#প্যারাময়_লাভ❤❤
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_20
মুগ্ধ রুহির চুল ধরে আবার ওর নেশাতে ডুবে যায়!যেই নেশা রুহি নিজে মুগ্ধকে করতে শিখিয়েছি।আর আর মুগ্ধও এমন নেশাতে বার বার নেশাগ্রস্ত হতে রাজি…এটাই পৃথিবীর সব থেকে আদুরে নেশা।
–
মুগ্ধ রুহিকে ছেড়ে দেয় আর রুহির চোখে চোখ রাখে!রুহি মুগ্ধর দিকে তাকায়! রুহি মুগ্ধর দিকে নেশাভরা চোখে তাকিয়ে আহ্লাদি সুরে বলে…
রুহিঃ আমি আবার তোমার ঠোঁট খাবো….(আদুরে সুরে)
মুগ্ধঃআমি যদি না দেয়।(দুষ্টু হেসে)
রুহিঃজোর করে খাবো!দাও না আমি এখন ঠোঁট খাবো…
রুহি মুগ্ধর মাথার পেছনে এক হাত দিয়ে মুগ্ধর চুল খামছে ধরে!আর মুগ্ধর ঠোঁটে ঠোঁট রাখে!মুগ্ধ মনে মনে হাসছে।সত্যি বলতে মুগ্ধর হাসির কারন রুহির মত এমন আবদার পৃথিবীতে আর কেউ কখনও কাউকে করছে না কি না মুগ্ধর জানা নেই!মুগ্ধ রেসপন্স করছে না দেখে রুহি মুগ্ধর ঠোঁটে কামড় বসায়!রুহির কামড় খেয়ে তারপর মুগ্ধ রুহির আদুরে নেশাতে বিজি হয়ে পড়ে !৫মিঃ৪৫ সেকেন্ড পর রুহি মুগ্ধকে ছেড়ে দেয়!দুজনেই হাঁপাতে থাকে….
–
রুহি জানালার দিকে তাকিয়ে আছে!মুগ্ধ রুহিকে ওর দিকে ঘুরিয়ে দেখে রুহির ঠোঁটের চারপামে ভেজা ভেজা!মুগ্ধ মুচকি হেসে বৃদ্ধাঙ্গুল দিয়ে রুহির ঠোঁট মুছে দেয়!রুহি লজ্জা পেয়ে দুইহাত দিয়ে ওর দুইহাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলে!মুগ্ধ রুহির দুই হাত সরিয়ে দিয়ে তারপর রুহির কপালে আদর দেয়।রুহি আঙ্গুল দিয়ে ওর বামে গাল দেখায়! মুগ্ধ মুচকি হেসে রুহির বাম গালে আদর দেয়!রুহি এবার ওর ডান গাল দেখায়! মুগ্ধ মুচকি হেসে আবারো রুহির ডান গালে আদর দেয়!রুহি আঙ্গুল দিয়ে ওর থুতনী দেখায়! মুগ্ধ রুহির থুতনীতেও আদর দেয়!তারপর রুহি ওর নাক দেখায়! মুগ্ধ খুব সাবধানে রুহির নাকে আদর দেয় যাতে রুহি নাকে ব্যাথা না পায়।রুহি মাথা নিচু করে ফেলে বাট মুগ্ধ দুষ্টু হেসে রুহির ঠোঁটে চট করে আদর দিয়ে দেয়…. আর মুগ্ধ গাড়ি স্টাট করে।
–
রুহিঃ এ্য এ্য এ্য ঠোঁটে দিলে কেন??আমি কি দিতে বলছি??
মুগ্ধঃ কই কি দিলাম আমি!প্রমান দেখা…কেমন করে দিলাম আমাকে দিয়ে দেখা তো! আমার মনে পড়ছে না।( দুষ্টু হেসে)
রুহিঃলুচু একটা!
মুগ্ধঃলুচুর কিছু করিনি এখনো!কিছুদিন ওয়েট কর লুচু কাকে বলে বুঝিয়ে দিবো। (দুষ্টু হেসে)
রুহিঃএকটা দিনের মধ্যে এত রোমান্টিকতা তোমার মাঝে উদয় হলো কি করে?তুমি সত্যি মুগ্ধ তো..
