#সুখ_নীড়
#পর্ব_২৩
সাজেদা চৌধুরীর হাত থেকে রক্ষা পেতে আগের বাসা ছেড়ে ঢাকার অদূরেই বিরুলিয়ার আকরান বাজারের পাশে একটা বাসা ভাড়া করেছে পল্লব। মাস দু’য়েক হলো এখানে থাকছে জয়ী আর সে। ঢাকার বাসাটিও সে ছাড়েনি। সেখানে পল্লব থাকে। আসলে জয়ীকে তার মায়ের হাত থেকে নিরাপদে রাখবার জন্যই সে জয়ীকে একরকম লুকিয়ে রেখেছে এখানে। জয়ী এখানে থাকে এটা তার মা হয়তো ভাবতেও পারবে না। জয়ীর একা থাকতে যাতে অসুবিধা না হয় তাই জয়ীদের গ্রাম থেকে দশ বারো বছরের একটা মেয়েকে আনা হয়েছে। মেয়েটাকে এখানকার স্থানীয় স্কুলে ভর্তি করেও দিয়েছে জয়ীতা। ইপিজেডের ওদিকে পল্লবের প্রায়ই কাজ থাকে। যেদিন সেখানে কাজ থাকে সেদিন সে বিরুলিয়ার এই বাসাতেই থাকে। আর বাকী সময় ঢাকাতে।
সেদিনের সেই ঘটনার পরই হুট করে পল্লব এমন সিদ্ধান্ত নেয়। সে তার এক বন্ধুর সাহায্যে এই বাসাটি পেয়েছে। পল্লবকে ছেড়ে জয়ী এখানে আসার জন্য মোটেই রাজি ছিল না। কিন্তু পল্লবের জোরাজুরিতে আর না করতে পারেনি। জয়ীর নিজেকে নিয়ে ভয় হয় না, তার ভয় হয় পল্লবকে নিয়ে। পল্লবের সাথে যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে সেই ভয়ে সে কিছুতেই পল্লবকে ঢাকাতে ও বাসাতে থাকতে দিতে রাজী নয়। তার কথা হলো, “দু’জনেই এক জায়গা থাকব। বিপদ আসুক আর যাই আসুক মরতে হলে দু’জনে একসাথে মরব। ”
পল্লব জয়ীকে বোঝায় তার কোনো ক্ষতি হবে না। নিজের ছেলেকে মুখে যাই বলুক কোনো ক্ষতি নিশ্চয়ই তার আম্মি করবে না। কিন্তু জয়ীর মন মানে না। সে ভীষণ ভয় পায় তার শাশুড়িকে।
এরমধ্যে নির্বাচন শেষ হয়ে গিয়েছে। পল্লবের আম্মি সাজেদা চৌধুরী বেশ ব্যবধানে হেরে গিয়েছে শাহীন তালুকদারের কাছে। রাগে, অপমানে সে একদম নিস্তব্ধ কিছুদিন ধরে। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার আগমমহূর্তেও সে ভাবেনি তার এভাবে পরাজয় হবে।
আসলে তার কর্মীরাও তার সাথে গাদ্দারী করেছে। তার নিজের ঘরেই যেখানে বিভীষণ রয়েছে সেখানে অন্যদের দোষ দিয়েই বা কী লাভ! মানসিকভাবে খুব ভেঙে পড়েছেন সাজেদা চৌধুরী। তার এমন হারের পেছনে মনে মনে পল্লবকেই দায়ী ভাবছে সে।
আজ তিনদিন পরে পল্লব এসেছে। রাতে খাওয়া দাওয়া শেষ করে পল্লবের বুকে মাথা দিয়ে শুয়ে আছে জয়ীতা। পল্লব তার চুলে হাত বুলাচ্ছে আর বলছে, তুমি আমাকে খুব ভালোবাসো তাই না?
– এটা কেমন প্রশ্ন? এটা কী নতুনভাবে বলতে হবে? একটু কপট রাগ দেখিয়ে বলল, জয়ী।
– উহু! প্রতিদিনই শুনতে ইচ্ছা হয়। মনে হয় যতবার শুনছি প্রতিবারই নতুন করে শুনছি।
– তাই! ঠিক আছে। তাহলে প্রতিদিনই বলব। খুশি এবার?
