#প্যারাময়_লাভ❤❤
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_5
মুগ্ধঃআমার বেড শীটে কে বরইয়ের আচার লেপ্টে রাখছে!আর পুরো রুমের এই অবস্থা কেন???(চিৎকার করে)
আম্মুঃআমি জানবো কি করে?আমার শখের আচার গুলো কে এমন করলো ??
মুগ্ধঃওই ফাজিলটারই কাজ এটা!ওই ছাড়া কেউ এই কাজ করবে না।এত মার খায় তাও ওর শয়তানি কমে না।ওরে আজ আমি হাতের কাছে পেলে যে কি করবো আমি???(দাঁতে দাঁত চেপে)
আম্মুঃ ও ছোট বুঝে করে নি মনে হয়!যা তুই ফ্রেশ হয়ে নে!আমি বুয়াকে বলে রুম পরিষ্কার করিয়ে দিচ্ছি।
–
মুগ্ধ ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে বাইরে বের হয়!আবির,রাহাতের সাথে আড্ডা দিতে যায়। রুহিও বাসায় ফিরে ফ্রেশ হয়ে পড়তে বসার ভয়ে মাথা ব্যাথার বাহানা করে বেডে ঘাপটি মেরে শুয়ে আছে!রুহি ওর ফোনটা বের করে মুগ্ধকে ফোন দিলো!মুগ্ধ ফোনটা রিসিভ করলো না! তাই রুহিও ফোন দিতেই থাকলো যতক্ষণ না মুগ্ধ ফোন ধরে!সাত বারের বেলায় বিরক্ত হয়ে মুগ্ধ ফোন টা রিসিভ করলো।মুগ্ধকে কিছু বলতে না দিয়ে ফটাফট বলতে শুরু করলো….
–
রুহিঃ ভাইয়া তুমি যেখানেই থাকো!তারাতারি বাসার সামনে এসো খুব দরকার।
মুগ্ধঃনা এখন আমি যেতে পারবো না আমি একটা কাজে আছি।
রুহিঃ না না না এখন মানে এখনই তুমি আসবা!আমি কোন কথা শুনতে চাই না।
মুগ্ধঃ আচ্ছা আমাকে না জালাতন করলে তোর শান্তি হয় না!
রুহিঃনা শান্তি হয় না!তারাতারি এসো না প্লিজ।
মুগ্ধঃহুমম
–
আবির আর রাহাতের থেকে বিদায় নিয়ে মুগ্ধ রুহির বাসার সামনে এসে মুগ্ধ রুহিকে কল দিলো।রুহি তো ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চার মত তিরিং বিরিং করে দৌড়াতে দৌড়াতে এসে মুগ্ধর সামনে দাড়ালো মুখে বিশ্বজয় করা হাসি!মুগ্ধ কিছু বলার আগেই রুহি মুগ্ধর হাত ধরে রাস্তার হাটতে শুরু করলো!মুগ্ধ ভ্রু কুচকে রুহির দিকে বললো…
–
মুগ্ধঃ রাস্তার মধ্যে এমন করে হাত ধরে হাটছিস কেন?রাস্তা মানুষ গুলো কি ভাববে??হাত ছাড় বলছি
রুহিঃ আমি আমার ভাইয়ার হাত ধরছি তাতে কার বাবার কি শুনি??আমার ভাইয়ার হাত ধরে আমি হাটবো নাকি আমার ভাইয়ার হাত ভেঙে হাতে ধরিয়ে দিবো সেটা আমার ব্যাপার।
মুগ্ধঃ অযথা বকবক না করে বল কি বলবি??
রুহিঃআমার খুব নেশাগ্রস্ত লাগছে!আমার নেশা কাটিয়ে দাও।
মুগ্ধঃঠাটিয়ে এক থাপ্পড় মারবো তোকে!যা বলবি খোলাখুলি বল এত ন্যাকামি দেখার সময় নাই।
রুহিঃআমি আইসক্রিম খাবো!আমাকে আইসক্রিম কিনে দাও (মুখ ফুলিয়ে)
মুগ্ধঃপ্রথমে এটা বললে কি হতো!বেশি পাকামি তাই না।আর রাতের বেলায় আইসক্রিম খেতে হবে না।যা বাসায় যা…
রুহিঃ না না আমি এখনই খাবো…
মুগ্ধঃ আচ্ছা তুই বাসায় যা! আমি নিয়ে আসছি।
রুহিঃআমিও তোমার সাথে যাবো!এখন বাসায় গেলে আম্মু জোর করে পড়তে বসাবে।এখন আমার পড়তে ইচ্ছে করছে না।
মুগ্ধঃ পড়তে তো তোমার কোনদিনই ভালো লাগে না!পড়াচোর একটা…সারাদিন আকাম গুলো করতে ভালোই লাগে।শুধু কাজের কাজ করতে তোমার ভালো লাগে না।
–
মুগ্ধ আর রুহি পাশাপাশি হাঁটছে! রাতের বেলা ল্যাম্প পোষ্টের লাল,নীল,হলুদ লাইট গুলো খুব ভালো লাগে।মুগ্ধর পাশাপাশি রুহি আইসক্রিম খাচ্ছে আর বকবক করেই যাচ্ছে!রুহি হুট করে ওর এটো করা আইসক্রিমটা মুগ্ধর মুখের সামনে ধরলো!মুগ্ধ ভ্রু কুচকে রুহির দিকে তাকালো!রুহি মুচকি হেসে বললো…
–
রুহিঃতুমি তো আমাকে শুধু মারো একটুও ভালবাসো না।তাই একটু এটো খাও… আমার এটো খেয়ে যাতে একটু ভালবাসা বাড়ে।
মুগ্ধঃ এমনি কি তোকে মারি?তোর দোষে তুই মার খাস..
