#প্যারাময়_লাভ❤❤
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_31
রোদ মুচকি হেসে একজনের পাশে গিয়ে দাঁড়ালো!মুগ্ধও মুচকি হেসে একজনের পাশে গিয়ে দাঁড়ালো! রাসেলও দুষ্টু হেসে একজনের পাশে গিয়ে দাড়ালো।তারপর সুমি যে যার বউয়ের ঘোমটা তুলতে বললো।তারপর কাঁপা কাপা হাতে যে যার বউয়ের ঘোপটা তুলতেই রোদ,মুগ্ধ, রাসেল তিনজনেই এক সাথে চিৎকার করে উঠলো…..
–
রোদ, মুগ্ধ, আর রাসেল তাদের বউদের তারা চিনতে পারেনি।রোদ মিষ্টুর ঘোমটা তুলছে,রাসেল তুলছে রুহির আর আলোর ঘোপটা তুলছে মুগ্ধ। বউদের ঘোপটা তুলে তিনজনেই কয়েকটা পা পিছিয়ে যায়।মুগ্ধদের মুখের অবস্থা দেখে উপস্থিত সবাই হেসে লুটোপুটি খাচ্ছে!মুগ্ধ, রোদ আর রাসেল খুব ভালো করেই বুঝতে পারছে শনি গ্রহ এখন ওদের মাথার উপর এসে নাচানাচি শুরু করছে।আলো,রুহি,মিষ্টু তিনজনেই রাগি চোখে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে…
–
কোথা থেকে মেঘ এসে আলো,মিষ্টু আর রুহির দিকে তিনটা কাঠালের ডাল এগিয়ে দিলো আর বললো…
মেঘঃ ভাইয়ারা তাদের বউকেই চিনতে পারেনি!তাই তোমরা এই ডাল দিয়ে ওদের মারো!
আলোঃ একদম ঠিক বলছো মেঘ???(রাগী চোখে)
মিষ্টঃ হুলো বিড়াল তুমি বাইরে মেয়ের দিকে কুটুরকুটুর করে তাকিয়ে থাকতে থাকতে এখন নিজের বউকেই চিনতে পারছো না। (দাঁতে দাঁত চেপে)
রুহিঃ পুরুষ মানুষের ছুকছুকানির স্বভাব থাকে এটা আজকে বুঝে গেলাম।আর অঙ্কটা আজকে
left= Right (প্রমানিত) হয়ে গেল।
মেঘঃ দাড়াও বউমনি!এরা যাতে পালাতে না পারে তাই আমি দড়ি নিয়ে আসছি।দাভাই প্রতিদিন কান টানো আমার। আজকে আমিও সব শোধ নিবো (রোদকে উদেশ্য করে)
–
তারপর আলো যুক্তি দেখায় রোদ,মুগ্ধ, রাসেল যদি আলোদের তিনজন ৩০ হাজার টাকা দেয় তো মাফ করবে।আর তা না হলে ধুমাইয়া মারতে শুরু করবে।রোদ রা আলোদের কথা মেনে নিলো আর টাকাও দিলো।রাসেল এবার ওদের জুতা দিয়ে দিতে বললো।মিষ্টুরা শুনে না শোনার ভান করে দাড়িয়ে রইলো!এবার রুহি বললো আরো দশ হাজার করে টাকা না দিলে ওরা জুতা পাবে না।
রোদঃ একবার তো দিলাম!তাহলে আবার কিসের টাকা??
আলোঃ টাকা দাও! জুতা নাও!
রাসেলঃ মগের মুল্লুক নাকি??
মিষ্টুঃ না কিসের মুল্লুক বাসায় গিয়ে বোঝাবো??টাকা দিবে নাকি অন্য কিছুর ব্যবসথা করবো?
রুহিঃ কি গো ঝনটুর বাপ তোমাকে কি আলাদা করে টাকা দেওয়ার কথা বলতে হবে??(মুগ্ধর দিকে তাকিয়ে)
মুগ্ধঃ আমি বাসায় গিয়ে দিয়ে দিবো।আমি তো ক্যাশ টাকা আনিনি..
