এলোকেশী_কন্যা২__ #written_by_Nurzahan_akter_Allo #part_31 🍁🍁

0
705

#এলোকেশী_কন্যা২__
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_31
🍁🍁

হুজুর রোদকে ইশারা করে আলোকে রুমে নিয়ে যাওয়া জন্য! রোদ মেঘকে কোলে থেকে নামিয়ে আলোকে কোলে নিয়ে ওর রুমে নিয়ে যায়….!!

রোদ আলোর বিছানাতে শুইয়ে দেয়!রোদের চোখ থেকে একফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়লো গাল বেয়ে!রোদ আলোকে মজা করার জন্য ইচ্ছে করে কাঁদাতে চাইতো! বাট এভাবে এত কষ্ট পেয়ে আলোর চোখের পানি দেখতে চাইনি রোদ! রোদ আলোর কপালে আদর দিলো! আর আলোর দুইগাল ধরে ছলছল চোখে তাকিয়ে বললো…!!

রোদঃসরি তিলোকন্যা!আর কাঁদাবো না তোমাকে!আমি কখনো চাইনি তুমি এত কষ্ট পাও!অনেক হয়েছে তিলোকন্যা আমি আর তোমাকে কষ্ট পেতে দিবো না!আমি সরি..!! (কপালে আদর দিয়ে)

রোদের আম্মু আর দীদান আলোর রুমে আসলো!আলোর পুরো শরীরে মাটি লেগে গেছে!চুলের অবসথা তো আরো খারাপ! মেঘ আলোর কাছে যাওয়ার সাহস পাচ্ছে না!রুমের দরজার কাছে পর্দার আড়ালে দাড়িয়ে ছলছর চোখে আলোর দিকে তাকিয়ে আছে!রোদ মেঘকে দেখতে পেয়ে মেঘের কাছে এগিয়ে গেল আর হাঁটু গেড়ে বসে পড়লো!মেঘ মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে…!!

রোদঃ কি হয়েছে মেঘবাবুর? এভাবে এখানে দাড়িয়ে আছো কেন?(মেঘের গালে হাত রেখে)

মেঘঃ দা দা দাভাই বউমনি আমার জন্য খুব কষ্ট পাচ্ছে! আমার খুব কষ্ট হচ্ছে দাভাই (ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে)

রোদঃ আরে না!আসলে একটা দুষ্টু লোক তোমার বউমনিকে কষ্ট দিসে!এখানে তোমার কোন দোষ নেই সোনা…!ওই দুষ্টু লোককে পানিশমেন্ট দিয়েছি আর কষ্ট দিবে না তোমার বউমনিকে!আর কাঁদে না এবার সব ঠিক হয়ে যাবে।(চোখ মুছে দিয়ে)

মেঘঃ বউমনি কি আমাকে আর ভালোবাসবে না দাভাই? (কেঁদে কেঁদে)

রোদঃ কেন ভালবাসবে না?আগের মত আবার তোমাকে ভালবাসবে!এখন তোমার বউমনি একটু টায়ার্ড তো তাই ঘুমাচ্ছে…. (মুচকি হেসে)

রোদের আম্মু রোদ আর মেঘকে বাইরে যেতে বললো আলোর ড্রেসটা চেন্জ করিয়ে দেওয়ার জন্য। মেঘ আর রোদ দুইভাই আলোর দিকে একবার তাকিয়ে চলে যায়!হঠাৎ মেঘ দৌড়ে এসে আলো পুরো মুখে এত এত আদর দিয়ে কেদে দেয় আর আলোর গলা জড়িয়ে ধরে কেঁদে কেঁদে বলে..!!

মেঘঃ বউমনি আমি তোমাকে এত এত আদর দিয়ে দিলাম!এবার দেখবে তোমার সব কষ্ট চলে যাবে। আর একটুও কষ্ট হবে না তোমার বউমনি…..!আমি তোমাকে অনেক অনেক বেশি ভালবাসি বউমনি(আদর দিয়ে)

রোদের চোখ লাল হয়ে আছে!মনে হচ্ছে এখুনি টুপ করে পানি ঝরে পড়বে!রোদ এসে মেঘকে কোলে নিয়ে রুমে থেকে চলে গেল!রোদের আম্মু আর দীদান আলোর ড্রেস বদলে দিলো আর টাওয়াল ভিজিয়ে শরীর মুছে দিলো।আলো এখনো ঘুমাচ্ছে তাই আর কেউ আর ডাকে নি!হুজুর, রোদের আব্বু আর আম্মু, রোদ আর দীদান সবাই বসে আছে!আর একটু দুরে মেঘ বসে বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে মন খারাপ করে।হুজুর রোদের দিকে তাকিয়ে বললো….!!

