#প্যারাময়_লাভ❤❤
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_21
রুহিঃ আমার বাসায় যদি রিপোর্ট করিস তো!তেতুল গাছের সব উপরের মগডালে তোকে উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখবো।আমাকে তো চিনিস যা বলি তাই করি….সো ভুলেও যেন আমার বাসার কেউ না জানে।
–
রুহিরা তেঁতুল ডাকাতি করে চলে গেল!কিছুক্ষন পরে নগেনের মা নগেন দেখে বাঁধন খুলে বাসায় নিয়ে যায়।নগেন ওর মাকে বলে এই কথা কাউকে না জানাতে।ওই দিকে রুহি বাসায় গিয়ে মনের সুখে তেঁতুল খায়!তারপর তিনজন অনেক সময় আড্ডা দেয়।রুহি, সুমি, ইরা তারপর ওদের বাসায় চলে যায়।সুমিদের এগিয়ে দিয়ে রুহি বাসায় ঢুকতে যাবে তখন মুগ্ধ বাইকে নিয়ে আসে!রুহি মুচকি হেসে মুগ্ধর দিকে তাকাতেই মুগ্ধর বাইকে ইভাকে কে রুহির হাসি মিলিয়ে গেল!রুহি দাড়িয়ে আছে মুগ্ধ দেখেও না দেখার ভান ইভাকে নিয়ে মুগ্ধ বাসায় ঢুকে গেল…..
–
রুহি মুগ্ধর দিকে তাকিয়ে হনহন করতে করতে ওর বাসায় ঢুকে গেল!তারপর রুহি ওর রুমে গিয়ে বেডশীট, বালিশ, যা ছিলো সব ছুঁড়ে ফেলে দিলো।ড্রেসিং টেবিলে যা ছিলো সব এক এক বেডের নিচে ছুড়ে মারলো!বেডশীট তুলে ওয়াশরুমে গিয়ে বাথটাবের মধ্যে ঢুবিয়ে আসলো।কয়েক মিনিটেই রুমটার অবস্থা নাজেহাল করে ফেললো!তারপর মেঝেতে বসে ভ্য ভ্য করে কেঁদে দিলো!রুহির আম্মু কোন একটা কাজে বাইরে গিয়েছে।রুহি ৩মিঃ কাঁদার পর হনহন করতে করতে মুগ্ধর বাসায় চলে গেল!তারপর মুগ্ধর আম্মুর রুমে ঢুকে মুগ্ধর খাৎনার পিক গুলো নিলো!তারপর কি মনে করে মুগ্ধর রুমে গেল…
–
মুগ্ধ শার্টটা কেবল খুলে উল্টো ঘুরে তাকাতেই দেখে রুহি অগ্নিদৃষিতে রুহির দিকে তাকিয়ে আছে।মুগ্ধ টাওয়াল নিয়ে ওয়াশরুমে যেতে নিলেই রুহি সামনে এসে মুগ্ধর পথ আটকায়।মুগ্ধ ভ্রু কুচকে রুহির দিকে তাকিয়ে আছে।রুহিকে দেখে বোঝা যাচ্ছে রুহি প্রচন্ড রেগে আগে!মুগ্ধ খেয়াল করে রুহির হাতে কিসের যেন পিক!মুগ্ধ কিছু বলার আগে রুহি বলে ওঠে…
–
রুহিঃবাইকে তুমি ইভার সাথে লেপ্টে বসে ছিলে কেন?
মুগ্ধঃ লেপ্টে কই বসে ছিলাম!আমাকে ইভা না ধরলে তো পড়ে যেত তাই ধরে ছিলো।
রুহিঃতোমাকে বলিনি কোন মেয়ের এত কাছে যাবে না।বলিনি তুই কারো শরীর ঘেষে দাড়াবিও না।তুই আমার কথা শুনতে পাস না।(চিৎকার করে)
মুগ্ধঃতুই আমাকে তুই বললি..তোর তো সাহস কম না।(অবাক হয়ে)
রুহিঃতুমি সাহসের দেখছিস কি??(মুগ্ধ ধাক্কা দিয়ে)
মুগ্ধঃসামান্য একটা বিষয় নিয়ে এবার কিন্তু তুই বাড়াবারি করছিস রুহি!(দাঁতে দাঁত চেপে)
রুহিঃকিসের বাড়াবাড়ি তুমি লেপ্টে থাকবে আর আমি বললেই দোষ। আজকে যদি তোমার ইজ্জতের ফালুদা না করছি তো আমিও রুহি না।শুধু দেখে যাও…
মুগ্ধঃকি করবি তুই শুনি??
