বুকের_বা_পাশে 🌿🌿 #written_by_Nurzahan_Akter_Allo #Part_9

0
381

#বুকের_বা_পাশে 🌿🌿
#written_by_Nurzahan_Akter_Allo
#Part_9

বেশ কিছুক্ষণ পর___

‌প্রিয়ম ঘুমিয়ে গেলে তুয়া আস্তে করে উঠে। তারপর প্রিয়মের কপালে হাত দিয়ে দেখে জ্বর আর নেই। তুয়া প্রিয়মের ব্যান্ডেজটা খুব সাবধানে আস্তে করে খুলে দিলো। তারপর এন্টিসেপটিক দিয়ে দিয়ে আবার নতুন করে ব্যান্ডেজ করে দিলো। ওয়াশরুমে গিয়ে মগ রেখে আসলো। টাওয়ালটা বারান্দায় মেলে দিলো। তারপর তুয়া রান্না ঘরে গিয়ে হটপটে গরম ভাত নিলো আর ওর আনা রান্না করা গরুর মাংস গরম করে অন্য হটপটপে নিলো। কারণ তুয়া জানে জ্বর এলে প্রিয়ম ঝাল ছাড়া কিছু খেতে চাই না। আর খেলে বমি করে সব ফেলে দেয়। তারপর প্রিয়মের রুমে প্লেট, পানির জগ,খাবারের হটপট, মেডিসিন আর একটা চিরকুট লিখে গ্লাস দিয়ে চাপা দিলো। তুয়া খুব ধীর পায়ে প্রিয়মের কাছে গিয়ে প্রিয়মের কপালে আদর দিয়ে বের হয়ে গেল ওর রুম থেকে।

তিন্নি ঘুম থেকে উঠে তুয়াকে খুঁজে না পেয়ে এদিক ওদিকে উঁকি মারছে। তিন্নি তুরাগের রুমে সামনে গিয়ে উঁকি মেরে দেখছে কেউ আছে কি না। ওইদিকে তুরাগ ওর রুম থেকে ফাইল নিতে এসে দেখে তিন্নি ওর রুমে উবু হয়ে উঁকি মারছে। তুরাগ তিন্নির পেছনে দাড়িয়ে তিন্নির কান্ড দেখছে! তুরাগের রুমে কাউকে না দেখে তিন্নি বিশ্বজয় করা হাসি দিয়ে পেছনে ঘুরতেই ইয়া বড় একটা চিৎকার দিতে গেলে তুরাগ তিন্নির মুখটা চেপে ধরলো। তুরাগ তিন্নির হাত ধরে ওর রুমে নিয়ে গেল। তুরাগ বেডের উপর বসে আর তিন্নি মাথা নিচু করে মেঝের দিকে তাকিয়ে আছে!

–“এই তুই আমার রুমে উঁকি মারছিলি কেন? জানিস না ছেলেদের রুমে উঁকি মারতে নেই।” (তুরাগ)
–“আ আম আমি তো জানতাম মেয়েদের রুমে উঁকি মারতে নেই! এই নিয়ম কবে পাল্টে গেল আমি তো জানতাম না!” (তিন্নি)
–চুপ একদম চুপ! আর একটা কথা বললে থাপ্পড় দিয়ে তোর সব দাঁত ফেলে দিবো। অভদ্রের মত অন্যে ঘরে উঁকি মেরে এখন আবার তর্ক করা হচ্ছে!” (ধমক দিয়ে)
–“আর হবে না।” (তিন্নি)
–“হবে কি না পরের কথা। এখন তুই আগে কান ধর।”
তুরাগের ধমক খেয়ে তিন্নি কেঁদে দিলো! তুরাগের সামনে তিন্নি দুই কান ধরে দাড়িয়ে আছে। আর তুরাগ তিন্নির দিকে তাকিয়ে আছে। তুয়া বাসায় এসে তিন্নিকে ওর রুমে না দেখে খুঁজতে খুঁজতে তুরাগের রুমে আসে। আর এসেই দেখে তুরাগ ওর সামনে তিন্নিকে কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে রেখেছে। তুয়াকে দেখে এবার ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে দিলো। তিন্নির এভাবে কান্না করা দেখে তুরাগ আর তুয়া ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল। তিন্নি আর না দাঁড়িয়ে দৌড়ে চলে গেল। তুয়া ভ্রু কুচকে কোমরে দুই হাত রেখে তুরাগের সামনে দাড়িয়ে ফটাফট বলতে শুরু করলো,
–“আমি তোমার বোন তাই না?”
–“হুম!”(অবাক হয়ে)
–“তিন্নি আমার বেস্টু তুমি জানো?”
–“হুম!”
–“তিন্নি খুব ভাল মেয়ে এটাও তো জানো?”
–“হুম!”
–“তিন্নি তোমাকে পছন্দ করে তুমি জানো?”
–“হুম!”
–“তুমি ওকে ভালবাসো?”
–“হুম!”