হুজুরঃতোমরা এখনকার যুগের ছেলে মেয়েরা এসব বিশ্বাস করো না!তবে সবকিছু অবিশ্বাস বা অবহেলা করাও উচিত না।জানিনা তুমি বিশ্বাস করো বা করবে কি না?আর জ্বিন বলে কিছু তো আছেই আর সেটা কুরআনেই তো উল্লেখ আছে!যেহেতু কুরআনের জ্বিন নিয়ে উল্লেখ আছে তাহলে মুসলমান ঘরের ছেলে মেয়ে হয়ে জ্বিন নিয়ে মজা করেও! এটা ওটা বলা কি ঠিক?সত্যি বলতে যারা কোনদিন কুরআন পড়েনি বা পড়ে না! বা জ্বিন সূরার অর্থই জানে না তারাই মজা করবে এসব নিয়ে।

রোদঃ আমার মনে হচ্ছে আপনি আমাকে কিছু বলতে চান?আপনি খোলাখুলি বলতে পারেন।

হুজুরঃ শুধু তোমাকে না প্রত্যেকটা পাঠকগণ সহ
এখানে উপস্থিত সবাইকে আমি কিছু বলতে চাই!পৃথিবীতে মানুষ যেমন ভালো আর খারাপ দুইধরনের আছে! তেমনি জ্বিনরাও তাই!এই মেয়ের ভাগ্য ভাল ওকে খারাপ জ্বিন আঘাত করছে কষ্ট দিয়েছে! কিন্তু শারীরিক ভাবে কোন অত্যাচারে লিপ্ত হতে পারেনি?কারো কারো ক্ষেতে দেখা যায় জ্বিনা রা সুন্দরী মেয়েদের সাথে সঙ্গমে লিপ্ত হয়! যে মেয়েরা সুন্দর তারা বিবাহিত বা অবিবাহিত কাউকে তারা মানে না।যাকে তারা পছন্দ হয় তার সাথেই সঙ্গমে লিপ্ত হয়….!! এটাও সঠিক যে খারাপ জ্বিনরা বিবাহিত মেয়েদের হাজবেন্ডের রুপ ধরে এসেও তারা….!!!!

রোদঃ……

হুজুরঃজ্বীনদের শরীর মূলত খুব সূক্ষাতি সূক্ষ। জ্বীনরা চাইলে যেকোন কঠিন পদার্থের বাধা অতিক্রম করতে পারে। জ্বীন দের কে আল্লাহপাক বিশেষ কিছু কথা ও কাজ শিখিয়ে দিয়েছেন যার দ্বারা জ্বীনরা চাইলে এক আকার থেকে আরেক আকারে রূপান্তরিত হতে পারে। তবে জ্বীন দের কাছে সবচেয়ে প্রিয় আকার হল সাপের আকার। জ্বীনরা বেশিরভাগ সময় সাপের আকারে চলাফেরা করতে পছন্দ করে। জ্বীনদের খাবার হল শুকনা হাড় ও গোবর।

তবে সহীহ হাদীসে শুকনা হাড় ও গোবর দ্বারা এস্তেঞ্জা করতে নিষেধ করা আছে। হাদিসে বলা হয়েছে এ দুটা হল জ্বীনদের খাবার। জ্বীন দের সাথে মানুষের বিয়ে হওয়া সম্ভব। তবে জ্বীনদের সাথে মানুষের বিয়ে হালাল না হারাম এ নিয়ে আলেমদের মাঝে মতবিরোধ আছে। তবে বেশিরভাগ আলেমদের মতে জ্বীন বিয়ে করা মাকরুহ। অনেক অন্ধ বুজুর্গ জ্বীন মেয়েকে বিয়ে করেছেন যেন সফরে ঐ বুজুর্গের হাটা চলায় সুবিধা হয়। তবে জ্বীনরা যদি চায় তাইলেই মানুষ জ্বিনদেরকে দেখতে পারে। জ্বীন দের সাথে মানুষের উটাবসা, বিয়ে এটা পুরাটাই জ্বীনদের ইচ্ছা। মানুষের মাঝে যেমন বিভিন্ন ফেরকা, মাযহাব আছে ঠিক তেমনি জ্বীন দের মাঝেও বিভিন্ন দল মত আছে।

রোদের আব্বুঃ আচ্ছা হুজুর তাহলে জ্বিন কোথায় থাকে! আর কাদের উপরে ভর করে বেশি এটা বললে অনেক উপকার হতো…!!

