সুখ নীড় পর্ব-২১

0
227

#সুখ_নীড়
#পর্ব_২১

নিজের মায়ের উপর পল্লবের এত বেশি ক্ষোভ জমেছে যে সে নির্দ্বিধায় তার মায়ের বিরুদ্ধে যেয়ে তার মায়ের প্রতিদ্বন্দ্বী শাহীন তালুকদারের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়ার জন্য প্রস্তাব পেয়ে কোনো কিছু আগেপিছে চিন্তাভাবনা না করেই রাজী হয়ে যায়। এসব দেখে জয়ীতার খুব ভয় হচ্ছে। সে কয়েকবার বোঝানোর চেষ্টাও করেছে।

এই ক’টা দিন ধরে কিছুতেই স্বস্তি পাচ্ছে না সে। ক’দিনে পল্লবের সাথে ভালো করে মন খুলে কোনো গল্পও করেছে কি না মনে পড়ে না। পল্লবের মা কতটা ভয়ংকর হতে পারেন এটা জয়ীর নিজের সাথে এতকিছু না ঘটলে কোনোদিনই বিশ্বাস হতো না। এখন শুধু ভয় হচ্ছে কখন না কী ঘটে যায়! নিজের চেয়ে বেশি ভয় পল্লবকে নিয়ে।

পল্লবের মুখের দিকে তাকালেই নিজের উপর ভীষণ রাগ হয় তার। তার জন্যই আজ এই অবস্থা পল্লবের। তার আসলে উচিত ছিল সম্পর্কের শুরুতেই পল্লবের জীবন থেকে সরে যাওয়া। এত যুদ্ধ করে সম্পর্ক টেকাতে গিয়ে ফলাফল যে কী হচ্ছে সে তো এখন দেখতেই পাচ্ছে। এত আরাম আয়েশে যে বড় হয়েছে সে এখন অন্যের হুকুমের গোলামী করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত ।

রাতে ঘুমানোর প্রস্তুতি চলছিল। জয়ী তার ছোটো দুই রুমের বাসা এখন মোটামুটি গুছিয়ে ফেলেছে। মনের অশান্তি বাদ দিলে সুখের কমতি থাকার কথা ছিল না। জয়ী এমন একটা টিপটপ গোছানো সংসারের স্বপ্নই দেখেছে আজীবন। পল্লব অফিস থেকে লোন নিয়ে নিত্যকার জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত থাকা সবই কিনে ফেলেছে ইতিমধ্যে। শাহীন তালুকদারের সাথে তার বেশ ভালো সম্পর্ক যাচ্ছে এখন। মোটামুটি ভালোই বেতন দিচ্ছে সাথে পুরানো মডেলের একটা টয়োটা করোল্লা গাড়ি। এমন ওল্ড মডেলের গাড়ি পল্লব কোনোদিন চালিয়েছে মনে পড়ে না জয়ীর। কিন্তু এখন এটাই যে জুটেছে এটাই তো তাদের মহত্ব! নয়ত বাসে ঝুলে ঝুলে প্রতিদিন অফিস করতে হতো পল্লবকে!

রাতে খেয়েদেয়ে শোয়ার বন্দোবস্ত করছে জয়ী। তখনই পল্লবের ফোনটা বেজে উঠল। ফোন হাতে নিয়ে দেখল শাহীন তালুকদারের ফোন।

– ঘড়ির কাঁটার দিকে তাকিয়ে জয়ী বলল, এত রাতে তোমাকে কী মনে করে কল দিয়েছে আবার?

– দেখি কী বলে?

– আচ্ছা। বলে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে জয়ী কিচেনের লাইট অফ করতে সেদিকে পা বাড়াল।

মিনিট দুই তিনেক বাদেই সে ফিরে দেখল কথা শেষ হয়েছে মাত্র পল্লবের।

– জয়ী বলল, কী কথা হলো?

– আগামীকাল ভোরের দিকে শাহীন ভাই তার প্রচারণার জন্য টাংগাইলে যাচ্ছে। আমাকেও নিতে চাচ্ছে।

– কী বললে তুমি?

