দেশলাই – ২৫ পর্ব

0
152

দেশলাই – ২৫ পর্ব

রাফসান কোনো জবাব না দিয়ে কেবল মুচকি হেঁসে ইলির দিকে তাকায়।

– ‘হাসছো কেন? হাসির কিছু বলেছি?’

ফুরফুরে বাতাসে রাফসানের পায়ের কাছে আম গাছের একটি শুকনো পাতা পড়লো। হাত বাড়িয়ে সেটা নিয়ে আনমনে নাড়াচাড়া করে দূরের চা বাগানের দিকে তাকায়। ইলির বোধহয় ওর নীরবতা দেখে রাগই হলো।

– ‘আমি যাচ্ছি। অন্যের জামাইয়ের সাথে বসার ইচ্ছা নাই।’

রাফসান হাত ধরে টেনে বললো, ‘বস, এতো অস্থির হচ্ছিস কেন?’

ইলি আবার বসে। একটা কাক মাথার উপর দিয়ে ‘কা-কা’ করে চলে যায়। রাফসান শুকনো পাতা মুঠো করে দূরে ছুড়ে ফেলে বললো, ‘সে তো চলেই গেছে। হয়তো ইন্ডিয়া থেকে এসে ফিরিয়ে আনতাম। কিন্তু এখন আর ইচ্ছা নেই।’

– ‘নেই কেন?’

– ‘তোর জন্য।’

– ‘আমাকে দয়া দেখাতে হবে না।’

– ‘দয়া না। আমিও চাই তোকে বিয়ে করতে। কিন্তু সেটা মামা-মামীরা চাইলে।’

– ‘যদি না চায়?’

– ‘জানি না। না চাইলে তুই বা কি করবি?’

– ‘আমি যেভাবে হোক তোমাকে পাওয়ার চেষ্টা করবো।’

রাফসান খানিক্ষণ চুপচাপ বসে থেকে ওর কপালে হাত দিয়ে বললো, ‘রাতে তোর জ্বর ছিল। এখন আবার স্বাভাবিক লাগছে।’

ইলি অন্যদিকে তাকিয়ে চুপচাপ বসে থাকে। রাফসান পায়ের কাছের ঘাস টান দিয়ে বললো, ‘রাতে এমন পাগলামি করলি কেন?’

– ‘কি পাগলামি করলাম?’

– ‘আমার বিছানায় চলে গেলি।’

ইলি খানিকটা লজ্জা পেয়ে মুখ ঢেকে বললো, ‘জানি না কীভাবে গেছি।’

– ‘যদি কেউ দেখে ফেলতো?’

– ‘এই টপিক বাদ দাও তো রাফসান ভাই।’

– ‘অ্যাঁ, তোর আবার লজ্জা করে?’

ইলি ম্লান মুখে বললো, ‘হ্যাঁ আমি তো নির্লজ্জ বেহায়া। আমার লজ্জা করবে কেন?’

– ‘আমি কি সেটা বলছি?’

– ‘বলো। কেউ বাঁধা দেয়নি৷ এখন কি যাবে, না-কি উদাস হয়ে বসে থেকে বউ আর প্রাক্তনের কথা ভাববে?’

রাফসান হেঁসে ফেললো।
– ‘তুই এতো ক্ষ্যাপে আছিস কেন?’

– ‘আমি যাচ্ছি৷’

– ‘আরে দাঁড়া আমিও যাব।’

রাফসান পাশাপাশি গিয়ে বললো, ‘আজ যাবি না-কি কোথাও?’

– ‘আমার যেতে অসুবিধা নেই।’

– ‘কাল এতো কষ্ট হয়েছে আজ রেস্ট নে।’

– ‘এখন আর কষ্টের কিছু নাই৷ সব জায়গায় গাড়ি নিয়ে যাওয়া যাবে।’

– ‘হ্যাঁ তা ঠিক।’

– ‘তোমার কি যেতে ইচ্ছে করছে না?’

