#প্যারাময়_লাভ❤❤
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_30
আর আলোর শাড়ির আঁচল ধরে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে আসছে… মেঘ….❤❤
–
রোদের আর আলোর ফুল ড্রেসআপ কালো!রাসেল আর মিষ্টু পড়ছে ব্লু ড্রেস।আলো,মিষ্টু, দুইজনেই শাড়ি আর মাথা হিজাব পড়ছে! রোদ,রাসেল,দুইজনেই ব্লেজার।আর মেঘ পড়ছে সবুজ পান্জাবী আর কালো জিন্স। ওরা সবাই এসে মুগ্ধ আর রুহির সাথে কথা বললো!মুগ্ধ রোদদের সবার সাথে কুশল বিনিময় করে আর জড়িয়ে ধরে।সবাই কে দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে!কেউ কারো থেকে কম না।ওরা আসাতে বিয়ে বাড়ি আরো গমগম করছে!মুগ্ধ মেঘের দিকে তাকালো! তারপর মেঘকে কোলে নিয়ে মুগ্ধ মুচকি হেসে বললো…
–
মুগ্ধঃকি ব্যাপার মেঘ বাবুর মন খারাপ কেন??
রুহিঃ এই মেঘ কি হয়েছে সোনা?তোমার মন খারাপ কেন?? (গাল টেনে)
মেঘঃমন ভালো নেই আমার? (মাথা নিচু করে)
রাসেলঃ কেন জুনিয়র বস?আপনার মনের আবার কি হলো??
মিষ্টুঃমেঘ চলো আগে খেয়ে আসি!তারপর তোমার মন ভালো করছি।কারন পেট খালি থাকলে আমার মাথায় কোন বুদ্ধি আসে না।
রাসেলঃ মিষ্টু এখানে কোন দুষ্টুমি করবে না!আর আসতে না আসতেই তোমার খুধা লেগে গেল?
মিষ্টুঃযা বাবা আমি আবার কবে দুষ্টুমি করলাম?এসব গুজব কে ছড়ালো?শুধু নাম বলো তার! তাকে ভেমরুল থেরাপি দিমু!আর খুধা লাগলে খাবো না।
রোদঃহুমম তাই তো!এই রাসেল একদম মিষ্টুর নামে গুজব ছড়াবে না।
মুগ্ধঃহুমম আলো,রুহি আর মিষ্টু উনারা হচ্ছে পৃথিবীর ইনোসেন্ট প্রাণী
আলোঃ এই মুগ্ধ ভাইয়া আমি আবার কি করছি শুনি?একদম গুজাবেন না…
রোদঃহুমম! হুমম!এই একদম কেউ গুজব ছড়াবে না
আমাদের কারো বউয়ের নামে।
মিষ্টুঃথানকু রোদ ভাইয়া.!সত্যি আপনি বেস্ট
রাসেলঃ হুম তা আর বলতে
রুহিঃ তোমরা সবাই ভুল জানো?এখানে সব চেয়ে ভদ্র আর ইনোসেন্ট হচ্ছি আমি!
মুগ্ধঃওহহ হ্যা!এখানে সব থেকে ভদ্র আর ইনোসেন্ট হচ্ছে আমার বউ।আর রুহি ম্যম এই কথাটা আমাদের মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
রাসেল আর রোদঃ হা হা হা
মুগ্ধঃএবার মেঘ কিছু তো বলো?
মেঘঃতোমাদের সবার বউ আছে!শুধু আমারই নেই।তোমরা আমাকে বউ খুঁজে দাও।আমিও বিয়ে করবো..সবার তো বউ আছে তাহলে আমার বউ থাকবে না কেন??তোমাদের মাঝে আমাকে কেমন যেনো ছোট বাচ্চা! ছোট বাচ্চা! লাগছে।(মাথা নিচু করে)
–
তারপর মেঘের কথা শুনে সবাই মিলে কয়েক দফা হাসলো!রুহি মেঘকে কোলে নিয়ে বললো..