রুহিঃবাকির নাম ফাঁকি…
রোদঃআলোমনি আমার কাছেও আর ক্যাশ নেই!আমার কার্ড আছে।…
রাসেলঃ সেইম কাহিনী আমারও…
–
তারপর আলোও দুষ্টু হেসে রোদের কার্ড নিলো,রাসেলের কার্ড মিষ্টু নিলো,আর মুগ্ধর কার্ড নিলো রুহি!রোদ এবার ওদের জুতা দিতে বললো??কারন মাগরিবের আজান দিয়ে দিয়েছে!মুগ্ধদের বাসায় যেতে হবে!আলো,রুহি,মিষ্টু তিনজন তিনজনের দিকে তাকিয়ে দুষ্টু হাসে!তারপর ওরা ওদের শাড়িটা পা দিক থেকে একটু উপরে তুলে।রোদ, মুগ্ধ, রাসেল চোখ বড় বড় ওদের বউদের পায়ের দিকে তাকিয়ে আছে!কারন রোদের জুতা আলো,রাসেলেরটা মিষ্টু আর মুগ্ধর টা রুহির পায়ে আছে।আলোরা যে যার বরের পাশে দাঁড়ালো তারপর দুষ্টু হেসে তাদের বরদের পায়ে জোরে পাড়া দিলো!রোদ,মুগ্ধ, রাসেল তিনজন পা ধরে লাফাচ্ছে। এটাই ওদের আপাতত শাস্তি!বাসায় গিয়ে আরেক দফা শাস্তি পাবে! তারপর রুহিরা মুগ্ধদের জুতা দিয়ে দিলো!
–
রুহিরা মুগ্ধদের জুতা দিয়ে নিজের জুতা পড়তে গিয়ে দেখে ওদের জুতা নাই!আলো, রুহি আর মিষ্টুকে খোঁজাখুঁজি করতে দেখে রোদরা জিজ্ঞাসা করলো কি হয়েছে?আলো বললো এবার আলোদের জুতা খুঁজে পাচ্ছে না।তখন মেঘ ওদের সামনে এসে বললো…
মেঘঃ বউমনি তোমরা জুতা খুজে পাবে না!কারন আমি তোমাদের জুতা লুকিয়ে রাখছি!!!!
রুহিঃ তুই লেংটি ইঁদুর তুই না আমাদের দল!তাহলে আমাদের জুতা লুকালি কেন??
মেঘঃ তোমরা তোমাদের ভাগ থেকে আমাকেও টাকা দাও! তাহলে তোমাদের জুতা দিবো।
রোদঃহা হা হা! একেই বলে চোরের উপর বাটপারি..বাহ্ দারুণ তো।
রাসেলঃ হা হা হা! জিও জুনিয়র বস
মুগ্ধঃ হা হা হা!বাহ্ মেঘ বাবু কামাল করে দিলে…
–
তারপর আলোরা মেঘকে ভুজুংভাজুং দেওয়া শুরু করলো!যাতে এক হাজার টাকা করে দিয়ে মেঘকে বোঝানো যায়।বাট মেঘকে পটানো এত সোজা না।মেঘ তিন জনের থেকে পাঁচ হাজার করে নিলো! তারপর পনের হাজার টাকা নিয়ে বিশ্বজয় করা হাসি দিলো আর আলোদের জুতা আলোদের দিলো।মুগ্ধ রুহি দুজনেই পাশাপাশি বসতেই রোদ আর আলো গিয়ে একটা রুহি হাতে নেকলেসের বক্স দিলো আর রাসেল আর মিষ্টু রুহির আর মুগ্ধর হাতে কাপল রিং উপহার দিলো।এবার রুহিকে বিদায় দেওয়ার!রুহি তো ভ্য ভ্য করে কাঁদছে! রুহি ছোট বাচ্চাদের মত কাঁদছে তো কাঁদছেই থামার কোন নাম নেই!রুহির বাপি মুগ্ধর হাতে উপর হাত রেখে বললো..
