চিত্ত_চিরে_চৈত্রমাস,পর্বঃ সাত

0
520

#চিত্ত_চিরে_চৈত্রমাস,পর্বঃ সাত
#মম_সাহা

(১৬)

প্রকৃতিতে তখন গভীর হয়ে আসা সন্ধ্যার বিচরণ। চারদিকের কৃত্রিম আলো সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এই সন্ধ্যা নিবারণের জন্য। হাহাকারে হাহাকারে ভরে উঠা মানুষজন চুপচাপ, নিবিড় ভাবে স্মৃতি আঁকড়ে বিসর্জন দিচ্ছে অশ্রুকণা। সন্তান যেমনই হোক, বাবা-মায়ের কাছে তারা সবচেয়ে মূল্যবান উপহার। সেই জলজ্যান্ত উপহার যখন বিদায় জানায়, তখন কোন বাবা-মা ই বা মানতে পারে সে বিদায়ের প্রতিধ্বনি! তেমনই মানতে পারে নি লতা বেগম। ছেলের মৃত দেহটা দেখার পর পরই কেমন যেন নেতিয়ে গিয়ে ছিলেন। ছেলের শেষ বিদায় টাও তিনি দেখতে পারেন নি দু’চোখ মেলে। বিছানায় কেমন যেন ঘাপটি মেরে শুয়ে ছিলেন। কারো সাথে কথা বলেন নি, চিৎকার চেঁচামেচি করেন নি। একদম চুপচাপ, স্থির হয়ে গেলেন পাহাড়ের মতন দীর্ঘদেহী মহিলাটা। চাঁদনীর স্বামী মাহতাবও ভাইয়ের মৃত্যু টা মানতে পারে নি, তাও আবার খু*ন। পোস্টমর্টেম রিপোর্টে যখন দেখা গেলো খু*ন এর কথা, তখন থেকেই প্রতিটি মানুষ স্তব্ধ হয়ে গেলো। মহিনের লা*শটা কবর দিয়েই আফজাল সওদাগর নিজের মেয়েসহ, মেয়ের শাশুড়ি, স্বামী সবাইকে নিজেদের বাড়িতে নিয়ে এসেছিলেন। মানুষ হারানোর শোক যে বড় শোক, তবে অদ্ভুত ভাবে এই বড় শোকটাও সাধারণ মানুষ কাটিয়ে উঠতে পারে। কিন্তু যতদিন এ শোক স্থায়ী থাকে কোনো মানুষের গহীনে, ততদিন অন্তত সে মানুষটাকে আগলে রাখতে হয়। শোক জিইয়ে রেখে যদি কোনো মানুষ একাকীত্বে আবধ্য হয়ে যায় তাহলে সে মানুষ আর খুব বেশিদিন জীবন সংগ্রামে টিকে থাকতে পারে না।

‘সওদাগর ভিলা’ বিশাল ডুপ্লেক্স বাড়িটার নাম। যে বাড়ির প্রতিটা ইট,সিমেন্ট কেবল বহন করে হৈচৈ, রমরমা এক পরিবারের স্মৃতি। আজ সে বাড়ি শোকের নিকোষ কালো আঁধারে নিমজ্জিত। সওদাগর বাড়ির সবচেয়ে ছোট বউ, অবনী, নিজের টানটান বিছানায় পা গুটিয়ে বসে আছেন। সামনে তার ছড়ানো ছিটানো কত রকমের স্মৃতির স্তূপ। চোখে তার বর্ণহীন কত অশ্রুকণা! ক্ষণে ক্ষণে ছোট্ট চেরির ছোট্ট ছোট্ট জামাকাপড় গুলো বুকে জড়িয়ে ধরছে, কখনো বা চেরির ড্রয়িং খাতা জুড়ে বিশৃঙ্খল ভাবে এঁকে রাখা হাবিজাবি চিত্রকল্পে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে বুকের সবটুকু স্নেহ ঢেলে। মনে পড়ে কত স্মৃতির কোলাহল! চেরি বুঝ হওয়ার পর সামনা-সামনি তার বাবাকে দেখেনি। ভিডিও কলের কল্যাণে তাও চেহারাটা চেনা। কত রাত এই ছোট্টো চেরি বায়না ধরতো বাবার কোলে ঘুমানোর! কত রাত ভোর হয়ে যেতে অবনী বেগমের, মেয়ের অবুঝ বায়নার অতিষ্ঠতায়। মাঝে মাঝে দু-এক ঘা বসিয়ে দিতেন মেয়েটার পিঠে। আজ সেই স্মৃতি কেবল অভাগিনী মায়ের কান্না বাড়াচ্ছে। বড় মেয়ে তার বরাবরই চুপচাপ স্বভাবের, নিজের মনমতন চলে কিন্তু ছোট্টোটা যে খিলখিল হাসি আর চঞ্চলতায় ভরিয়ে দিতো বাড়ির কোণা গুলো।