– ‘আমি তো যাবো। তোর কথা ভেবেছিলাম।’

– ‘আমার কথা কেন ভাববে? প্রতিদিন ভোরে এই আম গাছের নিচে আইসা বউ আর প্রাক্তনের কথা ভাইবো।’

রাফসান ‘হা-হা’ করে হেঁসে উঠে৷

– ‘তুই আমার বউকে হিংসা করছিস কেন?’

– ‘বাব্বাহ। বউ বউ করে বলছো দেখছি।’

– ‘তো কি বলবো?’

– ওর নাম ধরে বলা যায়।’

– ‘আচ্ছা নাম ধরেই বলছি। নিশিতাকে তুই হিংসা করছিস কেন?’

– ‘আমি কাউকে হিংসা করছি না।’

– ‘তাইলে বউ ডাকলে বা ওর কথা ভাবলে তোর সমস্যা কি?’

ইলি রাফসানকে ঠেলতে ঠেলতে বললো,
– ‘আমার কোনো সমস্যা নাই। যাও গাছতলায় বসে বসে বউয়ের কথা ভাবো। আমি নিজেই চা-নাস্তা এখানে এনে দেবো।’

– ‘না এখন বাড়িতে যাবো৷ কাল ভোরে আবার এসে বউয়ের ধ্যান করবো।’

ইলি পাহাড় থেকে নামতে নামতে বললো, – ‘ভালো তো। প্রতিদিন ভোরে এখানে এসে বউ বউ কইরো।’

রাফসানও পাহাড় থেকে নেমে ওর পাশাপাশি গিয়ে বললো, ‘রাতে খেলি না কেন? মুখ শুকিয়ে গেছে তোর।’

– ‘ঘুম পাচ্ছিল তাই।’

দু’জন এক সঙ্গে বাড়ি ফিরে এলো। নাস্তার টেবিলে মিনহাজের সঙ্গে দেখা হয়। সে চায়ে চুমুক দিয়ে বললো,
– ‘কিরে কেমন লাগলো জলপ্রপাত?’

রাফসান ঠাট্টা করে বললো, ‘ভালোই। কিন্তু ইলি তো জোঁকে ধরার পর কান্নাকাটি করে পানিতে পড়ে গেছিল।’

ইলি দাঁত কটমট করে তাকিয়ে বললো, ‘বাড়িয়ে বলছো কেন? আমি মোটেও কান্নাকাটি করিনি।’

– ‘পানিতে পড়েছিল কে?’

– ‘পায়ের জোঁক দেখতে গিয়ে পড়েছিলাম।’

মিনহাজ হেঁসে বললো, ‘আচ্ছা বাদ দাও, আজ যাবে না-কি কোথাও?’

– ‘বাইক্কা বিল যাবো। তুমি দোকানে গিয়ে গাড়ি পাঠিয়ে দিয়ো।’

– ‘আচ্ছা।’

রাফসান ইলির দিকে তাকিয়ে বললো, ‘কিরে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে যাবি বলেছিলি।’

– ‘না বাইক্কা বিলে যাই আগে। অনেক সুন্দর জায়গা।’

মিনহাজ সম্মতি জানিয়ে বললো, ‘হ্যাঁ জায়গাটা ভালোই।’