রুহিঃতোমার খাৎনার পিক গুলো নেটে ছাড়বো!ফেসবুকে পোস্ট করে তোমাকে ট্যাগ করবো।তারপর দেখবা তোমাকে নিয়ে সবাই কি করে হাসাহাসি করে।
মুগ্ধঃ ঠাস্!সামান্য একটা বিষয় নিয়ে এত বাড়াবাড়ি করছিস কেন তুই??কয়েকদিন মার খাস নি তাই বেশি সাহস হয়ে গেছে তাই না। (থাপ্পড় মেরে)
–
রুহি মার খেয়ে ছবি গুলো নিয়ে দৌড়ে চলে যাচ্ছিলো!মুগ্ধও দৌড়ে গিয়ে রুহিকে ধরে আবার রুমে নিয়ে আসে!রুহি রাগে ফোঁস ফোঁস করছে।মুগ্ধ রুহির থেকে জোর করে পিক গুলো নিয়ে ছিঁড়ে ফেলে!রুহি রাগে মুগ্ধ জোরে একটা ধাক্কা দেয়।মুগ্ধ দুই পা পিছিয়ে যায়!মুগ্ধ জানে রুহি বাসায় গিয়ে ভাংচুর শুরু করবে যতক্ষণ না ওর রাগ কমে।মুগ্ধ রুহি কে জোর করে বেডের উপর বসিয়ে দেয় আর নিজেও বসে! তারপর দুই গালে হাত রেখে বলে…
–
মুগ্ধঃরাগ তো আমার উপর! তাহলে আমার উপরে তোর যত ইচ্ছে রাগ আছে তুলে যা।তুই যে শাস্তি দিবি আমি মাথা পেতে নিবো তাও মাথা ঠান্ডা কর।
রুহিঃ…….
মুগ্ধঃকি হলো কথা বলবি না আমার সাথে।ইভা তো আমার বোন তাই না!ভাইয়ের পাশে কি বোন বসতে পারে না! (শান্ত ভাবে)
রুহিঃআমিও তোমার বোন ছিলাম!আমাকে বোন থেকে বউ করে ফেলছো।তাহলে ইভা করবে না গ্যারান্টি কি আছে?আমাকে এত বোকা মনে হয় তোমার!তুমি লুচু অনেক বেশি লুচু(রাগি চোখে তাকিয়ে)
মুগ্ধঃতোকে আমি কোনদিন বোন ভাবি নি!আর ইভাকে আমি আমার বোন ভাবি।আচ্ছা বল কি করলে তোর রাগ কমবে।
–
রুহি উঠে দাড়িয়ে মুগ্ধ রুমটা সব এলোমেলো করে দিলো!তারপর রাগে ফোঁস ফোঁস করতে করতে মুগ্ধকে এক ধাক্কা দিলো!মুগ্ধ বেডে পড়ে যায়।রুহি মুগ্ধর বুকের উপর উঠে ইচ্ছে মত মুগ্ধকে কামড়াতে থাকে!মুগ্ধও মুখ বুজে সব সহ্য করতে থাকে!মুগ্ধ ঠোঁটে,গালে,গলায়, বুকে, পেটে রুহি ইচ্ছে মত কামড়াতে থাকে যতক্ষণ না ওর রাগ কমছে!রুহির যে ঠিক কতটা রেগে আছে মুগ্ধ খুব ভাল করেই বুঝতে পারছে কারন রুহির কামড় গুলো।রুহি একটা সময় মুগ্ধ উপর থেকে উঠে দাড়ায় আর মুগ্ধর দিকে না তাকিয়ে হনহন করতে করতে ওর বাসায় চলে যায়।
–
মুগ্ধ উঠে আগে ওর রুমে দরজাটা ভালো করে আটকায়! তারপর ড্রেয়িং টেবিলের দাড়িয়ে নিজেকে দেখছে!ঠোঁট, গাল,বুকে,গলায়, পেটে রুহির দাঁত বসে আছে।কোন মেয়েকে যদি কেউ এমন অবস্থায় কেউ দেখে তো বলতো মেয়েটাকে রেপ করছে! কিন্তু কোন ছেলেকে কেউ এমন অবস্থা দেখলে তাকে কি বলা উচিত সেটা মুগ্ধরও জানা নেই!মুগ্ধর হাসিও পাচ্ছে আবার দুঃখও হচ্ছে, রাগও লাগছে আবার এখন শান্তিও পাচ্ছে।রুহি এত জোরে কামড় গুলো দিয়েছে যে মুগ্ধ শরীর লাল হয়ে দাঁত বসে আছে!কোন কোন জায়গায় রক্ত জমে গেছে..পুরো শরীর ব্যাথা হয়ে গেছে আর জ্বালা করছে!.রুহি যে মুগ্ধকে এমন শাস্তি দিবে সেটা মুগ্ধ কল্পনাও করে নি…
–
মুগ্ধ আয়নাতে নিজে দেখে মনে মনে ভাবছে..
