প্যারাময়_লাভ❤❤ #written_by_Nurzahan_akter_Allo #part_11

0
521

#প্যারাময়_লাভ❤❤
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_11

তোর মন পাড়ায় থাকতে দে আমায়!
আমি চুপটি করে দেখবো আর ডাকবো ইশারায়
তুই চাইলে বল আমার সঙ্গে চল
ওই উদাস পুরের বৃষ্টিতে আজ ভিজবো দুজনায়!!

অভিমানি মন আমার চাই তোকে বারে বার
তাই বলি আয় রে ছুটে আয়।
তোর মন পাড়ায় থাকতে দে আমায়!
আমি চুপটি করে দেখবো আর ডাকবো ইশারায়
তুই চাইলে বল আমার সঙ্গে চল
ওই উদাস পুরের বৃষ্টিতে আজ ভিজবো দুজনায়!!

(এতটুকু মুগ্ধ গাইলো তারপর একবার রুহির দিকে তাকালো!রুহি এক দৃষ্টিতে ওর দিকেই তাকিয়ে আছে।মুগ্ধ রুহির দিক থেকে চোখ সরিয়ে আবার গান গাইতে শুরু করলো!আর গানের মাধ্যম কথা গুলো দিয়ে রুহিকে হয়তো কিছু বোঝাতে চাচ্ছিলো।)

তোর রিদয় আঙিনায় থাকতে আমি চাই
তুই ছাড়া বাচার নেই রে উপায়
কি ভাবে ওরে!তোকে ছেড়ে
একাকি আমি জীবন কাটায়
অভিমানি মন আমার! চাই তোকে বারে বার
তাই বলি আয় রে ছুটে আয়।
তোর মন পাড়ায় থাকতে দে আমায়!
আমি চুপটি করে দেখবো আর ডাকবো ইশারায়
তুই চাইলে বল আমার সঙ্গে চল
ওই উদাস পুরের বৃষ্টিতে আজ ভিজবো দুজনায়!!

(মুগ্ধ আবার রুহির দিকে তাকাতে দুজনের চোখ চোখ পরে যায়!আজকে মুগ্ধর চোখে অন্য কিছু বলছে…)

শুধু তোকে ঘিরে শত সপ্নের ভিরে!
এখন আমার বসবাস
তুই এলে জীবনে!পাবো বাচার মানে
পাবো সুখেরই আভাস…
অভিমানি মন আমার! চাই তোকে বারে বার
তাই বলি আয় রে ছুটে আয়।
ওই উদাস পুরের বৃষ্টিতে আজ ভিজবো দুজনায়!!
তোর মন পাড়ায় থাকতে দে আমায়!


মুগ্ধ গান শেষ করতেই সবাই হাত তালি দিলো!আজকে অনেকদিন পর মুগ্ধ গান গাইলো।রুহি এতক্ষণ গালে হাত দিয়ে খু্ব মনোযোগ দিয়ে গান শুনছিলো!সবাই যেহেতু পিকনিকে এসেছে তাই এক পাশে রান্নার কাজ চলছে!এখানে সবাই যে যার বফ-গফ এজন্য সবাই কেউ কারো কাঁধে মাথা দিয়ে আছে,কেউ কারো হাতের ভেতর হাত ঢুকিয়ে বসে আছে,কেউ কাউকে একদিয়ে জড়িয়ে ধরে আছে।এসব দেখে রুহি মনে মনে ভাবছে…


রুহিঃ সবার একটা করে খুঁটি আছে!শুধু আমারটা থেকেও নাই।ইসস নিজেকে এখন বন্দি বিড়াল ছানার মত লাগছে!এই শালা উগান্ডা মুগ্ধটা কি সত্যি আমাকে বুঝবে না! আর ভাল লাগছে না। আমার এখন মন চাচ্ছে এই মুগ্ধর মাথায় ঘোল ঢেলে কান ধরে উঠ-বস করায়। (মনে মনে)