– এ ব্যাপারে অবশ্য আজ অফিসেই কথা বলেছিল আমার সাথে । এখন আবার কনফার্ম হবার জন্য কল দিয়েছিল। আমি কী বলব বুঝতে না পেরে ওনার জোড়াজুড়িতে রাজী হয়েছি।

– এটা কী ঠিক করলে? উনারা তোমাকে ইউজ করছে তুমি বুঝতে পারছ না কেনো? আম্মিকে বিপদে ফেলবার জন্যই তোমাকে নিয়ে যেতে চাইছে। তোমার যাওয়া উচিত হবে না।

– আই ডোন্ট কেয়ার! উনার কথা কখনো মুখেই আনবে না। উনি বিপদে পড়লে আমার কিছু না। উনার সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই এখন আর! আমি তাকে চিনি না।

– চিনি না বললেই সম্পর্ক শেষ হয়ে যায় না, পল্লব। উনি যদি জানতে পারে তুমি ওনার বিরুদ্ধে প্রচারণা করেছ কী হবে ভেবে দেখেছ? আমাদের বিপদ আরো বাড়বে।

– এত ভাবাভাবির সময় নেই। আমি যাদের নুন খাচ্ছি, তাদের কথাও ভুলে যেও না।

– দু’দিনের বন্ধুকে নিয়ে এত ভাবনা? আর আম্মির সাথে যে তোমার নাড়ীর সম্পর্ক!

– ভালো করেই জানো আমি সেটা ছিন্ন করেছি। এ বিষয়ে আর কথা বলো না, প্লিজ। আমি ভেবেচিন্তেই ডিসিশন নিয়েছি। আমি ওনাকে কোনো শাস্তি তো দিতে পারব না তাই এটাই আমার পক্ষ থেকে ওনাকে শাস্তি দেবার একটা বেস্ট ওয়ে। এজন্যই আসলে আমি রাজী হয়েছি।

– ব্যাপারটা যতো হালকা ভাবছ ততটা হালকা নয়। নিজের মায়ের বিপক্ষ দলে যোগ দিয়ে তাকে নির্বাচনী মাঠে দুর্বল করাটা যে কত বড়ো বোকামি! প্লিজ, নিজের রক্তের সাথে শত্রুতা বাড়িও না। এমনিতেই আমরা ওনাদের চরম শত্রু এখন। আমাকে আর তোমাকে পরিবারের মানুষ পর্যন্ত নাকি এখন ভাবে না।

– আমিও ওই পরিবারের কেউ হতে চাই না। আর ওই পরিবারের না বলেই আমি শাহীনের সাথে যাচ্ছি।

– এগুলি একটু বাড়াবাড়িই হয়ে যাচ্ছে, পল্লব। তুমি কি একবারও ভেবেছ শাহিন ভাইয়া কেন আমাদের এভাবে সাহায্য করছেন? তুমি কি মনে করেছ সে দুধে ধোয়া তুলসী পাতা? সে তোমাকে ব্যবহার করছে! একটু তো ভাবো।

– আমাকে কি তুমি বোকা ভাবো জয়ী? কী ভেবেছ আমি কি কিছুই বুঝিনা? হঠাৎ করে শাহীন ভাইয়ের আমার প্রতি এমন করে দরদ উথলে ওঠার কারণটা আমি ভালো করেই বুঝি! কোনো স্বার্থ ছাড়া কেউ এক পাও সামনে আগায় না। উনি ওনার স্বার্থ দেখছেন আমি আমারটা দেখছি। ব্যস হয়ে গেল। এই মুহূর্তে ওনাকে আমার দরকার। বিনিময় উনি তো আমার কাছে কিছু আশা করবেনই ।

– তাহলে তুমি সব জেনে বুঝেই সামনে এগুচ্ছো?

