিকে শারীরিক অসুস্থতা তার উপরে এমন একটা সিদ্ধান্ত সে নিয়েছে এটা কি ঠিক হল কিনা তাও বুঝতে পারছে না। তাছাড়া সে যাবেই বা কোথায় বাগেরহাটে তো এসেছে পকেটের যে কয় টাকা ছিল টিকিট কেটে শেষ। ঝোঁকের বশে এমন একটা সিদ্ধান্ত সে না নিলেই পারত। পল্লবের উপর রাগ করে ঘর ছেড়েছে ভালো কথা। এখান থেকে সে সরাসরি তার মায়ের কাছে চলে যেতে পারত।
অবশ্য তার মায়ের উপর একটা চাপা ক্ষোভ থেকে সে তার মায়ের কাছে যায়নি। পল্লবের সাথে বিয়ে হবার পর থেকে তার ফ্যামিলির কাছে সে টাকার মেশিনে পরিণত হয়েছিল। সবাই যে যার সমস্যা তাকে বলত কিন্তু তার সমস্যা শোনার মত সময় কারো ছিল না।

এখান থেকে তাদের কাছে ফেরত গেলে তাকে যে নানান ধরনের কথা শুনতে হবে সবার এটা সে ভাল করেই জানে। কেন যেন কারো কথা এখন আর শুনতে ইচ্ছে হয় না তার।

সন্ধ্যা হতে রুমের লাইট অফ করে দিয়ে চুপচাপ শুয়ে আছে পল্লব। সম্ভাব্য প্রত্যেকটি জায়গায় খোঁজ করেছে জয়ীতার কিন্তু না কোথাও নাম নিশানা নেই জয়ীর।
অসুস্থ একটা মানুষ কোথায় যেতে পারে সে তার শাশুড়ির কাছে ফোন দিয়েও কনফার্ম হয়েছে। সেখানে সে যায়নি। তারপরেও তার কেনো যেনো মনে হচ্ছে হয়তো তার শাশুড়ি তার সাথে মিথ্যে বলছে। জয়ীতাই হয়তো বলাচ্ছে। বলাবেই না বা কেন? হসপিটালে বসেও সে যে পরিমাণ খারাপ ব্যবহার করেছে জয়ীতার সাথে।

পরে পুরোপুরি কনফার্ম হওয়ার জন্য একজন লোক পাঠিয়েছে জয়ীদের বাড়িতে। এবং মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে সত্যিই যদি জয়ীকে যেয়ে ওদের বাড়িতে পাওয়া যায় তাহলে আর এক মুহূর্তও সে কালবিলম্ব করবে না। জয়ীতাকে ডিভোর্স দিয়ে দিবে। কিছুতেই আর ফিরিয়ে আনবে না।
রাগে উঠে যেয়ে জয়ীতার ড্রয়ারটা খুলল যেখানে জয়ীতার ব্যাকের চেকবই, কার্ড এসব থাকে।
গিয়ে দেখল সব ঠিকঠাক আছে কোন কিছুই নেয়নি। কিছুটা অবাক হলো। সে যতদূর জানে জয়ীতার কাছে কোনো নগদ টাকা পয়সা নেই। সরাসরি হসপিটাল থেকে সে চলে গিয়েছে। হাতে কিছু থাকারও কথা না। মাত্র দু’একটা জামাকাপড় ছাড়া আর কিছুই নেই।

মেজাজ এবার আরো গরম হলো। এই অবস্থায় কোথায় যেয়ে কী করছে আল্লাহ জানে।

জয়ীতা যে নিরুদ্দেশ এ কথা বাসার আর কাউকেই বলেনি সে। বলবেই বা কাকে? জয়িতাকে নিয়ে কারো মাথাব্যাথা থাকলে তো! একটা বারের জন্য কেউ তার কথা জিজ্ঞেস পর্যন্ত করেনি। তারা হয়তো ভেবেছে সে এখনো হাসপাতলে।

