#এলোকেশী_কন্যা২__
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_8
🍁🍁
______রোদ রাগে ফোঁস ফোঁস করতে করতে সোফায় বসে পড়লো!মেঘও শান্ত বিড়াল ছানার মত সোফায় বসে নক কামড়াতে শুরু করলো।
–
আলো রান্নাঘর রোদের দিকে তাকিয়ে আছে!রোদের রাগ দেখে আলোর কাঁপাকাপি শুরু হয়ে গেছি।রোদের চিৎকারে বাড়িটাও মনে হচ্ছে কাঁপছে। আর আলো অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখছে! তাকিয়ে থাকার আরেকটা কারন রোদ হাঁটুর সমান কালো থ্রি কোয়াটার একটা প্যান্ট আর সাদা সেন্ডো গেঞ্জী পড়ে আছে!আর এখন যদিও এটা ছেলেদের কমন একটা ড্রেস।আলো তো গ্রামের মেয়ে এটা তো আর ও জানে না।আর রোদও জানে না আলো এখন সত্যি সত্যি ওদের বাসায় আছে আর ওর দিকেই আলো এখন হা করে আছে।রোদ রাগী চোখে মেঘের দিকে তাকিয়ে হন হন করতে করতে ওর রুমে চলে গেল।আর আলো মনে মনে ভাবছে…
আলোঃ ছিঃ! ছিঃ! এই পোলার তো দেখি এক্কেবারেই লাজ লজ্জা কিছু না!এসব কি পড়ে আছে বাসায়। মেঘ না হয় ছোট থ্রী কোয়াটার পড়ছে কিন্তু তাই বলে মেঘের দেখাদেখি এই দামড়া পোলাও এসব পড়বে।না ছেলেটা আসলেই অসভ্য (মনে মনে)
–
নিচে থেকেই রোদের আম্মু রোদকে ডাকলো ব্রেক ফাস্ট করতে!রোদ ষাড়ের মত চিৎকুর দিয়া বললো..
রোদঃ আম্মু আমি এখন খাবে না! এখন আমি ঘুমাবো!আর কেউ যদি ডিস্টার্ব করে তাকে কপালে দুঃখ আছে আগেই বলে দিলাম। (চিৎকার করে)
–
তারপর রোদকে ছাড়া সবাই ব্রেক ফাস্ট সেরে নিলো!মেঘ আলোকে টানতে টানতে ওদের ছাদে নিয়ে গেল!তারপর মেঘ আলো সব দেখাচ্ছে কোথায় কি আছে?মেঘদের বাসার ছাদে উঠে আলো হা করে সব দেখছে কারন এত এত বড় বড় বিল্ডিং আলো এর আগে দেখেনি!মেঘ আলোকে ওটা দেখাচ্ছে….!!
–
রোদের আম্মু মেঘ আর আলোকে রেখে একটু বাইরে গেছে!মেঘ গেছে ওয়াশরুমে! সাড়ে দশটার দিকে রোদ ঘুম থেকে উঠে!তারপর একেবারে সাওয়ার নিয়ে একটা মেরুন কালার থ্রি কোয়াটার প্যান্ট আর হালকা গোলাপি কালারের একটা গেন্জী পড়ে!রোদ এক হাত দিয়ে ফোন ধরে কথা বলছে! আর অন্য হাত দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে সিড়ি দিয়ে নিচে নামছে…
রোদঃ হুমমম বল!আমি এখনো বাসায়! হুমম এখনি বের হবো!!
সিয়ামঃ…..
