গল্পঃ রংবদল
পর্বঃ০২
নিঝুম জামান (ছদ্মনাম)
আরাফ আসার পরে অর্পিতা বলা শুরু করে যা শুনে ওরা তিনজনই অনেক অবাক হয়ে যায়।।
–আমি ঊর্মিলা, শর্মিলার জমজ বোন।
ঊর্মিলার কথা শুনে আবীর ভালো করে ওর দিকে তাকায়। বেশ কিছু পার্থক্য খুঁজে বের করে সেটা হচ্ছে শর্মিলার গালে একটা বড় তিল ছিল,যেটা ঊর্মিলার নেই।ঊর্মিলার ঠোঁটের নিচে ছোট একটা তিল। আর কথা বলার উচ্চারণে হালকা জড়তা আছে। শর্মিলার চুলগুলো অনেক বড় বড় আর ঊর্মিলার চুলগুলো একবারেই ছোট, কাঁধ থেকে হালকা নিচে।
–কিন্তু শর্মিলার মুখে তো কোনোদিন শুনি নি। আমার তো মনে হচ্ছে তোমাকে আমাদের শত্রুপক্ষ পাঠিয়েছে। (রাফি)
–না,আমি শর্মিলার আপন বোনই। জমজ না হলে আমাদের চেহারা একরকম হলো কি করে? আজব!
(হালকা বিরক্তি নিয়ে)
–আরে রাফি,কি সব আবোল তাবোল বলছিস তুই?(আবীর)
–তুই থাম আবীর। ওনাকে শর্মিলা মনে করে সব বুদ্ধিও হারিয়ে ফেলেছিস। ওনি বলল আর আমরা বিশ্বাস করে ফেলব ওনিই শর্মিলার বোন!আরে আজকাল প্লাস্টিক সার্জারি করে চেহারা বানানো যায় ।তাছাড়া ওনি যদি শর্মিলার বোনই হন তবে লুকিয়ে কেন আমাদের এখানে এসেছেন? তাছাড়া শর্মিলার বোন ঊর্মিলা হলে আইডি কার্ডে ওনার নাম অর্পিতা মুন কেনো? (এক দমে রাফি কথাগুলো বলল)
–এই যে মিস্টার থামুন।আমাকে একলাইন বলতে দিয়ে দশ লাইন তো নিজেই বলে ফেললেন। আমাকে পুরো ঘটনা আস্তে আস্তে বলতে দিন।
.
আমার নাম ঊর্মিলা হলেও শর্মিলা আমাকে ঢং করে মুন বলে ডাকতো আমিও ওকে ঢং করে জুন বলে ডাকতাম। ওর মুখে নিশ্চয়ই মুনের কথা শুনেছেন?
আমিই সেই মুন। ছোটবেলা থেকে দুবোন মারামারিও করতাম বেশি, মিল ছিল বেশি। আমি প্রায় ছয়বছর আগে পড়াশোনা করার জন্য বিদেশে চলে যাই।কিন্তু শর্মিলা দেশেই থেকে যায়। ও বাবা-মা ছাড়া এক মুহূর্ত থাকতে পারত না। এরপর ও এখানেই পড়াশোনা করে। আমার বাবা-মা দুজনেই ডাক্তার হওয়ায় ওকে সময় দিতে পারত না। আমিও ছিলাম না যে ওর একাকিত্মের সাথী হবো। এরপর একদিন আমাকে বলে, আবীর নামের একটা ছেলে ওকে ফলো করে।ছেলেটার আচার-আচরণ দেখলে মনে হয় ওকে পছন্দ করে। আমিও ওকে বললাম ভদ্র ছেলে হলে ফ্রেন্ডশিপ করিস, নয়ত না। আমার কথা শুনেই ও আপনার প্রপোজাল একসেপ্ট করেছে। তারপর ওর কাছে জানতে পারি আপনি নাকি ওকে অনেক ভালোবাসেন! এই কথা শুনে আমি ওকে মজা করে বলেছি আমরা যে জমজ বোন একথা আপনাকে বলতে না, দেশে ফিরে দুজন একই রকম শাড়ি,একই সাজ দিয়ে আপনার সামনে এসে আপনাকে চমকে দিব আর বলব আসল শর্মিলাকে খুঁজে নিতে। কিন্তু সেটা তো আর হলো না। তার আগেই আমার বোনটা…