– একদম! আমাকে আম্মির বিরুদ্ধে সে ব্যবহার করতে চাইছে। আমি সেটা সাদরে গ্রহণ করেছি। আমার আম্মি আর শাহীন ভাই দু’জনের কারো মধ্যে কোন তফাৎ নেই। এরা এক ঘাটের মাঝি। স্বার্থ ছাড়া কিছুই বোঝে না। তাছাড়া আমি চাই না আম্মি এ নির্বাচনে জিতুক! যদি উইন করে তবে তার অহংকার আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে যাবে। তার একটু মাটিতে পা রাখা দরকার।

– সবই বুঝতে পেরেছি কিন্তু তাই বলে নিজের মায়ের সাথে এভাবে শত্রুতা বাড়িয়ে ভালো করছি কি! আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। জানিনা ভবিষ্যতে আমাদের জন্য কী অপেক্ষা করছে?

– এত বেশি দুশ্চিন্তা করে লাভ নেই। ভবিষ্যতেরটা ভবিষ্যতে দেখা যাবে। আমি তোমার পাশে আছি আমার শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত। আমি তোমার হাত ছাড়ব না। ভয় পেও না। তাতে যত যা-ই ঘটুক। তুমি শুধু আমার জন্য দোয়া করো।

অনেক রাত হয়ে গেলো। জয়ীর ঘুম আসে না কিছুতেই। পল্লব নিশ্চিন্তমনে ঘুমাচ্ছে। জয়ীর অজানা ভয়ে বুক কেঁপে ওঠে । সে বুঝতে পারছে না কী করে পল্লবের কাছে বোঝাবে নিজের মনের কথা। সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতেই কখন যেনো ঘুমিয়ে পড়ল সেও।

 

খুব ভোরে কলিংবেলের শব্দে ঘুম ভাঙল পল্লব আর জয়ীর। এত ভোরে কে আসতে পারে তাদের বাসায় তাছাড়া তাদের বাসাতে তো কেউ আসেও না। পল্লব ওঠার আগেই জয়ী যেয়ে দরজা খুলল। দেখল হান্নান সাহেব দাঁড়িয়ে আছেন। এই লোকটাকে জয়ী আগে থেকেই চেনে। ইনিই পল্লবের জন্মদাতা এটা না জানলেও ইনাকে দেখলেই তার কেনো যেন বুকের মাঝে কী এক অজানা ভয় জেগে ওঠে।

জয়ীর পেছন পেছন পল্লবও এসেছিল। সে নিজেও হান্নানকে দেখে কিছুটা ঘাবড়ে যায়। জয়ীকে উদ্দেশ্য করে সে বলে ভিতরে যাও আমরা একটু কথা বলব।

জয়ী ভিতরে চলে যায় ঠিকই কিন্তু পর্দার আড়ালে দাঁড়িয়ে তাদের কথা শোনার চেষ্টা করে।

– এত সকালবেলা আপনি আমার এখানে কেন এসেছেন আর আমি যে এখানে থাকি এটা আপনি জানেনই বা কী করে? বেশ চড়া গলায় পল্লব কথাগুলো জিজ্ঞেস করল হান্নান সাহেবকে।

– দরকার না হলে আমি এত সকালে আসতাম না আর এড্রেসের কথা বলছ সেটা পাওয়া খুব কঠিন কিছু কি?

– শাহীন ভাইয়ের কাছ থেকে নিয়েছেন?

– নিয়েছি, যেখান থেকে নেয়ার নিয়েছি। সেটা জানার দরকার কী? তোমার সাথে খুব জরুরী কিছু কথা আছে! এজন্য এসেছি!

– জরুরি কথা যে বলবেন সেটা আমি আপনাকে দেখেই বুঝতে পেরেছি। জি, বলুন।

– দেখো, আমি প্রথম থেকেই বলছি তোমার শাহীনের সাথে মেশাটা মোটেই ঠিক হয়নি। ও একটা সুবিধাবাদী। আমার থেকে ভালো ওকে কেউ চেনে না। তোমাকে তোমার মায়ের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার জন্যই সে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তোমাকে তার নির্বাচনী এলাকায় নিয়ে যাচ্ছে তার বিরুদ্ধে প্রচারণার জন্য। তোমাকে কিছুই করতে হবে না শুধু তার পাশে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকলেও তোমার মায়ের জন্য যে কতটা ক্ষতিকর সেটা তুমি টের পাচ্ছ না। মায়ের সাথে আর কত দূরত্ব বাড়াবে? নিজের পায়ে আর কুড়াল মেরো না।