রোদঃ ওকে! বাই
–
আলো তখন ড্রয়িং রুমের সোফাতে বসেছিলো!সকালে রোদের রাগ দেখে আলোর থুতনী কাপা শুরু হয়ে গেছে!আলো এই এক সমস্যা ভয় পেলে থুতনী কাঁপতে শুরু করে!(এটা আমার রোগ….😖)….!!ওইদিকে রোদ ওর আম্মুকে ডাকছে আর বলছে ওকে খেতে দিতে!আলো গিয়ে দেখলো রোদ ডায়নিং টেবিলে বসে ফোন টিপছে! এখন তো বাসায় কেউ নাই তাই আলো গুটি গুটি পায়ে রোদের খাবার গরম করে রোদকে খেতে দেয়!রোদ খেতে শুরু করে…!রোদ আলোর দিকে এখনো তাকায় নি!রোদ পাশে না তাকিয়ে বললো…
–
রোদঃ আম্মু বিচ্ছুটা কি খেয়েছে??
আলোঃ…..
রোদঃ আম্মু (খাবার খেতে খেতে)
–
রোদ ভ্রু কুচকে পাশে তাকাতেই আলোকে দেখে ভীষম খায়!কারন রোদ না দেখেই এতক্ষণ ওর আম্মু ভেবে কথা বলছিলো!রোদের দিকে আলো পানি এগিয়ে দেয়!রোদ পানি খেয়ে আলোকে বলে…
রোদঃ তুমি এখানে??
আলোঃ আ আম আম
রোদঃ তার মানে মেঘ সত্যি বলেছিলো তুমি সত্যি সত্যি আমাদের বাসায় এসেছো!তা এখানে আসার কারন মতলব টা কি (খেতে খেতে)
আলোঃ ম ম মতলব মানে
রোদঃ এখন আমার কথাটা ঠিক বুঝতে পারছো না! নাকি বুঝতে চাইছেন না কোনটা বলো তো।
আলোঃ ভ ভা ভাইয়া আপনি আমাকে ভুল বুঝছেন!আম আমি (কেঁদে দিয়ে)
রোদঃ আমি কি তোমাকে মেরেছি নাকি! অযথা কাঁদছো কেন? (ধমক দিয়ে)
আলোঃ…..
রোদঃএভাবেই ন্যাকা কান্না করে ছেলেদের মন গলিয়ে তারপর তাদের ফাসিয়ে গলায় ঝুলে পড়ার মতলব তাই না। (খেতে খেতে)
আলোঃ…..
রোদঃ চেহারাটা ভালো ট্রাই করতে থাকো কোন কোন ছেলে পটে যাবে।তবে একটা কথা শুনে রাখো আমার আশে পাশে ঘুরঘুর করতে দেখলে এমন একটা থাটিয়ে থাপ্পড় দিবে মুখটা ৮৮০ এঙ্গেলে বেঁকে যাবে।
আলোঃ….
রোদঃ যদিও আমি তোমাকে ভাল একটা মেয়ে ভেবে ছিলাম!কিন্তু মেঘ তোমাকে বউমনি বলে এখানে আনতে চাইলো আর তুমি গলে গিয়ে নাচতে নাচতে চলে এসে।ভালো মেয়েরা এমনটা করে না মে বি।তবে তুমি লোভী মেয়ে … এটাই প্রমান করলে।
–
রোদ কথাটা বলে ওর রুমে চলে যায়!আলো ওখানেই ঠায় দাড়িয়ে থাকে!আলো রোদের কথা শুনে কি রিয়েক্ট করবে এটা ভুলে গেছে!রোদ রেডি হয়ে বাইক নিয়ে চলে গেল!মেঘের ডাকে আলোর হুশ আসে তারপর আলো মেঘের দিকে তাকায় আর মেঘের আড়ালে চোখের পানি মুছে ফেলে।মেঘ আলোকে ধরে টানতে টানতে বাগানে নিয়ে যায়!আলো মেঘের জন্য কাঁদতেও পারছে না কিন্তু বেহায়া চোখের পানি গুলো গাল বেয়ে ঝরতেই আছে।মেঘ রকির সাথে দৌড়াতে দৌড়াতে এসে আলোর কোলে ঝাপিয়ে পড়ে! মেঘ হাসতে হাসতে আলোর কোল থেকে উঠতে গিয়ে দেখে আলো কাঁদছে….!!! মেঘ চিৎকার করে বলে…