বলতে বলতে কেঁদে দিল ঊর্মিলা।তারপর চোখ মুখ মুছে আবার বলা শুরু করল,
শর্মিলার মৃত্যুর কথা শুনে আমি বিশ্বাস করতে পারি নি। দশ মিনিট আমার মাথা হ্যাং হয়ে ছিল। মনে হচ্ছিল এটা সত্যি কোন ঘটনা না, কোনো ভয়ংকর দুঃস্বপ্ন দেখছি। আমি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিলাম না কারন ওর মৃত্যুর কয়েক ঘন্টা আগে ও আমাকে ম্যাসেজ করে কিন্তু দুভার্গ্যবশতঃ আমি তখন ম্যাসেজ সিন করি নি।যখন সিন করে রিপ্লাই দেই এবং কল করি তখন শুনি যে ও মারা গেছে।
আমার বুকের ভিতর এক ভয়ংকর যন্ত্রণা অনুভব করি। বুক ভারের যন্ত্রণা আমি চিৎকার করে কাঁদতে পারছিলাম না। ছোটবেলা থেকেই আমি একটু শক্ত মনের মানুষ। ভিতরের চাপা কষ্টটাকে বাইরে প্রকাশ করতে পারতাম না। আমার মাথায় ঘুরতে লাগলো
কী হয়ে, কীভাবে মারা গেলো? আমার আত্মীয়-স্বজনদের কাছে যা জানি সব ছিল ধোঁয়াশা। তখন আমার বাবার হার্টের চিকিৎসার জন্যও তারা দুজনেও দেশের বাইরে ছিল।মোটকথা,
কারো কার থেকে সঠিক তথ্য পাই নি। আমিও অস্ট্রেলিয়া থেকে ফিরতে পারি নি,কাগজপত্রের কিছু জটিলতা থাকায়।যার কারনে সঠিক খবর তখন নিতে পারি নি। তবুও অস্ট্রেলিয়া থেকে যথাসাধ্য ওর মৃত্যুর কারন উদঘাটন করার চেষ্টা করেছি, কেউ কেউ বলেছিল ওর মৃত্যুর জন্য দায়ী আবীর,কারন ওনার সাথেই শর্মিলাকে শেষবারের মতো দেখা গেছে। আর ওর মৃতদেহটাকে ঝলসে দেওয়া হয়েছে। আরো অনেক ঘটনা হয়েছে যেটা আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। ওর মৃত্যুর খবরে পরিবার-পরিজন ছাড়া বিদেশে আমার অবস্থা অনেক খারাপ হয়ে উঠছিল। আমার বিপদে আমার হাত শক্ত করে ধরেছিল আমার বেস্টফ্রেন্ড আরাফ। ও আমাকে সবসময় সবদিক থেকে সার্পোট দিত।
প্রায় রাতে ঘুমাতে পারতাম না শর্মিলার কথা ভেবে ভেবে। ওর হ*ত্যার প্রতিশোধ নিতে একমাস আগে বাংলাদেশে আসি।আমার পরিবারের কেউ জানে না আমি যে এদেশে এসেছি। আমার এক কাজিনকে অনুরোধ করি যাতে ওদের পত্রিকা অফিসে আমাকে কাজ করার কিছুদিন সুযোগ দেয়। ওর সহযোগিতায় আমি ওদের পত্রিকা অফিসে নামমাত্র জয়েন করি এবং একটা সাংবাদিকতার পরিচয় নিই যাতে আমার সব কাজ করতে সহজ হয়। সাথে নামটাও চেন্জ করে ফেলি যাতে কেউ সন্দেহ না করে। এরপর নিজেকে আড়াল করতে চোখে লেন্স ব্যবহার করি,সবসময় মাস্ক পড়ে থাকি।
.
