প্যারাময়_লাভ❤❤ #written_by_Nurzahan_akter_Allo #part_3

0
703

#প্যারাময়_লাভ❤❤
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_3

মুগ্ধঃ এটা তোর বাসার বাগান পেয়েছিস যে এভাবে দৌড়াদৌড়ি করছিস!অসভ্য মেয়ে…আজকে বাসায় চল! আজকে তোর একদিন কি আমার একদিন??আজকে তোকে এমন শিক্ষা দিবো জীবনেও ভুলবি না (রুহির হাত ধরে টানতে টানতে)

রুহিঃ আর করবো না ভাইয়া!এবার আমাকে ছেড়ে দাও! কেউ বাঁচাও আমাকে? আমি কিন্তু বড় বাবাকে বলে দিবো তুমি সিগারেট খাও…এটাও বলবো তুমি একটা মেয়ে কিস করছো?তখন তোমার এত এত বকবে!কুওা ভাইয়া আমার হাত ছাড়! হুলো বিড়াল আমি এখন যাবো না!লেজ কাটা বানর আমি যাবো না বাসায়…. (হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করে)

মুগ্ধঃঠাস্! আবার ফালতু কথা বলছিস তুই?আজকে আমিও দেখবো আমার হাত থেকে তোকে কে বাঁচায় (দাঁতে দাঁত চেপে একটা চড় মেরে )

রুহিঃভ্য ভ্য ভ্য! ইসস্ এত কেউ মারে। গাল মনে হচ্ছে খাল হয়ে গেলো।আহহ্ মা গো মা গালটা কি জলছে রে??(চিৎকুর দিয়ে কেঁদে)


( মুগ্ধই হচ্ছে আমার গল্পের নায়ক!মুগ্ধ রুহির বড় বাবার ছেলে।পড়াশোনা শেষ করে মুগ্ধ একটা ব্যাংকে অফিসার পদে জব করে!পড়াশোয় যথেষ্ট মেধাবী।আর রাহাত,আবির মুগ্ধর খুব ভালো বন্ধু!মুগ্ধ খুব রাগী, আর গম্ভীর টাইপের ছেলে।তবে মনটা খুব ভালো )


মুগ্ধ ওর বন্ধু আবিরকে বললো সুমি আর ইরাকে রুহির গাড়িটা নিয়ে ওদের বাসায় পৌঁছে দিতে।সুমি আর ইরা টু শব্দ করে নি কারন ওদের জানা যে মুগ্ধ রেগে গেলে অবস্থা খারাপ করে দেয়!আবির সুমি আর ইরাকে বাসায় পৌঁছে দেয়!আর মুগ্ধ রুহিতে টানতে টানতে ওর গাড়িতে বসায়!তারপর গাড়ি স্টাট দেয়!মুগ্ধ এতটা রেগে যাওয়ার আসল কারন রাহাত মুগ্ধকে বলে দিয়েছে যে রুহি রাহাতকে আসলে কি কি বলছে?আর মুগ্ধর বন্ধু রাহাত…..মুগ্ধ রাগে ফোস ফোঁস করছে! চোখ লাল করে রুহির দিকে তাকিয়ে বলে…


মুগ্ধঃঅসভ্য মেয়ে একদম চুপ!রাহাত তোর বড় আর তুই এসব কি বলছিস ওকে?যত বড় হচ্ছো দিন দিন তত বেয়ারা হয়ে যাচ্ছো তুমি!আর তোকে বলিনি এমন ড্রেসে পড়ে বের হবি না আমার কথা তোর কানে যায় না।এসব ছ্যাচড়ামি ছাড়ো তা না হলে হাত-পা ভেঙে বেডে ফেলে রাখবো।(দাঁতে দাঁত চেপে)

রুহিঃআমি কি করছি?শুধু শুধু বকছো কেন?সব সময় তুমি আমাকে এত বকো কেন?আমি খারাপ কিছু তো রাহাত ভাইয়াকে বলি নি!দাড়াও ওই শালা উগান্ডার রাহাত্যর পেছনে যদি কুকুর না লাগিয়ে দেয় তো আমার নামও রুহি না… (কেঁদে কেঁদে)

মুগ্ধঃঠাস!আর চুপ!!এগুলো কোন ভদ্র মেয়ে ভাষা!অভদ্র মেয়ে একটা!আর একটা শব্দ করলে আজকে তোর একদিন কি আমার একদিন!শেষবার মানা করছি রুহি!ভাল হয়ে যা… (চোখ লাল করে তাকিয়ে )

রুহিঃ……..

