-‘এলোকেশী কন্যা’-
[২৩]
লেখনীতে:- নূরজাহান আক্তার (আলো)
আধুনিক যুগের খবরাখবর খুব দ্রুত ছড়াতে সময় লাগে না।
সেটা হোক সত্য অথবা মিথ্যার বেড়াজাল! রং-তামাশার ছলে সিরিয়াস ব্যাপারগুলোও আজকাল তুচ্ছ হয়ে দাড়ায়।তখন সত্য-মিথ্যার গল্পও ভাইরাল যায়। মজা নেওয়ার জন্য কেউ আর সত্য মিথ্যা খুঁজতে যায় না। কিন্তু পাহাড়ের কিছু দূর্গম এলাকাগুলোর খবর না চাইলেও চাপা থেকে যায়। জঘন্য অত্যাচার রীতি-নীতি কথা সবার অজানা থেকে যায়। এই সভ্য পৃথিবীতে এখনো কোথাও কোথাও অসভ্যতার যুগের মতো কিছু রীতি প্রচলিত আছে। সেই এলাকাগুলোতে ভালো খাবার, চিকিৎসা, শিক্ষা, সোশ্যাল নেটওয়ার্ক তো অনেক দূর অনেকে পোশাকের সভ্য ব্যবহারও জানে না। যদিও তাদের কাছে এটা খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। তারা এভাবেই অভ্যস্ত! আর যুগ যুগ ধরে এখনো এভাবেই চলে আসছে। অথচ এই সত্যটা অনেকেরই অজানা। জঙ্গিদের থেকেও অসভ্য জাতি এখনো পৃথিবীর আনাচে কানাচে রয়ে গেছে। কথাটা বিশ্বাস যোগ্য না হলেও সত্যি! জনশূন্য পাহাড়ের জঙ্গিদের থেকে মতি, মাতবরের মতো মানুষগুলো সভ্য হলেও, তারা অমানুষ! আর অমানুষ কোনো জাতির মধ্যে পড়ে না। তাদেরকে মানুষ বলে গণ্য করাও বৃথা!
এই যেমন; কালকে সকালে এক সুন্দরী যুবতী পাহাড়ে ঘুরতে এসে নিঁখোজ। এত খুঁজে তার কোনো হদিস মিলছে না। ওর নিঁখোজের সংবাদ শুনে তাৎক্ষণিক তার বাবা- মা আর ভাই ছুটে এসেছে। তারা যথাসাধ্য চেষ্টা করছে মেয়েকে খুঁজে বের করার। ওর মমতাময়ী মায়ের তো কেঁদে পাগলপ্রায় অবস্থা। বাবা আর কলিজার ভাইটাও নিরবে অশ্রু ঝরাচ্ছে। প্রতিটা পাহাড়ের নিচে নদী, ঘন জঙ্গল অথবা কোথাও পাথরের স্তুপ! পা পিছলে পড়ে গেলেও হদিস পাওয়া অসম্ভব। অনেক চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে বাধ্য হয়ে উনারা ফিরে গেলেন। এখন উনারা নিরুপায়! শত চাইলেও উনাদের হাতে আর কিছু নেই। শুধু মাত্র অশ্রু ঝরানো ছাড়া। হায় আফসোস! উনারা জানতেও পারলেন না, উনাদের খুব আদরের মেয়েটা এক মানুষ রুপি অমানুষের হাতে পড়েছে। ওরা মেয়েটার শরীরটা খুবলে খেয়ে ঘন জঙ্গলে ফেলে এসেছে। একটু পানির জন্য ছটফট করতে করতে মেয়েটার শরীর প্রাণ ত্যাগ করেছে। হাজারও আঁকুতি মিনতি করে সে জানে বাঁচতে পারে নি। ওর আঁকুতিতে কারো মন গলে নি। বরং পৈশাচিক আনন্দ পেয়েছে। পরে ওর সুন্দর দেহ’টা বন্য বানরগুলো টেনে আছড়ে কামড়ে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে। এখানে বানরগুলোও ভাগ বাসাতে কার্পণ্যতা করল না। ক্ষুদার্থ প্রানীরা ওই দেহ’টাকে বেশ মজা করে লুপে পুটে খেয়েছে। আর মেয়েটা মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে নিরবে আল্লাহর কাছে অসংখ্য অভিযোগ জানিয়ে গেল। এটা তার কোন পাপের শাস্তি? এত করুণই বা হলো কেন এই শাস্তিতা? এসবের উত্তর না পেতেই মেয়েটা এই পৃথিবীটা থেকে বিদায় নিয়েছে। তার চিরতরের জন্য একটা আফসোস থেকে গেছে, বাবা-মা, ভাই আর তার প্রিয় মানুষটার মুখ শেষবারের মতো দেখার আফসোস! এই আফসোস কখনোই আর মিটবে না।
সেই সাথে নিরবে আকাশ, বাতাস, গাছ-পালা, আর মেঘপুঞ্জ সাক্ষী হয়ে থাকল মেয়েটার এই করুণ পরিণতির। জানলোও না কেউ আর দেখলেও না। সত্যি এটাই, প্রকৃতি শুধু উন্মোচন নয় বরং লুকাতেও পারদর্শী!
