#প্যারাময়_লাভ❤❤
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_19
রুহি ওর আম্মু সাথে গল্প করে ওর রুমে চলে আসে!তারপর রুমের দরজাটা ভালো করে লক করে দেয়।রুহি ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে আয়নাতে নিজেকে দেখে!তারপর লজ্জা পেয়ে মুখটা দুইহাত দিয়ে ঢেকে নেয়!আজকে সকালে কথা ভেবে রুহি আরো লজ্জায় লাল হয়ে যায়!রুহি সকালে এতকিছু ভেবে কিস করে নি বাট মুগ্ধ যে এমন কি করবে সেটা রুহিও কল্পনা করে না।তখন মুগ্ধকে কিছু বলতে না পারলেও মনে মনে লজ্জা পাচ্ছিলো।রুহি মুখ থেকে হাত সরিয়ে দেওয়াল ঘড়ির দিকে তাকায়।
–
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে ৩ঃ৫৮ বাজে!রুহি মুগ্ধকে ফোন দিলো।মুগ্ধ তখন চেয়ারে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে ছিলো!ফোনের রিংটোনে মুগ্ধ ফোনটা হাতে নিয়ে দেখে গুন্ডী বউ এর ফোন!মুগ্ধ রুহির নাম্বার আগে প্যারা নামে সেইভ করেছিলো! বাট কালকে রাতে #প্যারাময়_লাভ নামে সেইভ করছে!মুগ্ধর মুখে দুষ্টু হাসি নিয়ে কলটা রিসিভ করে বলে…
–
মুগ্ধঃ কি ম্যম আপনার কি বিরিয়ানী খেতে ইচ্ছে করছে???আমি কি বিরিয়ানী নিয়ে আসবো…
ৃ.
রুহিঃ তুমি আবার শুরু করলে! ধুর…
মুগ্ধঃহা হা হা! আচ্ছা বল কি মনে করে ফোন দিলি??বিরিয়ানী খেতে চাইলে বল আসার সময় নিয়ে আসবো।
রুহিঃ না লাগবে না!যেই বিরিয়ানী খাইয়েছো ভুলেও আর বিরিয়ানী নাম ভুলেও নিবো না।
মুগ্ধঃহা হা হা!কেন!!!
রুহিঃবাদ দাও না!একটা কথা বলার জন্য ফোন দিসি সেটা কি বলতে দিবে????
মুগ্ধঃহুমমম বল
রুহিঃনিউ মার্কেটের সামনে যেই পার্লারটা আছে না!আমি ওখানেই থাকবো তুমি ফিরার সময় আমাকে নিয়ে এসো…
মুগ্ধঃওয়েট! ওয়েট!তুই পার্লার কেন যাবি??এই মেয়েদের একটা সমস্যা বিয়ের ডেট ঠিক হতে না হতেই পার্লারের দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দেয়।
রুহিঃতুমি কি জানো? শুধু আমি না! তুমিও একটু বেশি বুঝো!!