তুরাগ শেষ কথাটা বলে নিজেই বোকা হয়ে গেল! কারণ তুয়া এত দ্রুত বলছিলো যে তুরাগ সব কথার উওর হুম বলতে বলতে এই কথাতেও হ্যা বলে দিয়েছে। তুয়া তুরাগের অবস্থা দেখে হো হো করে হেসে দিলো। তুয়া ওর ফোন বের করে দেখালো যে যা কথা হলো সেটা রেকর্ড করে ফেলেছে। এটা দিয়ে এখন তুয়া তুরাগকে ব্লাকমেইল করবে। তুয়া ওর মুখে বিশ্বজয় করা হাসির রেখা টেনে চলে গেল। আর তুরাগ অবাক চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে টাসকি খেয়ে বসে থাকলো।

প্রিয়মের ঘুম ভেঙ্গে গেলে রুমের চারদিকে চোখ বুলিয়ে দেখে তুয়া নেই! আড়মোড়া ভেঙ্গে প্রিয়ম উঠে ফ্রেশ হয়ে নিলো। তারপর তুয়ার রেখে যাওয়া খাবার, মেডিসিন খেয়ে নিলো। তুয়ার এমন কাজে প্রিয়ম কতটা খুশি সেটা শুধু প্রিয়মই জানে! কারণ ভালবাসার কাঙ্গাল যারা,এটাই তাদের কাছে অনেক কিছু। যেখানে হাজার বার চেয়েও ভালবাসা আর যত্ন নামক যে জিনিস পায় না। সেখানে অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে সেই জিনিস পেলে খুশি তো হবারই কথা! কারণ এই মানুষটাই আছে যে প্রিয়মের না বলা কথা গুলো অতি সহজেই বুঝে যায়। প্রিয়মের এখন বেঁচে থাকার শক্তি এখন তুয়ার শাসন আর ভালবাসা। এছাড়া প্রিয়মের আর কোন পিছুটান নেই।আর থাকবেই বা কিভাবে ওর এত কিছু থেকেও যে, ওর ভাগ্য ওকে শুন্যের কোঠায় এনে দাঁড় করিয়েছে।

তারপর প্রিয়ম ফোনটা খুঁজতে গিয়ে দেখে, ফোনটা চার্জে দেওয়া। নিশ্চয়ই এটা তুয়ার কাজ। কারণ প্রিয়ম ফোনে চার্জই দেয়নি। প্রিয়ম মুচকি হেসে তুয়ার নাম্বারে ডায়াল করতে যাবে, এমন সময় ওর আম্মুর নাম্বার থেকে ফোন এলো!প্রিয়ম কল রিসিভ করলো।
–‘হ্যা, আম্মু বলো।”
–“আমার রুমে গিয়ে বেডের উপর দেখো, চেক এ সিগন্যাচার করা আছে। তুমি ব্যাংকে গিয়ে আমার একাউন্ট থেকে ক্যাশ তুলে অফিসে দিয়ে যাও। ইমিডয়েট লাগবে আমার।” (আম্মু)
–“আম্মু আমার শরীরটা ভালো নেই। শরীরটা খুব খারাপ করছে আর খুব মাথাটা ঘুরছে। তুমি
ম্যানেজার আংকেল কে বলো না প্লিজ! আর বাবাইও কি খুব বিজি?” (প্রিয়ম)
–“ম্যানেজার বা তোমার বাবা করতে পারলে তোমাকে বলতাম না! আর আমাদের ছেলে হয়ে তুমি এত অলস কেন প্রিয়ম? তুমি আর টু শব্দ করবে না! এক্ষুনি যা বললাম তাই করবে।” (আম্মু)
–“জ্বি, আমি আসছি!” (প্রিয়ম)

