প্যারাময়_লাভ❤❤ #written_by_Nurzahan_akter_Allo #part_26

0
380

#প্যারাময়_লাভ❤❤
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_26

রুহিঃ আজকে না আমার গায়ে হলুদ!আমাকে ভালো করে সাবার মেখে গোসল দিতে হবে।আর এমন ভাবে গোসল দিতে হবে যে চকচক করে।আম্মু আর ৫মিঃ সময় দাও হয়ে গেছে…..


মুগ্ধ রুহির কথা হাবলার শুনলো!রুহি ওয়াশরুমে দরজা খুলতেই দেখে মুগ্ধ দাড়িয়ে। রুহি প্রথমে অবাক হয়ে তাকায় তারপর গটগট করে হেটে আগে রুমের দরজা আটকে দেয়।তারপর তাড়াহুড়ো করে ড্রেস নিয়ে দৌড় দিতে যাবে তখনই মুগ্ধ সামনে দুম করে পড়ে গেল!মুগ্ধ রুহিকে তোলা বাদ দিয়ে হা করে তাকিয়ে আছে।মুগ্ধ রুহির দিকে তাকিয়ে দেখে অরেন্জ কালার একটা টাওয়াল দিয়ে চুল গুলো পেচানো আর হালকা গোলাপি কালার টাওয়াল রুহির শরীরে পেচানো।মুগ্ধ রুহির দিক থেকে চোখ সরিয়ে নেয় কারন শেষ পযায়ে এসে কোন ভুল করতে চাই না!


রুহিঃইসস আমি উঠতে পারছি না আমাকে টেনে না তুলে খাম্বারমত দাড়িয়ে আছো কেন??

মুগ্ধঃ….(টেনে তুলো রুহিকে)

রুহিঃ যাক বাবা টাওয়াল টাইট করে বেঁধেছিলাম বলে এই যাত্তায় বাঁচা গেল।


মুগ্ধ কিছু বললো না!কারন রুহি কিছু বলা আর কলা গাছের সাথে বকবক করা দুটোই সমান। রুহি মুগ্ধর হাত থেকে শপিং ব্যাগটা নিয়ে দেখে ওর ব্লাউজ আরো কিছু ড্রেস! এগুলো সেদিন টেইলার্সে বানাতে দিয়ে এসেছিলো সাথে মেহেদীও আছে…রুহি মুগ্ধর দিকে তাকিয়ে বললো!


রুহিঃ আজকে তোমার মনের মত করে আমাকে সাজিয়ে দিয়ে তারপর যাবে!আমি তোমার হাতেই আজকে সাজতে চাই।চলে যেও না কেমন!যদি যাও তো টাওয়াল পড়েই আমি আজকে হলুদ দিতে বসবো মনে রেখ।ওয়েট আমি আসছি…

মুগ্ধঃ…..


রুহি ওয়াশরুমে চলে গেল!মুগ্ধর মনে হচ্ছে সব মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে আর মাথা হ্যাং হয়ে যাচ্ছে। রুহি ওয়াশরুমে থেকে লাল রংয়ের ব্লাউজ পড়ে টাওয়াল পেচিয়ে মুগ্ধর সামনে এসে দাড়ায়।মুগ্ধ এই প্রথম রুহির দিকে নেশাভরা দৃষ্টিতে তাকায়। ফর্সা শরীরে লাল রং খুব বেশি ভালো দেখায়! তারপরে রুহির উন্মুক্ত পেট দেখে মুগ্ধর কেমন যেন পাগল পাগল লাগছে নিজেকে!মুগ্ধ সব চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে আগে মেহেদীর টিউব হাতে নেয় আর তারপর রুহির থেকে টাওয়াল সরাতেই দেখে রুহি পেটিকোটের বদলে থ্রীকোয়াটার পড়ে আছে।মুগ্ধর হাসি পাচ্ছে খুব তারপরেও হাসি চাপিয়ে। রুহির দিকে ভ্রু কুচকে তাকালো!রুহি তখন দাঁত কেলিয়ে বললো…