–
রুহির বাপিঃ মুগ্ধ বাবা আম
মুগ্ধঃ মেজবাবা আপনি একদম চিন্তা করবেন না!আমি শেষ নিঃশ্বাস অবধি রুহি আগলে রাখার চেষ্টা করবো।আপনি চিন্তা করবেন না।
–
রুহি কান্না শব্দ আর কিছু বলতেও পারলো না কেউ!তারপর রুহি সবার থেকে বিদায় নিচেছ জড়িয়ে ধরে।রুহির ওর বাপি,আম্মু আরো অনেক কে ধরে কান্না করছে!মুগ্ধ দাঁতে দাঁত চেপে দাড়িয়ে আছে।রুহি একে একে সবাইকে ধরে কান্না করতে করতে মুগ্ধ কে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করলো।মুগ্ধ অবাকের চরম শিখায় পৌঁছে অবাক হয়ে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে!ওইদিকে আলো,মিষ্টু, মেঘ মেঘতে বসে হাসতে হাসতে লুটোপুটি খাচ্ছে! রোদ আর রাসেল এদিক ওদিক তাকিয়ে ওদের হাসি লুকানোর চেষ্টা করছে।রোদ আর রাসেল হাসতেও পারছে না আবার হাসি চাপিয়েও রাখতে পারছে না।
–
রুহিঃভ ভ ভা ভাইয়া আ আম আমি চলে যাচ্ছি!(মুগ্ধর গলা জড়িয়ে ধরে)
–
রুহির এমন কান্ড করাতে মুগ্ধ আর কিছু না বলে রুহিকে কোলে নিয়ে ওর বাসার দিকে হাঁটা ধরলো!কারন কাঁদতে কাঁদতে যে রুহির মাথার ব্রেক ফেল হয়ে গেছে সেটা ওর এসব কান্ড দেখেই বোঝা যাচ্ছে। মুগ্ধ রুহির বাবা মা কে বলো মুগ্ধ রুহিকে নিয়ে চলে গেল।মুগ্ধ যাওয়ার পর রুহির বাপি সহ সবাই হেসে দেয়।তারপর বেশ কিছুক্ষণ পর রোদরা মুগ্ধদের বাসায় গেল!রুহি তখন মুগ্ধদের ড্রয়িংর সোফাতে বসে ফোপাচ্ছিলো!আর মুগ্ধ রাগি চোখে ওর দিকে তাকিয়ে ছিলো…
–
আলোঃ বোকা মেয়ে আর কাঁদে না!কেন কাঁদছো তুমি?জানো তো রুহি অনেক ভাগ্যবান হলে তারপর ভালবাসার মানুষটাকে সারাজীবনের জন্য পাওয়া যায়!তুমি কত ভাগ্যবান তুমি মুগ্ধ ভাইয়ার মত একজনকে জীবন সঙ্গী হিসেবে পেয়েছো।শুকরিয়া করো বোকা মেয়ে!শুভ দিনে কাঁদতে নেই… (রুহির চোখ মুছে দিয়ে)
রুহিঃ…..
মিষ্টুঃতোমাদের জন্য সব সময় আমাদের দোয়া রইল রুহি!সারাজীবন একসাথে দুজন দুজনের পাশে থাকবে!তবে সব পরিস্থিতিতে একটা কথা রাখবে…
সম্পক ভাঙ্গ যতটা সহজ!সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা ততটাই কঠিন।দুজন দুজনকে বোঝার চেষ্টা করো আর অনেক ভালো থাকো,সুখে থাকো…
রুহিঃ…..