দশটার আগেই সিএনজি এলো। রাফসানের ব্যাগে বেগুনি রঙের একটা পাঞ্জাবি ছিল। বিয়ের আগেই কেনা। কখনও পরা হয়নি। সেটা বের করে ব্লু জিন্সের সঙ্গে পরে নেয়। হাত গুটিয়ে তুলে কনুই অবধি। বাঁ হাতে ঘড়ি পরে চুলগুলো অভ্যাস মতো হাত দিয়েই ঠিকঠাক করে ইলিকে ডেকে সে সিএনজিতে চলে যায়। খানিক পরেই ইলি উঠোনে আসে। মিনহাজের বউ বারান্দা থেকে মিটমিট করে হাসছে। রাফসান বিস্মিত নয়নে তাকায়। কি অপরূপ সুন্দর লাগছে ইলিকে। আঁটসাঁট করে শাড়ি পরেছে। শাড়ির পাড়ে সাদা আর কালো রঙের মিশ্রণ। মাঝখানে গাঢ় নীল। খোলা চুলগুলো একপাশে ফেলে কান আর গাল ঢেকে দিয়েছে। অন্যপাশের বিচ্ছিন্ন ছাঁট চুলগুলো কানে গুঁজা। হাঁটছে পা টিপেটিপে। মুখে লজ্জার ছায়া। কেমন অচেনা লাগছে। ইলি সিএনজির সামনে আসতেই সে একপাশে সরে গেল। ইলি উঠে শাড়ি ঠিকঠাক করে বসে। সিএনজি চলতে থাকে। কিন্তু অকারণ দু’জন বিব্রতবোধ করছে৷ কেউ কথা বলছে না৷ রাফসান সিএনজির আয়নার দিকে তাকাতেই দু’জনের চোখাচোখি হয়ে যায়৷ ইলি লজ্জায় হেঁসে চোখ নামিয়ে নেয়। কিন্তু রাফসানকে দেখার জন্য বুক পিটপিট করছে। পাঞ্জাবিতে আজ অন্য রকম সুন্দর লাগছে তাকে। কিন্তু এই পাঞ্জাবি তো সে আগে কখনও দেখেনি। আবার চোখ তুলে আয়নায় তাকায়, সঙ্গে সঙ্গে আবার দু’জনের চোখাচোখি হয়ে যায়। রাফসান বুঁদ হয়ে তাকিয়ে আছে। ঘন্টা খানেকের ভেতরেই তারা শ্রীমঙ্গল ফেলে বাইক্কা বিলের পাশাপাশি চলে আসে। দুইপাশে পানি আর মাঝখান দিয়ে সরু রাস্তা গিয়েছে৷ খানিক পরেই দেখা গেল দুইপাশে রেলিং দেয়া ছবির মতো ভেসে উঠেছে স্টিলের সেতু। ইলি মুগ্ধ হয়ে বললো, ‘কি দারুণ তাই না?’

রাফসান মুচকি হেঁসে আস্তে আস্তে বললো, ‘তোর থেকে না।’

ইলি ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আবার মুখ ফিরিয়ে নেয়। খানিক পরেই তারা কাউন্টারের সামনে চলে আসে। দুইজনে বিশ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে ভেতরে যায়। সেখান থেকে বিল দেখা যাচ্ছে বটে। তবে বাইক্কা বিলের পুরোপুরি সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে নৌকা ভাড়া করে টাওয়ারে যেতে হবে।
পাখির স্থায়ী অভয়াশ্রম হওয়ার কারণে পুরো বছরই পাখির কলকাকলিতে মুখরিত থাকে বাইক্কা বিল। পর্যটকদের সুবিধার্থে পাখি দেখার জন্য বাইক্কা বিলে পানির উপরে তৈরি করা হয়েছে তিনতলা বিশিষ্ট একটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার।

– ‘নৌকা নিই একটা?’

রাফসান আমতা-আমতা করে বললো,
– ‘আমার ইচ্ছে করছে না যেতে। বরং এমন একটা জায়গায় যাই যেখানে দু’জন বসে গল্প করতে পারবো।’

– ‘এখানেও হবে।’

– ‘নৌকায় মাঝি থাকবে।’

– ‘তাহলে লাউয়াছড়া চলো। কোথাও বসা যাবে।’

– ‘হ্যাঁ চল।’

আবার সিএনজি নিয়ে তারা লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে চলে এলো। ন্যাশনাল পার্কে প্রবেশ করা মাত্রই দেখতে পেলো চারিদিকে হাল্কা অন্ধকার রাস্তায় দু’পাশের বৃক্ষগুলো দিবাকরের আলোক রশ্মিকে আটকে রেখেছে, মাঝে মাঝে বৃক্ষসারির মগডালে বানর আর হনুমান লাফালাফি করছে। খানিক হেঁটে যেতেই ইলি চমকে উঠে বললো, ‘এই দেখো ‘আমার আছে জল’ সিনেমার সাইনবোর্ড।’

রাফসান তাকিয়ে বললো, ‘হুমায়ূন আহমেদের সিনেমা ‘আমার আছে জল’ না-কি?’