কতবার জয়ীর নাম্বারে কল দিয়েছে কিন্তু সেই একই কথা বারবার। ফোনটা সেই দুপুর থেকেই সুইচড অফ। জয়ীতার কোনো বিপদ হলো না তো! একবার ভেবেছিল থানায় মিসিং কম্পলেইন করবে। কিন্তু সেটা করলে বিশাল ঝামেলা শুরু হবে। মিডিয়ার কানে চলে যেতে মুহূর্ত লাগবে না এটা ভাইরাল হতে। আর এটাকে পুঁজি করে শুরু হবে নানান ধরনের কথাবার্তা। তাই ইচ্ছা থাকা সত্বেও প্রশাসনের কোনো সাহায্য সে নিতে পারছে না।

রাতে কিছু খাওয়া হলো না তার। কেউ তাকে ডাকেও নি। এ বাড়িতে অবশ্য কে খেলো কি না খেলো এ নিয়ে কারো মাথাব্যাথা নেই। বাড়িতে মানুষের চেয়ে ঝি চাকরের পরিমাণ বেশি। বাড়ির মেনটেনেন্স এর পুরো দায়িত্ব কল্লোলের বউয়ের হাতে। জয়ীতা এই এক বছরে এ বাড়িতে একজন গেস্টের মতোই ছিল। পরিবারের কোনো ব্যাপারে কথা বলার অধিকার ছিল না তার। এ বাড়িতে কবে কী রান্না হবে, কয় পদের রান্না হবে, কে কে খাবে, চাকর-বাকর কে কোথায় থাকবে সবকিছুই চৈতির দেখভালের আওতায়। জয়ীতাকে কেউই চাকরদের থেকে আলাদা করে ভাবেনি। পল্লব সব কিছুই জানত কিন্তু এ নিয়ে কখনোই সে কিছু বলত না। জয়ী যে এ বাড়িতে কতটা অনাকাঙ্ক্ষিত আর অপাংক্তেয় সে কথা জয়ীতাও যেমন জানত ঠিক তেমনি পল্লব।

রাত যত গভীর হচ্ছে পল্লবের বুকের মধ্যে কেমন যেনো ফাঁকাফাঁকা লাগছে। যে মানুষটাকে সে এই একটা বছর ধরে একই ছাদের নিচে থেকেও কখনো ভালো করে তাকিয়ে দেখবার মতো সুযোগ পায়নি আজ কেনো যেনো তার জন্য বুকের মাঝে চিনচিন অনুভূতি বেড়েই চলছে।

হঠাৎ করে জয়ীতার প্রতি তার ভালোবাসা যেনো মাথাচাড়া দিয়ে উঠল। সেই দিনগুলো চোখের সামনে ভাসছে। সেই যে জয়ীকে পার্টিতে প্রথম দেখা। তার অফিসে চাকরি দেওয়া, ধীরে ধীরে জয়ীতার প্রেমে হাবুডুবু খাওয়া। কত স্মৃতি। জয়ীতা কিছুতেই শুরুর দিকে তার সাথে সম্পর্কে জড়াতে চায়নি। সে প্রথম যেদিন জয়ীতাকে তার অনুভূতির কথা জানিয়েছিল সেদিনই জয়ীতা চাকরি ছেড়ে চলে যেতে চেয়েছিল। অনেক বুঝিয়ে তাকে আবার চাকরিতে থাকতে রাজী করেছিল পল্লব । এরপরে ধীরে ধীরে তার মন জয় করে
পল্লব। একসময় জয়ীতাকে সবার অজান্তে বিয়ে করে গোপণে সংসারও পাতে। অনেকটা জয়ীতার ইচ্ছার বিরুদ্ধেই সে জয়ীতাকে বিয়ে করেছিল। জয়ীতা এভাবে বিয়ে করতে চায়নি। সমাজের চোখে যে এই গোপণ সম্পর্কের জন্য কতটা ছোট তাকে হতে হবে এটা সে জানত। কিন্তু পল্লবের ভালবাসার কাছে সবকিছুই পরাজিত হয়। পল্লবের পরিবার তাকে মেনে নিবে না সে জানত। তাও পল্লব তাকে নিশ্চয়তা দিয়েছিল সে যে করে হোক সবাইকে রাজী করাবে।