রুহিঃ আমি থ্রিকোয়াটারের উপরেই শাড়ি পরবো।তাছাড়া আমার শাড়ি খুলে যাবে আমি সিওর।আর থ্রিকোয়াটারের উপরে পড়লে খুলবে না…(বিশ্বজয় করা হাসি দিয়ে)


মুগ্ধ আর কিছু বললো না মেহেদীর টিউব হাতে নিয়ে রুহির সামনে হাটু গেড়ে বসে পড়লো।রুহি কিছু বলতে যাবে তার আগেই মুগ্ধ ইশারায় রুহিকে কোন কথা বলতে না করলো!মুগ্ধ একটু রুহির দিকে তাকিয়ে রুহির নাভিতে মেহেদী ধরতেই রুহি দুইপা পিছিয়ে গেল!মুগ্ধ রুহির পেছনে সরে যাওয়া দেখে মুগ্ধ রুহিকে ধাক্কা দিয়ে বেডে ফেলে দিলো।মুগ্ধর মুখে দুষ্টু হাসি!রুহি অবাক হয়ে মুগ্ধর দিকে আছে শুধু… মুগ্ধ রুহির কাছে এসে রুহির দিকে তাকিয়ে বললো।

মুগ্ধঃভালবাসার চিহ্ন দিয়ে দিচ্ছি।আমার কাজে একদম বাধা দিবি না বলে দিলাম।


মুগ্ধ রুহির নাভিতে ওর নাম বার বার লিখছে আর এমন ভাবে নামটা লিখছে পুরোটা লাভ এর মত দেখাচ্ছে। তারপর মুগ্ধ ফু দিতে থাকে যাতে মেহেদিটা তারাতারি শুকিয়ে যায়।এর মধ্যে রুহির আম্মু এসে রুহিকে জিজ্ঞাসা করলো মুগ্ধ চলে গেছে কি না??রুহি একবার মুগ্ধর দিকে তাকালো! তারপর বললো মুগ্ধ চলে গেছে।আর রুহি ওর আম্মু কে বললো রুহি একাই সাজবে কাউকে পাঠানোর দরকার নাই।রুহির আম্মু চলে গেল।মুগ্ধ রুহির দিকে তাকিয়ে একটা তেডি স্মাইল দিলো।

তারপর মেহেদী শুকিয়ে গেলে মেহেদী ধুয়ে দেখে অনেক সুন্দর রং হয়েছে! আর মুগ্ধর নামটা লিখার স্টাইল টা দারুন ছিলো যার কারনে দেখতে একটু বেশিই ভালো লাগছে।রুহির এখন কেন জানি খুব লজ্জা লাগছে।মুগ্ধ রুহির লজ্জা মাখা মুখ দেখে মুচকি হাসে আর রুহির কপালে একটা আদর দেয়।


মুগ্ধ কথা অনুযায়ী রুহি থ্রীকোয়াটারের উপরে পেটিকোট পড়ে।মুগ্ধ শাড়িটা হাতে নিয়ে দাড়িয়ে ভাবছে কি করে শুরু করবে।মুগ্ধ রুহির কোমরে শাড়ি গুজতেই রুহি লাফ দিয়ে উঠে!তারপর মুগ্ধ শাড়িটা কি করবে বুঝতে পারছে না!তাই ফোন বের করে ইউটিউবে দেখে দেখে রুহিকে শাড়ি পড়াতে থাকে!মুগ্ধ মনোযোগ দিয়ে শাড়ি পড়াচ্ছে আর রুহি মুগ্ধর দিকে তাকিয়ে আছে।জামদানি হলুদ শাড়িটা রুহির ফর্সা শরীরে দারুন মানিয়েছে।শাড়ি পড়ানো হয়ে গেছে মুগ্ধ দেখে রুহি চুল ভেজা!মুগ্ধ রুহিকে ড্রেসিং টেবিলের সামনের টুল রুহিকে বসিয়ে হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুল শুকাতে থাকে।আর রুহি আয়নাতে মুগ্ধকে দেখতে থাকে!..