আমার সন্দেহের প্রথম পাঁচজনের তালিকায় আপনিও (আবীর) উঠে
আসেন। আপনার কর্মকাণ্ড আমি লক্ষ্য করতে করতে এখানে চলে আসি। এখন অবশ্য বুঝতে পারছি আপনিও আমার মতো শর্মিলার হ*ত্যাকারীদের শাস্তি দিতে চান। আপনার এমন মন-মানসিকতা দেখে আমার ভীষন ভালো লাগছে।আমার বোন ভুল কোনো ভুল মানুষকে পছন্দ করে নি। আপনি এবার সব ঘটনা খুলে বলুন কি হয়েছিল সেদিন? শুনেছি শর্মিলার সাথে আপনিও ছিলেন।
–হ্যাঁ,শর্মিলাকে আমি খুব ভালোবাসতাম। এখনও বাসি। আপনার কাছে আজকে কোন কিছু গোপন করব না। একবারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বলব।
–জ্বি বলুন। আমি সব শুনব।
আবীর সব ঘটনা খুলে বলবে এমন সময় ঊর্মিলার মোবাইলে কল আসলো। আর্জেন্ট কল হওয়ায় তাড়াহুড়ো করে আরাফ-ঊর্মিলা বেড়িয়ে গেল। যাওয়ার সময় আবীরের নাম্বার নিয়ে গেল এবং বলে গেল আগামীকাল পুরো ঘটনা শুনবে। তবে কি এমন আর্জেন্ট কল এলো যে ঊর্মিলা চলে গেল এমন তাড়াহুড়ো করে সেটা ভীষণ জানতে ইচ্ছা করল আবীরের।
.
.
বাড়ি এসে আবীর শুধু ঊর্মিলার কথা চিন্তা করছে।
প্রথম দেখাতেই ঊর্মিলার জন্য মনের কোণে কেমন যেন একটা টান অনুভব করছে।এটা কি মাত্র দু’জনের চেহারা এক বলে? কোন উত্তর খুঁজে পেল না আবীর! দুইবোনের চেহারার সাথে সাথে আচরনেও পুরো মিল। শর্মিলা যেমন রাগী ধাঁচের ছিল, ঊর্মিলার কথাবার্তাতেও তেমনি দেখা যায়।
তাহলে কি আবীর ঊর্মিলার মাঝেই শর্মিলাকে খুঁজে পাবে?
আবীর শর্মিলার স্মৃতিতে ডুব দেয়।কীভাবে তাদের প্রথম দেখা হয়েছিল।
★ফ্ল্যাশব্যাক★
সময়টা এক বছর আগে।
ভার্সিটির সামনে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছি হঠাৎ চোখ পড়লো কিছুদূরে দুটো মেয়ে খিলখিল করে হাসছে আর কোনো ব্যাপার নিয়ে হাসছে।মেয়ে দুটোর হাসি দেখে আমি ঠোঁটের কোণেও আপনা-আপনি হাসি চলে এলো । দুটো মেয়েই দেখতে অসম্ভব সুন্দরী। তাদের প্রানবন্ত হাসি তাদের সৌন্দর্যকে যেন দ্বিগুণ করে দিয়েছে
আমি আমার বেস্টফ্রেন্ড তামিমকে খোঁচা দিয়ে মেয়ে দুটোকে দেখাতে চাইলাম।কিন্তু এমা! ওতো আগে থেকেই মেয়েগুলোর দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে।
আমি কনুই দিয়ে তামিমকে ধাক্কা দিয়ে বললাম,
–কিরে এমন ড্যাবড্যাব তাকিয়ে কি দেখছিস?
ও আমাকে আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করে দেখিয়ে বলল,
–দেখ,মেয়ে দুইটা কি সুন্দর না! একটার ওপর তো ক্রাশ খেয়ে ফেলেছি।
আমি মনে মনে ভাবলাম কে জানে আমি যাকে পছন্দ করেছি সে কিনা!আমি ওকে বললাম,
–আমিও একটার ওপর ক্রাশ খেয়ে ফেলেছি।
আমার কথা শুনে যেন তামিম চল্লিশ ভোল্টের ইলেকট্রিক শক খেলো।তারপর আমার দিকে চোখ বড়বড় করে তাকিয়ে বললো,
–কোনটার ওপর ক্রাশ খেয়েছিস তুই?
আমাদের ক্রাশ খাওয়ার কথা শুনে বাকী বন্ধুরা আমাদের দিকে তাকালো, তারপর রাফি বলল,
–কিরে তোরা কার ওপর ক্রাশ খাইলি?