সময়ের সঙ্গ নিয়ে ব্যস্তটাকে ঘিরে কেটে গেল দুইটা সপ্তাহ।
এই দুই সমাপ্তে আলোর মধ্যে বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে। যদিও এই পরিবর্তন সে নিজেই থেকে এনেছে। রোদের বলা কথাগুলো সে ভেবে ধরতে পেরেছে। বুঝেছে, রোদ তাকে কী ইঙ্গিত করেছিল। সত্যি বলতে আলো আগে একটু ভয় পেতো বাসার কোনো কাজ করতে। বা কিছু ধরতে। যদি রোদ বকে বা রাগ করে। কিন্তু রোদের বলা কথাগুলো থেকে ওর ভয়টা কেটে গেছে। এখন বাসার টুকটাক কাজ, মেঘের সঙ্গে দুষ্টুমি, পড়াশোনা, রোদের বকা, রিমির সাথে আড্ডা, সময়গুলো সে এভাবেই কাটাচ্ছে। রিমিও ওকে যথেষ্ট সাহায্য করেছে। ফ্রি টাইমে এসে ওকে বিভিন্ন ব্যাপারে বুঝিয়েছে, সতর্ক করেছে, এবং কিছু মূল্যবান উপদেশও দিয়েছে। সব মিলিয়ে আলো অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে।
আজকে আলোর কলেজ জীবনের প্রথমদিন। সকাল থেকেই ওর ভয় লাগছে। কেন? এর কারণ অজানা! সে কলেজ ড্রেস পরে বইখাতা গুছিয়ে গুটিগুটি পায়ে রোদের রুমে গেল। রোদ ওকে কলেজে রেখে অফিসে যাবে। আজ রবি মেঘকে স্কুলে রেখে এসেছে। তবে মেঘ যাওয়ার আগে আলোকে বার বার সাবধানে যেতে বলেছে। কেউ কিছু দিলে খেতেও নিষেধ করেছে। রোদ মেঘকে সর্বদা যেসব উপদেশ দেয়, আজ মেঘ সেসব উপদেশ আলোকে দিয়েছে। আলোও সুবোধ বালিকার মতো সব শুনেছে। আলো রোদের রুমের সামনে দাঁড়িয়ে নক করার আগে রোদ ভেতরে আসতে বলল। কীভাবে বুঝল কে জানে? রোদ ওর হাতের ফাইলগুলো রেখে আলোর দিকে ঘুরে বলল,
“কাঁদছো কেন?”