– খুব খুশি।
পল্লবের মেজাজ বেশ ফুরফুরে দেখে জয়ী সাহস করে বলল, একটা কথা বলবার জন্য এই দু’তিনদিন ধরে চেষ্টা করছি। কিন্তু সাহস হচ্ছে না।
– কী এমন কথা? সাহসের কী আছে? বলে ফেলো। কেউ কিছু কী বলেছে?
– না, না। সেসব কিছু না। তুমি কীভাবে নিবে তাই বলতে ভয় হচ্ছে। আসলে আমি মনে মনে ভীষণ ভয় পাচ্ছি।
– ভয় পাবার মতো কী এমন হলো?
– তুমি যেভাবে চারপাশে দিনদিন তোমার শত্রু বাড়িয়েই চলছ ভয় না পেয়ে উপায় আছে বলো! আম্মি নির্বাচনে হেরে গিয়েছেন। তার মানসিক অবস্থা এখন কেমন এটাতো তুমি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছ । এসব কিছুর জন্য যে সে তোমাকেই দায়ী ভাবছে এতে আমি কিঞ্চিত ভুলও করছি না। তার উপর শাহীন ভাই। তোমার কি মনে হয় উনি তোমাকে বিনা স্বার্থে এভাবে সাহায্য করছেন? অলরেডি উনি ওনার স্বার্থ হাসিল করে নিয়েছেন তোমাকে ব্যবহার করে! মধ্যখান থেকে আম্মির সাথে তোমার শত্রুতা আরো বাড়িয়ে দিলো। স্বার্থে আঘাত লাগলে শাহীন তালুকদারও তোমাকে ছেড়ে কথা বলবে না।
– বুঝতে পেরেছি। এই একই কথা কতবার বলবে? সবই বুঝি। এখন আমাকে কি করতে হবে তাই বলো।
– কিছু করতে হবে না। আমি আসলে বলছিলাম এদের শত্রুতা তো বাড়িয়েছই এখন আবার তুমি হান্নান সাহেবের সাথে নতুন সমস্যায় জড়াচ্ছ কেন?
– হান্নান সাহেবের সাথে যে আমার সমস্যা হচ্ছে সেটা তুমি কী করে জানলে? কেউ কি এখানে এসেছিল? কিছুটা ঘাবড়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করল, পল্লব।
– না, এখানে কেউ আসেনি। এখানে কী করে আসবে কেউ? বাসার ঠিকানা তো তুমি কাউকেই দাওনি।
-এখানে ঠিকানা যাতে কেউ না জানে তাই আমি এই বাসাতে আসার সময় নানান ধরনের সর্তকতা অবলম্বন করি। আচ্ছা বলো হান্নান সাহেবকে নিয়ে তোমার কী সমস্যা? এত চিন্তা কীসের?
– সেই একই সমস্যা। আমি আগেও বলেছি লোকটা মোটেও ভালো নয়। তুমি কিছুক্ষণ আগে ওনার সাথে ফোনে তর্কাতর্কি করছিলে সেটা আমার মোটেও ভালো লাগেনি।
পল্লব কিছুটা গম্ভীর হয়ে বলল, দেখো তুমি যেহেতু হান্নান সাহেবের সাথে আমার ফোনে কথা-বার্তা শুনেছ তাছাড়া আগেও একদিন উনি বাসায় এসেছিলেন। তাই ওনার সাথে আমার সম্পর্কটা কী সেটাও নিশ্চয়ই তুমি এখন জানো। বলতে লজ্জা হলেও উনিই আমার বায়োলজিক্যাল বাবা। অবশ্য ওনাকে আমি কোনদিনই বাবা বলে মনে করি না। আমার বাবা হিসেবে যাকে আমি জেনে এসেছি সেই আমার বাবা থাকবেন সারা জীবন। গতকালও অস্ট্রেলিয়া থেকে তিনি ফোন করে আমার খোঁজখবর নিয়েছেন। নিঃস্বার্থভাবে যে মানুষটা আমাকে ভালবাসে তার থেকে আপন আর পৃথিবীতে আর কেইবা আছে বলো। রক্তের সম্পর্ক হলেই যে সে আপন মানুষ হবে এমন কোন কথার কোনো মূল্য নেই। আর তার প্রমাণ আমার আম্মি আর তার বোনের ছেলে শাহীন তালুকদার।
– উনাকে যদি বাবা হিসেবে নাই ভাবো তাহলে উনার সাথে তুমি এই গ্যাঞ্জাম করতে কেন যাচ্ছ?