তারপর প্রিয়ম টলতে টলতে রেডি হয়ে ব্যাংকে গেলো টাকা তুলতে। ব্যাংক থেকে ক্যাশ টাকা তুলে ওর আম্মুর অফিসের গিয়ে দিয়ে আসলো। প্রিয়মের জ্বরটা আবার বেড়েছে! এত কড়া রোদে অবস্থা আরো খারাপ! পুরো মুখ লাল হয়ে আছে। শরীরটা আর চলছে না মনে হচ্ছে। প্রিয়ম ওর বাইকটা থামিয়ে চোখ বন্ধ করে বসে ছিলো। কারণ প্রিয়মের খুব মাথা ঘুরছে আর চোখেও ঝাপসা দেখছে। এর মধ্যে তুয়ার বাবা তখন বাসায় ফিরছিলো! প্রিয়মকে দেখে উনি প্রিয়মের কাছে যায় আর কথা বলে। প্রিয়ম ওর এই অবস্থাতেও হাসি মুখে কথা বলছে।
–“প্রিয়ম আব্বু কি হয়েছে তোমার? তোমাকে এমন দেখাচ্ছে কেন?” (তুয়ার আব্বু)
–“কিছু না আংকেল, আমি ঠিক আছি! এমনিতেই শরীরটা খুব খারাপ লাগছে।” (জড়ানো কন্ঠে)
–“তা তো দেখতেই পাচ্ছি! বাইক থেকে নামো তো, আমাদের বাসায় চলো। জ্বরে তো তোমার শরীরটা পুড়ে যাচ্ছে।” (কপালে হাত দিয়ে)
–“না আংকেল। আমি বাসায় যেতে পারবো।”
–“চুপ! কোন কথা না। যা বলছি তাই করো।”
–“জ্বি।”

তারপর তুয়ার বাবা উনার ড্রাইভারকে প্রিয়মের বাইক নিয়ে আসতে বললো। আর উনি প্রিয়মকে গাড়িতে বসিয়ে নিজে ড্রাইভ করে বাসায় চলে গেল। তুয়ার বাবা প্রিয়মকে ধরে বাসায় এনে একটা রুমে শুইয়ে দিলো।তুয়ার আব্বু সব বললো তুয়ার আম্মুকে। উনি দ্রুত প্রিয়মের কাছে গিয়ে মাথায় পানি ঢালতে শুরু করলো।তুয়ার বাবা একজন ডাক্তারকে ফোনকে ইমিডিয়েট আসতে বললো। তুয়া শাওয়ার নিয়ে বের হয়ে পাশের রুম থেকে ওর আব্বু আম্মুর কথা শুনতে পাচ্ছে। কথা বলা বচন ভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছে কিছু একটা হয়েছে! তুয়া উনাদের কিছু জিজ্ঞাসা করতে যাবে। তার আগেই ওই রুমের বেডের উপর প্রিয়মের শুয়ে থাকতে দেখে তুয়া চমকে উঠে।

তুয়া এক প্রকার দৌড়ে গিয়ে প্রিয়মে ডাকতে থাকে কিন্তু প্রিয়মের সাড়াশব্দ নেই। একদম নিশ্চুপ হয়ে শুয়ে আছে। তুয়া প্রিয়মের এই অবস্থা দেখে কান্না করে দেয়। কারণ প্রিয়মকে মোটেও স্বাভাবিক লাগছে না। তুয়া আর বসে না থেকে প্রিয়মের শার্ট খুলে ফেলে। দৌড়ে গিয়ে টাওয়াল ভিজিয়ে এনে পুরো শরীর মুছে দিতে থাকে।তুয়ার আম্মু প্রিয়মের মাথায় পানি ঢালছে আর তুয়া প্রিয়মের শরীর মুছে দিচ্ছে। কারণ শরীরে তাপমাত্রা অনেক বেশি! এর মধ্যে ডাক্তার আসে আর প্রিয়মের জ্বর মাপে। ১০৪ ডিগ্রি জ্বরের কারণে প্রিয়ম সেন্স হারিয়েছে! ডাক্তার এসে প্রিয়মের জ্বর কমানোর ইনজেকশন দিলো আর জ্বরটা কমে গেলে কয়েকটা টেস্ট করে নিতে বললো। কারণ জ্বরকে যতই আমার সাধারণ রোগ ভাবি না কেন, জ্বর মোটেই হেলা-ফেলার জিনিস না! আমাদের সবারই এটা মনে রাখা আবশ্যিক যে,
“জ্বর হলো বড় কোন রোগের উপসর্গ”।

