#সৎ_মা
লেখা- #মাহাবুবা_মিতু
পর্ব- ৫
বিয়ের জন্য এমন গাইগুই করার অন্য কারন আছে। কারনটা হচ্ছে, আমি একজনকে ভালোবাসি ।
তার আর আমার সম্পর্কটা শুরু হয়েছিলো এলাকার রাস্তায় । ও ছিলো একটা ঝাড়ু হাতে…
ঝাড়ু…
ভাবছেন ভুল দেখছেন নাকি…
না আপনি ঠিকই দেখেছেন। ঝাড়ুই ছিলো ওর হাতে। দুই বান্ধবী হাসাহাসি করে হাটছিলো রাস্তায়, দুজনের হাতেই ফুলের ঝাড়ু । আমি তো রীতিমত দেখে অবাক। এত্ত স্মার্ট দুইটা মেয়ের হাতে ঝাড়ু….
সচরাচর এমন দৃশ্য দেখা যায় না। আমি অবাক হয়ে দেখছি। তারা দুজনেই বাইরের লোকে কি ভাববে তা না ভেবে পরিবারের প্রয়োজনকে গুরুত্ব দিয়েছে। এই জিনিসটা আমার মনে ধরেছে। তবে প্রেমে পরার জন্য এ মনে ধরা না।
কোন কিছু না ভেবেই পিছু নিলাম ২ মেয়ের। একটু পথ এগুতেই দুজন দুই দিকে চলে গেল। তাদের মধ্যে যে জন আমার বাড়ির রাস্তায় গেল তার পিছু নিলাম। বেকার মানুষ অফুরন্ত সময়। সময়টাকে কাজে লাগানোর এর চেয়ে ভালো বিকল্প তখন ছিলো না। তার বাড়ি আমার বাড়ির থেকে এক্টু ভিতরে।
অচেনা একটা মেয়েকে অনুসরন করছি কোন রকম উদ্দেশ্য ছাড়া, তখন আমার কাছে কারন হিসেবে যা ছিলো তা হলো পিছু নিতে ভালো লাগা।
চার চারটা মাস একটা ছেলে যদি কারো পিছু নেয় মেয়েদের ততোদিনে একবার অন্ত্যত লক্ষ্য করার কথা। কিন্তু মেয়েটি সেই ধার ধারলো না। প্রথম প্রথম ভেবেছিলাম হয়তো অতি চালাক সে, তাই বুঝেও না বোঝার ভান করছে। কিন্তু চার মাস ওর পিছু নিয়ে যা বুঝেছি তা হলো ও সবার থেকে আলাদা। ও আলাদা নাকি আমার চোখ ওকে আলাদা করেছে তা আমি জানি না।
এ চারমাসে আমি মোটামুটি ওর রুটিন জেনে ফেলেছি।
সপ্তাহে চারদিন ভার্সিটি। বৃহস্পতি-শুক্র ছবি আঁকা শিখে মনে হয়। কি সব বোর্ড, পেপার হোল্ডার আর হাবিজাবি সঙ্গে করে নেয়। আর সব জায়গাতে দুই বন্ধু একসাথে যায়। ভার্সিটির ক্লাস, ছবি আঁকা কি অন্য কোথাও। পরে আমি বুঝলাম ওরা বেস্ট ফ্রেন্ড হয়তো। মেয়েটা গলির মাথায় নেমে পরে আর ওর বন্ধু রিকশাটা নিয়ে চলে যায় নিজের বাসায়। রিকশা থেকে নেমে বেশ খানিকটা পথ হেটে ওদের বাড়ি।
একদিন হঠাৎ আমি ওর পিছু না নিয়ে ওর বন্ধুর রিকশা ফলো করলাম। কি জন্য তখনো জানতাম না হয়তো। রিকশা থামতেই মেয়েটার সমনে গিয়ে কি যেন বললাম। মেয়েটা মৃদু হেসে বললো ওর নাম জেনিফার। মেয়েটা হয়তো আমার মনের অবস্থা বুঝেছিলো। তাই ভদ্রভাবে কথা বলে বাড়ির ভিতর চলে গিয়েছিল।
এরপর আমি আর জেনিফারকে ফলো করি না, ফলো করি ওর বন্ধুকে। বেচারী চুপচাপ ধরনের মেয়ে। বেশী কথা বলে না। তবে বললো আমি জেনিকে আপনার কথা বলবো। তার ফোন নম্বর চাওয়ার সাহস হলো না, তবে আমার ফোন নম্বরটা ওকে দিয়ে আসলাম।
এরপরই অসুস্থ ছিলাম বেশ কিছুদিন তার উপর পরীক্ষা তাই আর কারো পিছুই নেওয়া হয় নি। মেয়েটা হয়তো ভাবছে ফালতু ছেলেপেলে৷ অযথাই ঘুরঘুর করেছে৷ মাথার ভুত নেমে গেছে। তাই হয়তে আর আসে না। এর অনেক পরে কথা হলো মেয়েটার সাথে।
অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে অবশেষে আমাদের দেখা হয়। ওর বন্ধু বলেছিলো আমি ওর বন্ধুর বন্ধু, ওর কতকথা সেদিন। ভয়ে আমি কথাই বলতে পারছিলাম না। একটু পর পর রুমাল বের করে মুখ মুছছিলাম। কথা বলার মাঝখানে আমি সেদিন চলে এসেছিলাম। পরে ওর বন্ধু ওকে সব বলেছিলো।
এরপর জেনি তো আমাকে পাত্তাই দেয় নি। ভালোবাসা-বাসীর মধ্যে ও নাই, বড়জোর তার বন্ধু থাকতে পারে। এটুকু কথা আমার খরা মনে যেন বৃষ্টির পরশ বুলিয়ে দিয়েছিলো। তাতেই খুশি আমি। ভালো না বাসুক বন্ধু হয়েই না হয় থাকি।
চলবে…..
previous :
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=902500376877821&id=659404701187391
Next :
https://www.facebook.com/659404701187391/posts/904242666703592/