– ‘হ্যাঁ, নায়িকা মিম যে ছিল। ওটার শুটিং এখানে হয়েছে। তাছাড়া হলিউডেরও একটা সিনেমা এখানে হয়েছিল।’

– ‘বাবা তাই না-কি? আমি জানতাম না।’

খানিক পরেই একজাতীয় পোকার বিরামহীন শব্দ কানে আসতে লাগলো।
মনে হচ্ছে নিশি রাতে যেন অন্য কোনো পৃথিবীর নিস্তব্দ স্থানে দাড়িয়ে আছে।
গাছগাছালির চারদিকে সরু রাস্তা। খানিক পর পর পাকা করে বসার জায়গা তৈরি করা।
– ‘রাফসান ভাই তোমাকে এতো আনমনা লাগছে কেন?’

– ‘একটু নির্জন স্থান চাই।’

ইলি ভ্রু কুঁচকে বললো, ‘কেন?’

– ‘এমনিই।’

– ‘আচ্ছা চলো।’

– ‘দাঁড়া।’

রাফসান ঠোঙায় করে বাদাম নিয়ে ফিরে এলো। তারপর দু’জন উদ্যানের মাঝখান দিয়ে ট্রেনের রাস্তা ধরে হাঁটতে থাকে। রাফসান বাদামের খোসা ছাড়িয়ে ইলিকে দিচ্ছে, সেও খাচ্ছে।
বাঁ পাশে নানান প্রজাতির গাছগাছালির মাঝখান দিয়ে সরু রাস্তা। আশেপাশে কেউ নেই। ইলি আঙুল দিয়ে দেখিয়ে বললো,
– ‘এ দিকে যাই।’

– ‘হ্যাঁ চল।’

তারা সেই রাস্তা ধরে হাঁটে। খানিক যেতেই বসার জায়গা পাওয়া গেল। দু’জন সেখানে বসে। রাফসান বাদামের খোসা ছাড়াচ্ছিল ইলি ঠোঙাটা টান দিয়ে দূরে ফেলে দেয়।

– ‘এটা কি হলো?’

– ‘নির্জন জায়গা খুঁজছিলে এখন কিছুই বলছো না কেন?’

– ‘থাক নিজেকে সামলে নিয়েছি।’

– ‘ধুরো আমি চলে যাচ্ছি।’

রাফসান হাত ধরে টেনে আবার কাছে বসালো, ‘তোকে খুব সুন্দর লাগছে আজ।’

– ‘তাই?’

– ‘হ্যাঁ।’

– ‘কথা শেষ? তাহলে যাচ্ছি।’

রাফসান এবার দাড়িয়ে টান দিয়ে ইলিকে বুকে আনে। তার দুই হাতে জড়িয়ে বেঁধে ফেলে। ইলির হৃৎস্পন্দন বেড়ে গেছে৷ এতো কাছ থেকে চোখে চোখে তাকাতে যেন লজ্জা লাগছে। ইলি নিজেকে স্বাভাবিক করতে যেয়ে একটু কড়া গলায় বললো,

– ‘কি হচ্ছে এসব?’

– ‘কাল কি বলেছিলি?’

– ‘কি?

– ‘কপালে আদর দিয়ে যেন ‘বউ’ ডাকি।’

ইলি লজ্জায় বুকে মুখ লুকোয়।

– ‘তুই লজ্জা পাচ্ছিস কেন? শাড়ি পরলে লজ্জা বেড়ে যায় না-কি?’

– ‘আপনি আজ কেমন করে তাকাচ্ছেন।’

– ‘আপনি মানে?’

ইলি মুখ না তুলেই বললো, ‘জানি না। কিন্তু আজ আপনাকে পাঞ্জাবিতে অনেক সুন্দর লাগছে।’

– ‘অন্যদিন লাগে না?’

– ‘লাগে কিন্তু আজ অন্য রকম।’

– ‘তাই না-কি?’