আলো পূর্বের মতো মাথা নিচু করে মাথা নাড়াল। অর্থাৎ কিছু না। অথচ চোখ জোড়া লাল হয়ে অশ্রু ঝরে যাচ্ছে। নাক’টা লাল হয়ে গোলাপী ঠোঁটে জোড়া মৃদুভাবে কাঁপছে। তার কান্না আটকানোর বৃথা প্রয়াস আর কী! রোদ ব্যাপারটা বুঝে মৃদু হেসে কয়েক পা সামনে এগিয়ে গেল। সে কিছু বলার আগেই, আলো রোদের পায়ের কাছে ধপ করে বসে শব্দ করে কেঁদে দিলো। মুখে কোনো কথা নেই শুধু কেঁদেই যাচ্ছে। সব কষ্ট’রা যেন তাকে জাপটে ধরে অশ্রু হয়ে ঝরে পড়তে চাচ্ছে। রোদ হাঁটু গেড়ে বসে ওর অশ্রু মুছে দিয়ে শান্ত কন্ঠে বলল,
“উহুম, কাঁদবে না, আমি আছি তো!”
আলো লালবর্ণ অশ্রুভেজা চোখ তুলে রোদের দিকে তাকাল! এই মানুষটা ওর জন্য অনেক করেছে। সর্বদা শুভাকাঙ্ক্ষী হয়ে পাশে রয়েছে। এই মানুষটার জন্য আজ উজ্জ্বল একটা ভবিষ্যৎের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। পুনরায় বাঁচার জন্য অদম্য ইচ্ছেশক্তি জুগিয়েছে। তার এই ঋণ কখনো শোধ করার নয়।
তবে জীবনে একটাবার সুযোগ আসলে সে অবশ্যই মানুষটার জন্য কিছু করবে। ঋণ শোধের জন্য নয়! আত্মতৃপ্তির জন্য!
আলো রোদের দিকে তাকিয়ে নিরবে অশ্রু ঝরিয়ে যাচ্ছে। মুখে কিছু বলার যে শব্দ খুঁজে পাচ্ছে না। তখন রোদ মৃদু হেসে পুনরায় ওর চোখ মুছিয়ে বলল,
“তোমার জন্য কিছু করা স্বার্থক তখন হবে, যখন তুমি লক্ষ্যে পৌঁছাবে। উহুম, একদম কাঁদবে না। আজ কলেজে প্রথমদিন যাচ্ছো একটা লক্ষ্য নিয়ে। তবে শেষ দিন এর সাফল্য নিয়েই ফিরো। আমার চাওয়া-পাওয়া, আবদার, উপদেশ, যা’ই বলো আমার কষ্টটা বৃথা হতে দিও না। নিজেকে এমন ভাবে তৈরী করো, যাতে তোমার জন্য আমার বিন্দুমাত্র আফসোস নাহয়। আর না কেউ আমার দিকে আঙ্গুল তুলে বলতে পারে, রোদ ঠকে গেছে। কী পারবে না?”
“হুম, যথাসাধ্য চেষ্টা করব।”
“কষ্ট ছাড়া জীবনে সাফল্য মিলে না। চেষ্টায় তোমাকে সাফল্য পাইয়ে দিবে, ইনশাআল্লাহ!”
কথাটা বলে রোদ উঠে দাঁড়িয়ে আলোকে দিকে হাত বাড়িয়ে দিলো। আলো শক্ত করে রোদের হাতটা আঁকড়ে ধরে উঠে দাঁড়াল। তারপর রোদ আলোকে শক্ত হতে বলে দু’জনে বাসা থেকে বের হলো। রোদ রবিকে সঠিক সময়ে মেঘকে আনার কথা জানাল। গাড়িতে উঠে বসতেই রোদের ফোনে রিমি, আকাশ, আর রোহান ভিডিও কল দিয়ে আলোকে উৎসাহ দিলো। তিনজনে দুষ্টুমি করে ওকে হাসালো। সাথে মনের সব
ভয়কে কিক মেরে সরিয়ে জয়কে আঁকড়ে ধরতে বলল। ওরা
তিনজনে জোর দিয়ে বলল, আলো পারবে! ওদের সঙ্গে কথা বলে আলোর আত্মবিশ্বাসটা আরো বাড়ল। ‘এই জীবনে কিছু পারো না পারো অন্যকে উৎসাহ দেওয়া শিখো। তোমার এই উৎসাহটুকু হতে পারে অন্যের এক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার মন্ত্র।
যদি না পারো, তাহলে অন্যের আনন্দে সামিল হওয়া থেকেও দূরে থাকো। কারণ এর যোগ্যতা অর্জনে তুমি অক্ষম!’