রুহিঃ মেঘ বাবু এখানে যারা দাড়িয়ে আছে!আই মিন,রোদ,রাসেল,মুগ্ধ কেউ তোমার মত হ্যান্ডস্যম না।তাই ওরা বউ খুঁজে দিচ্ছে না।আমি তোমার বউ খুঁজে দিবো কেমন!আর হ্যা মেঘ তোমাকে পান্জাবীতে পুরাই ঝিংকুর বাপের মত লাগছে!আমি তো ক্রাশ খেয়েছি তোমাকে দেখে..
মেঘঃ সত্যি সবার থেকে আমাকে দেখতে ভালো দেখাচ্ছে তো..?? (চুল ঠিক করতে করতে)
মিষ্টুঃহুমম একদম রাজকুমারের মত লাগছে তোমাকে দেখতে।আমার মেয়ের জামাই বানাবো তোমাকে…
রুহিঃ না মিষ্টু আপু! আমি মেঘকে আমার জামাই বানাবো
মিষ্টুঃ না আমি মেঘকে আমার মেয়ের জামাই বানাবো..
রুহিঃ না বলছি না!আমি ব
মেঘঃথাক আমার বউ লাগবে না!আমি বিয়ে করবো না।তোমরা ঝগড়া করো না।
–
মেঘের কথা শুনে আরেক দফা হাসির রোল পড়লো!তারপর কাজি এসে মুগ্ধ আর রুহির বিয়ে পড়াতে শুরু করলো..
কাজিঃ বলো মা আলহামদুলিল্লাহ কবুল…
রুহিঃকবুল!কবুল!কবুল…
কাজিঃ একবার বলতে বলেছিলাম
রুহিঃকোশ্চেন ফাঁস হয়ে গেছে!জানা উওর! তাই একেবারে বলে দিলাম
–
রুহির কথা শুনে সবাই হাসিতে ফেটে পড়লো!রুহি কি বললো কাজির মাথার উপর দিয়ে গেল।তাই উনি আর কিছু জিজ্ঞাসা করলো না।তারপর মুগ্ধও কবুল বলে দিলো।সবাই খেতে গেল!মুগ্ধ ওদের জন্য খাবারের জায়গা আলাদা করছে!এখানে রোদ মেঘ আলো,রাসেল মিষ্টু,মুগ্ধ আর রুহির জন্য।আলো,রুহি আর মিষ্টু মিলে ঠিক করলো তারা তাদের বরের হাতে খাবে।বাট মেঘ প্রতিবাদ করলো কারন মেঘের বউ নাই তাই!মেঘ ঠিক করলো বউরা বরদের খাইয়ে দিবে!যদিও মেঘকে রাসেল,রোদ, আর মুগ্ধ এটা শিখিয়ে দিসে।এজন্য মেঘকে ঘুষও দিতে হয়েছে…
–
তারপর আর কি সবাই মেঘের কথা মেনে নিলো!আলো একটা প্লেটে পোলাও,মাংস,চিংড়ি আরো কিছু নিয়ে এক লোকমা ভাত প্রথমে মেঘের মুখে দিলো! তারপর রোদের মুখে দিলো।মিষ্টুও প্লেটে পোলাও নিলো!রাসেল মনে করছে মিষ্টু ওর মুখে আগে খাবার দিবে এজন্য এজন্য হা করছে! বাট রাসেলকে মিষ্টু ভুল প্রমান করে দিয়ে আগে মিষ্টু নিজের মুখে খাবার দিলো!বেচারা রাসেল হা করে আছে বাট মিষ্টু খেয়েই যাচ্ছে! আর রুহি প্লেটে খাবার নিয়ে ভাবছে আগে কোনটা দিয়ে শুরু করা যায়।আলো রোদ আর মেঘকে খাইয়ে দিচ্ছে! আর রাসেল আর মুগ্ধ এই দুই বেচারা করুন দৃষ্টিতে তাদের বউয়ের দিকে তাকিয়ে আছে।মিষ্টু আর রুহির কান্ড দেখে আলো আর মেঘ হেসে লুটোপুটি খাচ্ছে।
–