মুগ্ধর ধমক আর মার খেয়ে রুহি ফুপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। মুগ্ধরা ওর বাসায় পৌঁছে গাড়ি থেকে নামে!আর রুহির হাত ধরে টানতে টানতে বাসার ভেতরে নিয়ে যায়। রুহি মুগ্ধর বাবাকে ড্রয়িং রুমে বসে থাকতে দেখে চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করে।এমন ভাবে কাঁদছে যে কেউ দেখে বলবে মুগ্ধ রুহিকে অনেক অনেক মেরেছে।মুগ্ধ আবার ঠাস করে সবার সামনে রুহির গালে চড় মেরে দেয়! মুগ্ধর মা এসে মুগ্ধর হাত থেকে রুহির হাত ছাড়িয়ে নেয়।রুহি তো মুগ্ধর মাকে জড়িয়ে ধরে আরো জোরে ভ্য ভ্য করে কেঁদে দেয়!কেঁদে কেঁদে তো বন্যা করে দেওয়ার উপক্রম।মুগ্ধ আবার বিরক্ত হয়ে রুহির দিকে তাকিয়ে বললো..


মুগ্ধঃ রুহি তোর ন্যাকা কান্না বন্ধ কর!নাহলে এমন থাপ্পর দিবো! মাড়ির একটাও দাঁত থাকবে না।আমার ধৈর্য শক্তি এমনিতেই খুব কম আর এসব ন্যাকা কান্না আমি সহ্য করতে পারি না। (দাঁতে দাঁত চেপে চিৎকার করে)

মুগ্ধর মাঃ মুগ্ধ শুধু শুধু মেয়েটাকে মারছিস কেন তুই?কি করছে রুহি??যাই করুক তাই বলে মারবি…

মুগ্ধঃ জানো লোকের পাড়ে গিয়ে দৌড়াদৌড়ি করছিলো!আর রাহাতকে….(থেমে গিয়ে)

মুগ্ধর বাবাঃ রাহাত কে কি??রাহাতকে যাই বলুক তাই বলে তুমি মেয়েটার গায়ে হাত দিবে!মুগ্ধ ভুলে যেও না রুহি এখন বড় হয়েছে।

মুগ্ধঃ বড় হয়েছে বলে কি মাথা কিনে নিয়েছে নাকি?ভুলভাল কিছু দেখলেই মার হবে ওর!মারের উপরে কোন কথা নেই।না মারলে ও ঠিক হবে না। ঘাড় ত্যাড়া মেয়ে একটা। (কথাটা বলে রাগে হনহন করতে করতে চলে যায়)

রুহিঃবড় বাবা মুগ্ধ ভাইয়া সব সময় আমাকে মারে!এত এত বকে। আমি কিছু না করলেও বকে।বড় বাবা তুমি এত ভাল আর তোমার ছেলে এত খাটাশ কেন?গালটা আমার এখনও জলে যাচ্ছে।কানের মধ্যেও পো পো শব্দ হচ্ছে…. কানের পোকা গুলো কানের মধ্যে কিলবিল করছে মনে হচ্ছে। (ভ্য করে কেঁদে)

মুগ্ধঃ কান্নার শব্দ আসছে!আমাকে কি নিচে এসে আবার আরেক থাপ্পড় লাগাতে হবে…(সিড়ির কাছে দাড়িয়ে )

রুহিঃ এত মারলে এবার কি শান্তি মত এখন একটু কাদতেও পারবো না…..(ঠোঁট ফুলিয়ে)

মুগ্ধঃ না কাদতে পারবি না!আর কাদলে মুখের ভেতর কাগজ ঢুকিয়ে কান্না কর!যাতে শব্দ না হয়। আর যদি শব্দ হয় তো আজকে তোর সাত গুষ্ঠীর নাম ভুলিয়ে দিবো…(দাঁতে দাঁত চেপে)

রুহিঃ আমার সাত গুষ্টীর মধ্যে তুমিও তো আছো!আচ্ছা এক কাজ করো!আরেকটা চড় মেরে আমাকে সাত গুষ্টীর নাম ভুলিয়ে দাও তো দেখি তুমি কেমন পারো??আমিও ভুল চাই সবার নাম…

মুগ্ধঃদাড়া আসছি আমি…

রুহিঃনা না থাক!আর আসতে হবে না তোমাকে। আমি আর কাঁদছি না!


মুগ্ধ একমাএ মানুষ যাকে রুহি খুব ভয় পায়!আর রুহিদের বংশে রুহি, মুগ্ধর বড়বোন মৌমিতা এই দুটোই মেয়ে তাই সবাই রুহি আর মৌমিতাকে খুব ভালবাসে। এরা দুইজন সবার চোখের মনি।মৌমিতা খুব ঠান্ডা মেজাজের বাট রুহি হচ্ছে খুব দুষ্টু…..মৌমিতার বিয়ে হয়ে গেছে। মৌমিতা এখন সিঙ্গাপুরে থাকে ওর হাজবেন্ডের সাথে।


