#গোজামিল,পর্ব-১
#tani_tass_ritt
রুপশার মাথা ঝিম ধরে আছে। যেই খবরটা শুনে তার সবথেকে বেশি খুশি হওয়ার কথা, কিন্তু আফসোস সে হতে পারছে না।
রুপশার জন্য সাহেরের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এসেছে সাহেরের পরিবার।আর আশ্চর্যের বিষয় রুপশার পরিবারের ও এতে কোনো আপত্তি নেই।
রুপশা ভেবে পাচ্ছেনা ও কি করবে। যার জন্য টানা ৬ টা বছর অপেক্ষা করে একপ্রকার হাল ছেড়ে দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে গিয়েছে ।আজ নাকি সেই অতীত ই তার সামনে এসে দাড়ালো।
রুপশার হাত পা কাঁপছে।সে কোনোরকম নিজের রুমে গিয়ে বিছানার পাশে রাখা ছোট টেবিল টার উপর থেকে ফোনটা নিয়ে কাঁপা কাঁপা হাতে মাহাদিকে কল দিলো।দুটো রিং বাজতেই ওপাশ থেকে রিসিভ হলো ফোন।
“কি ব্যাপার গলুমলু! ফোন টা চেক করেছে কতগুলো ম্যাসেজ দিয়েছি আপনাকে।”
রুপশা চুপ করে আছে তার গলা কাঁপছে।
“কি হলো ম্যাডাম কিছু বলছেন না যে!”
রুপশা কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে বললো,
“সাহের তার পরিবার নিয়ে এসেছে আমার জন্য বিয়ের প্রপোজাল নিয়ে।”
এটা শুনে মাহাদি হেসে ফেললো।
“তো এই আর নতুন কি। এমনটা তো একদিন হবে জানাই ছিলো।কিন্তু তোমার পরিবার তো আর ওখানে তোমাকে বিয়ে দিচ্ছে না।.”
বলেই আবার হাসতে লাগলো।
রুপশা কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো,
“আমার পরিবার রাজি।”
নিমেষেই মনে হলো মাহাদির মুখ থেকে হাসি চলে গেলো। সে বিশ্বাস করতে পারছেনা সে কি ভুল শুনছে নাকি ঠিক।
“এই মেয়ে তুমি আমার সাথে মজা করছো? এটা কি করে সম্ভব?”
“আমি জানিনা কিছু মাহাদি। ” বলেই অঝোরে কাঁদতে লাগলো।
মাহাদি কি বলবে বুঝতে পারছেনা।আর রুপশা এভাবে কাঁদছে কেনো? তার মানে কি রুপশা এখনো… নাহ আর ভাবতে পারছেনা মাহাদি। কিছু না বলেই মাহাদি ফোন কেটে দিলো।
রুপশা ঠাই বসে রইলো সেখানে। দরজা খোলার শব্দ পাওয়ায় চমকে উঠলো। পেছনে তাকিয়ে দেখলো সাহের দাঁড়ানো।
সাহেরের মুখে বিজয়ের হাসি। মনে হচ্ছে যেনো মাউন্ট এভারেস্ট জয় করে ফেলেছে। সাহের কোনো কিছু না বলেই রুপশা জড়িয়ে ধরলো। এই যেনো কত কালের চাওয়া।
রুপশার পুরো শরীর ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।থরথর করে কাঁপছে সে। শরীরের শক্তি যেনো ক্রমশ হাড়িয়ে যাচ্ছে।
সাহের আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।ছেড়ে দিলে এই বুঝি চলে যাবে। গত ৭ বছরের সাধনার পর স্বপ্ন সত্যি হচ্ছে।
সাহের রুপশার দু গালে হাত দিয়ে বললো,”কি বলেছিলাম না একদিন ঠিক আমি তোমাকে নিজের করে নিবো। তোমার এই ঘারত্যারার কথা বিশ্বাস হলো তো।”
রুপশার গাল বেয়ে পানি পড়ছে।রুপশা কিছু বলতে যাবে তখনি রুপশার ফোন বেজে উঠলো।কলের আওয়াজ পেয়ে রুপশা সাহেরের থেকে দূরে সরে গেলো। ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখলো মাহাদি।
রুপশার আচরণ সাহেরের কাছে বেশ অদ্ভুত ঠেকছে। সে বুঝতে পারছে না রুপশা কি খুশিতে এমন করছে নাকি অন্যকিছু।
রুপশা আস্তে করে বললো,”সাহের তুমি একটু বাহিরে যাবে।আমার একটা ইম্পরট্যান্ট কল এসেছে। ”
সাহের কিছু না বলে রুম থেকে চলে গেলো। তার ভেতর এক অজানা ভয় কাজ করছে।সে কি বেশি দেড়ি করে ফেললো। রুপশা কি তাহলে… নাহ আর কিছু ভাবতে পারছে না সে।
সেদিনের মতো কথা পাকা করে সাহেরের পরিবার সেখান থেকে চলে গেলো।
ঘড়িতে রাত দুটো বেজে ১০ মিনিট। রুপশা রুমে পায়চারি করছে। তার মাথার নানান কথা ঘুরছে। কি হচ্ছে এগুলো তার সাথে। আর সে মাহাদিকেই বা কি বলবে। সে তো মাহাদিকে ঠকাতে পারেনা। এইসব ভাবতে ভাবতে সে লাইট নিভিয়ে বিছার কাছে যেতেই পেছন থেকে কেউ তাকে চেপে ধরলো……
চলবে…