– আমার কথা তো আগে শেষ করতে দাও।
– আচ্ছা বলো।
– হান্নান সাহেব! এই লোকটার কারনে আমার জীবনটা তছনছ হয়ে গেছে। ইনি আমার জীবনে আসার আগ পর্যন্ত আমার জীবনটা স্বাভাবিক ছিল। এই একটা মাত্র লোকের কারণে যাকে বাবা বলে মানি, ভালোবাসি সেই খালেক সাহেবের মত একজন ভালো মানুষের জীবন জাহান্নামে পরিণত করেছে, আমার মাকে সে মিস গাইডেড করেছে, সংসার ভেঙেছে, আমার লাইফটাও কে সে বরবাদ করে রেখেছে। তাকে এত সহজে তো ছেড়ে দেওয়া যাবে না।
– কিন্তু তাই বলে এভাবে ওনার সাথে শত্রুতা বাড়িয়ে তুমি কেন নিজের পথকে দুর্গম করছ? উনার সম্পর্কে যতটুকু আমি তোমার থেকে জেনেছি এবং উনাকে দেখে যতটুকু বুঝেছি তাতে আমার মনে হয় না কোনদিনই উনি তোমাকে ছেলে হিসেবে মেনে নিচ্ছে! শুধুমাত্র তার ফায়দার জন্য তোমাকে ব্যবহার করেছে! তাছাড়া কাগজ-কলমেও তুমি ওনার সন্তান নয়! উনার থেকে কিছু পেতে হলে তোমাকে আগে উনার সাথে তোমার রিলেশনটা ক্লিয়ার করতে হবে। কিন্তু আমি চাই না তুমি সেটা করো। আমার কথা শোনো, উনি তোমাকে কিছুই দেবে না আর আমাদের কিছু চাইও না। তুমি সুস্থভাবে বেঁচে থাকলে আমাদের ইনশাআল্লাহ একদিন সবই হবে। তুমি প্লিইজ উনার সাথে সব সম্পর্ক ঝেড়ে ফেলে নিজের মতো করে পথ আগাও।
– তুমি একদম চিন্তা করো না।। আমাকে কি করতে হবে আমি জানি। আচ্ছা, এসব কথা ছাড়ো। তিনদিন পরে আমি তোমার কাছে এসেছি কোথায় আমাকে এমন কিছু বলবে যা শুনে আমার মনটা ভালো হয়ে যায় তা না কি সব উল্টোপাল্টা কথাবার্তা নিয়ে বসে আছ।
– ভালো কিছু শোনাতে গেলেইতো খারাপ কিছু চিন্তা আগে চলে আসে, পল্লব। আমি আমাদের ফিউচার নিয়ে খুব শংকিত।
– শঙ্কিত হওয়ার মত কিছুই হয়নি। আপনজনের সম্পর্ক ত্যাগ করেছি এটাই শুধুমাত্র আমার কষ্ট । তাছাড়া আমি যেমন ছিলাম তেমনি আছি। তুমি যদি চাও শাহিন তালুকদারের সাথে আমার সব সম্পর্ক ত্যাগ করে চলে আসতে আমি সেটাও করব। তুমি অযথা ভয় পাবে না। আমি যতক্ষণ বেঁচে আছি তোমার কোন কিছু হবে না।
– আমিতো আমাকে নিয়ে ভাবছি না পল্লব আমি তোমাকে নিয়ে ভাবছি, আমাদের সন্তানকে নিয়ে ভাবছি।
পল্লবের চোখদু’টো চকচক করে উঠল! এক লাফে শোয়া থেকে বসে পড়ল। জয়িতাকে টেনে তুলে দুই হাতে তার গ্রীবাদেশ চেপে ধরে বলল, তুমি সত্যি বলছ?