রুহি আর মিষ্টু খেতে খেতে আলোর দিকে তাকিয়ে দেখে আলো রোদ আর মেঘতে পরম যত্নে খাইছে দিচ্ছে! তখন মিষ্টু আর রুহির হুশ আসে আর তখন দুজনেই জিহবাতে কামড় দেয়! আর ওদের বরকে খাওয়াতে থাকে!রোদ,রাসেল আর মুগ্ধর খাওয়া শেষ হলো তারা এবার প্লেট হাতে নিয়ে আলো,মিষ্টু আর রুহিকে খাওয়াতে থাকে।আর মেঘের তো বউ নাই তাই মেঘ বসে বসে মাংসের হাড় চিবুতে থাকে…
–
তারপর ওরা খাওয়া দাওয়া শেষ করে!আর একটা রুমের বেডের উপর মুগ্ধ সাথে রোদ,রাসেল, রাহাত,আরিয়ান সহ অনেকে বসেই আড্ডা দেয় দিতে থাকে! কারন আলো রা রোদদের কোন একটা কারনে ওদের সাথে নেয় নি।বেশ কিছুক্ষণ পর তিনজন মিলে এসে মুগ্ধদের সামনে দাড়ালো।তিনজনের মুখেই দুষ্টু হাসি দেখে মুগ্ধদের বুঝতে বাকি নেয় তিনজন মিলে কোন ঘোট পাকিয়ে এসেছে।বাট আলো,মিষ্টু, রুহি কারো সাথে কোন কথা না বলে! শুধু একবার ওদের দিকে তাকিয়ে বিশ্বজয় করা হাসি দিয়ে চলে গেল।মুগ্ধরা আবুলের মত তাকিয়ে আবার আড্ডা দিতে শুরু করে দিলো…
–
রুহির বাপি মুগ্ধর কাছে এসে মুগ্ধদের বাইরে আসতে বললো!কারন মাগরিবের আজান দিবে একটু পর তাই উনি এখনি রুহিকে বিদায় দিতে চাই।মুগ্ধ রুহির বাপির কথা শুনে বেডে থেকে নিচে নেমে দেখে মুগ্ধর জুতা নেই!মুগ্ধর এদিক ওদিক তাকানো দেখে রোদ এসে মুগ্ধকে জিজ্ঞাসা করলো কি হয়েছে?মুগ্ধ ইশারায় বললো ওর জুতা খুঁজে পাচ্ছে না!রোদ খেয়াল করে দেখলো রোদের ও জুতা নেই!ওদের দেখে রাসেলও উঠে এসে জিজ্ঞাসা করলো কি হয়েছে?রোদ রাসেল বললো ওদের জুতা খুঁজে পাচ্ছে না। রাসেলও দেখলো ওরও জুতা নেই!এবার আর বুঝতে বাকি রইলো না এই কাজ কে বা কারা করছে???
রোদঃহুমম বুঝলাম!আমাদের পকেট ফাঁকা করা ধান্দা..
রাসেলঃ রোদ ভাই মুগ্ধ ভাইয়ের জুতা ওরা চুরি করছে ঠিক আছে!বাট আমার আর আপনার জুতা চুরি করলো এটার আবার কেমন কথা!
রোদঃ চার হিটলার একসাথে আছে!এই তো কেবল শুরু আরো কত কি দেখতে হবে??
মুগ্ধঃআমাদের সোনা বাঁধানো কপাল!ভাগ্য করে বউ পেয়েছি আমরা…হা হা হা
রাসেলঃ হা হা হা! সে আর বলতে..এমন বউ যারা প্রতি পদে পদে আমাদের ফাঁসিয়ে দেয়।
–
মুগ্ধ, রাসেল আর রোদ খালি পায়ে রুমের বাইরে এসে দাড়াতেই ওদের দেখে হাসির রোল পড়লো।তিনজনেই একদিক ওইদিক তাকালো কিন্তু আলোদের দেখতে পাচ্ছে না।ঠিক তখনই সেইম সাজে তিনটা বউ এসে মুগ্ধদের সামনে দাড়ালো!এমন সাজ যে সেজেছে কেউ দেখে বলবে না কোনটা রুহি, কোনটা আলো আর কোনটা মিষ্টু।বউদের মুখে বড় করে ঘোমটা দেওয়া। রোদ,মুগ্ধ আর রাসেল তিনজন তিনজনের দিকে তাকালো! তারপর জোর করে মুখে একটা হাসি আনলো ।সুমি এসে বললো যার যার বউকে খুঁজে নিতে!