রুহির আম্মু ফোন দিয়ে জেনে নিলো যে রুহি মুগ্ধদের বাসায় আছে!রুহির বাবাও হাফ ছেড়ে বাচলো কারন রুহি ওখানেই সেভ থাকবে।মুগ্ধর আম্মু রান্না ঘরে কফি করছে! রুহি রান্নাঘরের ডেস্কের উপর বসে পা ঝুলিয়ে মোগলাই খাচ্ছে। মুগ্ধর আম্মু এক মগ কফি করে আর মোগলাই নিয়ে রুহিকে বললো মুগ্ধর রুমে দিয়ে আসতে।রুহি না করতে পারলো না কারন বড় আম্মুর পায়ের ব্যাথাটা বেড়েছে সিঁড়ি বইয়ে উঠতে কষ্ট হবে।এজন্য রুহি পিলপিল পায়ে সিঁড়ির দিকে এগোতে থাকলো…


রুহি ট্রে হাতে নিয়ে সিড়ি বেয়ে মুগ্ধর রুমে গেল!মুগ্ধ তখন বসে লেপটপে মুভি দেখছিলো!রুহি মুগ্ধর দরজা খুলে ঢুকে গেল!মুগ্ধ রুহিকে বললো মগটা সেন্টার টেবিলের উপর রেখে ওর সামনে এসে বসতে ।রুহি বিশ্বজয় করা হাসি দিয়ে মুগ্ধর সামনে এসে বসতেই। মুগ্ধ ঠাস করে আবার চড় দিলো।রুহির গালে হাতে দিয়ে জিজ্ঞাসা করলো…


রুহিঃএবার কি জন্য মারলে ভাইয়া? আমি তো কিছু করি নি…আমি তো ভদ্র হয়েই আছি।

মুগ্ধঃসত্যি কিছু করিস নি??তা আমি নিজে মুখে বলবো? নাকি আরেকটা চড় খেয়ে তুই নিজের মুখে স্বীকার করবি তাই বল…

রুহিঃ না থাক! আমিই বলছি….আমি বুঝেছি, তুমি বুঝে গেছো । আর লুকিয়ে লাভ নাই।

মুগ্ধঃহুমম বল!তবে মিথ্যা বললে তিনগুন চড় বেশি খাবি।

রুহিঃআসলে আমিই তোমার কফিটা আমি এটো করছি! আর এই মগ থেকেই কফি আমি আমার মুখে নিয়েই কুলি করে আবার মগে রাখছি। (দুই গালে হাত রেখে)

মুগ্ধঃ আমার চোখের সামনে থেকে বিদায় হ!নয়তো এক আছাড় দিয়ে তোরে নাড়ি ভুড়ি বের করে দিবো।তোর মনে হয় না কয়েক মিনিট দুষ্টুমি না করে শান্ত আর ভদ্র হয়ে থাকি….(দাঁতে দাঁত চেপে)

রুহিঃনা মনে হয় না!আর মন যা বলে না মনের বিরুদ্ধে গিয়ে কিছু করা উচিত না।

মুগ্ধঃমন তা বলবে কোন?তুমি যেমন ঘাড় ত্যাড়া তোমার মনও তোমার মতই ঘাড় ত্যাড়া।এখন তুই যা আমার রুম থেকে আর হ্যা ড্রায়ারে চকলেট আছে যাওয়ার সময় নিয়ে যা….

রুহিঃ আচ্ছা… সব গুলো নিয়ে যায়(অনেক খুশি হয়ে)

মুগ্ধঃহুমমম।

রুহিঃ জানো মুগ্ধ ভাইয়া আজকে অভিকের খাৎনা করছে!অভিক তো সেই কাঁদছে! হা হা হা (চকলেট খেতে খেতে)

মুগ্ধঃআমার সামনে তোর এসব বলতে লজ্জা লাগে না!আর আমাকে এসব বলছিস কেন??

রুহিঃকেন বলবো না?আর লজ্জা লাগবে কেন?তোমার খাৎনার দিনের পিক ও তো আমি দেখছি!বড় আম্মু কাছে থেকে…তখন তো লজ্জা লাগে নি।

মুগ্ধঃতুই এখুনি আমার সামনে থেকে যা!আর একটা কথা বললে! আজকে তোকে বারান্দা দিয়ে নিচে ফেলে দিবো।

রুহিঃহুমম যাচ্ছি! তার আগে একটা কথা বলো তো!তুমি সব সময় ষাড়ের মত এত চেঁচামেচি করো কেন??

মুগ্ধঃরুহিইইই! তুই কি যাবি?? (রেগে)

রুহিঃ আচ্ছা আমি গেলাম!টাটা (কথাটা বলে দৌড়ে চলে যায়)


রুহি চকলেট পেয়ে এত খুশি যে চড়ের খাওয়ার কথা ভুলে গেছে!এটা তো রোজকারে কাহিনী এজন্য রুহিও আর কিছু মনে করে না।মুগ্ধের হাত মার খায় আর চকলেট পেলে সব ভুলে যায়।রুহি চকলেট খেতে ভালবাসে বলে মুগ্ধও বাইরে গেলে চকলেট আনতে ভুল করে না।মুগ্ধর রুম থেকে রুহি বের হয়ে চকলেট খেতে খেতে মনের সুখে গান গাইতে গাইতে নিচে চলে গেল।


To be continue…..
(গল্পটা তোমাদের কেমন লাগছে সেটা জানিও….)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here