#প্যারাময়_লাভ❤❤
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_12
রুহিঃ আমার জানা মতে ভালবাসা তো ভালকাজ!তাহলে কি এখন আমার তোমাকে চোরের মত ভালবাসা লাগবে????আমি তো চোর না! আমি তো ডাকাত তাহলে চোরের মত এখন তোমাকে আমি ভালবাসতে যাবো কেন???
মুগ্ধঃ সবকিছু নিয়ে দুষ্টুমি আমার একদম ভালো লাগে না!যা বলছি তাই করবি তা না হলে ঠাটিয়ে এক থাপ্পড়ে সব দাঁত ফেলে দিবো।
রুহিঃ এখনও তুমি আমাকে মারবে!আমি না এখন তোমার জানু (বিশ্বজয় করা হাসি দিয়ে)
মুগ্ধঃএখন তো আরো বেশি মারবো!কোন কথা হবে না কারন তোকে মারের উপর না রাখলে তুই ঠিক হবি না।তোকে সব সময় এজন্য আমি মারের উপরেই রাখবো..
রুহিঃ আচ্ছা যত খুশি মারো বাট পরে আদর করে দিও তাহলেই হবে।দেখি এখন হাত সরাও আমি এখন তোমার বুকে শান্তির একটা ঘুম দিবো। নো নড়ন চড়ন নো ডাকাডাকি,,,, অনলি ঘুম আর ঘুম।
মুগ্ধঃরুহি এখন তো দিনের বেলা সবাই দেখতে পাবে! এখন বুকে মাথা দিয়ে ঘুমালে সবার খারাপ ভাববে।তুই আমার কাঁধে মাথা রেখে ঘুমা কেমন।বাসায় গিয়ে তোকে বুকে নিয়ে ঘুমাবো।
রুহিঃ সত্যি তো!!
মুগ্ধঃহুমমম
–
তারপর রুহি ঘুমিয়ে গেল!মুগ্ধও কিছু একটা ভাবতে ভাবতে সিটে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে গেল।তারপর অনেক লং জার্নি শেষ করে ওরা বাসায় ফিরলো!মুগ্ধ রুহিকে ওর বাসায় যেতে বলে নিজেও ওর বাসায় চলে গেল।মুগ্ধর আম্মু মুগ্ধকে জিজ্ঞেস করলো এত তারাতারি চলে আসলো কেন??মুগ্ধ বললো ওর অফিসে নাকি ওকে দরকার তাই ইমিডিয়েট ওকে জয়েন্ট করতে বলছে….
–
পরেরদিন সকালে…
আবার সেই প্রানবন্ত রুহি হয়ে গেছে!সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে বারান্দায় গিয়ে আড়মোড়া ভেঙে সামনে তাকাতেই দেখলো মুগ্ধ ওর বারান্দায় লাগানো ফুলের গাছগুলোতে পানি দিচ্ছে! মুগ্ধ দেখছে যে রুহি বারান্দায় তারপরেও না দেখার ভান করে গাছে পানি দিয়েই যাচ্ছে। রুহি অনেক ইশারা করলো বাট মুগ্ধ ওর দিকে একবারো তাকায় নি…বরং তারাতারি করে গাছে পানি দিয়ে ওর রুমে চলে যায়।
–
রুহি ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট করতে ডায়নিং টেবিলে বসে!রুহি খাবার খাচ্ছে আর হুট করে ওর বাবাকে বলে উঠলো..
রুহিঃবাপি একটা কথা বলার ছিলো??
বাপিঃহুমম মামনি বলো!!!তোমার কিছু লাগবে??
রুহিঃনা বাপি আমার কিছু লাগবে না!বাট…
বাপিঃহুমমম বাট কি???
রুহিঃআজকে থেকে আমি পড়াশোনাতে মনোযোগ হবো!ইনশাআল্লাহ ভাল রেজাল্টও করবো।তারপরে আমি যা চাইবো আমাকে কিন্তু তাই দিতে হবে।
বাপিঃহুমম কি চাই বলো??তুমি যা চাও আমি তোমাকে তাই দিবো।
রুহিঃআমার যাকে পছন্দ হবে আমি তোমাকে জানাবো!আর তুমি তাকেই আমার সাথে বিয়ে দিবে।যদি রাজি থাকো তো ১ চাপো!আর রাজি না থাকো তো বলে দাও আজকে থেকে এমন গুন্ডামি শুরু
করবো মিনিটে মিনিটে তোমার কাছে রিপোর্টে আসবে।(খেতে খেতে)
আম্মুঃআমি আসলেই রত্নগর্ভা রে মা!কারন কোন মেয়ে যে তার বাবার সাথে এমন ডিল রাখতে পারে আমার তো জানাছিলো না।কি কপাল আমার!এটাও দেখার বাকি ছিলো!!!!
রুহিঃ আম্মু এটা ডিজিটাল যুগ!বিয়ে করবো আমি,সংসার করবো আমি। তাহলে কাকে বিয়ে করবো এই ডিসিশন টাও তো আমাকে ঠিক করতে হবে তাই না।যাই হোক আগে ভদ্র মেয়ে হয়ে দেখায় তারপর না হয় সেসব পরে ভাবা যাবে।আমি উঠলাম বাপি! আমার আবার কলেজে যেতে হবে….