-সবই টের পাচ্ছি এবং সবই বুঝি। আপনি খুব বোকা মনে করছেন কেনো আমাকে? আর আমি যতদূর জানি শাহীন তালুকদারের সাথে তো আপনার খুব ভালো বিজনেস রিলেশান। তাইলে বন্ধুর ভালোমন্দ ভাবা বাদ দিয়ে আমার আম্মির ভালো নিয়ে এত মাথাব্যথা কেনো? উনার কাছে যতদিন সুবিধা নেয়ার নিয়েছেন। এখন তো তাকে ছেড়েছুড়ে চলে এসেছেন। তাইলে আবার!

– মাথা ঘামাতে বাধ্য হচ্ছি কারণ সে তোমার আম্মি। আর তার ভালো মানে তোমার ভালো। এজন্যই বলছি। আর একটা কথা! আমি তোমাকে আগেই বলেছি তোমার আম্মিকে আমি কখনোই ছেড়ে আসতে চাইনি। সেই তার আভিজাত্য আর অহংকারের কারণে আমাকে ছেড়ে দিয়েছে। নতুন কাউকে পেলে পুরানোকে ভুলে যাওয়া তোমার আম্মির আজন্ম অভ্যাস।

– নিজের মায়ের এমন কুকীর্তির কথা নতুন করে আবারও শুনে পল্লবের ঘৃণায় শরীর শিউরে ওঠে। সে প্রসঙ্গ বদলাতে বলে, বুঝেছি। শাহীন তালুকদারকে আপনি যে সুবিধাবাদী বললেন আপনিও তো তার থেকে কোনো অংশে কম নয়। একসময় আম্মির সাথে খুব লয়াল ছিলেন এখন সাইড চেঞ্জ করেছেন। মানে যেখানে যখন সুবিধা পান আর কী! সেটা যাই হোক, আমি আমার ভালোমন্দ বুঝি। আমাকে কী করতে হবে সেটাও জানি। আপনাকে কষ্ট করে এভাবে আসতে হবে না। ওহ আরেকটা কথা!

– হ্যা, বলো। আরেকটা কথা! আমি শুধু এই নির্বাচনী প্রচারণার কথাই বলছি না আমি চাচ্ছি তুমি শাহীনের বলয় থেকে একদমই বের হয়ে যাও। ও মানুষ হিসেবে খুব বেশি ভালো না। তুমি বিপদে পড়বে।

– পল্লব খানিকটা সময় কিছু ভেবে ধীরেসুস্থে বলল, পৃথিবীতে সবাই সুবিধাবাদী। তাই আমিও নিজেকে বদলানোর চেষ্টা করছি। ভাবছি আমিও এর বাইরে থাকব কেন? আমার থেকে তো জীবনে বহু সুবিধা নিয়েছেন এবার আমার দিকে একটু তাকান! মায়ের সংসার ছেড়ে এসেছি, জানেনই তো তার সবকিছু ছেড়ে চলে এসেছি আমি। এখন আপনার কি দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না আমাকে সাহায্য করা?

– নিজের জেদের কারণে তুমি আজকে এই পর্যায়ে পৌঁছেছ। বারবার নিষেধ করেছি। এখনো বলছি খুব বেশি দেরি হয়ে যায়নি। ওই মেয়ের হাত ছেড়ে মায়ের ছেলে মায়ের কাছে ফিরে যাও।

হান্নান সাহেব পল্লবের ক্রোধান্বিত চোখের দিকে তাকিয়ে বলল, আচ্ছা, সে যাই হোক আমার কথা শুনবে তো না, কতবারই তো বললাম। বলো কী করতে পারি তোমার জন্য? আমার থেকে সাহায্য নিবে ভাবতেই পারিনি। কতবার বললাম আমার ফ্যাক্টরিতে ঢুকতে তা না করে শাহীনের ফ্যাক্টরিতে ঢুকলে।

– আমি আপনার ছেলে। সেই হিসেবে ওখানে ওই পোস্টে কেনো চাকরি করে নিজেকে অপমান করাব? ওটা আপনার ছেলের নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠান। ওখানে জয়েন করে নিজেকে ছোট করতে চাইনি।