মুগ্ধঃহুমম ডাউট হচ্ছে নাকি?আগেও ছিলাম বাট এখন তোকে বৈধ ভাবে পেয়েছি এখন আর কোন বাঁধা নেই!এখন থেকে শুধু….
রুহিঃ…..
–
রুহি আর কিছু বলে নি!মুগ্ধ একটা রেস্টুরেন্টের যায় আর রুহির কথা মত চাইনিজ খাবার খায়।তারপর ওরা বাসায় চলে আসে!রুহির আম্মু রুহির দিকে তাকিয়ে প্রথমে বুঝতে পারে নি বাট ভালো করে খেয়াল করে দেখছে একটা ডায়মণ্ডের নোজপিন রুহির নাকে জ্বলজ্বল করে জ্বলছে!রুহি আম্মু অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে…রুহির আম্মু কিছু বললো না কারন উনার গুনধর মেয়ের যখন যা মন তখন সে তাই করে!রুহিও ওর আম্মু দিকে তাকিয়ে বলছে…
–
রুহিঃ আম্মু গো কিছু একটা করো গো নাকের ব্যাথায় আমি মরে গেলাম গো।ভাভা গো ভাভা এত ব্যাথা করে জানলে এই ঠাডা পড়া নাক ফুটা করতাম না রে..নাকের ব্যাথায় আমার কানের মধ্যে আর মাথার মধ্যে পো পো করছে…
আম্মুঃদাড়া আমি রসূন তেল গরম করে আনি!গরম তেল দিলে ব্যাথা কমবে।
রুহিঃ যা করবা তারাতারি করো রে আম্মু! ব্যাথাতে আমি মরে গেলাম।
–
রুহি ব্যাথার মেডিসিন খেয়ে নেয়!আর মুখে সিভিট নিয়ে বসে আছে আর রুহিরর আম্মু রুহির নাকে হালকা তেল দিয়ে দিচ্ছে…..
–
পরেরদিন সকালে….
সকালবেলাতেই রুহি, সুমি আর ইরা ফোন দিয়ে ডেকে নেয়!রুহি সুমি আর ইরা আসলে রুহি ওদের নিয়ে ওদের ছাদে যায়।রুহি সুমি আর ইরা কে কুট্টুশের তিনটা বাচ্চাকে দেখায়!তিন জন তিন ছানাকে কোলে নিয়ে ইচ্ছে মত চটকাতে থাকে!তখন রুহির ফট করে মনে পড়ে এদের তো নাম দেওয়া হয় নি!রুহি তখন ছাদের চারপাশে তাকায় আর মুগ্ধর বাগানে লাগানো বাদামের গাছে রুহি চোখ যায়…
–
রুহিঃএদের নাম কি জানিস??
ইরাঃকি রে???সো কিউট ছানাগুলো….
রুহিঃকাজু,বাদাম,কিসমিস দারুন নাম গুলো তাইনা…
সুমিঃহুমমম!অনেক কিউট…
–
রুহি ওদের সাথে কথা বলতে বলতে চোখ যায় ওদের বাসার তিন বাসা পর যে তেঁতুল গাছ আছে ওই গাছের দিকে!রুহি কাজু,বাদাম,কিসমিসকে খাঁচাতে রেখে সুমি আর ইরাকে নিয়ে তেতুল আনতে যায়।ওই তেঁতুল গাছটা নগেন দের!রুহি এর আগেও তেঁতুল গাছে উঠে তেঁতুল নামিয়েছে! আর গাছে ওঠা রুহির কাছে কোন ব্যাপার না।আর গাছে ওঠার জন্য মুগ্ধ রুহিকে উরাধুরা একদিন মেরেও ছিলো।রুহি,ইরা আর সুমি হেটে ওই তেঁতুল গাছের কাছে যাচ্ছে।রুহি গল্প করছে আর যাচ্ছিলো হঠাৎ ছোট্ট একটা বাচ্চা আদো আদো পায়ে রুহির সামনে এসে দাঁড়ালো…
–
বাচ্চাটা মেবি কেবল হাঁটা শিখছে!রুহি বাচ্চার সামনের সামনে হাটু গেড়ে বসতেই দেখে ছেলেটি একদম খালি গায়ে পরনে প্যান্টও নেই!রুহি দুষ্টু হেসে বাচ্চা ছেলেটি ইয়েতে একটা চিমটি কাটে আর দুষ্টু হেসে বলে…
–
রুহিঃওলে ওলে বাবুটা তুমি এমন নাংগু পাংগু হয়ে আছো কেন সোনা??তোমার কি বেশি গরম লাগছে??এজন্য বাতাস লাগাচ্ছো?????