মুগ্ধঃকি রে মুখটা এমন করে রাখছিস কেন??রুহি! এই রুহি!!!!! (ধাক্কা দিয়ে)
রুহিঃউফফ শুনতে পাচ্ছি তো!ষাড়ের মত চেচাঁমেচি করছো কেন??
মুগ্ধঃকি বললি তুই???(দাঁতে দাঁত চেপে)
রুহিঃ ক ক ক কই আমি তো কিছু বলিনি!তুমি মনে হয় ভুল শুনছো কিছু!
মুগ্ধঃএভাবে বসে আছিস কেন??শীত লাগছে তো রুম গিয়ে চাদর আনতে কি খুব কষ্ট হচ্ছে??
রুহিঃতুমি চলো আমার সাথে!আমি একা যেতে ইচ্ছে করছে না।
মুগ্ধঃচল


মুগ্ধ ওর জ্যাকেটের পকেটে হাত ঢুকিয়ে হাটছে! রুহিও দুম করে মুগ্ধর পকেটের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে মুগ্ধ গাতে মুঠোয় ওর হাত গুজে দেয়!মুগ্ধ ভ্রু রুহির দিকে তাকিয়ে বলে..
মুগ্ধঃআমি এর আগে বলি নি রাস্তা ঘাটে এসব না করতে!হাত বের কর বলছি!!!(দাঁতে দাঁত চেপে)
রুহিঃএকটু হাতটা রাখলে কি এমন ক্ষতি হবে শুনি!একটু রাখি না প্লিজ (করুন সুরে)
মুগ্ধঃ না একটুও না।হাত বের কর
রুহিঃ পাঁচ টাকার হাত রাখি!প্লিজ (অনুরোধের সুরে)


মুগ্ধ আর কিছু বলতে পারলো!মুগ্ধ রুমে এসে লক খুলে দুজনই রুমে ঢুকলো!রুহি হুট করে মুগ্ধর পায়ের উপর উঠে মুগ্ধর গলা জড়িয়ে ধরে বললো।

রুহিঃএখানে যারা আছে সবাই বফ-গফ। আমরা যদি সবার মত হয় তো সমস্যা হবে না মে বি!!

মুগ্ধঃ গলা ছাড় ! আর এই কথা যদি আর একবার শুনি তো আমার চেয়ে খারাপ কেউ হবে না বলে দিলাম!! (গম্ভীর কন্ঠে)

রুহিঃ কেন বলবো না!আমি তোমাকে ভালবাসি!তুমি সব বুঝেও কেন বার বার আমাকে ইগনোর করো আমাকে!কি নেই আমার মাঝে যে আমাকে একটু ভালবাসতে পারো না।(দুই হাত দিয়ে মুগ্ধর মুখটা ধরে আবেগী সুরে)

মুগ্ধঃরুহি এবার কিন্তু বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে! লিমিট ক্রস করিস না। (দাঁতে দাঁত চেপে)


রুহি মুগ্ধকে জোরে একটা ধাক্কা দিয়ে দেয়! আর মুগ্ধ বেডে পড়ে যায়।মুগ্ধর বুকের উপর রুহি উঠে বসে আর মুগ্ধর কলার ধরে বলে…

রুহিঃ এতদিন অনেক বুঝেছি কিন্তু তুমি বুঝেও অবুজের মত করছো!আর না! আমি জানি নিজের ভালবাসা কিভাবে আদায় করে নিতে হয়?তুমি ভুলে যেও না আমি কি পরিমান ঘাড়ত্যাড়া!তোমাকে পাওয়ার জন্য আমি ঠিক ঠিক করতে পারি তুমি কল্পনাও করতে পারবে না।

মুগ্ধঃ ঠাস্!অনেক সহ্য করছি আর না।তুই আসলেই অসভ্য একটা মেয়ে।(বুকের উপর থেকে সরিয়ে)

রুহিঃহ্যা আমি অসভ্য! যা বলবে আমি মেনে নিবো তাও বলো একবার আমাকে ভালবাসো! “ভালবাসি”এই কথা শুধু একবার বলো না প্লিজ। (মুগ্ধকে জড়িয়ে ধরে)

মুগ্ধঃআমি তোকে ভালবাসি না!ভালবাসি না আমি তোকে!এবার শুনলি তুই। আমি তোকে কোনদিন ভালবাসিনি আর ভালবাসবোও না।(ধাক্কা মেরে)


