#প্যারাময়_লাভ❤❤
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_2
ইরা আর সুমি মিলে রুহিকে অনেক কষ্টে ঘুম থেকে টেনে তুলে!কারন রুহি ঘুম থেকে তোলা আর যুদ্ধ করা প্রায় সমান।তারপর ব্রেক ফাস্ট করে কলেজের উদেশ্যে তিনজন বেরিয়ে পড়ে।রুহি গাড়ি ড্রাইভ করছিলো! তারপর কিছুদুর গিয়ে গাড়িটা এক সাইডে রেখে একটা দোকানে যায় আর দুই প্যাকেট সিগারেট কিনে ব্যাগে ঢুকিয়ে নেয়!তারপর সেন্টার ফ্রুট নিয়ে মুখে ঢুকিয়ে চিবাতে থাকে।রুহি সেন্টার ফ্রুট ইরা আর সুমিকেও দেয়। তারপর তিনজন কলেজে গিয়ে রাহাতকে চিরুনী তল্লাশি করে খুঁজতে থাকে!পুরো কলেজ রাহাত হন্য হয়ে খুঁজে না পেয়ে!রুহি একটা গাছের নিচে বসে সেন্টার ফ্রুট দিয়ে বেলুনের মত ফুলাতে থাকে….আর রুহীর রাহাতের গুষ্ঠী উদ্ধার করতে থাকে….
–
একটু পর রাহাতকে দেখতে পেয়ে রুহি রাহাতকে ডাক দেয়!রাহাত রুহির ডাক শুনে ওদের কাছে এসে দাড়ায় আর বলে…
রাহাতঃহেই রুহি, সুমি,ইরা কেমন আছো?
রুহিঃহুমমম আমরা ভালো আছি!আপনি কেমন আছেন ভাইয়া??
রাহাতঃআমিও ভালো আছি
রুহিঃহুমম ওটা আর থাকবেন না।(আস্তে করে)
রাহাতঃ কিছু বললে
রুহিঃ না তো।ভাইয়া একটা কাজ করে দিবেন। প্লিজ
রাহাতঃহুমম বলো।
রুহিঃইরা আপনাকে ভালবাসে। আজকে থেকে আপনিও ওকে ভালবাসবেন।এখন আপনিও রাজি হয়ে যান! না শব্দ করবেন না! যদি বেশি বকবক করেন তো একটু আগে যে আপনি শিমুল গাছের নিচে হিসু করছেন! ওটার পিক আছে আমার কাছে।এখন সটাসট রাজি হয়ে যান!আর যদি আমার জিজু না হন তো! আপনার সেই পিকটা পোষ্টার বানিয়ে পুরো কলেজে লাগিয়ে দিবো।
রাহাতঃকি????প্লিজ রুহি এমন করো না।আমার ইজ্জতের ফালুদা হয়ে যাবে।আমি না তোমার বড় ভাইয়া হই। (করুন চোখে তাকিয়ে)
রুহিঃ হুমম জানি তো!এই দুষ্টু পিক দিয়ে পোষ্টার বানাবো না। তবে আর একটা একটা কাজ করেন?তার আগে বলেন আমার জিজু হবেন তো…
রাহাতঃহুম হ হ হবো! আরোকটা কি কাজ আগে বলো??
–
রুহি ওর ব্যাগ থেকে দুইটা সিগারেটের প্যাকেট বের করে! তারপর প্যাকেট থেকে সিগারেট গুলো বের করলো। সিগারেট গুলোতে আগুন জালিয়ে ওদের বসার জায়গাতে রাখলো।এরপর রাহাতকে বললো জলন্ত সিগারেটের উপর বসতে!রাহাত চোখ বড় বড় করে ওদের তিনজনের দিকে তাকিয়ে আছে!রাহাত দৌড় দেওয়ার আগেই তিনজন রাহাত সামনে এমন ভাবে দাড়ালো যে পালানোর রাস্তা নাই।রুহি দুষ্টু হেসে বললো…
–
রুহিঃ প্রথমত ইরাকে রিজেক্ট করলে আপনার ওই পিক পুরো কলেজ দেখবে!আর আপনি যদি সিগারেট খাওয়া না ছাড়েন তো এখন আপনাকে এই গুলো জলন্ত সিগারেটের উপর বসতে হবে।এবার বলুন আপনি কি করবেন?আপনি যা বলবেন তাই হবে! আফটার অল আপনি আমাদের সিনিয়র ভাই!(দুষ্টু হেসে)
রাহাতঃহুম! হুম! ছাড়বো! ছাড়বো! বাট এমন করো না তোমরা।আমি এই সিগারেটের উপর আমি বসতে পারবো না।আর সিগারেট তো হুট করে তো ছাড়া যায় না তবে আস্তে আস্তে ছেড়ে দিবো।প্রমিস (করুন সুরে)
রুহিঃওকে! আজকে থেকে আপনি আমার জিজু!কালকে থেকে আপনি আর ইরা চুটিয়ে প্রেম করবেন কেমন। আজকে আমরা বাসায় যায়! একটু কাজ আছে…ভাল থাকবেন জিজু।একদম চাপ নিবেন না।আর এখান থেকে যাওয়ার পর যদি পালটি খান তো আমি নিজ দায়িত্বে আপনাকে ভর্তা করবো।(পায়ের তলায় সিগারেট গুলোকে পিষিয়ে ফেলে)
রাহাতঃহুমমম।হুম!হুম..