সুমিঃএই রুহি কি করছিস তুই???
রুহিঃকই কি করলাম??বাতাস লাগাচ্ছে কি না সেটা জিজ্ঞাসা করছি…(দুষ্টু হেসে)
ইরাঃতাহলে চিমটি কাটছিস কেন??বাচ্চা কেঁদে দিলে রাস্তার মানুষ এসে আমাদের মারবে তো।
রুহিঃ ওলে বাবুটা এসো আরেক টা চিমটি কাটি!কি কিউট বাবুটা… এসো এসো
–
বাচ্চাটি কি বুঝলো কে জানে??খিলখিল করে হাসছে আর ওর ছোট ছোট হাত দিয়ে হাত তালি দেওয়ার চেষ্টা করছে।রুহি আবার চিমটি দিতে যাবে তার আগে বাচ্চাটি হাসি থামিয়ে এক পা পিছিয়ে দুইহাতে দিয়ে সামনে এনে ওর ইয়ে ঢাকার চেষ্টা করছে।বাচ্চাটি মুখের আকৃতি এমন করছে মনে হচ্ছে রুহি ওর ইয়েটা কেড়ে নিয়ে দৌড়ে দিবে।রুহি বাচ্চাটিকে কোলে নিতে যাবে তার আগেই পেছন থেকে মুগ্ধ রুহিকে ডাকলো!রুহি মুগ্ধর দিকে তাকিয়ে ভূত দেখার মত চমকে উঠলো….
–
মুগ্ধঃরুহি!!!এই তুই রাস্তার মাঝখানে বসে কি করছিস??যা বাসায় যা বলছি (মুগ্ধ সব দেখছে!)
রুহিঃ হুমম যাচ্ছি!!!!
মুগ্ধঃএখুনি যাবি!কি হলো দাড়িয়ে আছিস যে! কথা কানে যাচ্ছে না।মার খাওয়া ইচ্ছে না থাকলে তারাতারি বাসায় যা…
রুহিঃতুমি এত সেজেগুজে কোথায় যাচ্ছো শুনি??
মুগ্ধঃ শশুড়বাড়ির চৌরাস্তায়! এখন এত বকবক করতে পারবো না।আর আজকে একটা যদি অভিযোগ আসে আমার কাছে! থাটিয়ে এমন একটা থাপ্পড় দিবো ঝরঝর করে মাড়ির সব দাঁত পড়ে যাবে।
রুহিঃ আজকে যে পেছন পাকামি করে অভিযোগ দিতে যাবে! তাকে উল্টো ঝুলিয়ে পিটাবো..
মুগ্ধঃতোকে বলিনি রং কথা বলবি না!আমাকে কি বাইক থেকে নামতে হবে।(দাঁতে দাঁত চেপে)
রুহিঃ আচ্ছা আচ্ছা আর বলবো না! আমি বাসায় যাচ্ছি তুমি যাও যাও তুমি হিরোগিরি করে এসো..
–
মুগ্ধ আজকে অফিসে যায় নি!নায়ক সেজে বাইক নিয়ে কোথায় জানি যাচিছলো।মুগ্ধ রুহিকে বাসায় যেতে বলে বাইক নিয়ে হিরোর মত শা শা করে চলে গেল!ধূসব কালার শার্ট আর কালো জিন্সে মুগ্ধকে দারুন লাগে তাই রুহি মুগ্ধকে কয়েক দফা গালি দিলো।মুগ্ধ বাইকে করে যাচ্ছে হাসছে আর মনে বলছে…
মুগ্ধঃ তুই কি বড় হবি না??রাস্তার মাঝখানে বসে এসব কি করছে?আল্লাহ এর মাথায় বুদ্ধি দাও।আমি তো নিজেই লজ্জা পাচ্ছিলাম এজন্য না দেখার ভান করে কেটে পড়লাম।
–
ওই দিকে রুহি বাচ্চাটি কে দেখার জন্য পেছনে তাকিয়ে দেখে একটা লোকের কোলে বাচ্চাটি ভয় ভয় চোখে রুহির দিকেই তাকিয়ে আছে….