বাপিঃতারমানে আমার মেয়ের মনে কেউ আছে!কেউ আমার মামনির মন চুরি করছে!কে সেই রাজকুমার আমি কি জানতে পারি??
রুহিঃহুমম ওই আর কি!!!আর সময় হলে আমি তোমাদের নিজেই সবকিছু জানাবো।(মাথা চুলকে দৌড়ে চলে যায়)
আম্মুঃসেই হতভাগা কে?? কে নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারছে সেই হতভাগাকে আমার দেখতে খুব ইচ্ছে করছে।এভাবে নিজের বিপদ নিজে কেউ ডেকে নেয়..
বাপিঃএভাবে বলো কেন??আমার মেয়ে কোনদিন থেকে কম শুনি.???
আম্মুঃতোমার মেয়ে সব দিকে থেকেই কম বাট দুষ্টুমিতে শুধু পিএইচডি করা।
বাপিঃ এখন ছোট মানুষ বড় হলে ঠিক হয়ে যাবে!এসব নিয়ে চিন্তা করো না।
আম্মুঃহুমম আর বড় হতে হতে তোমার মেয়ে, আমাদের সহ সেই হতভাগার জীবন ন্যাতান্যাতা করে দিবে।
বাপিঃ আরে না!রুহি এত দুষ্টুমি করলে আমার বিশ্বাস রুহি তার লাইফ পাটনার চুজ করতে ভুল করবে না।
আম্মুঃওই আশাতে বসো থাকো! একটা সময় দেখবে কোন বখাটে নেশাখোর কাউকে না এনে বলে একেই আমি বিয়ে করবো।
বাপিঃ আমার মেয়ে দুষ্টু হতে পারে বাট তার চয়েজ একটা নিম্নমানের হবে না।
–
তারপর রুহি কলেজে চলে যায়!আর আজকে সব ক্লাস গুলো করে আর খুব মনোযোগ দিয়ে!ইরা,আর সুমিকেও বলছে আজকে থেকে কলেজ মিস করবে না।এর মধ্যে একটা গুড নিউজ যে ইরা আর রাহাত সত্যি সত্যি রিলেশনে জড়িয়েছে!সত্যি বলতে রাহাত ইরাকে খুব পছন্দ করতো!আর সুমি তো আরিয়ানের সাথে রিলেশন আছে।রুহি রাহাত আর আরিয়ানকে বলে ট্রিট দিতে তারপর রুহি বাসায় এসে সাওয়ার নিয়ে বসে বসে মুগ্ধ দেওয়া পড়াগুলো রেডি করে।তারপর মুগ্ধকে ফোন করে! তিন বারের বেলায় মুগ্ধ ফোন ধরে বলে…
মুগ্ধঃকি রে এই সময় ফোন দিলি কেন??কোন সমস্যা??
রুহিঃ না কোন সমস্যা না!তুমি কি দুপুরে খেয়েছো??
মুগ্ধঃনা একটু পর খাবো!ওয়েট ওয়েট আসল কাহিনী কি বলতো??
রুহিঃ ইয়ে মানে আমার খুব বিরিয়ানী খেতে ইচ্ছে করছে!আসার সময় আনবে প্লিজ
মুগ্ধঃওহহ তাই তো বলি আজকে সূর্য কোনদিকে উঠছে।আর মনে থাকলে আনবো..একটু বিজি আছি এখন।বাই
রুহিঃহুমম বাই
–
তারপর রুহি মুচকি হেসে ফোন কেটে দেয়!তারপর দুপুরে লাঞ্চ সেরে একটু ঘুমিয়ে নেয়!৫টার দিকে রুহি ঘুম থেকে উঠে ওদের বাগানে একটু হাটাহাটি করে।এই ফাকে মুগ্ধ দের বাসার ছাদে উঠে করমচা চুরি করে সব সাবাড় করে দিসে।কেউ টেরও পায় নি। তারপর ওর রুমের ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে ঘুরে ঘুরে নিজেকে বার বার দেখতে থাকে!আয়নার দিকে তাকিয়ে মনে মনে ভাবছে…
রুহিঃ এখন থেকে আমার নিজের প্রতি যত্ন নিতে হবে!আমি দেখতে খারাপ হয়ে গেলে মুগ্ধ যদি আমাকে আর ভালো না বাসে।না না কালকে থেকে নিজের যত্ন নেওয়া আমি শুরু করবো।বাট কি করলে সুন্দর হবো???ধুর ছাতা কিছু মাথায় আসছে না… (চিন্তিত হয়ে)
–
মুগ্ধ অফিস থেকে ফিরে সাওয়ার নিয়ে কেবল বসেছে!ঠিক তখনই রুহি মুগ্ধর রুমে তিরিং বিরিং করে নাচতে নাচতে আসে আর দুম করে মুগ্ধর কোলে বসে পড়ে!মুগ্ধ চোখ বড় বড় করে রুহির দিকে তাকিয়ে থাকে।মুগ্ধর এভাবে তাকিয়ে থাকা দেখে রুহি মুগ্ধ গালে কিস করে বসে!মুগ্ধ তারাতারি করে রুহিকে ওর কোল থেকে নামাতে যায়!তখন রুহি মুগ্ধর গলা জড়িয়ে ধরে থাকে।
–
মুগ্ধঃ রুহি নাম বলছি!হুট করে কেউ চলে আসবে তো
রুহিঃআসুক তাতে আমার কি??দেখলে ধরে বিয়ে দিয়ে দিবে ভালোই তো হবে।
মুগ্ধঃ এমন করলে আমি তোকে আর পড়াবো না বলে দিলাম।(দাঁতে দাঁত চেপে)
রুহিঃ তুমি আসলেই একটা করলার রস!আন রোমান্টিক ছেলে একটা….