আমি ওদের বললাম,
–ওই যে হালকা গোলাপি রঙের থ্রি-পিস পড়া মেয়েটার ওপর।
আমার কথা শুনে যেন তামিমের বুক থেকে বড় একটা পাথর সরে গেল।আমার কাঁধে একহাত দিয়ে অন্য হাত ওর বুকের বামপাশে দিয়ে বলল,
–বাঁচাইলি দোস্ত,আমি তোর ক্রাশের সাথেরটার ওপর ফিদা…
–তাইলে দুইবন্ধু দুই বান্ধবীর ওপর ফিদা।প্রেমের করার রাস্তা করে দিব নাকি? (রাফি)
রাফির কথা শুনে আমরা দুজনে মুচকি হেসে মাথা
নাড়ালাম। আমাদের সম্মতি দেখে রাফি বলল,
–আমার ওপর সব ছেড়ে দে,কালকে দেখবি মেয়ে দুইটা তোদের দুজনের গার্লফ্রেন্ড।
আমি আমাদের বাকী দুজন বন্ধু নয়ন, ইমনকে বললাম,
–তোরা দুজন সাক্ষী,রাফি বলেছে কালকে আমার আর তামিমের গার্লফ্রেন্ড হবে ওই মেয়ে দুইটা।
আমার কথা শুনে সকলে জোরে হেসে দিল।তারপর সেখান থেকে চলে আসলাম।
.
🥀
.
পরদিন ভার্সিটিতে যেতেই রাফিকে দেখলাম আমাদের এক ব্যাচ জুনিয়র জুনায়েদকে কি যেনো বোঝাচ্ছে। আর ছেলেটাও হাঁ করে ওর সব কথা গিলছে।আমি রাফির কাছে যেতেই রাফি বলল,
–দেইখো মামা,আজকেই ওই মেয়ে দুইটা তোমাদের দুজনের গার্লফ্রেন্ড হয়ে যাবে একবারে নিজে থেকে সেধে। জাস্ট ওয়াচ এন্ড সী।
রাফির কথা শুনে আমি আর তামিম অপেক্ষা করতে লাগলাম কাঙ্ক্ষিত মুহূর্তের জন্য। এর মাঝেই মেয়ে দুটোর দেখা পেলাম। মেয়ে দুটো আসছে দেখে রাফি
জুনিয়র ছেলেটাকে বলল,
–জুনায়েদ ওই মেয়েগুলোর কথা বলেছিলাম । যা বলেছি তা বাড়িয়ে-ছাড়িয়ে বলবি।ওকে?
–জ্বি ভাই।
মেয়ে দুটো কাছাকাছি আসতেই আমরা গাছের আড়ালে দাড়িঁয়ে রইলাম আর জুনায়েদ ওদের সামনে গিয়ে বলল,
–কেমন আছো? তোমরা নিশ্চয়ই ফার্স্ট ইয়ারে পড়ো? আমি তোমাদের সিনিয়র।
মেয়ে দুটো সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,
–না,সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি।
–আগে কোনোদিন তো দেখি নি।
–কীভাবে দেখবেন করোনার জন্য তো এতদিন ভার্সিটি বন্ধ ছিল।
–ওহহ,আচ্ছা। তা তোমাদের নাম কি?