মুগ্ধঃথাটিয়ে একটা থাপ্পড় মারবো তখন বুববি!আর শোন পার্লারে গিয়ে চুল কাটবি না,ভ্রু প্লাগ করবি না,হাজিবাজি দিবি না ঠান্ডা লাগে।
রুহিঃ হ কিছু করবো না!শুধু অফিস থেকে ফেরার সময় আমাকে নিয়ে এসো!আমি ওখানে তোমার জন্য ওয়েট করবো।
মুগ্ধঃহুমম!বাই
রুহিঃআলাভু
–
মুগ্ধ কিছু বলার আগেই রুহি ফোন কেটে দেয়!মুগ্ধ মুচকি হাসি দিয়ে ওর কাজ শুরু করে।রুহি আয়নার সামনে দাড়িয়ে দাড়িয়ে চুলে চিরুনী করছে! আর হাসছে!কারন মুগ্ধ চুল কেটে ছোট করা একদম পছন্দ করে না! ক্লাস নাইনে থাকতে একবার রুহি পার্লার থেকে চুল কেটে এসেছিলো! সেদিন মুগ্ধ উরাধুরা মেরেছিলো!রুহি চুল কোমর পর্যন্ত যেমন কালো তেমনি ঘন!এজন্য মুগ্ধ বাইরে বের হলো রুহিকে চুল ছেড়ে বের হতে দেয় না!কারন চুল ছেড়ে রাখতে রুহি অসম্ভব সুন্দর দেখায়।
–
রুহি রেডি হয়ে ওর আম্মু নে বলে চলে গেল!রুহি নিজের গাড়িও নেয় নি স্কুটিও নেয় নি অটোরিকশাতে যাচ্ছে। রুহি কিছু একটা ভাবছে আর হাসছে!রুহি মনে মনে ভাবছে যে…
রুহিঃ মুগ্ধ তো দুষ্ট ছিলো না!কালকে বিয়ের পর থেকে এত লাগামছাড়া হলো কি করে??তাহলে কি বিয়ের পর ছেলেরা বেশি দুষ্টু হয়ে যায়।ধুরর!কি ভাবছি আমি!আমাকে লজ্জা দেওয়ার জন্য মনে হয় এমন করে…(মনে মনে)
–
এসব ভাবতে ভাবতে রুহি পার্লার চলে যায়!তারপর ঢুকে দেখে বেশ কয়েকজন আছে!রুহি সোফাতে বসে বসে ম্যাগাজিন পড়ছিলো।৩০মিঃ পর সবাই চলে যায়।মুগ্ধ পার্লারের সামনে এসে রুহিকে ফোন দেয়।রুহি মুগ্ধকে পার্লারের ভেতরে আসতে বলে!মুগ্ধ নক করে পার্লার ঢুকে দেখে রুহি বসে আছে!রুহি মুগ্ধকে ওর পাশে বসতে
বলে…রুহি মুগ্ধ ফিসফিস করে বলে…
রুহিঃসব দিকে তাকাবে বাট বাম দ
রুহি কথা শেষ না করার মুগ্ধ ফট করে বাম দিকেই তাকায়!তারপর রুহির দিকে তাকিয়ে দেখে রুহি রাগে নাক ফুলিয়ে ওর দিকেই তাকিয়ে আছে।মুগ্ধ মাথা চুলকে মাথা নিচু করে ফেলে।মুগ্ধ রুহিকে ফিসফিস করে বলছে…
মুগ্ধঃএটা জায়গাটা শুধু মেয়েদের জন্য! তাহলে আমাকে আসতে বললি কেন??আর এরা এলাও বা করলো কেন??
রুহিঃ এটা আমার পরিচয় আপুর পার্লার! তোমাকে বাম দিকে তাকাতে না করলাম বাট তুমি দুম করেই বাম দিকেই তাকালে কেন???(দাঁতে দাঁতে চেপে)
মুগ্ধঃআমি জানবো কি করে ওখানে শট টপ এভাবে সাজিয়ে রাখা আছে!
রুহিঃমনে চাচ্ছে ওই শট টপটাই তোমাকে পড়িয়ে বসিয়ে রাখি।অসভ্য ছেলে…
মুগ্ধঃছিঃ!এসব কি বলিস! তুই থাক আমি গেলাম।নিজে ডেকে এখন নিজেই আমাকে কথা শুনাচ্ছিস!
–
পার্লার মেয়েটা আইস আনার জন্য রুহিকে বসিয়ে একটু বাইরে গিয়েছিলো।মেয়েটা এসে রুহিকে সামনে বসতে বললো!রুহি সামনে একটা বড় আয়নার সামনের চেয়ারে বসে পড়লো!মুগ্ধ ফেসবুকিং করছিলো হঠাৎ রুহি দিকে তাকাতেই দেখে ওই মেয়েটা রুহির নাকের উপর আইস ঘষছে!মুগ্ধ ফট করে উঠে দাড়ালো আর রুহির ডানপাশে গিয়ে বললো…
–
মুগ্ধঃএটা আবার কেমন রুপচর্চা!আইস এভাবে ঘষলে ঠান্ডা লেগে যাবে তো।
মেয়েটিঃ এই তো হয়ে গেছে ভাইয়া!আর একটু…
–
মুগ্ধ ভ্রু কুচকে দাড়িয়েছে মেয়েটির কাজকর্ম দেখছে!মুগ্ধ বুঝলো রুহি এখানে নাক ফুটা করার জন্য এসেছে!মুগ্ধ রুহি না করতে তাও রুহি শোনে না কথা।
মেয়েটি পিস্তলের মত একটা জিনিস নিয়ে!রুহিকে কালকে কিনে দেওয়া নোজপিন টা ওটার সাথে সেট করলো তারপর কলম দিলে নাকে একটা ফোটা দিলো!আর সেই মেশিনটা নিয়ে ফট করে রুহির নাকে চেপে ধরলো।রুহি আগেই মুগ্ধর হাত চেপে ধরছিলো!মেয়েটি ওটা চাপ দিতেই খট করে শব্দ হলো আর রুহি একটা চিৎকুর দিয়ে উঠলো…
–
রুহির চোখ দিয়ে ঝরঝর করে পানি পড়ছে!মুগ্ধ রুহিকে দেখে সাথে ওর দিকে চেয়ার ঘুরিয়ে!