মুগ্ধঃআজকে যা করলি এমন ভুল যেন আর না হয়!যদি তো খুব খারাপ হয়ে যাবে।আমার ভালবাসার যেমন পবিএ!তেমনি ভালবাসার মানুষটাকেও আমি পবিএ রাখতে চাই।বিয়ের আগে এসব যাতে আর না দেখি…মাইন্ড ইট।
রুহিঃ আমি মেয়ে ভয় পাইনা আর তুমি ছেলে হয়ে এত ভয় পাও কেন বলো তো???
মুগ্ধঃ সেটা যদি বুঝতি তাহলে গাধীর মত এই কথাটা বলতি না।
রুহিঃ শোন এত ভয় পেও না আমি আছি তো!তোমার বাবা মা যদি আমার সাথে বিয়ে না দেয় তো দরকার পড়লো তোমাকে তুলে নিয়ে যাবো তারপরেও তুমি ভয়ে পেও না।
মুগ্ধঃ হুমমম তোকে আমি আর পড়াবো না।তুই যা আর কালকে থেকে আর পড়তে আসার দরকার নাই।
রুহিঃ এই না না! আমি তো ফান করছিলাম।আর বকবক করবো না।
মুগ্ধঃআর হাজিবাজি দুষ্টু বুদ্ধি মাথা থেকে ঝেড়ে ফেল! কারন কেউ যদি দেখে তো আমাদের নিয়ে কটু কথা বলবে! আর আমি ছেলে আমার কিছু না হলেও বাট তোর গায়ে বদনাম নামক কালিটা এসে লাগবে।এজন্য বলছি দুষ্টুমির মাঝে এমন কিছু করিস না! যেটা করলে আমার তোকে হারিয়ে ফেলার ভয় থাকে…
–
মুগ্ধর চিন্তা ভাবনা রুহিকে বার বার মুগ্ধ করে!আজকেও তার ব্যাতিক্রম হয়নি।রুহিও মুগ্ধ কথা মেনে নিয়েছে। তারপর রুহি সুন্দর করে বসে পড়তে শুরু করে!একটা পড়া মুগ্ধ রুহিকে খুব সুন্দর করে পড়া বুঝাতে থাকে বাট রুহির কিছু বুঝতে পারছে না।
মুগ্ধ বার বার বোঝানোর পরেও রুহির মাথায় পড়াটা ঢুকছে না! মুগ্ধ ঠাস্ করা একটা থাপ্পড় দিয়ে বলে।
মুগ্ধঃআমার দিকে হা করে না তাকিয়ে থেকে যা বোঝাচ্ছি সেটা বোঝার চেষ্টা কর।(দাঁতে দাঁত চেপে)
–
রুহি মার খাওয়ার পর গালে হাত দিয়ে এবার সত্যি সত্যি পড়াতে মনোযোগ দিলো আর বুজেও গেল!মুগ্ধর থাপ্পড় রুহির কাছে সব সময় মেডিসিনের মত কাজ করে।এজন্য মার খাওয়ার পর সব বুঝে গেছে।
এর মধ্যে মুগ্ধর আম্মু দুজনের জন্য বিরিয়ানী নিয়ে আসে!মুগ্ধর আম্মু রুমে এসে দেখছে রুহি লক্ষী মেয়ের মত পড়ছে! আর মুগ্ধ ওর অফিসের কাজ করছে।মুগ্ধর আম্মু চলে যাওয়ার পর! রুহি মুগ্ধর দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো…
–
রুহিঃ জড়িয়ে ধরার আবদার করলাম না,আদর করার আবদারও করলাম না,কিন্তু যাকে ভালবাসি তার হাতে খেতে চাওয়ার আবদার টাতো করতেই পারি তাই না…
মাঝে মাঝে রুহির যুক্তির কাছে মুগ্ধও হেরে যায়!আর এখনও তাই হয়েছে এজন্য মুগ্ধ আর কোন কথা বলেনা! মুগ্ধ রুহিকে খাওয়াতে থাকে আর রুহি তৃপ্তি সহকারে খাচেছ আর লিখছে….
To be continue….
(আজকে যদি মনমত রেসপন্স পায় তো সন্ধ্যায় আগের পার্ট দিবো….😊😊😊)