মুগ্ধ আর কিছু না বলে রাগে হনহন করতে করতে চলে যায়!রুহি বালিশে মুখ গুঁজে কান্না করতে থাকে।মুগ্ধ রাগে ওর হাতে আঘাত করতে থাকে!মুগ্ধ ভাবেনি রুহি এমন পাগলি করে বসবে।কারন রুহি যদি এমন পাগলি করতে থাকে তো মুগ্ধ নিজেকে শক্ত রাখতে পারবে না কিছুতেই।


পরেরদিন সকালে…

মুগ্ধ রুহির রুমে এসে দেখে রুহি নেই!মুগ্ধ রুহিকে পাগলের মত হন্য হয়ে খুঁজতে থাকে।কোথায় খুঁজে না পেয়ে মুগ্ধ পাগলপ্রায় অবস্থা! মুগ্ধ কয়েকজনকে জিজ্ঞেস করলো তাদের মধ্যে একজন বললো রুহিকে সামনে রাস্তা দিয়ে পাহাড়ের দিকে যেতে দেখছে!মুগ্ধ দৌড়াতে শুধু করলো। মুগ্ধ দৌড়াতে দৌড়াতে একটা গাছের দিকে চোখ গেল সেখানে লিখা রুহি +মুগ্ধ!নাম দুইটা লিখে লাভ আঁকানো। মুগ্ধ বুঝলো এটা কিছুক্ষণ আগের লিখা!মুগ্ধ আরো সামনে এগোতে থাকলো। মুগ্ধ এবার রুহিকে দেখতে পেলো!রুহি পাহাড়ের কিনাড়ায় দুই হাত বাড়িয়ে চিৎকার করে বলছে…
আই লাভ ইউ মুগ্ধ! আই রিয়েলি লাভ ইউ!!!!!!!!!!


রুহির বলা কথা গুলো বার বার প্রতিধ্বনি হচ্ছে! মুগ্ধ খেয়াল করলো রুহি চোখ বন্ধ করে পাহাড়ের দিকে আরো এগিয়ে যাচ্ছে! আর দুই ধাপ দিলো রুহি পাহাড় থেকে ছিটকে পড়বে!মুগ্ধ এবার প্রাণপণে দৌড়ে রুহির হাত ধরে একটু দুরে সরিয়ে আনে!আর ঠাস্ করে একটা থাপ্পড় মারে।রুহি থাপ্পড় খেয়ে মাটিতে পড়ে যায়!মুগ্ধ রুহির সামনে বসে হুট করে শক্ত করে জড়িয়ে জড়িয়ে ধরে!রুহিও মুগ্ধকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে!রুহি মুগ্ধর বুকে বুকে কান পেতে শুনছে মুগ্ধর হার্ট অনেক দ্রুত বিট করছে।হয়তো চিরতরে হারানো ভয় টা মুগ্ধর মনে ঢুকে গেছে।রুহির মুখে হাসি ফোটে…..


রুহিঃআমাকে যখন ভালবাসো না তাহলে বাঁচালে কেন??আমি মারা গেলে তোমার কি শুনি??? (অভিমানি সুরে)

মুগ্ধঃ…..

রুহিঃ এবার তো বলো আমাকে ভালবাসো!

মুগ্ধঃ এমন পাগলামি কেউ করে!কেন এমনন করিস তুই??এখন যদি সত্যি সত্যি কোন অঘটন হয়ে যেত তাহলে আমার কি হতো??আর কখনও এমন কিছু করবি না!তোর কিছু হলে আমি মারা যাবো রে পাগলি (দুই হাত দিয়ে রুহির গাল ধরে ছলছল চোখে তাকিয়ে)

রুহিঃ আমাকে একটু ভালবাসলে কি হবে?? তুমি যদি আমাকে ভালবাসো আমি সত্যি সত্যি নিজেকে শেষ করে দিবো। (শান্ত কন্ঠে)

মুগ্ধঃঠাস্! সবকিছু নিয়ে পাগলি করা ঠিক না।কেন বার বার অবুজের মত করিস তুই!সবকিছুর একটা লিমিট থাকে। (থাপ্পড় দিয়ে জড়িয়ে ধরে)

রুহিঃ আমি খালি হাতে ফিরবো না বাসায়! তোমার ভালবাসা নিয়ে ফিরবো নইতো লাশ হয়ে!আমাকে ছাড়ো তুমি!আমি তোমাকে ভালবাসি আর তোমাকে আমার হতেই হবে! সেটা যেটা কোন মূল্যে….(নিজেকে মুগ্ধর থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে)