রোদঃরুহি- মুগ্ধ আমাদের জীবনটা বড্ড অদ্ভুত।আর সব সময় পরিস্থিতি এক থাকে না! তাই তোমরা দুজন দুজনাকে সব সময় বোঝার চেষ্টা করবে!একে অপরের আত্মা হয়ে উঠবে!আর রুহি আমরা ছেলেরা ভালবাসার কথা সাজিয়ে গুছিয়ে প্রকাশ করতে পারি না!তার মানে এই না যে আমরা ভালবাসি না বা ভালবাসতে পারিনা!আর মুখে বার বার ভালবাসি বলে যদি ভালবাসা বোঝাতে হয় তাহলে এটা কেমন ভালবাসা!ভালবাসা মুখ না থেকে মন থেকে ফিল করতে হয়।আর দোয়া করি রুহি- মুগ্ধ তোমরা অনেক ভাল থাকো…(মুচকি হেসে)
রাসেলঃরোদ ভাই সব বলে দিসে! আমি আর কি বলবো?আমি শুধু এতটুকু বলবো তোমরা এখন পবিএ বন্ধনে আবদ্ধ।আর পবিএ ভালবাসাটা নিয়ে সারাজীবন একসাথে পথ চলতে পারো এই দোয়ায় করি।
আলোঃআজকে তাহলে আমরা আসি!আপনাদের জন্য অনেক অনেক ভালবাসা ও দোয়া রইলো..
মুগ্ধঃ আজকে থেকে গেলে হয় না!প্লিজ
রোদঃ না ভাইয়া আমাদের আর জোর করো না।কারন লেখিকা আমাদের এই টুকু সময় থাকারই পারমিশন দিয়েছে।আবার দেখা হবে কোন এক সময় আর কোন এক গল্প…
রুহিঃ রাসেল আর রোদ ভাইয়া আপনারা থেকে যান না!আপনাদের সাথে সময় কাটাতে পেরে খুব ভালো লাগছে।
রাসেলঃযেতে মন নাহি চাই তবুও যেতে হবে! তোমাদের সাথে আবার দেখা হবে ইনশাল্লাহ…
মিষ্টুঃ রুহি তারাতারি জুনিয়র রুহি আনতে হবে! তাহলে আমরা আবার মিষ্টি খেতে আসতে পারবো…
রুহিঃ সত্যি আসবে তো!!!!!(অনেক খুশি হয়ে)
আলোঃ হুমমম অবশ্যই আসবো..
রুহিঃ তাহলে আজকে থেকে মিশন শুরু করবো।যত তারাতারি জুনিয়ার দের আনা যায়…
আলো আর মিষ্টুঃ হা হা হা! আচ্ছা
রোদঃ উহুম!উহুম তাহলে আমরা আজ আসি কেমন…
মেঘঃ তোমরা সবাই কত কি বললে!বাট আমি এখন কি বলবো???বউমনি আমি এখন কি বলবো???(আলোর দিকে তাকিয়ে)
আলোঃওহহ তাই তো!তুমি মুগ্ধ আর রুহির গলা জড়িয়ে ধরে হামি দাও আর বলো যাতে তারা অনেক ভালো থাকে।
মেঘঃ এতটুকুই শুধু বলবো..!!আর কিছু বলো!!
আলোঃবলো ভালো থাকতে বেশি টাকার প্রয়োজন নেই!মনে থেকে ভালবাসাটাই যথেষ্ট…
মেঘঃ মুগ্ধ ভাইয়া বউ শোন একটা কথা!ভালবাসতে বেশি টাকা লাগে না মনে থেকে ভালবাসাটাই যথেষ্ট! তাই বলছিলাম কি…
মুগ্ধঃ তা বলছিলেন শুনি??
মেঘঃ তোমাদের তো তাহলে টাকা দরকার নাই তাহলে সব টাকা আমাকে দিয়ে দাও।
উপস্থিতি সবাইঃ হা হা হা হা
তারপর রোদ,আলো,মিষ্টু, রাসেল মুগ্ধ আর রুহিকে সাথে আর কিছুক্ষন কথা কথা বলে বিদায় নিলো!….
To be continue…
(২৯ তম পার্টে বলে দিসিলাম আলো,মেঘ,রোদ, রাসেল আর মিষ্টু স্পেশাল গেস্ট হয়ে এসেছে।তারপরেও তোমরা জিজ্ঞাসা করছিলে ওরা হুট করে কোথায় থেকে আসলো!আমিই এনেছি কারন তোমরা যাতে ওদের ভুলে না যাও তাই!আর nc,next, না লিখলেই খুশি হবো কারন next না লিখলেও আমি পরের পার্ট দিবো!আর গল্প টা কেমন হচ্ছে জানিও …)