–
মেঘঃ বউমনি তোমার কি হয়েছে??তুমি কাঁদছো কেন??কেউ কি কিছু বলছে তোমাকে বউমনি?কি হয়েছে তোমার বলবে তো?? (আলোর গাল ধরে)
আলোঃ আ আম আমার কিছু হ হয়নি মেঘবাবু!আমি ঠিক আছি।
মেঘঃবউমনি কোথায় কষ্ট হচ্ছে আমাকে বলো!তুমি কেদো না বউমনি আমারও যে কষ্ট হচ্ছে (ছলছল চোখে)
–
মেঘ আলো চোখের পানি মুছে দিচ্ছে! আলোর দুই গাল ধরে বার বার নিষেধ করছে না কাঁদতে। আলো আর নিজেকে ধরতে রাখতে পারে না।আলো মেঘকে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে হাউ মাউ করে কেঁদে দেয়।মেঘ আলোর কান্না দেখে মেঘও কেঁদে দেয়।আজকে আলোও যেন চোখের পানি দিয়ে ওর কষ্ট গুলো মুছে ফেলতে চাচ্ছে। আলো কাঁদতে আর বলছে…
–
আলোঃ আমি লোভী না! আমার ভাগ্য আমাকে এখানে এনেছে।আমি খারাপ মতলবে এখানে আসি নি! আমি সবার মত ভাল থাকতে চাই….!
রোদের আম্মুঃ রোদ কি তোকে কিছু বলছে???(ভ্রু কুচকে)
–
আলো রোদের আম্মু কথা শুনে তারাতারি মেঘকে সরিয়ে চোখ মুখ মুছে ফেলে!কিন্তু ফর্সা মেয়েদের এই এক সমস্যা কাঁদলে সেই কান্না ছাপ সাথে সাথে লুকানো পারে না।কারন এখন আলোর চোখ,নাক,গাল,ঠোট লাল হয়ে আছে।যেটা এখন আলো চাইলেও আড়াল করতে পারে না!রোদের আম্মু আবার আলোকে জিজ্ঞাসা করে রোদ আলোকে কিছু বলেছে কি না!আলো মাথা নাড়িয়ে বলে রোদ কিছু বলে নি!রোদের আম্মু আলো আর মেঘকে নিয়ে বাসায় যায়।রোদের আম্মু মনে ঘটকা লাগে বাট এখন চেপে যায়।
–
রোদের আম্মুঃ আলো তোর এস এস সির সার্টিফিকেট গুলো আমাকে দে তো।
আলোঃ ক ক কেন আন্টি??
রোদের আম্মুঃ থাটিয়ে একটা থাপ্পড় দিবো!কিসের আন্টি কে আন্টি আমি তোর কোন জন্মের আন্টি।আর একবার আন্টি বললে তোর খবর আছে। আমাকে আম্মু ডাকবি…মনে থাকবে
আলোঃ হ হুম হুম
–
রোদের আম্মু আলোর এসএসসির সার্টিফিকেট গুলো নেয় আর বলে আলোকে কলেজে ভর্তি করে দিবে!আলো পড়াশোনার শুরু করবে, আলোর মাথা ঘুরছে কারন আলো এখন বুঝতে পারছে না আলো এখন কি করবে?রোদের কথা শুনে এখান থেকে চলে যাবে! নাকি নিজে বাঁচার জন্য একটা অবলম্বন তৈরী করবে।আলো রোদের আম্মু দিকে তাকিয়ে বলে…
আলোঃ আম্মু একটা কথা বলার ছিলো??
রোদের আম্মুঃ হুমমমম বল! অনুমতি নেওয়া দরকার নাই..
আলোঃ আম্মু আমি রোদ ভাইয়াকে বিয়ে করতে পারবো না (মাথা নিচু করে)
To be continue….
(রাত ৯ টার দিকে আরেক পার্ট দেওয়ার চেষ্টা করবো….!!)