এবার মুগ্ধ কনফিউজড হয়ে যায় রুহির সাজগোজের জিনিস দেখে।কোনটা দিয়ে কি করে সাজতে হয় সেটা মুগ্ধর জানা নেই।!মুগ্ধ ওর হাতে আইলানা,মাসকারা,কাজল,আইলেস,আই স্যাডো, নিয়ে ভাবতে থাকে এগুলো দিয়ে আসলে কি করে?রুহির মুগ্ধকে দেখিয়ে দেয় কোনটা কি কাজে লাগে!মুগ্ধ আইলেস,আইস্যাডো,রেখে দেয়।মুগ্ধ রুহির মুখে হালকা করে ফেস পাউডার দিয়ে দেয়!তারপর রুহির চোখে টানা করে আইলানা দিয়ে দেয়।তারপর কাজল দেয় খুব যত্ন করে।তারপর লিপ লাইনার দিয়ে ঠোঁট হালকা করে আঁকানোর পর লাল লিপস্টিক দেয়! তাও হালকা করে।আর মুগ্ধর ভাষ্যমতে মতে হালকা লিপস্টিকে নাকি রুহিকে ভালো দেখায়..


তারপর রুহির চুলের মাঝখানে একটু সিথি করে তারপর অল্প একটু চুল ফুলিয়ে ক্লিপ আটকে নেয় আর সিথি করার পর যে চুল গুলো সামনে থাকে ওগুলোকে পেচিয়ে ক্লিপ আটকায়!তারপর রুহির চুল গুলো বেণী করে। রুহি মুগ্ধকে দেখিয়ে দিচ্ছে আর মুগ্ধ সেই অনুযায়ী করছে।তারপর মুগ্ধ রুহিকে কাঁচা ফুলের গয়না পড়ানো শুরু করে!গাদা আর লাল অর্কিড ফুল দিয়ে বানানো ফুলের গয়না!রুহির কপালে ঠিক মাঝখানে লাল অর্কিড আর চারপাশে গাঁদা ফুল। মুগ্ধ প্রথমে রুহির কপালে ফুলের গয়না পড়ায় তারপর ক্লিপ দিয়ে আটকায় তারপর দুল পড়ায় তারপর গলায় মালা।আর আর দুই হাতেও ফুলের গয়না পড়ায়। তারপর একটা করে গাদা ফুল নিয়ে রুহির চুলে বেণীর মাঝে একটা করে দেয় আর ফুল গুলো কালো চিকন ক্লিপ দিয়ে আটকানো হয়।চুলের বেণীর মাঝে চুল আটকানোর পর বেণীটা সামনে একপাশে এনে রাখে।তারপর মুগ্ধ বেডের দিকে তাকিয়ে দেখে আরো একটা গয়না বাকি আছে! মুগ্ধ ওই মালাটা হাতে নিয়ে রুহি দাঁড় করাই তারপর ফুল দিয়ে বানানো কোমর বন্ধণীটাও রুহি পড়িয়ে দেয়।


এখন রুহির সাজ কমপ্লিট!এককথায় হলুদ পরী দেখাচ্ছে আর হালকা সাজে রুহি মানায়।চোখে টানা করে কাজল আর আইলানা দেওয়ার জন্য চোখ দুটো আরো মায়াবী মনে হচ্ছে….


রুহি সাজ কমপ্লিট করে ! আর মুগ্ধ দুই টা পিছিয়ে রুহির দিকে তাকিয়ে দেখে কাঁচা ফুলের সাজে অসম্ভব সুন্দর দেখাচ্ছে। মুগ্ধ রুহির দিকে তাকিয়ে আছে মুগ্ধ নয়নে!মুগ্ধ রুহির দিকে এগিয়ে আসে তারপর একটা লাল টিপ পড়িয়ে দেয়।মুগ্ধ রুহিকে হালকা করে জড়িয়ে ধরে!রুহিও আয়নাতে নিজেকে দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে! কারন মুগ্ধ যে ওকে এত সুন্দর করে সাজাতে পারবে সেটা রুহিও কল্পনা করে নি।আর কোন ছেলে যে এত সুন্দর করে আইলানা আর কাজল দিতে সেটা মুগ্ধকে না দেখলে জানা হতো না।


ওইদিকে মুগ্ধ বাসার লোক মুগ্ধকে খুঁজছে বাট কোথাও মুগ্ধ নেই!ফোন করলেও মুগ্ধ কল রিসিভ করছে না।রুহির বেডে উপর মুগ্ধ ফোন সাইলেন্ট মুডে পড়ে আছে।রাহাত,আরিয়ান,আর আবির মুগ্ধ রুমে বসে মুগ্ধর জন্য ওয়েট করছে।

রাহাতঃ আচ্ছা মুগ্ধ কোথাও পালিয়ে গেল না তো..