এইদিকে_______

প্রত্যয় ওর বাবা সাথে কথা বলে ঠিক করলো যে, ও বাংলাদেশে নিজের একটা হসপিটাল বানাবে! যত শিঘ্রই হসপিটালের কাজ শুরু করবে! প্রত্যয়ের বাবা ইন্জিনিয়ার, তাই এই ব্যাপারটা উনি খুব সুন্দর ভাবে হ্যান্ডেল করতে পারবে। এতদিনে প্যারিসে ডাক্তারি করে যত টাকা পেয়েছে, তাতেই বাংলাদেশে একটা হসপিটাল করে ফেলতে পারবে। আর প্রত্যয়ও খুব তারাতারি দেশে ফিরতে চাই! এখানে কিছু কাজের জন্য আটকে আছে।এতগুলো বছর এখানে আছে। সব কিছু গুছিয়ে একেবারে দেশে ফিরতে সময় লাগারই কথা। মূল কথা হলো হসপিটালের যন্ত্রপাতি যা লাগবে, সেগুলো প্রত্যয় নিজে এখান থেকে কালেক্ট করে পাঠতে চায়। এজন্য প্রত্যয় দেশে ফিরতে একটু সময় লাগছে। প্রত্যয়ের বাবা বললো,
–“আমাদের যেহেতু জমি ঠিক করা আছে, তাহলে কাজ শুরু করতে সময় লাগবেনা।” (প্রত্যয়ের বাবা)
–“জ্বি! বাবা তুমি যেমনটা ভাল বুঝবে করবে। এই দায়িত্বটা তোমাকে দিলাম।” (প্রত্যয়)
–“হুম। তুমি চিন্তা করো না আমি আছি তো।”
–“জানি তো বাবা! এজন্য তো আমি চিন্তামুক্ত।”

প্রিয়মের জ্বরটা হালকা কমেছে কিন্তু পুরোপুরি ভাবে সারেনি! তুয়ার বাবা প্রিয়মের বাবাকে ফোন করলো প্রিয়মের কথা জানাতে।
–“হ্যালো, আশিক তুই কোথায়? প্রিয়মের খুব জ্বর এসেছে জানিস তুই?” (তুয়ার বাবা)
–“ওর আবার জ্বর আসলো কখন? এই ছেলেটা আমাকে একটু শান্তি দিলো না।” (আশিক)
–“তুই এখন কোথায় বলবি তো?”
–“আমি আর মনি ব্যাংকক যাচ্ছি। তুই প্রিয়মকে বাসায় পাঠিয়ে দে ভাই। আমি আমাদের পারসোনাল ডাক্তারকে বলে দিচ্ছি। উনি গিয়ে প্রিয়মকে দেখে আসবে।” (প্রিয়মের আব্বু)
–“এত জ্বর নিয়ে ছেলেটা বাসায় একা থাকবে? আচ্ছা তোরা যা আমি দেখছি।” (তুয়ার বাবা)
–“ওকে বাই। আমাদের ফ্লাইটের টাইম হয়ে গেছে।”
–“আচ্ছা।”

তুয়ার বাবা তার বন্ধুর ব্যবহারে কষ্ট পেলো। কারণ প্রথম থেকেই প্রিয়মের মা বাবা অর্থলোভী। ওরা টাকা ছাড়া কিছু বুঝে না। তুয়ার বাবা ঠিক করলেন প্রিয়মকে এখানেই কয়েকদিন রাখবে। আর মিশিকেও বলবে এখানে এসে থাকতে। যুবতী একটা মেয়েকে একা বাসায় রাখা ঠিক না। কার মনে কি আছে বোঝা তো যায় না! কারণ ভাল মানুষের আড়ালেই তো অমানুষ গুলোর চলাচল।