জয়ীতা ভয়ে ভয়ে আস্তে করে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে বলল, আমি আবারো মনে হয় কনসিভ করেছি।
পল্লবের খুশি খুশি ভাবটা কিছুটা মিইয়ে গেল।
পল্লবের মুখের দিকে তাকিয়ে জয়ী ভীষণ ভয় পেল। এবারও তার বাচ্চাকে মেরে ফেলা হবে নাতো। পল্লবের বদলে যাওয়া রূপের কারণে সে পল্লবকে খবরটা বলেছে। সে নিজেও কনফার্ম হয়েছে দিন পনেরো আগে কিন্তু পল্লবকে বলতে সাহস হয়নি। আজ এখানকার একটা কমিউনিটি ক্লিনিকে যেয়ে পুরোপুরি কনফার্ম হয়ে এসেছে।
– তুমি খুশি হওনি পল্লব? দ্বিধাগ্রস্ত কণ্ঠে জয়িতা জানতে চাইল।
– খুশি হব না কেন? অবশ্যই খুশি হয়েছি! আমার কোনো আপন মানুষ আসছে। আজকাল এই পৃথিবীতে নিজেকে খুব বেশি অসহায় মনে হয় জানো। আমার সব আপন মানুষের থেকে আমি দূরে সরে গিয়েছি। চারপাশে এত এত মানুষ কিন্তু কেউ আমার আপন নয়। যার দিকেই তাকাই মনে হয় সেই ভালো মানুষের মুখোশ পরা। তুমি আমাকে এত বড় একটা খুশির সংবাদ দিয়েছ আমি কি খুশী না হয়ে থাকতে পারি। কিন্তু জয়ী
পল্লবের কথা শেষ হবার আগেই জয়ীতা তার মুখটা চেপে ধরে বলল, প্লীজ…. না…. এবার তুমি আমাকে এটা করতে বলবে না।
পল্লব তার হাতটা সরিয়ে দিয়ে বলল, তুমি যা ভেবেছ আমি সেটা বলছি না.! আমি এর আগেও দুই দুইবার তোমার সাথে অন্যায় করেছি আমি আমার নিজের সন্তানকে মেরে ফেলেছি। আমি মানুষ ছিলাম না। আমি অমানুষ ছিলাম। আমি আমার আম্মির প্ররোচনায় পড়ে আর এতটা মানসিক ট্রমার মধ্যে ছিলাম যে ভাল মন্দ সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা আমার ছিল না।
— তাহলে!
– ডাক্তার কি বলেছিল তুমি ভুলে গিয়েছ? তোমার শরীরের অবস্থা একবার বিবেচনা করবে না? অন্ততপক্ষে বছরখানেকের ভেতর আর বেবি নিতে নিষেধ করেছিল।
– কিচ্ছু হবে না। দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে আরও ছয় মাস আগে। আমি এবার নিজেই ইচ্ছে করে বাচ্চা নিয়েছি। এই নিঃসঙ্গ জীবন আমার আর ভালো লাগে না। দম বন্ধ হয়ে আসে। তুমি থাকো না। আশেপাশে কোনো আপনজন নেই। সারাটাদিন আজেবাজে চিন্তায় মাথা ধরে আসে। একটা বাচ্চা থাকলে অন্ততপক্ষে ওর সাথে সময়টা কেটে যাবে। তাছাড়া আমারও বয়স ত্রিশ পেরুচ্ছে। পরে যদি আর কনসিভ না করি। অনেক ভেবেচিন্তেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্লিজ, না করো না। আল্লাহর উপর ভরসা করো।
– একবার মরার ঘর দেখে এসেছ। যে আসছে তাকে আর আটকাতে চাই না। তবে তোমার শরীরের কথা ভেবে খুব ভয় হচ্ছে। কালকেই তোমাকে সাভারে নিয়ে যাব। ওখানে একজন ভালো গাইনি ডাক্তার দেখিয়ে আমি নিশ্চিন্ত হতে চাই। আমি তোমার কোনো বিপদ হোক এটা দেখতে পারব না, জয়ী। তুমি ছাড়া আমার আর আছেই কে বলো!