পল্লব জয়ীতার মায়ের দুশ্চিন্তা দূর করার জন্যই জয়ীতাকে বিয়ে করেছিল। বিয়ের আগে জয়ীদের গ্রামেও একবার বেড়াতে গিয়েছিল সে। জয়ীর মা কিছুতেই তাকে প্রথমে জয়ীর পাশে মানতে চায়নি। এত বড় ঘর। সে জয়ীকে বোঝায় পল্লবের থেকে দূরে সরে আসতে। সব কথা শুনে পল্লব জয়ীকে তখনই বিয়ের প্রস্তাব দেয়। জয়ীর মাও রাজী হয়ে যায় তখন। জয়ী কিছুতেই রাজী হতে চায় না। পরে পল্লবের আর পরিবারের সবার চাপাচাপিতে রাজী হয়। বিধাতার হাতে ভাগ্য সঁপে দিয়ে পল্লবকে বিয়ে করে। এরপরে ঢাকাতে এসে বেশ কিছুদিন খুব ভালোই চলছিল।

হঠাৎ কেনো যেনো পালটে যেতে থাকে পল্লব । জয়ী বুঝতে পারে পল্লব তাকে এভয়েড করতে চাইছে। পল্লব একদিন সরাসরি বলেই ফেলে সে জয়ীকে ডিভোর্স দিতে চায়। তার পরিবারের কেউই তাকে মেনে নিবে না। এ কথা শুনে অনেক বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে দুই জন। ধীরেধীরে সে দূরে সরে যায় জয়ীর থেকে।

এরপরে বেশ কাঠখড় পুড়িয়ে আইনি লড়াই লড়ে জয়ীতা পল্লবের সংসারে ফেরত এসেছে। মান সম্মানের ভয়ে সাজেদা চৌধুরী মেনে নিতে বাধ্য হয় জয়ীকে। পল্লব ছিল তখন পুরাই রোবটের মতো! যে যা করেছে সে শুধু দেখেছে। নিজের মতামত দেবার মতো মানসিকতা ছিল না তার।

জয়ীতা একাই লড়াই করে সংসারটাকে জুড়ে ছিল।
অথচ তার প্রতিনিয়ত অবহেলা আর অত্যাচারে জয়ী ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। বুকের মাঝে চিনচিন বেড়েই চলছে পল্লবের। পল্লবের খেয়াল হলো তার চোখের কোণ বেয়ে নোনাজল গড়িয়ে পড়ছে কানের দু’পাশ বেয়ে।

গাড়ি দ্রুত ছুটছে। গাড়ির সাউণ্ড বক্সে মৃদু শব্দে বেজেই চলছে,

“কোন একদিন
আমায় তুমি খুঁজবে
সেইদিন ওগো প্রিয়ে
আমার ভালোবাসা বুঝবে

এখন তোমার আর
আমাকে নেই কোন প্রয়োজন
চারদিকে ঘিরে আছে
তোমার কত শত প্রিয়জন
ফেলে আসা দিন যবে
কাঁটা হয়ে প্রাণে বিঁধবে

তোমার প্রিয়জন
থাকবে না যখন পাশে
যৌবন যদি গো চলে যায় কোনদিন
সে কি আর ফিরে আসে
মরনের পরপারে
যদি গো কখনো দেখা হয়
সেদিনও দেখিবে তুমি
আছো জুড়ে মোর এ হৃদয়
আঁখিজল তবু চোখে
ঝরঝর অবিরাম ঝরবে”!

চলবে….

( প্রিয় পাঠক, আপনারা এই নেক্সট, অপেক্ষা এমন কোনো মন্তব্য না করে দু’ এক কথায় লেখার আলোচনা সমালোচনা করলে বরং বেশি অনুপ্রাণিত হবো।
শুভকামনা রইল।)

আগের পর্ব-
https://www.facebook.com/111576077291737/posts/460408612408480/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here