তারপর কলেজে পৌঁছে রোদ আলোকে ওর ক্লাসরুম দেখিয়ে দিলো। এবং জানাল ছুটির পর সে নিজে নিতে আসবে। আলো ছলছল চোখে আশেপাশে তাকিয়ে হ্যাঁ বোধক মাথা নাড়াল। ওকে সাবধানে থাকতে বলে রোদ কলেজে থেকে বেরিয়ে গেল, ভুলেও আর পিছু ফিরে তাকাল না। কারণ সে জানে, আলো ওর দিকেই অশ্রুসিদ্ধ চোখে তাকিয়ে আছে। তাছাড়া রোদ যতক্ষণ এখানে থাকবে আলো স্বাভাবিক হবে না। কারো সঙ্গে কথাও বলবে না বরং থম মেরে বসে থাকবে।ওর বন্ধু নির্বাচন ওকেই করতে হবে। এজন্য কারো সঙ্গে কথা বলতে হবে। আলো বেঞ্চে মাথা ঠেকিয়ে অশ্রু ঝরাচ্ছে। খুব একা লাগছে! এখানকার কাউকেই সে চিনে না। এর পূর্বে মুন ছাড়া কোনো বন্ধু ছিল না ওর। এখানে আগ বাড়িয়ে কার সঙ্গে কথা বলবে? সে তো কিছু বুঝে উঠতে পারছে না। তখন দুইজন মেয়ে পেছনে থেকে ফিসফিস করে বলল,
“বফ চলে তাই কাঁদছে। আহা কত্ত ভালোবাসা।”
“তাই হবে।”
তখন একটা ছেলে গলা পরিষ্কার করে আলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করল। আলো চোখ মুছে ছেলেটার দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাল। ছেলেটা ক্যাবলা মার্কা একটা হাসি দিয়ে বলল,
” ইয়ে, রোদ ভাই তোমার কে হয়? তুমি কী ভাইয়াদের বাসায় থাকো?”
আলো ওর স্বভাবসুলভ মাথা নাড়াল। ছেলেটা হেসে জানাল, ওর নাম সাফি। রোদদের পাশের বাসার দো’তলায় ওরা ভাড়া থাকে। ওর সঙ্গে রোদকে দেখেই মূলত কথা বলতে এসেছে। সে আলোর সহপাঠী! ছেলেটার কথা শুনে আলোর ভালোই মনে হলো, তাই সেও টুকটাক কথা বলে স্যার আসলে ক্লাসে মন দিলো। সাফি ওর বন্ধুদের ডেকে আলোর পরিচয় করিয়ে দিলো। সাফির বন্ধুদের মাঝে একজন ছেলে আর দুইজন মেয়ে। রাজ, সাবা, আর রুকু। ওরা মোটামুটি ভালোই মিশুক। ওদের সঙ্গে আলোর সময়টা বেশ ভালোই কাটল। পরপর চারটা ক্লাস করে একটার দিকে ছুটির ঘন্টা পড়ল। সবাই একে একে বেরিয়ে যাচ্ছে। আলো সাবার সঙ্গে কথা বলতে বলতে বাইরে এসে দেখে রোদ দাঁড়িয়ে আছে। পাশে মেঘ উৎসুক হয়ে ডানে বামে তাকিয়ে কাকে যেন খুঁজছে। আলো খুব ভালো করে জানে মেঘবাবু তাকেই খুঁজছে। আলো হেসে সাবার থেকে বিদায় নিয়ে মেঘের কাছে গেল। মেঘ আলোকে দেখে হামলে পড়ে বলল,
“জানো? তোমার জন্য কত্ত চিন্তা হচ্ছিল আমার! শুধু মনে হচ্ছিল, যদি হারিয়ে যাও।”
একথা শুনে রোদ ফোনটা পকেটে ঢুকিয়ে দাঁত কিড়মিড় করে বলল,
“এজন্য আমাকে মিটিংয়ে অবধি যেতে দিলে না?”