রুহি মুগ্ধর থেকে নিজেকে জোর করে ছাড়িয়ে আবার পাহাড়ের দিকে হাটা ধরে!মুগ্ধ রুহি হাত টেনে নিজের বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে আর রুহির কপালে একটা আদর দিয়ে বলে।

মুগ্ধঃ ভালবাসি সেটা মুখে কেন বলতে হবে?? বুঝে নিতে যদি না পারিস তাহলে এই কেমন ভালবাসা তোর। (রুহির চোখে তাকিয়ে)

রুহিঃ এত কিছু বুঝি না!এবার বলো আমাকে তুমি ভালোবাসো কি না??

মুগ্ধঃহুমম রে খুব ভালবাসি!নিজের থেকেও বেশি ভালবাসি। তোর কিছু হয়ে গেলে আমি মারা যাবো আর না হলে পাগল হয়ে যাবো!প্লিজ এমন পাগলামি করিস না।জানিস তোকে পাহাড়ের কিনারায় দেখে আমার হার্টবিট চলাচল বন্ধ করে দিসিলো আমার দম আটকে গিয়েছিলো।(ছলছল চোখে)

রুহিঃহুমম আর এমন পাগলামি করবো না!তোমাকে তো পেয়ে গেছি! এখন থেকে তুমি শুধু আমার।
(আমাকে মাফ করে দিও মুগ্ধ! তুমি হয়তো জানো না আমি তোমাকে কতটা ভালবাসি।আর আমার ভালবাসার মানুষটাকে আমার করে পেতে যা যা করার লাগে আমি তাই করবো।এই অভিনয়টা না করলে তোমার মুখ থেকে ভালবাসার কথাটা বের করতে পারতাম না।আজকে থেকে আমাদের ভালবাসার প্রথম ধাপ এগোলো। মনে মনে)


মুগ্ধ আর রুহি রিসোর্টে ফিরলো!আজকে দুজনের মুখেই প্রশান্তির হাসি!এতদিন না বলা ভালবাসার কথা আজকে দুজন দুজনকে বলতে পেরেছে!তারপর সকালে ব্রেক ফাস্ট করে নেয় দুজন মিলে!মুগ্ধর কাছে ফোন আসে যে অফিসে কি সমস্যা হয়েছে তাই তারাতারি ওকে জয়েন্ট করতে বলছে!রুহির মনটা খারাপ হয়ে গেল কারন মনমত ঘুরতেই পারলো না।মুগ্ধ একথাটা সবাইকে জানালো তারপর রুহিকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো!তারপর বাসের টিকিট কেটে দুজনেই বাসে উঠে বসলো…


মুগ্ধ রুহির দিকে তাকিয়ে দেখলো রুহি মন খারাপ করে বসে আছে!মুগ্ধ মুচকি হেসে রুহির দিকে তাকিয়ে বললো…

মুগ্ধঃআমরা আবার বেড়াতে আসবো!মন খারাপ করিস না।

রুহিঃ হুমমম! (মন খারাপ করে)

মুগ্ধঃরুহি তোকে একটা কথা বলার ছিলো!কথাটা তুই সিরিয়াস ভাবে নিস প্লিজ।

রুহিঃহুমম বলো! (মুগ্ধর কাধে মাথা রেখে)

মুগ্ধঃআমি চাচ্ছি না আমাদের রিলেশনে কথা এখন কেউ জানুক!আমাকে একটু সময় দে আমি তোকে খুব তারাতারি আমার বউ করে আনবো!তার আগে তুই প্লিজ বেশি বুঝে সবকিছু ঘেটে ঘ করিস না!আর বাসায় গিয়ে এমন কোন বিহেভ করবি না যাতে কেউ আমাদের ডাউট করুক!

রুহিঃ আমার জানা মতে ভালবাসা তো ভালকাজ!তাহলে কি এখন আমার তোমাকে চোরের মত ভালবাসা লাগবে????আমি তো চোর না! আমি তো ডাকাত তাহলে চোরের মত এখন তোমাকে আমি ভালবাসতে যাবো কেন???

To be continue….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here