আমি যাকে পছন্দ করেছি সেই মেয়েটা উত্তর দিলো,
“শর্মিলা আহমেদ। আপনি শর্মি বলে ডাকতে পারেন,সকলে শর্মি বলে ডাকে।”
শর্মিলা নামটা শুনেই মনের মধ্যে একটা ভালোলাগা কাজ করলো। আর তামিমের পছন্দ করা মেয়েটার নাম,রিনি।
–বাহ্,বেশ সুন্দর নাম। সেকেন্ড ইয়ারে পড়লেও তো ভার্সিটিতে বলা যায় নতুনই এসেছো। আমাদের ভার্সিটির বড়ভাইদের চিনো তো? (জুনায়েদ)
মেয়ে দুটো বিরক্তি চেহারা নিয়ে জুুনায়েদের দিকে তাকিয়ে আছে। জুনায়েদের এমন অযথা আলাপের কাহিনি দেখে আমার নিজেরই অনেক রাগ উঠে গেল। আমি গাছের আড়াল থেকে বেরিয়ে জুনায়েদের সামনে গেলাম।আমার দেখাদেখি ওরাও আসলো। আমাকে দেখে জুনায়েদ একটা মেকি হাসি দিয়ে বলল,
–আসসালামু আলাইকুম আবীর ভাই। এরপর শর্মিলাকে উদ্দেশ্য করে বলল,
–এই হচ্ছে আবীর ভাই আমাদের ভার্সিটির টপ থ্রি ক্রাশ বয়দের একজন।পড়াশোনায় অনেক ভালো। টিচারদের চোখের মনি। ভার্সিটিরও সকলের প্রিয়।
জুনায়েদের মুখে এসব কথা শুনে রিনি বলল,
–হুম ভালো।
আবারও দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিয়ে জুনায়েদ বলা শুরু করল,
–ওনাদের টাকা-পয়সা প্রচুর। ওনার নিজের গাড়ী আছে। ওনার বাবা একজন বিজনেসম্যান, মা কলেজের প্রফেসর। টাকা-পয়সার কমতি নেই। কোন মেয়ের সাথে এখন অবধি প্রেম করে নাই।মেয়েদেরকে অনেক রেসপেক্ট করে। মানুষকে অনেক হেল্প করে,ভালোবাসে।বলা যায় ভাইয়ের হৃদয়টা অনেক বড়।
জুনায়েদের কথা শুনে এবারে শর্মিলা বিরক্ত গলায় বলায়,
–সবই বুঝলাম, তা এগুলো আমাদের শোনাচ্ছেন কেন?আপনার কথাবার্তা শুনে তো মনে হচ্ছে আবীর ভাইয়ার জন্য ঘটকালি করতে নেমেছেন।আপনাকে তার নামে গুনগান করার জন্য ভাড়া করেছে। আমাদের আবার গুনগান শোনার টাইম নাই।আমাদের ক্লাসের দেরী হয়ে যাচ্ছে।
বলে ওরা চলে গেল।
..
শর্মিলার কথা শুনে আবীরের মেজাজ পুরো খারাপ হয়ে গেল। জুনিয়র মেয়ে হয়ে কীভাবে তাদের সামনে গলা উচু তাদেরকে কথা শোনায়। আজকে ওরা আমাদের দুই বন্ধুর ক্রাশ না হলে ঠাটিয়ে থাপ্পড় মেরে কানের পর্দা ফাটিয়ে দিতাম। শর্মিলার রাগটা গিয়ে পড়লো জুনায়েদের ওপর। ওর কলারে ধরে কিছু বলার আগেই রাফি আর তামিম আমাকে ছাড়িয়ে নিয়ে বলল,
–শর্মিলার রাগ কেন তুই ওর ওপর দেখাচ্ছিস? পারলে শর্মিলাকে গিয়ে বল। জুনিয়র মেয়ে হয়ে ও তোকে ইনডিরেক্টলি অপমান করে গেল। (রাফি)
–সব দোষ তোর রাফি।তুই না বললি আজকেই মেয়েটা আমার গার্লফ্রেন্ড হয়ে যাবে,কই হলো না তো?
আর জুনায়েদকে পাকনামি করে এতো বাড়িয়ে বলতে কে বলছে?এখন আমি কিছু জানি না ওই শর্মিলাকেই আমার লাগবে। তুই কিছু একটা কর।
–জুনায়েদ বাড়ায় কিছুই বলে নাই আবীর। তোর সম্পর্কে তো সব সঠিক তথ্যই দিছে কিন্তু ওর কথাগুলো শোনা গেছে চাপাবাজি টাইপের।তুই খামোখা রাগ করিস না। (তামিম)
ওদের কিছু না বলে সেখান থেকে চলে এলাম।
.
.
শর্মিলাকে দেখার পর থেকেই যেন আমার মনের সব শান্তি হারিয়েছি। একদিন না দেখলে অস্থির লাগে।তবে ওর কাছাকাছি যাই না।দূর থেকে দেখেই চলে আসি। ওর প্রতি আমার এমন পাগলামি দেখে বেশ কিছুদিন পরে বন্ধুরা আমাকে শর্মিলাকে প্রপোজ করতে বলে। ওদের কথা শুনে আর কিছু না ভেবেই ভার্সিটির গার্ডেন এরিয়াতে শর্মিলাকে প্রপোজ করি।
প্রপোজ করার পরে শর্মিলার কথা শুনে আমি পুরোই বোকা হয়ে যাই….
#চলব