অবনীর পাশের রুমটাতেই লতা বেগমকে থাকতে দেওয়া হয়েছে। সুন্দর মতন দেখতে মহিলাটার শরীর বেশ গোলগাল, ভারী। মহিলার স্বামী মারা গিয়েছিল আজ থেকে বছর ছয় আগে। তারপর থেকেই পুরো সংসারে ছেলে দু’টোকে নিয়ে সে একা। স্বাধ করে তাই বড় ছেলের বিয়ে করিয়ে ছিলেন। এইতো, ক’দিন আগেই বছর এক হলো। কিন্তু আজ হুট করে এই কর্কশ মহিলাটাকে নিশ্চুপ করে দিয়ে আদরের ছোটো ছেলেটাও বিদায় নিলো। সন্তানের শোক বোধহয় এত সহজে ভুলা যায় না। তাই হয়তো এত বিধ্বস্ততা মহিলার!

চিত্রার মা বাড়ি নেই, হসপিটালেই তার অবস্থান। মাঝে একটু এসে গোসল করে শাড়ি বদলে গিয়েছেন। বরাবরই সে অন্যান্যদের তুলনায় একটু শক্ত ধরণের, তাই সবাইকে নিয়তির বিধ্বস্ততা ছুঁতে পারলেও, তাকে পারে নি। পেশায় সে একজন কলেজ প্রফেসর। এজন্যই বোধহয় একটা দৃঢ়তা ভাব তার মাঝে সবসময় অবস্থিত।

আফজাল সওদাগরের স্ত্রী রোজা সওদাগর নিজের মেয়ের ঘরে বসে আছেন। চাঁদনীরও তো এ শরীরে কম ধকল গেলো না, মেয়েটারও তো কারো সাথ প্রয়োজন। চিত্রার ফুপি আমেনা রহমানও তার ছেলে সমেত চাঁদনীর ঘরে বসে আছেন। আমেনা রহমান ডিভোর্সি নারী। স্বামীর ঘর থেকে এক বছরের সন্তান কোলে নিয়ে বেরিয়ে এসেছিলো সে। অতিরিক্ত সরল হওয়ার পরও তার জায়গা হয় নি স্বামীর ঘরে। অতঃপর ভাইদের আশ্রয়ে ঠাঁই পেয়েছেন সে। অভাগিনীর খাতায় তার নামটাও নির্দ্বিধায় লেখা যায়। ভাইয়ের বউরা যতই ভালো হোক, মাঝে মাঝে কথা শুনাতে ভুল করে না। আসলে মানুষ জাত এমনই, সুযোগ পেলে তা হাতছাড়া করতে চায় না কেউই। হোক সেটা ভালো কিংবা খারাপ সুযোগ। তাতে কি আসে যায়? সুযোগকে কাজে লাগানোটাই হলো আসল কাজ।

পুরো বাড়িতে সবাই যার যার মতন শোকে ডুবে আছেন।প্রতিটা মানুষের জীবনে কত না পাওয়ার গল্পই না থাকে! অথচ মানুষ বাঁচার জন্য তাল মিলিয়ে, দুঃখ ছাপিয়ে হেসে যায়।