আরিয়ানঃ দুজন দুজনকে ভালবেসে বিয়ে করছে তাহলে পাঠাবে কোন সুখে..

আবিরঃ ডাল মে কুচ আলু ভর্তা হ্যা!আচ্ছা মুগ্ধ যদি পালিয়েও যায় মুগ্ধর বাবা আমাদের ঠ্যাঙ্গাবে না তো।

রাহাতঃ আচ্ছা আবির তোর ভুল ভাল না বকলে শান্তি হয় না তাই না।ভাল চিন্তা কি তোর মাথায় আসে না??

আরিয়ানঃ আর একটু পর অনুষ্ঠান শুরু হবে তাহলে ভাই গেল কোথায়???

আবিরঃ আমার মন বলছে মুগ্ধ রুহির কাছেই গেছে!

রাহাতঃ এখন তো রুহি সাজগোজ করছে মে বি!জানিস না মেয়েরা বর ছাড়তেও রাজি বাট সাজ ছাড়তে রাজি না।আর রুহি এখন একা পাওয়ার কথাও না…

আরিয়ানঃ রাহাত মুখে লাগাম দাও ভাই! কারন বিয়ে বাড়িতে ছেলেদের থেকে মেয়েদের সংখ্যা বেশি! যদি কোন মেয়ে ফাঁক ফোকর দিয়ে এসব কথা শুনতে পাই তাহলে! আমাদের মেরে চোখ মুখে আলু তুলে দিবে।

রাহাতঃহা হা হা! তা ঠিক বলছো

আবিরঃ বিয়ে বাড়ি যা খেতে দিবে তাই লাভ,,,,আলু,পটল বা ঝাড়ুর বারি। যা দিবে দুম করে স্বাদরে গ্রহন করবো।নো সমস্যা…..

ওইদিকে….
মুগ্ধ মুচকি হেসে বলে…
মুগ্ধঃ আমার বউটা যে এত সুন্দর সেটা এমন সাজে না দেখলে বুঝতেই পারতাম না। (রুহির মাথায় আঁচল তুলে ঘোমটা দিয়ে)

রুহিঃ….
(তুমি ভালবাসা আর পরম যত্নে সাজিয়ে দিয়েছো! এজন্য আমাকে হয়তো সুন্দর দেখাচ্ছে। আমি জানি তোমার মনের মত করে সাজলে সেটা কখনোই অসুন্দর হবে না।মনে মনে…)


তারপর মুগ্ধ মুচকি হেসে রুহির কপালে আদর দিয়ে দেয়!তারপর মুগ্ধ বারান্দায় দিয়ে চলে যায়।কারন এখন দুইজনকে এক রুমে দেখলে অনেকেই অনেক কিছু ভাবতে পারে।মুগ্ধ চলে যাওয়ার পর রুহি ওর রুমের দরজা খুলে দিয়ে বেডে বসে আর ওমনি রুহির আম্মু রুহির রুমে আসে।রুহির আম্মু রুহির দিকে তাকায় আর এগিয়ে এসে আগে রুহির নখ কেটে দেয় আর একটু কাজলের কালি নিয়ে কানের পেছনে লাগায় দেয় যাতে কারো নজর না লাগে!রুহির আম্মু রুহির দিকে তাকিয়ে বলে….

রুহির আম্মুঃপাগলটাকে মানা করলি না কেন? বারান্দা দিয়ে যাওয়ার কি দরকার শুনি?পড়ে গিয়ে যদি পায়ে ব্যাথা পায়….


To be continue…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here