মুগ্ধঃএত গুলো কামড় তো দিলো!এবার ইনজেকশন নিতে হবে না তো।আচ্ছা ডাক্তার যদি জিজ্ঞাসা করে এমন করে কে কামড়ালো?তখন কি বলবো আমি??আমার বউ তার রাগ কমানোর জন্য আমাকে এমন করে কামড়ে দিসে।ছিঃ!ছিঃ! কি লজ্জার কথা।সব বুঝলাম এখন আমি রুমে বাইরে যাবো কি করে?অফিসেই বা যাবো কি।উফফ খুব ব্যাথা করছে…
–
মুগ্ধ ওর ফোনটা নিয়ে অফিস থেকে নিয়ে দুইদিন ছুটি নিয়ে নিলো অসুস্থতার কথা বলে!তারপর মুগ্ধ সাওয়ার নিয়ে শরীর মুছে ড্রেসিংটেবিলের সামনে দাড়িয়ে একা একা মলম লাগালো।মুগ্ধ বারান্দায় গিয়ে দেখলো রুহিকে দেখা যাচ্ছে না।মুগ্ধ একটা টি- শার্ট পড়ে শুয়ে পড়ে ভাবতে থাকে।
মুগ্ধঃরুহি তোর ভালবাসা যে এত ভয়ঙ্কর আমি ভাবি নি!আর আর কোনদিন আমার বাইকে কোন মেয়েকে তুলবো না।এটা যদিও পাগলামি তারপরেও বলবো পাগলের মত কেউ কাউকে ভালবেসে না থাকলে এমন পাগলামি কেউ করবে না।পাগলীটাকে দুই বার বিয়ে করে বোঝালাম যে আমি শুধু তোর! তাও আজকে সামান্য বিষয় নিয়ে কামড়ে কি অবস্থা করে দিলো আমার।যদিও এমন ভালবাসা পেতে ভাগ্য লাগে… (মুচকি হেসে)
–
রুহি সাওয়ার নিচে দাড়িয়ে আছে প্রায় ২ ঘন্টা হলো!তারপর ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে কয়েকটা ড্রেস আর টাকা নিয়ে হনহন করতে করতে বাসায় চলে গেল।রুহির আম্মু শুধু দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখলো কারন রুহি মুগ্ধর উপর রেগে গেলে ব্যাগ পএ নিয়ে ওর নানুর বাসায় চলে যায়!আর রুহি এখন এই কাজটাই করেছে।তারপর মুগ্ধ গিয়ে আবার নিয়ে আসে….।তবে আজকে রুহি ওর নানুর বাসায় যায়নি! গেছে সুমির বাসায়।সুমির বাড়ির লোকও রুহিকে খুব ভালবাসে…
–
ওইদিকে মুগ্ধর আম্মু দুপুরে খাওয়া জন্য মুগ্ধকে ডেকে যাচ্ছে কিন্তুু মুগ্ধ খেতে যেতে পারছে না।মুগ্ধ ওর আম্মুকে ফোন দিয়ে বললো ওর খাবারটা ওর রুমে পাঠিয়ে দেয়।মুগ্ধর আম্মু মুগ্ধর রুমে খাবার দিতে এসে দেখে মুগ্ধ ওর গলাতে টাওয়াল ঝুলিয়ে রেখে মনযোগ দিয়ে কাজ করছে!আর মুগ্ধ টাওয়াল নিয়ে মুখ মোছার ভান করে ঠোঁটে উপর হালকা করে ঘষছে!মুগ্ধর আম্মু চলে যেতে মুগ্ধ লেপটপে দিকে তাকিয়ে বললো..
–
মুগ্ধঃ আম্মু আমার খাবারটা এবার থেকে উপরেই পাঠিয়ে দিও!অফিসের অনেক কাজ আমাকে এগুলো রেডি করতে হবে।আর এই কাজটা খুব জরুরি এজন্য বাসাতেই ঠান্ডা মাথা করতে হবে! তাই অফিস থেকে দুইদিন ছুটি নিয়েছি….