বাড়ির ছাঁদে, চিলেকোঠায় অবস্থানরত ছন্নছাড়া ছেলেটারও বোধহয় এমন কতশত ঘটনাই আছে যা শোকের খাতায় বিশ্রী ভাবে লেপ্টানো! অথচ ছেলে বলেই শোক দেখানোর অধিকার তার নেই।

বাহার ভাই প্রতিদিন সন্ধ্যা বেলা কিংবা রাতে গোসল করেন। আজও নিয়মের ব্যাতিক্রম হয় নি। গোসল করে এসেই পড়ার টেবিলে বসেছেন সে। বইয়ের সারির সবচেয়ে প্রথম বইটাই হাতে নিলেন। চাকরির বই। বইটা কতক্ষণ মেলে ধরলেন, পাতা নেড়েচেড়ে দেখলেন। কিন্তু পড়াতে সে মন বসাতে পারলো না। ডান হাতের কনুইয়ের দিকে কেটে যাওয়া জায়গা টা তে যেন হুট করেই জ্বালা বাড়লো, সাথে জ্বালা বাড়লো বুকের পাঁজরে। হাতের বইটা বেশ শব্দ করেই ঘূণে ধরা টেবিলটার উপরে রাখলো। বহুদিন পর আজ যেন তার স্মৃতিরাও কিঞ্চিৎ মন খারাপ ঘোষণা করে গেলো তার হৃদ মাঝারে। কিন্তু বাহারদের তো মন খারাপ করতে নেই। কংক্রিটের হৃদয় কিনা! বাহার নিজের সাথে নিজেই কতক্ষণ ঠাট্টা করলো। মনখারাপ ভাবটাকে উড়িয়ে দিতে চাইলো তাচ্ছিল্যের কষাঘাতে। কিন্তু আজ আর সে পারলো না বরাবরের মতন সে কাজটা করতে। নিজের প্রতি নিজেই বিরক্ত হলো। কাঠের চেয়ারটা পিছে ঠেলে উঠে দাঁড়ালো। টেবিলের নিচে থাকা কালো ব্যাগটা বের করলো। ভাঙা, নড়বড়ে ছোট্টো একটা স্টিলের বাক্স থেকে এক জোড়া নূপুর বের করলো সে। কতক্ষণ, কত গুলো সময় সে তাকিয়ে রইলো নূপুর জোড়ার দিকে। ঘরের স্বল্পদামী হলুদ বাল্বের আলোয় বাহারের চোখের কোণে কি যেন উঁকি দিয়ে উঠলো মনে হয়! বাহার ভাই কি কাঁদছে তবে? বাহার ভাইরা তো কাঁদতে জানে না।

নূপুর দু’টো নেড়েচেড়ে দেখে বাহার। বুকের মাঝে জাপ্টে ধরে বিড়বিড় করে বলে,
“বেকারত্বের নৃশংসতায় বাহারদের নূপুর পড়ানোর ইচ্ছে গুলো পিষে যায় খুব বর্বর ভাবে। দারিদ্রতার অভিশাপ গুলো বাহারদের বানায় পাথর। অনুভূতির দাবানলে পুড়তে পুড়তে যে পাথর হয়ে উঠে অনুভূতি হীন। ভালো থাকিস, নূপুর পড়তে না পেরে অভিমান করা অভিমানিনী। বাহার নিত্যান্তই হেরে গিয়েছিল অর্থের অভাবে।”

দমকা হাওয়া বাহারের ঘরের বেশ কমদামী, সস্তার অবগুণ্ঠন গুলো উড়িয়ে দিয়ে যায়। সাথে অটল বাহারের শরীরও শিরশির করে উঠে। একটা রাত কত মানুষের হাহাকারের গল্পই না লিখে যাচ্ছে! পরিপূর্ণতার এ পৃথিবীতে মানুষের কত স্বপ্ন অমীমাংসিত রয়ে যায়। রাত ছাড়া এ খবর কী আর কেউ জানে!