–
ইরা তো সেই খুশি!তারপর তিনজন বাসায় ফিরে সাওয়ার নিয়ে রেডি হয়ে নিলো!রুহি কালো জিন্স আর একটা কালো টপস্ পড়লো সাথে একটা কালো কোটি। কালো ওড়না গলায় পেচিয়ে সামনে এনে ঝুলিয়ে রাখলো।তারপর চুল গুলো ছেড়ে দিলো! সুমি আর ইরা জিন্সের সাথে লং কামিজ পড়লো।তারপর তিনজনে একটু সাজুগুজু করে বেরিয়ে পড়লো।
–
রুহিদের বাসা থেকে ওর মামার বাসায় যেতে ১ ঘন্টা লাগে….তিনজন গল্প করতে করতে ওখানে চলে যায়।রুহি গিয়ে সবার সাথে কথা বলে অভিকের সাথে দেখা করে! অভিক তো মনের সুখে দৌড়াদৌড়ি করে বেড়াচ্ছে ও জানে না ওর সাথে কি ঘটতে যাচ্ছে?
–
রুহি গিয়ে অভিককে কোলে তুলে নেয়!তারপর রুহি অভিককে বাগানে নিয়ে গিয়ে বলে।
রুহিঃ এই আজকে নাকি তোর খাৎনা করবে??
অভিকঃহুমম আমার তো সেই খুশি লাগছে।দেখ রুহি আপু! কত মানুষ আমাদের বাসায়।আমি তো খুব মজা করছি… (অনেক খুশি হয়ে)
সুমিঃহুমম যা দৌড়াদৌড়ি করার এখনই করে নাও মনু!একটু পর বুঝবে কত ধানে কত চাল।হা হা হা
রুহিঃএই অভি জানিস খাৎনা মানে কি?
অভিকঃহুমম জানি তো।দাদু বলছে খাৎনা মানে নাচ,গান,খাওয়া-দাওয়া (বিশ্বজয় করা হাসি দিয়ে)
ইরাঃ আরে বোকা খাৎনা মানে তোর ইয়ে কেটে দেওয়ারে গাধা।কেটে দিলে বুঝবি…
রুহিঃখাটি বাংলায় বলে………কাটা।বুঝলি!!!!!
অভিকঃ তাহলে আমার কি হবে?হিসি করবো কি করে?(কেঁদে কেঁদে)
রুহিঃ এই কথা ডাক্তার কে জিজ্ঞাসা করবি?তাহলেই বলে দিবে।ডাক্তার যদি মুসলিম হয় তো তাহলে উনারও খাৎনা করতে হয়েছে…।আর উনিই বলতে পারবে কেমনে হিসি করবি। হা হা হা(গগন ফাটানো হাসি দিয়ে)
অভিকঃ আচ্ছা জিজ্ঞেস করবো? ওহহ রুহি আপু আমাকে বাঁচাও! আমি খাৎনা করবো না (হাউমাউ করে কেঁদে)
ইরাঃ আরে বোকা কাঁদিস না!তুই তো সাহসী ছেলে।
রুহিঃ হুমম কাঁদে না ভাই!একটা জায়গায় ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাক।তাহলেই তো হলো…
–
রুহির কথা শুনে অভিক সত্যি সত্যি একটা ভৌ দৌড় দিলো তারপর লুকিয়ে গেল!গেষ্ট রা খাওয়া-দাওয়া করে ফেলছে!বিকাল ৪ টার দিকে ডাক্তারও চলে এসেছে বাট অভিক কে কোথাও খুঁজে পাচ্ছে না।সবাই খোঁজাখুজি শুরু করছে!রুহি,সুমি আর ইরা যে সব সবার আড়ালে প্যাচ বাধিয়ে বসে আছে। সেটা তো আর কেউ জানে না..ওরা তিনজন মুখ টিপে টিপে হাসছে শুধু। বিকাল ৫ঃ৩০ বাজে ডাক্তার বসে আছে!অভিকের কোন দেখা মিলে নি। অভিককে এখনো খোঁজাখুঁজি কাজ চলছে….বেচারা অভিক খাৎনা করার ভয়ে কোথায় যে ঘাপটি মেরে লুকিয়ে আছে কে জানে????