রুহিঃসেদিন কফিটা এটো করছি বলে ঠাস করে থাপ্পড় মারলে!পরে তো সেই আমার এটো কফিটাই তো খেলে তাহলে শুধু শুধু মারলে কেন??
মুগ্ধঃ ক ক আমি তোর এটো করা কফি খেয়েছি।চোখের আজকাল বেশি দেখিস নাকি তুই…
রুহিঃআমি পর্দার আড়াল থেকে দেখছি।তুমি আমার এটো করা কফিটাই খেয়েছো।এখন স্বীকার করতে লজ্জা পাচ্ছো বুঝি (মুচকি হেসে)
মুগ্ধঃ ওহহ হো তোর তো মার বাকি আছে!তুই আমার রুমটার এই অবস্থা করছিস কেন?? এবার বল কোন গালে থাপ্পড় খাবি…. (কথাটা এড়িয়ে যাওয়ার জন্য)
রুহিঃ না না মারার আগে আমার একটা কথা শোনো।ভাইয়া আজকে তোমার জন্য একটা উপহার কিনসি!তাই আজকের মার টা মাফ করে দাও। এই দেখ এই ওয়াচটা তোমার জন্য কিনসি!খুব সুন্দর হয়েছে না। (হাতে পড়িয়ে দিয়ে)
মুগ্ধঃনা একটু ভালো হয় নি!তোর চয়েজ এত খারাপ কেন??
রুহিঃ সত্যি তোমার পছন্দ হয় নি!দাও তাহলে ফেরত দিয়ে আসবো দোকানদারকে। (মন খারাপ করে)
মুগ্ধঃ না থাক!তার দরকার হবে না।
–
দুজনে গল্প করছে আর হাঁটছে! রুহি মুগ্ধর কাছে এত মার খায় তাও মুগ্ধর সাথে কথা না বলে থাকতে পারে না।সারাদিনের কোথায় কি করলো?সব মুগ্ধকে না বললে রুহির যেন পেটের ভাত হজম হয় না।মুগ্ধও জানে রুহি ওর কথা না শেষ করা অবধি মুগ্ধকে শান্তি দিবে না তাই মুগ্ধও নিরুপায় হয়ে রুহির বকবক শুনে।
–
মুগ্ধ এক হাত প্যান্টের পকেটে ঢুকিয়ে হাঁটছে আর রুহির কথা শুনছে!রুহি হুট করে দুইপা পিছিয়ে গেল!রুহিকে দাঁড়ানো দেখে মুগ্ধ ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনে তাকাতেই রুহি দৌড়ে এসে মুগ্ধর পিঠে উঠে পড়লো!হুট করে এমন করাতে মুগ্ধ টাল সামলাতে না পেরে দুজনেই হুড়মুড়িয়ে রাস্তাতে পড়ে গেল!রুহি দুই গালে হাত দিয়ে মুগ্ধর দিকে তাকিয়ে আছে!মুগ্ধ রাগি চোখে রুহির দিকে তাকিয়ে বললো…
–
মুগ্ধঃএসব কোন ধরনের অভদ্রতা!রাস্তায় মাঝখানে এসব করতে মানা করিনি তোকে।অসভ্য মেয়ে (রেগে গিয়ে)
রুহিঃ আমার পা ব্যাথা করছিলো!তোমাকে বললে তো কোলে নিতে না তাই ভাবছিলাম…
মুগ্ধঃতোকে আগ-বাড়িয়ে এত ভাবতে কে বলে বলতো।কোথাও ব্যাথা পেয়েছিস?আর দুই গালে হাত দিয়ে আছিস কেন?? (ভ্রু কুচকে)
রুহিঃতুমি মারবে তাই গালে আগে থেকেই হাত দিয়ে আছি… মানুষের দেওয়া বাঁশ আর তোমার থাপ্পড় হুটাম করে কখন কোন দিয়ে চলে আসে!বোঝা তো যায় না তাই আগে থেকেই নিজেকে রক্ষার প্রচেষ্টা করছি…
মুগ্ধঃ মারের কাজ করিস তো মারবো না!এসব ফাজলামি রাস্তায় করলে মানুষ খারাপ বলে!আর রুহি এখন তুই বড় হয়েছিস। এগুলো আশে পাশের মানুষ দেখলে আমাদের নিয়ে কটু কথা বলবে।
রুহিঃ মানুষ কি বলবে এটা ভেবে কি আমি তোমার সাথে কথাও বলতে পারবো না।মানুষের খেয়ে কাজ নাই তাই এসব করে।যাই হোক ভাইয়া তুমি আর এই কালো টি-শার্ট টা আর পড়বে না!