– হান্নান সাহেব চুপচাপ শুনছিলেন।

– আমি আম্মির কাছে যতদিন ছিলাম মালিকের মতোই ছিলাম। তাই বুঝতেই পারছেন।

– এখন কী চাচ্ছ তুমি? কিছুটা ভীতিকর কণ্ঠে বললেন হান্নান সাহেব।

– ভয় নেই। বেশি কিছু দিতে হবে না। আমাকে জাস্ট বেড়িবাঁধ এ আপনার পেট্রোল পাম্প আছে ওটা দিয়ে দিন। ওটা তো আপনার আন্ডারেই আছে। তাই সমস্যা হবে না নিশ্চয়ই। ওটা পেলে আমি শাহীনকে ছেড়ে দিব কথা দিলাম।

– হান্নান সাহেব একটু নড়েচড়ে বসলেন।

– কথা বলছেন না যে! ভয় পেয়ে গেছেন মনে হচ্ছে! দুই নাম্বারি করে কম তো কামাননি। মেয়েকে বিদেশে পাঠিয়েছেন পড়াশোনা করতে। ছেলেকে গার্মেন্টস বিজনেসে সেট করে দিয়েছেন। আমারও তো কিছু প্রাপ্য আছে, তাই না!

– না মানে!

– আমতা আমতা করার তো কিছুই দেখছি না। আমি আপনার সম্পদে একজন লিগ্যাল ওয়ারিশ। তাছাড়া বাবা হিসেবে ছেলের বিপদে পাশে থাকা আপনার কর্তব্য।

হান্নান সাহেব একটু গড়িমসি করে বললেন, এসব কথা আসছে কেনো? এসব ছাড়ো। তুমি মায়ের কাছে ফিরে যাও।

– বারবার একই গান কেনো শোনাচ্ছেন? মায়ের কাছে ফিরে যাও, মায়ের কাছে ফিরে যাও। আপনার কোনো দায়িত্ব নেই! নাকি জন্ম দিয়েই আপনার দায়িত্ব খালাস!
এবার চিৎকার করে বলে উঠল পল্লব। ভেতরে যে জয়ী আছে সেটাও মনে নেই যেনো। জয়ী যে তার ব্যাপারে সবই জানে এটা এখনো অজানা পল্লবের।

– পল্লব, আস্তে বলো। তোমার ওয়াইফ শুনবে।

– শুনুক। তারও জানা উচিৎ আমার আসল পরিচয়। আচ্ছা, সেসব বাদ দিন। আপনাকে যেটা বললাম সেটা করছেন কিনা জানাবেন। তবে আশা করছি আমাকে নিরাশ করবেন না। কারণ আমি চাই না এই বয়সে আপনার স্ত্রী সন্তানদের কাছে এটা ফাঁস হোক যে আপনার স্ত্রী সন্তান থাকার পরেও যৌবনে আমার মায়ের সাথে ইলিগ্যাল রিলেশানের মাধ্যমে আমাকে জন্ম দিয়েছেন!
আর আমি এই মুহূর্তে কী করতে পারি আর কী পারি না সেটা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন। কারণ দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া মানুষ আমি!

পল্লব কিছুসময় চুপ থেকে আবার বলল, আর এটা আপনার ফ্যামিলির কাছে প্রকাশ পেলে এই বয়সে ছেলেমেয়ে আর ওয়াইফের কাছে আপনার অবস্থানটা কী হবে বুঝতেই পারছেন!
আর আমি আপনার সাথে মোটেই ফান করছি না এটাও বুঝতে পারছেন।

– মাথা ঠাণ্ডা করো তুমি। কীসব বলছ?.

– মাথা ঠাণ্ডাই আছে। আমি ভেবেচিন্তেই বলছি। আমারও শাহীনের গোলামী করার শখ নেই। আপনি আমার ডিমান্ড ফিলআপ করবেন আশা করছি। না হলে কী হবে বুঝতেই পারছেন৷

চলবে…….

পর্ব- ২০

https://www.facebook.com/111576077291737/posts/481472910302050/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here