মুগ্ধঃবেশি ব্যাথা পেয়েছিস?লাগছে বেশি?তোকে কে বলছে এসব করতে???(উওেজিত হয়ে)
রুহিঃআমি ঠিক আছি! তুমি শান্ত হও..
মুগ্ধঃদেখতেও পাচ্ছি কত ঠিক আছিস!মন চাচ্ছে থাটিয়ে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দেয় তোর গালে।সব সময় নিজে যা বুঝবে তাই করবে(চোখের পানি মুছে দিয়ে)
রুহিঃ বিয়ে করলে নাকে নাকফুল দিতে হয়!এজন্য..
মুগ্ধঃরুহি তুই গাড়িতে গিয়ে বস আমি আসছি..
রুহিঃউনার বিল টা দিয়ে যায়..
মুগ্ধঃআমি দিচ্ছি তুই যা
রুহিঃহুমম
–
রুহি ওর ব্যাগটা নিয়ে চলে গেল!মুগ্ধ ডোক গিলে মেয়েটার দিকে উদেশ্য করে বলে।
মুগ্ধঃওর তো এখন ব্যাথা করবে,এখান থেকে ইনজেকশন, বা জর আসবে না তো।
মেয়েটিঃনা না সেরকম কিছু হবে না!বেশি ব্যাথা করলে একটা ব্যাথার মেডিসিন বা সরিষার তেল গরম করে দিলেও ব্যাথা কমে যাবে।
মুগ্ধঃআর কিছু…
মেয়েটিঃনা! গরম তেল দিলেই ব্যাথা কমে যাবে..
–
তারপর মুগ্ধ উনার বিল দিয়ে বেরিয়ে আসে!রুহি সব শুনছিলো।মুগ্ধ আসার শব্দ পেয়ে দৌড় গাড়ির কাছে চলে যায়।মুগ্ধ গাড়ি স্টাট দিয়ে মেডিসিনের দোকানে গিয়ে ব্যাথার মেডিসিন আর কালকে সিগারেটের ছ্যাকা খাওয়ার দাগটা যেন চলে যায় তার জন্য মলম কিনে নিল।মুগ্ধ ড্রাইভ করতে করতে বললো….
–
মুগ্ধঃএটা করার কি খুব দরকার ছিলো!আমি ভেবেছিলাম তুই কালকের নোজপিন টা শখে নিয়েছিস।
রুহিঃ না এটা রেখে দেওয়ার জন্য তোমাকে কিনে দিতে বলিনি..