–
অভিকের বাবা ওদের রুমে ভালো করে খুঁজে দেখে অভিক খাটের নিচে ঘাপটি মেরে বসে আছে।অভিকের বাবা অভিককে টেনে হিছড়ে বের করে ধরে আনে!তারপর ডাক্তার সামনে বসায়। অভিক তো ওর সর্ব শক্তি দিয়ে চিৎকার করে কাঁদছে। হঠাৎ অভিক কান্না থামিয়ে ডাক্তারের দিকে ছলছল করে তাকিয়ে বললো…
–
অভিকঃ ডাক্তার আংকেল আপনি কি মুসলিম??
ডাক্তারঃহুমমম!কেন??
অভিকঃ ওহহহ রুহি আপু তাহলে ডাক্তারেরও কাটা (কথাটা বলে ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে দেয়)
–
রুহিরা ওখান থেকে দৌড়!রুহি ওর আম্মুকে বলে আসে যে বাসায় চলে যাচ্ছে।রুহি ওর গাড়িটা নিয়ে আসে!তারপর সুমি আর ইরাও উঠে বসে গাড়িতে!এখানে আর না থাকাটা বুদ্ধিমানের কাজ না!অভিক যদি সব বলে দেয় তো সাড়ে সর্বনাশ।
–
তারপর গাড়ি স্টাট দেয় আজকেও রুহির আম্মু এখানে থাকবে তাই রুহি চলে যাচ্ছে।রুহি গাড়িতে গান দিয়ে খুব দ্রুত ড্রাইভ করছে!তারপর একটা লেকের পাশে এসে গাড়িটা পার্ক করে!এই জায়গাটা রুহির খুব পছন্দের।
–
রুহির সাথে সুমি আর ইশাও নেমে পড়ে!রুহির লোকের পাশে এসে বসতেই। ওর কানে ভেসে আসে যে কেউ খুব ঝগড়া করছে!রুহি ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে একটা ছেলে আর মেয়ে খুব ঝগড়া করছে।রুহি ধীর পায়ে পেছন থেকে গিয়ে দুইজন মাথা ধরে দুজনের মাথা ঠুয়া মারলো!তারপর সরি সরি বলে কেটে পড়লো…এক প্রকার দৌড়ে ওখান থেকে পালাচ্ছে। আর দৌড়াতে দৌড়াতে রুহি পেছনে ঘুরে দেখে ওরা দুজন ঝগড়া করা বাদ দিয়ে মেয়েটা ছেলেটার কাঁধে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে আছে।মনে হয় ওদের মাথা ঘুরছে তাই……
–
রুহি দৌড়াতে দৌড়াতে ঠাস করে একটা ছেলের সাথে ধাক্কা খায়!ছেলেটা আর কেউ নয় রুহির কাজিন মেজবাউল আহসান মুগ্ধ! রুহি এবার মুখ কাচুমাচু করে উল্টো ঘুরে দৌড় দিতেই মুগ্ধ রুহির হাত ধরে ফেলে আর রাগি চোখে তাকিয়ে বলে…
মুগ্ধঃ এটা তোর বাসার বাগান পেয়েছিস যে এভাবে দৌড়াদৌড়ি করছিস!অসভ্য মেয়ে…আজকে বাসায় চল আজকে তোর একদিন কি আমার একদিন??আজকে তোকে এমন শিক্ষা দিবো জীবনেও ভুলবি না!এত বড় ঢিংগী মেয়ে সারাদিন টোটো করে ঘুরে বেড়াবে……(রুহির হাত ধরে টানতে টানতে)
–
রুহিঃ আর করবো না ভাইয়া!আর দৌড়াবো না এবার থেকে পিলপিল করে হাটবো পিপড়ার মত।এবারের মত আমাকে ছেড়ে দাও! ওরে কেউ বাঁচাও রে! ভাইয়া আমি কিন্তু বড় বাবাকে বলে দিবো তুমি সিগারেট খাও…এটাও বলবো তুমি একটা মেয়ে কিস করছো?তখন তোমাকে বড় বাবা এত এত বকবে!কুওা ভাইয়া আমার হাত ছাড় না! আমার হাত খুলে যাবে তো….এই হুলো বিড়াল ভাইয়া আমি এখন যাবো না !লেজ কাটা বানর আমি যাবো না বাসায়! তুমি হাত ছড়ো…. (হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করে)
মুগ্ধঃঠাস্! আবার এসব ফালতু কথা বলছিস তুই?আজকে আমিও দেখবো আমার হাত থেকে তোকে কে বাঁচায়।যত বড় হচ্ছিস তত বেয়াদব হচ্ছিস তুই…(দাঁতে দাঁত চেপে একটা চড় মেরে )
রুহিঃভ্য ভ্য ভ্য! ইসস্ এত জোরে কেউ মারে। গাল মনে হচ্ছে খাল হয়ে গেলো।আহহ্ মা গো গালটা জলে যাচ্ছে (চিৎকুর দিয়ে কেদে)
To be continue……..