হুজুরঃজ্বিনরা মেয়েদের উপর ভর করে আর পরীরা ছেলেদের উপর!পরীরাও যে ছেলে সুন্দর তাদের সাথে সঙ্গমে লিপ্ত হয়!আর পরীরা সেই সঙ্গগের মাধ্যমে গর্ভবতীও হয়! ভালো জ্বিনরা থাকে মসজিদে
আর খারাপ জ্বিনরা বেশির ভাগ থাকে…

১. আয়নাতে____!!
ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা আয়না দেখতে খুব বেশিই পছন্দ করে!তবে যেসব মেয়েরা আয়নার সামনে ড্রেস বদলায়,ওড়না ছাড়া বার বার আয়নার সামনে গিয়ে শরীরের ভাজ দেখে!বার বার আয়নার দিকে তাকিয়ে মুখের বিভিন্ন ধরনে অঙ্গ ভঙ্গি করে।আরশি জ্বিন সেই মেয়েদের উপর ভর করে বেশি! এজন্য আয়না দেখার সময় সূরা পড়ে নিতে হয়।

২.ওয়াশরুমে ____!!
খারাপ জ্বিনদের আরেকটা থাকার স্থান হলো ওয়াশরুম!কারন খারাপ জ্বিনরা নাপাক, দুর্গন্ধ স্থান তাদের খুব পছন্দের জায়গা!ওয়াশরুমে ঘন্টার পর ঘন্টা অকারণে থাকা মানুষ গুলো জ্বিনের খপ্পরে পড়ে বেশি!কেউ কেউ আছে ওয়াশরুমে গেলে ফোন নিয়ে ঘন্টার ঘন্টা কাটিয়ে দেয়।আর ফোন হাতে থাকার ফলে শয়তানের আর খারাপ জ্বিনের উৎসাহে মাষ্টারবেট এর মত কাজ গুলোর প্রতি মনোনিবেশ করে থাকে বেশি…!এক ভুল বার বার করে থাকে আর মনে মনে ভাবে এটাই লাস্ট..!! কিন্তু শয়তান আর খারাপ জ্বিন তার পেছনেই পড়ে থাকে! যতক্ষণ না সেইম ভুল মনোবাসনা নিয়ে আবার মাষ্টারবেট এর মত কাজগুলো না করে ।

৩.নাপাক ব্যাক্তি_____!!
জ্বিনরা নাপাক ব্যাক্তিকে পছন্দ করে বেশি!বিশেষ করে গোসল ফরয হওয়া সত্ত্বেও যারা দীর্ঘ সময় কাটিয়ে দেয়! তাদের উপর জ্বিন মারাত্মক ভাবে ভর করে….!!ফরজ গোসলটা শুধু বিবাহতদের উপরেই ইঙ্গিত করে না! স্বপ্নদোষের পরে গোসল দেওয়াটাও ফরজ গোসলের মধ্যেই পড়ে।

৪.নোংরা মস্তিষ্কের মানুষ ____!!
সারাক্ষণ যৌনতা চিন্তা করা!এ ধরনের মুভি ভিত্তিক বা অশ্লীল বই অথবা ছবি দেখা।সব সময় যাদের মস্তিষ্কে এসব নোংরা ধারণা নিয়ে ঘুরে বেড়ায়! সেসব লোকদের জ্বিন অতি সহজে আক্রমন করে।

৫.নাস্তিকদের_____!!
যারা আল্লাহকে ভুলে যায়!দিনে দুই এক বারও যারা আল্লাহকে স্মরণ করে না!যাদের বাসায় কুরআনের বাণী বা তেলাওয়াত করে না।বা যারা বাড়িতে কুরআনের বাণী অযথা কুরআন রাখেনা। এসব জায়গাতে জ্বিন অতি সহজে যেখানে আক্রমন করে।