তন্মধ্যেই বাহার ঘরের দরজায় ঠকঠক শব্দ হয়। ধ্যান ভাঙে বাহারের, ততক্ষণে শোকেদের মৃত্যু হয়েছে। বাহার তড়িঘড়ি করে নূপুর জোড়া আবার স্বস্থানেই রেখে দেয়। নিজেকে আগের মতন স্বাভাবিক করে দিয়ে দরজা খুলে। দরজা খুলতেই দেখে, অহির হাতে খাবারের প্লেট, মুখে ক্ষীণ হাসি।

বাহারকে দরজা খুলতে দেখেই অহির মুখের ক্ষীণ হাসি বিস্তৃতি লাভ করলো। বাঁকা চোখে তাকিয়ে প্রশ্ন করলো,
“আপনি কাঁদছিলেন, বাহার ভাই!”

প্রশ্নের সুরে অবাক ভাবটা একটু বেশিই ছিলো। অথচ বাহারকে বিব্রতবোধ করাতে পারে নি সে প্রশ্ন। বাহার বরং বেশ স্বাভাবিক ভাবে উত্তর দিলো,
“কাঁদছিলাম নাকি! কই, আমার তো মনে পড়ছে না।”

অহি আড়চোখে তাকিয়ে মিনমিন করে বললো,
“আমায় ঘোল খাওয়াচ্ছেন, বাহার ভাই! অথচ আমি কিন্তু পুরোপুরি না হলেও কিঞ্চিৎ মানুষের মতিগতি বুঝতে পারি।”

“তা নিজের মতিগতি বুঝতে পারো তো!”

বাহারকে ভড়কে দিতে চেয়ে ভড়কে গেলো অহি নিজেই। আকষ্মিক এই প্রশ্নটা যে সে আশা করে নি তার মুখের ভাবেই তা স্পষ্ট হলো। বাহার অহির ভড়কে যাওয়া মুখমন্ডলে দৃষ্টি দিলো। অহিকে অবাক করে দিয়ে আরেকটা অপ্রত্যাশিত প্রশ্ন ছুঁড়লো,
“তুমি যেন কোন ডিপার্টমেন্টের স্টুডেন্ট?”

অহির হাতের খাবারের প্লেট নড়ে উঠলো। ফ্যাল ফ্যাল করে সে তাকিয়ে রইলো বাহারের দিকে। মুখ-চোখ নিমিষেই শুকিয়ে গেলো মেয়েটার। আমতা-আমতা করে বললো,
“কেনো, বাহার ভাই?”

“আমার প্রশ্নের উত্তর কি এটা হলো!”

বাহারের জবাবে থম মেরে গেলো অহি। খুব কষ্টে মুখে হাসি বজায় রেখে ধীর কণ্ঠে বললো,
“বাংলা ডিপার্টমেন্ট।”

“ওহ্ আচ্ছা, বাংলা ডিপার্টমেন্ট! তা, ব্রেইনফ্লুয়েন্স : দ্য সাইকোলজি অব মার্কেটিং, দ্য ম্যাজিক পাওয়ার অব সেলফ-ইমেজ সাইকোলজি,মাইন্ড রিডার ইত্যাদি বইসমূহ কি বাংলা ডিপার্টমেন্টের! কই আগে তো জানতাম না। নাকি নতুন করে যুক্ত হলো!”