মুগ্ধঃ এমন কোন হাদীস নেই যে বিয়ে হলেই,হাতে চুরি,নোজপিন দিতে হবে,এসব নিয়ম তৈরী করছে আমাদের সমাজ।তুই তো জানিস হাজবেন্ডের চিহ্ন হিসেবে আই মিন নোজপিন বা চুড়ি পরা হারাম।সাজসজ্জবার জন্য অন্য কথা।
রুহিঃতুমি পছন্দ করে ভালবেসে কিনে দিয়েছো তাই নোজপিনটা ইউজ করবো।
মুগ্ধঃ শুধু শুধু কষ্ট পাচ্ছিস এখন?আমি আগে জানলে এটা করতে দিতাম না।কারন কোথাও লিখা নাই যে মেয়েদের নোজপিন পড়তেই হবে…
রুহিঃছেলেরা এখন চুরি দুল পড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে আর আমি তো মেয়ে…
মুগ্ধঃশোন বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে টাওয়াল দিয়ে আস্তে মুখ মুছবি তা না হলে ব্যাথা পাবি!আর দেখিস চুলের সাথে আবার টান না লাগে।আর বাসায় গিয়ে মেডিসিন দিলাম ওটা খেয়ে নিবি!সিভিটও আছে মেডিসিনের সাথে একটা করে খাবি তাহলে শুকিয়ে যাবে…
রুহিঃ……
মুগ্ধঃএই তুই হাসছিস কেন রে??কারন তো আছেই
রুহিঃ আমি সত্যি খুব লাকি!সামান্য নাম ফুটা করছি তাই এই অবস্থা! এত কেয়ার তাহলে যখন আমার বেবি হবে তখন কি করবে ভাবলেই এখনই আমার টেনশন হচ্ছে….
মুগ্ধঃউমমম ঢং দেখলে বাঁচি না!নিজে এখনো ঘুমানোর সময় এক পা দেয় বাংলাদেশে আর আরেক পা দেয় পাকিস্তানে।মাথার নিচে বালিশ না দিয়ে! বালিশ থাকে মাথার উপরে!আর হাতের কথা নাই বললাম।আর উনি কি না বেবির সপ্ন দেখছে…
–
মুগ্ধ কথা শুনে রুহি মুখ ভেংচি অন্যদিকে তাকিয়ে থাকলো!মুগ্ধ একটা নিরিবিলি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলো তখন!মুগ্ধ একটা ডেবিল হাসি দিয়ে গাড়িটা ব্রেক মারে ফাকা রাস্তাতায়!রুহি মুগ্ধর দিকে ভ্রু কুচকে তাকায়! তখন মুগ্ধ বলে…
–
মুগ্ধঃআমার খুব খুধা লাগছে…
রুহিঃএখানে তো কোন দোকান বা রেস্টুরেন্ট দেখতে পাচ্ছি না!তাহলে এখানে গাড়ি থামালে কেন??(ভ্রু কুচকে)
মুগ্ধঃআমি জানি কোথায় খাবার পাবা যাবে!আর আমার কাছে খাবার থাকতে রেস্টুরেন্ট বা দোকানই বা খুজতে যাবো কেন??
রুহিঃ কি খাবার আছে তোমার কাছে??আমাকেও দাও…
মুগ্ধঃতোরও খুধা লাগছে তাই তো!ওকে এইদিকে আয়…
–
মুগ্ধ রুহির একহাত ধরে টেনে ওর কোলে বসায় আর গাড়ি ভেতরে লাইট টা বন্ধ করে দেয়।রুহি মুগ্ধর মতলব বুঝতে পেরে ছটফট করতে থাকে!মুগ্ধ রুহির কানের নিচে হাত ঢুকিয়ে পরশ আবেশে রুহির ঠোঁটে ঠোঁট রাখে!রুহি মুগ্ধকে সরিয়ে কাঁদো কাঁদো হয় বলছে…
রুহিঃআমি আর খেতে চাইবো না রে!ওরে কেউ আছো রে! আমাকে এই পেটুকের হাত থেকে বাঁচাও রে।আমাকে তা না হলে খ…..
–
মুগ্ধ রুহির চুল ধরে আবার ওর নেশাতে ডুবে যায়!যেই নেশা রুহি নিজে মুগ্ধকে করতে শিখিয়েছি।আর এই মুগ্ধও এমন নেশাতে বার বার নেশাগ্রস্ত হতে রাজি…এটাই পৃথিবীর সব থেকে আহ্লাদি আর আদুরে নেশা।
To be continue….
(দেখছোনি করবার টা!আমি তোমাদের নিয়ে না সত্যি আর পারি না।ওরা রোমাঞ্চ করছে আর তোমরা ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছো!এভাবে কেউ তাকায়! ওরা তো লজ্জা পাবে!মুগ্ধর খুধা লাগছে ওকে খেতে দাও!তোমরা ডিসট্রাব করো না!আর হ্যা সন্ধ্যায় আরেক পার্ট দিবো যদি তোমরা বলো তো…. 😜)