৬.আর একটা জরুরি কথা যেটা প্রতিটা মেয়ের জানা উচিত_____!!
মেয়েদের পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে নিজেকে একটু সচেতন রাখা।কারন পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে জ্বিন, বদনজর,জাদুটোনার প্রভাব বেশি পড়ে।মেয়েদের উচিত পিরিয়ড ভালো হওয়ার পর পরই নিজেকে যথা শীঘ্রই পবিএ করে নেওয়া! কারন আমি আগেই বলেছি জ্বিন অপবিত্র নোংরা শরীর জ্বিন খুব পছন্দ করে।আর আলোর মত যাদের চুল অনেক বড় সেসব মেয়েদের চুল ছেড়ে যেখানে সেখানে যাওয়া উচিত না বিশেষ করে ভর দুপুরে চুল ছেড়ে উঠানে দাঁড়ানো, ছাদে যাওয়া,সন্ধ্যায় পর চুল ছেড়ে বাসায় বের হওয়া।আর পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে নিমগাছ,তেঁতুলগাছ, ফাঁকা ছাদ বা নির্জন জায়গা গুলো কিছুদিনের জন্য এড়িয়ে চলা…!!

উপস্থিত সবাই খুব মনোযোগ দিয়ে হুজুরের কথা শুনলো!হুজুরের বলা কথাগুলোর রোদ খুব মনোযোগ দিয়ে শুনেছে!বাবা মায়ের সামনে একটু লজ্জা পেলেও জানার আগ্রহটা রোদ নিজের মধ্যে
দমিয়ে রাখতে পারেনি!কারন কোন বিষয়ে জানতে বা জানাতে না দেওয়াটা বোকার কাজ। আর বুদ্ধিমানের কাজ সব শুনে বা জেনে রাখা! যাতে পরবর্তী কোন সময় কোন কাজে এই জানাটাকেই কাজে লাগতে পারে। হুজুর সবার উদ্দেশ্য করে বললো…!!

হুজুরঃ আমি মনে করি আলোর বিয়ে দিয়ে দেওয়া।দুষ্টু প্রকৃতির জ্বিনের খপ্পরে যে আর পড়বে না এটার গ্যারান্টি তো আমি দিতে পারবো না।বিয়ে যখন ঠিক আছে! তাহলে এখন ওর বিয়েটা দিয়ে দেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

রোদের আম্মুঃ তাহলে আপনি নিজে শুভ কাজটা সম্পূর্ন করে তারপর যান।আমি আলোকে নিয়ে আর কোন রিস্ক নিতে চাই না।

রোদঃ আম্মু তুমি আ

রোদের আব্বুঃপ্লিজ আর কথা বলো না রোদ আব্বু! এটাই ফাইনাল..!!

মেঘ দৌড়ে এসে বললো আলো নাকি ঘুম থেকে উঠেছে!রোদের আম্মু মেঘকে ডাকে কাছে। আর ইশারায় রোদকে বলে মেঘকে কিছু বলতে!রোদ মেঘের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলে।

রোদঃ মেঘবাবু তোমাকে একটা কথা বলা হয়নি..!
মেঘঃ কি কথা দাভাই?

রোদঃ আজকে যা যা হলো তুমি যা কিছু শুনেছো বা দেখছো! সেসব একটা কথাও কোনদিন আর কাউকে বলবেনা।এমনি তোমার বউমনিকেও না!যদি বলো তাহলে তোমার বউমনি আমাদের ছেড়ে অনেক দূরে চলে যাবে..!!

মেঘঃ আমি যদি কাউকে বলি তাহলে কি বউমনি আকাশের তারা হয়ে যাবে দাভাই (জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে)

রোদঃহুমম

মেঘঃওকে!আমি প্রমিস করছি আমি কোনদিনও এসব কথা কাউকে বলবো না। আমি কিছুতেই আমার বউমনিকে আকাশের তারা হতে দিবো না…(ছলছল চোখে তাকিয়ে)

রোদ মুচকি হেসে মেঘকে বুকে জড়িয়ে নেই!রোদের আম্মু আলোর রুমে যায়!আলো উঠে বসার চেষ্টা করছে কিন্তু শরীরের ব্যাথায় উঠতে পারছে না।রোদের আম্মু আলোর ধরে উঠে বসায়! আর আলোর দুই হাত ধরে বলে….!!!

To be continue…..!!

(গল্প মানে শুধু বিনোদন নই এখানে শিক্ষা আর সচেতনতারও কিছু থাকে…..!!আর আমাকে খারাপ ভাববেন না প্লিজ! আপনাদের জানানোর জন্যই কিছু কথা আমাকে এভাবে তুলে ধরতে হয়েছে…!!)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here