তুয়ার বাবা তুয়ার থেকে মিশির নাম্বার নিয়ে মিশিকে ফোন করে প্রিয়মের কথা জানালো। মিশি বললো ও কলেজ থেকে সাতদিনের জন্য রাঙামাটি যাচ্ছে। তুয়ার বাবা মিশিকে সাবধানে যেতে বললো। তুয়া প্রিয়মের কাছেই বসে আছে! কেঁদে কেঁদে চোখ মুখ ফুলিয়ে ফেলছে! এতদিন সবার আড়ালে ছিলো ওদের সম্পর্কের কথা। কিন্তু আজকে তুয়া চাইলেও কেন জানি আজকে আর নিজেকে শান্ত করতে পারছেনা। প্রিয়মের এই অবস্থা দেখে তুয়া পারছেনা নিজেকে সামলাতে। আর মানবেই বা কি করে? কারণ প্রিয়ম চঞ্চল একটা ছেলে। একদিনের জ্বরেই ছেলেটা কাবু হয়ে গেছে। হাসি খুশি থাকা ছেলে একেবারে নিস্তেজ হয়ে পড়ে আছে বিছানায়।

তুয়ার বাবা-মা ও অবাক হয়েছে তুয়ার এভাবে কান্না করা দেখে। তুয়া হাউমাউ করে না কাঁদলেও তুয়া চোখের পানি অঝরে গড়িয়ে যাচ্ছে গাল বেয়ে। তুয়া খুব শক্ত মনের মেয়ে বাট প্রিয়মের জ্বরে এভাবে কাঁদছে দেখে তুয়ার আব্বু আম্মু অবাক। যদিও ওরা ছোট থেকে দুজনই দুজনকে নিয়ে সিরিয়াস ছিলো। কিন্তু এখন তো দুজনেই বড় হয়েছে বুঝতে শিখেছে। তুয়ার আব্বু আম্মু কিছু বললো না কারন এই পরিস্থিতিতে এ বিষয়ে কথা বলা উচিত হবে না। এজন্য উনারা দুজনেই চুপচাপ আছে। তবে বাবা-মা হয়ে উনারা ঠিকই মেয়ের এভাবে কান্না করার কারন আন্দাজ করতে পেরেছে।

তুয়ার বাবা মা চলে গেল অন্য রুমে। প্রিয়ম চোখ খুলে দেখে তুয়া কাঁদছে। প্রিয়ম তুয়ার চোখের পানি মুছে দিয়ে বার বার নিষেধ করছে না কাঁদতে। প্রিয়ম তুয়ার দিকে তাকিয়ে বললো,
–“সামান্য জ্বরে তুই কেঁদে কেঁদে নিজের কি অবস্থা করছিস? আমি যদি মারা যায় তো তখন কি করবি রে টুপারাণী?” (প্রিয়ম)
–“তোমার পায়ে পড়ি, দোহায় লাগে। প্লিজ এসব আর বলো না। এসব কথা তুমি ফাজলামি করে হলেও বলো না প্রিয়ম। তোমার এই ফাজলামি করে বলা কথা আমার কলিজায় আঘাত হানে।” (তুয়া)

তুয়ার কথা শুনে প্রিয়মের চোখের কোণা বেয়ে কয়েক ফোঁটা অশ্রুু গড়িয়ে পড়লো! কেউ তো ওকে নিঃস্বার্থ ভাবে ভালবাসে। এমন ভালবাসা কতজন ছেলের ভাগ্যতেই বা জোটে? কে বললো প্রিয়ম ভালবাসার কাঙ্গাল? তুয়া থাকলে প্রিয়মের আর কিছু লাগবেনা।আর তুয়াই হলো এখন প্রিয়মের বেঁচে থাকার একমাত্র আশার আলো।

To be continue….!!

(প্রত্যয় ডাক্তার! প্রত্যয়ের ভবিষ্যত উজ্জ্বল বলেই কি তোমরা প্রত্যয়কে সাপোর্ট করো? নাকি তোমরাও বুঝিয়ে দাও যে, প্রিয়ম ভালবাসা পায়নি! আর কারো ভালবাসা পাওয়া অধিকার ওর নেই। নাকি এটা বুঝাও যে,কারো বেঁচে থাকার শেষ প্রদীপটাকেও নিভিয়ে, অন্যকে খুশি করাটাই শ্রেয়। বলো আমি তোমাদের কমেন্ট পড়ে কি বুঝবো? এটাই বুঝবো যে, আমরা পাঠকরাও এমন মনমানসিকতা নিয়েই চলে?)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here