মুগ্ধঃকেন?? (ভ্রু কুচকে)
রুহিঃকালো রং টা তোমাকে খুব বেশি ভালো দেখায়।এজন্য আর পড়বে না।
মুগ্ধঃহুমম ভালো দেখায় বলেই তো পড়ি!তোর কথা শুনবো কেন?আর আমি পড়লো তোর কি???
রুহিঃ আমি শুধু দেখবো তোমাকে!অন্য মেয়ে তাকালে আমার হিংসা হয়।আমি মানা করছি ব্যাস তুমি পড়বে না মানে কালো কোন জিনিস পড়বে না।
মুগ্ধঃ আমি যদি ভালো ড্রেস না পড়ি তাহলে কোন মেয়ে তো আমাকে পছন্দ করবে না!আর কেউ পছন্দ না করলে তো বিয়েও হবে না আমার।তোর কথা শুনলে তো আমাকে সারাজীবন কি চিরকুমার থাকবো??
রুহিঃ এতকিছু জানি না!বুঝিও না।তুমি কালো টি- শার্ট পড়বে না।
–
মুগ্ধ রুহির কথা শুনে মনে মনে হাসছিলো আর কিছু একটা ভাবছিলো!মুগ্ধ হুট করে পাশে তাকিয়ে দেখে রুহি নাই!মুগ্ধ সামনে তাকিয়ে দেখে রুহি একটা কুকুরকে একটা লাঠি দিয়ে গুতো মেরে এদিকেই দৌড়ে আসছে! আর পেছনে পেছন কুকুরটাও ঘেউ ঘেউ করছে।রুহি দৌড়ে এসে মুগ্ধকে বললো।
–
রুহিঃকুকুরটা রেগে গেছে…ভাইয়া পালাও!!!!!!!!!!!,
–
মুগ্ধ বুঝলো যে অবস্থা খুব খারাপ তাই মুগ্ধও রুহির সাথে দৌড়াতে শুরু করলো।মুগ্ধর মনে নাই শেষ কবে মুগ্ধ এমন ভাবে দৌড় দিসিলো।কুকুরটাও ওদের পেছন পেছন আসছে!মুগ্ধ রুহির হাত ধরে একটা গলিতে ঢুকে গেল আর ওখানে লুকিয়ে পড়লো।কুকুরটা ওদের খুজে না পেয়ে ঘেউ ঘেউ করে একদিক-ওদিক তাকিয়ে চলে গেল।মুগ্ধ রুহির দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করলো…
–
মুগ্ধঃতুই জানিস আমি ওয়াশরুমেও কোন দিন এভাবে দৌড়ে যায় না!আর তোর জন্য আজকে আমাকে প্রানপণে কুকুরে ভয়ে এভাবে দৌড়াতে হলো।(হাঁপাতে হাঁপাতে)
রুহিঃতুমি চাইলে আমি প্রতিদিন তুমি যাতে ওয়াশরুমে দৌড়ে যাও সেই ব্যবসথা করে দিতে পারি।
মুগ্ধঃঠাস্!অসভ্য মেয়ে আবার মুখে মুখে কথা বলিস।যত ভাবি আর মারবো না ততই তুই বেশি করে মার খাওয়ার কাজ গুলো করিস।(থাপ্পড় দিয়ে)
রুহিঃ থাপ্পড় টা খেয়ে আমার এখন মনে হচ্ছে আমি তোমার সাথেই আছি!এতক্ষণ মনে হয় নি যে আমি তোমার সাথে ছিলাম…আহ্ কি যে শান্তি।
মুগ্ধঃ আচ্ছা রুহি তুই কি নিজেকে কখনোই শুধরাবি না!আচ্ছা একটা কথা বলতো???হুট করে তুই কুকুরটাকে গুতো দিতে গেলি কেন??(দাঁতে দাঁত চেপে)
রুহিঃআসলে আমি একটা জিনিস পরীক্ষা করছিলাম??
মুগ্ধঃ পরীক্ষা করার আর জিনিস পেলি না!তা বলতো তুই কুকুরকে গুতো দিয়ে কি এমন জিনিস পরীক্ষা করলি.??
–
মুগ্ধ রাগি চোখে রুহির দিকে তাকিয়ে আছে!আর রুহি বিশ্বজয় করা হাসি দিয়ে মুগ্ধর দিকে একবার তাকিয়ে দাঁত কেলিয়ে বললো…
রুহিঃআসলে আমি পরীক্ষা করছিলাম! কুকুরের কাতুকুতু আছে কি না??? (বএিশ পাটি দাঁত বের করে)
To be continue……
(আপনারা চাইলে রুহির মত এমন পরীক্ষা করে দেখতে পারেন!দারুন ফলাফল পাবেন মে বি 😂😂😂)