– ‘হু।’

– ‘তোকে আজ কেমন লাগছে সেটা রবীন্দ্রনাথ লেভেলের সাহিত্যিক ছাড়া বলে বুঝানো সম্ভব না।’

ইলি মাথা তুলে বললো, ‘আচ্ছা ওখানে বসে তোমার সঙ্গে একটা গান শুনি?’

– ‘কেন?’

– ‘আমি এই মুহূর্তটা কখনও ভুলতে চাই না। তাই এখানে বসে দু’জনে গান শুনবো। গবেষকরা বলে গানের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা স্মৃতিগুলো বেশিদিন মনে থাকে।’

– ‘আচ্ছা।’

দু’জন সীটে বসে।
– ‘তোমার ব্যাগ থেকে আমার ইয়ারফোনটা দাও।’

– ‘রাফসান বাধ্য ছেলের মতো ইয়ারফোন দেয়।’

ইলি দু’জনের কানে গুঁজে নিয়ে গান ছেড়ে বললো, “এবার দাঁড়াও।’

রাফসান ওর সঙ্গে দাঁড়ায়। ইলির ওকে জড়িয়ে ধরে বুকে মাথা রেখে বললো, ‘তুমি গানটার সঙ্গে সঙ্গে গুনগুন করে গাও।’

– ‘আমি সুর দিতে পারবো না।’

– ‘তুমি শুধু ওই গানের সঙ্গে গুনগুন করো।’

– ‘আচ্ছা।’

রাফসান রবীন্দ্র সঙ্গীতটি গুনগুন করে গায়। ইলি বুকে মাথা রেখে চোখবুঁজে আছে। রাফসানের বুকে গানের সুর তোলার শব্দ হচ্ছে। অন্য কানে চলছে,
“মায়বন বিহারিনী হরিণী
গহন স্বপন সঞ্চারিনী
কেন তারে ধরিবারে করি পণ
অকারণ
মায়াবন বিহারিনী

থাক থাক নিজ মনে দূরেতে
আমি শুধু বাসরীর সুরেতে
পরশ করিব ওর তন মন
অকারণ
মায়াবন বিহারিনী

চমকিবে ফাগুনেরো পবনে
বসিবে আকাশবাণী শ্রবনে
চমকিবে ফাগুনেরো পবনে
চিত্ত আগুনে হবে অনুভব
অকারণ

দূর হতে আমি তারে সাধিব
গোপনে বিরহ ডোরে বাধিব

বাধনবিহীন সেই যে বাঁধন
অকারণ
মায়াবন বিহারিনী

মায়বন বিহারিনী হরিণী
গহন স্বপন সঞ্চারিনী
কেন তারে ধরিবারে করি পন
অকারণ
মায়াবন বিহারিনী’

গান শেষ হয়ে যায়। তবুও ইলির ইচ্ছা করছিল না ওই বুক থেকে মাথা তুলতে। রাফসান মাথায় হাত বুলিয়ে বললো, ‘ইলি কেউ হঠাৎ আসতে পারে।’

ইলি মাথা তুলে। ওর চোখে কেমন ঘোর লেগে আছে।

– ‘দাঁড়া, কেউ আসছে কি-না দেখে আসি।’

রাফসান সরু পথ থেকে উঁকি মেরে দেখে এলো কেউ নেই।
ইলি সীটে বসে আছে আবার। ওর একপাশের পেট খানিকটা দেখা যাচ্ছে। চোখ সরিয়ে নিয়ে সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে হাত বাড়িয়ে দেয়। ইলি ধীরে ধীরে দাঁড়িয়ে চোখে চোখ রাখে। রাফসান আঁজলা করে মুখটা ধরে পবিত্র গ্রন্থের মতো ওর কপালে ঠোঁট ছুঁয়ে দেয়৷ ইলি মাথা তুলে ছলছল চোখে তাকায়। রাফসান এবার শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কানে ফিসফিস করে বলে, ‘আমার বউটা।’
ইলি ওর পিঠের পাঞ্জাবি খামচে ধরে একা একাই লজ্জা পেয়ে বুকে মুখ লুকোয়।

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here