“হুম।”
ওদের দুই ভাইয়ের কথা শুনে আলো ফিক করে হেসে দিলো। তারপর তিনজনে মিলে গাড়িতে উঠে বসল। মাঝরাস্তায় রোদ গাড়ির থামিয়ে আইসক্রিম আর কোকাকোলা নিয়ে ওদের দিলো। ব্যস, খেতে খেতে আবার শুরু হয়ে গেল দু’জনের বকবকানি। পনেরো মিনিটে তিনজনে বাসায় পৌঁছে দেখে রোহান আর রিমি বসে আছে। ওদের দেখে মেঘ দৌড়ে গিয়ে রোহানের কোলে উঠে পড়ল। সোফাতে শুয়েই দু’জনের কুস্তি শুরু হয়ে। আলো আর রোদ ওদের সাথে কথা বলে ফ্রেশ হতে গেল। রোদ যেতে যেতে ফোন করে আকাশকেও বাসায় আসতে বলল। সবাই আজ দুপুরে একসাথে খাবে। আলো একেবারে গোসল সেড়ে নামাজ পড়ে রুম থেকে বের হলো। ওর ভেজা চুল খোঁপা করে মাথায় সুন্দর করে ওড়না টানা।
রোদ দেখেও কিছু বলল না। কেন জানি সে চাচ্ছে না, কেউ আলোকে খোলা চুলে দেখুক। কেন চাচ্ছে তারও অজানা!
একটুপর, আকাশ আসলে ওরা সবাই একসঙ্গে খেতে বসল। হাসি-ঠাট্টা, খুনশুটির মধ্যে খাওয়ার পর্ব চুকালো। তারপর ড্রয়িংরুমে বসে আলোর থেকে কলেজের প্রথম দিনের গল্প শুনল। আলোকে স্বাভাবিক দেখে রোদ মুচকি হাসল। কারণ আলোর আশেপাশে শক্ত বলয় তৈরী করা আছে। সেটা কেউ জানবে না। আর রোদই সাফিকে আলোর সঙ্গে কথা বলতে বলেছিল। নাহলে এই বোকা মেয়েটা চুপ করেই বসে থাকত!
পেট পুরে খেয়ে সবাই রোদের রুমে গিয়ে বিশ্রাম নিলো। কেউ বেডে, কেউ সোফায় তো কেউ মেঝেতে শুয়ে পড়ল। আলো ওর রুমে চলে যেতে চাচ্ছিল। কিন্তু রিমি ওকে নিয়ে মেঝেতে শুয়ে পড়ল। তারপর আড্ডা দিতে দিতে অনেকে ঘুমিয়েও গেল। এটা তো মেঘের সহ্য হওয়ার কথা না, হলেও না! তাই মেঘ শুয়ে থেকেই গলা ফাটিয়ে গান ধরল
“খ্যাতা বালিশ নিয়া শুটিং করুম তোর লগে মাইয়া। ওই হই হই।”
ওর চিৎকারে যারা ঘুমিয়েছিল তারা হুড়মুড় করে উঠে বসল।
বিশেষ করে রোহান, আকাশ আর রিমি। এরা ঘুমে তলিয়ে গিয়েছিল। রোদ বেডে বসে অফিসের ফাইল চেক করছিল।
ওই তিনজনের অবস্থা দেখে আলো আর মেঘ হেসে লুটোপুটি খাচ্ছে। ওদের হাসি দেখে রিমিও বোকার মতো হাসল। আর আকাশ বুকে হাত দিয়ে বোঝার চেষ্টা করছে, হলো টা কী? মেঘ এই ভুলভাল গান দিয়েই ওর হার্ট এ্যার্টাক করে দিচ্ছিল।
আকাশের অবস্থা দেখে ওদের হাসি দ্বিগুন বেড়ে গেল। আর রোহান কারো হাসির ঝংকারে মুচকি হাসল।
To be continue……..!!