অহির মুখের ভয়ঙ্কর বিষ্ময়তা চোখ এড়ায় নি বাহারের। বাহার যে ইচ্ছেকৃত ভাবে অহিকে এই পরিস্থিতিতে ফেলেছে তাও বুঝতে বাকি রইলো না অহির। কথা ঘুরানোর আপ্রাণ চেষ্টা চালানো শুরু করলো মানবী। কীভাবে কী বললে বাহার ভাইয়ের মস্তিষ্কের তুখোরতার কাছে বাজিমাত করা যাবে, সে ভাবনাতেই মত্ত হলো অহি। এখন মনে হচ্ছে, যেচে যেচে বাহার ভাইয়ের ঘরে আসাই উচিৎ হয় নি তার।

বাহারও অহিকে সময় দিলো। তার বাজের মতন তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো অহির দিকে। অহি ব্যান্ডেজ করা হাতটার উল্টো পিঠ দিয়ে গলায় জমা শিশির বিন্দুর মতন ঘাম গুলো মুছে ফেললো। ইতিমধ্যে তার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে।

কতক্ষণ সে এধার ওধার তাকিয়ে মেকি হাসি দিয়ে বললো,
“আসলে বাহার ভাই, এই গুলো তো আমার বই না, ভার্সিটির এক বড় আপুর বই। আমার সাইকোলজি সাবজেক্ট টা বেশ লাগে তাই বড় আপুর থেকে বই গুলো নিয়ে ছিলাম।”

“আচ্ছা! তাই বলে এতগুলো বই? বাহ্, ইন্টারেস্ট থাকা ভালো। তা শুনলাম তোমার নাকি শিক্ষক হওয়ার ইচ্ছে, তো ঝোঁক দেখি সাইকোলজির দিকে! ব্যাপার টা কেমন যেন না?”

“শিক্ষক হওয়ার ইচ্ছে টা আমার না, আমার অভিভাবকদের।”

উত্তরটা বেশ শক্ত কণ্ঠেই দিলো অহি। অতঃপর হাতের খাবার গুলো বাহারের টেবিলের উপর রেখে মাথা নত করেই বের হতে নিলেই পিছু ডাকলো বাহার, বেশ খোঁচা মেরেই বললো,
“সেদিন আমাকে বলেছিলে না আমি আগাগোড়া পুরোটাই নকল মানুষ? আমি পুরোটা নকল মানুষ হলে, তুমিও পুরোটাই ভ্রম, অহি। তুমি অকল্পনীয় ভ্রম।”

অহি দাঁড়ালো, নরম চোখে তাকালো বাহারের দিকে। বিবশ হয়ে আচমকাই বলে উঠলো,
“ভ্রম আর নকলে মিলে গিয়ে ইতিহাস রটলে খারাপ হয় না, তাই না বাহার ভাই?”

বাহার উত্তর দিলো না। উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করলো না যেন। হেলতে দুলতে সে নিজের টেবিলের উপর বসলো। ভাতের থালা থেকে খুব আয়েশে ভাত মাখিয়ে মুখে তুলে নিলো। অহি কেবল তাকিয়ে রইলো এক ধ্যানে। বাহার ভাই মানেই যেন এক আকাশ মুগ্ধতা।

(১৭)

শোক পালনের আঁধার রাত্রির গভীরতায় যখন সবাই ঘুমে মগ্ন, নুরুল সওদাগর তখন নিজের মেয়ের কেবিনে দাঁড়িয়ে আছেন। চোখ-মুখ তার কাঠ কাঠ, শক্ত। সারাদিন কেইস নিয়ে ছুটাছুটি করে এই মাত্রই হসপিটালে এসেছে সে। চিত্রা তখন আধো ঘুম, আধো জাগরণে। বাবাকে কেবিনের দরজায় দেখতেই আধো ঘুম কেটে গেলো তার।

মুনিয়া বেগম নিজের স্বামীকে দেখে ততটাও অবাক হলেন না, বরং স্বাভাবিক কণ্ঠে বললেন,
“এখানে যে? এটা তো চেরির রুম না, এটা চিত্রার রুম।”

খোঁচা মারার জন্য ই যে কথাটা বলা সেটা বুঝতে বাকি রইলো না নুরুল সওদাগরের। কিন্তু সে স্ত্রীর কথার জবাব দিলেন না, বরং চিত্রার দিকে তাকিয়ে অস্থির কণ্ঠে বললো,
“মহিনের মৃত্যুর আগে শেষ কলটা তোমার ফোন থেকে করা হয়েছিলো, চিত্রা।”

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here