জয়ীর মনের সব মেঘ মুহূর্তেই কেটে গেল। সে পল্লবকে জড়িয়ে ধরে বলল, তুমি পাশে থাকলে আমার কিচ্ছু হবে না। তুমি শুধু এভাবেই সবসময় আমার পাশে থেকো। দেখো আমাদের সন্তান আমাদের মাঝে সুস্থভাবেই আসবে! আমাদের এই ঘর আলোয় ঝলমলে উঠবে। আমাদেরও আর দশটা হাসবেন্ড ওয়াইফের মতো একটা সুন্দর স্বাভাবিক সংসার হবে!
পল্লবের চোখ দু’টি ভিজে উঠল এবার। সেও জয়ীকে বুকের মাঝে চেপে ধরল শক্ত করে।
সাজেদা চৌধুরী ইদানীং ঠিকঠাক অফিসে যাচ্ছে না।কিছুই ভালো লাগে না তার! এই অপমান সে কী করে হজম করবে! প্রতিপক্ষ যদি ওই শাহীন না হয়ে অন্য কেউ হতো তবে এত কষ্ট পেত না সে। তার এই রাগ সব যেয়ে চেপেছে পল্লবের ঘাড়ে। পল্লবের থেকে বেশি জয়ীর উপর। জয়ীকে যেনো হাতের কাছে পেলে সে চিবিয়ে খেতো এমন অবস্থা! পল্লবের খোঁজে দুইদিন তার বাসায় গেলেও বাসায় তালা ঝোলানো পেয়েছে। দারোয়ানের কাছে জেনেছে পল্লব এখানে থাকলেও তার স্ত্রী মানে জয়ী ও বাসা ছেড়েছে বহু আগে। সাজেদা চৌধুরী তো ভীষণ অবাক হয়েছেন এটা শুনে। এই মেয়ে তো ছেড়ে যাবার মেয়ে নয়। তাইলে গেল কোথায়? তার গ্রামেও খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। কিন্তু হদীস মেলেনি। জয়ীকে নিজের হাতে গলা চেপে না মারা পর্যন্ত তার শান্তি হবে না। তাই লোক লাগিয়েছেন জয়ীকে খোঁজার জন্য। কিন্তু কোনো লাভ হচ্ছে না কিছুতেই।
ব্যবসা বাণিজ্য সব বড়ছেলের হাতে সঁপে দিয়ে এখন নিজেকে সবকিছু থেকে একটু দূরে রাখার চেষ্টা করছেন। আদরের ছেলে পল্লবকে হারিয়ে, ইলেকশানে হেরে সবকিছু মিলিয়ে বিপর্যস্ত সে। মনে হচ্ছে জয়ীকে গলা চেপে মারতে পারলে তারে কষ্টগুলো কিছুটা হলেও দূর হতো।
ডাক্তারের সাথে কথা বলে পল্লব খানিকটা শাস্তি পেয়েছে জয়ীতার শারীরিক অবস্থা মোটামুটি ভালই। তেমন কোনো জটিলতা নেই।
খুশিমনে অপেক্ষা করছে কবে তার সন্তান এই পৃথিবীতে আসবে । আগের থেকে জয়ীকে এখন বেশি করে সময় দিচ্ছে। জয়ী আর পল্লব তাদের অনাগত সন্তানের জন্য স্বপ্ন সাজানোতে বিভোর। দু’জনে মিলে নামও ঠিকঠাক করে ফেলেছে। পল্লবের খুব ইচ্ছা তার প্রথম সন্তান ছেলে হোক। আর জয়ীর ইচ্ছে একটা মেয়ের। তারা ছেলে এবং মেয়ে দু’জনেরই নাম ঠিক করে রেখেছে। ছেলে হলে জয় আর মেয়ে হলে পল্লবী।
চলবে…..
(বিঃ দ্রঃ আমার বাচ্চাদের এক্সাম শুরু হবার কারণে লেখার মাঝে এত বিরতি। বিরতির কারণে আপনাদের খুব অপেক্ষা করিয়েছি। খুব খুব দুঃখিত।)
পর্ব- ২২
https://www.facebook.com/111576077291737/posts/485812186534789/