সুমিঃ ভাইয়া আপনারা আপনাদের বউকে খুজে বের করুন
রোদঃ এসবের আবার কি দরকার??মুগ্ধ রুহিকে খুজে বের করলেই তো হয়। (সৌজন্য মূলক হাসি দিয়ে)
মুগ্ধঃভাই আপনি এখন আমার ঘাড়ে চাপাচ্ছেন কেন ??আমি জানি রাসেল ভাই পারবে?রাসেল ভাই কাজে লেগে পড়েন..
রাসেলঃইয়ে মানে যার বিয়ে সেই তার বউকে খুঁজে বের করুক!শুধু শুধু আমাদের নিয়ে টানাটানি কেন??
সুমিঃতিন জনেই আপনারা আপনাদের বউকে খুঁজে বের করুন!তা হলে আপনাদের বউ আপনাদের পিঠে চ্যালাকাঠ ভাংবে…আগেই বলে দিয়েছে।
ইরাঃআপনারা কি এখন আপনাদের বউকে ভয় পাচ্ছেন??হা হা
রাসেলঃ কে বললো আমরা আমাদের বউকে খুঁজে বের করতে পারবো না!আর বউ কে ভয় পাবো কেন??দাড়াও এখুনি সবাইকে দেখিয়ে দিচ্ছি যে আমরাও পারি…
রোদঃ হুমম রাইট….
(রাসেল,মুগ্ধ তোমরাও আমার সাথে রেডি হও! কারন আজকেই আমাদের শেষ দিন। আমাদের তিনজনকেই আজকে কিমা বানাবে! ফিসফিস করে বললো)
রাসেলঃ মুগ্ধ ভাই তুমি থাকো!আমি আর রোদ ভাই এখন উল্টো ঘুরে দৌড় দিবো।তুমি পারবো ভাই আমি জানি তুমি পারবে…(মুগ্ধর কাঁধে হাত রেখে ফিসফিস করে বললো)
মুগ্ধঃআমি ফাসলে! আপনাদের নিয়েই ফাসবো।তাই পালানোর কথা বাদ দেন।
রোদঃ আচ্ছা তোমাদের বউ তোমাদের উপর রেগে গেলে তারা কি করে রাগ কমায়??(ফিসফিস করে)
রাসেলঃ আমার বউটা তার সর্বশক্তি আমার মাথার চুল ধরে টানে!(করুন সুরে)
মুগ্ধঃ আর আমার টা কামড়ানো শুরু করে!যতক্ষণ না ওর রাগ কমে। (অসহায় দৃষ্টিতে)
রোদঃ ওহহ!যাক আমার মত অবস্থা তোমাদেরও।সমস্যা নেই তিনজনেই এক হসপিটালে ভর্তি হবো।চল মরতে তো হবেই তাই যুদ্ধে নেমে পড়ি।
–
রোদ মুচকি হেসে একজনের পাশে গিয়ে দাঁড়ালো!মুগ্ধও মুচকি হেসে একজনের পাশে গিয়ে দাঁড়ালো! রাসেলও দুষ্টু হেসে একজনের পাশে গিয়ে দাড়ালো।তারপর সুমি যে যার বউয়ের সামনে এসে তাদের ঘোমটা তুলতে বললো।তারপর রাসেলরা কাঁপা কাপা হাতে যে যার বউয়ের ঘোমটা তুলতেই রোদ,মুগ্ধ, রাসেল তিনজনেই এক সাথে চিৎকার করে উঠলো…..
To be continue….