রুহিঃ বাচ্চাটি একটা ফ্লায়িং কিস ছুড়ে দিলো..
আর বাচ্চাটি ভীতু চোখে রুহির দিকে তাকিয়ে থাকলো।
–
রুহিরা তেঁতুল গাছের নিচে গেল!তারপর ভাল করে দেখে নিলো কোন ডালে বেশি তেঁতুল আছে!রুহি একটা ঢিল ছুঁড়ে গাছে মারলো! আর ঢিলটা গিয়ে তেঁতুল গাছের মালিকের টিনের উপর পড়ে বিকট একটা শব্দ করলো।তারপর নগেন বাসার মধ্যে থেকে চিৎকার করতে করতে তেঁতুল গাছ তলায় আসলো।রুহিরা তখন লুকিয়ে পড়ছিলো!নগেন কাউকে না দেখে বাসায় দেখে বাসায় যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই…রুহির নগেনের চোখে কাপড় বেঁধে দিলো…
–
নগেনের চোখ, মুখ বেধে দিলো যাতে নগেন ষাড়ের মত চিৎকুর দিতে না পারে আর রুহিকে চিনতে না পারে।রুহি নগেনকে তেঁতুল গাছের সাথে বেধে কয়েক টা কিল,ঘুসি দিলো তারপর বলতে শুরু করলো…
রুহিঃ তোর গাছ বলে তুই একাই তেঁতুল গিলবি রে উগান্ডা! কোথায় লিখা আছে যে যার গাছ সেই তেতুল খাবে শুধু!প্রতিটা তেঁতুল গাছ থেকে তেঁতুল খাওয়া সব মেয়েদের অধিকার বুঝলি!আর একবার যদি এরকম করিস তো তোর এমন জায়গায় মারবো না পারবি দেখাতে আর না পারবি কাউকে বলতে…
সুমিঃ আরো কয়েক দফা মার এই হুলো বিড়ালটাকে…
ইরাঃ আচ্ছা আমরা যে তেঁতুল গাছের মালিককে তারই গাছে বেঁধে যে মারছি কেউ দেখলো আমাদের আস্ত রাখবে না।চল পালায়…
রুহিঃধুর চুপ কর তো!আমি শুধু আমার চকলেট বয় ছাড়া কাউকে ভয় পাই না।দেখি কে কি বলতে আসে! যে যা বলতে আসবে একেকজনেনর পা ভেঙে হাতে ধরিয়ে দিবো…রুহি কাউকে ভয় পাই না।
সুমিঃহা হা হা
তারপর রুহি গাছে উঠে ইচ্ছে মত পাকা তেঁতুল নামালো তারপর নগেনকে তিনজন মিলে আরেক দফা মারলো!বেচারা নগেন মার খেয়ে কিছু বলতে পারছে না শুধু উৎ চিংড়ির মত লাফাচ্ছে… না পারছে কাঁদতে না পারছে চিৎকার করতে।
–
একেই বলে সাহস!গাছের মালিককে তারই গাছের সাথে বেধে!তারই সামনে থেকে তেঁতুল নামিয়ে আনতে ও সাহস লাগে!আর রুহি তো চোর না পুরাই ডাকাত এজন্য চুরি করে না মালিকের সামনে থেকেই যা করার করবে।রুহি একটা পাকা তেঁতুল নিয়ে খোসা ছাড়িয়ে নগেনের মুখের কাপড়টা সরিয়ে নগেনের মুখের একটা তেঁতুল ঢুকিয়ে দিলো!তারপর বাকি তেঁতুল নিয়ে তিন জন বিশ্ব জয় হাসি নিয়ে বাসার উদেশ্য হাটতে শুরু করলো….
–
কিছুদূর গিয়ে আবার রুহিকে ফিরে এসে নগেনের মাথা চাট্টি মেরে বললো…
রুহিঃ আমি জানি তুই আমাকে চিনে ফেলছিস!শোন আমার বাসায় যদি রিপোর্ট করিস তো!তেতুল গাছের সব উপরের মগডালে তোকে উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখবো।আমাকে তো চিনিস যা বলি তাই করি….সো ভুলেও যেন আমার বাসার কেউ না জানে।মনে রাখিস বাই….(নগেনের একটা কান টেনে)
To be continue….