আম্মুঃ আচ্ছা…
–
মুগ্ধর আম্মু চলে গেল! মুগ্ধ উঠে তখন দরজা আটকে দিলো আর হাফ ছেড়ে বাচলো।তারপর মুগ্ধ খেয়ে একটা ঘুম দিলো!ওই দিকে সুমির রুমে রুহি বসে মুগ্ধকে কয়েক দফা গালি দিলো!সুমি রুহিকে জোর করে খাইয়ে দিলো।তারপর দুই বান্ধবী গল্প করতে করতে ঘুমিয়ে গেল।রুহির আম্মু আর ওর বাপি রুহিকে ফোন দিচ্ছে পাচ্ছে না!রুহির আম্মু রুহির নানুকে ফোন দিয়ে খোঁজ নিয়ে জানলো রুহি ওর নানুর বাসায় যায় নি!রুহির আম্মু আর বাপি টেনশনে পড়ে গেল।রুহির বাপি খোঁজাখুজি করলো বাট কেউ বলতে পারলো না রুহির খবর!রুহির বাপি উপায় না পেয়ে মুগ্ধকে ফোন দিলো।মুগ্ধ ঘুম ঘুম কন্ঠে ফোন রিসিভ করলো!…
–
মুগ্ধঃআসসালামু আলাইকুম মেজ বাবা
রুহির বাপিঃওয়ালাইকুম সালাম আব্বু! আমি দুঃখিত তোমাকে বিরক্ত করা জন্য।
মুগ্ধঃসমস্যা নেই মেজবাবা???বলুন
রুহির বাপিঃ রুহির কোন খোঁজ পাচ্ছি না!রাগ করে এবার ওর নানুর বাসাতেও তো যায় নি।ওকে ফোন দিয়েও ফোন বন্ধ পাচ্ছি। টেনশন হচ্ছে ওর যা রাগ না জানি কি করে বসে…আব্বু রুহি কি কোন কারনে তোমার উপরে রাগ করছে।
মুগ্ধঃজি মেজবাবা!রুহি সামান্য একটা বিষয় নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করছিলো তাই আমি…..
রুহির বাপিঃবুঝেছি!!
মুগ্ধঃ মেজবাবা আমি দেখছি রুহি কোথায় আছে?আপনি চিন্তা করবেন না কেমন..
রুহির বাবাঃ হুমম
–
মুগ্ধ এবার চিন্তায় পড়ে গেল রুহি তাহলে গেল কোথায়?মুগ্ধ রাহাতকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞাসা করলো ইরা বা সুমি বাসার ঠিকানা জানে কি না??মুগ্ধ রাহাতকে বললো আরিয়ান,রাহাত,সুমি আর ইরা যেন সবাই একসাথে মিট করে লেকের পাড়ে।আর মুগ্ধ যে জানে এটা যেন কেউ না জানে?রাহাত, ইরা,সুমি,আর আরিয়ানকে ফোন দিয়ে বললো লেকের পাড়ে আসতে!সুমি রুহিকেও জোর করে লেকের পাড়ে নিয়ে আসে!রুহি মুখটা ভার করে মাথা নিচু করে বসে আছে…
সুমিঃ এই রুহি কি হলো তোর?মন খারাপ করে থাকবি এখনো???
রাহাতঃকি হয়েছে আমার মিষ্টি আপুটার!মন খারাপ কেন শুনি??
ইরাঃ এই রুহি সত্যি করে বলতো তোর কি হয়েছে??
রুহিঃআমি ঠিক আছে তোরা আড্ডা দে…
আরিয়ানঃ আমার শালিকার মন খারাপ থাকলে আমরা আড্ডা দিবো কি করে??
সুমিঃদাড়া মুগ্ধ ভাইয়াকে ফোন দেয় যেন তোর একটা থাপ্পড় মেরে যায়।কারন ভাইয়ার থাপ্পড় না খেলে তোর মুড ভালো হবে না আমি জানি…
রুহিঃওকে একদম ফোন দিবি না!ওর সাথে আর কোনদিন কথা বলবো না আমি..
রাহাতঃআবার ঝগড়া করছো তোমরা??
আরিয়ানঃআমাদের হিরো কই শুনি ?তবে মুগ্ধ ভাইয়ার সাথে দেখা বকে দিতে হবে।
–
সবাই আড্ডা দিচ্ছে আর রুহি আছে চুপ করে!বাইকে শব্দ পেয়ে রুহি পাশে তাকাতেই দেখে মুগ্ধ বাইক থেকে নামছে!মুগ্ধকে দেখে রুহি কোন কথা না বলে ভৌ দৌড়…..
To be continue….
(আমি মারা যাইনি!তবে খুব বিজি ছিলাম।মারা যাওয়ার কথা বলো না আমার বর দেখলে মাইন্ড করবে!আর রেগে গেলে আমাকে বকা দিবে!কারন রোদ এসব ফান পছন্দ করে না।…….)